#মেহেরজান
#পর্ব-২
লেখাঃ সাদিয়া আফরিন
রাতের ঝড়-বৃষ্টিতে চারপাশ ধুঁয়ে একদম চকচকে ঝকঝকে করে দিয়ে গেছে। এখনও গাছের পাতা বেয়ে বেয়ে টপটপ করে বৃষ্টির পানি ঝরছে। ভেজা মাটির একটা আলাদা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। চারদিকে পাখিদের কলরব শোনা যাচ্ছে। ভোরের আলো ফুঁটতে না ফুঁটতেই আম্রপালি পদ্মাবতীকে নিয়ে বাগান বাড়িতে এসেছে। নিজের কোলে থেকে নামিয়ে অন্য একটা মেয়ের কাছে পদ্মাকে দিলে তারানা তার কোলে আরেকটি ঘুমন্ত শিশু তুলে দিয়ে বললেন,
“মুসলিম ঘরের মেয়ে। কালরাতে হয়েছে। চরণ বললো যে মা’টা পাকিস্তানি ছিল। কিজানি এখানে কি করে পৌঁছালো।”
আম্রপালি বাচ্চাটির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললেন,
“এর মা কই?”
তারানা কিছুটা তাচ্ছিল্যের সুরে বললেন,
“ওর জন্মের কিছুক্ষণ পরেই মারা গেছে। হুহ, কি মেয়ে! আসতে না আসতেই নিজের মা’টাকে খেয়ে নিলো।”
আম্রপালি চোখ রাঙিয়ে তারানার দিকে তাঁকালে তিনি কিছুটা চুপসে গেলেন। আমতা আমতা করে বললেন,
“না মানে মা’টা মরার আগে একটা নামও রেখে গেছে।”
“কি নাম?”
“মেহেরজান।”
“মেহেরজান? উহু। ওর নাম হবে মোহিনী।”
“কিন্তু…”
“আমি বলে দিয়েছি না একবার? আর কোনো কিন্তু নেই।”
“আচ্ছা।”
বাচ্চাটাকে তারানার কোলে ফিরিয়ে দিতে নিলে সে আম্রপালির আঁচলের একটা অংশ নিজের ছোট্ট হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে কেঁদে উঠলো। আম্রপালির বড্ড ইচ্ছে করলো বাচ্চাটাকে আরও কিছুক্ষণ তার কাছে রাখতে। কিন্তু তিনি অনেক্ষণ যাবৎ এখানে এসেছেন। এবার বাড়ি ফিরতে হবে। তাই নিজের ইচ্ছেকে মাটিচাপা দিয়ে বাচ্চাটাকে তারানার কাছে দিয়ে দিলেন আর ঠিক মতো খেয়াল রাখতে বললেন। পদ্মাবতীকে কোলে নিয়ে উঠে দাঁড়ালে তারানা বললেন,
“আপনি কি এখন বাড়িতে যাচ্ছেন?”
“না। এখান থেকে মন্দিরে যাবো একটু।”
“কিন্তু মন্দিরের রাস্তা তো বন্ধ।”
“কেন?”
“কালরাতের ঝড়ে রাস্তায় নাকি বিশাল বড় গাছ ভেঙে পরেছে। এখনো সরায়নো হয়নি। কাজ চলছে।”
“ওহহহ। কি আর করার তাহলে। বাড়িতেই ফিরে যাই নাহয়।”
আম্রপালি আর দেরি না করে বেরিয়ে গেলেন। এখান থেকে তার বাড়ির দূরত্ব খুব একটা বেশি নয়। দশ মিনিটের হাটা পথ। তাদের বাড়িটা বেশ বড়। কিছুটা পুরনো কিন্তু তা দেখে বোঝার উপায় নেই। এখনো বেশ চাকচিক্যময়। আর বাড়ির সামনে আর পেছনে কিছুটা জায়গা রেখে চারদিকে দেওয়াল তোলা। একদম পরিপাটি একটা দোতলা বাড়ি। বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই দেখলেন অর্ণব চুপচাপ কান ধরে মাথানিচু করে এককোণে দাঁড়িয়ে আছে আর শকুন্তলা বেশ জোরে জোরেই একটা লোকের সাথে কথা বলছেন। আম্রপালি সামনে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন,
“কি হয়েছে শকুন্তলা?”
অর্ণব চোরাচোখে নিজের মা’কে একবার দেখে নিল।
“দেখো দিদি। তোমার গুণধর ছেলে কি করেছে।”
অর্ণব চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
“আমি কিছু করিনি।”
“তুমি চুপ করে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকো।”
লোকটি বলে উঠলেন,
“আমি বলছি ও কি করেছে। আজ সকালে আপনার ছেলে আমার বাগানে ঢুকে এত্তগুলো ফুল ছিড়েছে। সাথে গাছ যে কতগুলো নষ্ট করেছে গুণে শেষ হবে না। হায় হায় হায়! আমার কত টাকার লোকসান হয়ে গেল।”
“আমি এমন করিনি। এই লোকটা মিথ্যে বলছে।”
“তুমি চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকো। দোষ করেছো আবার কথা বলছো।”
আম্রপালি ঘরের ভেতরে গিয়ে কিছু টাকা নিয়ে ফিরে আসলেন। টাকাগুলো লোকটির দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন,
“আশা করি এতে আপনার ক্ষতিপূরণ হয়ে যাবে।”
টাকাগুলো দেখে লোকটির চোখ চকচক করে উঠলো। তাড়াতাড়ি করে আম্রপালির হাত থেকে তা লুফে নিয়ে গুনতে গুনতে বললেন,
“হ্যাঁ হ্যাঁ। হয়ে যাবে। আপনি যখন ক্ষতিপূরন দিয়েই দিয়েছেন তাহলে আর কি বলি। আমি বরং এখন আসি।”
লোকটি চলে গেলে আম্রপালি অর্ণবের সামনে এসে দাঁড়ালেন। বললেন,
“কান ছাড়ো এখন। এমন করেছো কেন?”
অর্ণব কান ছাড়তে ছাড়তে বললো,
“বলবো না।”
“কেন?”
“তখন বলতে চাইলাম কিন্তু আপনি শুনলেন না আমার কথা। উল্টো ওই লোকটাকে টাকা দিয়ে দিলেন। এখন বলে কি হবে?”
“তবুও বলো।”
“আমি ওর বাগান নষ্ট করিনি। ও মিথ্যে বলেছে। আমি মাত্র দুটো ফুল ছিড়েছিলাম। তাও ওই লোকটা নিয়ে নিয়েছে।”
“ফুল কেন ছিড়েছিলে?”
অর্ণব তার মায়ের কোলের দিকে ইশারা করে বললো,
“পদ্মার জন্য। ওকে সাজাবো বলে।”
“হাহাহা। দেখেছো দিদি। এই ছেলের এখনই এই হাল। বলি অর্ণব, তুমি তো চিত্রার জন্য কখনো ফুল আনোনি।”
অর্ণব শকুন্তলার কথার জবাব না দিয়ে শুধু ঠোঁট কাঁমড়ালো। আম্রপালি বললেন,
“যাই হোক। দোষ তো তুমি করেছো। আর তার জন্য শাস্তিও পাবে।”
“আপনি তো ওই লোকটাকে তার ক্ষতির বেশিই টাকা দিয়েছেন। তাহলে আবার আমাকে শাস্তি দেবেন কেন?”
“ওটা তার ক্ষতিপূরণ ছিল। তোমার শাস্তি নয়। আর ওই টাকাটা তোমার উপার্জিতও নয়। তাই তোমাকে আলাদা শাস্তি দেবো।”
“কি শাস্তি?”
“তুমি তোমার পিসির কাছে যাবে।”
“অসম্ভব। আমি যাবো না।”
“তোমাকে যেতে হবে।”
“একদম না। পিসি এতো এতো আজেবাজে নিয়ম বানিয়ে রেখেছে। ওখানে গেলে আমাকেও তা মানতে হবে। আমি পারবো নাহ। তাই আমি যাবো না পিসির বাড়িতে।”
“তুমি যাবে। আর গিয়ে একমাস ওখানেই থাকবে। এটাই তোমার শাস্তি। কাল দুপুরে তোমার পিসেমশাই আসবেন তোমাকে নিতে।”
অর্ণব রাগে আগুন হয়ে মুখ ফুলিয়ে চোখ বড় বড় করে আম্রপালির দিকে তাঁকালো। ছেলের এমন মুখভঙ্গি দেখে মুচকি হাসলেন তিনি।
চলবে…
#মেহেরজান
#পর্ব-৩
লেখাঃ সাদিয়া আফরিন
চল্লিশ বছর বয়সী এক পুরুষ শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে আছেন। আম্রপালি ধীরে ধীরে চামচ দিয়ে তুলে তরল জাতীয় একটা খাবার তাকে খাইয়ে দিচ্ছেন। আরেক চামচ খাবার তার মুখে দেওয়ার সাথে সাথে তিনি তা মুখ থেকে বের করে দিলেন। আম্রপালি বুঝতে পারলেন তিনি আর খেতে ইচ্ছুক নন তাই জোরজবরদস্তি না করে খাবারের বাটিটা পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক কাজের লোকের হাতে দিয়ে পানি খাইয়ে মুখ মুছে দিলেন। ঘরে এতোক্ষণ বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলছিল। আম্রপালি তাঁকিয়ে দেখলেন ঘরের জানালাগুলো সব এখনো বন্ধ। পাশে থাকা কাজের লোকের উদ্দেশ্যে বললেন,
“দুপুর হয়ে গেছে এখনো ঘরের জানালা বন্ধ কেন?”
“এ ঘরে আজকে আপনিই প্রথম এসেছেন মালকিন।”
“মানে?”
“কালরাতে আপনি বড় মালিককে খাইয়ে যাওয়ার পর আর কেউ আসেননি এখানে।”
“তাহলে ওনাকে সকালে খাবার কে খাইয়েছে?”
লোকটি আম্রপালির দিকে কিছুক্ষণ তাঁকিয়ে থেকে মাথা নিচু করে ফেললেন। মুহুর্তেই আম্রপালির বুকে মোচড় দিয়ে উঠলো। মানুষটা যে এতো সময় অনাহারে ছিল তা বুঝতে আর বাকি নেই। মানুষটার খেয়াল রাখার দায়িত্ব মনে হয় শুধু তার একার। এ বাড়িতে যে একজন মানুষ না খেয়ে আছে তাতে যেন কারও কিচ্ছু যায় আসে না। কিন্তু তার যে অনেক কিছু যায় আসে। কারণ এই মানুষটার সাথেই সে এতো বছর ধরে সংসার করে আসছে। তার দেখভালের দায়িত্ব তো তাকে পালন করতেই হবে। পরক্ষণেই নিজেকে দোষ দিতে লাগলেন আম্রপালি। তিনি নিজে কেন এতো সময় তার খোঁজ নিলেন না? এটা তো তারই দায়িত্ব ছিল। আম্রপালি ছলছল চোখে উঠে গিয়ে সব জানালা খুলে দিলেন। বাড়ির পেছনে বিভিন্ন ফল, বড় বড় গাছের বাগান আর দিঘি থাকায় কাঠফাটা রোদের মধ্যেও একটা শীতল বাতাস হনহনিয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকলো যা মুহুর্তেই সব ক্লান্তি দূর করে দিতে পারে।
.
.
.
মুখ গোমড়া করে খাটের কোণায় বসে আছে অর্ণব। আম্রপালি নিজের মতো অর্ণবের কাপড় ভাজ করে ব্যাগে ভরছেন। অর্ণব শেষবারের মতো আবার বললো,
“আমি যাবো না।”
কথাটা বলে অর্ণব উৎসুক দৃষ্টিতে আম্রপালির দিকে তাঁকিয়ে রইলো উত্তরের অপেক্ষায়। আম্রপালি একবার চোখ তুলে ছেলের দিকে তাঁকালেন। কিন্তু কোনো উত্তর দিলেন না। অর্ণব এটা আশা করেনি। ভেবেছিল কিছু হয়তো বলবে। কিন্তু আম্রপালির কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখে সোজা দৌঁড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
“তোমার বৌমাকে কিছু বলবে না? ছুটি শুরু হতে না হতেই আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছে।”
নিজের দিদিমার ঘরে ঢুকতে ঢুকতে কথাগুলো চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলে উঠলো অর্ণব। দরজার সামনে সাদা ধুতি পাঞ্জাবী পরা একটা ছেলেকে ঝাপসা দেখতে পেলেন শান্তি দেবী। কণ্ঠ শুনে চিনতে ভুল হয়নি তার।
“কেন রে? কি হলো আবার? কি করেছে আম্র?”
“আমাকে পিসির বাড়ি পাঠাচ্ছে।”
“ওহহহ। এই কথা। তা একবার ঘুরেই আয় না।”
“এক মাসের জন্য।”
“এতোদিন গিয়ে কি করবি ওখানে?”
“তোমার ছেলের বৌকেই জিজ্ঞেস করো। সে-ই তো বলেছে।”
“ও আম্র এমনি বলেছে। এতোদিন তোকে ছাড়া থাকতে পারবে নাকি বল?”
“তুমি কিছু বলো মাকে।”
“আমি আবার কি বলবো? আমার চশমাটা যে কই রাখলাম। কিছু দেখতেও পাচ্ছি না। একটু খুঁজে দে না।”
“ধুর বুড়ি। তোমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না।”
কোনো কাজ হবে না ভেবে ঘর থেকে দৌঁড়ে বেরিয়ে গেল অর্ণব। শান্তি নিজের স্বর একটু উঁচু করে বললেন,
“কিরে? চলে গেলি নাকি? আমার চশমাটা খুঁজে দিয়ে যা।”
বাইরে থেকে শব্দ ভেসে এলো,
“নিজে খুঁজে নাও বুড়ি।”
.
.
.
গাড়ি বাড়ির সীমানার বাইরে চলে যেতেই শকুন্তলা বললেন,
“ছোট্ট একটা ভুলের জন্য এতো বড় শাস্তি দিলে? যাওয়ার সময়েও মুখ ভারী করে চলে গেল।”
“শাস্তি না দিলে আবার এমন করতো।”
“তাই বলে এক মাসের জন্য? লেখাপড়ার ক্ষতি হবে না?”
“একমাস তো নয়। দু’সপ্তাহের জন্য পাঠিয়েছি। ছুটি পেতে না পেতেই ওর দুষ্টুমি শুরু হয়ে গেছে। ওখানে থাকলে তাও একটু নিয়মকানুনের মধ্যে থাকবে।”
“তবে যে বললে একমাস?”
“ওটা এমনি বলেছি। ঘর থেকে আমার ব্যাগ একটু নিয়ে আয় না শকুন্তলা। একটু বাগান বাড়িতে যাবো।”
“কালই না গিয়েছিলে? আজ আবার যাবে?”
“হ্যাঁ। তাতে কি?”
“কিছুনা। তুমি দাঁড়াও, আমি ব্যাগ নিয়ে আসছি।”
.
.
.
সেই বিকেলের দিকে এসেছেন আম্রপালি। এখন সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়ে গেছে। আম্রপালির ভাবসাব কিছুই বুঝতে পারছেন না তারানা। এসে থেকেই মোহিনীর সাথে একদম লেগে আছেন। এক মুহূর্তের জন্যও নিজের থেকে আলাদা করেননি। একটা মেয়ে তারানার কানে ফিসফিসিয়ে বললো,
“কি হলো বলো তো আম্মা। এক দিন যেতে না যেতেই আবার চলে এলেন। ইনি হঠাৎ মোহিনীকে নিয়ে পরলেন কেন?”
“আমিও সেটাই ভাবছি। একদম আঠার মতো সেঁটে আছে।”
“তারানা।”
আম্রপালির ডাকে হকচকিয়ে উঠলেন তারানা। তারপর বোকার মতো মুখ করে বললেন,
“হা?”
“রাত হয়ে গেছে। আমি এখন উঠি।”
“এখনই চলে যাবে? আর কিছুক্ষণ ওর সাথে থাকলে পারতে। দেখো কি সুন্দর চুপচাপভাবে ড্যাবড্যাব করে দেখছে তোমাকে।”
“আমি ওকে আজ আমার সাথে নিয়ে যাবো।”
“হঠাৎ?”
“কেন? কোনো সমস্যা আছে?”
“না না। কি সমস্যা হবে আবার? আগে তো কখনো কাউকে এ বাড়ি থেকে নিয়ে যাওনি তাই জিজ্ঞেস করছি আরকি। কোনো সমস্যা হবে না। তুমি নিয়ে যাও।”
“ঠিক আছে।”
আম্রপালি মোহিনীকে নিয়ে উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে মেয়েটি তারানার উদ্দেশ্যে বললো,
“আম্মা, আগে কখনো দেখেছো এরকম? হঠাৎ কি হলো বলো তো।”
“আমি কি জানি। কত মেয়েই তো এলো। কিন্তু আগে কোনোদিন এই দৃশ্য দেখিনি। যাই হোক, তাতে তোর কি রে প্রমিতা? ওই বাচ্চাটাকেও খুব হিংসে হয় তোর? যা নিজের কাজ কর।”
.
.
.
জলের ভেতর থেকে উঠেই অর্ণব বড় বড় শ্বাস নিতে লাগলো। ঠান্ডায় থরথর করে কাঁপছে। পাশে তার সমবয়সী আরেকটি ছেলে উঠে এলো জল থেকে। অর্ণবের দিকে তাঁকিয়ে বললো,
“কিরে? একটা ডুব দিয়েই এই অবস্থা তোর। চিন্তা করিস না। একমাস তো আছিসই। ততোদিনে অভ্যেস হয়ে যাবে।”
কাঁপতে কাঁপতে অর্ণব বললো,
“লাগবে না আমার এমন অভ্যেস করা। আমি শুধু বাড়ি যাবো। এখানে থাকলে তোর মা আমাকে এসব করাতে করাতেই মেরে ফেলবে।”
“এখন স্নান করলে দেখবি সারাদিন কত ভালো লাগে।”
“দরকার নেই ভালো লাগার। দেখছিস না ঠান্ডায় কাঁপছি আমি।”
“একটা ডুব দিয়েছিস তাই এতো ঠান্ডা লাগছে। আরেকটা ডুব দে। দেখবি ঠান্ডা কমে গেছে। যা, আর দুটো ডুব দিয়ে চলে যাবো।”
কথাটা বলেই ছেলেটা আবার জলের ভেতর চলে গেল। অর্ণব দাঁতে দাঁত চেপে কটমট করতে করতে বললো,
“পদ্মারে, আজ শুধু তোর জন্য ফুল আনতে গিয়ে আমাকে সূর্য ওঠার আগে নদীর এই ঠান্ডা জলে স্নান করতে হলো। একবার শুধু বড় হ তুই। এর খেসারত সুদে আসলে উশুল করবো তোর থেকে।”
চলবে…