মেঘ বিয়োগের মৌসুম পর্ব-৩০ এবং শেষ পর্ব

0
898

#মেঘ_বিয়োগের_মৌসুম
#তানিয়া_মাহি(নীরু)
#পর্ব_৩০ (অন্তিমপর্ব)

বাইকে থাকা ব্যক্তিটি মাথার হেলমেট খুলে চুল ঠিক করতে করতে বলে,” উঠে বসুন। এখন রিকশা পাবেন না।”

বেলা চোখ বড়োবড়ো করে বলে,” আপনি! ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন৷”
ফারাজ মৃদু হেসে বলে ” কীভাবে?”
” এই যে, বাইক এভাবে থামালেন। অপরিচিত কেউ হলে থাপ্পড় বসে যেত গালে।”

ফারাজ গালে হাত দিয়ে আগের হাসি বহাল রেখে বলে,” যে গালে আমার বউয়ের চুমু পড়বে সে গালে অন্য নারী থাপ্পড় দেবে? সেই নারীর হাত ঝ*লসে যাক। ”

ফারাজ থেমে আবার বলে,” চলুন তাড়াতাড়ি যেতে হবে। এক কাপ কফি খাওয়া বাকি। ”
” কী?”
” আমাদের একদিন কফি খাওয়ার কথা ছিল, ভুলে গেলেন?”
” ভুলিনি।”

ফারাজ বেলার দিকে তাকিয়ে বলে,” আধাঘন্টা সময় আমাকে দেওয়া যায় না? প্রমিস করছি আপনাকে চাইবো না শুধু আপনার মূল্যবান সময়ের ত্রিশ মিনিট সময় চাইছি। ”
” চলুন।”

বাইক এসে থামে সেই পুরোনো রেস্টুরেন্টের সামনে। বেলা বাইক থেকে নেমে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখতে থাকে। চারপাশটা আরো বেশি সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।

ফারাজ বাইক লক করে বলে,” চলুন ভেতরে যাই।”

এতোদিনে অসম্পূর্ণ ইচ্ছেটা সম্পূর্ণ করে নেয় ফারাজ। পুরোটা সময়ে দুজনের খুব অল্প কথা হয় আর এই অল্প কথার মাঝে বেলা যেন ফারাজের একটা কথাতেই আটকে যায়। ” কখনো যদি মনে হয় আপনার জীবনে সঙ্গী হিসেবে কাউকে প্রয়োজন তাহলে আমাকে একবার মনে করবেন। আমি আপনার জন্য আজীবন অপেক্ষা করব, ওয়াজিহা। আমি ভালোবাসতে বাধ্য করছি না, করবও না। আমি ভালোবাসি বলেই কেন আপনাকে ভালোবাসতে হবে? দেখি আপনাকে ভালোবেসে সারাজীবন একা থাকা যায় কি না! আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করব, কেউ আপনার পথ চেয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনবে, ওয়াজিহা। ভালোবাসার মানুষটি ফিরিয়ে দিলে যে ভালোবাসা কর্পূরের মতো উধাও হয়ে যায় না সেটা আমি প্রমাণ করে দেব। ভালোবাসি আপনাকে,ওয়াজিহা।”

দুজনের বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাতের খাবারের সময় হয়ে যায়। বাসায় সবাই একসাথেই ছিল৷ রাতের খাওয়া শেষ করে সবার বিদায় নেওয়ার সময়। বেলা মুহিব সাহেব এবং ফাহমিদা বেগমের কাছে থেকে একেএকে বিদায় নিয়ে নেয়। ফাহমিদা বেগম হাতে বানানো কিছু শুকনো খাবার বেলাকে দেয় নিয়ে যাওয়ার জন্য।
ওয়াহাজ আর মৌ দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে। বেলা ফাহমিদা বেগমের কাছে থেকে চলে আসবে তখনই কী মনে করে আবার দাঁড়িয়ে যায়।

ফাহমিদা বেগমের দিকে ফিরে বলে ওঠে,” একবার আপনাকে জড়িয়ে ধরি? ভাবির মা মানে তো আমারও মায়ের মতোই, তাই না?”

ফাহমিদা বেগম কোনো কথা না বলে মৃদু হেসে বেলাকে জড়িয়ে নেয়। মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলতে থাকে,” তুমি তো আমার মেয়ের মতোই। সবসময় আমার দোয়া থাকবে, জীবনে ভালো কিছু করো, নিজের জন্য করো আর তোমার মতো মেয়েগুলোর জন্য কিছু করো৷ সমাজে যে কালো অধ্যায় শুরু হয়েছে সেগুলো শেষ করো। সৃষ্টিকর্তার রহমত নিশ্চয়ই পাবে তুমি। ”

অনেকদিন ধরে মায়ের অনুপস্থিতি তাকে পো*ড়াচ্ছে। প্রতিটা পদক্ষেপে সময় বুঝিয়ে দিচ্ছে মা থাকলে হয়তো সবকিছু আরেকটু সুন্দর হতো। ভাই যত ভালোবাসুক না কেন সব কথা ভাইকে বলা যায় না। মাকে জড়িয়ে ধরে, মায়ের কোলে মাথা রেখে নির্দ্বিধায় সব বলে দেওয়া যায়। মা তো মা-ই হয় মায়ের মতো কেউই হয় না। এই সময়টায় এসে মায়ের অভাবটা যেন পেটের ক্ষুধার মতো পেয়ে বসেছে। ভাই তো সব আবদার পূরণ করে, তাকে যেন গিয়ে বলতে ইচ্ছে করছে – ভাইয়া, প্লিজ মাকে এনে দাও না। মা কেন সেদিন আমাদের ছেড়ে চলে গেল? বাবা কেন ওরকম করল? বাবা ওই কাজটা না করলে তো এতো এতো সমস্যা সৃষ্টি হতো না। জীবন এতোটা জটিল হতো না। মা তো সতীন সহ্য করে নিয়েছিল কয়েকবছরের শা*স্তি সহ্য করে নিতে পারত না? সব তো ঠিকই হয়েছিল, আমিও রাজি হয়েছিলাম তবুও কেন মা ওরকম কাজটা করল? কয়েকটা দিন খারাপ কাটতো কিন্তু এখন তো সারাটাজীবনের প্রতিটা দিন তাকে ছাড়া খারাপ কাটছে।

দীর্ঘশ্বাস ফেলে বেলা। অতঃপর শেষবারের মতো সকলে বিদায় নিয়ে বের হবে তখন ওয়াহাজ বলে ওঠে,” ফারাজের সাথে দেখা করেছ? কোথায় ও?”

ওয়াহাজের কথায় বেলা মৌয়ের দিকে তাকায়। মৌ মৃদু হেসে ইশারায় কিছু বোঝায় কিন্তু বেলার কাছে সেটা বোধগম্য নয়। বেলা আশেপাশে তাকিয়ে ফারাজকে না দেখে বলে ওঠে,” উনি হয়তো ব্যস্ত। চলো আমরা যাই। ”
_______

বেলা আর মৌ মিলে প্রতিটা ব্যাগ রুমের প্রতিটা জিনিস বারবার চেক করছে কোনো কিছু যেন ভুলে না রেখে যায় বেলা। ওয়াহাজ বাহিরে বাহিরে খুশি দেখালেও বোন দূরে থাকবে ভেবে বারেবারে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলছে সে।

মৌ রুমে এসে দেখে ওয়াহাজ খাটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছে। পাশে এসে বসতেই ওয়াহাজ নড়েচড়ে সোজা হয়ে বসে।

” ওয়াজিহা রেডি?”
” হ্যাঁ, সবকিছু রেডি। ওরও হয়ে গেছে। বের হওয়া কখন?”
” এখনই৷ ফারাজ এলো না? তুমি যে বলেছিলে..”
” আমার মনে হয় ব্যস্ত আছে। আমি বলে দিয়েছি ভাইয়া চলে আসবে।”
” আচ্ছা।”

বেলা রেডি হয়ে রুম থেকে বের হবে তখনই ওয়াহাজ সামনে এসে দাঁড়ায়। মৃদু হেসে বলে,” তৈরি তুমি? আমাদের এখনই বের হতে হবে।”
বেলা মাথানিচু করে বলে,” হ্যাঁ ভাইয়া, আমি তৈরি। ”
” চলো বের হওয়া যাক।”

বেলা তড়িঘড়ি করে বলে,” ভাবি যাবে না আমাদের সাথে বিমানবন্দরে ?”
” হ্যাঁ যাবে, তৈরি হয়ে নিচ্ছে। আমি ব্যাগপত্রগুলো গাড়িতে রেখে দিই। কাগজপত্র সব ঠিকমতো নিয়েছ?”
” হ্যাঁ ভাইয়া, আমার কাছেই আছে।”
” ঠিক আছে।”

ওয়াহাজ বেলার ব্যাগগুলো নিচে নিয়ে যায়। বেলা বসে বসে মৌয়ের রেডি হওয়া দেখছে। বেলার মুখটা মলিন।

মৌ নিজের পার্সব্যাগটা নিয়ে বলে,” ভাইয়া কি তোমাকে কল দিয়েছিল?”

বেলা মুখ গম্ভীর করে বলে,” না, তোমার ভাইয়া আমাকে কেন কল দেবে?”
” কেন দেবে জানো না তুমি?”
” জানলেই কী হবে? উনার আসার প্রয়োজন নেই আমিই ভুল ভাবতে শুরু করেছিলাম।”
” শোনো, আমার ভাইয়া তোমাকে ভালোবাসে এই কথায় এক বিন্দু ভেজাল নাই। ”
” হুম।”
” তোমার মনে হয় না তুমি আমার ভাইয়াকে একদম নিরাশ করে চলে যাচ্ছ?”
” ভাবি, আমার প্রেম করার বয়স নেই পরিস্থিতিও নেই। আমি উনাকে আশায় রাখতে পারব না।”
” তুমি কি ভাইয়াকে নিয়ে একদমই কিছু ভাবোনি?”

বেলা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে,” ভেবেছি, অনেককিছুই তো ভেবেছি।”
” কী ভেবেছ?”
” জানি না কিন্তু…”
” শোনো তোমার ভাইয়া কিন্তু আমার ভাইয়ার ব্যাপারে জানে। তার কোনো আপত্তি নেই, জানিয়েছে আমাকে। এখন শুধু তোমার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”

” হলো তোমাদের? চলো এখন বের না হলে দেরি হয়ে যাবে।” ওয়াহাজের কথায় নিজেদের কথা শেষ না করেই বেরিয়ে যায় বেলা আর মৌ।
_____

চারদিকে মানুষের ভিড়। কেউ প্রিয়জনের আসার অপেক্ষায় আবার কারো প্রিয়জন চলে যাবে, শেষসময়ে সঙ্গ দিতে এসেছে। দলবেধে দাঁড়িয়ে আছে নিজেদের মানুষকে নিয়ে, নিজেদের মানুষের জন্য।

বেলা, ওয়াহাজ আর মৌ একপাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। মৌ নিজের ফোনের স্ক্রিনে চোখ বুলিয়ে নিয়ে সহাস্য বলে ওঠে,” ভাইয়া চলে এসেছে। ”

বেলার কানে কথাটি যেতেই এদিক ওদিক তাকিয়ে খুঁজতে থাকে। ওয়াহাজ তার বোনের অবস্থা দেখে মিটিমিটি হাসতে থাকে। মৌকে বলে,” তোমরা থাকো, আমি পানির বোতল নিয়ে আসছি।”

মৌ নিজের আনা পানির বোতল বের করবে তখনই ওয়াহাজ ইশারায় সেটা বের করতে নিষেধ করে।ওয়াহাজের ব্যাপারটা বুঝতে পেরে মৌ আর বোতলটা বের করে না। ওয়াহাজ যেতে শুরু করলে মৌ থামিয়ে দিয়ে বলে,” একটু অপেক্ষা করুন, ভাইয়া আসুক। ভাইয়া আসলে আমিও যাচ্ছি আপনার সাথে।”

মিনিট পাঁচেকের মাথায় ফারাজ এসে পৌঁছায়। এতোক্ষণ ধরে এতো মানুষের মাঝে খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয়েছে তাকে। ফারাজ এসে দাঁড়ালে মৌ বলে,” ভাইয়া, এখানে একটু থাক। আমরা একটু আসছি। কোথাও যাস না যেন। ”

ফারাজ সম্মতিসূচক মাথা নাড়লে ওয়াহাজ আর মৌ হাটা শুরু করে। বেলা চুপচাপ মাথানিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ফারাজ এক নজরে তার দিকে তাকিয়ে আছে।

বেলা মাথা উঁচু করে ফারাজের দিকে তাকিয়ে বলে,” তাকিয়ে আছেন কেন?”
” দেখছি।”
” কী দেখছেন?”
” আপনাকে।”
” আমাকে এভাবে দেখার কী আছে?”
” আপনাকে ছাড়া দেখার কিছুই নেই।”
” দেখার কিছু নেই জন্য দেখছেন?”
” উহু, ভালোবাসি বলে দেখছি। মানুষ এমনি এমনি কাউকে দেখে না। কারণ অবশ্যই থাকে।”
” আপনার কী কারণ?”
” ভালোবাসি।”
” আপনার মনে হচ্ছে না আপনি বেশি ঝুঁকি নিয়ে ফেলছেন? আপনি ভালো একটা ডাক্তার আপনার সুন্দর, উজ্জ্বল একটা ভবিষ্যৎ আছে।”
” আপনার ভবিষ্যৎও নাহয় আমার ভবিষ্যতের সাথে রাঙিয়ে দেব। ”
” আমার অতীত আছে জানেন তো..”
” অতীত যেন ভবিষ্যতে না আসে সেটা শুধু দেখবেন।”

বেলা মাথা নিচু করে নেয়। পরক্ষণেই আবার ফারাজের দিকে তাকায়। ফারাজ তখনো বেলার মুখের দিকেই তাকিয়ে আছে।

বেলার তাকানো দেখে ফারাজ মুচকি হেসে বলে,” আমাকে মিস করবেন না?”
” হু।”
” উহু নাকি হু?”

বেলা একটা চিরকুট ফারাজের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে,” আমি কিছু বলতে পারব না। আপনি বাসায় গিয়ে এটা পড়ে নিবেন।”
” কী এটা?”
” দেখছেন না এটা চিরকুট?”
” সে তো দেখছি। কী হিসেবে চিরকুট পাচ্ছি আমি? বেয়াই? হবু প্রেমিক নাকি প্রেমিক?”
” আপনিই বুঝে নেবেন।”
” এটুকু তো বলতেই পারেন।”
” এরকমই থাকবেন আমি ফিরে আসা পর্যন্ত।”
” মানে প্রেমিক হিসেবে এপ্রুভাল পাচ্ছি?”
” মাসে একবারের চেয়ে বেশি কল দিবেন না। বারো মাসে বারোটা। হিসেবে চার বছরে আটচল্লিশবার কল হয় সেখানে পঞ্চাশটা দিতে পারবেন।”
” মাসের ঊনত্রিশ দিন কী করব? পার্টটাইম গার্লফ্রেন্ড রাখব?”

বেলা এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে ফারাজের দিকে আঙুল তুলে বলে,” জানে মে*রে দেব বুঝলেন? জীবনে আসা দ্বিতীয় মানুষগুলো ভয়ংকর ভালো হয় বা ভয়ংকর রকমের খারাপ হয়৷ কেউ সম্পর্ক ভাঙতে আসে আবার কেউ ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের নতুন মোড় নিতে।”

ফারাজ একটু নিচু হয়ে বেলাকে উদ্দেশ্য করে বলে,” নিশ্চিন্তে ফিরে আসুন আমার হতে। আমি অপেক্ষা করব। ”

বেলার প্লেইনে বসার সময় হয়ে গেছে। বেলার সম্মুখে তিনজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছে। ওয়াহাজ বেলাকে কী কী করতে হবে সব বুঝিয়ে দিয়ে বলে,” মাথা উঁচু করে ফিরে আসতে হবে তোমাকে। দেখিয়ে দিতে হবে একটা মেয়ের জীবন কখনো ডিভোর্সে শেষ হয়ে যায় না। দেয়ালে পিট ঠেকে গেলে হয় ঘুরে দাঁড়াতে হয় নয়তো দেয়াল ভেঙে বেরিয়ে নিজের অবস্থান তৈরি করে নিতে হয়। ”

বেলা মাথা ঝাঁকিয়ে সব মেনে নিচ্ছিল। ওয়াহাজ বেলার মাথায় হাত রেখে বলে,” তোমার ভাইয়া তোমাকে খুব মিস করবে।”

বেলার আর সোজা দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে ওয়াহাজকে জড়িয়ে ধরে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলে ওঠে,” আমিও তোমাদের সবাইকে খুব মিস করব। আমার জন্য দোয়া কোরো সবাই। আর শোনো আমার ভাবিকে ভালো রেখো। সে তোমাকে খুব ভালোবাসে।”

মৌয়ের কাছে থেকেও বিদায় নেয় সে। ওয়াহাজ বোনের কপালে চুমু দিয়ে আরেকটা বার জড়িয়ে ধরে।
দুজনের কাছে থেকে বিদায় নিয়ে ফারাজের দিকে তাকায় বেলা। মৃদু হেসে মন খারাপ চেপে রেখে বলে,” আসছি, ভালো থাকবেন। নিজের যত্ন নিবেন।”

বেলার চলে যাওয়ার দিকে তিনজন একনজরে তাকিয়ে থাকে। ওয়াহাজের চোখ ছলছল করছিল। এতোগুলো বছর সে তার বোনের কাছে থেকে দূরে থেকেছে। আর আজ তার বোন। মৌ বারেবারে চোখ মুছছে। ফারাজ পাশে থেকে বোনকে জড়িয়ে ধরে বলে,” ডোন্ট ক্রাই।”

বেলাকে আর দেখা যাচ্ছে না। হয়তো মিনিট দশেকের মাঝে প্লেইন উড়াল দেবে গন্তব্যের দিকে। ফারাজ হাতে রাখা চিরকুটটা খুলে ফেলে। সেখানে লেখা,” আমার প্রতি আপনার ভালোবাসা আরও গাঢ় করুন। আমি আসব আপনার জন্য, আমি ফিরে আসব। আমি আসব নতুন সম্পর্কের সূচনা করতে। আপনি শুধু আমাকে একটু ভালোবেসে মনের মেঘগুলো কাটিয়ে বৃষ্টি হয়ে ঝরবেন। আমি ফিরব ভালোবাসার মৌসুমে। শুধু একটা ২১ জুন না আমি আমার জীবনের প্রতিটা দিন কাটাতে চাই। আমাদের খুব তাড়াতাড়ি দেখা হোক, আপনাকে ভালোবাসা বাকি।”

প্রবল শব্দে সবাই বাহিরের দিকে তাকায়। প্লেইন ফ্লাই করেছে। ধীরে ধীরে ওপরে উঠতে শুরু করেছে। এই চলে যাওয়া যেন নতুন করে ফিরে আসার নিশানা।

ফারাজ মনে মনে বলতে থাকে,” ” আপনার ছোট্টো এই চিরকুট আমাকে হাজার বছর অপেক্ষা করাতে শক্তি যোগাবে। আপনার এই চিরকুটটা মনের মেঘ দূর করে দিয়েছে। প্রমাণ করেছে, একপাক্ষিক ভালোবাসা সবসময় কষ্ট দেয় না। কিছু কিছু মানুষ ভালোবাসায় ভরসা রাখতে শেখায়। ভালোবাসি আপনাকে, ওয়াজিহা। আমার ওয়াজিহা।”

~ সমাপ্ত

আজকে সমাপ্ত হলো মেঘ বিয়োগের মৌসুম তবে এটার দ্বিতীয় সিজন খুব তাড়াতাড়ি আসবে ইন শা আল্লাহ। চেষ্টা করবেন আজকে অন্তত কিছু গঠনমূলক মন্তব্য করার।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে