#মেঘের বাড়ি☁
#পর্ব-৮
#লেখনীতে_ফারহানা_আক্তার_ছবি
.
.
সোহেল যাওয়ার পর মেঘ মন খারাপ করে নিজের রুমে শুয়ে ছিলো হঠাৎ দরজায় কড়া আঘাত পড়তে মেঘ চমকে ওঠে বলে,” কে ?”
” বউমা আমি দরজা খোলো৷”
শাশুড়ির গলা শুনে মেঘ দ্রুত উঠে শাড়ি ঠিক করে দরজা খুলতেই জায়েদা রুমে ঢুকে বলে,” ভর সন্ধ্যা বেলা ঘরের দরজা বন্ধ না কইরা রাইতের খাওয়ানের আয়োজন তো করতে পারো বউ৷”
” হ আম্মা আমি এখুনি রান্না ঘরে যাচ্ছি৷” মেঘ যেতে নিলে জায়েদা বেগম আবার বলে উঠলো,” আর হুনো বউ ভাত তরকারি একটু বেশি কইরা রানবা তোমার তিন ননদ আর জামাই বাচ্চারা খাইবো৷ ফ্রিজ দিয়া মুরগির গোস্ত বার কইরা রাখছি৷”
” আচ্ছা আম্মা৷” মেঘ ধীর পায়ে রান্না ঘরের দিকে যেতে দেখে তার তিন ননদকে তারা নিজেদের মধ্যে কি বলাবলি করছে আর হাসছে৷ মেঘ সে সবে খেয়াল না করে বড় হাড়িতে ভিজিয়ে রাখা মুরগির গোস্ত নিয়ে রান্না ঘরে চলে গেল৷ সেখানে গিয়ে দেখে মনি প্রায় সব মসলা বেটে রেডি করে ফেলেছে৷ এখন শুধু রান্না টা বাকি৷
মেঘ মুখ বেধে মুরগি রান্না করে৷ একে একে আরও দুই পর তরকারি রান্না করে ভাতের হাড়ি চুলোয় দিয়ে রুমে চলে যায় একটু বিশ্রাম নিতে তৎক্ষনাৎ আবারও শাশুড়ির গলার আওয়াজ পেয়ে মেঘ দ্রুত গিয়ে দেখে তার শাশুড়ি খুব রেগে ফোনে কারও সাথে কথা বলছে৷ ফোনের ওপাশে কে সেটা মেঘ জানে না৷ জায়েদার কথা শেষ হতে মেঘ কে দেখে বলে,” আসছেন নবাবজাদী৷ আপনার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম৷ ”
” আম্মা কিছু কি হয়ছে? আপনি এতটা রেগে আছেন কেন?”
” হেইডা তোমার না জানলেও চলবে৷ হুনো বউ রান্ধন শেষ হইলে আখি,সাথী,মিলার ঘর ঝাড়ু দিয়া গুছায় রাখবা৷”
” কেন আম্মা? আর আজ রাতেই এগুলো করতে হবে? সকালে করলে হয় না আম্মা?”
” না হয় না সকালে আমার মাইয়ারা হেগো জিনিস পত্র লইয়া আইবো আর আইসা ঘর অপরিষ্কার দেখলে কী কয়বো?”
” ওহ তার মানে ননদিনীরা আবার ফিরে আসছে৷ আম্মা আমার শরীর ভালো না আমি রান্না করার পর ঘর পরিষ্কার করতে পারবো না৷ আপনার মেয়েরা এই বাসাতে আছে তাদের কেই বলেন নিজেদের ঘর নিজেদের গুছিয়ে নিতে৷”
” কি কইলা? আমার মুখের উপর কথা কও সাহস তো কম না?”
” দেখেন আম্মা আমি সাহস টাহস বুঝি না৷ আমার শরীর আর কাজ করার সাহ দিচ্ছে না৷ আপনার যদি আমাকে নিয়ে এতই সমস্যা হয় আপনার ছেলে কে ফোন দিয়া বলেন আমাকে যেন বাপের যাওয়ার পারমিশন দেয়৷” জায়েদা কিছু বলবে তার আগে তার তিন মেয়ে হাজির হয়৷
” আম্মা কী হইলো? আমাগো ঘর এহনো পরিষ্কার হয় নাই কেন?”
মেঘ ঠোঁটের কোনে হাসি নিয়ে তার বড় ননদের উদ্দেশ্য বলে উঠলো,” আখি আপা আপনার বাপের বাড়িতে দু’চার খান কাজের লোক নাই যে আপনার বলার সাথে সাথে ঘর পরিষ্কার হয়ে যাবে৷ নিজেদের ঘরে যখন নিজেরা থাকবেন তখন নিজেরাই পরিষ্কার করে নিন৷ আম্মা আমি রান্না ঘরে গেলাম৷ ” মেঘ কথা গুলো বলে গট গট করে হেটে শাশুড়ি আর ননদের সামনে দিয়ে চলে গেল৷ এদিকে রাগে চার মা-মেয়ে ফুঁসছে৷ মুখের উপর ঝামা ঘষে দিয়ে গেল আর তারা কিছু বলতে পারলো না৷
” আম্মা তুমি বড় ভাবিরে কিছু কইলা না কেন?”
” মাইয়ার পাখনা গোজায়ছে আখি৷ পাখনা কাটনের ব্যবস্থা করণ লাগবো৷”
” আম্মা যা করবা তাড়াতাড়ি কইরো৷ দেখতাছো না আজকাই এই রুপ দেখাইলো এর পর কী দেহাইবো আল্লাহ জানে৷”
ছোট বোন মিলার কথা শুনে মেজ বোন সাথী বলে উঠলো ,” আহ তোরা কী শুরু করছিস হ্যাঁ? বড় ভাবি পোয়াতি আর হেরে তোরা বলিস আমাদের ঘর পরিষ্কার করতে? তোগো মাথা ঠিক আছে?”
” দেখ সাথি বড়ভাবি ঝোল টেনে আমাগো লগে কথা কবি না৷ এহন ঘর গুলা কেডা পরিষ্কার করবো?”
” কেন আমরা করমু৷ আর নিজেরা যহন থাকমু তো নিজেরাই নিজেদের ঘর পরিষ্কার করি৷ আর আম্মাও আমাগো সাহায্য করবো৷”
জায়েদা সে কথা শুনে বলে,” হ এখন কোমরের ব্যাথা লইয়া তোগো লগে কাম করমু৷ যা গিয়া ঘর পরিষ্কার কর আমি ওই দিকে যাই দেখি রান্ধন কত দুর হইলো৷ তিন বোন কোমরে ওরনা বেধে কাজে নেমে পড়ে অন্যদিকে জায়েদা রান্না ঘরের দিকে চলে গেল৷
১৬.
রাতের রান্না শেষ করে মেঘ তার বাড়িতে ফোন করে৷ কিন্তু ঘরে নেটওয়ার্ক না থাকায় মেঘ পুকুর পাড়ে চলে গেল৷ দুবার রিং বাজতে শেফালী বেগম কল রিসিভ করে৷
” কেমন আছো আম্মা?”
” আলহামদুলিল্লাহ ভালো মা৷ তুই কেমন আছিস? আর নুরের সাথে জামাইয়ের কথা হয়েছে৷ শুনেছি সবটা৷ শোন মেঘ আল্লাহ যাই দিক না তোমার কোলে যেন সুস্থ বাচ্চা দিক দোয়া করি৷ আর তোমার ফোনে কল কেন যায় না?”
“আম্মা ঘরে নেটওয়ার্ক পায় না৷”
” কতবার যে কল দিয়েছি হিসেব নেই৷ আমার তো চিন্তা হয় মেঘ?”
” আম্মা চিন্তা করো না আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷ ”
” জামাই তো আজ চলে গেছে৷ তুই ওখানে থেকে কী করবি? সোহাগ কে পাঠিয়ে দি চলে আয়৷”
” আম্মা এখনি ছোট ভাইকে পাঠিও না৷ আর কিছুদিন যাক তারপর না ছোটভাইকে পাঠিয়ে দিও৷”
মেঘ কে ঘরে না পেয়ে তার ছোট জা খুঁজতে খুঁজতে পুকুর পাড়ে চলে আসে৷ এসে দেখে মেঘ ফোনে কথা বলছে৷ মেঘ মনিকে দেখে বললো,” আম্মা আমি কাল তোমাকে কল করবো আজ রাখছি৷”
” নিজের খেয়াল রাখিস আর ঠিকমত খাওয়া দাওয়া করিস৷ আল্লাহ তোর হেফাজত করুক৷”
” আল্লাহ হাফেজ৷”
” আল্লাহ হাফেজ৷”
“ভাবি ভেতরে চলো সবাই খেতে বসেছে৷ আমি খাবার বেড়ে দিয়েছি৷”
” আল্লাহ অনেক সময় হয়ে গেছে৷ চলো ভেতরে চলো৷”
মেঘ ভেতরে এসে এসে সবার খাওয়া প্রায় শেষের দিকে৷ মেঘ কে দেখে তার বড় নন্দাই বললো,” ভাবি গোস্তের বাটি টা একটু দিন তো৷ ”
“জ্বী ভাই দিচ্ছি৷”
মেঘ হাতে হাতে সবাইকে খাবার এগিয়ে দিলো৷ পুরুষদের খাওয়া শেষ হওয়ার মেঘ সহ তার শাশুড়ি ননদ জা বসলো৷ সবাই সবার মত মাছ মাংস নিয়ে নিলো৷ মাংসের বাটিতে আর মাত্র চার পিচ মাংস আছে৷ মেঘ যেহেতু মাছ খেতে পারছে না তাই সে সামনা মাংসের ঝোল আর দু’পিস মাংস নেওয়া কথা ভাবতে ভাবতে বাটিতে হাত দিতে তার ছোট ননদ বলে ওঠে ,” ভাবি আসমা(মেয়ে) সকালে গোস্ত দিয়ে ভাত খাওয়া কথা বলছে৷ তুমি মাছ দিয়া খাও গোস্ত রেখে দেও৷”
” মিলা আপা আপনি জানেন মাছের গন্ধ আমার সহ্য হয় না বমি পায় তাহলে আমি মাছ দিয়ে খাবো কী করে? এখানে চার পিচ মাংস আছে আমি দু’পিচ নিচ্ছি বাকি দু’পিস আসমাকে দিয়েন৷ ” বলে মাংস দু’পিস নিয়ে খেতে শুরু করলো৷ মিলা রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে বাকি দুপিস মাংস ফ্রিজে রেখে দিলো৷ খাওয়া শেষ হতে সবাই যার যার মত উঠে যেতে দেখে মেঘ এটো প্লেট এক জায়গায় গুছিয়ে রেখে দিয়ে রুমে যেতে নিলে তার শাশুড়ি হুংকার ছেড়ে বলে উঠলো,” বউমা এটো বাসন না ধুইয়া কই যাও?”
মেঘ একটু হেসে বলে,” আচ্ছা আম্মা আমি এখন নিজের রুম ছাড়া আর কোথায় যাবো বলেন তো?”
” তা জানি না কিন্তু থালা বাসন না ধুইয়া কই যাও?”
” দেখেন আম্মা এই রাতের বেলা পুকুর পাড়ে গিয়ে এত গুলো থালা বাসন ধোয়া আমার পক্ষে সম্ভব না৷”
” তাহলে কীডা ধুইবো আমি?”
” না আপনি কেন ধুবেন? আমরা দুই জা সারাদিন রান্না করবো তা ঠিক আছে কিন্তু আপনার মেয়েরা যে কিছু করবে না এটা তো হয় না তাদের কাউকে বলে এগুলো পরিষ্কার করতে৷”
” কীহ আমার মাইয়ারা ধুইবো?”
” জ্বী, আমরা সংসারের কাজ করতে পারলে আপনার মেয়েরাও কাজ করতে পারবে৷ আমি রুমে গেলাম আম্মা আমার ঘুম পাচ্ছে৷” এত টুকু বলে নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে শুয়ে পড়লো৷ এদিকে জায়েদা বেগম রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলতে লাগলো,” ভাবছিলাম কিছু দিন পর তোরে ঘর থেইকা বাইর করমু কিন্তু না তোর ব্যবস্থা আরও আগে করতে হইবো৷”
জায়েদা সাথী আর মিলাকে ডেকে বলে,” খাইয়া উইঠা গেছো থাল গুলো ধোওন লাগে না?”
” আম্মা আমি এই এটো থালা ধুইতে পারমু না৷” (মিলা)
” আম্মা আমি যাইতাছি৷”(সাথী)
” না সাথী দুই বইনে মিললা ধুইবা৷ আর মিলা থাল ধুইতে না পারলে কাইল সক্কাল বেলা গাট্টি বস্তা লইলা জামাই বাড়ি চইলা যাইবা৷ এই থাকতে হইলে টুকটাক কাম করা লাগবো৷ এইডা মাথায় ঢুকায় লও৷”
এত টুকু বলেই জায়েদা নিজের রুমে গিয়া দরজা বন্ধ কইরা দিলো৷ মিলা রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে সাথীর সাথে গিয়া থালা বাসন গুলা মেজে ধুয়ে ফেললো৷
১৭.
পরের দিন সকাল সকাল মেঘ ঘুম থেকে উঠে সকালের নাস্তা বানিয়ে৷ যেতে নিলে মিলা আখি মেঘের পথ আগলে বলে,” বড়দের তো নাস্তা বানাইলা ভাবি তা আমার মাইয়া আর মিলার পোলার নাস্তা বানাইলা না কেন? যাও এখুনি নাস্তা বানায় দেও ওদের খিদা লাগছে৷”
মেঘ মুচকি হেসে বলে,” বড় ভাবি হই তোমাদের আমাকে হুকুম করার সাহস পাও কোথায়? অনুরোধ করতে পারো বড়জোর৷ যাই হোক পরবর্তীতে এই ভুল গুলা করবে না৷ চুলা গরম আছে গিয়ে নিজেদের বাচ্চাদের জন্য নাস্তা বানিয়ে নেও৷”
” কীহ আমরা বানামু?”
” জ্বী কারণ বাচ্চাটা তোমার৷” পাশ থেকে মেঘের শাশুড়ি আসতে আসতে বলতে লাগলো,” তা বউ মা ওগো বাচ্চা তোমার কিছু হয়না?”
” কেন হয়বো না আম্মা৷ অবশ্যই হয় কিন্তু তার জন্য সুযোগ যে বার বার নিবে আপনার মেয়েরা তা কেন হবে? তারা কেউ হাতে মেহেন্দী পড়ে নাই যে নিজের বাচ্চার জন্য সামান্য নাস্তা বানাতে পারবে না৷ আমি অসুস্থ হয়েও যদি এত গুলো মানুষের জন্য নাস্তা বানাতে পারি তাহলে আপনার সুস্থ মেয়েরাও পারবে তাদের বাচ্চার জন্য নাস্তা বানাতে৷”
মেঘ মনিকে রান্না ঘরের দিকে আসতে দেখে মনিকে বললো,” মনি আপু আমার সাথে চলুন তো একটু কাজ আছে৷”
” আইচ্ছা চলেন ভাবি৷” মেঘ কায়দা করে মনিকে নিয়েও চলে গেলো যাতে ওকে দিয়ে রান্না করাতে না পারে৷
মেঘকে দিয়ে রান্না করাতে না পেরে আখি মিলা দুজনে রেগে রান্না ঘরে চলে যায়৷ তখন ও জায়েদা চুপ ছিলো৷ সকালে সবার নাস্তা করা শেষ হলে আখি সব থালা বাসন ধুতে চলে যায়৷ আর মেঘ মনিকে নিয়ে রান্না ঘরে চলে এসে রান্নার প্রস্তুতি নিতে থাকে৷ হঠাৎ মেঘের ফোনের রিংটনের শব্দ পেয়ে দ্রুত তার রুমে গিয়ে ফোন নিয়ে কল রিসিভ করে৷ ঘরে যেহেতু নেটওয়ার্ক পায় না তাই মেঘ আজ পুকুর পাড়ে না গিয়ে উঠানে চলে গেলো৷
” কেমন আছো বউ?”
” আলহামদুলিল্লাহ ভালো৷ আপনি কেমন আছেন?”
” আলহামদুলিল্লাহ৷ আমার পুচকু কেমন আছে?”
” আপনার পুচকু তার বাবাকে ভিষণ মিস করছে৷”
” তাকে বলে দিও তার বাবাও তাকে খুব মিস করছে৷ শোন বউ বাড়িতে যদি তোমার বেশি সমস্যা হয়তো তোমাদের বাড়ি চলে যেও৷ আমি না হয় সোহাগ কে ফোন করে বলে দিবো তোমাকে নিয়ে যেতে৷”
” ঠিক আছে সেটা না হয় পরে হ….” বাকিটা বলতে পারলো না তার আগে আখি ফোনটা হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে কানে ধরে বলে,” হ্যালো কিডা কইতাছেন?”
” আখি তুই এভাবে মেঘের থেকে ফোন টা ছিনিয়ে নিলি কেন?”
সোহেলের গলা শুনে আমতা আমতা করতে করতে আখি বললো,” আ ,, আসলে ভাই৷” সোহেল আখির কথার মাঝে আবার বলে উঠলো,” আখি তুই ওখানে কী করছিস?তোর না এখন জামাইয়ের বাড়ি থাকার কথা?” আখি কি বলবে বুঝতে না পেরে ফোনটা মেঘের হাতে দিয়ে দ্রুত পায়ে ভেতরে চলে গেল৷ মেঘ ফোন কানে নিয়ে বললো,” এই আপনি কি এমন বললেন যে আখি আপা ফোন দিয়ে ঘরে ছুটে গেলো?”
” তার আগে বলো ওরা ওদের শশুর বাড়ি ফিরে যায়নি কেন?”
” সেটা না হয় আপনার মাকে জ্বিজ্ঞাসা করুন৷”
” না তুমি বলো৷”
” আপনি যাওয়ার পর ওরা আর ফিরে যায়নি৷ যেখানে যেভাবে আগে থাকতো এখনো সেভাবে সেখানে থাকছে৷ আর নিশ্চয়ই সব বলতে হবে না?”
” না মেঘ বলতে হবে না আমি বুঝতে পারছি৷ মেঘ একটা দুইটা বছর একটু সহ্য করো৷ তারপর আমি একে বারে দেশে ফিরে আসবো ইনশাআল্লাহ তখন আর কোন কষ্ট হবে না৷”
” ইনশাআল্লাহ৷”
আধাঘন্টা সোহেলের সাথে কথা বলে মেঘ রান্না ঘরে যেতেই তার শাশুড়ি বলে উঠলো , “কী বউমা আমার আর আমার মেয়েদের নামে নালিশ করা শেষ হলো তবে?”
” কী বলছেন আম্মা? আমি কেন নালিশ করবো?”
“ন্যাকা সাইজো না বউ৷ আমার মাইয়ারা আমার বাড়ি থাকবো এতে কেডা কী কইবো আমিও দেইখা নিমু৷” জায়েদা চিৎকার করে কথা গুলো বলতে বলতে রান্না ঘর দিয়া বের হওয়ার পর মনি এসে বলে,” আখি আপা আইসা বলছে তুমি নাকী বড়ভাইয়ের কানে হেগো নামে নালিশ করছো৷ হেইডা হুইনা আম্মা তোমারে কথা শুনাইলো ভাবি৷”
” কিন্তু আমি তো ওনাকে কিচ্ছু বলি নি৷”
” হেইডা আমি বিশ্বাস করলেও মা মাইয়া করবো না ভাবি৷” মেঘ দীর্ঘশ্বাস ফেলে রান্নার কাজে হাত লাগালো৷
অন্যদিকে জায়েদা তার বড় মেয়ের সাথে কিছু একটা বলে দুই মা মেয়ে হাসতে লাগলো৷
মেঘ দুপুরের রান্না শেষ করে পুকুর পাড়ের সিড়িতে পা রাখতেই হঠাৎ পা পিচলে পুকুরে পড়ে যায়৷ মেঘ সাতার না জানায় পানিতে হাবুডুবু খেতে লাগলো আর গাছের আড়ালে দাড়িয়ে মা মেয়ে সেটা দেখছে আর হাসছে৷ হঠাৎ করে তখনি…….
.
.
.
#চলবে…….