মেঘমেদুর মন পর্ব-০৪

0
598

#মেঘমেদুর_মন [৪]
প্রভা আফরিন

তারুণ্যস্পর্শী সকালে পুকুরের ধার ধরে হেঁটে চলেছে রিমঝিম। গতরাতে বৃষ্টি হওয়ার পর আজ প্রকৃতি শান্ত, শীতল। সূর্যের আলোটাও মিঠে লাগছে। ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধে ডুবে আছে চারপাশ। রিমঝিমের ঠিক পাশেই সচেতন মস্তিষ্কের মানব সঙ্গ নিয়েছে। তাদের যাত্রা গন্তব্যহীন। উদ্দেশ্য গ্রামের মেঠো পথে একটু ঘুরে বেড়ানো। দুদিন হলো গ্রামে এসেছে রিমঝিম অথচ বৃষ্টি-কাদা-জলে আশপাশটা ঘুরে দেখা হয়নি। আজ একপ্রকার জোর করেই বেরিয়েছে। বর্ষা সকাল সকাল স্কুলে গেছে। বাবা নিজ বাড়িটা নতুন করে ভেঙে বানানোর কাজে ব্যস্ত হয়েছেন। খালাও সেদিকেই ব্যস্ত। সুতরাং ও একাই এদিক-ওদিক হেঁটে বেড়াচ্ছিল। কল্লোল তাকে দেখে নিজ উদ্যোগেই সঙ্গী হয়। রিমঝিম পুকুর পেরিয়ে বাড়ির সামনের সরু রাস্তায় উঠে পায়ের গতি রোধ করে। চলনে বাধাপ্রাপ্ত হয় কল্লোলও। প্রশ্নোক্ত দৃষ্টিতে চাইতেই রিমঝিম বলল,
“আপনি না নদীর দেশের মানুষ! নদী কই? খালি তো কাদাজল ভরা খানাখন্দ চোখে পড়ে।”

কল্লোল বুকে হাত গুজে ঠোঁটের কোণে সুক্ষ্ম হাসি জাগিয়ে বলল,
“আপনি এ গাঁয়ে পায়ের ধুলো দিয়েছেন বলে পরিচিতজনরা যেভাবে বাড়ি বয়ে এসে আপনাকে দেখে যাচ্ছে নদী তো আর সেভাবে আসবে না! আপনাকেই কষ্ট করে তাকে দেখে আসতে হবে।”

রিমঝিমের স্নিগ্ধ মুখখানি থমথম করে ওঠে। তীক্ষ্ণ স্বরে বলে,
“আমি বলেছি আমায় দেখতে আসতে? কী ভাবেন আপনি আমাকে? হাঁটতে-চলতে জানি না?”

“তা ভাবব কেন? দিব্যি হেঁটে চলে বেড়াচ্ছেন। তবে আপনি আরামপ্রিয়। তাই সবাই আপনাকে খাতির করতে ব্যস্ত থাকে। প্রকৃতি করবে না। প্রকৃতির কাছে রিমঝিম যা প্রধানমন্ত্রীও তা।”

রিমঝিম আরামপ্রিয় কথাটা সত্যি! বাবার একমাত্র মেয়ে, তারওপর মাতৃহারা, আদরটা তাই একটু বেশিই পায় ও। পাবে নাই বা কেন? তার সমস্ত ভালোবাসা যেমন বাবা ও খালাকে ঘিরে, তেমন বাবা ও খালার সমস্ত ভালোবাসাও তো তাকে ঘিরেই আবর্তিত। তাদের সবটুকু আহ্লাদ পাওয়ার অধিকার কেবল রিমঝিমের একার। তবে কল্লোলের কণ্ঠে কথাটা তার পছন্দ হলো না। লোকটার কথায় সুক্ষ্ম তাচ্ছিল্য ছিল কী! তাকে ননীর পুতুল ভাবছে নিশ্চয়ই! রিমঝিম গম্ভীর হয়ে বলল,
“কোথায় আপনার নদী? নিয়ে চলুন আমায়।”

কল্লোল খেয়াল করল মেয়েটির গম্ভীরতা। ভ্রু-দ্বয়ে ঢেউ তুলে বলল,
“ভ্যান ডাকব?”

অব্যক্ত ক্ষোভটা এবার রিমঝিমের চোখে ভাসে। এই লোক দেখি সত্যিই তাকে অক্ষম ভাবে! দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
“জি না, আমি পায়ে হেঁটে যেতে পারব।”

পায়ে হেঁটে যাওয়াটাকে যতটা সহজ ভেবেছিল রিমঝিম আসলে তা হলো না। সূর্য চড়চড় করছে মেঘমুক্ত আকাশে। ঘামে ভিজে উঠেছে রিমঝিমের মুখ, ঘাড়, গলা। ওড়না দিয়ে মুখমণ্ডল মুছে এদিক ওদিক চায়। ঠোঁটের কোণা দাঁতে কেটে বলে,
“নদী কতদূর? খালি তো হাঁটছেনই।”

কল্লোল থামল। খেয়াল করল মেয়েটির মুখ রোদের তাপে লাল হয়ে গেছে।
“বলেছিলাম ভ্যান ডাকি৷ আপনিই শুনলেন না।”
“দূরত্ব কতখানি সেটাও তো বললেন না।”
“দোষ আমার?”
“অবশ্যই। আমি তো এখানকার ভৌগোলিক অবস্থান জেনে আসিনি।”
“এটা তো পায়ে হাঁটা অল্প একটু পথ।”
“আপনার অল্প একটু পথ অন্যের জন্য বিশাল কিনা বোঝা উচিত ছিল।”
কল্লোল কপালে ভাজ ফেলে বলল,
“আমার মনে হচ্ছে আপনি ঝগড়া করতে চাইছেন।”
“আমার মনে হচ্ছে আপনি আমায় অপদস্ত করতে চাইছেন।”

ঘেসো প্রান্তরের এবড়োখেবড়ো পথের ধারে দুজন মানব-মানবী বাকযুদ্ধে লিপ্ত। বিষয়টা ভালো দেখাচ্ছে না। তারওপর এই মেয়েকে যতদূর চিনেছে, বুঝেছে সে অত্যাধিক নাজুক। জেদে ভরপুর ব্যক্তিত্ব। তারওপর এটুকু হেঁটেই ক্লান্ত হয়ে গেছে। রক্তাভ মুখ, ঘর্মাক্ত কপাল, নাক, থুতনি ও শ্রান্ত চাহনির অধিকারিনীকে অবলোকন করে কল্লোল হাল ছাড়ল। নমনীয় স্বরে বলল,
“নদী বেশি দূরে নয়। ওইযে ওদিক থেকে বাতাস আসছে। নদী সেদিকেই৷ কষ্ট করে দুই মিনিট চলুন। তীরের বাতাসে প্রাণ জুড়িয়ে যাবে। আসার পথে ভ্যানে করে আসবেন।”

রিমঝিম আপোষে মেনে নিল। এতদূর এসে ফিরে যাওয়ার জেদ ধরতে পারছে না। হাওয়াকে শুনিয়ে বলল,
“একটু আস্তে হাঁটবেন। লম্বা লম্বা পায়ের সঙ্গে রীতিমতো দৌড়াতে হচ্ছে আমায়।”

কথাটা শেষ করে রিমঝিম আঁড়চোখে দেখে একবার। কল্লোলের ঠোঁটে ক্ষীণ হাসির রেখা! ওর অসহ্য লাগছে হাসিটা। পুনরায় চলতে চলতে কল্লোল স্বতঃস্ফূর্ত স্বরে বলতে থাকে,
“আপনার হাঁটার অভ্যাস নেই, বোঝা যাচ্ছে। রোজ হাঁটবেন, সকালে বা বিকেলে। এতে শরীরও ভালো থাকবে। অভ্যাসও হবে।”
রিমঝিম কোনো জবাব দিল না। কারণ কথাটা সত্যি। ওর খুব বেশি হাঁটার অভ্যাস নেই। বাড়ির গেইটের সামনেই রিক্সা মেলে। রিক্সা করেই সবখানে আসা-যাওয়া করে। তাই বোধহয় এইটুকু পথ এসে হাঁপিয়ে উঠেছে।

নদীতীরের নিকটে আসতেই বাতাসে ঝাপটায় রিমঝিমের চোখে-মুখে হাসি ফুটল। এতদূর হেঁটে আসার ক্লান্তি নিমিষেই ভুলে গেল ও৷ চোখের সামনে বিস্তৃত খোলা প্রান্তর। রোদের ঝলকানিতে চিকচিক করছে বালুতীর। স্বচ্ছ জলরাশী যেন একটুকরো আকাশকে প্রতিচ্ছবি রূপে ধারণ করেছে নিজ বক্ষে। দেখে মনে হচ্ছে নদীটি যেন প্রকৃতির অঙ্গে জড়ানো নীল আঁচল। বিস্তৃত বালুকাময় তীর যেন আঁচলের রূপালী পাড়। স্রোতের সঙ্গে দোলায়মান সেই নীলাচল। ঠিক যেমন বাতাসে দোলায়মান রিমঝিমের তনু, মন। সে আপনায় বলে ওঠে,
“কী অপরূপ! কী অপরূপ!”

কল্লোল চোখ ফেরায় মেয়েটির দিকে। তারুণ্যদীপ্ত, অপক্ক, সুকুমারী তরুণীর মুগ্ধ চোখে দৃষ্টি থমকায়। তার স্বচ্ছ আঁখিযুগলে যেন নদীরই প্রতিচ্ছবি ভাসে। অকপট মুখখানিতে লালিত্য ছুঁইয়েছে সোনালি কিরণ। বাউণ্ডুলে হাওয়ায় এলোমেলো রেশমি কেশরাশি। কল্লোলও আপন খেয়ালে বলে,
“সত্যিই অপরূপ!”

রিমঝিম সেই কথায় নজর ফেরায় লম্বাটে পুরুষটির দিকে। রোদের প্রখররায় দৃষ্টি ক্ষীণ হয়। চোখের ওপর হাত রেখে দৃষ্টি আড়াল করে আবারো নজরবিদ্ধ করে কল্লোলের চোখে। কল্লোল নিজের মুগ্ধতা মোটেও আড়াল করল না। অত রাখঢাক সে জানে না। আবার আশকারাও দিল না। বলল,
“তীরে নামবেন?”

রিমঝিম মাথা দুলিয়ে আবদার ধরল,
“নৌকায় উঠব। নদীতে ঘুরব।”

“এখন নৌকা!” কল্লোল দ্বিধায় পড়ে বলল, “কাল আসবেন নাহয়। সবাইকে নৌকায় নিয়ে ঘোরাব। বাড়িতে বলে আসিনি। আপনার দেরি হলে আঙ্কেল, আন্টি চিন্তা করবেন।”

“কিচ্ছু হবে না। আমি ম্যানেজ করে নেব।”

রিমঝিমের দুই চোখে আকুলতা। কল্লোল ক্ষণকাল মৌন থাকে। মেয়েটির উচ্ছ্বাসে ভাটা ফেলতে ইচ্ছে করছে না। ও বলল,
“নৌকায় চড়তে হলে অপেক্ষা করতে হবে। ঘাটে বাঁধা নৌকাগুলো সব জেলে নৌকা। ওদের একজনের বাড়িতে গিয়ে অনুমতি নিয়ে বৈঠা আনতে একটু সময় লাগবে।”

“আমি যাই সঙ্গে?”
কথাটা বলেই রিমঝিম ঠোঁট টিপল। কল্লোল তেরছা চোখে চেয়ে হাসল। এইটুকু এসে যে ক্লান্ত সে কিনা আবার হাঁটার বায়না ধরছে! রিমঝিমকে তীরবর্তী এক বাড়ির মাচায় বসিয়ে রেখেই প্রায় ছুটে গেল কল্লোল। ফিরে এসে একটি ডিঙিকে ঘাট হতে অবমুক্ত করে। রিমঝিম যতটা উচ্ছ্বাস নিয়ে নৌকায় চড়তে চেয়েছিল দেখা গেল ওঠার সময় তাতে ছেদ পড়েছে। আতঙ্কিত স্বরে বলল,
“পড়ে যাব না তো?”
“আপনি সাঁতার জানেন না?”
“না।”
“ষোলোকলা পূর্ণ হলো! মাঝনদীতে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেব।”
রিমঝিম ভয়েই পিছিয়ে গেল। কল্লোল ওর ভয় দেখে হাসতে হাসতে বলল,
“নৌকায় উঠবেন বলে দৌড় করিয়ে এখন পিছিয়ে যাচ্ছেন? সাহস আছে? ভরসা করতে পারবেন? পারলে হাত ধরে উঠে আসুন।”

কল্লোল হাত বাড়িয়েছে। রিমঝিম একটু ইতস্তত করে তার হাতে ভর করে গলুইয়ে উঠে বসে৷ কল্লোল ডিঙিটা জলের গায়ে ঠেলে দিয়ে নিজেও চড়ে বসে৷ নৌকা একদিকে কাত হয়ে যায় সঙ্গে সঙ্গে৷ ভয়ে রিমঝিমের অন্তরাত্মা খাঁচা ছাড়া হওয়ার জোগাড়। বিকট চিৎকারে কাঁপিয়ে তোলে ধু ধু প্রান্তর। কল্লোল প্রায় লাফিয়ে ওপর পাশে চলে গেলে নৌকা আবার সোজা হয়ে যায়। বৈঠা ধরে বলে,
“এভাবে কেউ চিৎকার দেয়? আমিই ভয় পেয়ে গেছি।”

রিমঝিম অপ্রতিভ হয়। সূরা ইউনুস পড়ে বুকে ফু দেয়। কোনো জবাব দেয় না। নৌকা এগোচ্ছে শান্ত নদীর বুক চিড়ে। বৈঠার ছলাৎছলাৎ শব্দ কানে আরাম দেয়। ধীরে ধীরে রিমঝিমের সংকুচিত ভাবটা কেটে যায়। স্বচ্ছ জলে হাত ডুবিয়ে বলে,
“আমাদের ওখানে নদী বলতে এক বুড়িগঙ্গা। পানির রঙ কুচকুচে কালো ও দুর্গন্ধযুক্ত। এটার সঙ্গে আকাশ-পাতাল তফাৎ।”

“তারজন্য কিন্তু নগরের মানুষই দায়ী৷ অঞ্চল যত উন্নত হয়, কলকারখানা তত বাড়ে। আর বর্জ্য গিয়ে খালাস হয় বেচারি, অভাগী নদীর বুকে। আবার অবৈধভাবে নদীতীরের জায়গা দখল তো আছেই। দূষণও হচ্ছে আবার নদীগুলো সংকীর্ণও হচ্ছে।”

“ঠিক বলেছেন। পৃথিবীটা মানুষের জন্য। আর মানুষই পৃথিবীর জলবায়ু নষ্ট করছে। পানি দূষণে জলজ উদ্ভিদ ভুক্তভোগী, অন্যদিকে বন ধ্বংস করে বনজ প্রাণীরা বিপন্ন প্রায়। জীবজগতের শ্রেষ্ঠ প্রাণী যেমন মানুষ তেমন সবচেয়ে ভয়ংকর প্রাণীও মানুষই।”

নানান বিষয়ে কথা চালিয়ে যেতে যেতে দুজনের আলাপের জড়তা একসময় কেটে গেল। রিমঝিম খিলখিল করে হাসতেও লাগল মাঝে মাঝে। কল্লোল তাকে ভয় দেখাতে মাঝ নদীতে নৌকার দুলুনি তুলতেও ছাড়ল না। রোদের তাপও ম’রে এসেছে। আকাশে পুনরায় মেঘদ’স্যুরা হানা দিয়েছে। আকাশ দেখে কল্লোল ফিরতি পথ ধরল। ঘাটে ভিড়ে ওই হাত ধরে নামায় রিমঝিমকে। একসঙ্গে চলতে চলতে বলে,
“আপনি আরো আগে এলে হাড়িভাঙা আম খাওয়াতাম। আমাদের রংপুরে হওয়া আরেকটা স্পেশাল জিনিস। এখনো হয়তো বাজারে পাওয়া যাবে কিন্তু সেসব ক্ষতিকারক প্রিজারভেটিভ দিয়ে ঠাসা। না খাওয়াই ভালো। পরেরবার জৈষ্ঠ্যমাসে আসবেন। আমাদের বাড়ির ফল-মূল খেয়ে শেষ করতে পারবেন না।”

রিমঝিম বলল, “আসব।”

ফেরার পথে ভ্যানের জোগাড় করতে পারল না কল্লোল। আকাশ ফুঁড়ে মেঘ বর্ষাতে শুরু করল। তবে স্থায়ীত্ব বেশিক্ষণ হলো না। পথঘাট ভিজিয়ে ছুটি নিল। ওরা আশ্রয় নিয়েছিল পরিচিত এক বাড়ির দাওয়ায়। বৃষ্টি থামতেই বেরিয়ে গেল। বৃষ্টি ঝরে আকাশ তখনো পাতলা মেঘে আচ্ছন্ন। প্রকৃতি স্নিগ্ধ, উজ্জ্বল। বাতাসে ফুরফুরে আবেশ। একে বলে মেঘমেদুর ক্ষণ৷ একসঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে ওদের মনেও স্পর্শ করে সেই মেদুরতা। রিমঝিম খেয়াল করে এবার আর তার ক্লান্তি লাগছে না। বরং মুহূর্তটা ওর কাছে দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠেছে। যাওয়ার সময় দুজনের মাঝে যেমন তর্ক করা ও খোঁ’চা প্রবণতা ছিল তা যেন নদীর পাড়ে ভাসিয়ে দিয়ে এসেছে। এর কারণ কী? রিমঝিম সন্তর্পণে সংবরণ করে নিজ উপলব্ধি। নিজেকে ধিক্কার জানায় মনে মনে। বাড়ির কাছাকাছি এসে পুকুরের শ্যাওলা জমা পথে হাঁটতে গিয়ে বিপত্তি বাঁধে। পা পিছলে যায় রিমঝিমের৷ নিজেকে রক্ষায় মস্তিষ্ক তড়িৎ যা সংকেত দেয় ও তাই করে। আঁকড়ে ধরে পাশের জনের বলিষ্ঠ কাঁধ। কল্লোলও ততক্ষণে একহাতে আগলে নিয়েছে কলমিলতার মতো দেহটিকে। রিমঝিমের ভয়ার্ত, অপ্রস্তুত মুখের দিকে ঝুকে বলে,
“দেখলেন তো! প্যাচপ্যাচে কাদায় কোনো যষ্টি নয়, সাহায্য করল একটি কাঁধ।”

রিমঝিম জবাব দিল না। লোকটা গতকালের কথাটা টেনে এনে কেমন খোঁ’চা দিয়ে দিল! উঠানে এসে রিমঝিম কল্লোলকে ডাকল,
“শুনুন!”

কল্লোল অন্যদিকে চলে যাচ্ছিল। ডাকে ফিরে তাকায়, “হু? কিছু বলার আছে?”

রিমঝিম থমথমে মুখে যন্ত্রচালিত স্বরে ছোটো করে বলল,
“ধন্যবাদ! নদীতে ঘোরানোর জন্য।”

কল্লোল ওর মুখভঙ্গির সঙ্গে শব্দের মিল না পেয়ে অম্লান হাসে। বলে,
“মনে হচ্ছে নিমপাতা মুখে নিয়ে ধন্যবাদ দিচ্ছেন! আমার সঙ্গ এতটাই তেতো ছিল?”

কল্লোলের ঠোঁটে সূচিত হাসিটা এবার রিমঝিমের অধরেও উঁকি দিল। জবাবে বলল,
“উহু, মেঘমেদুর ছিল।”

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে