Monday, October 6, 2025







“মেঘনাদ”পর্ব ১১

“মেঘনাদ”পর্ব ১১

আলিয়া বহুদিন পর, ধরতে গেলে মাস খানেক পর শান্তির ঘুম ঘুমাচ্ছে। এটা পুরোপুরি ঠিক কিনা জানি না। তার শরীর উত্তপ্ত, যেন চুলায় রাখা কড়াই। কিন্তু সে ছটফট করছে না। একদম শান্ত, নিশ্চিন্ত। হয়তো দুঃস্বপ্ন দেখা বন্ধ করেছে। আমার লাগছে, আমি স্বপ্ন দেখতে অপারগ হলেও স্বপ্নই দেখছি। বিশ্বাসও হয় না, ওর আসল গন্ধের ঘ্রাণটা নিতে পারছি, যেন আমি এটার জন্য কতকাল তৃষাতুর ছিলাম। আমার মাথায় কখনও আলিয়ার সুস্থতার ছবি কল্পিত হয়নি। পরিস্থিতি এমন ছিল যে, আমি কিছুরই আশা করিনি। সে তিনদিন যাবৎ একইভাবে ঘুমাচ্ছে। অবশ্য এই তিনদিনের আজকের দিনটায় সে কিছুটা কম উষ্ণতায় এসেছে। তাও তাকে ছোঁয়া যায় না। একবার আসিয়াই এসে তার কাপড় চেঞ্জ করে দিয়ে গিয়েছিল। এরপর সে ওইভাবেই আছে। আমরা তো আসিয়ার মতো ঠান্ডা সত্য করতে পারি না!
এইবার আদিল আর সাবরিনা আমাকে জেরা করলেন। সাবরিনা বললেন, ‘আদিল বলল, আলিয়া তোমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছে। আর তুমি.. ওকে পছন্দ করোই। ওর ভালোবাসার কথা জেনে হয়তো ওকে এখন ভালোবাসতে শুরু করেছ।’
‘এমনটা নয়। আমি ওই ভুলটা করছি না। ওকে মেয়ে হিসেবে… পছন্দ করি। আর কিছু না।’ তাইতো। আমি যাস্ট তার কেয়ারই করি।
‘তাই ভালো। আমরা তোমার অস্তিত্ব লুকিয়ে আগেই নিয়মের বিপক্ষে গেছি, খেয়াল রেখো। তুমি কোনো মানুষকে ভালোবাসলে তোমাকে ধরিয়ে দিতে বাধ্য হব। কারণ তোমাকে কোনো মানুষকে ভালোবাসতে দেওয়ার অনুমতিটা দিতে পারব না। ইউ নো, এটা আগে কখনও হয়নি। আমার ক্ষেত্রে, আমার সঙ্গী উপরে ছিল না বলেই নিয়ম খানিকটা পাল্টাতে হয়েছিল। যাইহোক, তোমাদের সম্পর্ক যাতে বন্ধুত্বেই স্থায়ী থাকে।’ তিনি পূর্বপুরুষ। আমার মানতেই হবে।
আমি মাথা ঈষৎ ঝুঁকিয়ে এক হাত বুকে রেখে বললাম, ‘ঠিক আছে।’
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

আলিয়া চোখ খোলে শুরুতেই দেয়াল ঘড়িটি দেখল। আস্তে আস্তে আমাদের। সে নাকে শ্বাস নিতে পারছে! দেখে আমার ভেতরটায় আনন্দের ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেল। আমাদের সে কিছু করছে না দেখে সকলে মৃদু হাসলাম। সে ওঠে বসতে গিয়ে পড়ে গেল। আমি আর সাবিলা পিঠের নিচে দুইদিক থেকে তাকে ধরে ফেললাম।
‘উঠবে না প্লিজ। তুমি অনেক দুর্বল।’
‘কী হয়েছিল ধ্রুব?’ আমার গলার স্বর ভাঙা কেন?
সাবিলা বলল, ‘নাউ ইউ আর ফাইন।’
দূর থেকে আসিয়া হেসে বলল, ‘আমি এটার জন্যই অতৃপ্ত রয়ে গেছি। যখনই তোর উপর বিপদ আসবে, আমি সাথে সাথে চলে আসব। আমার শরীর দাফন করার কারণে আমি বাকি আত্মাদের ন্যায় বেশিক্ষণ থাকতে পারছি না। সরি। বাই।’ সে উধাও হয়ে গেল।
‘আসিয়া!’
সাবিলা বলল, ‘চিন্তা করো না। সে মুক্তি পায়নি। সে আসতে পারে।’
‘সাবিলা, আমার শরীর এতো উত্তপ্ত কেন?’
আদিল বলল, ‘হয়তো তোমার কাছ থেকে খারাপ আত্মাটির প্রভাব পরিপূর্ণভাবে কেটে যাচ্ছে।’
ক্ষিধে লাগায় সে ঠোঁট কামড়াল, ‘কয়দিন খাইনি?’
‘তিনদিন।’
তার সামনে পায়েস আর তার আগের “সাধারণ খাবার” রাখলাম। সে বড় বাটির ঝাল ডিন ভাজার দিকেই এগিয়ে গেল। আমরা সবাই উদ্বিগ্নতা বোধ করলাম।
পাকুরা খেয়ে তার ঝাল লাগল। ঝালের কারণে সে আমার ঘাড় কামড়ে ধরল। আমার ব্যথা লাগে না। আমরা একত্রে সকলে জয়ের হাসি হাসলাম। দুইজোড়া ডানা তাকে বাতাস করতে শুরু করল। সে পায়েস খেতে লাগলাম। তার গরম লাগায় ফুল স্পিডে ফ্যান ছেড়ে দেওয়া হলো।
সাবরিনা এলে উঠে গেলাম। তিনি বললেন, ‘এখন কেমন লাগছে?’
‘উত্তাপ… প্রবল উত্তাপ অনুভব করছি।’
‘ঠিক হয়ে যাবে। অলরেডি তিনদিন পার হয়ে গেছে। এর আগে তুমি আরও বেশি উত্তপ্ত ছিলে। আজকের দিনের ভেতর হয়তো ঠিক হয়ে যাবে।’
‘আমি বুঝি অনেককিছুই মিস করেছি। কী হয়েছিল? কে ছিল লোকটি?’
‘তোমার মা বোধহয় একদা অনেক পীর-ফকিরের তাবিজ লাগিয়েছিল। তাদের মধ্যে কিছু নাস্তিক খারাপ লোকও ছিল। হয়তো তাদের তাবিজগুলো তোমার মায়ের ওপর মানসিকভাবে প্রভাব ফেলেছিল। এমন সময় ওই বীভৎস আত্মাটি তোমার মায়ের শরীর ধারণ করার জন্য তোমার মাকে উপযুক্ত পাওয়ায়, তার শরীরে প্রবেশ করেছিল। তোমার মা বোধহয়, তোমার মতোই স্ট্রং মাইন্ডেড আর সাহসি ছিল। নইলে এমন একটি খারাপ জিনিসের বিরুদ্ধে বেশিদিন লড়তে পারত না। যাইহোক, ওই বীভৎস লোকটি একজন রেপিস্ট ছিল। তার যাবজ্জীবনে সে অনেকগুলো মেয়ের ধর্ষণ করেছে। সে খারাপ জিনিসের উপাসনাও করত। শেষে তার দ্বারা ধর্ষিত মেয়েদের মাঝে একজন তাকে মেরে ফেলে। ইয়ে… নগ্ন অবস্থায়। তার লাশটা পচে যাওয়ার পরও তার আত্মা তৃপ্ত হলো না। সে কাউকেই দেখা দিতে পারত না। তবে তোমার মা’য়ের মতো মেয়েদের দেহ সে ধারণ করতে পারত। সে তা করে এই যাবৎ অনেক অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে। তোমারও করতে চেয়েছিল। ভাগ্যিস, সময় থাকতে আসিয়া তোমাকে উদ্ধার করেছে। আসিয়া অনেকটাই পবিত্র। ওই শক্তির বিরুদ্ধে সে লড়তে পেরেছে। সে খুব বুদ্ধিমত্তার সাথে তার ঠান্ডা প্রভাবটা কার্যকর করে ওই লোকটির শক্তি কমাতে বাধ্য করেছে। লোকটি অবশ্য ধ্বংস হয়নি। কিন্তু তার মাঝে এখন আর কোনো শক্তি বাকি রইল না যে, সে মেয়েদের শরীরে প্রবেশ করতে পারবে কিংবা ওই কতিপয় মেয়েদের দেখতে পারবে যাদের মস্তিষ্ক তোমার আর তোমার মায়ের মতোই।’
‘এর সাথে তাবিজের সম্পর্কটা বুঝলাম না।’
‘তোমার মা গর্ভধারণ করার জন্য অনেককিছু ট্রাই করেছিল। অথচ তুমি গর্ভে এসে গিয়েছিলে। ওসব খারাপ তাবিজ তোমার মায়ের সাথে সাথে তোমারও মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলেছে। আর এই প্রভাবটির কারণেই লোকটি বাস করার জন্য তোমাদের দু’জনের শরীরকে উপযুক্ত পেয়েছিল।’
আদিল বলল, ‘সাবরিনা, এখানে কিছু ইন্টারেস্টিং ব্যাপার আছে। লক্ষ করেছ কিনা জানি না। আমি জীবিত থাকতে কিছুটা বদমেজাজি ছিলাম। অতৃপ্ত হওয়ার পর আমার কাছ থেকে ভ্যাঁপসা গরম বাতাস বেরুত। এই বাতাসে সবারই দম গুটে আসার উপক্রম হতো। আসিয়ার ক্ষেত্রে দেখ, সে হয়তো খুবই শান্ত একটি মেয়ে ছিল, যার দরুন সে খুব ঠান্ডা বাতাসের ওপর নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে। আর এই লোকটি, সে তার জীবনে এক নোংরা লোক ছিল বিধায় পরের অতৃপ্ত জীবনে বীভৎস গন্ধ পেয়েছে। আর এসবের মাঝে একটা ব্যাপার হলো, তাদের শরীর পচে যাওয়ার কারণে বা পচতে শুরু করার কারণে তারা মুক্তি পেয়েও আর দেহে প্রবেশ করতে পারেনি। তাদের আত্মা হয়তো রয়ে যাবে।’
সাবিলা বলল, ‘আমি তোর জন্য একটি কাপড় এনেছি। একবার বলেছিলি, আমাদের সাদা কাপড়গুলো তোর খুব ভালো লাগে। আবির এগুলো যেখানে সেলাতে দেয়, ওখানে যেন তোর জন্যও একটি সেলাই করতে দিই। লম্বা গাউন নয়। তবে ফ্রক। জিন্সের সাথে খুব ভালো মানাবে।’
সে প্যাকেট খুলে খুব খুশি হলো। কাপড়টি আসলেই সুন্দর। আলিয়া আমাদের দিকে তাকানোয় সাবিলা ইশারায় আমাকে ডাকল। সে বলল, ‘নাও, তোমার বয়ফ্রেন্ড এসে গেছে।’
অনুমান মতোই সবাই হাসি বুজিয়ে অদ্ভুতভাবে তাকাল। সাবরিনা সাবিলার দিকে কড়া দৃষ্টিতে তাকালেন। সাবিলা ‘সরি’ বলে বলল, ‘তোমার বাবার আসার সময় হয়ে আসছে। আমাদের যেতে হবে।’
তারা চলে যায়।
‘সাবরিনা ওভাবে সাবিলাকে শাসালেন কেন?’
‘আমাদেরকে ওই বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড বলার ব্যাপারটা মোটেও ঠিক নয়। তাই তিনি ওভাবে ভড়কে উঠেছেন।’
আমি দুষ্টুমি করল, ‘তুমি অন্য ভুবনের বলে কি আমরা তা হতে পারব না?’
সে কথাটি গভীরতার সাথে বলেনি। আমি বয়ফ্রেন্ড হতেই পারি, আক্ষরিক অর্থে। কিন্তু এটার পারমিশন নেই। ওর জানা উচিত। আমি শান্ত ভঙ্গিতে সিরিয়াস হয়ে বললাম, ‘সবকিছু ছেলেখেলা নয় আলিয়া। আমরা একবার যাকে ভালোবাসি, তাকে মন থেকে সহজে বের করতে পারি না। দেখ, সাবিলা আর আবির আলাদা থাকে। তারা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেই এটুকু ভাগ্য পেয়েছে। আমার ভাগ্য নেই। মানে আমি এখানের কাউকে সঙ্গী করতে পারব না। কারণ সাবিলা মানুষ হওয়ায় তাকে নিচে রাখার অজুহাত দেওয়া যায়। আমাকে কীভাবে দেওয়া যাবে!’
তার খারাপ লেগেছে, তা তার মৌনতায় প্রকাশ পাচ্ছে। আমি অপরাধ বোধ করলাম। তাকে কী বলা উচিত? কিছু একটা বলা উচিত। সরাসরি দূরে থাকতে বলে দেওয়া বা.. আমার প্রতি ফিলিংসটা কমিয়ে ফেলা। মানুষেরা তো শেষেরটা পারে।
আমি তারর জন্য রান্না করতে গেলাম। ঘণ্টাখানেক পর রান্না শেষ হলো। অভ্যাসবশতই দেড়টার দিকে তার রুমে গেলাম। দরজার কাছে গিয়েই আমি চোখ নামালাম। আলিয়া সামান্য ইতস্তত করেছি। সে সাবিলার দেওয়া কাপড়টা পরেছে। হাতগুলো ত্রিকোয়ার্টার। কাপড়ের শেষপ্রান্ত হাঁটুর একহাত উপরেই পড়েছে। তার খোলা পা’গুলো দেখার আগেই চোখ সরিয়েছি। তার হয়তো অনেক গরম লাগছে। চুলও ভেজা। আমি তাকে আশ্বস্ত করতে খাবার নিয়ে গেলাম চোখ অন্যদিকে রেখে। সে অন্যদিকে মুখ করে রইল। শেষের কথাবার্তার রেশ এখনও তার মুডে রয়ে গেছে।
আমি কিছুটা টেনে টেনে বললাম, ‘আমি ভেবেছি, এতদিন আমরা দূরে থাকায় তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরবে।’ চাইলাম, শেষবারের মতো একবার আমায় জড়িয়ে ধরো। এখন থেকে আমাদের দূরত্ব তো বাড়াতে হবে।
নাক টানার শব্দ হলো। সে ফুঁপিয়ে কাঁদছে, তার কাঁপা ঠোঁট দেখে বুঝলাম। ‘তুমি কি কাঁদছ?’ রাগ করার কারণে নাকি অন্যকিছু? ‘এই, আমি উত্তাপ সইতে পারব। সত্যি!’
সে আমায় ঝাপটে জড়িয়ে ধরল। তার গন্ধটা.. কোন একটা ফলের মতো। কি মিষ্টি! তার এই রক্তমাংসের শরীরটাকে কবে বুকে আগলে রেখেছি, মনেই পড়ছে না। তার মাথাটা আমার বুকেই। তার মাথায় চোয়াল আর গাল চেপে রেখে তার পিঠের চারিদিকে হাত বুলালাম। এটা সুস্থ আলিয়াই। কোনো স্বপ্ন নয়। সে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। তার গায়ের রঙের উজ্জ্বলতা ফিরেছে। তিনদিন ঘুমানোর কারণে চোখের নিচটা প্রায় ঠিক হয়ে গেছে। ওর থেকে কোনো দুর্গন্ধ বেরুচ্ছে না! আর.. আর আমরা আধাঘণ্টারও বেশি জড়িয়ে ধরে রইলাম। অবিশ্বাস্য! আসিয়াকে অসংখ্য ধন্যবাদ। কিন্তু.. আমি করছিটা কী? সে ভালোবাসতে চাইলে আমি কি তা দিতে পারব? আমি তার যাস্ট বন্ধুই হতে পারব। অজুহাত করলাম, ‘খাবার ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।’
সে হুঁশে এলো। আমাকে এক পলকে ছেড়ে নীরবে খেতে বসে গেল। সে খেয়ে ওঠবার পর একসময় বললাম, ‘শুনো।’
সে তখন শুয়েও পড়ল, যখন আমি একইভাবে বিছানায় বিপরীতে মুখ করে বসে রইলাম। কথাটা বলতে সাহস জোগাচ্ছি। ‘হ্যাঁ, বলো।’
‘তুমি আমার সম্বন্ধে জানো না এমন কিছু বাকি আছে বলে মনে হয় না।
কারও মনের অবস্থা সময়-সুযোগ কিছুই বুঝে না। তা আপন তালেই চলে। আমার লাগছে, আমি এতদিন তোমার অতি নিকটে থেকে অনেক ভুল করেছি। তোমার মনের যা হয়েছে, তার জন্য ধরতে গেলে আমিই দায়ী। মায়ের এতো নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আমি তোমার আশেপাশে থেকেছি। আর এখন.. আমি তোমার বন্ধুর চেয়ে বেশিকিছু হতে পেরে খুশি হওয়া উচিত হলেও হতে পারছি না। আমি ওই যোগ্য নই। আমি মানুষ নই।’
দাঁত চেপে সে বলল, ‘তাহলে তোমার এখানে না থাকাটাই উচিত। তাই না?’
কী বলব আমি? আমি তো থাকতে চাই। ‘কলেজে কবে থেকে যাবে? তোমার উষ্ণতা সহনীয় পর্যায়ে এসেছে।’
‘আমি কলেজে আর যাব না।’ কথাটা নিচুস্বরেই বলল, যেন আমি নেই।
‘এমনটা হয় নাকি? প্লিজ, আমার কারণে নিজের ক্যারিয়ার বরবাদ করো না।’
সে ঠোঁটের ফাঁকে বলল, ‘ঠিক আছে।’
একটিবারও তার সাথে চোখাচোখি হয়নি। আঙ্কেল ফিরে এলেন। তিনি আমাকে অজস্র বিনয় নিয়ে ধন্যবাদ জানালেন, আলিয়াকে সুস্থ দেখতে পাওয়ার জন্য। আমার যাওয়ার সময় হয়েছে। আমি ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে বাইরে এলাম। আলিয়া কিছুই বলল না। হয়তো একটু রেগে আছে। আমি যদিও হাসিমুখে বিদায় নিলাম, ওর ওই বিষাদমাখা রাগী চেহেরাটা বারবারই মনে পড়ায় ভেতরটা ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যাচ্ছিল।
আমার দিনরাতগুলো কীভাবে কাটল, ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমার পুরো অস্তিত্ব কেমন নড়বড় হয়ে পড়েছে! নিজেকে আশ্বাস দিলাম, সময় গেলে আলিয়া সেরে উঠবে। আমরা সাধারণ বন্ধুর ন্যায় আচরণ করব।
সে কলেজে যেতে শুরু করল। আমার সাথে কথা বলা তো দূরে থাক, ফিরেও তাকাল না। অবশ্য আমি অন্তরঙ্গ হতে চাইলে ক্লাসমেটের ন্যায়ই কথা বলেছে, যেন আমাদের পরিচিত কেবল ক্লাসেই। আমি ভাবলাম, সে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু ছয়টা দিন পার হয়ে গেছে। সে আমার সাথে এখন তো কথাই বলছে না। আজও কলেজে যেমনটা এসেছে, তেমনটাই চলে গেল। লাগল, কেউ যেন হাতুড়ি দিয়ে আমার ভেতরের নম্র সীসাটা প্রবল ঘৃণা নিয়ে চুরমার করে ভেঙেছে। আমি আহতের ন্যায় বাসায় ফিরে এলাম। রুমে ঢুকে যেই দরজা বন্ধ করলাম, আর খুলিনি। কেউ অবশ্য জানেও না আমি বাসায় আছি কিনা। রাতটা আমি একভাবে বসে থেকে কাটাচ্ছি। কারণ আগে জঙ্গলে কিংবা আশেপাশে ঘুরে মানুষ এবং তাদের ভাবনা দেখে যে মজাটা পেতাম, এখন তা পাচ্ছি না। আমার সম্পূর্ণতা অস্তিত্ব জুড়েই একটা অতি সাধারণ মেয়ে আলিয়া, যার কোনো অলৌকিক ক্ষমতা নেই। যে কিনা ভিন্ন জাতের, বৈচিত্র্যপূর্ণ জাতের। আমার কেবল এখন বসে ছোট বাচ্চার ন্যায় পা ধরে কান্না করাটাই বাকি। আমি ভুলেই গেলাম, আমার এতো বড় একটা শরীর আছে, যা দেখতে আবিরেরই সমতুল্য। এতোবড় একটা ছেলেকে কান্না শোভা পায়? তড়িঘড়ি করে জানালা দিয়ে বেরিয়ে জঙ্গলে গেলাম। আমি সত্যিই কান্না করলাম। মনের ভেতরেই। হঠাৎ মা-বাবার আওয়াজ একসাথে পেলাম, ‘ধ্রুব…’ অনেক সুন্দর করে ডাকলেন আমায়। আমিও তদ্রূপ টেনে বললাম, ‘হ্যাঁ…’
‘কাঁদছ কেন?’
‘আমরা কাঁদতে পারি না।’
‘আমাদের কান্না আছে, যেটা তুমি এখন করছ।’
তখন বাবা বললেন, ‘আমি তোমাকে বলেছিলাম, সে মেয়েটিকে ভালোবেসে ফেলবে।’ তাহলে আমি তাকে ভালোবেসে ফেলেছি! ‘মনুষ্য জাতির মানবিক শক্তি আমাদের চেয়ে বেশি। তাইতো তারা শ্রেষ্ঠ। সে ধ্রুবকে এতোই প্রভাবিত করেছে যে, সে ওর এতো সুন্দর একটা সঙ্গী পরীকে ফেলে ওই সাধারণ মেয়েকেই ভালোবেসেছে।’
‘কী আর করার আছে? অনর্থক হয়েই গেছে। সে পৃথিবীতেই আজীবন থাকুক। যদি সুযোগ হয় আলিয়াকে তার এখানের সঙ্গী করে ফেলার চেষ্টা করব।’ ঠিক আদিলের মতোই, মৃত্যুর পর। তাহলে আমরা সাথে থাকতে পারব। আমি খুশিতে আটখানা হয়ে গেলাম।
বাবা বললেন, ‘কিন্তু.. আমরা দু’জন তোমার মা-বাবা পরে, আগে পূর্বপুরুষ। তোমরা বংশ বিস্তার করবে না, এই আমাদের নির্দেশ।’
আমি মাথা অনেকটাই নিচু করে বুকে এক হাত রেখে পূর্বপুরুষদ্বয়ের আজ্ঞা পালন করবার সায় দিলাম। তাদের হাসিময় কিন্তু বিষাদিত মুখখানা মস্তিষ্ক থেকে মুছে গেল।

পরিশিষ্ট:

পরদিন ছুটি শেষে আমি এককালের মতোই অন্য ভুবনের সামনে তার জন্য দাঁড়িয়ে রইলাম। কিন্তু আলিয়া আমার পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। আমি তবু বললাম, ‘আলিয়া, আমি মজিদকে পাঠিয়ে দিয়েছি। আজ তোমায় আমি ড্রপ করে দিই?’
‘না থাক। আমি সিএনজি করে চলে যাব।’
‘কী বলছ তুমি?’
সে চলে গেল। আমি দাঁড়িয়ে রইলাম। সে কি বুঝছে না, তার এই ব্যবহারে কতটা কষ্ট পাচ্ছি? সে কি সত্যিই আমাকে তার মন থেকে সরিয়ে দিতে শুরু করেছে? আমি চারিদিকটা আঁধার দেখতে শুরু করলাম। এ হতে পারে না। আমরা মন কেবল একজনকেই দিতে পারি। আমি সর্দার নই, যাঁর মন নেই বা কাউকে ভালো না বেসে যিনি থাকতে পারেন। আমি নিরুদ্দেশ হয়ে গেলাম। কেউই জানে না, আমি জঙ্গলে আছি… শেষবারের মতো। আমার ফিরে যাওয়া উচিত। তাছাড়া পরিণয়ের সময়ও হয়েছে। ওই টকটকে লাল নাকওয়ালিকে বিয়ে করে ফেলব। তাছাড়া তার কীই বা আসে যায়? খুব কম সময়ই সে আমার সাথে কাটিয়েছে, যার দরুন সে আমাকে ভালোবাসেনি। আমি তাকে বাধ্য করব, আগামীতেও আমাকে ভালো না বাসতে। কেবল সঙ্গী হয়েই থাকব। আমি এক মুহূর্তও পৃথিবীতে থাকতে পারছি না। খুব কষ্টদায়ক! যাকে চেয়েছি, তাকে পাচ্ছি না। সে ভুলে গেলেও তাকে আমি ভুলতেও পারব না। তাছাড়া আমি দেখতে পাচ্ছি, আলিয়া, আমার ভালোবাসা, খুব সুন্দর একটা জীবন গড়ছে। সে প্রতিষ্ঠিত হয়ে একটা মানুষকে বিয়ে করছে। তার সংসারটা খুব সুখের। স্বামীর চিহ্ন হিসেবে তার বাচ্চাকাচ্চা… আমি আর ভাবতে পারলাম না। আমি যতই আকাশি লোক হই না কেন, আলিয়াকে অন্য কারও সাথে ভাবতে ঈর্ষা তো জাগছেই। ওই ছেলেটা নিশ্চিত ভাগ্যবান কেউই হবে।
আমি কারও আওয়াজ শুনলাম। হয়তো আলিয়া সাবিলার উড়োজাহাজের সওয়ারি করছে। হাসলাম। তার অন্তত এমন কেউ আছে, যে কিনা খুব অন্তরঙ্গ হয়ে আজীবন তার পাশে থাকবে। হাসলাম, তৃপ্তি নিয়ে, শেষবার তার আওয়াজ শোনায়। আওয়াজটা একসময় মিলিয়ে গেলে আমায় বিষণ্ণতা গ্রাস করল। সূর্যোদয়ের খুব আগেই মা’কে আসতে বলতে হবে। তখন হয়তো এই বিষণ্ণতা ঢাকা পড়বে। কিন্তু এমন সময় মাটিতে আমার সামনে দু’জোড়া পা দেখলাম।
সাবিলা বলল, ‘কী হয়েছে?’ আমি নীরবে দাঁড়ালাম। সে ঘাবড়ে উঠল, আমার চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে, যা সে মস্তিষ্ক থেকেই পড়েছে। মুখে বলল, ‘তোমাদের মাঝে ঝগড়া হয়েছে নাকি?’
আলিয়ার দিকে একপলক তাকালাম। অবিশ্বাস্য! তাকে নজরকাঁড়া সুন্দর দেখাচ্ছে! একদম অমানবিক। সে সাবিলার মতো লং একটা সাধারণ গাউনই পরেছে, যার সামনের দিকে মাঝ বরাবর খোলা। হাঁটলে হয়তো নীল জিন্সটা দেখা যাবে। তার হাত, পা, খোলা লম্বা চুল আর মুখখানা কতই না সুন্দর দেখাচ্ছে! তখন আমার মন বলল, আমরা যাকে ভালোবাসতে শুরু করি, কেবল সেই ঠিক এভাবে আমাদের জন্য অভাবনীয় সুন্দর হয়ে দাঁড়ায়। ঠিক এই সময়, আলিয়া আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে সুন্দর মেয়েটি। আমার চোখ অমানবীয় হওয়ায় হয়তো তার সবকিছু আমি ঝিকমিক করতে দেখছি, যেন ঐশ্বরিক দ্যুতি ছড়াচ্ছে এই মেয়েটি। আমার সকল ইন্দ্রিয় এই সৌন্দর্য দেখতে জেগে উঠল, আগ্রহ প্রকাশ করল। কিন্তু সে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছে, ‘আমাদের এতদিন একসঙ্গে থাকাটা কিনা ভুল ছিল!’
ওহহো, সে তো দূরত্ব বাড়ায়নি। বরং সেদিনের আমার কথাটাই তার গায়ে লেগেছে। প্রেয়সী, তুমি ভুল বুঝছ। তোমার সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্তই শ্রেষ্ঠ ছিল। আমি কেবল আদিলদের আদেশ পালন করছিলাম।
সাবিলা নীরবে সবকিছু আমার মাইন্ড থেকে জেনে নিয়ে বলল, ‘অনর্থ হওয়ারটা হয়েই গেছে। তোমরা দুইজন এখানে থাক। আমি যাচ্ছি।’
সাবিলা আঁধারে মিলিয়ে গেল। আলিয়া ব্যর্থ হয়ে তার পিছু নিতে লাগল, ‘সাবিলা, কই যাচ্ছিস আমাকে একা ফেলে? আমি বাসায় কী করে যাব?’
আমি তার সামনে গিয়ে দেয়াল হয়ে দাঁড়ালাম।
‘নিজের শক্তি দেখানো বন্ধ করবে? আমায় যেতে দাও।’
‘আগে আমার কথাটি শোন।’
সে দাঁড়িয়ে পড়ল। আমি মাটিতে নেমে দাঁড়ালাম। ‘সাবিলার কাছে যাচ্ছ নাকি আমার কাছ থেকে পালাচ্ছ?’
‘তাতে তোমার কি!’
তার এহেন আদুরে রাগে হাসলাম। তার হৃদপিণ্ডের ধুকপুকানি লক্ষ করে ফিসফিসিয়ে বললাম, ‘অনর্থ হওয়ারটা হয়েই গেছে।’
‘সাবিলা কথাটি কেন বলল?’
আমি তার অনেক কাছে গেলাম। তার নিচু থাকা মুখটা দুইহাত তার গালে দিয়ে তুললাম। ‘আমার মন পড়ে বলেছে। তোমার আগে ভুলটা আমিই করেছি। আমি এতদিন তোমার কাছ থেকে দূরে থেকে সবকিছু বুঝেছি, কেন আমি তোমার এতো কেয়ার করি। আমি.. আমারও সেই রোগটি হয়েছে, যেটা তোমার হয়েছে। আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি যে, তুমি দূরে থাকলে কষ্ট পাই। আমি সবসময় তোমার পাশে থাকতে চাই। তুমি কী করো, কী ভাবো একটা কিছুও মিস দিতে চাই না।’
‘যদি আমি তোমাকে এখন ভালো না বাসি?’
‘হতেই পারে না।’ আমি হেসে তার হাতটা নিলাম। ওই হাতটা কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে অনুভব করে তার গালে স্পর্শ করালাম। আমি আশ্চর্য বনে গেলাম। এতটা খুশি আগে কখনও হয়নি। আমাকে নিয়ে এই জায়গায় কত ভালোবাসা! আমি যাতে শাস্তি না পাই, সেজন্যই হয়তো সে দূরে সরে গেছিল।
‘তোমার হৃদস্পন্দনই জানান দিচ্ছে, তুমি আমাকে কতটা ভালোবাসো। তোমার ভালোবাসা সাধারণ নয়। যে আমাকে আঘাত না করার জন্য নিজেই কষ্ট কাঁধে নিল, সে দুইদিন পর ভালোবাসা কমিয়ে ফেলতে পারে না। তুমি তো একদমই না..’
‘এটা হওয়ারই ছিল। এখন কী হবে? আমাদের ভবিষ্যৎ কেমন হবে?’
‘জানি না, তবে এতদিন যেভাবে লুকিয়ে থেকেছি, এখনও তোমাকে নিয়ে তেমনটা থাকতে পারব। একটা খুশির কথাও হলো, আমাদের কেউ তোমাকে পড়তে পারে না। আমরা.. বাকি মানুষের মতো থাকব।’
‘সত্যি?’
‘হ্যাঁ।’
সে লাফিয়ে উঠে আমার ঘাড়ের পেছনে হাত দিয়ে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। ‘ধ্রুব, তুমি জানো না। এই মুহূর্তে আমার চেয়ে অধিক সৌভাগ্য আর কারও নেই।’
‘আমারও। আমি ভাবিনি, আমার কপালে বিজলীর চেয়ে অধিক ভালো কেউ আছে।’
তারপর? আমাকে নিয়ে সে তার বাসায় গেল। আঙ্কেল আমাকে ডিনার করতে বললে আমি না করে বাসায় চলে আসি। রাতের বেলায় ছটফটানো শুরু হলো। আমি যেটুকু আলিয়ার প্রয়োজন, সেও সেটুকু আমার প্রয়োজন। সে বিছানায় শুয়ে থেকে মৃদুভাবে বলল, ‘ধ্রুব।’
‘আমি এখানে আছি।’ আমি দৃশ্যমান হলাম।
সে লাফ দিয়ে বিছানা ছেড়ে এলো। ‘আমার ঘুম আসছিল না।’
‘শিসস..’ আমি ফিসফিস করে বললাম, ‘আসতে কথা বলো।’
‘ভাগ্যিস বেলকনির দরজাটা খোলা রাখলাম। নইলে আচমকা তোমার সুগন্ধ পাওয়ার চেয়ে বেশি খুশি আমি হতে পারতাম না।’
‘না ঘুমিয়ে এতক্ষণ কী করছ? সাড়ে এগারোটা বাজছে।’
‘ঘুম আসছে না। আমার পাশে শুবে? প্লিজ?’
আমি বিছানায় তার পাশে শুলাম। মাঝখানে অর্ধহাত জায়গা রেখেছি। বামহাতটা তার কোমল ডানহাতের ওপর রেখে চোখ বন্ধ করলাম। আহ্! তার হৃদস্পন্দন। আমার ক্ষেত্রে আমরা কানেক্টেড। আমি চোখ বন্ধ রাখা অবস্থায় মিটিমিটি হাসলাম।
‘কী হয়েছে?’
‘তোমার হৃৎপিন্ড অনুভব করছি। ভাবলেই খুব ভালো লাগে যে, এটার দ্রুততা আমার কারণেই বেড়েছে।’
সে তার বামহাতটা আমার বুকের উপর রেখে বিস্ময়ে বলল, ‘তোমার হৃদস্পন্দন একদম মানুষের মতো হয়ে গেছে। আমি কিন্তু সারারাত এটার আওয়াজই শুনব।’
‘না, ঘুমাও।’
আমার কারণে সে ঘুম মিস দেবে? আমি তো সবসময় তার পাশে থাকব। তৎক্ষণাৎ নিচুস্বরেই একটা ইংলিশ গান গাইতে শুরু করলাম। সে চোখ বন্ধ করল। আমিও আলাদা এক রাজ্যে ওর সাথে প্রবেশ করলাম, কেমন এক ঘোরের। এখানে মেঘ আছে, বৃষ্টি আছে, সূর্য নেই। তবু আমরা একে অপরকে ভালোবেসে যাওয়ার পণ ধরেছি, এই আশায় একদিন সূর্য দেখা দেবেই।
(সমাপ্ত..)
লেখা: ফারিয়া কাউছার

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ