চোখের সামনে রক্তশুন্যতায় মৃত স্ত্রী শুয়ে আছেন, পাশেই বসে আছেন স্বামী মোগরব আলি। কালকে এই সময়ে মেয়েটি উঠানে বসে হোটেলের রান্নার যোগান করছিল, কি ছুটাছুটি তার। আর এখন কেমন চুপচাপ শুয়ে আছে,দেখে মনে হচ্ছে গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন।
এইতো কিছুক্ষণ আগেও কেমন বাচার জন্য ছটফট করছিলো , ইস মোগরব আলি যদি একটু বুঝতেন তাহলে মেয়েটি এমন অসময়ে চলে যেত না। আজকের সময়েও এতো বোকা মানুষ আছে মোগরব আলি কে না দেখলে আমি জানতাম না। শুনেছি সে কিছুদিন আগে গ্রামে মেম্বার হওয়ার জন্য খুব তোরজোর করেছিলো, যদিও কপালে স্ত্রী আর পরিবারের বাকি সদস্য ছাড়া কারও ভোট জোটেনি। কেন জোটেনি আজ বুজছি।
কালকে দুপুর থেকেই হটাৎ ভাড়ি
মাত্রায় রক্তপাত হচ্ছিলো মোগরব আলির স্ত্রীর (কারন অজানা) প্রথমে আমলে না নিলেও ক্রমশ যখন শরির খারাপ হচ্ছিলো তখন পাশের এক হাতুড়ি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান,পাক্কা ২ঘন্টা বসে থাকার পর ডাক্তার রুগী দেখে বলেন এ কাজ তার দারা সম্ভব না,আপনারা এনাকে সদর হাস্পাতালে নিয়ে যান। ডাক্তারের কথা মতো সদরে নিয়ে তো গেছিলো তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে,,তাও হয়তো চেষ্টা করে বাচানো যেতো যদি না মোগরব আলি নিজের বোকা বুদ্ধির জন্য ডাক্তার না দেখিয়েই বাড়ি ফিরে আসতো।
সদরে যাওয়ার পর তার স্ত্রীর খিচুনি শুরু হয়, চোখ মুখ সাদা হয়ে যেতে শুরু করে। আর এতেই মোগরব আলির মনে হয় তার বৌ এর কিছু হয় নাই,পুরানো খিচুনি শুরু হইছে, পানি পরা খেলেই ঠিক হয়ে যাবে। বোকা একবার যদি বুঝতো এ কোন পুরানো রোগ নয়,রক্তশুন্যতায় চোখ মুখ সাদা হয়ে খিচুনি হচ্ছে। তাহলে হয়তো এখন মৃত স্ত্রীর পাশে এমন অসহায় হয়ে বসে থাকতে হতো না।
(বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে)
সবার জন্য বলছি, আপনারা দয়া করে অন্ধবিশ্বাস গুলো ত্যাগ করুন। এখনো সময় আছে চোখ খুলুন, কে বলতে পারে দ্বিতীয় সুযোগ নাও পেতে পারেন। মোগরব আলির মতো সময় শেষে আফসোস না করে সময় ফুরাবার আগে সতর্ক হোন।
লেখাঃসানজিদা আক্তার