মিঠা রোদ পর্ব-৮+৯

0
670

#মিঠা_রোদ
#পর্ব:৮
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া
“সত্যি বলি?একটা পনের বছরের মেয়েকে আমি সাধারণ বাচ্চা হিসেবে নয়।নারী হিসেবে দেখতে আরম্ভ করেছি।না সে আমাকে যৌ ন তা মনে করিয়ে দেয়না।তোশা স্নিগ্ধ সুন্দর একটি অপরিপক্ক ফল।যার এখনও রোদে পুড়ে সুমিষ্ট হওয়া বাকী।তবে কেন আমি ওকে সাধারণ একজন নারী যার সাথে বৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলা যাবে সেই হিসেবে দেখছি?আমার মাথায় কী কোনো সমস্যা হচ্ছে?মেবি আই এম গোয়িং ক্রেইজি বিকজ অফ দ্য লোনলিনেস।”

নিজের জীবনের অনেকটা সময় অতিবাহিত করা কবীর শাহ চোখ বন্ধ অবস্থায় কথাগুলো বলল।বিন্দু বিন্দু ঘাম তার কপাল জুড়ে ছড়িয়ে আছে।পুরুষালি সুললিত গম্ভীর কণ্ঠ তার।নিজের বিলাসবহুল অফিস রুমে বসে আছে।তার সামনে সমবয়সী আগুন্তকের ঠোঁটের কোণা ঈষৎ বেঁকে গেলো।

“এই কথা মায়ান ও তাহিয়া জানলে কী হবে জানিস তুই কবীর?”

“পারভেজ, ওরা জানবে কেন?”

“নাহ যদি জানে।কারণ আমার মনে হচ্ছে তোশার সঙ্গে তোর বিষয়টা একটুতে থেমে থামবেনা।”

“স্টপ।সেই বাচ্চাটা ছোট।ও হয়তো আমার অনুভূতি বা মাইন্ড চেঞ্জের বিষয়টা অনুধাবন করতে পারবেনা।”

“আজকালের বাচ্চা আমাদের মতোন নয়।এটা আধুনিক যুগ।একটু আগে গার্ডেনের বিষয়টা আমি খেয়াল করেছি।যদি বলি তোশার চোখে আলাদা টান কাজ করছে।”

“বেশী ভাবছিস।”

“আমি একজন সাইকোলজিস্ট।হিউম্যান বিহেভিয়ার সমন্ধে জ্ঞানকে তুচ্ছ করার অবকাশ নেই কিন্তু।”

কবীরের তামাটে কপাল কুঞ্চিত হলো।তার চোখেমুখে অবিশ্বাসের ছাঁপ।পারভেজ গলা পরিষ্কার করে শুধালো,

“বিশ্বাস হচ্ছে না তো?”

“অবশ্যই না।”

“হয়ে যাক পরীক্ষা।যদি আমার কথা সঠিক হয় তবে পরের শুক্রবার তোর বাসায় ওয়াইন দিয়ে শাওয়ার নিবো।”

“আমার বিশ্বাস দূর্লভ বোতল গুলো আমি বাজিতে হারবো না।”

“দেখা যাক।বাই দ্যা ওয়ে তোশা এখনও তো আছে তাইনা?”

“হয়তো।”

“একটা কথা বল তো।মেয়েটা কী বলে ডাকে তোকে।”

কবীরের স্মরণে হলো সম্বোধন নিয়ে দুজনের মান অভিমান।যা সবেমাত্র আজ ভেঙেছে।সে একটু লজ্জা পেলো বিষয়টা বন্ধুকে জানাতে।

“আমাকে কিছু বলে ডাকেনি এখনও।”

“ওকে।”

পারভেজ অফিস রুম থেকে বের হয়ে গেলো।শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ থেকে বের হওয়ার দরুণ পুরু ত্বকে জ্বা লা তৈরী হলো।দ্বিতীয় তলা থেকে নেমে আসতেই তোশার সঙ্গে দেখা হয়ে গেলো তার।তাহিয়ার সঙ্গে মাঝেমধ্যে এক দুইবার দেখা হয় পারভেজের।যার কারণে তোশাকে সে চিনে।পকেট থেকে কিটক্যাট বের করে মেয়েটির দিকে এগিয়ে দিলো।

“কেমন আছো তোশামণি?”

“পারভেজ আঙ্কেল।কেমন আছেন?”

তোশার কণ্ঠে উচ্ছাস মিশে আছে।সে কিটক্যাট হাতে নিয়ে বলল,

“থ্যাংক ইউ আঙ্কেল।”

“আমাকে নয় তোশামণি।কবীর আঙ্কেলকে বলবে?”

“সে আপনার আঙ্কেল লাগে?”

“আমার কীভাবে আঙ্কেল লাগবে বলো?তোমার কথা বলেছি।”

চওড়া বিস্তৃত হাসি মিলিয়ে গেলো তোশামণির মুখবিবর থেকে।প্রাণহীন হয়ে উঠলো কণ্ঠ।

“সে বলেছে আমি তাকে আঙ্কেল ডাকি?”

“হ্যাঁ কবীর বলল তো।”

“ভুল বলেছে।আমি কখনো তাকে এভাবে ডাকিনি।”

হুট করে তোশার কণ্ঠের তরঙ্গ বৃদ্ধি পেলো।সে শক্ত করে নরম চকলেটটি চাপ দিয়ে ভেঙে ফেললো।পারভেজের মুখে হাসি ফু্ঁটে উঠলো।জিতে যাওয়ার হাসি।একটু পিছন ঘুরে দেখলো কবীর অনতিদূরে দাঁড়িয়ে আছে।প্রচন্ড ঘামছে সে।পারভেজ উষ্ণ শ্বাস ফেলে বলল,

“এতো হাইপার হচ্ছো কেন তোশা?”

“মিথ্যাবাদী সুদর্শন পুরুষ।”

“কার কথা বলছো?”

“কারো না।আমি কারো কথা বলছিনা।”

তোশার মধ্যে অনেক ধরণের ইমোশন দেখা যাচ্ছে।মেয়েটা চোখের পানি লুকিয়ে জায়গা থেকে উঠে দাঁড়ালো।নিজেকে গুছিয়ে জোরে জোরে হেঁটে জায়গাটি ত্যাগ করলো।পারভেজের মুখে আত্নগরিমা ফুঁটে উঠলো।সে পিছন ফিরে আহত কবীরের উদ্দেশ্য উঁচু সুরে বলল,

“আমি যা বলেছিলাম।মেয়েটা তোকে পছন্দ করে।যা তোর সাব-কনশাস মাইন্ড ধরতে পেরেছে।”

কবীর আগের মতো জবাব দিলো,

“আই ডোন্ট বিলিভ ইট।”

“অবিশ্বাসে সত্য বা ভবিষ্যত বদলে যাবেনা।”

(***)

বিভ্রান্ত কবীর বাসায় ফিরে এলো আকাশসম দুঃখ নিয়ে।এমন সময় ফোনে ম্যাসেজ এলো।বিদেশ থাকাকালীন তার সবথেকে কাছের বন্ধু এলেক্সের বিয়ে আগামী পনের তারিখে।এই ছেলেটির কাছ থেকে সে শরীর চর্চা শিখেছিল।যা আজও তাকে তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করছে।কবীর বিয়েতে যাওয়ার জন্য সম্মতি দিয়ে দিলো।ভাগ্যিস দেশের বাহিরে যাওয়ার জন্য সুযোগ এলো তার।অনেকক্ষণ ধরে তোশার ব্যাপারটা মাথা থেকে সে বের করতে পারছেনা।এই বাহানায় যদি কিছু একটা হয়।কবীর ভেবে পায়না কেন আর কীভাবে তোশাকে সে পছন্দ করা শুরু করেছে।বিষয়টি কী নীতি বিরুদ্ধ নয়?বাড়ীর ভেতর ঢুকতেই গুনগুন করে কারো গীত গাওয়া শোনা গেলো।কবীর মুচকি হেসে মা বাবার রুমের সামনে দাঁড়ালো।নিজেকে সে খুব ভাগ্যবান মনে করে কারণ বাবা মা দুজন বেঁচে আছে তার।ছোট্ট আহনাফ মন দিয়ে দাদীর গীত শুনছে।

“মা।”

থেমে গেলো সেতু।বৃদ্ধ চোখ তুলে নিজের সুর্দশন ছেলেকে দেখলো।

“বাবু দেখ তো আমার নাতীটা ঠিক তোর মতো হয়েছে।সন্ধ্যা হলেই গা ঘেঁসে বসে পড়ে।”

“নিশ্চয় পড়তে না বসার বাহানা এটি।কী ব্যাপার আহনাফ শাহ।পড়া নেই আপনার?”

আহনাফ মাথা দুলালো এপাশ ওপাশ।যার অর্থ নেই।কবীর পুনরায় শুধালো,

“কেন নেই?”

“পড়া শেষ করেছি বিকেলে।”

“আচ্ছা।আহনাফ দেখছি গুড বয়।চলেন আমার সাথে।আজ ডোরেমনের মুভিটা শেষ করবো আমরা।চলেন।”

কবীর হাত বাড়িয়ে দিলে ছোট্ট আহনাফ তাতে ঝুলে পড়লো।সেতু পিছন থেকে তৃপ্তির হাসি হাসে।বাবা ছেলের এতোটা মিল।

আহনাফকে নিয়ে সোজা নিজের রুমে এলো কবীর।বাচ্চাটি কৌতুহলী হয়ে শুধালো,

“ডোরেমন বাস্তবে আছে বাবা?”

“না তো।”

“থাকলে আমি ওকে বলতাম এমন কোনো গ্যাজেট দাও যাতে আমি আইসক্রিমকে নিয়ে আসতে পারি।”

“তাই?কিন্তু আইসক্রিম তো আমি নিজেই এনে দিতে পারি।”

“সত্যি বাবা?”

“সত্যি তো।”

রুমের ভেতর নিয়ে আহনাফকে বিছানায় বসালো সে।পাশের ছোট্ট ফ্রিজ থেকে আইসক্রিম বের করে ছেলেটির হাতে দিলো।

“নাও খাও আমি গোসল করে আসছি।”

আহনাফ পিটপিট করে হাতে রাখা শীতল খাদ্য বস্তুটি দেখলো।তার বাবাকে সে ভীষণ করে বলতে চাচ্ছে আহনাফের বলা আইসক্রিম একটা জলজ্যান্ত সুন্দর মানুষ।যার ভালো নাম তোশামণি।

চলবে।

#মিঠা_রোদ
#পর্ব:৯
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া
“হ্যালো তোশামণি?আম্মু কেমন আছো?”

“ভালো আছি আব্বু।তুমি কেমন আছো?”

“ভালো।পড়াশোনার কী খবর?তোমার মা কোথায়?সে কেমন আছে?”

মায়ানের করা প্রশ্নে আড়চোখে মায়ের পানে তাঁকালো তোশা।এতে অবশ্য তাহিয়ার খুব একটা হেলদোল নেই।সে আগের মতোন তোশার পড়ার টেবিল গুছিয়ে নিচ্ছে।ফোনটা একটু মায়ের দিক থেকে দূরে সরিয়ে তোশা বলল,

“আম্মু ভালো আছে বাবা।এবং পড়াশোনা চলছে।”

“রেজাল্ট ভালো করতে হবে।যেন খুব শীঘ্রই আমার কাছে নিয়ে আসতে পারি।কী মামুনি আসবেনা?”

শেষের প্রশ্নটি মায়ান প্রত্যেকবার ফোন করে শুধায়।এবং তোশা খুব বুদ্ধিমতীর মতোন সুন্দর একটি হাসি দিয়ে এড়িয়ে যায়।বাবার সাথে কথা তার খুব একটা হয়না। যখন হয় তখন তাহিয়া দশ মিনিটের বেশী বলতে দেয়না।আজও সেটির ব্যতিক্রম না।ঘড়িতে গুণে গুণে দশ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর তাহিয়া ফোনটা নিয়ে কেঁটে দিলো।

“বাবার সাথে কথা বলতে ভালো লাগে তোশামণি?”

তাহিয়াকে মন দিয়ে জড়িয়ে ধরে তোশা।খুব আস্তে ধীরে বলে,

“আমার তোমাদের দুজনের সঙ্গেই কথা বলতে ভালো লাগে।”

“মায়ানের কথামতোন বড় হলে কানাডা চলে যাবে?”

“আমি কখনো তোমার কাছে বড় হবো না আম্মু।গেলেও তোমাকে সাথে করে নিয়ে যাবো।তুমি না খাইয়ে দিলে আমার পেট ভরেনা।পরে দেখা যাবে না খেয়ে শেষ।ওইযে মামী কল্লোল ভাইয়াকে দেখে বলেনা
‘আহারে আমার সোনা ছানা না খেয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে।একটুও খায়না।’
তখন তুমিও আমাকে দেখলে একই কথা বলবে।”

“ভালো নাটক করতে জানো দেখছি।ভাবী তোমার গুরুজন।তার কথা এভাবে নকল করতে হয়না।”

“কী করবো বলো আম্মু।জানো কল্লোল ভাইয়া না অনেক বেশী খায়।সত্যি হলো সব খায়।কিন্তু দেখো মোটা হয়না।আমি কম খাই।সেরকম শরীর।”

“কিছু মানুষ এমন হয় তোশামণি।যেমন তোমার বাবা।হাজার খেলেও শরীরে লাগেনা।”

তাহিয়া থমকে গেলো।মায়ানের কথা খুব সহজে বলেনা সে।কিন্তু মাঝেমধ্যে যখন বলে ফেলে তখন চোখেমুখে আলাদা ধরণের তৃপ্ততার দেখা মিলে।কথাটা তখুনি ঘুরিয়ে ফেললো সে,

“অনেক রাত হলো ঘুমিয়ে পড়ো।কালকে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাবে আমার সঙ্গে।”

“উহু,আম্মু যাবোনা।”

“কেন?”

“এমনি।”

“না যাবে আমার সঙ্গে।এখন ঘুমাও গিয়ে।”

তোশা মাকে কীভাবে বলবে যে গেলে কবীর শাহ নামক সবথেকে নির্দয়,নিষ্ঠুর লোকটার সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে।এমনিতে দিনের ঘটনায় মন খারাপ তার।মুখে আকাশসম মেঘ নিয়ে তোশা চলল ঘুমাতে।মেয়ে ঘুমিয়েছে কীনা সেই বিষয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে তাহিয়া বের হয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ালো।ভ্যাপসা গরম ছড়িয়েছে বাতাবরণে।বিচ্ছেদের পর থেকে তাহিয়া নিজেকে চিনতেই পারেনা।ফোনটা উঁচু করে মায়ানের আইডিটা দেখলো।এখনও একটিভ দেখাচ্ছে।তাহিয়ার খুব করে ইচ্ছা হয় সেই কলেজ লাইফের মতোন ব্যক্তিটার সঙ্গে সবটা দিয়ে কথা বলতে।কিন্তু যেই দিন গুলো চলে যায় তা আর কখনো ফেরত আসেনা।তাহিয়া ও মায়ানের দিনগুলোও নিভু নিভু মোমের মতোন ফুরিয়ে এসেছে।শুধু রেখে গিয়েছে তোশা নামক সুন্দর এক স্নিগ্ধ আলো।

(***)

কবীর শাহ নামক মানুষটার সঙ্গে তোশার দীর্ঘ বিচ্ছেদ চললো।প্রায় বলতে গেলে চার মাসের মতোন।এই সময়ে সবথেকে মজার ব্যাপারটি হলো এইযে তোশার বয়স পনের থেকে ষোলতে এসে ঠেকেছে।মানসিক কিংবা শারীরিক বেশ অনেকটা পরিবর্তন ঘটার দরুণ তোশা দুনিয়াকে অন্যরকম ভাবে দেখতে শিখেছে জানতে শিখেছে।কিন্তু কবীর নামক সুন্দর, বলিষ্ঠ তামাটে পুরুষটির কথা সে ভুলেনি।হয়তো ভু্লবেও না।আজ লোকটার ছত্রিশ তম জন্মদিন।এই কারণে সুন্দর একটি ফাইভ স্টার হোটেলে ব্যুফের আমন্ত্রণ দিয়েছে তাহিয়া ও তোশাকে।

“তোশা এখনও রেডি হওনি?”

জবাব না দিয়ে মায়ের সামনে সাদা রঙের সুন্দর একটি জামদানী তুলে ধরলো তোশা।

“আজ আমি এটা পরে যাবো আম্মু।”

“শাড়ী?হঠাৎ কেন?তোমার ফ্রেন্ডরা তো যাচ্ছে না।”

“আম্মু প্লিজ।”

“ওকে।কিন্তু সামলাতে পারবে তো?”

“হ্যাঁ।তুমি পরিয়ে দাও সুন্দর করে।”

তোশাকে সুন্দর করে শাড়ীটা পরিয়ে দিলো তাহিয়া।মেয়েটিকে এখন মটেও ছোট লাগছেনা।সন্ধ্যা সাতটায় তারা রেস্ট্রুরেন্টে গিয়ে পৌছালো।

শুভ্র শাড়ী পরা ছিমছাম গড়নের কিশোরীর প্রথম দর্শনে কবীরের মনো হলো না সে দূরেই ভালো ছিল।মাঝে বিদেশ ভ্রমণে কতোটা তোশার প্রতি মায়াকে কাঁটিয়ে উঠতে পেরেছে সেই পরীক্ষায় নেমেছিল কবীর।এজন্য সব বন্ধু, বান্ধুবীদের ডেকে আনা।কিন্ত আজ এই মুহুর্তে সন্ধ্যা বেজে ঠিক সাতটা দশ মিনিটে মনে হচ্ছে তোশাকে নিয়ে কবীরের পরীক্ষা করা উচিত নয়।ছোট্ট মেয়ে যে এখন দুনিয়ায় কিছুই দেখেনি তার সবকিছু মুগ্ধ করে কবীরকে।এইতো হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে কথা বলাটাও।কবীর নিজেকে সামলে মা মেয়ের দিকে এগিয়ে গেলো।ছোট্ট ভালোমন্দ জিজ্ঞাসার পর তাদের টেবিল দেখিয়ে দিলো।ব্যুফে হওয়ার যে যার পছন্দ মতোন খাবারের পদ নিয়ে খেতে শুরু করেছে।বন্ধুমহল একত্রে হলে যা হয়।হাসি তামাশায় মেতে আছে সকলে।এক ফাঁকে কবীর তোশাকে নিচু সুরে জিজ্ঞেস করলো,

“তুমি বড় হয়ে গিয়েছো তোশামণি।শাড়ীতে খুব সুন্দর লাগছে।”

“সত্যি বড় দেখাচ্ছে?আপনার কিন্তু একটুও পরিবর্তন হয়নি।কীভাবে?”

“এটা বহু গোপন কথা।”

“মিথ্যা নিয়মিত জিম করেন সেজন্য।”

“ঠিক।তাছাড়া পরিমিত কিংবা নিয়ন্ত্রিত খেলে যে কারো সজীবতা চেহারায় ফুঁটে উঠে।”

“হুহ।আপনাকে আর আমার ইংলিশ টিচারকে একই বয়সী লাগে।তার বয়স সাতাশ।”

বয়সের কথা শুনে কবীরের অন্তরের কোথাও শূন্যতা অনুভব হলো।পরক্ষণে ভাবলো এসব অনুভূতি বড্ড তেতোমিঠা।তোশা হাত দিয়ে কিছুটা খেতে পারে।সে একমনে খেতে খেতে বলল,

“জানেন কবীর।আমার আবার তাড়াতাড়ি বড় হওয়ার ইচ্ছা।”

“তুমি আমাকে নাম ধরে ডাকলে তোশামণি?”

“এখন থেকে এভাবে ডাকবো।বড় হওয়ার ইচ্ছা কেন শুনতে চাননা?”

“ওয়েল বলো শুনি।”

তোশা আড়চোখে মা কে দেখলো।যে পারভেজের সাথে আলাপে মত্ত্ব।একটু কবীরের দিকে ঝুঁকে এলো তোশা।তামাটে পুরুষটির গা থেকে আসা তীব্র সুগন্ধে পেটের ভেতর কেমন করে উঠলো তার।তামাটে বলিষ্ঠ হাত দুটো বড় আঁকড়ে ধরতে চাচ্ছে।নিজ ইচ্ছাকে সংবরণ করে বলল,

“বড় মানুষদের বড় বড় সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়।তাছাড়া আপনিই তো গর্ব করে বলছিলেন একটু আগে আই এম এ ম্যান।তো ম্যানের জন্য ওমেন হতে হবেনা?”

কবীর চমকে উঠলো তোশার কথায়।আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো কেউ শুনছে কীনা।

“তোশা বিহেভ ইওরসেল্ফ।”

“দুঃখিত কবীর শাহ।তোশামণি বড় হয়ে গিয়েছে শুধু আপনার কাছে।এখন তার পদক্ষেপও বড় বড় হবে।”

চলবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে