#মিঠা_রোদ
#পর্ব:৫৪
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া
“আমি দেখতে সুন্দর? হ্যাঁ ভীষণ সুন্দর।শাড়ীটাতে মানাচ্ছে তাইনা?”
ডিভানে হেলান দিয়ে আবেশিত দৃষ্টিতে আয়নার সামনে দাঁড়ানো তোশাকে দেখছে কবীর।পুরুষটির বসার ধরণ কায়দা করে শৈল্পিক ধরণের।শরীরের গঠণকে প্রাচীন গ্রিক যোদ্ধার সঙ্গে অনায়াসে তুলনা করা যায়।এইযে বাহুর বাইসেপস গুলো মুহুর্তে শার্টের আবরণ খুলে বের হয়ে আসতে চাচ্ছে।তোশা অবশ্য সেদিকে তাঁকায় না।প্রিয় মানুষটির নিয়ে আসা শাড়ীটিকে পরে নিজেকে সৌন্দর্যের সাগরে আবিষ্কার করতে মত্ত্ব সে।
“কী হলো বলেন সুন্দর লাগছেনা?”
“লাগছে।”
“শুধু এতোটুকু প্রশংসা।”
“হুঁ।”
পিছন ফিরে তাঁকালো তোশা।চোখে বেদনার ছাঁপ।হালকা অসহিষ্ণু হয়ে কবীরের দৃষ্টির আড়ালে বসতে চাইলো।কিন্তু এতো কী সহজ সর্ব’নাশা দৃষ্টির আড়ালে যাওয়া?
“অভিমান বেলাডোনা?প্রশংসা অনেক শব্দে করা কী জরুরি?বুঝে নেওয়া যায়না?”
“যায়না।”
নাকের কাছে শাড়ীর আঁচলটা টেনে নিলো তোশা।অনেক পুরোনো দিনের সুগন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।প্রাণভরে শ্বাস টেনে নিলো সে।কবীর যুবতীর মনের কথাটি বুঝতে পারলো।তোশা খুব বেশী দূরে না বসায় হাতটা মেয়েটার চুলে ঠেকিয়ে বলল,
“শাড়ীটাকে অনেক পুরোনো মনে হচ্ছে তাইনা?”
“হ্যাঁ।আপনার মায়ের?”
“না আমার বউয়ের।”
“দিশা ম্যামের?”
“উহু আমার বউয়ের।”
“আমার?”
কবীর উষ্ণ শ্বাস ফেলে বলল,
“আমার বউয়ের।”
“তো আমি আপনার বউ না?অন্য কাওকে পছন্দ করেন?”
“একটা জিনিস দেখবে?”
পাশে অনাদরে পরে থাকা স্যুট থেকে একটা ছবি বের করলো কবীর।তোশাকে এগিয়ে দিয়ে বলল,
“দেখো তো চিনো কীনা।”
কৌতুহলী হয়ে তোশা ছবিটাকে হাতে তুলে নিলো।হাসৌজ্জ্বল একজন তামাটে যুবক একপাশে তাঁকিয়ে আছে।গায়ের মলিন রঙ,রোগা পাতলা চেহারা,পরনে পাতলা শার্ট তাও ইন করা।নব্বই দশকের সবথেকে স্টাইলিশ যুবক লাগছে।কবীরের এমন রুপ তোশা প্রথমবার দেখলো।
“আপনি আগে থেকেই সুন্দর।পিছনে কোনো অনুষ্ঠান ছিল?”
“হ্যাঁ।আমার ছোট মামার বিয়ে ছিল।ছবির সাথে তোমার পরনের শাড়ীর সঙ্গে গভীর মেলবন্ধন আছে।”
“তাই?”
“যেদিন বিয়েটা ছিল মানে ছবিটা তোলা সেদিন মামীর বাবার বাড়ীর পাশে মেলা ছিল।কাজিনরা মিলে গিয়েছিলাম।সেখানে আমি একজনকে দেখি।লাভ এট ফার্স্ট সাইট বলা যাবেনা কিন্তু মেয়েটাকে পছন্দ হয়।তার গায়ে এই সেইম শাড়ীটা ছিল।পরবর্তীতে মেয়েটার খোঁজ না পেলেও শাড়ীটা খুঁজে বের করে সংগ্রহে রেখেছিলাম।কারণ এই বয়সেও মনে হয় এই শাড়ীটাতে সব মেয়েকে সুন্দর লাগবে।আমার বউয়ের জন্য কেনা ছিল।যেই হোক সেই পাবে।”
“দিশা ম্যাম পেয়েছিল?”
“হ্যাঁ।”
তোশার মুখটা মলিন হতে গিয়েও থেমে গেলো।শাড়ীটাতে কিশোর কবীর শাহ এর আবেগ জড়িয়ে আছে।নিশ্চয় দুটো মানুষ বিবাহ বন্ধনে বিচ্ছেদের আশায় জড়িয়েছিল না।কবীর অবশ্য নিজ প্রিয়তমার মনের কথা উপলব্ধি করতে পারে।মেয়েটির নরম হাতটা ধরে কাছে টেনে আনে।
“তুমি অতীত কেন মনে করো এতো?শাহ সাহেব কিন্তু সহজে কাওকে ছাড়েনা।কিন্তু কেউ ছেড়ে গেলে তাকে আঁটকে রাখেনা।”
“মন খারাপ করিনি।শুধু ভাবছি আম্মু,আব্বুর কথা।”
“তারা ভালো আছে।তুমি খুব শীঘ্রই দেখতে পারবে।”
“তাহলে আজ থেকে আমি আপনার বউ?শাড়ীটা যে এনে দিলেন।”
“তা তুমি অনেক আগে থেকে লিটল ডেভিল চেরি।বড় ভ’য়ংকর মেয়ে তুমি।ষোল বছরের তোমার পাগলামি দেখে ভেবেছিলাম যে মেয়েকে পানি খাইয়ে মা’তা’ল করতে পারি।সে তো কাঠের পুতুল।কিন্তু আজ উপলব্ধি হলো তুমি আমাকে প্রেমের নেশায় বুদ করে দিয়েছো।”
কবীরের কথায় উচ্চ শব্দে হেসে উঠলো তোশা।স্মরণে হয়ে গেলো তারা একটি গেইমেও খেলেছিল যেখানে কবীরকে পাওয়ার জন্য একবারও জিতেনি সে।অথচ কোনো গেইম,পরীক্ষা লাগেনি সে এমনিতে মানুষটার ভালোবাসা পেয়েছে।এক বছর পূর্বেও কবীরকে নিজের করে পেয়েছিল না। অথচ আজ সব নতুন।তোশা আস্তে করে কবীরের কাঁধে মাথা রাখলো।যদিও স্বাবধান বাণী শুনতে পেলো,
“আস্তে ব্যান্ডেজ এখনও আছে।”
“আমাকে কেন ভালোবাসলেন কবীর শাহ?আপনার বন্ধুর মেয়ে।অর্ধেক বয়সী।আপনি যেখানে কোটি তৈরী করেন সেখানে মা-বাবার টাকায় আমি চলি।বলেন তো কেন ভালোবাসলেন?”
“শুনতে চাও?বলবো সঠিক সময়ে।এখন সময়টা উপভোগ করো।”
চোখ বন্ধ করে তোশা সময়টা উপভোগ করার চেষ্টা করলো।কতোক্ষণ অতিবাহিত হলো?একটি ঘন্টাও না।কবীরের ফোনের অনবরত কম্পন সে বুঝতে পারছে।
“আপনাকে কেউ কল করছে।”
“হ্যাঁ।তুমি তৈরী তো?আমাদের এক জায়গায় যেতে হবে।”
“কোথায়?”
“আজ সেই দিন যেদিন তাহিয়ার মুখোমুখি হতে হবে আমাদের।”
চট করে চোখ খুললো তোশা।বুকের হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি পেয়ে গেলো।অধরযুগল জিহবা দ্বারা সিক্ত করে বলল,
“আমাকে হালাল করার জন্য এতো সুন্দর করে সাজিয়েছেন?ভীষণ খারাপ কবীর শাহ।”
“এই পদক্ষেেপের আগে মনে ছিলনা সামনে কঠিক এক পরিস্থিতি আসতে চলেছে?”
“আমি কেন ইংল্যান্ড ভেগে যাবো?ভালো করেছি।”
“গুড।”
কবীর উঠে দাঁড়ালো।পাশ থেকে ব্লেজারটা গায়ে দিতে দিতে বলল,
“গালে দুই চারটে পড়লে আবার কান্না করো না।যদিও আমি আছি।কিন্তু তাহিয়া,মায়ানের থেকে বড় অভিভাবক হয়নি।”
“আম্মু মা”রবে?”
“অসম্ভব কিছুনা।”
তোশা কিছু একটা ভাবলো।এরপর কবীরের সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
“গালে আদর করে দেন।যদি কিছু খেতে হয় তখন ব্যাথা কম হবে।”
“আদর?সেটা কী?”
“স্মুচ।”
“ওয়েল স্মুচ?”
“একটু আগে না বউ বললেন?তাহলে কীসের লজ্জা?কাম’অন কবীর শাহ আপনি পারবেন।”
“তোমার মাথাটায় একটু সমস্যা আছে না?আমাদের মেয়েকে এমন পাগল বানিও না লিটল আনরাইপ টম্যাটো।”
“আশ্চর্য আমি অপরিপক্ক?”
“ইংরেজি বললাম দেখে বুঝোনি?”
“কবীর শাহ।”
“চলুন মিস চেরী।আমাদের যুদ্ধ নামতে হবে।শাড়ী পরেই চলো।”
কবীর হাত বাড়িয়ে দিলো।তোশা আনমনে সেটা আঁকড়ে ধরলে হ্যাচকা টান অনুভব করলো।তামাটে পুরুষটি নিজের সঙ্গে একেবারে মিশিয়ে নিয়েছে মেয়েটাকে।তোশা দৃষ্টি মেলে দেখলো।দুজনের শ্বাস মিশে যাচ্ছে গভীর আকুলতায়।
“বেলাডোনা, মাঝেমধ্যে বুঝতে পারিনা তোমাকে নিয়ে আমি কী করবো?এতোটা আদর লাগে।সেখানে নতুন করে আদর দিয়ে মে’রে ফেলতে চাইনা।সবুর করো।”
(***)
তোশাকে নিয়ে যখন কবীর তাহিয়ার বাড়ীতে এলো তখন সন্ধ্যা সাতটা।ড্রয়িং রুমে থমথমে পরিবেশ।কবীরের শক্ত হাতটাকে আঁকড়ে ধরে আছে তোশা।বিশাল পুরুষালি দেহের পিছনে মেয়েটা নিজেকে আড়ালের বৃথা চেষ্টা করছে।অবনত চোখে মা, বাবার দিকে তাঁকালো সে।তাহিয়াকে বড় ক্লান্ত লাগছে।মায়া লাগলো তোশার।পুরো রুমে এবার সে চোখ বুলালো।তার নানার বাড়ী,দাদর বাড়ীর কেউ মনে হয় বাদ যায়নি এখানে উপস্থিত হতে।পরিবেশ উষ্ণ না হলে ছোটখাটো গেট টুগেদার বলা যেতো।সবার চোখে প্রশ্ন,আকুলতা।হুট করে তোশার নিজেকে বাহুবলি মনে হচ্ছে।ওইযে প্রথম পার্টের শেষটায় বাহুবলির পরিচয় পাওয়ার পর সকলে কেমন উৎসুক হয়ে তাঁকিয়ে থাকে তেমন।পরবর্তীতে নিজেকে ধিক্কার দিলো।ছি: এমন পরিস্থিতিতে কী ভাবছে সে?
কিন্তু বিশ বছর বয়সী তোশার সবথেকে খারাপ লাগলো এটা দেখে সুদর্শন নায়ক উল্লাস পরিবেশের সম্পূর্ণ বিপক্ষে গিয়ে সোফায় বসে একমনে কিছু খাচ্ছে।নিশ্চয় সেটা মামীর তৈরী সেমাই।তোশা মানছে জিনিসটা মজা হয়।তবে এই পরিবেশে এতোটা বেখেয়ালী কীভাবে নায়কটা?
“তোশা আমার কাছে এসো।”
তাহিয়ার কণ্ঠ শুনে বাস্তবে ফিরলো তোশা।ধীর স্থির কিন্তু শক্তিশালী লাগছে মা কে আজ।ভয় বেড়ে গেলো মেয়েটার।
“আম্মু।”
“কবীরের হাত ছেড়ে আমার কাছে এসো তোশা।ও সঠিক নয় তোমার জন্য।বুঝতে পারো না?কেন পারো না বেয়া’দব মেয়ে।”
তাহিয়ার চিল্লানোর কণ্ঠে রুমের সকলে নড়েচড়ে বসলো।মায়ান অবশ্য নির্বিকার।পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছে।কম্পিত হওয়া তোশাকে এক হাতে আগলে নিলো কবীর।
“স্বাভাবিক কণ্ঠে কথা বলো তাহিয়া।তোশা ভয় পাচ্ছে।”
তাহিয়া যেন পাগল হয়ে গেলো।দৌড়ে কবীরকে নিজের মেয়ের কাছ থেকে সরিয়ে নিতে নিতে বলল,
“ছাড়ো আমার মেয়েকে।ছাড়ো।ও তোমার কেউনা।আমার মেয়ে তোশা তোমার কেউ না কবীর।”
চলবে।
#মিঠা_রোদ
#পর্ব:৫৫
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া
“তোশা আমার প্রেমিকা,ভালোবাসা।এবং বর্তমানে মায়ের পর সবথেকে কাছের নারী।তুমি চিল্লিয়ে যাই বলো তাতে সত্য পরিবর্তন হবে না তাহিয়া।”
কবীরের গলার আওয়াজে কী ছিল?হু’মকি?কিংবা স্বাবধান বাণী?তবে যা ছিল ঘরে উপস্থিত সকলকে নড়েচড়ে বসতে সাহায্য করলো।অবস্থা বেগতিক দেখে নেয়ামত উঠে এসে তোশার হাত ধরে গুরুগম্ভীর কণ্ঠে বলল,
“বসে কথা বলো দুজনে।কারণ চিল্লিয়ে কথা বললে মানুষ হাসানো ছাড়া কিছুই হবেনা।আমরা বড়রা আছি।তারা দেখছি বিষয়টা।”
“বাবা আপনারা আমার মেয়ের সবথেকে বড় অভিভাবক নয় নিশ্চয়।কোনো কথা বলতে রাজী নই আমি।”
“চুপ থাকো তাহিয়া।”
তোশা কবীরের অন্য হাত ধরে আছে।আশ্চর্যভাবে মনে হচ্ছে এখন ছেড়ে দিলে আর কখনো ধরা হবেনা হাতখানা।
“তোশা তোমার নানুর কাছে গিয়ে বসো।তা নয় ভেতরে চলে যাও।জিদ করো না বিষয়টা ভালো হবেনা কিন্তু।”
“ঠিক আছে নানাভাই।”
নানার কথা মতোন সোফার এক কোণায় গিয়ে বসলো তোশা।কবীর এখনও দাঁড়িয়ে আছে।তাহিয়া কিছুতে শান্তি পাচ্ছে না।গলার সুর কয়েক গুণ উঁচু করে শুধালো,
“ডিভোর্সের পর তুমি আমার খেয়াল রেখেছিলে কবীর।একজন পার্ফেক্ট বন্ধু, পার্ফেক্ট জেন্টালম্যান।সে কীভাবে আমারই মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়ায়?ভুলে গিয়েছো ওর জন্ম দেখেছো তুমি?মায়ান সবসময় তোমাকে ভাই বলে ডাকে।তার কথার এই প্রতিদান?ঘেন্না করলো না?”
“তোশা রক্তের কেউ না আমার।”
“রক্তের না হলেও চক্ষুলজ্জার ব্যাপার বলে কিছু আছে।”
“তাই?তোমার মেয়েকে জিজ্ঞেস করো তো চক্ষুলজ্জা শব্দের জন্য আমাকে ছাড়বে কীনা?দেখো তাহিয়া তোমরা কী বলবে বা বলতে পারো আমি সেটা জানি।কিন্তু সত্য হলো আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি।বিয়ে করতে চাই।তোশা যদি সকলকে এভাবে জানানোর পদক্ষেপ গ্রহণ কিংবা আমার সাথে দূর্ঘটনা না হতো আজ ইংল্যান্ডে থাকতাম দুজনে।কিছুই করতে পারতে না।”
“কোনোভাবে বিষয়টিকে নর্মাল বলে চালিয়ে দিতে পারো না তুমি।”
কবীর তীব্র দুঃখে বাঁকা হাসলো।গালের শক্ত পেশিগুলোতে টান পড়লো হালকা।
“আমি নিজেও জানি বন্ধুর মেয়ে।বিশ বছর বয়সী ভার্সিটিতে পড়া একজন মেয়ের সাথে বিয়ের কথা চিন্তা করা কখনো নর্মাল বিষয় না।বরং আপাতত দৃষ্টিতে দেখলে অদ্ভূত ও ভীষণ অন্যায়।আমি সেই অন্যায়টা করেছি।তা নিয়ে কোনো অনুতাপ নেই।বাট আই ওয়ান্ট হার সো ব্যাডলি।”
বলিষ্ঠ পাহাড়ের সমান মজবুত বাক্য কবীরের।অধিকাংশ মানুষ তা হজম করতে পারলো না।তোশা কিছু বলার জন্য মুখ খুললে প্রথম ধমকটা কবীরই দিলো।যেন নিশ্চুপ থাকে সে।তোশার মনে হলো এতে দয়া করছে তার ভালোবাসার মানুষটা।কারণ সব দোষ কবীরের হবে।অথচ যদি এমন ভালোবাসা দোষের হয় সেখানে প্রকৃত অপরাধী তোশা নিজে।প্রথম পদক্ষেপ তার ছিল।সিক্ত কার্ণিশ আঙুলের ডগা দিয়ে মুছে তোশা মানুষটিকে পুনরায় দেখলো।লম্বা,চওড়া বাজপাখির মতো ধারালো মানুষটা নির্দোষ হওয়া স্বত্ত্বেও তাকে কারো কাছে ছোট হতে দিচ্ছে না।রুমে উপস্থিত বেশীরভাগ মানুষ কবীরকে কথা শুনাচ্ছে।অনেক বড় তর্ক তৈরী হয়ে যাচ্ছে এই ব্যাপারে কেন সে নিজে ঠিক থাকলো না?উল্টো তোশাকে ভুলভাবে বুঝিয়েছে নিশ্চয়।পুরো ব্যাপারটিতে কেউ যদি নিশ্চুপ থেকে থাকে তবে সে হলো মায়ান।তার দ্বিতীয় স্ত্রী টিনা পাশ থেকে বলল,
“তুমি কিছু বলবেনা মায়ান?অবস্থা বেগতিক হচ্ছে।”
“বলবো।আগে তাহিয়ার কাছ থেকে কিছু প্রশ্নের উত্তর নিবো।”
“প্লিজ শান্ত থেকে কথা বলবে।”
টিনার কণ্ঠে চিন্তা মিশে আছে।মায়ান আগে পিছে কোথাও না গিয়ে একদম তোশার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।মেয়েটা বাবাকে দেখে নিশ্চুপ হয়ে গেলো।
“সবাই একটু চুপ থাকেন।তোশার সঙ্গে কিছু কথা বলবো আমি।”
কবীর বিরোধ করে বলল,
“ওর সাথে কোনো কথা নেই মায়ান।আমি তো জবাব দিচ্ছি।”
“চুপ কবীর।আমার মেয়ের ব্যাপারে আমি বুঝবো।তোশা একটা কথা বলো শুরুটা তুমি করেছিলে তাইতো?আমি নাটক পুরোটা পাঁচবার দেখে সিচুয়েশন বোঝার চেষ্টা করেছি।”
তোশা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে নিজেকে শান্ত করলো।ভীষণ স্বাভাবিক কণ্ঠে জবাব দিলো,
“জি বাবা।”
“শুরুতে তুমি কবীরের সাথে রেস্ট্রুরেন্টে ঘুরেছো।সেটা তাহিয়া জানতো না।যাচাই-বাছাই কখনো করেনি?”
“না।”
“ওকে।এরপর সম্পর্ক হলো তোমরা তো পাব্লিক প্লেসেও চোখে চোখে কথা বলতে। আমি বাংলাদেশে এসেই বুঝেছি বিষয়টা।আর দিশা কীনা বলে জানিনা?ওর খবর আছে।কিন্তু তার আগে তাহিয়া তোর বিচার হওয়া উচিত।মা হওয়ার যোগ্যতা আছে?না থাকলে মেয়েকে আমার কাছে কেন দিয়ে দিলি না?”
তাহিয়াকে শুরু থেকে মায়ান তুই বলে সম্বোধন করতো।আজ এতো বছর পর সরাসরি কথা বলছে তারা।তাহিয়ার থেমে থাকার পাত্র নয়।মায়ানকে কোণঠাসা করার নিমিত্তে বলল,
“বড় বড় কথা বলবেন না মায়ান।কাপুরষ কোথাকার।মেয়েকে আমি সঠিক শিক্ষায় বড় করেছি।”
“হাহ?সেটা তো দেখতে পাচ্ছি।”
বিদ্রুপে কান্না চলে আসছে তাহিয়ার।যে মেয়েকে কখনো কোনো কষ্ট পেতে দেয়নি আজ তার জন্য সকলের কাছে সে ছোট হয়ে গেলো।আশেপাশে তাঁকালো।সবাই বিতৃষ্ণায় তাদের দেখছে।গা গুলিয়ে আসছে তাহিয়ার।কোনোমতন মায়ানকে বলল,
“আপনাকে কোনো জবাবদিহিতা করতে চাইনা মায়ান।অবশ্য কাওকে না।”
পুনরায় থেমে বলল,
“কবীর আমি জানি তুমি বুদ্ধিমান একজন মানুষ।বিষয়টা খুব খারাপ হচ্ছে।আমি কখনো মেয়েকে খারাপ শিক্ষা দেইনি।কিন্তু এই মানুষটা নিজেকে কী ভাবে?আজ আমার উপর প্রশ্ন তুলছে।প্লিজ তোমার কাছে বলছি তোশাকে ছেড়ে দাও।”
দাঁড়িয়ে বড় বড় শ্বাস ফেলছে তাহিয়া।কবীরের হঠাৎ মায়া হলো।পাশ থেকে চেয়ার এনে তাহিয়াকে সেখানে বসালো।এরপর মুখোমুখি নিজেও হাঁটুগেড়ে বসলো।
“তাহিয়া,তুমি আমার চমৎকার একজন বন্ধু।কিন্তু এর বাহিরে পিওর একটা সোল তুমি।সাধারণ,কোনো উচ্চ আকাঙ্খা নেই।বুদ্ধিমতী মানুষ।সাথে জানো খুব সুন্দর একটা মেয়ের মা হয়েছো।মানছি তোশা ও আমি তোমাকে জীবনের সবচেয়ে বড় কষ্টটা দিয়েছি।কিন্তু অনুভূতির কাছে দুজনে হেল্পলেস।তুমি আগে নিজেকে শান্ত করো।আমার এই দুনিয়াতে কাওকে মানাতে হবেনা।শুধু আমার বাবা-মা ও তোমাকে আর মায়ানকে মানানো ছাড়া।এ বাদে যে যা বলুক।তোশাকে আমি ছাড়বো না।এবং আমি তাতে সিরিয়াস।”
শেষের কথাটিতে মনে হলো কবীর হু’মকি দিচ্ছে।তাহিয়া অনেক অবাক হয়ে কবীরকে দেখছে।ওই গভীর দুই চোখে অনেক ভালোবাসা।তার ছোট মেয়ে তোশার জন্য।কবীর পুনরায় বলল,
“আমি আজ তোশাকে রেখে যাচ্ছি কারণ তোমাকে শান্ত হওয়ার সময় দিচ্ছি।এর মানে একেবারে পালিয়ে যাচ্ছি না।তাহিয়া আমি জানি নিজের মেয়ের সাথে রা’গ করে ভুলভাল কিছু করার মানুষ তুমি না।আমার তোশাকে দেখে রেখো।ঠিক আছে?”
তাহিয়া নিশ্চুপ শুধু চেয়ে রয় কবীরের দিকে।যাওয়ার আগে বেলাডোনাকে চোখে আশ্বস্ত্ব করে কবীর।যে সব ঠিক হবে।
(***)
কবীর একমনে সামনের দিকে তাঁকিয়ে আছে।চোখে তার অমীমাংসিত দৃষ্টি।তোশাকে রেখে একটুও আসতে মন চাচ্ছিলো না।পাশে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে দেখলো উল্লাস দাঁড়িয়ে আছে।
“ভেতরে কী হচ্ছে উল্লাস?”
“মেলোড্রামা।একটা কথা বলুন তো মায়ান নামের লোকটা আপনার বন্ধু হয়েছিল কীভাবে?চোখে দেখে অনেক কিছু অনুমান করা যায়।”
“তোশা কী করছে?”
“বসে কাঁদছে।না করে এলাম।ওহো আমাকে প্রেশার দেওয়া হচ্ছে নাটকটা ডাউন করে দিতে।কিন্তু অলরেডি তা ভাইরাল।বাট আমি তা করবো না।কারণ দশ জন মানুষের অন্য দশজন মানুষকে কনভেন্স করার ক্ষমতা থাকে।আমি এটা এভাবে পাব্লিকে না আনলে প্রতীক কিন্তু খারাপ ভাবে আনতো।”
“কেন?”
“ও তোশাকে পছন্দ করে।তাহিয়াকে কিন্তু এপ্রোচও করবে ভেবেছিল।সখীর হয়েছে জ্বালা সুন্দরী হয়ে ।কিন্তু চাঁদে যে গ্রহণ আছে।”
“তুমি ফর্সা দেখে আমাকে কালো বলার রাইট নেই ছেলে।”
কবীরের মুখে হাসি ফুটে উঠলো।উল্লাস কিছু বলতে যাবে এর পূর্বে কবীরের ফোনে কল এলো।দিশার নামটা স্ক্রিনে দেখে রিসিভ করবেনা ভেবেছিল।কিন্তু কী ভেবে ধরলো।
“হ্যাঁ দিশা বলো।”
“কবীর, সব ছেড়ে দাও।তোশাকেও ছাড়ো।আমরা আবার এক হতে পারিনা?আমি তোমার সাথে সংসারে ফিরতে চাচ্ছি।”
চলবে।
#মিঠা_রোদ
#পর্ব:৫৬
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া
“এতো রাত অবধি তুমি অফিসে?হুট করে কী দরকার হলো যে আজ মনে পড়লো তোমার একটা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কোম্পানিও আছে?বিশেষ কিছু কবীর?”
তাহিয়ার কণ্ঠে স্পষ্টত খোঁচা বিদ্যমান।সেটাতে অবশ্য কবীর ভ্রক্ষেপ করলো না।হাতের ফাইলটা সরিয়ে দিয়ে বলল,
“ম্যানেজার বলল কিছু পেপার্সে সাইন করতে হবে।তুমি নেই দেখে আমাকে কল করেছিলো।”
“বাহ!এতে বোঝা গেলে আমরা পার্টনার নয়।আমি তোমার অধীনস্থ চাকরি করা একজন মানুষ।”
“বেশ এগ্রে’সিভ লাগছে তোমাকে।বসো এতো রাতে তুমি এখানে কেন?”
তাহিয়া কবীরের সামনের চেয়ারে বসলো।বিগত দিন গুলোতে যা কিছু ঘটে গেলো সেই সুবাধে দুজনের এই মুখোমুখি বসা যেন ছবি তুলে ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতো ব্যাপার।সবসময়ের মতো আজও কবীরের বেশভূষা শৈল্পিক।অসুস্থতা,কুচিন্তা গুলো বাহ্যিক অবস্থাকে বিন্দুমাত্র প্রভাবিত করেনি।
“এসেছিলাম কারণ এই কাজ গুলোর কথা হুট করে মনে হয়েছিল।তা দেখি আমার প্রয়োজন শেষ হয়ে আসছে।”
“মটেও না।তোমাকে সকলে স্পেস দিচ্ছে তাহিয়া।”
“দয়া?কী অদ্ভূত না কবীর?”
“এখানে অদ্ভূত ব্যাপার কিছু নেই।এখন যাওয়ার দরকার নেই।বসো আমি দিয়ে আসবো।রাত নয়টা বাজে।”
“তোমার সাথে দেখা হয়ে গিয়ে ভালো হলো।এসব তুমি করিয়ে চলেছো না?নিজের দিকে সবকিছু পজেটিভ ভাবে আনতে?”
দ্বিধা নিয়ে কবীর শুধালো,
“কীসের কথা বললে?”
তাহিয়া ফোন বের করে একটা পোস্ট কবীরকে দেখালো।দেশের স্বনামধন্য একজন সাংবাদিক তোশা ও কবীরের সম্পর্ককে বাহবা দিয়েছে।
“এইযে এটা।”
“আমার এসবের কোনো দরকার নেই তাহিয়া।তারা নিজে থেকে করছে।সবাই তো বুঝতে পারছে তোশা কতোটা পার্ফেক্ট আমার জন্য।”
তাহিয়া উচ্ছাসিত কণ্ঠে বলল
“একদম কথাটা তুমি।বিজনেস জগতে একজন বাঘ।যাকে মন্ত্রীরা তোয়াজ করে চলে।আমি জানি কতো টাকার মালিক তুমি।তো সে বারো বছরের মেয়েকে বিয়ে করলেও বাহ বাহ করবে সবাই।”
কবীর স্মিত হেসে ফাইল গুলোতে মনোযোগ দিলো।তাহিয়াকে এখন কিছু বোঝানো যাবেনা।কিন্তু তবুও তোশার কথা জিজ্ঞেস করার মতোন সাহস দেখালো।
“তোশা কেমন আছে তাহিয়া?খায় ঠিকমতো?”
“ওর কথাটা কী না বললে হতো না?”
“না।কারণ আমার সাথে কথা বন্ধ ছিল মাঝের চার বছর।তখন মেয়েটা ঠিকঠাক খাওয়া দাওয়া কিংবা অসুস্থতায় ভুগতো বেশী।”
তাহিয়া অবাক হয়ে কবীরের দিকে তাঁকিয়ে রইলো।স্মরণে হয়ে গেলো অতীত।ভ্রু কুঁচকে বলল,
“অথচ দারুণ অন্ধ ব্যক্তি আমি।তোমার সব গল্প ওর কাছে করতাম।দুজনকে আস্কারা আমি দিয়েছি।”
“যা হওয়ার ছিল তাহিয়া।প্রশ্নগুলোর জবাবটা দাও।”
“নাহ।”
তাহিয়া উঠে দাঁড়ালো।ইদানীং বুকটা ব্যাথা হয় ভীষণ।যদি হার্ট অ্যাটাক করে কেমন হবে?তোশাকে এই দুনিয়াতে একা রেখে চলে যাবে?কীভাবে থাকবে মেয়েটা?পরক্ষণে কবীরের নামটা মন থেকে ভেসে এলো।সে জানে তোশার জন্য মানুষটা সঠিক।কিন্তু অনেক কিছুকে আড়াল করে এই ভাবনাটা ভাবতে হবে।বয়স,সম্পর্ক,পদমর্যাদা, মানুষের কথা। দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুম থেকে বের হয়ে গেলো তাহিয়া।কবীর অবশ্য আঁটকালো না।
হাতের ফাইলটা শেষ করে কবীর চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলো।এসি আছে তবুও গরম লাগছে।বেলাডোনার সাথে কথা হচ্ছে না আজ চার দিন।মেয়েটা কেমন নেশা কবীরের জন্য।বিগত কয়েকটা দিন শরীর সুস্থ হলেও কবীরের দিন খুব খারাপ যাচ্ছে।দিশাকে ফিরিয়ে আনার জন্য তার মা খুব প্রেশার দিচ্ছে।কিন্তু এটা কখনো পসিবল না।বাড়ীতেও শান্তি নেই এখন।শুধু আহনাফকে একবার দেখার জন্য বাড়ীতে ফিরে।ফোন বেজে উঠলো কবীরের।তার বিজনেস ডিলের জোয়ার ভাসছে এখন।আশ্চর্য মানুষ ভাবে একটা জিনিসকে নেগেটিভভাবে প্রচার করলে সেটার পরিধি কমে যায়।কিন্ত বাস্তবে হয় উল্টো।কবীরের লাভ লাইফের উপর ভিত্তি করে সে এতোগুলো ডিল পাচ্ছে?হ্যা সেটাই দাঁড়ায়।ফোনটাকে পাশে রেখে গভীর চিন্তায় মন দিলো সে।হুট করে একটা বিষয় মাথায় এলো এবং তার অধরযুগল বিস্তৃত হয়ে গেলো।সে কীভাবে ভুলে এই কথাটি?
(***)
নিকষ কালো অন্ধকার।এই রাতের বেলা কে যেন পিঠা ভাজছে মনে হচ্ছে।কবীরের মা বলে এমন গন্ধে জিন আসে।কিন্তু তার সে ভয় নেই।তোশার নানার বাসার বাগানের ঝোপের এক কোণায় দাঁড়িয়ে আছে সে।গায়ের রঙ শ্যামলা হওয়ার দারুণ সুযোগ নিলো।যখন রাত গভীর হলো তখন পাইপ দিয়ে দোতালায় ওঠা শুরু করলো সে।নিজের শক্তপোক্ত ওজন নিয়ে ভয় ছিল অবশ্য।কিন্তু নেয়ামত সাহেব ভালো মজবুতভাবে বাড়ী তৈরী করেছে।মূলত যে পাইপটা ওটা ফাঁপা লোহার এবং খুব একটা কাজে লাগেনা।প্রায় পঁচিশ বছরের পুরোনো।অতীতে তাহিয়ার কাছে চিঠি এভাবে পৌঁছে দিতো সে।মায়ান ওতোটা শক্তিশালী না হওয়ায় বন্ধুর জন্য কাজটা কবীরই করতো।কে জানতো এতো বছর পর এই পথ কবীরকে সাহায্য করবে?
কবীর দুটো জিনিস ভেবে নিলো।ধরা পড়লে অন্তত পুলিশে দিবে না।কিন্তু আরো কথা শুনতে হবে অবশ্য।তোশাকে একবার দেখার জন্য এটা অন্তত করা যায়।শব্দহীন কদম ফেলে তোশার রুমের সামনে এসে দাঁড়ালো কবীর।তাহিয়া ভেতরে না থাকুক এটা প্রাণপণে চাচ্ছে।খুব অদ্ভূত ভাবে এ চাওয়া পূর্ণ হয়ে গেলো।তখুনি তোশা দরজা খুলে বিস্মিত দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে রইলো।কবীর ছোট করে হেসে বলল,
“ভেতরে কেউ আছে?”
হাত ধরে তাকে ভেতরে টেনে আনলো তোশা।দুজনে বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছে।
“আপনি এখানে?আমার মনেই হচ্ছিলো আশেপাশে আছেন।”
“কীভাবে?”
“মেবি দুজনের টেলিপ্যাথি হয় একে অপরের সঙ্গে।আমার ভয় করছে।কেউ দেখেনি তো?”
“না।”
কবীর খুব করে খেয়াল করলো ভয়ার্ত ছোট এই মুখটাকে।আহারে তার মনের তৃষ্ণা।মিটলো কী এখন?তোশাকে হুট করে টেনে শক্ত করে নিজের বুকে মিশিয়ে নিলো কবীর।মিষ্টি সুগন্ধ নাকে এসে ঠেকলো।
“আমি মিস করেছি তোমাকে বেলাডোনা।কীভাবে কী করলে তোমাকে পাবো বলো তো?”
তোশার চোখ দুটো অশ্রুতে ভরে গেলো।কী জবাব দিবে সে?নিজেই তো প্রশ্নটির জবাব জানেনা।মুখটা উঁচু করে তামাটে পুরুষটিকে শুধালো,
“কেমন আছেন আপনি কবীর শাহ?”
“ভালো না।”
“হাতের ব্যাথা কমেছে?”
“মনের ব্যাথা বেড়েছে।”
“তাহলে চলুন পালিয়ে যাই।কেয়ামত থেকে কেয়ামত সিনেমার সালমান শাহ ও মৌসুমীর মতোন।এরপর পাহাড়ে
আশ্রয় নিবো।কিন্তু শেষে হ্যাপি এন্ডিং হবে আমাদের?”
শুভ্র কপাল থেকে চুলগুলো সরিয়ে কবীর শুধালো,
“হ্যাপি এন্ডিং যদি না হয় আমাদের?আমাকে ছাড়তে পারবে?আজ যদি বলি এটা আমাদের শেষ দেখা?”
চলবে।