#মিঠা_রোদ
#পর্ব:৪২
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া
“প্রেমে বাঁধা না এলে তা প্রেম নয় বন্ধুত্ব।সেক্ষেত্রে আমি এমন বন্ধুত্বে বিশ্বাসী নই।”
“তুমি প্রেম ব্যাপারে অনেক কিছু জানো দেখছি।কাওকে ভালোবাসো তোশা?”
কল্লোলের প্রশ্নে তোশার দৃষ্টি থমকে গেলো।সে বিভ্রান্ত হয়ে বলল,
“বাসি।কেন বলো তো?”
“কথাটা অস্বীকার কেন করলে না?মানে আমার থেকে লুকানো উচিত ছিল তোমার।”
যুবতী কন্যার মন কাড়া হাসি অধরযুগলে।যেন কোনোকিছু লুকানোর নেই।
“নিজের অনুভূতি প্রকাশে লজ্জাবোধ আমার হয়না।”
“তুমি এমন ছিলেনা তোশা।ছোট্ট হৃদয়ের সকলের তোশামণি ছিলে।”
“এখনও তা আছি।শুধু তোমার দেখার দৃষ্টি ভঙ্গি বদলেছে কল্লোল ভাইয়া।”
“নাহ।আমি এক দৃষ্টিতে তোমাকে আজীবন দেখেছি।কিংবা দেখবো।”
তোশা প্রসঙ্গ বদলে ফোনটায় ব্যস্ত হয়ে উঠলো।কল্লোলের পুরোনো দৃষ্টি তার মুখবিবরে লুটোপুটি খাচ্ছে।সত্যি কী মেয়েটি পূর্বের মতোন আছে?কল্লোলের ভেতর হতে কোনো স্বত্তা তা অস্বীকৃতি জানালো। নারীরা বোধহয় তাদের প্রতি প্রেমময় দৃষ্টিকে উপলব্ধি করতে পারে।তোশার এতো কাছে থেকেও কল্লোল মন স্পর্শ করতে পারেনি?আফসোস!
আজ মায়ান তার দ্বিতীয় পরিবার নিয়ে দেশে ফিরছে।এয়ারপোর্টের বাহিরে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে তোশা।যদিও তার ইচ্ছে ছিলনা এখানে আসার।কিন্তু বাবার মন খারাপ হবে কিংবা কবীরের কথায় এসেছে।গাড়ীতে বসে ফোন টিপছে এমন সময় জানালার কাঁচে আঙুলের টোকা পড়লো।ওপর প্রান্তের মানুষটিকে দেখে তোশা তড়িঘড়ি করে নেমে এলো,
“কেমন আছেন ফুপু?”
লায়লা বিরস মুখে জবাব দিলো,
“ভালো।তোমার মা এসেছে?”
“মায়ের আসার কথা ছিলনা।”
“তা ঠিক।”
লায়লা অবশ্য তোশার কথাটি আরেকবার পরীক্ষা করার জন্য গাড়ীর ভেতর দৃষ্টি দিলো।কল্লোল সালাম দিলো তাকে।
“তোশা,আম্মু-আব্বু আছে।তাদের সাথে একবার যোগাযোগ করে আসতে পারতে।থাক সেসব কথা।তোমার মা না করে তুমি বাচ্চা মেয়ে আর কী যোগাযোগ করবে?চলো সকলের সাথে দেখা করবে।শুনলাম অভিনেত্রী হয়েছো।নাটকটা বেশ হয়েছে।ভালো লেগেছে আমার।”
“ধন্যবাদ ফুপু।আপনারা যে দেখেছেন জানতাম না।”
“না দেখে উপায় ছিল নাকী?মায়ান ভাই রোজ কল করে বলতো।কল্লোল তুমি কী গাড়ীতে থাকবে?আমাদের সাথে চলো।”
“আমি গাড়ীটা ভালো জায়গায় রেখে আসছি।”
তোশা ও লায়লা একসাথে হেঁটে যাচ্ছে।দাদীর বাড়ীর লোকের সঙ্গে আহামরি ভালো সম্পর্ক নেই মেয়েটার।ওইযে চলনসই কিছু অবশিষ্ট আছে।মায়ানের বাবা-মা নিজের নাতনিকে দেখে জড়িয়ে ধরলেন।হাজার হোক তার ছেলের সন্তান তো।ফুপা আইসক্রিম কিনে দিলো তোশাকে।কিন্তু মেজো চাচা-চাচীর ব্যবহার অনেক ঠান্ডা।তোশা খেয়াল করলো তার হাতে থাকা আইসক্রিম যেমন ঠান্ডা।
“কবীর ভাই আসছে আম্মা।দেখো দুজনের বন্ধুত্ব।এতোদিনেও মিটেনি।কতো কাজ ফেলে ঠিক দৌড়ে আসছে।”
লায়লার কথায় মুচকি হাসলো তোশা।যাদের মধ্যে এতো ভালো বন্ধুত্ব তা কখনো ভাঙবে নাকী?কবীর নামের সঙ্গে তামাটে পুরুষটি এসে হাজির।কালোদের নাকী কালো পরতে নেই?কিন্তু তোশার মনে হলো কথাটি পুরোপুরি ভুল।ব্ল্যাক শার্ট ইন করে পরায় কবীরের দর্শনে তোশার মনটা কী দূর্বল হয়ে উঠলো?কী সুন্দর কায়দা করে হাঁটে লোকটা।কবীর এসে সরাসরি মায়ানের বাবা-মায়ের সঙ্গে আলাপ করে নিলো।একবার তোশার সঙ্গে অবশ্য দৃষ্টি বিনিময় হলো।
“লায়লা,ওদের এখন বের হওয়ার সময়।তোমরা এখান থেকে সরে গিয়ে বসো।আমি মায়ানদের নিয়ে আসছি।”
“জি ভাই।একা যাবেন?”
“না তোশা যাবে সাথে।বাবা এতোদিন পর মেয়েকে দেখলে একটু বেশী খুশি হবে।”
তোশা যেন এই মুহুর্তের অপেক্ষায় ছিল।মাথা নিচু করে হেসে কবীরের সঙ্গে সঙ্গে হাঁটা আরম্ভ করলো।ক্ষণ দূরত্ব অতিক্রম করে তোশার আধখাওয়া আইসক্রিমটা এঁটো করে দিলো কবীর।ফিসফিস করে কন্যার উদ্দেশ্যে বলল,
“ভালোবাসা বাড়িয়ে দিলাম মাই লাভ।”
“কেউ দেখলো না তো?”
“এতো ভয়?”
“আমার নেই।যদি আপনি পান ভয়।”
“হুঁ?পাগল মেয়ে।স্মরণে আছে আমি বলেছিলাম আমি ব্যাথাময়?তো যে আ’ঘা’ত দিতে জানে সে কখনো ভীতু হয়না।”
“আজ আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে জানেন?”
“তোমার কণ্ঠে নতুন কিছু নেই বেলাডোনা?আমার প্রশংসায় সবসময় নিজেকে মাতিয়ে রাখো।চলো মায়ান বের হবে।”
কবীরের শক্ত হাতটা আকড়ে ধরলো তোশা।পৃথিবীর সকলকে জানাতে ইচ্ছা হয় মাঝেমধ্যে তার।এই মানুষটির সঙ্গে সে প্রেম করছে।এইযে সুবিশাল লম্বা দেহ ও বিশাল শরীরের মানুষটি।শুধু মাত্র তার ভালোবাসা।
মিনিট দশেক পর মায়ানের দেখা মিললো।বাবার সঙ্গে দেখা হবে এটা নিয়ে সে খুব একটা উত্তেজিত না হলেও মানুষটাকে যখন স্বচক্ষে দেখলো তখন বুকটা ভারী হয়ে গেলো তার।এইযে পাতলা গড়নের সাদামাটা লোকটা মায়ান চৌধুরী।তাইয়ুবা চৌধুরী তোশার বাবা।চোখের কার্ণিশে অশ্রু এসে গেলো মেয়েটির।অবশ্য একই অনুভূতি মায়ানেরও হলো।সকলকে ভুলে সে আগে তোশাকে দেখলো।আত্নাটা কেমন করে উঠলো তার।পাশে থাকা নিজের দ্বিতীয়পক্ষের স্ত্রী টিনাকে বলল,
“আমার মতোন অসুন্দর একটা মানুষের ঘরে এতো সুন্দর হীরা কীভাবে এলো?”
স্ত্রীর জবাবের আগে তোশাকে চিল্লিয়ে ডেকে উঠলো মায়ান।কাছে গিয়ে জড়িয়েও ধরলো।বাবার স্পর্শে মেয়েটাও গলে গিয়ে কেঁদে উঠলো।একটা বৈবাহিক বিচ্ছেদে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়তো সন্তানের হয়।
“তোশামণি আমার মেয়ে।আমার মা।দেখি কতো বড় হয়ে গিয়েছে।এতো সুন্দর হয়েছো।জানো টিনা, তাহিয়া এমন দেখতে ছিল।ঠিক যেন তাহিয়া?”
টিনা নির্বিকার হাসলো।পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নিজের ছোট্ট ছেলে মেয়ের হাতগুলো শক্ত করে ধরলো।কিছুক্ষণ বাবা-মেয়ের মিলনের পর মায়ান তাকে ছাড়লো।
“কবীর,তুই সর।তোর এতো রুপের আগুনে আমার চোখটা জ্ব’লে যাচ্ছে।”
কবীর হাসতে হাসতে জবাব দিলো,
“চোখ বুড়ো হয়ে যাচ্ছে।সেই বাহানা দে ব্যাটা।তার আগে বুকে আয়।”
কবীরের সঙ্গে আলিঙ্গনে মত্ত্ব হলো মায়ান।তোশা নিজেকে ঠিক করতে ব্যস্ত।টিনা এক দৃষ্টিতে তাকে দেখছে।নিজের উপস্থিতি মায়ানকে মনে করিয়ে দিয়ে টিনা শুধালো,
“মেয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিবেনা মায়ান?”
“ও হ্যাঁ।তোশা এটা তোমার মা।”
নিজ পিতার দিকে কেমন বর্ণনাহীন দৃষ্টি দিলো তোশা।কবীর অবশ্য বুঝতে পারলো মায়ানের ভুল সম্বোধন।কিন্তু সে আগ বাড়িয়ে কিছু বলল না।বরং তোশা জবাব দিয়ে বলল,
“আমার মা তো বাসায়।হ্যালো আন্টি আমি তোশা।”
টিনা অবশ্য অপ্রীতিকর অবস্থা হাসিমুখে কাঁটিয়ে নিলো।কবীর তাড়া দিয়ে মায়ানদের এগিয়ে যেতে বলল।বাবাকে দেখে যতোটা খুশি হয়েছিল তোশা তা ঝোড়ো হাওয়ায় ভোঁ’তা হয়ে গেলো।বিরস মুখে এগিয়ে যেতে নিলে কবীর হাতখানা ধরে থামিয়ে দিলো,
“কী সমস্যা?”
“আমার মা একজন।বাবা কেন তাকে আমার মা বলল?হতে পারে তার স্ত্রী দুজন ছিল।”
“রিলাক্স মেয়ে।আহনাফ তোমাকে কখনো মা ডাকবেনা বলে মনে হয়?”
“কিন্তু..।”
“তোমার বাবা দেশে এসেছে।এখন নানান ধরণের কথা হবে।সবকিছু রেখে চলতে হবে।”
“আমি একা পারবো না।”
কবীরের ভ্রুঁ আন্দোলিত হলো।প্রেমিকার নরম হাতখানি নিজের বুকের পাশে রেখে শুধালো,
“কবীর শাহ তার ভালোবাসাকে একা রেখে কখনো সরে যাবে মনে হয়?স্বপ্ন দেখো সুন্দর একটি ভবিষ্যতের।তাছাড়া অন্য সবকিছুতে রেস্ট নাও।লিটল চেরীর এতো ভাবতে হবেনা।”
“আপনি সত্যি আমার সাথে থাকবেন?”
“এটা আমার থেকে লিটল চেরীর মনটা ভালো জানে।চলো এখন।”
“কিছুক্ষণ কথা বলেন আমার সঙ্গে।”
“এতো কী বলবে শুনি?”
মায়ান অনেকটা এগিয়ে গিয়ে কবীর-তোশার খোঁজে পিছন ফিরে এসেছিল।কিন্তু সামনে থাকা দৃশ্যটি তার মনে দাগ কেঁটে দিলো।এমন না কবীরের মুখের হাসি সে কখনো দেখেনি।কিংবা তোশার কথা বলার বাচনভঙ্গি।মায়ান পূর্ব থেকে বিচক্ষণ মানুষ।প্রথম দেখায় কারো মধ্যে কেমন অনুভূতি চলছে তা বলতে পারে।আশ্চর্যভাবে তা মিলে যায়।তোশা ও কবীরের মধ্যে এখনও আলাপ চলছে।কন্যার হাতটাও তামাটে পুরুষের বক্ষ সীমানায়।
“তোমরা দাঁড়িয়ে আছো কেন?মায়ান?”
“টিনা তুমি একা কেন?বাচ্চারা কোথায়?”
“লায়লা আপুর কাছে।”
“একটা জিনিস দেখো তো ওদিকে।আমার মেয়ের হাত কেন কবীর ওভাবে ধরে আছে?”
“কী বলতে চাও?দেখো ইঙ্গিতটা কিন্তু ভীষণ..।”
“আমি নিজের বন্ধুকে বিশ্বাস করি।সঙ্গে মেয়েকেও।”
“তাহলে?বাদ দাও এসব।”
“টিনা তুমি বুঝতে পারছো না।আমি কী নিজের পঁচিশ বছরের বন্ধুকে চিনবো না?তার চাহনি কিংবা হাসি?”
“রিলাক্স মায়ান।তুমি কেবল দেশে এলে।।সত্যিকার অর্থে কী বুঝতে চাচ্ছো?”
“জানিনা।কিন্তু শুধু এটা বুঝতে পারলাম।আমার বন্ধু কবীর শাহ একজন পুরুষ।এবং বিশ বছরের ছোট্ট তোশামণি একজন নারী।”
“এতো তাড়াতাড়ি কীভাবে জাজ করছো?”
“অভিজ্ঞতা।”
মায়ান থামলো।পুনরায় কবীরের চোখের দৃষ্টিতে দেখলো।তোশাকে একমনে দেখে যাচ্ছে সে।কী অদ্ভূত মায়াময় দৃষ্টি কবীরের।মায়ান শুকনো ঢোক গিলে বলল,
“আমি কবীর শাহ এর চোখে এই দৃষ্টি নতুন দেখছি।তবে অনুভূতিগুলো উপলব্ধি হচ্ছে।অথচ যদি আমি ভুল প্রমাণিত হই।তাহলে কতো না ভালো হবে।”
চলবে।
#মিঠা_রোদ
#পর্ব:৪৩
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া
“আঠার বছর বয়স তো।দুনিয়া রঙিন মনে হবে।এরকম করে হাসাহাসি বন্ধ করো।আশেপাশের মানুষের সমস্যা হচ্ছে।”
দিশার স্বাবধান বাণীতে কিশোরী গুলো বিরক্তবোধ করলো।কিন্তু এতে অবশ্য কাজ হলো।নিজেদের কণ্ঠ খাঁটো করে নিলো।দিশা লম্বা শ্বাস নিয়ে পুনরায় নিজের ফোনে মনোযোগ দিলো।ক্ষাণিকক্ষণ বাদে চিরপরিচিত কণ্ঠে মুখে হাসি ফুঁটে উঠলো তার।
“মায়ান!কেমন আছো?কতোগুলো দিন পর।”
বিনিময়ে মায়ান হেসে বলল,
“আমি ভালো আছি।তা বলো তো।তোমরা নিজেদের এতো মেইনটেইন করো কীভাবে?সবগুলো এখনও নজরকাড়া রয়ে গেলে।মনে হয় না বয়স চল্লিশ।”
“প্রশংসা নাকী নিন্দে করলে?”
“অবশ্যই প্রশংসা।”
“টিনাকে নিয়ে এলে না কেন?ওর সাথে দেখা করার ইচ্ছে ছিল।”
মায়ানের মুখটি গম্ভীর হতে দেখা গেলো।নিজস্ব ফোনটা সুইচড অফ করে শুধালো,
“তোমার মনে আছে?আমার ধারণা করার ক্ষমতা অনেক?মানে যার ব্যাপারে যেটা বলতাম।ঠিক সেটা মিলে যেতো।”
“আছে।হঠাৎ এই প্রশ্ন যে।”
“দেশে ব্যাক করার পর এয়ারপোর্টে কবীর-তোশা গিয়েছিল।তাদের একান্তে কথা বলা।একে অপরকে দেখে হাসা আমার কাছে স্বাভাবিক লাগেনি।তুমি জানো কবীরকে কতোগুলো বছর ধরে চিনি।আমি কীভাবে ভুল হতে পারি যে ও আমার মেয়েটাকে পছন্দ করে।তুমি কী এই ব্যাপারে কিছু জানো?তোশার ম্যাডামও ছিলে তুমি।কখনো এরকম কিছু…।”
দিশার ঘোলাটে দৃষ্টি মায়ানের মুখবিবরে লুটোপুটি খেতে লাগলো।সময়ের সঙ্গে প্রশ্নের জবাব দেওয়ার কৌতুহল বেড়ে যাচ্ছে তার মনে।পাশ থেকে কিশোরী গুলোর খিলখিল আওয়াজে দিশার ধ্যান ভাঙলো।
“আমি কিছু জানিনা মায়ান।হতে পারে তোমার দেখার ভুল।”
“এতো বড় ভুল হবে?আমি কখনো ভুল প্রমাণিত হইনি।”
“তাহলে দেখা যাচ্ছে তোমার ধারণা করার রোগটি এখনও সারেনি।”
“রোগ বলো না।সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত একটি উপহার।তা নয় আমি যেমনটা ধারণা করলাম তোমার সংসার কিংবা নিজের সংসার নিয়ে।ঠিক সেটাই তো শেষটাতে গিয়ে হলো।মনে করে দেখো কবীরের সাথে ঝগড়ার পর সবসময় আমি বলতাম সংসার টিকবেনা।এবং শেষটায় তাই হলো।বাই দ্যা ওয়ে পুনরায় বিয়ে কেন করছো না?”
“তুমি কেন ডিভোর্সের পর এতো জলদি বিয়ে করে নিয়েছিলে?ওয়েট আগে খাবার অর্ডার করে নেই।”
ওয়েটার এসে খাবারের অর্ডার নিয়ে গেলো।দিশা পুনরায় প্রশ্নটির কথা মায়ানকে মনে করিয়ে দিলো।অদ্ভূত এক জবাব দিলো সে..
“সঙ্গীবহীন থাকতে কষ্ট লাগছিলো দেখে বিয়ে করে নিয়েছি।”
“এরপর তোমার সব কষ্ট চলে গিয়েছে?তাহিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদে আফসোস হয়না?”
মায়ান অনেকটা জলদি জবাব দিলো,
“কষ্ট হয়।কিন্তু পরিমাণ কম।”
“বেশ।তবে আমার একাকিত্ব বোধ হয়না।বিশ্বাস করো তাহিয়ারও হয়না।তাইতো দুজনে কাওকে জীবনে আসতে দেয়নি।অথচ তোমরা।”
“তোমরা?কবীর কাওকে পছন্দ করে?সত্যি করে বলো।”
দিশা প্রসঙ্গ বদলানোর নিমিত্তে বলল,
“আমি কবীরের ব্যাপারে কিছু জানিনা।যদি পছন্দ করে থাকে সেক্ষেত্রে ভেবে নিবো যে মেয়ে পছন্দ করে তাকে সে যোগ্য হীরাকে পছন্দ করে।”
“তোমাদের কবীরকে উপরের স্তরের ভালো বলার অভ্যেসটা কখনো গেলো না।স্কুল, কলেজে সকলের দৃষ্টিতে আজও কবীর ভালো।কিন্তু আমি আবার স্বাবধানী।ছেলে মানুষ একা থাকে।তাই..।”
ওয়েটার খাবার দিয়ে গেলো।চামচ দিয়ে অল্প মুখে নিয়ে দিশা শুধালো,
“সময়কে সময় দাও।দেখবে শেষটায় যা হওয়ার তাই হবে।তবে কী জানো মায়ান?তুমি ধারণা করা বন্ধ করে দাও।যদি বছর বছর পূর্বে আমার ক্ষেত্রে ঝগড়া মিটিয়ে নিয়ে সংসারের পরামর্শ দিতে।কিংবা তা নিজেও মানতে তাহলে হয়তো আজ সবকিছু শেষ হতো না।ভবিষ্যতে একটা তেঁতো কান্ডের সূচনা তৈরী হতো না।”
“এখন সব দোষ আমার ধারণার দিওনা।ডিভোর্স তো দুটো দম্পতির মধ্যেকার ব্যাপার।”
দিশা ধীর কণ্ঠে মাথা দুলিয়ে বলল,
“যতোক্ষণ না সেখানে তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ ঘটে।”
“বাদ দাও দিশা।যাক মেয়ে নিয়ে যে টেনশনের কিছু নেই এটাতে খুশি আমি।”
বিনিময়ে দিশা মুচকি হাসলো।সে সত্য বলে দোষের ভাগীদার হতে চায়নি।এই কারণে মিথ্যার আশ্রয়টি গ্রহণ করেছে।সে বুঝেছিল মায়ান দেশে এলে বিষয়টা বুঝবে।যেহেতু এতোটা খেয়াল করেছে বাকীটা না হয় নিজে বের করুক।তবে তার কাছে একটি বিষয় অদ্ভূত লাগলো হুট করে দেশে এসে তোশার ব্যাপারে পজেসিভ হয়ে উঠেছে তার বাবা।অথচ কতোগুলো বছর দায়িত্ব পালনে অপারগ ছিল।
(***)
“আপনি পরকীয়া করছেন কবীর শাহ।আপনি এই আপনি ঠিক নেই।”
“কী বলতে চাও?আমি কেন ঠিক থাকবো না?”
প্রশ্নের সঙ্গে কবীরের ভ্রুঁ জোড়া আন্দোলিত হলো।তোশা ক্রন্দরত কণ্ঠে পুনরায় বলল
“পুরো বিশ্বে একটা জিনিস আগুনের মতো ছড়াচ্ছে।মানুষ বিশ,পঁচিশ, ত্রিশ বছর বাঁচার পর পুরুষ থেকে নিজেকে নারী ভাবা শুরু করে।আপনি ও কী এমন?দেখেন আমি অনেক সুন্দর।হতে পারে উল্লাসের মতোন বডি ফিটনেস এতো সুন্দর না।”
নিজের নাম শুনে উল্লাস মুখের উপর থেকে ম্যাগাজিন সরিয়ে দিলো।তোশার উদ্দেশ্যে চিল্লিয়ে শুধালো,
“তুই কী বলতে চাস তোশামণি?”
“বলতে চাচ্ছি দুজন সুপুরুষ একে অপরের প্রতি আকর্ষণ বোধ করছে।এটা নিশ্চয় ভালো কিছু না।তারা সবসময় একে অপরের সাথে থাকছে।এরকম গোপন জায়গায় আসছে।”
“তাই তারা সম্পর্কে আছে?”
“হুঁ।”
কবীর-উল্লাস নিজেদের দৃষ্টির বিনিময় করে নিলো।দীর্ঘ শ্বাস ফেলে উল্লাস বলল,
“কবীর স্যার,আমার পক্ষ থেকে নিজের প্রেমিকাকে জোরে করে একটা চ’ড় দিবেন।এমনভাবে হাতের কাজ সারবেন যে হাতের পাঁচটা আঙুল যেন বোঝা যায়।”
কবীর অবশ্য হাতের কাজ দেখালো না।তোশাকে নিজের কাছে টেনে বলল,
“এসব কোথা থেকে শিখলে?ইন্সটা রিলস?”
“হুঁ।”
“বোকা মেয়ে।আমরা গভীর একটা কাজে এসেছি।জেদ করলে দেখে নিয়ে এলাম।উল্লাস একটা সমস্যায় পড়েছে আসলে।একজন রিপোর্টার ওর নামে ষ’ড়’য’ন্ত্রে লিপ্ত।সেটাকে একটু টাইট দিতে।”
“তাই?”
“হ্যাঁ।এখানে বসো।আমরা ওদিকটায় আছি।ভয় নেই তোমার সাথে আমার স্টাফ থাকবে।”
কবীর ইদানীং খুব নরম করে কথা বলে তোশার সঙ্গে।আজ তো আশ্চর্য কাজ করলো তামাটে পুরুষটি।পুরু উষ্ণ ঠোঁট দাঁড়া কপােলে চুমো খেলো মেয়েটির।
“আমি সব পরিস্থিতিতে তোমাকে ভালোবাসি বেলাডোনা।এখানে থাকো।আসছি একটু পর।”
উল্লাসকে ইশারায় নিজের সাথে আসতে নির্দেশ দিলো কবীর।তারা দুজন স্বচ্ছ কাচের দেয়ালে তৈরী একটা ঘরে ঢুকলো।একটা ধূর্ত লোক সেখানে প্রবেশ করতেই উল্লাস জোরেশোরে চ’ড় মেরে মাটিতে ফেলে দিলো।এরপর শুরু হলো কবীরের কাজ।তোশা তো পূর্ব থেকে এই পুরুষটির উপর মুগ্ধ ছিল।আজ যেন শতগুণে বেড়ে গেলো।লোকটাকে শা’স্তি দিচ্ছে কিছুর?তা নয় এতোটা ম’রি’য়া হয়ে আ’ঘা’ত করছে কেন?এলেমেলো কবীর শাহ তোশার হৃদয়ের স্পন্দন বাড়িয়ে দিচ্ছে।মেয়েটি তো পুরুষটির কপালের ঘাম মুছে নেওয়াকেও শৈল্পিক ধরে নিলো।যে লোকটাকে শা’স্তি দিচ্ছে সেই লোকটা বারংবার ভ’য়ে তোশার দিকে তাঁকাচ্ছে।হুট করে মেয়েটির মনটা কেমন করে উঠলো।সে নিজেকে প্রশ্ন করলো,
“কবীর শাহ কেন বলল সে সব পরিস্থিতি তে তাকে ভালোবাসে?কী এমন পরিস্থিতির উদয় ঘটলো?”
চলবে।
#মিঠা_রোদ
#পর্ব:৪৪
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া
“আপনি লোকটাকে এভাবে মা’র’লে’ন কেন?”
“সেটা তোমার জানা আবশ্যক নয়।তবে মনে রাখো আজকের পর থেকে কখনো অভিনয় জগতের নামটাও নিবেনা।”
কবীরের লম্বা পা ফেলার সঙ্গে ঠিক পেরে উঠছেনা তোশা।দৌড়াতে হচ্ছে রীতিমতো।নিজের শারীরিক গঠণ নিয়ে প্রথমবারের মতোন আফসোস হলো তার।
“আমাকে বলতে হবে আপনার।কেন লোকটার এই অবস্থা করলেন।এবং অভিনয়ের সঙ্গে কীসের সংযোগ?”
“সব শুনতে হবে তোমার?”
তোশা মুখটা উঁচু করে বলল,
“হ্যাঁ।”
“আমি বলতে বাধ্য নই।”
“আরে কবীর শাহ।”
কথা বলতে বলতে নিচে নেমে এসেছে তারা।উল্লাস পূর্বেই নিজের গাড়ী নিয়ে চলে গিয়েছে।তোশাকে টেনে গাড়ীর ভেতর বসালো কবীর।
“তোশা মনোযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনবে।অভিনয় জগত যতোটা চাকচিক্যময় দেখা যায় বস্তুত পক্ষে বিষয়টা তা নয়।একটা কনটেন্ট সেটা হোক সিনেমা,নাটক,শর্ট ফ্লিম তা হিট করানোর জন্য অনেকগুলো উপায় তৈরী করে।তোমার নাটকটা হিট করেছে।যা মানানসই।কিন্তু প্রোডাকশন টিম আরো বেশী হিট করার জন্য তোমার ফ্যামিলির কিছু ব্যাপার নিয়ে অপব্যবহার করতো।উল্লাস বিষয়টি জেনে আমাকে বলল।দেখো অভিনয় খারাপ সেটা নয়।বরং মার্জিত অনেক কিছু সিনিয়র এক্টররা তৈরী করেছেন।তুমি বুঝতে পারছো আমি কী বললাম?”
তোশা বিস্ময় নিয়ে কবীরের ঘর্মাক্ত মুখটা দেখছে।দীর্ঘ ললাট,পুরু অধরযুগলে মায়া জড়ানো।তোশা মুখ ফসকে বলে ফেললো,
“অপব্যবহার করলে কী হতো?মানুষ কী এখনও এতোটা বোকা যে অন্যের ফ্যামিলিতে কী চলে সেটা নিয়ে মাথা ঘামাবে।”
“জীবন এখন এমনটাই রয়েছে।বিষয়টা বলতে চাইনি।”
“আমার ফ্যামিলির ঠিক কোন বিষয়টা নিয়ে নিউজ হতো?”
“তোমার মা-বাবার বিয়ে।ডিভোর্স এসব।বাদ দাও।”
কথার সমাপ্তিতে গাড়ী চলতে শুরু করলো।তোশার কৌতুহলী মন।সে পুনরায় শুধালো,
“বাবা-মায়ের ডিভোর্স হয়েছে।তার মানে কী পরিবার খারাপ?শুধু শুধু।”
“হুম।”
তোশার মন অবশ্য সেটা মানলো না।স্মরণে হচ্ছে কিছু একটা লুকাচ্ছে কবীর।ঠান্ডা বাতাসে হালকা শীত লাগছে তোশার।গা গরম হওয়ার জন্য হাতে হাত ঘর্ষণ করলো।
“এসি অফ করে দিবো?”
“উহু।আপনি কিছু লুকাচ্ছেন।আমাকে সেটা বললে কী হয়?”
“শুনতে ভালো লাগবেনা।কিন্তু বিষয়টা না জানলে ভবিষ্যতে আবার মানুষ দূর্বলতা ভেবে নিবে।”
“ভয় দেখাচ্ছেন?”
কবীর নিশ্চুপ থেকে গাড়ী অচেনা একটা রাস্তায় নিয়ে গেলো।ক্ষণবাদে বিশাল বড় একটি বাড়ীর সামনে তা থামালো।বাড়ীটা এখনও পুরোপুরি তৈরী হয়নি।কবীর প্রথমে বের হয়ে তোশাকেও পথ করে দিলো।
“এটা কার বাসা?”
“মি.কবীর শাহ ও মিসেস.তোশা চৌধুরীর।”
শিহরণ বয়ে গেলো তোশার শরীর মন জুড়ে।মাথাটি নিচু হয়ে গেলো।কবীর বাঁকা হাসলো যুবতীর লজ্জা দেখে।কাছে এসে উষ্ণ শ্বাসের ছোঁয়া দিলো তোশাকে।
“মিসেস বলায় এতো লজ্জা?অথচ মানুষ শুনলে বলবে কী বুড়োর সাথে প্রেম করছে।”
“আপনি মটেও বুড়ো না।”
“সে তুমি মন ভুলানো যাই বলো।নেমে এসো।”
কবীরের শক্ত হাত খানা ধরে নেমে এলো তোশা।বাড়ীর চারিধারে উজ্জ্বল লাইট জ্বলছে।কয়েকজন দারোয়ানও রাখা হয়েছে দেখা যাচ্ছে।কবীর সোজা তোশাকে নিয়ে ছাদে চলে এলো।সাদা-কালো রঙে মেতে থাকা অনুভূতিহীন ঢাকা শহরকে দেখে তোশার দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে এলো।কবীর তার পাশটায় এসে দাঁড়ালো।সমীরণে পুরুষটির কপালের চুলগুলো উড়ছে।
“বাবা -মায়ের বিয়ে নিয়ে কতোটা জানো তুমি?”
“এটা যে অনেক ছোট বয়সে বাবা মনে করলো মাকে বিয়ে করে ফেলবে।তাই করলো।কিন্তু আমি অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে..।”
“মায়ানের হঠাৎ এই খেয়াল কেন এলো কখনো ভেবেছো?মায়ান-তাহিয়া এক জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিল কলেজ মিস দিয়ে।সেখানে কিছু ছেলেরা তাদের আঁটকে রাখে একদিন।পরবর্তীতে বিষয়টা ঢাকতে বিয়ের কথাটি ছড়ানো হয়।প্রায় তিনমাস দুজনে বিয়ে ছাড়া সংসার করেছে।বিষয়টা কিছু মানুষ জানতো।তাদের থেকে কীভাবে তোমার টিমেরা খবর পেয়েছে সেটা জানা নেই।”
“কবীর শাহ আমি বৈধ সন্তান তাদের?”
মেয়েটির কণ্ঠে কিছু একটা ছিল।যা কবীরকে বিভ্রান্ত করে দিলো।সে শশব্যস্ত হয়ে বলল,
“এই চুপ।তুমি শুদ্ধ একজন মানুষ।এমনটা ভেবো না।”
” তাহলে এভাবে কেন বলছেন?কেন বা আমাকে জানাচ্ছেন?নাহ আপনি সব বলছেন না।আমার জন্ম ইতিহাস আরো গভীর কিছু আছে।”
“নেই।এতোটুকু জানা প্রয়োজন ছিল।যাতে তুমি নিজেকে ডিফেন্ড করতে পারো।বেশী ভেবো না।”
“আপনি আমাকে স্বাত্বনা দিচ্ছেন?”
“নিজের মায়ের পবিত্রতা নিয়ে প্রশ্ন আছে তোমার?”
“না।”
“সেখানে এসব প্রশ্ন করা উচিত নয়।তারা নিজেদের সংযত রেখে পরবর্তী বিয়ে করে নিয়েছে।”
“আপনি সত্যিটা বলেন।”
“এটাই সত্যি।”
কবীরের খামখেয়ালিপনাতে তোশার রাগ উঠে গেলো।সে কাছে টেনে লোকটাকে শুধালো,
“আপনি কী আমাকে বলদ ভেবেছেন?এটাকে ইস্যু ধরে কীভাবে কী রটাতো লোকটা?”
“বলদ ভাবার কিছু নেই।টেকনিকালি তুমি সেটাই।”
অপমানে কেঁদে ফেললো তোশা।অন্ধকার ময় পরিবেশে যা ভুতুড়ে লাগলো।কবীর নিজের সঙ্গে কিছু একটা বলল।গরম লাগছে তার।অকস্মাৎ নিজের গায়ের শার্টটি খুলে ফেললো সে।তোশা কান্না থামিয়ে একমনে তা দেখছে।
“কী হলো কান্না থামালে কেন?শুনতে মধুর লাগছিলো।”
“আপনি কতোটা পা’ষা’ণ জানেন?”
“তাহিয়া-মায়ান কখনো এমন কিছু করেনি যার জন্য নিজেকে অপবিত্র বলবে।”
“আব্বুকে কবে আমাদের কথা বলবেন?”
“কেবল দেশে এলো।কয়দিন অপেক্ষা করো।”
“মিথ্যুক।আপনি বলবেন না।পরে সব শে’ষ হয়ে যাবে।”
“মেয়ে মানুষ তো সবুর নেই।”
“এই ছেলে মানুষ,আপনার সবুর দেখি।দেখি আপনার সবুর।”
“ওইযে আমার মাথায় সবুর।”
তোশা এগিয়ে এলো কবীরের কাছটায়।কিন্তু যেই না তাকে স্পর্শ করতে যাবে ঠিক তখুনি কবীর হাত মুচড়ে তাকে নিজের কাছটায় নিয়ে।
“আগামী সাতদিন পর আপনাকে আমি নিজের করে নিবো।বিয়ের জন্য খুব লাফান না তোশামণি?নিজেকে তৈরী করে নেন।”
তোশা অবাক হয়ে কবীরের সামনে দাঁড়ালো।বিস্ময় কণ্ঠে বলল,
“সত্যি?”
“হ্যাঁ।চলো তোমাকে এখানে নিয়ে আসার কারণ দেখাই।”
তোশার হাতটা ধরে নিচে নেমে যাচ্ছে কবীর।তিনতলা কিছুটা কমপ্লিট হয়েছে।বড় একটা রুমের সামনে তাকে নিয়ে এলো।সাইডে কালো রঙের আলমারি খুললো কবীর।
“তোমার বিয়ের শাড়ী।দেখো তো পছন্দ হয়েছে কীনা।”
একটি খয়েরী রঙের বেনারসি তোশার সামনে ধরলো কবীর।মেয়েটির চোখ অশ্রুতে ভরে গেলো।হুট করে তাকে আয়নার সামনে নিয়ে গেলো কবীর।পিছন থেকে স্বর্ণ রঙের পাথরখচিত ওড়না মাথায় পরিয়ে দিয়ে বলল,
“দেখো তো কবীর শাহ এর বধূকে কেমন লাগছে?”
“অনেক সুন্দর।”
“তাইনা?”
তোশা মাথা নাড়ালো।সে কবীর শাহ এর বধূ।ভাবতেই একটু আগের ভয়, কান্না মিলিয়ে গেলো।এই দিনটার জন্য সে কতো অপেক্ষা করেছে।তামাটে পুরুষটির সঙ্গে বৈধ হওয়ার জন্য।তোশার পিছনে কবীর বোতাম লাগানো বিহীন শার্ট পরে আছে। দুজনের পোশাক এখন বড় অদ্ভূত।কিন্তু তোশা এই অদ্ভূত পোশাকের সময়টি কখনো ভুলবেনা।বারংবার তার কানে বেজে চলেছে।
“সে কবীর শাহ এর বধূ।”
চলবে।