#মিঠা_রোদ
#পর্ব:২৭
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া
“জেনেশুনে অবুঝের মতোন ব্যবহার করা মেয়েকে আমার কোনোকিছু বোঝানো বাকী নেই।চলো বাসায় ছেড়ে দিয়ে আসবো।এরপর যেখানে খুশি সেখানে যাও।”
তোশার সামনে থেকে উঠে দাঁড়ালো কবীর।রাগে গা কাঁপছে তার।মেয়েটিকে যতো বুঝানো হচ্ছে ততো যেন মাথায় চড়ে বসেছে।
“আমার সঙ্গে এতো রুড বিহেভ কেন করছেন?এটাই কী আমার প্রাপ্য?”
“হ্যাঁ।”
মৃদু হাসলো তোশা।গা সোফায় এলিয়ে দিয়ে বলল,
“আমার কতো কিছু প্রাপ্য তাইনা?শুধু দোষটা কোথায়?নিজের বাবা-মায়ের বন্ধুকে ভালোবেসেছি।আমাকে দেখে মনে হয় সবথেকে আদর, ভালোবাসা পাওয়া মেয়েটা।কিন্তু সত্যি কী তাই কবীর শাহ?আপনি না আব্বুর বন্ধু।বলেন তো বাবা আমাকে ঠিকঠাক ভালোবাসে কীনা?”
“ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলে কাজ হবেনা তোশামণি।তুমি যথেষ্ট আদরে বড় হয়েছো।”
“না ভুল।একসময় আদরে ছিলাম।কিন্ত আব্বু ও আম্মুর ডিভোর্সের পর থেকে নেই।নানীর বাড়ীতে সব তো উপরে উপরে।যদি জীবন নিয়ে বেশী বুঝদার হয়ে পড়তাম তাহলে মানুষ আরো দায়িত্ব চাপিয়ে দিতো আমার উপর।আমার কেউ নেই শুধু মা ছাড়া।তার জন্যই তো সেদিন রাতের পর আপনার সাথে সেরকম ব্যবহার করেছি।নেশার ঘোরে আপনি বললেন মা কষ্ট পাবে।আমি মেনে নিলাম।এক সময় ধরে নিলাম আপনার প্রতি কিশোরী বয়সের আবেগ।দুজনের দেখা বন্ধ হওয়ার পর থেকে কান্না করতাম,খাওয়া কমিয়ে দিয়েছিলাম।এরমধ্যে আপনার প্রাক্তন স্ত্রী দিশা ম্যামের অ ত্যা চা র গুলো।”
শেষের কথাটি শুনে চমকে উঠলো কবীর।দিশার নাম তো সে কখনো নিয়েছিল না।তবে তোশা কীভাবে চিনে?
“তুমি কবে থেকে জানলে যে দিশা আমার এক্স ওয়াইফ।”
“আপনার সঙ্গে কথা বন্ধ হওয়ার এক মাস পরে জেনেছিলাম।ম্যাম নিজে বলেছিল।একদিন টিফিন পিরিয়ডে আমাকে ডেকে আহনাফের থেকে দূরে থাকতে বলে।আমি আসলে বুঝতে পারিনি কেন।কারণ ওই বাচ্চাটার সঙ্গে আমি জুড়ে গিয়েছিলাম।আইসক্রিম ডাকটা খুব ভালো লাগতো।ম্যাম দূরে থাকার কারণ জিজ্ঞেস করার পর সে তখন বলেন আপনি তার স্বামী ছিলেন।খুব খুব মন্দ লেগেছিল।ম্যামের ক্লাস করতে পারতাম না।আপনার কথা মনে হতো।টিনেজার ছিলাম।আবেগ বেশী ছিল।আপনার থেকে দূরে থাকাটা সম্ভব হচ্ছিলো না বিধায় ম্যামকে গিয়ে সরাসরি সব বলে দেই।যেন সে আপনাকে বোঝায়।কতোটা বোকামি ছিল।ম্যাম ধীরে ধীরে সব শুনলো।এরপর শুরু হলো আসল কষ্ট দেওয়া।পড়াশোনা নিয়ে য ন্ত্র ণা বাদ দিলাম।আসল আঘাত করতো আপনাকে নিয়ে।সুন্দর সুন্দর শাড়ী পরে আসতো।যেগুলো আপনি উপহার দিয়েছিলেন।সেসব আমাকে দেখাতো।বিশ্বাস করুন শাড়ী গুলোতেও ম্যামকে কেন যেন খুব সুন্দর লাগতো।মনে মনে কতোবার যে ওই সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার দোয়া করেছি।আপনাদের ভালো ভালো মোমেন্টস সব শেয়ার করতো।আমি মূর্তির মতোন শুধু দাঁড়িয়ে থাকতাম।দিন যেতে লাগলো পড়াশোনা খারাপ হতে লাগলো।স্বাস্থ্য ভা ঙ তে লাগলো।ম্যাম আমাকে পুরোপুরি ভেঙেছিল কবে জানেন?যেদিন…।”
তোশা থামলো।কবীর ভ্রু কুঁচকে তাঁকিয়ে আছে।যেন বাকীটা শোনার তীব্র বাসনা জন্মেছে মনে।
“যেদিন কী তোশা?”
“একটা জিনিস বলেন তো।দিশা ম্যামের গলার একটু নিচে বহু পুরোনো কা ম ড়ে র দাগ আছে তাইনা?যেটা আপনি দিয়েছিলেন।বহুদিন বাজে ক্ষ ত টা থেকে গিয়েছিল।”
কবীরের শরীর বেয়ে উষ্ণ স্রোত বয়ে গেলো।তোশার বলা কথাটি সত্য।হোক না তারা প্রাক্তন তবুও এটা তাদের গোপন বিষয়।যেটা তোশার জানার কথা নয়।কবীর গম্ভীর সুরে বলল,
“তুমি কীভাবে জানলে?”
“ম্যাম নিজে দেখিয়েছিল।আপনি ভালোবাসার সময় কতোটা উ ন্মা দ হতেন।কতো নামে ডাকতেন।কীভাবে আগলে নিতেন।সব ব্যাখা করে ম্যাম শেষে বলেছিল আপনি এখনও তাকেই ভালোবাসেন।এবং বিচ্ছেদ শুধু লোক দেখানো।এবং এমন করে কাউকে ভালোবাসবেন না।এমনকি দুই একটা ছবিও দেখেছি।সেদিন বাসায় ফিরে অনেকসময় ব্লে ড নিয়ে বসেছিলাম।নিজেকে শেষ করে দিতে মন চাইতো।কতো যোগাযোগ করতে চেয়েছি।মায়ের জন্য করিনি।আপনারা বলেন আবেগ।তখন আমি বুঝেছিলাম এসব চাওয়া পাওয়া কখনো মিটবার নয়।ম্যাম এতোগুলো ট র্চা র করেছিল কেন জানেন?শুধু একবার জবাবে বলেছিলাম আপনিও আমাকে ভালোবাসেন।কী হলো কিছু বলছেন না কেন?”
কথাগুলো বিপরীতে ঠিক কী প্রতিক্রিয়া দেওয়া উচিত কবীর ভুলে গেলো।লজ্জায় তামাটে মুখটি আরক্ত হয়ে উঠলো।
“তোশামণি…।”
“আমার সব কথা আগে শুনুন কবীর শাহ।জানেন নিজের কষ্ট লাঘব করতাম কীভাবে?আহনাফকে বলে দিতাম তোমার বাবাকে জড়িয়ে ধরে এরপর কোথাও স্পর্শ না করে আমার কাছে আসবে।বাচ্চাটা তাই করতো।আমিও আবেগে ওকে জড়িয়ে ধরে রাখতাম।আপনার উষ্ণতা অনুভব হতো।সঙ্গে বাচ্চাটির পবিত্রতায় মন শান্ত হতো।এমন না ম্যামের সঙ্গে আপনার যা ছিল তা পাপ।কিন্তু আমাকে সেসব বলে ছোট মনটাকে কেন বি ষি য়ে তুলতো?নিজের মানসিক অবস্থা রিকোভার করতে অনেক সময় লেগেছে আমার।তবুও তো আপনাকে ভুলিনি।বলেন আম্মু মানবেনা।কিন্তু একমাত্র যে মানুষটা আমাকে ভালোবাসে সে কী চাইবে আজীবন আমি কষ্ট পাই?চাইবে কীনা বলেন?কিংবা আপনি কবীর শাহ।যে আমাকে মায়া তো করেন কিন্তু স্বীকার করেন না।নি র্দ য় ব্যক্তি।”
“আমি নি র্দ য় নই তোশামণি। শুধু বাস্তবতা দেখছি।ভালোবাসা সব নয়।তুমি কষ্ট পাবে দেখে একমাসের সেই গেমটা আমি চালিয়ে যাইনি।দূরে থাকি।তাও যদি এসব ফেইস করো আমি কী করবো বলো?বড্ড হেল্পলেস লাগছে।”
তোশা এতো এতো কথা বলতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছে।তার কান্নার বেগ বেড়ে যাচ্ছে।সোফায় হাঁটু ভাজ করে বসে কান্না করতে লাগলো।কবীর মটেও স্বান্ত্বনা দিলো না।এক অদৃশ্য আত্নগ্লানি তার অন্ত:করণকে পু ড়ি য়ে দিচ্ছে।ক্ষণবাদে খেয়াল করলো তোশা তার দিকে এগিয়ে আসছে।সিক্ত নাকটা টাই দিয়ে মুছে শক্ত দৃঢ় বুকে মাথা ঠেকালো।
“বেলাডোনা,তোমার নিজের ওড়না ছিল তো।কিংবা আমার কাছে রুমাল আছে লাগবে?”
কান্নারত কণ্ঠে তোশা জবাব দেয়,
“টাই দিয়ে মুছে নিয়েছি তো কী হয়েছে?এমন করেন কেন?দুঃখে স্বান্ত্বনা দিয়ে তো আলিঙ্গনও করতে পারতেন।অবশ্য পা ষা ণ মানুষের কাছে এর থেকে বেশী আশা করা যায় নাকী বলেন?”
“আসলেও যায়না।কী বলো তো?আমার মুখে জন্মের পর মা লোহা দিয়েছিল।সেই সুবাধে এতো পা ষা ণ।”
“বুঝি তো।আমার মন বদলানোর জন্য বলছেন।তাও একবার মুখ থেকে বের হবেনা পছন্দ করার কথা।শ য় তা ন।”
“হুম বুঝেছি।খুদা লেগেছে না?কী খাবে বলো তো।পিজ্জা অর্ডার করি?নাকী ভারী মিল নিবো?”
“পিজ্জা।তবে আমাকে কিছু সময় কাঁদতে দেন।বিরক্ত করবেন না।”
“আবার কাঁদতে হবে কেন?দিশা যা যা বলতো সেসব ভুলে যাও।স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে রঙের অভাব থাকেনা।কেঁদো না লিটল চেরী।আমার কষ্ট হচ্ছে।”
তোশা কিন্তু নিষেধটি শুনলো না।বরং কান্না করতে থাকলো।এই অবস্থাতে ফোন বের করে ফুড পান্ডায় খাবার অর্ডার করলো কবীর।অশ্রুর বৃষ্টির বন্ধ হলো খাবার ডেলিভারিতে আসার পর।তোশা ততোক্ষণে স্বাভাবিক।
“যাও হাত মুখ ধুয়ে এসো তোশামণি।গাড়ীতে কতো ধূলা লেগেছে।বোতলটা নিয়ে যাও।এমনিতে ট্যাপে পানি আসতে একটু সময় লাগবে।”
“টিস্যু দিয়ে মুছে নিলেই হবে।”
“না যাও হাত মুখ ধুয়ে এসো।”
মুখ ভেংচি কেঁটে তোশা নরম কণ্ঠে বলল,
“সব সময় আমাকে বাচ্চার মতো ট্রিট করেন।”
“কারণ তুমি বাচ্চা।”
যতো কথা বলুক না কেন কবীর দিশার এসব কান্ড ভুলতে পারছেনা।বারংবার লজ্জায়, খারাপ লাগায় শেষ হয়ে যাচ্ছে।সঙ্গে তোশার কষ্টও অনুভব হচ্ছে।মেয়েটা কতোটা কষ্ট পেয়েছো ছোট বয়সে।কোনেভাবে নিজেকে শান্ত রেখেছে কবীর।দূরে গিয়েও তোশার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ সে হোক সেটা মানসিক।সারামুখে বিন্দু বিন্দু পানি নিয়ে ফিরে এলো তোশা।মেয়েটিকে স্নিগ্ধ লাগছে।কবীরের হঠাৎ কী হলো।এগিয়ে গিয়ে তোশাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল,
“আমার জন্য যতোটা কষ্ট পেয়েছো সবকিছুর জন্য সরি বেলাডোনা।না হোক সম্পর্ক।কিন্তু আর কখনো তোমার অনুভূতিকে অসম্মান করবো না।”
নাক টেনে যুবতী কন্যাটি বলল,
“হেইট ইউ কবীর শাহ।আপনিও একবার বলেন হেইট ইউ।বলেন না..।”
কবীর হাসলো।কিন্তু বড্ড নিস্তেজ কণ্ঠে জবাব দিলো,
“হেইট ইউ টু সুন্দর মেয়ে।”
চলবে
#মিঠা_রোদ
#পর্ব:২৮
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া
“ড্রাকুলা তোশা।”
বক্ষঃস্থলের নিবারণ ত্বকের উপর ছোট ছোট দাঁতের চিহ্ন দেখে ঈষৎ হাসলো কবীর।মেয়েটির জন্য ড্রাকুলা উপাধি যেন একদম মিলে যায়।এখনও ক্ষ ত টা জীবন্ত রয়েছে।সকালের পর তাতে ঔষধ লাগানোর সময় হয়ে উঠেনি।ড্রয়ার বের করে তাতে মলম লাগাচ্ছে এমন সময় ফোনটা বেজে উঠলো।হাত বাড়িয়ে রিসিভ করে সেটি কানে রাখলো কবীর,
“হ্যাঁ বল পারভেজ।”
“ভাই তোশার কথাগুলো সত্য।দিশা নিজে স্বীকার করলো আমার কাছে।”
মুহুর্তেই তামাটে মুখটি আরক্ত হয়ে উঠলো।কবীর এমনিতে শান্ত ধীর মেজাজের মানুষ।তবে কোনোকিছু নিয়ে বিরক্ত হলে রাগের শেষ থাকেনা।
“দিশার কী মাথা খারাপ?ও বুঝতে পারছে ঠিক কী করেছে?সব বাদ বাচ্চা মেয়েটিকে আমার ইন্টিমেন্ট সময়ের বিহেভিয়ার গুলো বর্ণনা করেছে।দিশা না শিক্ষিত একজন মানুষ?তবে কেন এসব করলো?এতো যদি মায়া বা স্মৃতিচারণ করার ছিল তাহলে ডিভোর্স কেন দিলো?বিচ্ছেদের কথা তো আমার থেকে নয় বরং ওর থেকে আগে উঠে এসেছিল।”
পারভেজ উষ্ণ শ্বাস ফেলে বলল,
“মানুষ বড় বিচিত্র মস্তিস্কের হয়।কোন সময় কোন বিহেভিয়ার করে ফেলে বলা যায়না।আমাকে যতোটা বলল সেটা হচ্ছে আহনাফের সাথে তোশার বেশ ভালো সম্পর্ক।ঠিক সেটা মেনে নিতে পারেনি ও।এজন্য কীনা…।”
“এজন্য কী?কোনোভাবে জঘন্য কাজটা তুই জাস্টিফাই করতে পারিস না।হতে পারে দিশা তোর সবথেকে প্রিয় বন্ধু।কিংবা আমার প্রাক্তন স্ত্রী।তবে ওর কিছু কিছু কাজ মনুষ্যত্বের বাহিরে চলে যায়।ভেবেছিস কতোটা ট্রমাতে গিয়েছে তোশা।”
“দিশা নিজের ক্যারিয়ার ভুলে শুধুমাত্র আহনাফের জন্য স্কুলটায় আছে।যদি দেখে ছেলেটা তার থেকে তোশাকে বেশী ভালোবাসে, দেখা হলে কথা বলেনা তবে কোন মা মানতে পারবে বল?ক্ষমা করে দে।”
কবীরের মুখমণ্ডলের মাংস পেশী দৃঢ় হতে দেখা গেলো।পারভেজ ও দিশা বন্ধু কম ভাই বোনের মতোন বেশী।এই কারণে একজনকে কিছু বললে অপর জন জেনে যায়।কবীর নিজেকে ধাতস্থ করে বলল,
“আমার ছেলে বা তোশার কারো জীবনে যেন দিশাকে আবার না দেখি।মনে রাখতে বলবি।”
“ওকে বলবো।কিন্তু একটা কথা বল।তোশার সঙ্গে আবার যোগাযোগ শুরু হয়েছে তোর?দেখ আমি অন্য কারো নয় শুধু তোর কথা ভাবছি।মেয়েটা ছোট্ট।এখন মনে হবে তুই সব।কিন্তু একসময় তোর উপর বিতৃষ্ণাতে সরে যাবে।জীবনের যতোটা দিন আছে এরপর তো তুই কষ্ট পাবি।”
“না যোগাযোগ নেই।আজ দেখা হয়েছিল।তাই আক্ষেপ করে কথাগুলো বলল।”
“যোগাযোগ না রাখা ভালো।আমি দিশাকে বলে দিবো।ও কখনো এমনটা করবেনা।তুই শুধু তোশার সঙ্গে কোনোরকম আলাপ করিস না।”
“খেয়াল রাখবো।”
পারভেজ ফোনটা রেখে দেওয়ার পর ভাবুক হয়ে উঠলো কবীরের মন।সে মুখের উপর মিথ্যেটা বলেছে কারণ তোশার কথাটি অতীতে পারভেজকে জানানোর কয়েক মুহুর্ত পরে দিশা জেনে গিয়েছিল।ফলস্বরুপ বিষয়টা আরো কাঁদায় মাখামাখি হয়েছে।কবীর এটা বিশ্বাস করে কিছু সত্য কারো ভালোর জন্য গোপন রাখা ভালো।
“বাবা,মা আবার কী করেছে?”
ভাবনা থেকে বের হয়ে সামনে তাঁকালো কবীর।আহনাফ রাতের পোশাক পরে দাঁড়িয়ে আছে।স্বভাবসুলভ সে বাবার সাথে ঘুমাবে।ছেলেটা মায়ের মতোন গায়ের রঙটা পেলেও মুখাবয়ব সবটা বাবার মতোন পেয়েছে।কবীর শাহ এর শুভ্র রুপ হচ্ছে আহনাফ।
“কিছু করেনি আহনাফ।তুমি এখানে ঘুমাবে আজ?”
“হ্যাঁ বাবা।আমার কাছ থেকে হাইড করার কোনো কারণ নেই।এখন আমি বড় হয়ে গিয়েছি।”
কবীর হেসে ফেললো।এক তোশা যে সবসময় ছোট থাকতে চায় আরেক আহনাফ যে সবসময় বড় হতে চায়।বিপরীত মেরুর দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব হলো কীভাবে?
“তোমার আইসক্রিমকে দিশা কষ্ট দিয়েছে একটু।তাই রাগ হয়েছিল।”
“আইসক্রিম নিশ্চয় কেঁদেছে?মেয়েটা খুব কাঁদে।”
“আমি আইসক্রিমের ব্যাপারে কীভাবে জানি সেটা জিজ্ঞেস করবেনা?”
আহনাফ বিছানাতে একপাশে শুয়ে পড়তে পড়তে বলল,
“তোমাকে ভালোবাসে আইসক্রিম।তবে তুমি চিনবেনা এমনটা তো হওয়ার নয়।”
কবীরের অক্ষিগোলকের আকৃতি বড় হতে দেখা গেলো।একটা টি-শার্ট গায়ে দিয়ে বিছানার পাশে এসে বসলো।
“তুমি মাত্র বারো বছর বয়সে ভালোবাসার অর্থ জানো আহনাফ?এসব শিখেছো কার থেকে?”
“দাদা শিখিয়েছে।”
মৃদু হাসলো কবীর।তার বৃদ্ধ বাবা এক বয়সে তাকেও এসব শিক্ষা দিয়েছিল।ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো কবীর।বাচ্চাটাও যেন মোমের মতোন গলে গেলো।বাবার কোমড় জড়িয়ে ধরে বলল,
“আমি তোমাকে ভালোবাসি বাবা।তুমি কখনো আমাকে ভুল বুঝো না।”
“আহনাফ শাহ একজন ভালো ছেলে।আমি জানি তুমি এমন কোনো কাজ করবেনা যা অন্য মানুষের চোখে ভালো নয়।কিন্তু ভালোবাসা নিয়েও ভাববেনা।বয়স অল্প।জীবনে এসবের জন্য বিস্তর সময় আছে।মনে রাখবে আহনাফ সময়ের আগে ফল পরিপক্ব হয়না।হলে সেটার মিষ্টতা থাকেনা।তোমার আইসক্রিমকে দেখো মিঠা রোদে পরিপক্ব ফল।যত্ন নিতে হয় বেশী।”
আহনাফের পিঠটা মৃদু আন্দোলিত হলো।হাসির ঈষৎ আওয়াজে কবীর ভ্রু কুঁচকে রইলো।ছেলেটির কিছু স্বভাব যে তোশার সঙ্গে মিলে আজ অনুধাবন করতে পারলো সে।
“তুমি হাসছো কেন আহনাফ?”
“আইসক্রিম জানো তোমাকে কী বলে?”
“কী?”
“শুনো আমি হলাম মালাই,সে আইসক্রিম আর তুমি সবার উপরে থাকা চকলেট সিরাপ।”
“এটা তোশামণির বলা কথা?আশ্চর্য।আমি কীনা চকলেট সিরাপ?”
হুট করে আহনাফ আবদারের সুরে বলল,
“আইসক্রিম আমি রবিবারে ঘুরতে যাবো।তুমি সাথে যাবে আব্বু।”
“তোমার মেয়েটাকে কেন খুব ভালোলাগে?”
ধণাত্বক মাথা দুলালো আহনাফ।শোয়া থেকে উঠে এসে বাবার গলা জড়িয়ে বলল,
“জানিনা কিন্তু ওর সাথে সময় কাঁটাতে ভালোলাগে।”
কবীর ফিসফিস করে বলল,
“আমারও।”
(***)
“এই তোশামণি।এই তোশামণি উঠ।দেখ ভূ মি ক ম্প ছাদে এসেছে।”
ঘুম জড়ানো কণ্ঠে তোশা জবাব দিলো,
“ঘুমাতে দে অপ্সরা।ভূ মি ক ম্প ছাদে আসার সম্ভবনা নেই।”
“আরে স্বপ্নে বহু কিছু হয়।উঠ তো তুই।”
নিভু নিভু দৃষ্টিতে চোখ মেলে তাঁকালো তোশা। বাহির থেকে ল্যাম্প পোস্টের হলদেটে আলো আসছে।
“আমি স্বপ্ন দেখছি অপ্সরা?”
“হ্যাঁ তো।চল তোর ভূ মি ক ম্প দেখতে হবেনা?”
“হু।”
“উঠ রে তোশামণি।”
ঘুমের ঘোরেও তোশার বড্ড কৌতুহল হলো।ছাদে কীভাবে ভূ মি ক ম্প আসবে?কাঁপতে কাঁপতে অপ্সরার পিছনে হাঁটছে।আচ্ছা স্বপ্নও কী এতো বাস্তব হয়?
অপ্সরার বলা ভূ মি ক ম্পটি লম্বা চওড়ায় বিশাল।রাতের অন্ধকারেও তামাটে রঙটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।তোশা স্বপ্নের ভ য়া ব হতা বুঝতে পেরে শিউরে উঠলো।হাতা কাঁটা টি-শার্টটিতে পুরুষটির বাহু দুটোকে উঁচু ঢিবি মনে হচ্ছে।তোশার ঘোর হলো।সে এগিয়ে গিয়ে ছাদের একপাশে দেয়ালে পিঠ ঠেকালো।চোখ বন্ধ করে পুনরায় তন্দ্রায় ডুবে গেলো।যেন স্বপ্নটি পুরোটা না দেখলেও চলবে তার।বিভ্রান্ত কবীর শাহ কিন্তু পিছু হটলো না।সরল পায়ে এগিয়ে এসে ঘুমন্ত যুবতীকে সোজা করে দাঁড়া করালো।মেয়েটা রোদে থাকা টলমলে লতার ন্যায় হয়ে উঠেছে।তাকে পিছন দিকে থেকে আলিঙ্গন করলো কবীর।ক্ষণে ক্ষণে সময় অতিবাহিত হওয়ার পর যুবতীর উদ্দেশ্যে শুধালো,
“তোমার কাছে ভালোবাসার অর্থ কী তোশামণি?”
তন্দ্রাচ্ছন্ন তোশা জবাব দিলো,
“কবীর শাহ।অন্য ভালোবাসায় আম্মু,আব্বু ও মালাই আছে।”
ভালো লাগায় মনটা ভরে গেলো কবীরের।পরক্ষণে ঘুম জড়ানো কণ্ঠে তোশা শুধালো,
“আপনার কাছে ভালোবাসার অর্থ কী কবীর শাহ?”
জবাবে সে বলল,
“ভালোবাসার অর্থটা জানা নেই।কিন্তু নামটা আমার কাছে এক।যা সময়ে সময়ে বিভিন্ন রঙে এসে ধরা দেয়।কখনো ছোটখাটো ছিমছাম কিশোরী রুপে তো কখনো খোলাচুলে লাবণ্যময়ী যুবতী রুপে।তবে সে একজনই তাইয়ুবা চৌধুরী তোশা।”
অধর যুগল প্রসারিত হয়ে গেলো তোশার।আস্তে করে চোখ খুললো।এতোক্ষণে তার মস্তিস্ক সচল হতে শুরু করেছে।পুরোপুরি জাগ্রত হয়ে উষ্ণ শ্বাস ফেললো সে।কী এক য ন্ত্র ণা হচ্ছে তার।অভিমানী হয়ে বলল,
“কেন এসেছেন আমার কাছে এসব কথা নিয়ে?আপনি তো স্বপ্ন নয়।হুট করে মন কেন পরিবর্তন হলো?”
চলবে।
#মিঠা_রোদ
#পর্ব:২৯
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া
“আমি সত্য বলেছি শুধু।পরিবর্তন এক্ষেত্রে কী জানা নেই।”
“সন্ধ্যায় ছেড়ে যাওয়ার সময় সামান্যতম বিদায়টুকু দেননি।আমি বুঝেছি তো প্রাণপ্রিয় দিশা ম্যামের দোষ গোপন করতে মায়া দেখাচ্ছেন।”
অভিমান বৃষ্টি হয়ে পড়ছে তোশার কণ্ঠে।অথচ খুব প্রিয় একটা জিনিস সে পেয়ে গিয়েছে।কিন্তু কেমন ব্যবহার করলে সে যে সর্বোচ্চ খুশি সেটা প্রকাশ পাবে তা অনুধাবন হচ্ছে না।বিভ্রান্ত ছোট্ট মুখটি আজলায় তুলে নিলো কবীর,
“নির্বোধ তোশা।মেয়েরা তো সবথেকে বেশী বুঝতে পারে ছেলেদের ব্যবহার।তবে তুমি কেন বুঝতে পারো নি কবীর শাহ তোমাকে পছন্দ করে?”
“মাঝের চারটে বছর আমি একবারও আপনাকে দেখিনি।সত্যি বলছি।কিন্তু গত কয়েকদিন পূর্বে যখন আবার দেখা হলো তখন মনে হয়েছিল চোখ দুটো ভিন্ন কিছু বলে।”
গাঢ় গম্ভীর কণ্ঠে কবীর শুধালো,
“কী বলে আমার চোখ দুটো?”
“যেদিন দয়া দেখিয়ে এই ভালোবাসার কথা না বলবেন সেদিন বলবো।”
“মানে?আমি পছন্দের কথা দয়া দেখিয়ে বলছি?”
“অবশ্যই।বোকাসোকা হতে পারি।কিন্তু মাঝেমধ্যে বুদ্ধি খুলে যায় বুঝলেন।”
ভ্রু দুটো কুঁচকে এলো কবীরের।মেয়ে মানুষের স্বভাব বিচিত্র।কিছু পাওয়ার জন্য ভীষণ বায়না করবে যখন জেদটা পূরণ হবে তখন এভাবে নয় ওভাবে হলে ভালো হতো মনে হবে তাদের।উষ্ণ একটি শ্বাস বের হয়ে এলো কবীরের ভেতর থেকে।সব মেয়ে নাকী তোশা এমন কে জানে?পাশে তাঁকালো কবীর।তোশা আনমনে নিকষ কালো মেঘকে দেখছে।খোঁপা করা চুলগুলো যেকোনো সময় মুক্ত হয়ে উঠবে।
“জানেন আমাদের কথা কে কে জানে কবীর শাহ?”
“কে কে?”
“বড় দাদা-দাদী,আসিফ আঙকেল, সিয়া ম্যাম।আমার তিন বন্ধু।”
মৃদু চিৎকার করে উঠলো কবীর।ভীষণ উত্তেজিত হয়ে উঠলো সে।
“আসিফ ভাইয়া?মায়ানের চাচা-চাচী জানে?শিট তারা কী ভাববে আমাদের?তাহিয়াকে তো বলে দিবে।কবে থেকে জানে?”
“শান্ত হোন কবীর শাহ।দাদা-দাদী জানে সেই শুরু থেকে।আসিফ আঙকেল জেনেছে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর।আশ্চর্যভাবে তারা সকলে আমাকেই সাপোর্ট করেছে।কিন্তু দেখুন সব কয়টা মানুষ শিক্ষিত, বয়সের ভারে জর্জরিত।শুধু আপনি এক পছন্দ তো করেন কিন্তু সমাজের তোয়াক্কা করেন।”
“কারণ এসব মানুষকে নিয়ে সমাজ নয়।তারা সকলে আবেগে ডুবে আছে।যাই হোক চলে যেতে হবে আমার এখন।তবে তুমি কেন আমাকে দেখে আশ্চর্য হলে না?”
“যেমনটা আহনাফের সঙ্গে আমার পরিচয়ে আপনি চমকে উঠেননি ঠিক তেমন।অপ্সরা সাহায্য করেছে।”
“ছোট শাহ এর যে একজন আইসক্রিম আছে সেটা জানা ছিল আমার।তাছাড়া একদিন ওর সাথে ভিডিও কলে কথা বলার সময় আমি তোমার হাসি শুনেছিলাম।তখন থেকে সন্দেহ ছিল।অপ্সরা সাহায্য করেছে সেটা ঠিক।আমার মনে হচ্ছিলো হঠাৎ তোমাকে মনের সবগুলো কথা না বললে চলছেনা।”
“ইশ,তাই এভাবে চলে আসবেন?অপ্সরা বাহু দুটো দেখে কী বলবে?হায়া নেই।”
“হায়া শব্দটি তাহিয়ার কমন ভাষা।যাই হোক আর কাওকে কখনো কিছু বলবেনা।মনে থাকবে?”
হাই তুলে তোশা জবাব দিলো,
“একদিন পুরো দেশকে জানাবো আমি যে এই সেই কবীর শাহ যার সাথে আমার প্রণয়।অপেক্ষা করেন সেদিনের।এখন যান ঘুমাবো আমি।কাল বাসায় চলে যাবো।”
কবীর হাত বাড়িয়ে তোশার মসৃণ চুলগুলো এলেমেলো করে দিয়ে বলল,
“দয়া বলো যাই বলো।পছন্দের কথা স্বীকার করেছি আমি।কিন্তু ভেবেছিলাম তুমি খুব খুশী হবে।আচ্ছা চলে যাচ্ছি আমি।”
“শুনেন শুনেন।”
“হুম বলো।”
কবীরের হতাশমূলক বাক্য শুনে নিজেকে আড়ালে বকলো তোশা।পুরুষটির সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
“মন খারাপ করবেন না।আমি বিশ্বাস করেছি পছন্দ করেন।কিন্তু ভুল দিনে বলে ফেলেছেন যেদিন আমার মন মানছেনা।সঠিক সময় আসুক।আচ্ছা আমাদের সুন্দর একটি সম্পর্ক হবে তো?”
চট করে প্রশ্নটির উত্তর দিতে পারলো না কবীর।বরং গভীর ভাবনায় ডুবে গেলো।স্বীকারোক্তিতে যে একটা সম্পর্কে বাঁধা পড়বে সেই কথাটি তো ছিল মনে।কিন্তু আদৌ কী কঠোর কিছু হবে?
“আমি তোমার আছি তোশামণি। বাকীটা পরবর্তীতে তোমার মনের অনুযায়ী হবে।”
কথাটির গভীরতা হয়তো বুঝে উঠতে পারলো না তোশা।কিন্তু এটা বুঝতে পারলো সবকিছু তার উপর নির্ভর করে।একটি ভালোলাগা,একটি ভয়ে মনটা হঠাৎ বিষাদে ছেয়ে গেলো তার পরীক্ষা কিংবা য ন্ত্র ণা যেন কেবল শুরু হলো।
(***)
বাসায় ফিরেই তোশার মনে হলো এখানকার পরিবেশ কিছুটা উত্তপ্ত।মায়ের মুখটা দেখে সেই বিষয়ে নিশ্চিত হলো।তাহিয়া হাসিমুখে মেয়েকে জড়িয়ে ধরলেও ওতোটা আন্তরিকতা প্রকাশ পেলো না।
“কী হয়েছে আম্মু?”
“তেমন কিছু না।তোমার মামার সাথে তর্ক হয়েছে একটু আগে।বাসা বাসা করে মাথা খাচ্ছে।”
মনটা বিষাদে লেপ্টে গেলো তোশার।হাজার আদরে থাকুক দিনশেষে সত্যি হলো সে আর তার মা এ বাড়ীর আশ্রিতা।নানা যদিও সম্পত্তি লিখে দিয়েছে।কিন্তু এমনভাবে যা সহজে দখলে যেতে পারবেনা তাহিয়া।
“আম্মু চলো অন্য কোথাও চলে যাই।শাহ সাহেব তোমাকে কী কম পারিশ্রমিক দেয়?একটা ছোট্ট ফ্ল্যাট কিনতে পারবো না?”
“পারবো।কিন্তু তোমাকে নিয়ে নিরাপত্তা সব জায়গায় নেই।”
“তাহলে তোমাকে বিয়ে দিয়ে দেই।আসিফ আংকেলকে বলি?”
“তোশামণি।দুষ্ট মেয়ে এসব কথা যেন আর না শুনি।তোমার বিয়ের বয়স হয়ে এলো।আমি কীনা এসময় বিয়ে করবো।”
সুবোধ বালিকার ন্যায় মাথা দুলায় তোশা।কিন্তু ভেতরে ভেতরে সে খুব করে চায় আসিফকে নিজের বাবা হিসেবে।তোশাকে ফ্রেস হওয়ার তাগিদ দিয়ে বের হয়ে গেলো তাহিয়া।দরজাটি বন্ধ করে ফোন হতে বিছানায় লুটোপুটি খেতে লাগলো মেয়েটি।দুরুদুরু বুকে কবীরের কাছে ফোন করলো।রিসিভ হতে কিঞ্চিত সময় লাগলো।
“বলো তোশামণি।”
“আমরা কী সম্পর্কে আছি কবীর শাহ?”
“কেন ফোন করেছেন সেটা বলেন।আমি ভীষণ ব্যস্ত।”
অভিমান হলো তোশার।সে নিজেও তো ব্যস্ত।তাই বলে কখনো মানুষটা ফোন করলে ফিরিয়ে দিবে নাকী?
“আমিও অনেক ব্যস্ত কবীর শাহ।কথা হলো আরো ব্যস্ত হওয়ার জন্য ফোন করেছি।”
“শুনি কমলা সুন্দরীর বায়না গুলো।”
“আমার মা কে বিয়ের জন্য রাজী করাচ্ছেন না কেন?এই বলেন বন্ধুত্ব?”
“পাগলের মাথা খালি থাকেনা তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ তুমি।তাহিয়া বিয়ে করবেনা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
“হু?আমি মানবো না এটা।আম্মুকে বিয়ে দিবো আমি।রাজী আপনি করাবেন।”
“কেন তুমি করাও।”
“বুঝেন না কেন?আমি তো ছোট মানুষ।”
“দস্যুর জাহাজের কান্ডারি(নাবিক) তুমি।সবকিছু বোঝো তো।”
“উহু।রাজী করাবেন আমি জানিনা,জানিনা,জানিনা।”
মেয়েটির নাছোড়বান্দা স্বভাবের সঙ্গে পরিচিত কবীর।এজনয় বশ্যতা স্বীকার করে বলল,
“বলে দেখবো।আপনি কী করেন ম্যাম?খেয়েছেন কিছু?বাসায় যেতে সমস্যা হয়নি তো?”
“এতো প্রশ্ন একসাথে?আমরা সত্যিই প্রেম করছি কবীর শাহ।”
“ধীরে বলো তোশামণি।রাখছি আমি।”
“আপনি কী লজ্জা পাচ্ছেন?এইযে শুনেন।”
ফোনটা রেখে দিলো কবীর।প্রাণখুলে হেসে উঠলো তোশা।মনটা ভালো লাগায় ভরে উঠেছে তার।কিন্তু ছোট্ট মন আসন্ন বিপদ নিয়ে টের পেলো না এখনো।
চলবে।