মায়াজাল পর্বঃ ০১
লেখকঃ আবির খান
“ছোট্টকালের সেই অধরা আজও কি আগের মতোই আছে? ও কখনো সামনে আসলে কি চিনতে পারবো? নাকি অপরিচিতাই রয়ে যাবে? যদি কোনদিন ও আমার পাশ দিয়ে চলে যায় আমার কি অন্যরকম অনুভূতি হবে? আমি কি ওকে জিজ্ঞেস করবো, এই তুমি কি আমার সেই ছোট্টকালের সুন্দরী বান্ধবী অধরা? ও যদি না বলে? হ্যাঁও তো বলতে পারে। আজ পনেরো টা বছর কেটে গেল। আমাদের বিচ্ছেদের পনেরো তম বছর আজ। এরকমই একটা দিনে তুমি আমায় ছেড়ে অনেক দূরে চলে গিয়েছিলে। পারিনি তোমাকে ফেরাতে। পারিনি তোমার হতে। আচ্ছা তুমি কি আমায় ভুলে গিয়েছো? নাকি আমার মতো এই বিষন্নতায় ডুবে ডুবে আমায় মনে করো? কোথায় তুমি অধরা? কোথায়?” কথাগুলো বলছিল রিফাত।
আজ ২৫ মে, ২০১৭। এরকম একটা দিনেই পনেরো বছর আগে অধরা নামে ৮ বছর বয়সের একটা সুন্দরী বান্ধবী ওকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে যায়। কারণ ছিল তাঁর বাবার পোস্টিং। ১৩ বছরের রিফাত সেদিন অধরাকে হারিয়ে অনেক কেঁদেছিল অনেক। তাঁর খেলার সাথী তাঁর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটা হারিয়ে গিয়েছে। যার সাথে জামাই বউ খেলা, সংসার সংসার খেলা, কানামাছি আরও কত খেলা ওরা খেলতো। স্মৃতির পাতায় সেগুলো আজও স্পষ্ট হয়ে আছে। যা হয়তো কখনো ভুলা যাবে না।
রিফাত অধরাকে অনেক খুঁজেছে। কিন্তু পায় নি। দেশের কোন প্রান্তে যে ওরা আছে কে জানে। রিফাতের মন ভারাক্রান্ত হয়ে আসে। চোখগুলো কেমন ঝাপসা হয়ে আসে। অফিসের টেবিলে মানিব্যাগটা রেখে চোখটা মুছে রিফাত। এখন অনেক বড় ও। অনেক দায়িত্ব ওর কাঁধে। ঠিক মতো কাঁদতেও পারে না। তবে আজ বোধহয় রাতটা অনেক কান্নাসিক্ততায় ডুবে ডুবে যাবে। আজকের দিনটা সম্পূর্ণ অধরার। অধরার কথা ভেবে ভেবেই আজকের দিনটার সমাপ্তি হবে।
অধরার কথা রিফাতের সবচেয়ে কাছের বন্ধু আবির ছাড়া আর কেউ জানে না। অধরা রিফাতদের পাশের বিল্ডিংয়ে থাকতো। ওরা রোজ মাঠে খেলা করতো। অনেক গল্প করতো। আর এসব কখন যেন ওদের মনকে এক করে দেয়। রিফাতের বাবা ওকে একটা আইসক্রিম এনে দিলে ও সেটা না খেয়ে অধরার জন্য রেখে দিত। কারণ অধরার আইসক্রিম খুব প্রিয়। যখন দেখা করতে যেত আইসক্রিমটা অধরাকে দিলে কি যে খুশীই না হতো। রিফাতের আজও সেই অমূল্য মুক্তঝরা খিলখিল হাসিগুলোর কথা মনে আছে। ভালবাসা বুঝি এমনই। প্রিয় মানুষটাকে চাইলেও ভুলা যায় না। বারবার স্মৃতির দরজায় কড়া নাড়ে। রিফাতের মন ক্রমশ বিষন্নতায় ভরে যাচ্ছে। কিন্তু তার আগেই,
আবিরঃ জানতাম….আমি ঠিক জানতাম তোর এই অবস্থাই হবে।
আকস্মিক আবিরকে রুমে দেখে রিফাত ভড়কে যায়। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ও। আবির হাসতে হাসতে ওর কাছে এসে বলে,
আবিরঃ তোর বেস্ট ফ্রেন্ড আমি। জানতাম বাকি বছরগুলোর মতো আজও তোর মন অনেক খারাপ থাকবে। তাই সব ফেলে বন্ধুকে খুশী করতে চলে এলাম। আচ্ছা তুই কি এখনো বাচ্চা? কেন বুঝিস না, ও এখন অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। হয়তো বিয়েও হয়ে গিয়েছে। তুই ছাড় না ওকে ভাবা৷ আর কতদিন এভাবে থাকবি?
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share
রিফাতঃ জানি না দোস্ত। আমি কখনো ওকে ভুলতে পারবো না। দীর্ঘ একটা বছর ও আমার সাথে ছিল। জানিস আমি আজও ওর স্পর্শ অনুভব করি। আমার মন বলে ও আমাকে মনে করে। আমার মতো ও আজ মন খারাপ করে বসে আছে। আমার আর ভালো লাগছে না দোস্ত। ওকে কি কখনো পাবো না?
আবিরঃ পাবি কিনা জানি না। বাট আমার কাছে এই পেইন থেকে বাঁচার একটা উপায় আছে।
রিফাতঃ বলনা ভাই কি উপায়?
আবিরঃ বিয়েটা এবার করে ফেল। আঙ্কেল আন্টি তোকে বিয়ে দেওয়ার জন্য বেকুল হয়ে আছে। মাশাল্লাহ অসম্ভব হ্যান্ডসাম একটা ছেলে তুই। লাইন পড়ে যাবে মেয়ের৷ রাজি হয়ে যা না৷ আর অপেক্ষা করে লাভ নেই। পনেরোটা বছর শেষ দোস্ত। না অধরাকে তুই চিনবি না অধরা তোকে। কতটা পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিস।
রিফাতঃ তুইও বিয়ের কথা বলছিস?
আবিরঃ হ্যাঁ ভাই। আঙ্কেল আন্টি তোর কাছে কি বেশী কিছু চাইছে? জাস্ট তোকে হ্যাপি দেখতে চায় তাঁরা। অধরাকে ছাড় বিয়েটা করে ফেল।
রিফাতঃ অধরার জন্য কোন দিন অামি প্রেম করিনি। কাউকে ভালবাসিনি। কলেজ, ভার্সিটির সবচেয়ে সুন্দর মেয়েটা আমাকে প্রপোজ করেছিল। কিন্তু আমি না করে দেই। শুধু অধরার জন্য। আর তুই বলছিস বিয়ে করতে?
আবির বুঝে পায় না, এতোটা বছর যাওয়ার পরও রিফাত অধরাকে এখনো কীভাবে ভালবাসে। তাহলে এটাই কি সেই সত্যিকারের ভালবাসা? এমনও হয় ভালবাসায়? আবিরের মাথাই ঘুরাচ্ছে। আবির বলে,
আবিরঃ আচ্ছা শোন, আজ রাতে আমার বাসায় একটু আসবি? তোর ভাবির জন্মদিন আজকে। ঘরোয়া ভাবেই সেলিব্রেট করতাম।
রিফাত আবিরের দিকে ত্যারা ভাবে তাকিয়ে আছে। ও রাগী ভাবে বলে,
রিফাতঃ শালা তুই এখন বলস! আর এভাবে বলছিস ক্যান? অবশ্যই আসবো। আমি আসবো তুই চিন্তা করিস না।
আবিরঃ নায়ায়া। তুইতো আছিস অধরাকে নিয়ে৷ আমার বাসায় আসবি কিনা আবার। তাই৷…
রিফাতঃ ধুর ব্যাটা কি যে বলিস। তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। তোর বউয়ের জন্মদিন আমি আসবো না? আসবো আসবো। কয়টায় বল?
আবিরঃ ৮ টায়। তুই ৭ টার মধ্যে চলে আসিস। আর হ্যাঁ রাতে কিন্তু খেয়ে যাবি। তোর ভাবি কিন্তু খুব সুন্দর রান্না করে। উফফ! হেব্বি।
রিফাতঃ ভাই রে ভাই। তুই তো বউ পাগলা রে।
আবিরঃ বউটা লাখে নাহ কোটিতে একটা। আসিস তাহলে আমি যাই।
রিফাতঃ আচ্ছা।
আবির গেলে রিফাত কাজে একটু মন দেয়। রিফাত বাবা-মার একমাত্র আদুরে ছেলে। ওর বাবা অনেক বড় একজন ব্যবসায়ী। এখন সব কিছুর দায়িত্ব রিফাতের। ওর বাবাও মাঝে মাঝে দেখে। রিফাত দেখতে বেশ হ্যান্ডসাম গুড লুকিং বয়। সিল্কি কালো চুল। ঠিক রাণবীর কাপুরের মতো। গায়ের রং ফর্সা। হাল্কা চাপ দাড়ি। ৫.১১ ইঞ্চি উচ্চতা। বলিষ্ঠ দেহ। জিম করে যে তাই। রিফাতকে দেখতে কিছুটা রাগী মনে হলেও ও নরম মনের মানুষ। যার কারণে আজও অধরাকে ভালবাসে। প্রচন্ডভাবে ভালবাসে। ওর বিশ্বাস ও একদিন অধরাকে পাবে। রিফাত আনমনে কিছু একটা করছিল হঠাৎই,
শরীফঃ মে আই কাম ইন স্যার?
রিফাতঃ ইয়েস।
শরীফঃ স্যার, কাল আপনার পিএস এর পদের জন্য অনেকের ইন্টারভিউ আছে। আপনি কি নিবেন নাকি অন্য কেউ?
রিফাতঃ না আমিই নিব। তোমরা বুঝবে না।
শরীফঃ ওকে স্যার৷ আসি তাহলে। আসসালামু আলাইকুম।
রিফাতঃ অলাইকুম আসসালাম।
রিফাত এরপর কাজ শেষ করে বাসায় যায়। গিয়ে ফ্রেশ হয়ে সুন্দর করে রেডি হয়। বাবা-মাকে বলে রওনা দেয় আবিরদের বাসায়।
ব্যস্ত শহর। রিফাত গাড়ি চালাচ্ছে। আপন গতিতে ওর গাড়ি ছুটে চলছে। মাঝে মাঝে জ্যামের কারণে থেমে যাচ্ছে। রিফাতের চোখ শুধু গাড়ির সামনে। কিন্তু মনের মাঝে শুধু অধরা। অধরার প্রতিটি স্মৃতি ওর চোখে ভাসছে। একসময় রিফাত এসে আবিরদের বাসায় পৌঁছায়। গাড়ি পার্ক করে লিফট এ উঠে উপরে আসে। আবিরদের বাসা ৫ তলায়৷ লিফট থেকে বের হয়ে আবিরদের বাসায় বেল দেয় রিফাত। আবির দরজা খুলে। আর বলে,
আবিরঃ এসেছিস ভাই? তোর অপেক্ষায়ই ছিলাম। আয় আয় ভিতরে আয়।
রিফাত ভিতরে আসে। আবিরের সাথে কোলাকুলি করে। আবিরদের বাসাটা খুব সুন্দর। দুজন মানুষের জন্য একদম পারফেক্ট। আবিরের বিয়ে হয়েছে আজ ১ বছর হলো। ওরা লাভ ম্যারেজ করেছে। ওঁদেরও একটা গল্প আছে। অন্য কোনদিন না হয় বলা যাবে। রিফাত বাসাটা দেখছে। আবির বলে উঠে,
আবিরঃ কথা….এই কথা….কোথায় তুমি? দেখো কে এসেছে।
কথা ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে। এসেই,
কথাঃ আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া কেমন আছেন?
রিফাতঃ অলাইকুম আসসালাম, ভালো। এটা তোমার জন্য কথা।
কথা গিফট খুলে দেখে ডায়মন্ডের লকেট। ও অসম্ভব খুশী হয়ে যায়। ওর চোখ চিকচিক করছে। কথা খুশি হয়ে বলে,
কথাঃ ভাইয়া অসম্ভব সুন্দর হয়েছে। অনেক পছন্দ হয়েছে। থ্যাঙ্কিউ।
আবিরঃ দোস্ত অনেক দামী তো।
রিফাতঃ মার দিব শালা। গিফট এটা৷ দামা দামীর কিছু নাই।
আবিরঃ আচ্ছা আচ্ছা।
এরই মধ্যে আবার বেল বাজে। এবার আবির না কথা দরজা খুলতে যায়। যেন সে জানে কে এসেছে। কথা দরজা খুলেই যেন কাউকে জড়িয়ে ধরলো। রিফাত বুঝতে পারছে একটা মেয়ে। বাট মেয়েটাকে দেখতে পারছে না কারণ কথা মেয়েটার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু একটু পরেই যেই কথা মেয়েটার সামনে থেকে সরে দাঁড়ায়। রিফাত মেয়েটাকে এবার স্পষ্ট দেখে। ও স্তব্ধ হয়ে যায়। মনে মনে শুধু একটা নাম উচ্চারণ হচ্ছে, অধরা! কথা মেয়েটাকে নিয়ে রিফাত আর আবিরের সামনে আসে। রিফাতের মনে কেমন এক অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে। মেয়েটার মুখে সেই ছোটকালের অধরার লাবণ্যতা লেগে আছে। চোখগুলো সেই আগের মতোই মায়ায় ভরা। দুধের মতো গায়ের রং। ঠোঁটটাও সেই আগের মতো। তবে এখন আরও বেশি নেশা লাগাচ্ছে। আগের চেয়ে একটু গুলুমুলু হয়েছে। রিফাত ভাবছে, এই কি আমার অধরা? আবির বলে উঠে,
আবিরঃ আচ্ছা তোমাদের পরিচয় করিয়ে দি। আবিদা, ও হলো আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু কম ভাইয়ের মতোই। রিফাত।
আবিদাঃ আসসালামু আলাইকুম।
রিফাতঃ অলাইকুম আসসালাম।
আবিরঃ আর রিফাত, ও হলো আবিদা৷ কথার সবচেয়ে ভালো বান্ধবী।
রিফাত ব্যথিত হয়। ওর নাম আবিদা৷ অধরা না। ভেবেছিল ওই অধরা৷ রিফাতের কেন জানি মনে হচ্ছে ওই অধরা। অধরার সাথে অনেকটাই মিল আছে। কিন্তু চেহারাটায় একটু পরিবর্তন এসেছে। অবশ্য হওয়ারই কথা। কারণ এখন ও অনেক বড়। আর এখন অনেক ছোট ছিল। কিন্তু ওর নামতো আবিদা। রিফাত হতাশায় পড়ে যায়। কিন্তু আবিদার দিকে তাকালে সব হতাশা কষ্ট দূর হয়ে যায়। আবির বলে উঠে,
আবিরঃ তাহলে এবার কেক কাটা যাক। কি বলো?
সবাইঃ হ্যাঁ হ্যাঁ।
কথা আর আবির মিলে কেক কাটছে। রিফাত আর আবিদা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে। আবিদা ওদের ছবি তুলছে। রিফাত শুধু আড় চোখে আবিদাকে দেখছে। আবিদার মাঝে অধরার সব গুণ আছে। শান্ত কিন্তু চোখগুলো বেশ চঞ্চল। যেন চঞ্চলতাকে ধরে রেখেছে। রিফাত মুগ্ধ হয়ে শুধু আবিদাকে দেখছে আর ভাবছে, মেয়েটা এমন কেন? আমার মতো এত্তো হ্যান্ডসাম একটা ছেলে ওর পাশে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু সে কোন পাত্তা দিচ্ছে না। আমার মতো কি ওর মনে কোন অনুভূতি হচ্ছে না? নাকি ও আমার অধরা না?
অন্যদিকে,
আবিদাঃ মনটা কেন যে এমন লাগছে। আর উনি আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছে কেন? জীবনে কি কোন দিন কোন মেয়ে দেখে নি? হয়তো ভাবছে আমি কেন তাকে কোন পাত্তা দিচ্ছিনা। কারণ আমার মনে অন্য কেউ আছে। যাকে আমি কোন দিন ভুলবো না। কিন্তু বুঝতে পারছি না ওনার কাছে আসলেই কেমন জানি লাগে। ওনার দিকে তাকালে এমন লাগে কেন! নাহ আর তাকানো যাবে না। একটু দূরে গিয়ে দাঁড়াই।
আবিদা এসব ভেবে আচমকা রিফাতের কাছ থেকে সরে আবিরদের কাছে চলে যায়। কারণ আবিরই কেক খেতে ডাকছে। আবিদা গেলেও রিফাত যেন এ দুনিয়াতে নেই। ও গভীর ভাবনায় মগ্ন। কিন্তু আবিরের ডাকে একসময় রিফাত ফিরে আসে। আর আবিদার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দেয়। এরপর কেক খায়। খাওয়া দাওয়া করে। হাসাহাসি আড্ডাবাজি করে। রিফাত আবিরকে নিয়ে একপাশে এসে বলে,
রিফাতঃ দোস্ত তোর বউয়ের বান্ধবীর নাম আবিদাই?
আবিরঃ হ্যাঁ। আমি যেদিন থেকে চিনি সেদিন থেকেই এই নামে জানি। কেন বলতো?
রিফাতঃ আমার কেন জানি ফিল হচ্ছে ও আমার অধরা। অধরার সাথে অনেক কিছু মিলে যাচ্ছে। দেখ, অধরাও এভাবে খিলখিল করে হাসতো। খুব নিষ্পাপ লাগতো। আবিদাকেও লাগছে। কিন্তু ওর নাম আবিদা কেন দোস্ত?
আবিরঃ তুই সিউর ওই অধরা?
রিফাতঃ নায়ায়া। সিউর হলে তো ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতাম। এতো বছর পর অধরার অস্তিত্বের অনুভূতি পেয়েছি। তাও ওর কাছ থেকে। জানি না ওই কি আমার অধরা নাকি। শোন তুই কিছু বলবি না৷ জাস্ট ওর সব ডিটেইলস আমাকে রাতে পাঠিয়ে দিস।
আবিরঃ আচ্ছা।
রিফাত লুকিয়ে লুকিয়ে আবিদার কয়টা ছবি তুলে নেয়। রিফাত কেন জানি মনকে বুঝতে পারছে না যে এটা হয়তো অধরা না। রিফাত ছবি তুলে বিদায় নেয়। কারণ আবিদাকে দেখে ওর খুব কষ্ট হচ্ছিলো। বারবার অধরার কথা মনে হচ্ছিলো। পুরো রাস্তা আবিদার ছবি দেখতে দেখতে রিফাত বাসায় আসে। ফ্রেশ হয়। বেডে শুয়ে আবিদার ছবি দেখছে৷ সাথে মানিব্যাগে বন্দী অধরার ১৫ বছর আগের ছবিটাও দেখছে। অনেক অংশই মিলে গেছে। শুধু পার্থক্য হলো বয়সের। রিফাত এ জটিল হিসাব মিলাতে মিলাতে একসময় ঘুমিয়ে পড়ে। কাল আবার ইন্টারভিউ নিতে হবে ওকে।
পরদিন অফিসে,
৫/৬ জনের ইন্টারভিউ নেয়া শেষ। অধিকাংশই রিফাতকে দেখে অবস্থা খারাপ। একজন তো প্রেমের প্রস্তাবও দিয়েছে। রিফাত টেবিলে রাখা পানিটা খেয়ে ৭তম জনকে ডাক দেয়। সে ভিতরে আসলে রিফাত আর সে দুজনেই অবাক।
রিফাতঃ আপনি!
কারণ মেয়েটি আর কেউ নয়, আবিদা এসেছে। রিফাত অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। কিছু বলার ভাষা নেই। ও কল্পনাও করে নি আবিদা এখানে আসবে।
চলবে…?
সবার ভালো সাড়া চাই। কেমন লেগেছে জানাবেন কিন্তু। সাথে থাকবেন সবসময়।