#মাস্টার_মাইন্ড_কি_লা_র পর্বঃ-০৩
লিখাঃ- AL Mohammad Sourav
আমরা যাকে খুঁজতেছি সে আমাদের সামনেই আছে। খু!ন দুইটা ও করছে রাজিব হোসেন যান ওকে গিয়ে ধরেন। রাজিব হোসেন তাকিয়ে একদম অবাক হয়ে বলে। স্যার ওনি তো সিঙ্গাপুর থাকার কথা তাহলে বাংলাদেশে কি করছে?
হ্যা সেটা তো আমারও প্রশ্ন। আরমান সাহেব বলছে ওনার ছোট ভাই আশিকুর রহমান সিঙ্গাপুর থাকে আর সে এখন আমাদের সামনে।
স্যার তাহলে কি ওনি মিথ্যা কথা বলছে?
এখন প্রশ্ন করার সময় না আগে গিয়ে ওকে ধরেন। রাজিব আর জুয়েল দৌড়ে আশিকুর দিকে গেছে। কিন্তু আশিকুর ওদের দেখে কোনো রকম দৌড় বা নার্ভাস হয়নি। জুয়েল সামনে গিয়ে ওর পরিচয় দিয়েছে তখনি আশিকুর বলে।
আপনি গোয়েন্দা অফিসার তাতে আমার কি? তখনি রাজিব বলে স্যার চিন্তা করে দেখুন সে কতবড় মাস্টার মাইন্ড কি-লা-র? তখনি আশিকুর রেগে গিয়ে বলে।
কি যা তা বলছেন? আমি কেনো খু!নী হতে যাবো? দেখুন আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে। তখন জুয়েল ওকে বলে।
তুমি আশিকুর রহমান?
হ্যা।
তোমার বাবা আমজাদ রহমান?
হ্যা।
তোমার মা আর ভাবি পাঁচদিন হলো খু!ন হয়ছে সেটা তুমি জানো? তখনি আশিকুর কেমন থমকে যায়। আর অবাক হয়ে বলে কি বলছেন স্যার? আমার মা ভাবি কবে খু!ন হলো? আর কবে মা!রা গেছে? আপনি মিথ্যা বলছেন। আমার সাথে মজা করছেন তাইনা স্যার? আশিকুরের কথা শুনে রাজিব হোসেন নিজের মাথার চুল টেনে বলে। স্যার আমার মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে। আপনি আমাকে এই কেইস থেকে মুক্ত দেন। আমি আর এসবের মধ্যে নেই। ওর মা ভাবি মা!রা গেছে আর সেটা আমাদেরকে জিজ্ঞেস করছে? স্যার আমার মনে হয় ও দুটো খু!ন করছে।
রাজিব সাহেব আপনি ঠিকই বলছেন। খু!ন দুটো ও করছে আর কেনো করছে সেইটা আমি বলছি। ওর ভাবি মানে নীলার সাথে ওর পরকীয়া সম্পর্ক ছিলো। যখন এটা জানতে পারছে ওর ভাই মানে আরমান তখনি ওদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি শুরু হয়। আর এসবের জের ধরে নীলার সাথে ওর ঝগড়া হয়। তখন রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে নীলাকে খু!ন করে। আর ওর মা সবকিছুর যেনে যায় তখন ওনাকেও খু!ন করে।
স্যার আপনারা কি আজে বাজে বলছেন? আমি সত্যি এসবের কিছুই জানি না৷ আর আমার ভাই ভাবি আমাকে অনেক ভালোবাসে। আমি কখনো ভাবিকে ঐরকম চোখে দেখিনি। কেমন চোখে দেখছো সেটা প্রমান করবে আদালত। রাজিব হোসেন ওকে এরেস্ট করে থানায় নিয়ে চলেন। স্যার আপনাদের ভুল হচ্ছে আমি সত্যি এসব খু!নে!র সাথে জড়িত না। আমি তো আজ দুই মাস ধরে বাড়িতেই যায়নি। আমি সিঙ্গাপুর যাবো যার কারণে ট্রেনিং সেন্টারে ছিলাম। সেটা কোথায় ছিলেন এটা শরীরে লাঠির বাড়ি পড়লে বুঝবে।
আশিকুর রহমান অনেক বুঝিয়েছে কিন্তু কোনো কাজ হয়নি ওকে সোজা থানায় নিয়ে আসে।
আরমান সাহেব ওনার ছোট ভাইকে দেখে কেমন অবাক হয়ে যায়। কারন আরমান জানে আশিকুর সিঙ্গাপুর চলে গেছে। সে যে এখনো বাংলাদেশ আছে সেটা বুঝতে পারেনি। আর আশিকুর নিজেও বলছে সে সিঙ্গাপুর চলে গেছে এই বলে বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে গেছিলো। জুয়েল আপাতত থানায় আসেনি সোজা পোসমর্টেম রিপোর্টের জন্য সোজা হসপিটাল চলে এসেছে। কারণ যাকে সবচেয়ে বেশি সন্দেহ করা হচ্ছে তাকেই এখন ধরে ফেলছে। তবে আসার সময় অবশ্য আশিকুরের হাতের ছাপ নিয়ে এসেছে। পোসমর্টেম রিপোর্টে হাতে পেয়ে সবার সাথেই মিলিয়ে দেখছে। নাহ কারো সাথেই মিলেছে না। জুয়েল একদম অবাক হয়ে যাচ্ছে আর নীলার পোসমর্টেম রিপোর্টে লিখা সে আ!ত্ম!হ!ত্যা করেছে। আর আরমানের মায়ের রিপোর্টে লিখা তার কারেন্ট সট খেয়ে মৃ!ত্যু হয়েছে।
জুয়েল রিপোর্ট গুলো হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কি করবে এখন? সবকিছু কি পোসমর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী বলে দিবে? নাকী আরও কিছুদিন অপেক্ষা করবে? সবকিছু একদম এ্যালোমেলো লাগছে তখনি জুয়েলের মনে হয়। ওদের মধ্যে কেউ খু!ন করেনি। তাহলে কি ওরা দুজন খু!ন হয়নি? একজন আ!ত্ম!হ!ত্যা করছে আর অন্য একজন কারেন্ট সট খেয়ে মৃ!ত্যু বরণ করছে? নাহ সবকিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে এভাবে হবে না। কিছুটা গভীর ভাবে চিন্তাভাবনা করতে হবে।
আজ তিন চারদিন ধরে জুয়েলের ঘুম খাওয়া দাওয়া সব কেমন নাই বললে চলে। পোসমর্টেম রিপোর্ট হাতে আসার পড়ে কেমন ভেংগে পড়ছে। নাহ যেখানে গেলে একটু সতেজ হবে সেখানেই যেতে হবে। কোনো কথা না ভেবেই সোজা বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিছে। কারণ বাড়িতে আসলে ওর সবকিছু একদম ফ্রেশ মনে হয়। বাড়িতে এসে ফ্রেশ হয়ে একটা ঘুম দিছে। ফজরের আজানে ঘুম ভাংগছে ওজু করে নামাজ পড়ে কিছুটা কুরআন পড়ে মনটাকে হালকা করে নিলো। আর দোয়াই আল্লাহর কাছে একটা জিনিস চেয়েছে যাতে করে এই খু!নে!র সমাধান খুব দ্রুত খুঁজে বের করতে পারে।
আজ একটু নিজেকে কেমন অন্য রকম লাগছে। থানায় এসেই রাজিব হোসেনকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়ছে। রাজিব হোসেন জেনে গেছে পোসমর্টেম রিপোর্টের কথা। সেও ধরে নিছে এটা একটা এক্সিডেন্টের মতই ঘটনা ঘটছে। জুলের একটাও কথা বলছে না কেমন চুপচাপ হয়ে আছে তখনি রাজিব বলে৷
স্যার আমরা এখন কোথায় যাচ্ছি? আর এটা কি কোনো খু!ন হয়নি?
আমি এখন কিছুই বলতে পারছি না তবে আমি এই পোসমর্টেম রিপোর্ট বিশ্বাস করতে পারছি না। আমি আরও একটু চেষ্টা করি চলেন আরেকবার ঐ বাড়িতে যাই। যেখানে এই ঘটনা গুলি ঘটছে।
তার মানে আবার সেই বাড়িতে যাবেন?
হ্যা। জুয়েল আর রাজিব কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়িতে এসেছে। বাড়ির সবকিছু কেমন ঠিক আগের মতই পড়ে আছে। বাড়ির মধ্যে ঢুকে সারা বাড়ি তন্নতন্ন করে খুঁজতে থাকে। নাহ কিছুই পেলো না ওরা ক্লান্ত হয়ে ফিরে এসেছে। দুজনে থানায় আসে রাজিব মন খারাপ করে বলে স্যার এখন কি করবেন?
কি আর করবো? পোসমর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা ফাইল জমা দিয়ে দিবো।
তাহলে ওনাদের কি করবো?
ছেড়ে দাও ওনাদের।
তাহলে কি স্যার এটা সব আ!ত্ম!হ!ত্যা আর কারেন্ট সট বলে চালিয়ে দিতে হবে?
সেটাই তো দেখছি তবে আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে ওর ইশারায় খু!ন গুলো হয়ছে।
স্যার আমরো মনে হয় আরমান সাহেব সরাসরি জড়িত না থাকলেও পরোক্ষভাবে জড়িত আছে। তখনি রাজিব সাহেব বলে উঠে স্যার পোসমর্টেম রিপোর্ট কি ভালো ভাবে দেখছেন?
হ্যা দেখছি তো?
তখনি রাজিব বলে। স্যার নীলা তো দের মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলো। তখানি জুয়েল রানা কিছুটা নড়েচড়ে উঠলো। তাড়াতাড়ি পোসমর্টেম রিপোর্ট হাতে নিয়ে দেখে সত্যি তো। আমার চোখে তখন এটা পড়েনি কেনো? তখনি বলে রাজিব তাহলে এটা আ!ত্ম!হ!ত্যা না ওকে কেউ খু!ন করে ফাঁ!সি!র মত করে জুলিয়ে রাখছে। যাতে করে মনে করে আ!ত্ম!হ!ত্যা করেছে।
হ্যা স্যার এটা একদম ঠিক বলছেন। তবে যেদিন নীলার লা!শ!টা আমরা ঘর থেকে বের করে ডোম ঘরে পাঠাতে ছিলাম। তখন আরমানের মা ওর হাত থেকে কিছু একটা নিয়ে গেছে। যদি সেইটা পেতাম তাহলেই অবশ্য খু!নী!র কিছু একটা সন্ধান পাওয়া যেতো।
এক কাজ করেন আরমান সাহবের কাছে যাই ওকে গিয়ে কিছু একটা জিজ্ঞেস করতে হবে। রাজিব আর জুয়েল দুজনে আরমান সাহেবের কাছে গেছে। আরমান ওদের দেখেই বলে।
স্যার আমার স্ত্রী আর মা’কে কে খু!ন করছে? স্যার প্লিজ ওদের একটু খুঁজে বের করেন?
সেইটা তো চেষ্টা করছি। তবে আরমান সাহেব আপনার স্ত্রীর সাথে আপনার সম্পর্ক কেমন ছিলো?
খুব ভালো সম্পর্ক আমরা দুজনে দুজনকে খুব ভালোবাসি।
আপনার স্ত্রী দের মাসে অন্তঃসত্ত্বা ছিলো সেটা আপনি জানেন? তখনি আরমান সাহেব বলে নাহ স্যার। হয়তো সে আমাকে বলেনি কারণ এর আগেও এমন হয়ছে কিন্তু দুই মাস পড়েই বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়।
স্যার ওকে এমন ভাবে কিছু বললে কাজ হবে না। বরং আমি আমার মত করে জিজ্ঞাসা করি। দেখবেন সবকিছু ফরফর করে বলবে।
জুয়েল রাজিবের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে। আমার যা জানার ছিলো সেটা জেনে গেছি। চলেন আমার সাথে বলেই বেরিয়ে এসেছে। তখনি রাজিবকে বলে আচ্ছা আরমানকে এরেস্ট করার সময় ওর সাথে কি মোবাইল ছিলো? হ্যা স্যার ছিলো।
তাহলে মোবাইলটা কোথায়?
আমি থানায় রাখছি দাড়ান আমি এনে দিচ্ছি। রাজিব গিয়ে আরমানের মোবাইলটা এনে দিছে তখনি জুয়েল মোবাইলটা চালো করে। আরমানের কাছ থেকে লক খুুলিয়ে আনে আর সবকিছু তন্নতন্ন করে খুঁজে কিছুই পায়নি। জুয়েল একদম আশা ছেড়ে দিছে তখনি নীলার মা আসে থানায় আর ওনি বলে। স্যার আামার মেয়ে নীলা আ!ত্ম!হ!ত্যা করেনি ওকে খু!ন করা হয়ছে। এবার জুয়েল বসা থেকে দাঁড়িয়ে বলে। খু!ন কে করছে?
খু!নী!কে সেটা বলতে পারবো না তবে সেদিন রাতে আমার কাছে নীলা ফোন করে আর সে বলে ওদের মধ্যে অনেক ঝগড়াঝাঁটি হয়ছে। সে সকালে আমার কাছে চলে আসবে। কিন্তু পরের দিন সকালেই আমার মেয়ে আ!ত্ম!হ!ত্যা করছে সেটা জানতে পারি। তবে স্যার গভীর রাতে আমার কাছে নীলা আরেকবার ফোন করে কিন্তু অনেকক্ষণ কোনো কথা না বলে লাস্টে একটা কথা বলে।
কি বলে সেই কথাটা?
তখন ওনি কিছুটা চুপচাপ থেকে বলে।
।
চলবে…