#মাস্টার_মাইন্ড_কি_লা_র পর্বঃ-০২
লিখাঃ- AL Mohammad Sourav
এক দিনে দু দুটো খু!ন কিন্তু কোনো রকম ক্লো নেই! কে করছে খু!ন গুলো? রাজিব হোসেন চিন্তায় পড়ে গেছে। এমন নিখুঁত ভাবে খু!ন করে চলে গেছে? কে করতে পারে? সকল চিন্তা ফেলে খুব দ্রুত ওনার বড় অফিসার সাদাব খানকে সবকিছু খুলে বলছে। সাদাব খান সব শুনে গোয়েন্দা অফিসার জুয়েল রানাকে খবর দিছে। জুয়েল যে কিনা এর আগেও এমন অনেক খু!নে!র মামলার আসামিকে খোঁজে বের করছে।
পরের দিন একদম সকাল নয়-টাই জুয়েল রানা এসে সাদাব খানের সাথে দেখা করছে ওনার অফিসে দেখা করছে। ওনি রাজিবের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলে। এই মামলার প্রথম থেকে ওনি জড়িত আছে। তোমার যদি কোনো রকম সহযোগীতা প্রয়োজন তাহলে ওকে সাথে রাখতে পারো।
ঠিক আছে স্যার। স্যার আরেকটা কথা?
হ্যা বলো?
স্যার আমি কাজের সময় কাওকে কোনো রকম কৈফিয়ত দিতে একদম পছন্দ করি না। আমি যেই কাজ হাতে নেই সেইটা শেষ করে তারপর ক্ষান্ত হয়। তাই আমি কাওকে কোনো রকম কৈফিয়ত দিতে পারবো না। আমার কাজের স্বাধীনতা দিতে হবে। আমাকে কোনো রকম বাঁধা দিলে আমি কাজ মাঝ খানে থামিয়ে দিবো।
ঠিক আছে আমি তোমাকে সবরকম স্বাধীনতা দিলাম। আর জুয়েল চারদিক থেকে একটু বেশি চাপ আসছে। প্লিজ একটু দ্রুত কি-লা-র-কে খোঁজে বের করো।
স্যার আমি আমার বেষ্ট ট্রাই করবো। স্যালুট দিয়ে জুয়েল রানা বেরিয়ে এসেছে। সাথে রাজিব হোসেনকে নিয়ে ঘটনার স্থানে রওনা দিছে। ঘটনা স্থলে যেতে যেতে রাজিব হোসেন থেকে সবকিছু যেনেছে। রাজিব হোসেন সেই ঘটনা কিছুটা বলার পড়ে-ই জুয়েল রানা বলে।
খু!ন যেখানে হয়ছে সেখানে ওরা কতজন থাকতো? মাত্র তিনজন এর মধ্যে একজন ছাড়া বাকী দুজন খু!ন হয়ছে।
যে বেচে আছে সে বর্তমানে কোথায় আছে?
আমি ওকে এরেস্ট করে থানায় নিয়ে রাখছি। তবে একটা কথা স্যার আমরা খু!ন দুটো একদিনে করছে তবে আলাদা সময় আর আলাদা ভাবে। প্রথম খু!ন হয় আরমান সাহেবের স্ত্রী মানে নীলা এর পর আরমান সাহেবকে এরেস্ট করি। কিন্তু তার ঘন্টা পাঁচ পড়ে ওনার মা মানে দ্বিতীয় খু!ন!টা হয়। তখনি জুয়েল রানা কিছুটা নড়েচড়ে উঠলো। আমরা তো প্রথম খু!ন!টা আ!ত্ম!হ!ত্যা মনে করছি। কিন্তু পড়ের খু!ন!টা দেখার পড়ে মনে হলো এটা কেউ মাস্টার মাইন্ড প্ল্যান করে খু!ন করছে।
রাজিবের সবকথা শুনে জুয়েল রানা আগ্রোহের সাথে কেইসটা মাথায় নিয়েছে। দুজনে স্পটে এসেছে তবে বাড়িটা দেখে জুয়েল রানা কিছুটা রহস্যময় হাসি দিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে সবকিছু ভালো ভাবে ঘুরে ঘুরে দেখে নিলো। সবকিছু দেখে কোনো কিছুর ক্লো পেলো না। যখনি চলে আসবে তখনি একটা ফ্যামেলি ফটো দেখে আর সেখানে দেখতে পায় দুজন ছেলে মাঝখানে একজন বৃদ্ধা মহিলা বসা। জুয়েল ফ্রেম হাতে নিয়ে রাজিব হোসেনকে দেখি বলে।
এখান থেকে আপনি কাকে কাকে দেখছেন? তখন রাজিব আরমানের মা’কে আর আরমানকে দেখিয়ে দেয়। বাকী থাকে একজন যাকে রাজিব হোসেন দেখেনি। তার মানে এখন জানতে হবে সে কে আর এখন কোথায় আছে? তখনি আরমানের কথা মনে পড়ছে। খুব দ্রুত থানায় এসে আরমানকে ডেকে পাঠায়।
আরমান আসা মাত্রই ছবিটা দেখি বলে কে ও?
আমার ছোট ভাই আশিকুর রহমান। কিন্তু সে তো বাংলাদেশ থাকে না। সে বর্তমানে সিংগাপুর আছে। তখনি জুয়েল রানা ওর ছবিটা রেখে দিয়ে বলে।
আচ্ছা মিস্টার আরমান আপনি যদি আমাকে সব সত্যি বলেন তাহলে আমি আপনাকে ছেড়ে দিবো।
বলেন স্যার কি বলতে হবে?
আপনার লাইফ স্টোরি মানে জীবন কাহিনী একটু বলেন।
আরমান কিছুটা চুপচাপ থেকে বলতে আরম্ভ করে। স্যার আমার স্ত্রী নীলা’কে আমি ভালোবেসে বিয়ে করি। আমাদের বিয়ের পাঁচ বছর হয়ছে কিন্তু আমাদের কোনো সন্তান হয়নি এই জন্য ইদানিং আমাদের মধ্যে রোজ ছোট খাটো ঝগড়াঝাটি হচ্ছে। কিন্তু ঐদিন আমি আমার স্ত্রীর শরীরে হাত তোলে ফেলি সাথে দুইটা লাথি। তারপর আমার স্ত্রী অন্য রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ছে আর আমি আমার রুমে। সকালে উঠে আমি সোজা অফিসে চলে আসি আর দুপুরে শুনি আমার স্ত্রী মা!রা গেছে।
আপনার মা যে মা!রা গেছে সেটা কি আপনি জানেন?
হ্যা স্যার জানি কিন্তু কে করছে আমি এর কিছুই বলতে পারছি না।
আপনার সাথে বা আপনার স্ত্রীর সাথে কারো কোনো শত্রুতা আছে?
নাহ এমন কোনো শত্রুতা আমার বা আমার পরিবারের কারো সাথে নেই।
কাওকে কি আপনার কখনো কোনো কারণে সন্দেহ হচ্ছে? তখনি আরমান বলে একজনকে আমার সন্দেহ হয়। আর সেটা হচ্ছে আমার শ্বশুর।
মানে কি বলছেন এসব?
হ্যা ওনি আমাদের বিয়েটা মেনে নেননি। আর সবসময় আমাকে আর আমার মা’কে হুমকি দিতো।
আপনার শ্বশুরের ঠিকানা দেন। আরমান ওর শ্বশুরের ঠিকনা দিছে। জুয়েল রাজিবকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে গেছে। আরমানকে আপাতত থানায় আটকিয়ে রাখছে।
ঘন্টা খানেকের মধ্যে আরমানের শ্বশুর বাড়িতে আসে। ওনারা সবাই মেয়ে হারানোর শোকে একদম ভেংগে পড়ছে। সবকিছু দেখে রাজিব বলে উঠলো। স্যার আমি শিউর সবকিছুর মাস্টার মাইন্ড প্ল্যান ঐ আরমান করছে। ওকে দুই চারটে দিলে সব ফর ফর করে বলতে শুরু করবে।
দেখুন রাজিব হোসেন আপনার সাথে আমি একমত হতে পারছি না। আরমানকে থানায় আনার পড়ে ওনার মা খু!ন হয়। আর তাছাড়া আরমান কেনো ওর মা’কে খু!ন করতে যাবে?
কারণ আরমানের মা হয়তে সব দেখে ফেলছে তাই ওনাকে খু!ন করছে? তখনি জুয়েল বলে এটা ধারুন বলছেন কিন্তু খু!ন!টা আরমান করেনি? খু!ন করছে অন্য কেউ। আসুন আমার সাথে বলে আরমানের শ্বশুর মানে খোকন আহমেদরের সাথে দেখা হতেই জুয়েল বলে উঠলো।
নিজের মেয়ে আর তার শ্বাশুড়িকে খু!ন করে মিথ্যা মাঁয়া দেখানোর কোনো মানে হয় না। রাজিব ওনাকে থানায় নিয়ে চলো খু!ন!টা ওনি করছে। তখনি খোকন আহমেদ বলে। অফিসার কি যাতা বলছেন? আমি কেনো আমার মেয়েকে খু!ন করতে যাবো? আমার এক মাত্র মেয়ে নীলা ওকে খু!ন করবো কেনো?
কারণ সে আপনার সৎ মেয়ে ওকে খু!ন করে আরমানকে ফাঁসিয়ে দিয়ে সব সম্পত্তি আপনি ভোগ করতে পারবেন।
দেখুন অফিসার আপনি আমাকে মিথ্যা মামলাই ফাসানোর চেষ্টা করছেন। নীলা আমার সৎ মেয়ে হতে পারে কিন্তু আমি ওকে নিজের আপন সন্তানের মত করেই দেখে আসছি। নীলা খু!ন হবার দিন বিকেলে আপনি ওদের বাড়িতে গেছেন৷ এবং প্রায় ঘন্টা খানেক সময় ঐখানে ছিলেন। কিন্তু যখনি আপনি নেমে আসেন তখন আপনি বাড়ির আশপাশের সবকিছু খুব ভালো করে রক্ষ করেন। আর মোবাইলে আপনি কথা বলছেন এবং এটাও বলছেন রাতের মধ্যে কাজটা সেরে ফেলতে হবে। ঠিক সকলেই নীলার লা!শ!টা ফ্যানের সাথে জুলানো অবস্থায় পাওয়া যায়।
দেখুন আমি এই খু!ন করিনি। আমাকে কেনো আপনি জোর করে ফাসানোর চেষ্টা করছেন?
আপনি কি সেদিন নীলার বাসায় গেছিলেন?
হ্যা।
আপনি নামার সময় মোবাইলে কথা বলছেন? আর এটাও বলছেন আজ রাতের মধ্যে কাজ সেরে ফেলতে হবে। কি বলছেন তো?
হ্যা বলেছি কিন্তু সেটা আমার স্টাফকে। আমার মালের অর্ডার ছিলো সেটা পরের দিন সকালেই দিতে হতো। আপনি মিথ্যা বলছেন। আমি জানি খু!ন!টা আপনি করিয়েছেন। তখনি ওনি কেমন নার্ভাস হয়ে গেছে। শরীর দিয়ে ঘাম ঝড়তে শুরু করছে। তখনি জুয়েল বলে ওনার হাতের আর আঙুলের ছাপ নিয়ে নেন। পোসমর্টেম রিপোর্টের সাথে মিলাতে হবে। খোকন সাহেব অনেক নার্ভাস হয়ে গেছে ওরা দুজনে চলে আসছে তখনি রাজিব জিজ্ঞেস করে।
স্যার আপনি কি করে জানলেন ওনি সেদিন আরমান সাহেবের বাসায় গেছিলো?
বাড়িতে ঢুকে গেলে রাস্তার ঠিক পাশে একটা সি সি ক্যামেরা আছে সেখানে দেখি।
স্যার তাহলে তো সেটাও দেখা যাবে যে খু!ন করছে। সে তো এই রাস্তা দিয়ে গেছে।
ক্যামেরা মাত্র তিনজন ব্যাক্তি সেদিন ঐ বাড়ির দিকে গেছে। একজন আরমান সাহেব আরেকজন খোকন আর একজন হলো নীলা। সেদিন ওনি সকালে বেরিয়ে ঠিক বিকালে ওনার বাবার সাথে বাসায় গেছে। আর কাওকে সেই বাড়ির দিকে ক্যামেরায় দেখা যায়নি।
স্যার আমার কাছে মনে হয় খু!ন আরমান সাহেব আর ওনার শ্বশুর করছে। ওনারা ছাড়া যেহেতু কেউ বাড়িতে যায়নি?
নাহ রাজিব সাহেব খু!ন ওরা কেউ করেনি খু!ন করছে অন্য কেউ। কিন্তু সে কে এটা আমাদের খোঁজে বের করতে হবে।
স্যার এতটা শিউড় ভাবে কি করে বলছেন খু!ন অন্য কেউ করছে? তখনি জুয়েল রাজিবকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বলে। খু!নি আমাদের সামনে। ঐ তাকিয়ে দেখেন সেই দুইটা খু!নে!র কি-লা-র। রাজিব তাকিয়ে বলে স্যার আমি কি কোনো স্বপ্ন দেখছি নাকী সত্যি?
আপনি জেগে আছেন এখন দ্রুত ওকে গিয়ে ধরেন।
।
চলবে…