#মন_দিতে_চাই
#৪র্থ_পর্ব
#লেখনীতে_সুপ্রিয়া_চক্রবর্তী
নানীর মৃত্যুর পর দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হয়ে গেল। ধীরে ধীরে আমার বিয়ের তারিখও ঘনিয়ে আসতে লাগল। এর মাঝে মামির মধ্যে আমি অনেক পার্থক্য লক্ষ্য করলাম। আগের মতো মামি আর আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে না। ভালো ব্যবহার করে অধিকাংশ সময়। মামির এই অচেনা ব্যবহার আমাকে অনেক অবাক করে। তবে আমি এটা ভেবে খুশি হই যে মামি বদলে গেছে।
আজ আমার গায়ে হলুদ। তবে এখনো আমি মুক্তোকে দেখিনি। আমার খুব ইচ্ছা ছিল ওনাকে দেখার৷ তবে মামার কাছে শুনেছি মুক্তোও নাকি আমাকে দেখেন নি। একেবারে বিয়ের দিন দেখতে চান। আমিও তার এই কথা মেনে নিয়েছি।
গায়ে হলুদ উপলক্ষে পুরো বাড়ি আত্মীয় স্বজনে পরিপূর্ণ। আমার আবার বেশি মানুষের আড্ডা অনেক পছন্দ। তাই সবকিছু আনন্দের সাথে উপভোগ করছি আমি।
আমি নিজের রুমে একটি হলুদ রঙের শাড়ি পড়ে বসে আছি। শাড়ি পড়ার খুব একটা অভ্যাস আমার নেই তাই আমি বেশি হাঁটাচলা করছিলাম না। পাছে না সবার সামনে পড়ে গিয়ে মানসম্মান নষ্ট হয়।
স্নিগ্ধা আপি তার কিছু বান্ধবীদের নিয়ে আমার রুমে এলো। আমাকে দেখে বলল, মাশাল্লাহ। তোকে খুব সুন্দর লাগছে। আয় তোর সাথে কয়েকটা সেলফি তুলি।
আমি হাসিমুখে কয়েকটা সেলফি তুললাম। স্নিগ্ধা আপি ও তার বান্ধবীরা আমাকে সঙ্গে নিয়ে বাইরে আনল। যেখানে গায়ে হলুদের সব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আজকের দিনে আমার মা-বাবা, নানি, ভাইদের কথা খুব মনে পড়ছে৷ তারা যদি বেঁচে থাকত তাহলে নিশ্চয়ই খুব খুশি হতো। তাদের কথা মনে পড়তেই আমার চোখের কার্নিশ বেয়ে দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। স্নিগ্ধা আপি সেটা খেয়াল করে সযত্নে আমার চোখের জল মুছে দিয়ে বলল, আজকের শুভদিনে আর কাঁদিস না তো ঝিনুক। চল আমরা সবাই এখন তোর গায়ে হলুদ মাখাবো।
আমাকে বসানো হলো সেখানে। সবাই আমার গায়ে হলুদ দিতে লাগল। সবাই অনেক বেশি খুশি আজকে। একটু পরে মামি এলো। মামিকে দেখে আমার বেশ ভয় লাগছিল। কেন জানি মনে হচ্ছিল মামি খুব কঠিন কথা শোনাবে। আমার এই ভাবনাকে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করে মামি নিজেও আমার শরীরে হলুদ স্পর্শ করালো। খুশিতে আমার আঁখিযুগল আপনা আপনি জলে ভড়ে গেল। মামি আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, পাগলি মেয়ে এভাবে কান্না করতে নেই। আজ না তোর গায়ে হলুদ। কাল তুই আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে যাবি। তোর কথা খুব মনে পড়বে।
মামির এত ভালো ব্যবহারে আমি গলে গেলাম। মামির প্রতি জমা হওয়া সব বিতৃষ্ণা ভুলে বললাম, তুমি আমার জন্য দোয়া করো মামি। আমি যেন সুখী হই।
আমি সবসময় তোকে দোয়া করব ঝিনুক। আমার উপর আর রাগ করে থাকিস না। আমি তোর সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছি। পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিস।
ছি ছি! এমন কথা বলো না মামি। তুমি আমার গুরুজন।
গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান অবশেষে সমাপ্ত হলো। আমি কিছু খেয়ে নিলাম। রাতে আবার মেহেন্দির অনুষ্ঠান৷ যা নিয়ে সবাই খুব সুন্দর প্ল্যান করছে।
আমি দুপুরে খেয়ে একটু ঘুমিয়ে নিলাম। বিকেলের দিকে ফোনের রিংটনে আমার ঘুম ভেঙে যায়। অলসতা নিয়ে বিছানা থেকে উঠে আমি ফোনটা রিসিভ করলাম। ঐ দিক থেকে আবার সেই সুন্দর কন্ঠস্বর ভেসে আসল আমার কানে, গুড ইভিনিং ম্যাডাম। কেমন আছেন? আজ হলুদ সেরেমনি কেমন গেল?
মুক্তোর কন্ঠস্বরের প্রেমে আমি অনেক আগেই পড়েছি। এই কন্ঠস্বর শুনেই তো নিজের মনটা দিতে চেয়েছি মুক্তোকে। মুক্তোর সুন্দর সাবলীল কন্ঠস্বর শুনে অজান্তেই আমার মুখে হাসি ফুটে উঠল। আমি বললাম, আমি ভালোই আছি। আপনি কেমন আছেন?
আমিও ভালো আছি। তো একটু পর তো মেহেন্দী হবে। আপনার হাতে যেন আমার নামটা সুন্দরভাবে লেখা থাকে।
আমি খানিকটা লজ্জা পেলাম তার কথা শুনে। ভ্রু নাচিয়ে বললাম, আমি যদি নাম না লেখাই তাহলে?
তাহলে আর কি। আমি গিয়ে লিখে দিয়ে আসব।
আমি কিছু বলার আগেই স্নিগ্ধা আপি মেকআপ আর্টিস্টদের নিয়ে এলো। আমি লজ্জায় ফোন কে*টে দিলাম। মেকআপ আর্টিস্টরা আমাকে সাজানো শুরু করল। আজ রাতের জন্য লাল রঙের গ্রাউন পড়ানো হলো আমায়। গ্রাউনটাতে আমাকে একটু বেশিই সুন্দর লাগছে।
স্নিগ্ধা আপি আমাকে দেখে বলল, ডানা কা*টা পড়ি শব্দটা বোধহয় তোর জন্যই তৈরি। এত সুন্দরী তুই যে কি আর বলব।
ধেত। কি যে বলো না তুমি স্নিগ্ধা আপি।
আমি একদম ঠিক বলছি। আচ্ছা চল এখন।
আমি স্নিগ্ধা আপির সাথে চললাম। আমার হাতে মেকআপ করে দেওয়া হলো। সুন্দর করে লিখে দেওয়া হলো মুক্তোর নাম। আমার হাতে জ্বলজ্বল করতে লাগল সেই নাম। স্নিগ্ধা আপি ও তার বান্ধবীরা এবার গানের তালে তালে নাচতে শুরু করল,
♪Leja Leja re…
Mujhse Dur kahi na ja
bas ehi kahi rehe ja
mey teri dewani re
afsos tujhe he keya
Teri meri kahani
Neyi Ban geyi
Tu mera ho geya
Mai Teri Ho Gayi
Jaha jahe Tu Sang Mujhe Le Jaye
Leja Leja Re
Meheki Rat Mein
Churake tere sang leh ja♪
একপর্যায়ে আমাকেও তারা টেনে নিয়ে গেলো। আমি সবার সাথে তাল মিলিয়ে নাচতে লাগলাম। সবকিছু কত সুন্দর লাগছিল।
❤️
আমার জীবনের সবথেকে শুভ দিনটি শেষপর্যন্ত এসেই গেল। আজ আমার বিয়ের দিন। একটু পরেই মুক্তো তার পরিবারকে নিয়ে চলে আসবে। স্নিগ্ধা আপি, আমার কিছু কাজিন, বন্ধু বান্ধবরা প্ল্যান করছে বিয়ের গেইট ধরার।
গেইট ধরে কত টাকা চাইবে সেটাও তারা ঠিক করে নিচ্ছে। সবকিছুর মাঝে আমি বেশ স্বাভাবিক আছি। বলা ভালো স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা চালাচ্ছি। কারণ বিয়ে একটা মেয়ের জন্য কোন সাধারণ ব্যাপার না। সম্পূর্ণ নতুন একটি অচেনা যায়গায় যাওয়া। যদিও আমার খুব একটা ভয় হচ্ছে না। কারণ ঐ বাড়ির মানুষগুলো খুব ভালো। তবুও একটু অন্যরকম লাগছে।
একটু পরেই আমার এক কাজিন এসে সবাইকে বলল, বর এসে গেছে। চলো তোমরা।
সাথে সাথে সবাই দৌড়ে চলে গেল। আমার হৃদযন্ত্র দ্রুত স্পন্দিত হতে লাগল। আজ আমি মুক্তো নামক সেই পুরুষকে দেখব যার কন্ঠস্বর শুনেই নিজের মন দিয়ে ফেলেছি তাকে। আজ সামনা সামনি তাকে দেখার অনুভূতিটা কেমন হবে ভেবেই আমার মনে ভালোবাসার সূক্ষ্ম অনুভূতি ঢেউ খেলে যাচ্ছে।
হঠাৎ করে মামি আমার রুমে প্রবেশ করল। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার মুখে কিছু একটা স্প্রে করে বলল, তুই শেষ মেয়ে। কি ভেবেছিলি এত সহজে আমি সবকিছু মেনে নেবো। ওতো বড়লোক বাড়ির বউ হবি তুই আর আমি বসে বসে দেখব। না সেটা হবে না। আজ আমি সবকিছু প্ল্যান করে রেখেছি। আজ তোর সাথে নয় আমার মেয়ে স্নিগ্ধার সাথে বিয়ে হবে মুক্তোর। আমার মেয়ে হবে রাজরাণী, তুই আজীবন দাসী হয়েই থাকবি।
উক্ত কথাগুলো বলে প্রায় অচেতন আমাকে টেনে নিয়ে যেতে লাগল। নাকে স্প্রে করার পর থেকে আমি কিছু বলতে পারছি না, নড়াচড়া করার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছি। মামি আমায় নিয়ে চিলেকোঠার ঘরে বন্ধ করে দিল। একটি চিঠি আমাকে দেখিয়ে বলল, এই চিঠিটা দেখতে পাচ্ছিস? এখানে লেখা, আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি। তাই আমি এই বিয়েটা করতে পারব না।
এখন এই চিঠিটা দেখাব আমি সবাইক্ব। বলব তুই পালিয়ে গেছিস। এবং তোর বদল স্নিগ্ধাকে বসিয়ে দেব বিয়ের আসরে।
কথাগুলো বলে অট্টহাসি দিয়ে চলে গেল মামি। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি জ্ঞান হারালাম।
#চলবে
#মন_দিতে_চাই
#৫ম_পর্ব
#লেখনীতে_সুপ্রিয়া_চক্রবর্তী
বিয়ে বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়েছে মুক্তো এবং তার পুরো পরিবার। মুক্তো গেইটে সবার দাবিদাওয়া মিটিয়ে ভেতরে আসতে সক্ষম হয়। বরের জন্য বরাদ্দকৃত আসন গ্রহণ করে।
মুক্তোর অপেক্ষার প্রহর যেন আর শেষই হচ্ছিল না। ঝিনুক নামের সেই মেয়েটির প্রেমে পড়ে গেছে মুক্তো৷ যাকে না দেখেই নিজের মনের মাঝে স্থান দিয়ে ফেলেছে।
স্নিগ্ধা কিছুজনকে সাথে নিয়ে যায় ঝিনুকের রুমে। রুমে এসে ঝিনুককে দেখতে না পেয়ে সবাই বেশ ঘাবড়ে যায়। বাথরুম সহ আশে পাশে ঝিনুককে খোঁজে সবাই। কিন্তু ঝিনুককে কোথাও পাওয়া যায়না। সবাই এবার বেশ চিন্তায় পড়ে যায়।
ঝিনুকের মামি শাহনাজ তো এই সুযোগটাই খুঁজছিল। সবার অলক্ষ্যে মিথ্যা একটা চিঠি ঝিনুকের ডায়েরির মাঝে ঢুকিয়ে রাখে। একটু দূরে সরে এসে স্নিগ্ধার কাছে নাটক করে বলে, দেখতো ডায়েরির মাঝে কিসের একটা চিঠি দেখা যাচ্ছে।
স্নিগ্ধা ডায়েরির মাঝখান থেকে চিঠিটা বের করে। ভাঁজ খুলে চিঠিটা পড়তেই স্নিগ্ধা থমকে দাঁড়ায়। শাহানাজ কিছু না জানার ভান করে বলে, কিছু বল মা। কি লেখা চিঠিতে।
এখানে ঝিনুক লিখেছে ও অন্য কাউকে ভালোবাসে। তাই বিয়েটা করবে না জন্য পালিয়ে গেছে।
শাহানাজ মিথ্যা আহাজারি শুরু করেন। স্নিগ্ধা মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে। ঝিনুক যে এমন কিছু করবে সেটা স্নিগ্ধার ভাবনার বাইরে ছিল।
ঝিনুকের মামার কানেও কথাটা যায়। তিনি ভীষণ অবাক হয়ে যান এটা জেনে। ঝিনুক তো এই বিয়েতে রাজি ছিল, তাই এভাবে তার পালিয়ে যাওয়া মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। এর পেছনে কোন যুক্তি খুঁজে পারছেন না তিনি। তাই ঝিনুকের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন।
শাহানাজ পরিকল্পনা করে কিছু মানুষের দ্বারা মুক্তোর পরিবারের কানে এই কথা তুলে দেন যে বউ পালিয়ে গেছে।
খবরটা শোনামাত্রই শাহরিয়ার কবিরের মাথায় হাত চলে যায়। মমতাজ পারভিনও ভীষণ মর্মাহত হন। ঝিনুককে তাদের খুব পছন্দ হয়েছিল। সেই মেয়েটা এমন কাজ করবে সেটা ভাবতে পারেনি। বিশেষ করে শাহরিয়ার কবির ভাবছিলেন, যেই মেয়েটা এত সৎ, যার সততায় মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি সেই মেয়েটা এরকম কাজ কিভাবে করল।
মুক্তোর কানে তখনো কথাটা যায়নি। তবে কথায় আছে দেয়ালেরও কান আছে। কোন কথা তাই বেশিক্ষণ লুকিয়ে রাখা যায়না। এক্ষেত্রেও তাই ঘটল। মুক্তোর কানেও পৌঁছে গেল এই খবর৷
মুক্তোর মাথায় রাগ উঠে গেল। জীবনে কখনো প্রত্যাখ্যান নামক শব্দটার সাথে পরিচিত ভয়নি মুক্তো। সেখানে আজ একটা মেয়ে কিভাবে মুক্তোতে প্রত্যাখান করে বিয়ে ছেড়ে পালিয়ে গেল। মুক্তোর মাথায় দাউদাউ করে আগুন জলতে লাগছিল।
ঝিনুকের মামার অনুপস্থিতির সুযোগ নেন শাহানাজ। সবার সামনে ঝিনুকের নামে একটার পর একটা বাজে কথা বলতে থাকেন। স্নিগ্ধা প্রথমে এই রকম পরিস্থিতিতে তার মায়ের বাজে বকাতে বাধা প্রদানের চেষ্টা করলেও শাহানাজ দমে যায়নি। স্নিগ্ধাকে ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে বলতে থাকে, ঐ মেয়েটার মধ্যে আগে থেকেই ঘাপলা ছিল। অভিশপ্ত, অপয়া মেয়ে একটা। নিজের পুরো পরিবারকে খে*য়েছে, এই বাড়িতে এস্ব আমার শ্বাশুড়িকেও খে*ল। এখন আমাদের মান সম্মানও খেয়ে গেলো। আমি আগে থেকে স্নিগ্ধার বাবাকে এই ব্যাপারে সতর্ক করতাম। কিন্তু সে ভাগ্নির স্নেহে অন্ধ হয়ে আমার কোন কথায় পাত্তা দেয়নি। এখন তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে।
মুক্তোর কাছে সবকিছু বিরক্তিকর লাগছিল। এপর্যায়ে মমতাজ পারভিনও নিজের স্বামীকে কথা শুনিয়ে বলে, খুব তো অহংকার করে বলেছিলে তোমার জহুরির চোখ। খাঁটি ডায়মন্ড চিনতে ভুল হবে না। তুমি তো দেখছি হিরে মনে করে কাচ পছন্দ করে ছিলে।
শাহরিয়ার কবিরের মাথা নিচু হয়ে যায়। নিজের স্ত্রীকে এই রকম সময়ে কিছু বলতেও পারেন না তিনি।
মুক্তো রাগী গলায় বলে, এখানে থেকে আর নাটক দেখার কোন প্রয়োজন নেই। মম ড্যাড তোমরা চলো আমার সাথে। এখানে আর এক মিনিটও নষ্ট করবো না।
শাহানাজ নিজের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করে। সবার সামনে বলে দেয়, আপনারা যখন বিয়ে করে নিজের ছেলের বউকে ঘরে তুলতে চেয়েছেন তখন এভাবে খালি হাতে ফিরবেন না।
মমতাজ পারভিন গম্ভীর গলায় বলেন, তাহলে আপনি কি করতে বলছেন আমাদের? আপনার ঐ পলাতক ভাগ্নির জন্য বসে বসে অপেক্ষা করব নাকি?
ঝিনুকের কথা বাদ দিন। যে স্বেচ্ছায় চলে যায় সে আর ফিরে আসে না। আমি তো আমার মেয়ের কথা বলছিলাম। ঐ ঝিনুকের থেকে হাজারগুণ ভালো আমার মেয়ে৷ একেবারে সোনার টুকরো। আপনারা আমার মেয়েকে সুযোগ দিয়ে দেখতে পারেন আশা করি আশাহত হবেন না।
শাহরিয়ার কবির রাগী রাগী ভাব নিয়ে বলেন, আপনাদের স্পর্ধা দেখে আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি। আপনারা কি আমাদের নিয়ে ছেলেখেলা করছেন? এক মেয়ে পালিয়ে গেছে এখন নিজেদের মেয়েকে আমার ছেলের গলায় গছিয়ে দিতে চাইছেন। না না, সেটা হবে না। মমতাজ, মুক্তো চলো তোমরা।
শাহরিয়ার কবির যাওয়ার জন্য পা বাড়ালেও মমতাজ পারভিন যান না। তিনি বলেন, আমি ওনার প্রস্তাবে রাজি৷ যখন এসেছি তখন খালি হাতে ফিরব না। নিজের ছেলের বউ নিয়ে তারপর একেবারে ফিরব।
মুক্তো মূর্তির ন্যায় দাঁড়িয়ে ছিল। কোন কথা বলা তো দূর সামান্য প্রতিক্রিয়া পর্যন্ত করছিল না মুক্তো। তার জীবন নিয়ে এত কিছু ঘটে চলেছে অথচ তার অভিব্যক্তির কোন পরিবর্তন নেই।
শাহানাজ তো পারেন না নেচে ওঠেন। অবশেষে তার কুটিল বুদ্ধি কাজে দিল। মমতাজ পারভিনের কথা শুনে তার মন খুশিতে নেচে ওঠে। স্নিগ্ধার কাছে গিয়ে তাকে টেনে ঘরে নিয়ে যায়। মেকআপ আর্টিস্ট বলে, আমার মেয়েটাকে সাজিয়ে দাও ভালো করে। একদম লাল টুকটুকে বউয়ের সাজে সাজাও ওকে।
স্নিগ্ধা এভাবে বিয়ে করতে রাজি ছিল না৷ তাই স্নিগ্ধা বলে, আমি বিয়েটা করব না আম্মু। মুক্তোর সাথে আমার বোন ঝিনুকের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এখন আমি কিভাবে বিয়ে করব।
তুই বেশি কথা না বলে চুপচাপ রেডি হয়ে আয়। বিয়ে হলে তুই সুখীই হবি।
গটগট করে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় শাহানাজ। সে বেরিয়ে যেতেই স্নিগ্ধা কাউকে ফোন করে।
#চলবে