মনের কোনে পর্ব-০৭

0
1626

#মনের_কোনে
#নাহিয়ানা_আফ্রিন_লেখিকা
#পর্ব_৭

আফ্রিন রাজি হওয়ায় কাজি সাহেব ওদের বিয়ে সেরে ফেলেন।

অন্যদিকে রামিম লোকের মাধ্যমে জানতে পারে যে আসফিন আফ্রিন কে বিয়ে করেছে,রাগে রামিম ফোন আছার মেরে ভেংগে ফেলে আর সোজা চলে যায় নিজের আড্ডার যায়গায় ।

এদিকে সিন্থিয়া রামিম এর অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে যায়।

রাতে একা কে জেনো ছাদে হাটাহাটি করছিলো আর তার পায়ের আওয়াজ সোনা মাত্র লাবিব ছাদে যায় চেক করতে যে এতো রাতে কে আসছে ছাদে। ছাদে গিয়ে লিয়া কে এক কোনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তার দিকে এগিয়ে যায় লাবিব।

লিয়া ঃ আপনি এখানে কেনো..?

লাবিব ঃ আমার মতে ছাদ টা কারো কেনা নয় তাহলে আমি আসতে পারবো না?

লিয়া ঃ তা কেনো হবে থাকুন আপনি।

(এটা বলে লিয়া নিচে নামার জন্য এগিয়ে যায় তখন লাবিব লিয়ার হাত ধরে টান দেয়, তাল সামলাতে না পেরে লাবিব এর বুকে গিয়ে পরে লিয়া।)

লিয়া ঃ আজব লোক তো আপনি এভাবে হাত ধরে টানছেন কেনো?

লাবিব ঃ আমাকে কি একেবারে ক্ষমা করা যায় না লাবন্য, আমি তো মানছি আমি তোমার সাথে অনেক খারাপ বিহেভ করছি!ভুল তো মানুষ মাত্র ই হয় তাই বলে তাকে কি ক্ষমা করা যায় না।একটা সুযোগ কি তুমি আমাকে দিবে না।

লিয়া ঃ যাও আমার মন অনেক বড় মাফ করে দিলাম তোমাকে, হুহ!

লবান লিয়াকে জরিয়ে ধরে বললো তাই নাকি?

লিয়া ঃ হ্যা তোমার ছবি দেখেই তো এই মনের কোনে তোমাকে যায়গা দিয়ে দিয়েছি বলো।

অন্যদিকে

আফ্রিন একা বসে আছে বাসর ঘরে এখন ও আসফিন আসে নাই।সে ভাবছে কি হবে আসফিজ আসলে আসফিন তো তাকে ভুল বুঝে আছে। এসব ভাবনার মাঝে আসফিন আসলো”

আসফিন ঃ অয় স্টুপিড মেয়ে জানেন না বাসর রাতে স্মামীর পা ধরে সালাম করতে হয়?

আফ্রিন ঃ (কিছু না বলে সালাম করতে নিলো)

আসফিন ঃ (দ্রুত আফ্রিন কে ধরে নেয় আর বলে থাক লাগবে না)

আফ্রিন ঃ কিছু কথা বলার ছিলো শুনবেন?

আসফিন ঃ এখন ঘুমান আমি এখন শুনার মুড নাই!

আফ্রিন ঃ শুনেন না প্লিজ অনেক দরকারি কথা আমার।

আসফিনঃ আরে বললাম না ঘুমাতে ইডিয়ট ( ধমক দিয়ে)

আফ্রিন ধমক এ ভয় পেয়ে ঘুমিয়ে যায়, আর কিছু বলতে পারে না।আসফিজ আজন অনেক বড় ভুল করে ফেললো এভাবে আফ্রিন এর কথা না শুনে।হয়তো সামনে এমন কিছু হতে পারে যাতে আফ্রিন এর কথা আর না শুনতে পারে নিয়তি তো আর কেই জানে না।আসফিন যখন দেখলো আফ্রিন ঘুমিয়ে গেছে তখন উঠে চুপচাপ আফ্রিন এর গলায় কি জেনো পরিয়ে দিলো আর হাত ধরে বললো আমি জানি তুমি কি বলবে এটাই তো যে তুমি রামিম কে ভালোবাসো আমাকে না এই কথা বিশ্বাস করো প্রিয়তমা আমি সইতে পারবো না। আসফিন নিজেও ঘুমিয়ে গেলো।

সকালবেলার পরিবেশ অনেক সুন্দর হয়, সূর্য এর লাল আভা পুরো আকাশ ছড়িয়ে থাকে তখন দেখতে অনেক ভালো লাগে। পাখির কিচিরমিচির ওর শব্দ, তখন৷ এ সময় এই ব্যাস্ত শহর ব্যাস্ত থাকে ঘুমে।সারা রাস্তা থাকে ফাকা ঠান্ডা ঠান্ডা বাতাস বয়ে যায় তখন মনের_কোনে শান্তি অনূভব হয়।

আফ্রিন এর আগে ঘুম ভেংগে যায় আসফিন এর সোজা চলে যায় ওয়াসরুম এ ফ্রেশ হয়ে এসে কাউকে না বলে চলে যায় অফিস এ।আফ্রিজ এর ঘুম ভাংগে তার কিছুক্ষন পর কারো কলের শব্দে, না দেখেই কল রিসিভ করে আফ্রিন।

রামিম ঃ যদি সিন্থিয়াকে বাচাতে চাও আমার বলা যায়গায় তাড়াতাড়ি আসো, আর হ্যাঁ কোনোরকম চালাকি করলে সিন্থিয়া কে আমি মেরে ফেলবো একা আসবে।

আফ্রিন ঃ হ্যালো কে বলছেন আপনি আর আজেবাজে কিসব বলছেন?

রামিম ঃ বাহ জানু এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলা আমাকে হায় এখন কি হবে তুমি আমাকে কীভাবে ভুললা তোমাত বাচ্চার বাবা আমি?

আফ্রিন ঃ অই অসভ্য তুই এতোদিন কিছু বলি নাই দেইখা ভাবিস না আমি চুপচাপ থাকার মতো মেয়ে আসছি আমি থাক ওখানে।

এটা বলে আফ্রিন তাড়াতাড়ি করে ফ্রেশ হয়ে রেডি হলো আর একাই বেরিয়ে গেলো। আফ্রিন কে একা বের হতে দেখে নে লিয়া আর ভাবে আফ্রিন এ সময় একা কোথায় যাচ্ছে?আর কিছু না ভেবে সোজা কল লাগায় আসফিন কে।

গোডাউনে পৌছে রামিম এর নাম ধরে ডাকছে আফ্রিন।আফ্রিন এর ডাকে সামনে এসে হাজির হয় রামিম।আফ্রিন কে দেখে রামিম রিতীমত সকড হয়ে যায়।আফ্রিন পুরো গেটাপ চেঞ্জ করে আসছে আজ,হোয়াইট জিন্স ব্লাক টি-শার্ট তার উপর ব্লাক জ্যাকেট, চুল ঝুটি করা চোখে চশমা।

আফ্রিন ঃ কি ভেবেছিলি রামিম আমি তোকে ভয় পাই তাই না? আরে পাগল লোক তোকে কে ভয় পায় সিন্থিয়া কোথায় আগে বল?

রামিম ঃ বাহ পুরু বাঘিনী হয়ে এসেছো জান আই লাভ ইউর ব্লাডি এটিটিউড।

আফ্রিন ঃ ডোন্ট কল মি জান ইউ ব্লাডি হেল।

এটা বলেই রামিম কে লাত্থি মেরে নিচে ফেলে দেয় আফ্রিন, আচমকা অ্যাটাক এর জন্য রামিম প্রস্তুত ছিলো না তাই রামিম উঠে উল্টা আঘাত করে আফ্রিন কে। দুজনে ফাইট করা শুরু করে ফাইট এর এক পর্যায় রামিম ছুরি নিয়ে আফ্রিন এর পেটে ঢুকিয়ে দেয় আর সেখান থেকে পালিয়ে যায়। আফ্রিন সেখানে অজ্ঞান হয়ে পরে থাকে।

অন্যদিকে আসফিন লিয়া এর থেকে কল পেয়ে চিন্তায় পরে যায় যে আফ্রিন একা কোথায় গেছে আফ্রিন এর ফোন এর লোকেশন ট্র‍্যাক করে আফ্রিন এর কাছে যাওয়ার জন্য রওনা দেয়।

এদিকে সারারাত রামিম বাসায় না ফিরার জন্য চিন্তায় পরে যায় রামিম এর বাবা -মা কিন্তু সিন্থিয়া মোটেও চিন্তা করে না রামিম এর জন্য কারণ সে রামিম এর সত্যিটা জানে।

আফ্রিন কে রক্তাক্ত অবস্থায় নিচে পড়ে থাকতে দেখে স্থির হয়ে যায় আসফিন। তার প্রিয়তমার এ কি অবস্থা তাড়াতাড়ি আফ্রিন কে হসপিটাল এ নিয়ে যায় আসফিন।

ডক্টর ঃ ওনাকে তো ছুড়ি মারা হয়েছে এটা পুলিশ কেস আগে পুলিশ কে বলুন তারপর আমরা চিকিৎসা করবো।

আসফিন ঃ কি বলছেন আপনি ডক্টর একজন পেসেন্ট এর লাইফ এর আগে আপনার কাছে পুলিশ রিপোর্ট করা বেশি জরুরি?প্লিজ আপনি চিকিৎসা শুরু করুন আই বেগ ইউ!

ডক্টর ঃ দেখেন মিস্টার যতই যা বলেন পুলিশ না আসলে কিছু করার নাই!

তখন পিছন থেকে কে জেনো বললো আপনি চিকিৎসা শুরু করুন আমি আছি দেখার জন্য।ডক্টর আর আসফিন পিছনে তাকিয়ে দেখে এ.সি.পি.কথা টা বলছেন।

এ.সি.পি ঃ যে ভাবেই হোক মিস নাহিয়না কে সুস্থ করতে হবে গো!

ডক্টর ঃ ওকে স্যার, বলে ডাক্তার চলে গেলেন।

আসফিন ঃ আপনি কে? আর আফ্রিন কে কিভাবে চিনেন, এন্ড থ্যাংকস।

এ.সি.পিঃ ওয়েল মিঃআফ্রিন কে আমি কিভাবে চিনি তা হয় আফ্রিন থেকেই শুইনেন, আর আমি এ.সি.পি সামিম রেজা।তা আপনি কে হন আফ্রিন এর?

আসফিন ঃ আমি হাসবেন্ড হই তার,আর আরেকদিক থেকে কাজিন।

সামিম রেজা ঃ ও আচ্ছা,

তারা আর কোনো কথা না বলে ডাক্তার এর জন্য অপেক্ষা করে।আসফিন এর মাথায় শুধু ঘুরপাক খাচ্ছে এই কথা গুলুই যে কে বা কা রা মারলো আফ্রিন কে কেনোই বা মারলো।আর আফ্রিন ঠিক হয়ে যাবে তো।তখন ডাক্তার বেরিয়ে আসলো।

আসফিন ঃ ডক্টর আফ্রিন কেমন আছে আমি তাকে দেখতে পারি?

ডক্টর ঃ সে এখন ভালো আছে জ্ঞান ফিরে নাই কেবিন এ দিলে দেখতে পারবেন।

আসফিন ঃ আর আর ওর বেবি কেমন আছে?

ডক্টর ঃ কিসের বেবি?

আসফিন ঃ আফ্রিন তো প্রেগন্যান্ট ।

ডক্টর ঃ আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে উনি প্রেগন্যান্ট নন।

আচ্ছা আমি গেলাম। আসফিন মনে হচ্ছে ঘোড়ের মধ্যে আছে আফ্রিন প্রেগন্যান্ট না হলে মিথ্যা কেনো বলছে?

…চলবে?…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে