#মনের_কোনে
#নাহিয়ানা_আফ্রিন
# পর্ব_৪
আফ্রিন নিচে পরে যাওয়ায় আওয়াজ হয়।সবাই সেই আওয়াজ শুনে আফ্রিন এর দিকে তাকালে দেখে আফ্রিন নিচে পরে আছে। সবাই অবাক হয়ে যায়, আসফিন দৌড়ে গিয়ে আফ্রিন কে কোলে তুলে নিলো আর সোফায় শুইয়ে দিলো।আসফিন এর এ কাজে মামনি বা রামিম অবাক হয় নাই শুধু অবাক হয়েছে শুধু সালেহা বেগম।
রামিম ঃ ( মনেমনে ভাবছে আফ্রিন এর এ অবস্থায় আসফিন কতোটা ডেস্পারেট তা দেখে রামিম শান্তি পাচ্ছ।এটাই তো সে চেয়েছিলো)
আসফিন ঃ এই আফ্রিন তাকাও কি হইছে?ওঠো আম্মু পানি আনো।
মামনিঃ হ্যা দারা (আসফিন এর কথায় মামনি পানি এনে আফ্রিন এর চোখে ছিটালেন)সা
আসফিন ঃ এই ওঠো না কি হইছে তোমার.?
সালেহা বেগম ঃ আমি আগেই বলেছিলাম এই অশুভ মেয়েটা থাকলে ভালো হবে না। দেখো তো আমার ছেলের বিয়ের কোথা শুনতে না শুনতেই জ্ঞান হারালো।কি অলক্ষি রে বাবা।
আসফিন ঃ মামি মা চুপ করেন না হলে ভুলে যাবো আপনি আমার বড়। বড় আর আমার সামনে দাড়িয়ে যদি আফ্রিন এর বিরুদ্ধে আর একটা কথা বলেন অনেক খারাপ হয়ে যাবে বলে দিলাম।
রামিম ঃ আসফিম কাম ডাউন ইয়ার। মায়ের কথা কানে নিস না মায়ের পক্ষ থেকে আমি সরি বলছি।(তোর যে কি অবস্থা করবো আসফিন যাস্ট ওয়েট, আমার আম্মুর সাথে এই ব্যাবহার এর শোধ আমি তুলবো।
এসব কথার মাঝে আফ্রিন এর জ্ঞান ফিরে এসেছে সে উঠে বসেছে,আর চারোপাশে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে যে কি হচ্ছে তার সাথে।
মামনি ঃ ২ দিন ধরে তুই খাচ্ছিস না আফ্রু ভাবিস না আমি জানি না, না খেয়ে থাকার কারণে আজ তুই জ্ঞান হারিয়ে পরে গেলি। আমাদের কি কষ্ট লাগে না।
আফ্রিনঃ আম সরি মামনি আমি ইচ্ছে করে করি নি তো, আর ভালো লাগে না খেতে তাই খাই নাই।
আসফিন ঃ কি বলছো আম্মু উনি খায় নাই?আফ্রিন আমাদের বাসায় মনে হয় খাবার এর কম পরে নাই তাই আপনি না খেয়ে থাকেন।
আফ্রিন ঃ বাদ দেন ভাইয়া।বাই দা ওয়ে রামিম ভাইয়া ক
কংগ্রেস ফর ইউর ওয়েডিং এন্ড নিউ লাইফ(চোখে পানি চিক চিক করছে কিন্তু মুখে হাশি নিয়ে কথাটি বলল আফ্রিন)
রামিম ঃ থ্যাংকস আ লট বিকেলে আসফিন দের সাথে চলে এসো আমার বাসায় ওকে?
আফ্রিন ঃ জ্বি অবশ্যই যাবো?
রামিম রা চলে গেলো তাদের বাসায়।আফ্রিন কে তার মামনি খাইয়ে দিচ্ছে।আফ্রিন মনেমনে ভাবছে একটা মানুষ এইরকম কিভাবে হয়, রামিম এর চোখে মুখে আনন্দ ছিলো তাহলে কি বিয়ের জন্য এতো খুশি সে?আচ্ছা আফ্রিন বা এই অনাগত সন্তান এর কথা কি ভাবছে না রামিম। রামিম যদি ভুলতে পারে সে কেনো নয়।আমি একজন ইন্ডিপেন্ডেন্ট মেয়ে আমি নিজে একাই নিজের সন্তান এর দায়িত্ব নিতে পারবো।রামিম এর বিয়ে শেষ হলেই আমি ইউ এস এ ফিরে যাবো।একাই বাচতে পারবো নিজের বাচ্চা নিয়ে এমন বেইমান এর ছায়া ও পড়তে দিবো না।
তখন ওখান দিয়ে আসফিন যাচ্ছিলো তাই আসফিন কে দেখে আফ্রিন ডাক দিলো।
আসফিন ঃ হ্যা কিছু বলবেন?
আফ্রিন ঃ ভাইয়া আমি তো আপনার ছোট তাহলে আপনি আমাকে আপনি ডাকেন কেনো?
আসফিন ঃ সেটা জানার সময় এখোনো আসে নাই?কি বলবে তাড়াতাড়ি বলো?
আফ্রিন ঃ আমাকে সপিং মল এ নিয়ে যেতে পারবেন? দেন পার্লার আসলে আমি একবারে রেডি হয়ে যেতে চাচ্ছিলান রামিম এর গায়ে হলুদ এ(আমিও দেখিয়ে দিবো আমি দূর্বোল না)
আসফিন ঃ আচ্ছা চলেন, আম্মু তুমি চলে যেও ড্রাইভার এর সাথে আমি ওনাকে নিয়ে যাবো।
মামনি ঃ আচ্ছা বাবা বের হ তোরা।।
আফ্রিন আর আসফিন সপিং মল এ গেলো, আফ্রিন নিজের জন্য গাঢ় হলুদ রঙের লেহেঙ্গা নিলো আর প্রয়োজনীয় সব জিনিস গুলো রামিক এনে দিলো যেমনঃ ম্যাচিং চুরি, আর ফুলের গহনা যা সচরাচর পাওয়া যায় গায়ে হলুদ এর জন্য এরপর আফ্রিন কে পার্লর এ দিয়ে চলে যায় নিজের জন্য সপিং করতে।
আসফিন আজ হলুদ পাঞ্জাবি পড়েছে সাথে সাদা জিন্স চুল গুলো স্পাইক করা চোখে সানগ্লাস অনেক সুন্দর লাগছে তাকে, সপিং মলের মেয়েরা তার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে তা তে বরং মনে হচ্ছে আসফিন এর কিচ্ছু যায় আসছেনা। সে তো সেই কবেই মরেছে তার প্রিয়তমার প্রেমে।
পার্লার থেকে বেরিয়ে দু হাত দিয়ে লেহেঙ্গা উঁচু করে তাকিয়ে আসফিন কে খুজছে,আফ্রিন চোখে বাকা করে যেই বাম দিকে তাকিয়েছে তখন আসফিন ও সে দিকে তাকায়, আসফিন তার প্রিয়তমা কে এভাবে দেখে নিজের অজান্তেই বেরিয়ে গেছে মুখ থেকে, নেশা লাগিলো রে নেশা লাগিলো রে বাকা দু নয়নে নেশা লাগিলো রে।
আফ্রিন কে দেখে আসফিন থমকে গেছে কারন আজ সত্যি ই আফ্রিন অসাধারণ লাগছে দেখতে পার্লার এর মেয়েরা নিখুঁত ভাবে সাজিয়েছে আফ্রিন কে।
মনে হচ্ছে আজ জেন আফ্রিন এর ই হলুদ। যে কেউ আজ আফ্রিন কে দেখেলে নজর সরাতে পারবে না।
(পার্লার এ কি কি দিয়ে সাজায় তার নাম গুলাই জানি না তাই বলতে পারলাম না)
আসফিন ঃ আপনি এতো আটা ময়দা মাখছেন আফ্রিন আপনাকে তো চিনা ই যাচ্ছে না. (মজা করে বললো আসফিন)
আফ্রিন ঃ কি বললেন আটা ময়দা এটা আরে ভাইয়া এটা কে আটা ময়দা না মেকাপ বলে। (রেগে বলল আফ্রিন)
আসফিন ঃ দেখেন আসছি দুপুরে আপনার চক্করে এখজ রাত ৮ টা বেজে গেছে কতোক্ষন ধরে আছি বলেন। চলেন তো লেট হয়ে যাচ্ছে।
আফ্রিন ঃ তাই তো সরি আমার জন্য আপনাকে অনেক কষ্ট করতে হলো চলেন।
ওখান থেকে বেরিয়ে আফ্রিন আর আসফিন সোজা কমিউনিটি সেন্টার এর দিকে গেলো কারণ আজ রামিম আর সিন্থিয়ার গায়ে হলুদ একসাথে হবে।শুনেছি রামিম একটা বাচ্চা মেয়ে কে বিয়ে করছে।এইটুকু মেয়ে কে না জানি কি কষ্ট দেয় আল্লাহ জানে আমার উচিত মেয়েটি কে সাবধান করে দেওয়া।
ওখান এ পৌছে আফ্রিন আর আসফিন ভিতর এ প্রবেশ করতে নিলে লেহেঙ্গা তে পা আটকিয়ে আফ্রিন পড়ে যেতে নেয় আর তখন ই আসফিজ আফ্রিন কে আগলে নেয়।আর তা দূর থেকে রামিম দেখে আর রাগে লাল হয়।আফ্রিন সামনের দিকে তাকিয়ে হাসি মুখেই এগিয়ে যায় সিন্থিয়ার দিকে তাকিয়ে ভাবে কি নিষ্পাপ একটি মেয়ে আল্লাহ জেন ওর সাথে খারাপ কিছু না হতে দেয়।
আফ্রিন ঃ আসফিন ভাইয়া আসুন আমি আর আপনি একসাথে তাদের হলুদ লাগাই। (আফ্রিন এর কথায় আসফিন অনেক অবাক হচ্ছে,)
আসফিন ঃ হ্যা চলুন!
আফ্রিন আর আসফিন একসাথে হলুদ লাগায়।রামিম তো সেই এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে আফ্রিন এর দিকে কি অপরুপ সুন্দর লাগছে আফ্রিন কে,রামিম এর নজর অনুসরণ করে আফ্রিন এর দিকে তাকায় কিশোরী আর সে হলো সিন্থিয়া, খুব খারাপ লাগে রামিক তার দিকে না তাকিয়ে অন্য কাউকে দেখছে এতো মুগ্ধ হয়ে।সে তো কম সুন্দরী নয় তাকেও আজ অনেক সুন্দর লাগছে কই তাকে তো এভাবে একবার ও দেখলো না রামিম।
অন্যদিক এ আসফিজ ভাবছে মেয়েটার কি হলো কেনো এতো স্বাভাবিক আছে আফ্রি।আসফিজ সবসময় ই আফ্রিন এর খোঁজ রাখতো আফ্রিজ এর খেয়াল রাখার জন্য সে আফ্রিন এর পিছে লোক রেখেছিলো যে আফ্রিন এর সবরকম বিপদে জেনো আফ্রিন যে বাচায় আর আফ্রিন এর খেয়াল রাখে। আর সেই মাধ্যমে এই খবর পায় আসফিন যে আফ্রিন আর রামিম রিলেশন এ জরিয়েছিলো আর অই হোটেল এর ঘটনা ও জানে সেই থেকে আসফিন মেয়েটা কে না চাইতে ঘৃনা করে ফেলে আর সেই জন্য এমন বিহেভ করে আপনি ডাকে। অইদিন কাজের লোক এর পরিচয় দেয়
আফ্রিন অনুভব করে কে যেনো তাকে টেনে কোথাও নিয়ে যাচ্ছে আর অইদিকে তাকিয়ে দেখে সে আর কেউ না রামিম তাকে এনে একটা রুম এ দার করায়।
রামিম ঃ কি ভেবেছিস তুই এভাবে সেজেগুজে আসলে আমি তোর প্রেম এ হাবুডুবু খেয়ে এই বিয়ে ভেংগে দিবো নাই আসফিন এর সাথে এমন চিপকে থাকলে আমি জলবো শোন তোকে আমার ইউজ করা হয়ে গেছে সো আর ইন্টারেস্ট নাই তোর উপর আমার (খুব রেগে কথা গুলো বললো রামিম।
আফ্রিন ঃ ছিহ তোমার চিন্তা ভাবনা এতো নিচু এতো খারাপ তুমি?
দরজার আরাল থেকে কেউ তাদের কথা শুনছে আর নিজের চোখের পানি ফেলছে।
….চলবে…..?