ভ্যাম্পায়ারের প্রেমকথন পর্ব-২৪ এবং শেষ পর্ব

0
456

#ভ্যাম্পায়ারের_প্রেমকথন
#অন্তিম_পর্ব_১
#লেখিকাঃমেহের_আফরোজ

[কঠোর থেকে কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক এবং মুক্তমনাদের জন্য।]

“নিহানের কোনো পাওয়ার এখানে কাজে লাগবেনা।”

“এহতিশামের শেষের কথাটি শুনে, নীলাদ্রি অসহায় ভঙ্গিতে এহতিশামের দিকে তাকালো।করুণ স্বরে বললো,’আপনারা সবাই অভিশপ্ত ভ্যাম্পায়ার;সবাই বহুরূপী।গতকাল থেকে আমার ওপর একটার পর একটা মেন্টালি টর্চার করা হচ্ছে।দয়া করে আমার সাথে এইরকম জোরাজুরি করবেন না।এভাবে চলতে থাকলে আমি ম**রে যাবো।দয়া করে আমাকে ছেড়ে দিন।আমি অনেক দূরে চলে যাবো।ভুলেও আর আপনাদের সামনে আসবো না।”

“নীলাদ্রির কথা শুনে এহতিশামের মুখে কু**টিল হাসি ফুটে উঠলো,মুহূর্তের মধ্যেই নীলাদ্রির হাত টান দিয়ে বিছানা থেকে নামিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো।শক্ত করে জড়িয়ে ধরে উত্তেজিত কন্ঠে বললো,’কে বলেছে তুমি ম**রে যাবে?আমি তো তোমায় ম**রতে দেবো না।নিহান তোমাকে হয়তো ২০৯বছর যাবৎ ভালোবেসেছে।কিন্তুু আমি তো তোমাকে এই জন্মে মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবেসেছি।নিহান মানুষের মনের মতো নিজের মনে ভালোবাসার অনুভূতি তৈরি হওয়ার জন্য মানুষের মস্তিষ্ক খেয়েছে;আমিও খেয়েছি।সেদিন রাতে যখন তোমরা এক হতে যাচ্ছিলে, সেদিন আমার গায়ে মনে হয় আগুন ধরে যাচ্ছিলো।তাইতো আমি বুদ্ধি করে ভ্যাম্পায়ার পাওয়ার ব্যবহার করে, নিহান কে লিওনসেলের কথা মনে করিয়ে দেই।আমি কিছুতেই তোমাদের মিলন দেখতে পারছিলাম না।”

“এহতিশামের মুখে বিশ্রী কথাগুলো শুনে নীলাদ্রির গা গুলিয়ে আসছে।এহতিশাম কে দেখলে কেউ বলবে না,যে এই সুদর্শন গম্ভীর মানুষটার আড়ালে এতো নি**কৃ*ষ্ট ব্যক্তিত্ব লুকিয়ে আছে।একদিকে নীলাদ্রি এহতিশামের নি**কৃ*ষ্ট চরিত্রের ব্যাপারে ভাবছে,আরেক দিকে এহতিশাম তার ঠান্ডা শরীর নিয়ে এতো শক্ত করে জড়িয়ে ধরাতে; নীলাদ্রির নিঃশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে।কয়েক সেকেন্ড পরপর হেঁচকি তুলে কেঁদে উঠছে নীলাদ্রি।হঠাৎ এহতিশাম নীলাদ্রিকে ছেড়ে দিয়ে ওর দুই গালে হাত দিয়ে বললো,’নিহানকে লিওনসেল সজ্ঞানে তোমাকে রাজি করিয়ে ভ্যাম্পায়ার বানাতে বললেও, আমার আর ইয়াশ কে এমন কোনো শর্ত আরোপ করে নি।যেহেতু তুমি মানবী বলে আমি তোমার সাথে মিলিত হলে তুমি ম**রে যাবে,তাই আমি এই কাজ ভুলেও করবো না।তুমি আমার রাজ্যের রানী হবে।তোমার ঘাড়ে এখন আমি বা**ইট করে সেই র**ক্ত তোমায় খাওয়াবো।তাহলেই তুমি ভ্যাম্পায়ার হয়ে যাবে।হাহাহাহাহা তারপর তুমি চিরদিনের জন্য আমার হয়ে যাবে।তবে তোমাকে বিয়ে করার পর, লিওনসেলের শর্ত অনুযায়ী আমি আর ভ্যাম্পায়ার রাজ্যে যেতে পারবো না।তবে আমার কাছে লিওনসেল কে জব্দ করার জন্য একটা প্ল্যান আছে।যদি সেটাতে সফল না হই,তাহলে আমরা পৃথিবীতেই বসবাস করবো।আমি এখন মানবজাতির সাথে মিশতে মিশতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।আর আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া তো তুমি।তোমাকে ভ্যাম্পায়ার বানিয়ে বিয়ে করার পর, তোমার আর আমার চির সুখের মিলন হবে।সার্থক হবে আমার এতোদিনের কঠোর পরিশ্রম। তুমি আর আমি পুরো শহরে ঘুরে ঘুরে মানুষ এবং পশু-পাখির র**ক্ত পান করবো।আমরা সারাজীবন বেঁচে থাকবো।”

“জানোতো,যেদিন ইয়াশ এবং ইরা ঝগড়া করছিলো,আর তুমি ওদের সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলে।সেদিন নীল শাড়িতে তোমায় অনেক বেশি সুন্দর লাগছিলো।আমি মোহে পড়ে যাচ্ছিলাম।তাই মোহ টা কা**টানোর জন্য ওদের কে শাসন করার নাম করে, সেখানে গিয়ে তোমাকে দেখছিলাম।তুমি যাতে কোনোভাবে আমার অনুভূতি বুঝতে না পারো,তাই একটু অভিনয় করে তোমাকে নিহানের কাছে গিয়ে ওকে সময় দিতে বলেছি।উফফ.. জানো সুইটহার্ট ওই মোমেন্ট টা আমার জন্য অনেক কষ্টকর ছিলো।কিন্তুু আমার শক্ত ব্যক্তিত্ব কে টিকিয়ে রাখার জন্য আমি অভিনয় টা করতে বাধ্য হয়েছি।বাই দ্য ওয়ে তুমি কিন্তুু সত্যি অনেক হ**ট।দারুণ রোমান্স করতে পারো তুমি।’ঠোঁট বাঁকিয়ে কথাটি বলে ডেভিল হাসলো এহতিশাম।”

“নীলাদ্রি এহতিশামের নোং**রা চাহনি এবং বিশ্রী হাসি দেখে, নিজের রাগ কে আর কন্ট্রোল করতে পারলো না।নিজের সর্বশক্তি দিয়ে এহতিশাম কে কষিয়ে একটা থা**প্পড় দিলো।এহতিশাম নিজের গালে হাত দিয়ে;নীলাদ্রির দিকে কয়েক সেকেন্ড র**ক্তিম দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বি**দ*ঘুটে হাসি দিয়ে বললো,’তোমার নরম হাতের ছোঁয়ায় আমার শরীরে কারেন্ট ধরে গেলো সুইটহার্ট।তুমি হয়তো ভুলে গেছো যে,ভ্যাম্পায়ার রা মানুষের আ**ঘা*তে ব্যথা পায় না।এনিওয়ে আমি চাইলেই তোমাকে হিপনোটাইজ করে তোমার ঘাড়ে বা**ইট করতে পারবো।কিন্তু তাতে আমি বেশি মজা পাবো না।তোমার ওই ভ**য়ার্ত মিষ্টি মুখ টা দেখতে আমার দারুণ লাগছে।এখন আর সময় নষ্ট করে লাভ নেই,শুভ কাজে দেরি করতে নেই।’
বলেই বাঁকা হেসে নীলাদ্রির দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে লাগলো এহতিশাম।”

“নীলাদ্রি পেছনে যেতে যেতে বিছানায় বসে পড়লো।এহতিশাম হা করে তার চোয়ালের ওপর দুই পাশের ক্যানাইন দাঁত জোড়া বের করলো,এহতিশামের চোখজোড়া লাল টকটকে হয়ে গেলো।নিহান এবং এহতিশামের চেহারা যেহেতু প্রায় একই রকম।তাই নীলাদ্রির সেদিন রাতে নিহানের সেই ভ**য়ং**কর রূপে কবুতরের র**ক্ত খাওয়ার দৃশ্য মনে পড়ে গেলো।নীলাদ্রির মস্তিষ্কের প্যাঁচানো নিউরনগুলো ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে গেলো।নীলাদ্রির দাঁতে দাঁত লেগে আসলো।তৎক্ষণাৎ এহতিশাম নীলাদ্রির হাত ধরে ওর ঘাড়ে বা**ইট করতে নিলে, হঠাৎ করে ঘাড়ে শক্ত একজোড়া হাতের আ**ঘা*ত লাগতেই গগন বিদরী চি**ৎ*কার দিয়ে ওঠে এহতিশাম।এহতিশাম নীলাদ্রির হাত ছেড়ে ফ্লোরে বসে পড়ে।ফলে নীলাদ্রিও বিছানায় পড়ে যায়।”

“নিহান নীলাদ্রির কাছে এসে ওকে ধরে কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললো,’তোমার মনে আছে নীলাঞ্জনা।এক রাতে তোমাদের বাসায় তোমার রুমের বেলকনি থেকে একটা কালো ছায়া প্রবেশ করেছিলো?সেটা আমি ছিলাম।’তোমায় বলেছিলাম, ‘তোমাকে আমি আমার রানী করে নিয়ে যাবো নীলাঞ্জনা।তুমি আমার ছাড়া আর কারো হতে পারবে না।আজ সে কথাটাই রাখবো।’বলেই রহস্যময় হাসি দিলো নিহান।”

“নীলাদ্রি গলা কা**টা মুরগির মতো ছটফট করছে।নিহান দেখলো, নীলাদ্রির শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।নিহান তৎক্ষণাৎ ওর ঠোঁট জোড়ায় নিজের ঠোঁট জোড়া মিলিয়ে দিয়ে, নীলাদ্রিকে ভালোভাবে শ্বাস নিতে সাহায্য করে।একটি শ্বাসযন্ত্র বা শ্বাস-প্রশ্বাসের সেট হলো এমন সরঞ্জাম; যা একজন ব্যক্তিকে একটি প্রতিকূল পরিবেশে শ্বাস নিতে দেয়। যেখানে শ্বাস নেওয়া অন্যথায় অসম্ভব, কঠিন, ক্ষতিকারক বা বিপজ্জনক হতে পারে বা একজন ব্যক্তিকে শ্বাস নিতে সহায়তা করে।”

“নীলাদ্রির মস্তিষ্ক পুরোপুরি সক্রিয় না থাকায়, নিহানের উপস্থিতি ও বুঝতে পারেনি।কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে নীলাদ্রির চোখজোড়া বন্ধ হয়ে গেলো।নিহান ওকে পরম যত্নে বিছানায় শুইয়ে দিলো।”

“এদিকে নিহান তার শক্তিশালী হাত জোড়া দিয়ে এহতিশামের ঘাড়ে এতো জোরে আ**ঘা*ত করেছে, যে এহতিশাম ফ্লোরে বসে চোখজোড়া বন্ধ করে চোখ-মুখ কুঁচকে বারবার ‘উহহ’ শব্দ করছে।নিহান সেটা দেখে তৃপ্তির হাসি দিয়ে এহতিশামের দিকে এগিয়ে গিয়ে বললো,’কি ভেবেছিলি?তুই তোর পাওয়ার ব্যবহার করে নীলাঞ্জনা কে আটকে রাখবি?আর তোর পাওয়ারের কারণে আমি কিছুই জানতে পারবো না?উপসস..তুই মনে হয় ভুলে গিয়েছিস, যে ভ্যাম্পায়ার কিং লিওনসেল আমাকে তোদের সবার থেকে বেশি পাওয়ার দিয়েছে।প্রথমে আমার সিম্পল পাওয়ার টা সত্যি কাজে লাগেনি। নীলাঞ্জনা কে যেখানে আমি দেখেছিলাম,সেখানে গিয়ে পাইনি।তখন আমি আবারও পাওয়ার ব্যবহার করি, কিন্তুু কোথাও নীলাঞ্জনা কে দেখতে না পেয়ে আমি খুব অস্থির হয়ে যাচ্ছিলাম।তখনই আমার মনে পড়লো ভ্যাম্পায়ার কিং আমাকে স্পেশাল পাওয়ার দিয়েছিলো।ব্যাস এই ঘোর বিপদে এই প্রথম সেই বিশেষ পাওয়ার টিকে কাজে লাগাই।আর যখন দেখলাম, আমার নীলাঞ্জনা তোর কাছে আছে।তখন নিজের চোখজোড়া কে বিশ্বাস করতে খুব কষ্ট হচ্ছিলো।আরে তোর অস্তিত্বে হয়তো বা ভ্যাম্পায়ার সত্তা ওতপ্রোতভাবে জড়িত।কিন্তুু তোকে তো আমি আর ইয়াশ খুব ভালোবেসেছিলাম।নিজের আপন ভাইয়ের থেকে কোনো অংশে কম দেখিনি।জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন এবং কঠিনমুহূর্ত গুলোতে তোর ওপর ভরসা করে তোকে পাশে রেখেছি।আর তুই কিনা এতোটা নি**কৃ*ষ্ট ভাবে আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলি?আরে তুই্ তো ঘরের শত্রু বিভীষণ।যাইহোক,শত্রুকে বাঁচিয়ে রাখতে আমি কস্মিনকালেও পছন্দ করিনা।তাই আজ তোর ভ্যাম্পায়ার জীবনের এখানেই সমাপ্তি হবে।”

“নিহানের কথাগুলো শুনে এহতিশামের মুখে কু*টিল হাসি ফুটে উঠলো।ন্যানো সেকেন্ডের মধ্যে এহতিশাম তার পাওয়ার ব্যবহার করে, ব্যথা কমানোর জন্য ভ্যাম্পায়ারদের স্পেশাল ওষুধ খেয়ে ফেললো।”

“সেটা দেখে,নিহান তার চোয়ালের ওপরের দুই পাশের ক্যানাইন দাঁত জোড়া বের করলো।তার চোখজোড়া টকটকে লাল হয়ে আছে।মনে হয় এখুনি র**ক্ত গড়িয়ে পড়বে।পানির মধ্যে মানুষের মুখ ডুবিয়ে রাখলে যেমন আওয়াজ হয়।নিহান ঠিক তেমনই গড়গড় করে ভ**য়ং**কর ভাবে গ*র্জন করছে।
সেটা দেখে এহতিশাম শ**য়**তানি হাসি দিয়ে নিজেও একই রূপ ধারণ করলো।একজন সাধারণ মানবী কে নিয়ে দুই মেরুর দুই ভ্যাম্পায়ারের ভ**য়ং**কর যুদ্ধের গ**র্জন এইমুহূর্তে নীলাদ্রি যদি সজ্ঞানে শুনতে পেতো ,আর দুই ভাইয়ের এমন ভ**য়ং**কর রূপ একসাথে দেখতো,তাহলে হয়তো এখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতো।”

“নিহান এহতিশামের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো।এহতিশামও কম না।সে তার সর্বশক্তি দিয়ে নিহানের সাথে লড়াই করতে থাকলো।নিহান এহতিশামের শরীরে ধারালো নখ দিয়ে একের পর এক আ**চড় দিয়ে ক্ষ**ত-বি**ক্ষ**ত করতে থাকলো।নিহান এহতিশাম কে বারবার বা**ইট করার চেষ্টা করলো।একই ভাবে এহতিশাম ও নিহান কে বা**ইট করার চেষ্টা করলো।কিন্তুু তারা কেউ কারো থেকে কম নয়।একজন মানুষরূপী ভ্যাম্পায়ার হয়েও তার মধ্যে আছে স্পেশাল পাওয়ার।আরেকজনের অস্তিত্বে মিশে আছে ভ্যাম্পায়ার সত্তা।এরা যেনো একে অপরের সমান প্রতিদ্বন্দ্বী।নিহান এহতিশামের মেইন পয়েন্টে লা**থি দিয়ে ফ্লোরে ফেলে দিলো।ব্যথায় এহতিশাম আ**র্তনাদ করে উঠলো।ন্যানো সেকেন্ডের মধ্যে আবার স্পেশাল পাওয়ার ব্যবহার করে সুস্থ হয়ে গেলো।এহতিশাম এইবার আসল ভ্যাম্পায়ারের রূপ ধারণ করে ভ**য়ং**কর ভাবে গ**র্জন করে নিহানের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো।নিহানও একই রূপ ধারণ করলো।দুইজন দু’জনের শরীরে বা**ইট করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।অথচ দু’জনেই অপারগ।অবশেষে এহতিশাম নিহানের এক হাত পেছনে নিয়ে মুচড়ে দিলো।এতে নিহান কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়লো।বসে পড়লো ফ্লোরে।এহতিশাম এবং নিহান আবারও মানুষ রূপে ফিরে এলো।নিহান সুস্থ হওয়ার জন্য যখনই তার স্পেশাল পাওয়ার ব্যবহার করতে যাবে;তখনই এহতিশাম পৈ**শা**চিক হাসি দিয়ে চোখ জোড়া বন্ধ করে বললো,’তোরা কোথায় আছিস?আমার সবচেয়ে বড় শত্রু এসে গেছে।ওকে বিনাশ করার সময় এসেছে।’বলতেই সেখানে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে একদল শক্তিশালী ভ্যাম্পায়ার হাজির হলো।”

“নিহান ভ্যাম্পায়ারগুলোর দিকে বিস্ময়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,’তোমরা তো ভ্যাম্পায়ার রাজ্যে ভ্যাম্পায়ার কিং লিওনসেলের সাথে থাকতে,এখানে কি করছো?”

“হাহাহাহা..’বি**দ**ঘুটে হাসি দিলো এহতিশাম।ঠোঁটের কোণে রহস্যময় হাসি দিয়ে বললো,’ওরা তো এখন আমারই দাস।ওদের কে বলেছি,’ আমরা সবাই সম্মিলিত হয়ে ওই কাঠখোট্টা,বদমেজাজি ধুরন্ধর ভ্যাম্পায়ার কিং লিওনসেল কে মে**রে ফেলবো।তবে তার আগে তোকে আর ইয়াশ কে মে**রে ফেলবো।আমার পথের মধ্যে আমি কোনো বিষাক্ত কাঁ**টা রাখতে পছন্দ করি না।আর তোরা আমার ভাই ও না।তোদের বাঁচিয়ে রেখে আমার কোনোই লাভ হবে না।আর তোর নীলাঞ্জনা?হাহাহোহো ওর আশা ছেড়ে দে।তোকে নৃ**শং**স ভাবে মা**রার পর, আমি ওকে ভ্যাম্পায়ার বানিয়ে ফেলবো।তারপর ওর সাথে মন ভরে রোমান্স করবো।জানিস তোর জন্য না আমার খুব কষ্ট হয়।তোর অর্ধাঙ্গিনী কে তুই গতজন্মেও পেলি না,আর এই জন্মেও না চু চু চু।আচ্ছা বাদ দে তোর চার আঙুলের কপালে হয়তো এটাই লেখা ছিলো।’বলেই এহতিশাম ভ্যাম্পায়ারগুলোর দিকে তাকিয়ে ইশারা করতেই, ওরা নিহানের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো।”

“নিহান কে ওরা ক্ষ**ত-বি**ক্ষ**ত করে ফেললো।বেচারা নিহান যখন মৃত্যু পথযাত্রী, ঠিক সেই সময় সেখানে অকল্পনীয় ভাবে হাজির হলো ভ্যাম্পায়ার কিং লিওনসেল।আর তার সাথে হাজির হলো ইমতিয়াজ আহমেদ, শায়লা বেগম এবং ইয়াশ।লিওনসেল তার শক্তিশালী পাওয়ার ব্যবহার করে ভ্যাম্পায়ারগুলোর ওপর বিষাক্ত তীর ছুঁড়লো।বিষাক্ত তীরের আ**ঘা*তে মুহূর্তের মধ্যেই ভ্যাম্পায়ারগুলো কাতরাতে কাতরাতে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লো।নিহান অর্ধমৃত অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে রইলো।লিওনসেল এহতিশামের দিকে র**ক্ত*চক্ষু নিক্ষেপ করে বললেন,’বিশ্বাসঘাতক অভিশপ্ত ভ্যাম্পায়ার তুই।তোকে তো জন্ম হওয়ার সাথে সাথেই মে**রে ফেলা উচিত ছিলো।”

“এদিকে ইয়াশ তো নিজের চোখ জোড়া কেই বিশ্বাস করতে পারছে না।ওর মুখের ভাষাগুলো মনে হয় কেউ আটকে রেখেছে।”

“লিওনসেল আবারও বলে উঠলেন,’তোদের পৃথিবীতে মানবজাতির সাথে বসবাস করতে পাঠানোর আগে আমি বলেছিলাম,ভ্যাম্পায়ার রাজ্য থেকে আমি সবসময় তোদের কার্যাবলির দিকে নজর রাখবো।কিন্তুু তুই হয়তো সেটা কালের পরিক্রমায় ভুলে গিয়েছিস।তোকে কিছু এক্সট্রা পাওয়ার দিয়েছিলাম, আর তুই সেটার অপব্যবহার করেছিস।শুধু তুই না..তোর সাথে সাথে ওই ভ্যাম্পায়ারগুলোও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।আজ এখানেই তোর মতো অভিশপ্ত,বিশ্বাসঘাতক দাম্ভিক ভ্যাম্পায়ারের ভ**য়ং**কর মৃ**ত্যু হবে।”

“লিওনসেলের কথা শুনে ইমতিয়াজ আহমেদ এবং শায়লা বেগম কেঁদে দিলেন।যতোই হোক এহতিশাম তো তাদেরই সন্তান।ইমতিয়াজ আহমেদ এহতিশাম কে বললেন,’তুমি এতোটা জ**ঘন্য কাজ করবে, সেটা কখনো ভাবতে পারিনি।আজ তোমার ভুলের মাশুল আমাদের সবাইকে দিতে হবে।’শায়লা বেগম এহতিশাম কে বললেন,’তোর এই নি**কৃ**ষ্ট রূপের কথা আগে জানলে; হয়তো আগেই তোকে মে**রে ফেলতাম।”

“এহতিশামের দাম্ভিক বি**ভৎস চেহারাটি মুহূর্তের মধ্যেই বাচ্চাদের মতো হয়ে গেলো।এহতিশাম অসহায় মুখ করে নিচু স্বরে বললো,’বাবা-মা আমায় ক্ষমা করে দাও।আমি ভ্যাম্পায়ার কিং এর রাজত্ব এবং নীলাদ্রির মোহে পড়ে অনেক বড় অপরাধ করে ফেলেছি।বিশ্বাস করো আমি নিজেকে শুধরে নেবো।আমার দ্বারা এই ভুল আর কখনো হবে না।”

“এহতিশাম বলতে বলতে লিওনসেল ওকে ধ্বংস করার জন্য বিড়বিড় করে কিছু পড়তে থাকলেন।ঠিক তখনই এহতিশাম ওর পাওয়ার ব্যবহার করে লিওনসেল কে বিষাক্ত তীর দিয়ে আ**ঘা*ত করতে নিলে, পেছন থেকে নিহান ওর পিঠে বিষাক্ত তীর দিয়ে আ**ঘা*ত করে।মুহূর্তের মধ্যেই এহতিশাম ফ্লোরে লুটিয়ে পড়ে কাতরাতে কাতরাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো।”

“লিওনসেল সেটা দেখে নিজের সেই শক্তিশালী বিষাক্ত তীরটি নিজের পেটেই ঢু**কিয়ে দেয়।আকস্মিক ঘটনায় সেখানে থাকা সবাই লিওনসেলের দিকে অবিশ্বাস্য চাহনিতে তাকিয়ে থাকে।লিওনসেল ফ্লোরে লুটিয়ে পড়ে।ইমতিয়াজ আহমেদ, শায়লা বেগম,ইয়াশ এবং নিহান লিওনসেলের কাছে আসতেই, লিওনসেল চোখজোড়া বন্ধ করে কিছু একটা পড়ে তার হাতে একটি ছোট বোতল আবিষ্কার করলেন।তারপর সেটা নিহানের হাতে দিয়ে বললেন,’এতে আছে বিশেষ পানীয়;যেটা খেলে তুমি আর ইয়াশ আগের মতো স্বাভাবিক মানুষ রূপ ধারণ করবে।আমি মানবজাতিকে দেখতে পারতাম না। কারণ আমিও জঙ্গলে একবার পশু শিকার করতে গিয়ে, এক মানবীর প্রেমে পড়েছিলাম।তাকে ভ্যাম্পায়ার বানিয়ে আমার রাজ্যের রানী বানিয়েছিলাম। কিন্তুু সে আমার আরেক ভ্যাম্পায়ার বন্ধুর সাথে প্রেম করে, আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে।তারপর তাকে আমি এই বিশেষ পানীয় পান করিয়ে আবার মানবী বানিয়ে, মানবজগতে পাঠিয়ে দেই এবং কিছুদিন পর সে স্বাভাবিক ভাবে মৃ**ত্যুবরণ করে। তখন থেকে আমি মানবজাতিকে ঘৃণা করি।তারা বড়ই বিশ্বাসঘাতক এবং ছলনাময়ী।তাই তোমাকে এতোগুলো বছর কঠোর বিধি-নিষেধের মধ্যে আবদ্ধ করে কঠিন শাস্তি দিয়েছি।আজ থেকে তোমরা দুই ভাই এই অভিশপ্ত ভ্যাম্পায়ারদের দুনিয়া থেকে মুক্ত।আর সেই সাথে সারাজীবনের জন্য মুক্ত হবে আমার এবং আমার ভ্যাম্পায়ার রাজ্য।আমি সবচেয়ে শক্তিশালী বিষাক্ত তীর দিয়ে নিজেকে আ**ঘা*ত করেছি, যাতে আমার সাথে বাকি সব ভ্যাম্পায়ারগুলোও বিনাশ হয়ে যায়।আজ নিজের জীবন উৎসর্গ করে, পুরো পৃথিবীকে ভ্যাম্পায়ার নামক অভিশপ্ত জিনিস থেকে মুক্ত করে গেলাম।’বলতে বলতে ভ্যাম্পায়ার কিং লিওনসেলের চোখ জোড়া বন্ধ হয়ে গেলো। নিঃশ্বেষ হয়ে গেলো ভ্যাম্পায়ার কিং; সেই সাথে বিনাশ হয়ে গেলো পুরো ভ্যাম্পায়ার রাজ্য।ভ্যাম্পয়ার কিং লিওনসেল,ইমতিয়াজ আহমেদ(কোর্টন),শায়লা বেগম(জেসিকা),এহতিশাম(ফ্রেডো) সহ সকল ভ্যাম্পায়ার মুহূর্তের মধ্যেই অদৃশ্য হয়ে গেলো।সেখানে শুধু পড়ে রইলো নিহান,নীলাদ্রি এবং ইয়াশ।”

———–
“সময় ও স্রোত কারো জন্য থেমে থাকে না।কে**টে গেলো ১মাস।সময়ের সাথে সাথে নিহান,নীলাদ্রি,ইয়াশ এবং ইরার জীবন টাও বদলে গেছে।”

“নিহান এবং ইয়াশ সেদিন ভ্যাম্পায়ার কিং লিওনসেলের দেওয়া পানি পান করেছিলো।তারপর তারা সেখানেই জ্ঞান হারায়।প্রায় এক ঘন্টা পর যখন জ্ঞান ফিরলো।তখন তারা দেখলো তাদের মাথা খুব ব্যথা করছে।নিহান এবং ইয়াশ তাদের পাওয়ার ব্যবহার করে মাথা ব্যথা কমানোর চেষ্টা করলো।কিন্তুু অদ্ভুত ভাবে তাদের পাওয়ার কোনো কাজে লাগছে না।কয়েক সেকেন্ড ভাবার পর নিহান এবং ইয়াশ দুজনেই বুঝে গেলো,যে তারা এখন আর ভ্যাম্পায়ার নেই।তারা এখন স্বাভাবিক মানুষ।তারা দু’জনেই দু’জনের দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো।নিহান ইয়াশ কে প্রায় ২ঘন্টা সময় নিয়ে অতীতের সব ইতিহাস বললো।ইয়াশ তো সবকিছু শুনে মনে হয় ১২০ভোল্টেজের শকড খেলো।তারপর নিহান ঘুমন্ত নীলাদ্রি কে নিয়ে বাসায় চলে গেলো।”

“ওই ঘটনার পর নীলাদ্রি টানা ৪দিন নিহানের সাথে খুব প্রয়োজন ছাড়া কোনো কথা বলেনি।তবে নিহান কে খুব সেবা-যত্ন করেছে।কারণ, ভ্যাম্পায়ার দল নিহানের শরীরের অনেক জায়গায় গুরুতর আ**ঘাত করেছে।নিহান এবং ইয়াশ নীলাদ্রি এবং ইরা কে সবকিছু বুঝিয়ে বলে।ইরা ৭দিন ঘরের দরজা বন্ধ করেছিলো।শুধু নীলাদ্রি ব্যতীত কারো সাথে কথা বলতো না।ইরা এই পুরো পরিবার সম্পর্কে ভ্যাম্পয়ারের কথা শুনে একরকম ট্রমায় চলে গিয়েছিলো।প্রথমে নীলাদ্রি ওদের কথা বিশ্বাস করেনি।কিন্তুু পরবর্তীতে নিহান এবং ইয়াশের চালচলন,গতিবিধি সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পর্যবেক্ষণ করে বিশ্বাস করেছে।কারণ,নিহান এবং ইয়াশ দুজনেই শাক-সবজি,ডিম,দুধ,রসুন থেকে শুরু করে মশলা জাতীয় খাবার মোটামুটি সবকিছুই খায়।তারা দিনের বেলা সূর্যের আলোতে প্রখর রোদে ছাতা ছাড়াই বের হয়।বাসায় প্রতিটি রুমে আয়না লাগানো হয়েছে।নিহান এবং ইয়াশ দুজনেই আয়নাতে নিজেদের কে দেখতে পায়।নিহানের শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক মানুষের মতোই।আর নিহান স্বাভাবিক মানুষের মতোই রাতে ঘুমায়।এগুলো সবকিছুই নীলাদ্রি লক্ষ্য করেছে।তারপর ইরা কে বলেছে।”

“ইরার খুব মন খারাপ ছিলো।তখন নীলাদ্রি ইরার কাছে গিয়ে বললো,’সরি দোস্ত সেদিন তোকে রেখেই আমি পালিয়ে গিয়েছিলাম।আসোলে তখন আমি নিজের মধ্যে ছিলাম না।নিহান আমার সাথে যেই কাহিনী করেছে।তাতে আমি এক প্রকার ট্রমায় চলে গিয়েছিলাম।আমি ইয়াশ কে তোর সাথে এমন ভ**য়ং**কর আচরণ করতে দেখিনি।আর তখন আমার ধ্যান-জ্ঞান ছিলো কিভাবে নিহানের কাছ থেকে পালাবো।যখন পালিয়েছি তখন রাস্তায় বসে তোর কথা মনে পড়েছে।আমার স্বার্থপরের মতো তোকে এভাবে রেখে আসা উচিত হয়নি।”

“ইরা মিষ্টি করে হেসে বললো,’ডোন্ট ওয়ারি দোস্ত।আমি কিছু মনে করিনি।তোর জায়গায় থাকলে আমিও এইরকম কিছুই করতাম।কারণ, তুই নিহানের আচরণে প্রথম থেকেই শারীরিক এবং মানসিক ভাবে বিদ্ধস্ত ছিলি।আর ইয়াশ আমার সাথে কখনোই খারাপ আচরণ করে নি।আসোলে আমরা সবাই পরিস্থিতির স্বীকার ছিলাম।এখন এইসব বাদ দিয়ে আমার মন ভালো করার জন্য কিছু একটা বল।ইয়াশ বেচারা সবসময় আমার আশেপাশে ঘুরতে থাকে।কিন্তুু ওর সাথে আমার কথা বলতে ইচ্ছে করলেও বলতে পারিনা।”

” নীলাদ্রি মুচকি হেসে বললো,’তোকে একটা মজার ঘটনা বলি,’২দিন আগে আমি ডাইনিং টেবিলে খাবার পরিবেশন করছিলাম।ওই সময় ইয়াশ কে দেখি হাঁপাতে হাঁপাতে বাসায় ঢুকেছে।আমি কৌতূহল নিয়ে ওর হাঁপানোর কারণ জিজ্ঞেস করতেই,ও ভ**য়ার্ত মুখ করে বললো,’রাস্তায় নাকি কয়েকটা পা**গলা কুকুর কে একসাথে দেখেছিলো।ওরা ইয়াশের দিকে তেড়ে আসতেই বেচারা ইয়াশ টানা ১৫মিনিট দৌড়ে বাসায় এসেছে।বিশ্বাস কর ওর এই অবস্থা দেখে দুঃখের মধ্যেও আমার হাসি পাচ্ছিলো।’বলেই নীলাদ্রি হেসে দিলো।আর ইরা তো হাসতে হাসতে বিছানায় গড়াগড়ি খাচ্ছে।”

“তখনই ইয়াশ দরজার সামনে এসে গলা খাঁকারি দিয়ে বললো,’এহেম এহেম..আমি কি ভেতরে আসতে পারি?মহারানীর হাসির শব্দ কতদিন পর শুনতে পেলাম।”

“ইরা ইয়াশ কে দেখে, বিছানা থেকে উঠে স্বাভাবিক ভাবে বসলো।নীলাদ্রি ইয়াশ কে দেখে ইরার দিকে তাকিয়ে নিচু স্বরে বললো,’এইবার বেচারা কে একটু পাত্তা দে ইয়ার।ছেলে টা মনে হয় খুব তৃষ্ণার্ত হিহিহি।’বলেই নীলাদ্রি সেখান থেকে চলে গেলো।”

“ইয়াশ ইরার কাছে এসে ওর থেকে কিছুটা দূরত্বে বসে বললো,’ঘন্টু পাখি এখনও কি আমাকে দূরে সরিয়ে রাখবে?”

” ইরা কটমটিয়ে বললো,’ঘন্টু পাখি কি?”

“ঘন্টু পাখি মানে ঘুঘু পাখি।ওটা নিক নেইম দিয়েছি।”

“ওহহ আচ্ছা ওইসব নামে আমাকে ডাকবেন না।আমাকে সোনাপাখি নামে ডাকবেন।আপনার মুখে এই নাম টা শুনতেই আমার বেশি ভালো লাগে।”

“ইয়াশ ভাবলো,’এই তো সুযোগ পেয়েছি।ইরাবতীর মনটা মনে হয় ফুরফুরে। সময় কে কাজে লাগানোর এটাই মোক্ষম সুযোগ।’ভেবে ইয়াশ ইরার একেবারে কাছে ঘেঁষে বসলো।ইরা নড়লো না।ওর কাছে ভালোই লাগছে।ইরা মিটমিটিয়ে হাসছে।সেটা দেখে ইয়াশ বললো,’একটা কবিতা শুনবে সোনাপাখি?”

“কি? আবার কবিতা?না না না আপনার ওই জগাখিচুড়ি মার্কা কবিতা আমি শুনবো না।তাহলে আমি আবার অজ্ঞান হয়ে যাবো।”

“না না বিশ্বাস করো এইবারের কবিতা টা একদম তোমার মনের মতো হবে।আমি নিজে সারারাত জেগে তোমার জন্য এই স্পেশাল কবিতাটা বানিয়েছি।”

“ওকে শুরু করুন আপনার স্পেশাল কবিতা।”

“ইয়াশ ইরার ডান হাত ধরে ওর মুঠোয় নিয়ে শুরু করলো,

“আমার প্রাণের ইরাবতী
তোমায় আমি ভালোবাসি,
তাইতো আমি বারেবারে
তোমার কাছে ছুটে আসি।

আমার জন্য মজার রান্না
করবে তুমি রোজ,
মজা করে চেটেপুটে
করবো আমি ভোজ।”

“ইরা শেষের লাইনগুলো শুনে কটমটিয়ে বললো,

“ভালোবাসতে নেইতো মানা
করো না কভু টাল-বাহানা,
ডায়েট চার্ট দেখে আমি
রান্না করবো রোজ,
আমার কথা না শুনলে
নেবো না তোমার খোঁজ।”

“ইয়াশ এইবার ইনোসেন্ট মুখ করে বললো,

“ওগো আমার প্রিয়তমা
আমায় তুমি একলা করে
যেওনা কভু দূরে,
শুনবো আমি তোমার কথা
থাকবো চুপটি করে।

তোমার প্রেমে পাগল হয়ে
যাবো তেপান্তর,
প্রেম যমুনায় ভাসবো মোরা
হবো দেশান্তর।”

“ইরা এইবার ইয়াশের বুকে মাথা রেখে মিষ্টি করে হেসে বললো,

“ওগো আমার প্রিয়তম
আমায় তুমি ভালোবাসো
সবই আমি জানি,
তাইতো আমি তোমার বুকে
থাকবো চিরদিনি।”

~মেহের আফরোজ~

“ইরা বলেই ইয়াশের দিকে তাকিয়ে বললো,’কেমন হলো আমার কবিতা?”

“ইয়াশ বড় বড় চোখ করে বললো,’তুমি এতো সুন্দর করে কবিতা বলতে পারো ওয়াও।”

“হুমম আমি আরও কিছু পারি করবো?”

‘কি পারো?’

“ইরা ইয়াশের ঠোঁট জোড়ায় আকস্মিক ভাবেই ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।প্রায় ৩মিনিট পর ইরা ইয়াশকে ছেড়ে বললো,’কেমন লাগলো?”

“ইয়াশ হা করে কয়েক সেকেন্ড ইরার দিকে অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বললো,’তুমি কি চিনি খেয়েছো?এতো মিষ্টি লাগলো কেনো?”

“ইরার মনে পড়লো,ও কিছুক্ষণ আগে ফ্রিজ থেকে মিষ্টি বের করে খেয়েছে।
মুচকি হেসে বললো,’হুমম মিষ্টি খেয়েছি।”

“ইয়াশ বললো,’ কতো কষ্ট করে ডায়েট করে ৭কেজি ওজন কমিয়েছি।এখন আবার এতো মিষ্টি খেলে তো আবার মোটা হয়ে যাবো।তখন তুমি আবার আমায় মটু বলে ডাকবে।”

“ইরা কটমটিয়ে বললো,’দেখুন আমি এখন ঝগড়া করার মুডে নেই;রোমান্টিক মুডে আছি।এটাই কিন্তুু সীমিত সময়ের জন্য সুযোগ।এই সুযোগ মিস করলে কিন্তুু আর পাবেন না।”

“ইরার কথা শুনে ইয়াশ কে আর কে পায়।সে তো এই সুবর্ণ সুযোগের অপেক্ষায় এতোদিন প্রহর গুণছিলো।চোখজোড়া বন্ধ করে ক্ষুদ্র নিঃশ্বাস ছেড়ে, ইয়াশ ইরার ঠোঁট জোড়া আকড়ে ধরলো।ইয়াশ ইরার পুরো মুখে অসংখ্য চুমুতে ভরিয়ে দিয়েছে।তখনই ইরা বললো,’এই আপনি চুমু দেওয়ার সময় এতো শব্দ হয় কেনো?”

‘মানে?’

“মানে আমার মতো সাইলেন্ট কিস দিবেন।এভাবে চুমুতে শব্দ হলে পরবর্তীতে বাচ্চা হলে, বাচ্চা ঘুমালে আপনার চুমুর শব্দে জেগে যাবে।”

“ইয়াশ গোলগোল চোখ করে বললো,”সাইলেন্ট কিস মানে?এইরকম শব্দ এই প্রথম শুনলাম।”

” উফফ… সাইলেন্ট কিস মানে হলো নীরব চুমু।”

“আসুন দেখিয়ে দেই।’বলেই ইরা নিঃশব্দে ইয়াশের ঠোঁটে চুমু দিলো এবং পুরো মুখে চুমুতে ভরিয়ে দিলো।ইয়াশ মিষ্টি করে হসে বললো,’এইবার বুঝেছি।’বলেই ইরার সাথে তাল মেলাতে লাগলো।ইরাও তাল মেলাতে থাকলো।একে-অপরের সর্বাঙ্গে দু’জনের স্পর্শ গভীর থেকে গভীর হতে থাকলো।ধীরে ধীরে দুই নর-নারী ভেসে যেতে থাকলো অগভীর প্রেম সায়রে।”

———–
“এদিকে পড়ন্ত বিকেলে নিহান কালো রঙের ডায়েরির পাতায় মনযোগ দিয়ে কিছু একটা লিখছে।নীলাদ্রি রুমে এসে এক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ নিহানের দিকে তাকিয়ে থেকে বললো,’কি লিখছেন?”

“নিহান মুচকি হেসে বললো,’আমার মনের সব অনুভূতি মিশিয়ে তোমার জন্য একটা কবিতা লিখছি।”

“নীলাদ্রি এতোদিনের সকল মান-অভিমান এক পাশে রেখে, নিহানের পাশে এসে বসলো।কৌতূহল নিয়ে বললো,’আমার জন্য কি কবিতা লিখছিলেন?প্লিজ এখুনি আবৃত্তি করে শোনান।”

“আরে এখনও তো লেখা শেষ করিনি।আমাকে ৫মিনিট সময় দাও।পুরোটা লিখে তারপর শোনাই।”

“নীলাদ্রি মেকি সুরে বললো,’উহুমম আমি এখনই শুনবো।যতটুকু লিখেছেন ততটুকুই শুনবো।শুরু করুন।”

“কতোদিন পর নীলাদ্রি নিহানের এতোটা কাছে এসে বসেছে। নিহানের খুব ভালো লাগছে।সেদিনের পর থেকে নিহান আর নীলাদ্রি কে জোর করেনি।একদম নীরব হয়ে গেছে।হয়তো তার মনের মধ্যে অন্য কিছু চলছে।নিহান মুচকি হেসে নীলাদ্রির ডান হাত ধরে তার বুকের বাম পাশে রেখে, নীলাদ্রির দিকে গভীর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললো,

“২০৯বছর সাধনার পরে
ফিরে পেয়েছি তোমায়,
এই বুকের বা পাশে
হাত রেখে কথা দাও
কখনো ছেড়ে যাবে না আমায়।

ভয় হয় আবার কি আগের মতো
যাবে আমায় ভুলে?
শুধু একবার আমায় ‘ভালোবাসি’
কথাটি বলো না মনটা খুলে..”

~মেহের আফরোজ ~

“নীলাদ্রি নিহানের দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে বললো,’কি হলো থেমে গেলেন কেনো?ভালোই তো লাগছিলো।বলতে থাকুন।”

“নিহান মুচকি হেসে বললো, ‘এতটুকুই লিখেছি।বাকিটা তো তুমি লিখতে দিলে না।আচ্ছা আমার শেষ লাইনটির উত্তর টা কি এখন পাবো নীলাঞ্জনা?”

“লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে নীলাদ্রি বললো,’কেনো ২বার তো বলেছি।”

“উহুমম এখন আবারও শুনতে চাই।”

“নীলাদ্রি এইবার নিহানের অর্ধখোলা শার্ট ভেদ করে বের হওয়া লোমশ বুকে মাথা রেখে আবেগ মিশ্রিত কন্ঠে বললো,’ভালোবাসি নিহান।খুব বেশি ভালোবাসি আপনাকে।সেদিন আপনাকে ওই বিপদের মুখে ফেলে যেতে আমি বাধ্য হয়েছিলাম।তার জন্য আ’ম স…

“নিহান নীলাদ্রির ঠোঁটজোড়ায় আঙুল দিয়ে বললো,’উহুমম পুরনো টপিক বাদ দাও।সেদিন তুমি তোমার জায়গায় ঠিক ছিলে আর আমি আমার জায়গায় ঠিক ছিলাম।তোমার জায়গায় আমি থাকলে একই কাজ করতাম।কারণ কেউ সুস্থ মস্তিষ্কে সৃষ্টির সেরা জীব থেকে অভিশপ্ত ভ্যাম্পায়ার জীবন বরণ করতো না।আর সেদিন তুমি এই কাজ টা না করলে আমি এবং ইয়াশ আজ স্বাভাবিক মানুষ হতে পারতাম না।তার জন্য তোমায় অনেক ধন্যবাদ।”

“নীলাদ্রি এখনও পুনর্জন্মে বিশ্বাস করে না।কারণ এই পৃথিবীতে একই চেহারার ২জন মানুষ অবশ্যই হয়। এদের বলা হয় ডোপেলগ্যাঙ্গার (Doppelganger)। এই ধরনের মানুষের মধ্যে কোনো জৈবিক সম্পর্ক থাকে না। কিন্তু তবুও তাঁদের দেখতে এতটাই একরকম হয় যে, মনে হয় যেন জমজ। কিছু সংস্কৃতিতে ডোপেলগ্যাঙ্গারকে বলা হয় ইভিল টুইন, ভুতুড়ে বা অলৌকিক ধরা হয়।”

“কিন্তুু এই মুহূর্তে নিহানের সাথে এইসব বিষয়ে বিতর্ক করে সুন্দর রোমান্টিক মুহূর্ত টাকে নষ্ট করার ইচ্ছে ওর নেই।কারণ এই সাইকো মানব টাকে যে ও খুব ভালোবেসে ফেলেছে।এই মানষ টা কে না পেলে হয়তো ও সারাজীবন একাই কা**টিয়ে দিতো।’ভেবে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নীলাদ্রি নিহানের দিকে তাকিয়ে বললো,’জানেন আমি নিজের একটা নাম রেখেছি।”

‘কি?’

“সঞ্জনা।”

‘এটা কখন রাখলে?”

“ওম্মা নিজের একটা নিক নেইম না থাকলে কি হয়?সবার কাছে আমি নীলাদ্রি,নিজের কাছে আমি সঞ্জনা,আর আপনার কাছে আমি আপনার নীলাঞ্জনা।”

‘হাহাহা নাইস নেইম।’বলেই নিহান নীলাদ্রি কে বললো,
আমি তো তোমাকে একটি কবিতা শোনালাম; এইবার তুমি তোমার মিষ্টি কন্ঠে আমাকে একটি গান গেয়ে শোনাও।”

“নীলাদ্রি একটু ভেবে বললো,’উমম.. ওকে তবে আমি একা গাইবো না।দু’জনে একসাথে গাইবো।আগে আপনি শুরু করুন।”

“নিহান নীলাদ্রির মাথা বুকে নিয়ে শুরু করলো,

🎶অনেক সাধনার পরে আমি
পেলাম তোমার মন,
পেলাম খুঁজে এ ভুবনে
আমার আপনজন।

তুমি বুকে টেনে নাওনা প্রিয় আমাকে
আমি ভালোবাসি ভালোবাসি
ভালোবাসি তোমাকে।

বিধাতা আমাকে তোমার জন্যে
গড়েছে আপন হাতে
জীবনে মরনে, আঁধারে আলোতে
থাকবো তোমার সাথে..(২)

তুমি বুকে টেনে নাওনা প্রিয় আমাকে
আমি ভালোবাসি ভালোবাসি
ভালোবাসি তোমাকে।
অনেক সাধনার পরে আমি
পেলাম তোমার মন
পেলাম খুঁজে এ ভুবনে
আমার আপনজন।🎶

” গান শেষ করে নীলাদ্রি এইবার মেকি সুরে বললো, ‘এখন কি আমাকে একটু আদর করবেন প্রিয়?আপনার হাতের সেই মনোরঞ্জন করা ছোঁয়া পেতে খুব মন চাইছে।”

“নিহান বাঁকা হেসে বললো,’মন থেকে বলছো?”

” হুমম।”

“নিহানের চোখজোড়া অনেক আগেই আটকে গেছে নীলাদ্রির মেরুণ রঙের শাড়ি ভেদ করে মেদহীন ফর্সা পেটে।কিন্তুু এতোদিনের ঠান্ডা মাথার পরিকল্পনা কিভাবে ভেস্তে যেতে দিবে নিহান?ধৈর্যের ফল যে বরাবরই মিষ্টি হয়, সেটা আবারও প্রমাণ পেলো নিহান।সেদিন ১০দিনের জন্য নিহান কোনো মিটিং করতে ইন্ডিয়া তে যায় নি।বেলকনির সাথে ঘেঁষে থাকা আম গাছের ডালে বাদুড়ের রূপে বসে থেকে, অপলক দৃষ্টিতে নীলাদ্রি কে দেখে কাটিয়েছে।”

“কথাগুলো ভেবে নিহান ঠোঁটের কোণ প্রসারিত করে ভাবলো,’নিজে থেকে আবদ্ধ হলে আমার কারাগারে।আর তোমাকে ছাড়ছিনা নীলাঞ্জনা।’ভেবেই আর একমুহূর্তও সময় নষ্ট করলো না নিহান।নীলাদ্রির ঠোঁট জোড়া খুব যত্নের সহিত আঁকড়ে ধরলো।শাড়ির ফাঁক গলিয়ে নীলাদ্রির পুরো শরীরে গভীর থেকে গভীর ভাবে ছুঁয়ে দিতে থাকলো।নিহানের অবাধ্য ছোঁয়ায় বেশামাল হয়ে গেলো নীলাদ্রি।উ**ন্মা*দের মতো নিহানের শার্ট খুলে সর্বাঙ্গে আদরে আদরে ভরিয়ে দিলো।আজ দুটি মন এবং শরীরের মধ্যে একে-অপরের প্রতি বহুদিনের ভালোবাসার প্রতিযোগিতা চলছে।অবশেষে কোনো বিধিনিষেধ ছাড়াই পূর্ণতা পেলো নিহানের ২০৯বছরের সাধনা।নিহানের কাছে তার নীলাঞ্জনার সাথে দ্বিতীয়বার ফুলসজ্জা হলেও,নীলাদ্রির কাছে এটাই সূচনা।”

#চলবে…

#ভ্যাম্পায়ারের_প্রেমকথন
#অন্তিম_পর্ব_২
#লেখিকাঃমেহের_আফরোজ

নিহানের কাছে তার নীলাঞ্জনার সাথে দ্বিতীয়বার ফুলসজ্জা হলেও,নীলাদ্রির কাছে এটাই সূচনা।দুই মেরুর দুইজন নর-নারীর চিন্তার মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য হলেও, দুটি মন এবং দুটি শরীর মিলে মিশে একাকার হয়ে গেলো।থাকলো না কোনো বাঁধা,রইলো না পিছুটান।দু’জনেই অতল প্রেম সায়রে এক জোড়া গা ভাসিয়ে দিলো।”

——
“সুখ-দুঃখ মিলিয়ে কে**টে গেলো ৫টি বছর।নীলাদ্রির মা সিতারা বেগম কে নীলাদ্রি বুঝিয়ে এই বাসায় নিয়ে এসেছে। কারণ, তিনি এখন বেশিরভাগ সময় অসুস্থ থাকেন।তাই নীলাদ্রি তাকে এখানে নিয়ে এসেছে।”

“নিহান এবং নীলাদ্রির একটি কন্যা সন্তান হয়েছে।ওর বয়স ৪বছর।নিহান এবং নীলাদ্রি ওদের নামের সাথে মিলিয়ে মেয়ের নাম রেখেছে ‘নীহাদ্রি।”

“ইয়াশ এবং ইরার জমজ সন্তান ছেলে ও মেয়ে হয়েছে।ওরা দু’জনের নামের সাথে মিলিয়ে ছেলের নাম রেখেছে ঈশান এবং মেয়ের নাম রেখেছে ইরিন।ওদের ২জনের বয়স ৩বছর।”

——–
“নীহাদ্রি কয়েকটি স্বরবর্ণ এবং ব্যঞ্জনবর্ণ শিখেছে।নীহাদ্রি খেয়াল করেছে ওর মা-বাবা প্রতিদিনই কালো ডায়েরি তে কিছু লিখে টেবিলের ড্রয়ারে রাখে।নীহাদ্রি রুমে বসে খেলছিলো।হঠাৎ কথাটা মনে পড়তেই ও টেবিলের ড্রয়ার খুলে কৌতূহল নিয়ে ডায়েরি টি খুলে পড়তে থাকলো।কিন্তুু এতো কঠিন লেখা নীহাদ্রি পড়তে পারছেনা।ও পাতা উল্টাতে থাকলো।একসময় শেষের পৃষ্ঠায় গিয়ে শেষ লাইনটিতে চোখ বুলিয়ে অনেক কষ্টে পড়লো,’আমাদের ভালুপাসার নাম হলো ভ্যাম…আর পড়তে পারলো না।”

“তখনই সেখানে নিহান এবং নীলাদ্রি এসে হাজির হলো।নীহাদ্রির হাতে ডায়েরি দেখে নিহান ওর কাছে গিয়ে ওকে কোলে তুলে নিয়ে বললো,’তুৃমি এই ডায়েরি নিয়ে কি করছো মামনি?”

“নীহাদ্রি ডায়েরির পাতার শেষের লেখাটি দেখিয়ে বললো,’পাপা আমি এটা পড়তে পারছিনা।প্লিজ বলো না এখানে কি লেখা আছে?”

“নিহান এবং নীলাদ্রি দু’জনেই লেখাটি দেখে উচ্চস্বরে হেসে উঠলো।তারপর দু’জন দু’জনের দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে বললো,’আমাদের ভালোবাসার নাম হলো,”#ভ্যাম্পায়ারের_প্রেমকথন”

“নীহাদ্রি কি বুঝলো কে জানে।বাবা-মা কে হাসতে দেখে ও চকলেট খাওয়া পোকায় ধরা অর্ধ দাঁত বের করে খিলখিল করে হেসে উঠলো।

“অবশেষে কুচকুচে কালো ডায়েরিটির মধ্যে চিরদিনের জন্য আবদ্ধ হয়ে রইলো রহস্যময়,রোমাঞ্চকর,ভালোবাসাময় ‘#ভ্যাম্পায়ারের_প্রেমকথন’ গল্পটি।”

“#সমাপ্ত”

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে