#ভুলোনা_আমায়
#পর্ব-১০
#Israt_Bintey_Ishaque(লেখিকা)
যবে থেকে শুনেছে সোহান ঢাকায় ফিরে যাবে, তখন ই টুসি নিজের ব্যাগপত্র গুছিয়ে নিয়েছে। সোহান তাকে একবার ও সাথে যাওয়ার কথা বলে নাই।মেহুলের থেকে যাওয়ার কথা শুনেছে সে।তাই শুনেই তৈরি হয়ে নাস্তার টেবিলে এসেছে।আনাস আর বুখারী তাকে দেখে বললো, বোন তুই কি কোথাও বের হবি?
টুসি তখন বললো,
— আমরা চলে যাবো!তোমরা কি জানো না?
সবাই অবাক হয়ে একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। নিরবতা ভেঙ্গে বুখারী বললো,
— বোন তুই আরো কিছুদিন এখানে থাকবি। সোহান আমি বলেছি, সোহান ও মত দিয়েছে। কিছুদিন পর সময় করে আমি তোকে দিয়ে আসবো গিয়ে ঠিক আছে?
টুসি চেয়ার টেনে বসতে বসতে বললো,
— না ভাইয়া আমাকে আজকেই যেতে হবে। কতোদিন হলো পড়াশোনা করা হচ্ছে না। দেখতে দেখতে পরীক্ষার সময় চলে আসবে। তাছাড়া স্কুলে ভর্তি হয়েছি এমন বন্ধ দিলে তারা আমাকে বের করে দিবে। আমাদের স্কুলের নিয়োম শৃঙ্খলা অনেক কঠোর।এই যে কতোদিন স্কুলে যাচ্ছি না তার জন্য কি পানিশমেন্ট পেতে আল্লাহ তা’আলা জানেন।
টুসি’র কথায় সবাই চুপ করে রইলো। কি আর বলবে টুসি তো অযৌক্তিক কিছু বলেনি। সত্যিই তো সামনে বোর্ড পরীক্ষা বলে কথা, হেলাফেলা করে পড়াশোনা করলে তো চলবে না। ভালো রেজাল্ট করতে হলে পড়াশোনা করতে হবে। সোহান কখনো ভাবেনি টুসি নিজ ইচ্ছায় তার সাথে যেতে চাইবে, কেননা টুসি তার গ্রামকে খুব ভালোবাসে যার কারণে শ্বশুরবাড়ি পর্যন্ত যেতে চায়নি। শেষে গিয়েও দিন ভর কেঁদেছে।
এদিকে রোজিনা বেগম মেয়ের মতামত শুনে খুশি হলেন। সোহান যখন বলেছিল টুসি কিছুদিন থাকুক তখন রোজিনা বেগম জোর গলায় বলতে পারেনি যে না ওরে সাথে করে নিয়েই যাও।তাই এখন যখন টুসি নিজেই যেতে চাইছে তখন কিছুটা হলেও নিশ্চিন্ত হলেন।
অতঃপর সবার থেকে বিদায় নেয় টুসি।তার নতুন ভাবীরা থাকার জন্য খুব অনুরোধ করে তখন টুসি বলে এস এস সি পরীক্ষার সময় আসবে। কেননা এখান থেকেই তো সে পরীক্ষা দিবে।
এবার হাসিমুখে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হয় টুসি।অন্যবারের মতো কেঁদে কেটে বাসায় না। তবে রোজিনা বেগম আড়ালে চোখের পানি মুছেন।যতই হোক নারী ছেঁড়া ধন তার সে তো কাঁদবেই।
.
.
ঢাকায় ফিরে স্বাভাবিক ভাবেই স্কুলে যাওয়া শুরু করে টুসি আর মেহুল।
সোহান প্রয়োজন ব্যাতিত অন্য কোন কথা বলে না টুসি’র সাথে।এতে টুসি মনঃক্ষুন্ন হয়।যতই ফ্রি হতে চায় ততোই যেন দূরত্ব সৃষ্টি হয়।
আজ শুক্রবার ছুটির দিন। রোকেয়া বেগম মেহুল কে নিয়ে পাত্রী দেখতে গিয়েছেন তার ছোট ছেলের জন্য।তাই আপাতত টুসি আর সোহান বাসায় একা।তারা যাওয়ার ঘন্টা খানেক পর ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়।এই অয়েদারে টুসির ইচ্ছে হলো শাড়ি পড়তে তাই সব গুলো শাড়ির থেকে তার পছন্দ মতো বেছে নিল একটা। এখন শাড়ি তো নিয়েছে ঠিকই কিন্তু বাঁধ সাধলো পরা নিয়ে। সে তো শাড়ি পরতে পারে না। অনেক ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিল সোহান কে বলবে পরিয়ে দিতে।
সোহান হাদীসের বই পড়ছে।প্রতি শুক্রবার একটা নির্দিষ্ট সময়ে সে বিভিন্ন ইসলামিক বই নিয়ে পড়াশোনা করে।যেন দুনিয়া এবং আখিরাতের কাজে লাগে।
টুসি দ্বিধা কাটিয়ে উঠে শাড়ি নিয়ে হাজির হয়। তারপর আমতা আমতা করে বলে,
— এই যে শুনছেন?
সোহান বইয়ের দিকে চোখ রেখেই বললো,
— কি বলবে বলো?
— আমাকে এটা পরিয়ে দিবেন প্লিজ?
— কোনটা?
টুসি শাড়ি টা দেখিয়ে বললো,
— এই যে এটা।
সোহান শাড়ি হাতে টুসি’কে দেখতে পেয়ে চক্ষু বিস্ফোরিত করে,যেন আকাশ থেকে পড়ল। তবে নিজের বিন্ময় ভাবটা নিজের মধ্যেই লুকিয়ে রেখে টুসি কে বললো,
— হঠাৎ শাড়ি পরবে কেন?
টুসি তার শখের কথা বলতে যাবে তার আগেই সোহান বলে বসে,
— আজকে শাড়ি পরে কাকে দেখাতে যাবে!
টুসি এর প্রতিউত্তর না করে রুমে ফিরে এসে শাড়িটা আগের মতই গুছিয়ে রেখে দিল।তার বুকচিরে কান্না আসছে, ভিশন কষ্ট হচ্ছে। একবার ভুল করেছে বলে কি সব সময় ভুল করবে? সোহান কিভাবে পারলো এতো কঠোরভাবে কথাটা বলতে?স তো তার স্বামীর জন্যই সাজবে বলে ঠিক করেছিল।
খুব কষ্ট হচ্ছে তার খুব, এই মুহূর্তে যদি রোজিনা বেগম কাছে থাকতো তাহলে তার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে চিৎকার করে কাঁদতো।যাই হোক নিজের কান্না দমন করতে বৃষ্টির মাঝে ছাদে চলে আসে টুসি।ঝুম বৃষ্টি পরছে, আজকে হয়তো আল্লাহ তা’আলা ভিশন খুশি কেননা আল্লাহ তা’য়ালা যখন খুশি হন তখন জমিনে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। কিন্তু টুসি’র মনের আকাশে মেঘ জমেছে। ছাদের রেলিং গেসে দাঁড়িয়ে বাচ্চাদের মত করে কাঁদছে। চোখের পানি গুলো বৃষ্টির মাঝে মিশে যাচ্ছে তার।
বেশ কিছুক্ষণ পর সোহান দরজার কাছে দাঁড়িয়ে টুসি’কে ডেকে বললো,
— এভাবে ভিজতেছো কেন? আল্লাহ না করুক জ্বর ঠান্ডা বেঁধে গেলে কি করবে? তাড়াতাড়ি বাসায় এসে কাপড় চেঞ্জ করে নাও।
টুসি’র থেকে কোন জবাব না পেয়ে সোহান আবার বললো,
— কি বলছি শুনতে পারছো না? আমি এবার কিন্তু রেগে যাবো টুসি!
তাও টুসি শুনলো না তাই বাধ্য হয়ে সোহান ভিজে টুসির কাছে আসলো। এসে আবারো বললো, জ্বর আসবে তো এভাবে ভিজছো কেন?
টুসি কাঁপা কাঁপা গলায় বললো, কিছু হবে না বৃষ্টিতে ভিজার অভ্যাস আছে। আপনি বাসায় যান।
— না তুমি সহ আসবে এক্ষুনি।চলো?
— যাবো না আমি।
সোহান এবার রেগে গিয়ে টুসির দুই বাহু শক্ত করে ঝাঁকিয়ে বললো,
— সমস্যা কি তোমার? কথা শুনছো না কেন?
টুসি তখন দ্বিগুণ রাগে বললো,
— আপনার কি সমস্যা বলুন তো? কেন আমাকে এভাবে ইগনোর করছেন?মানছি একটা ভুল করেছি কিন্তু তার জন্য তো মাফ চাইছি আমি।তাও কেন কষ্ট দিচ্ছেন আমাকে? আমি মানতে পারছি না আপনার অবহেলা। খুব কষ্ট হচ্ছে আমার। কেন বুঝতে পারছেন না আপনি? আপনার কেয়ার গুলো আমার চাই ঠিক আগের মতই। আপনাকে ছাড়া আমি অপূর্ণ কেন বুঝেন না?
বলতে বলতে কেঁদে দিল টুসি। সোহান পাথর মানব হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।যা দেখে আরো রেগে যায় টুসি। তখন সোহানের টি-সার্ট এর কলার ধরে বললো,
— আমি একটা দো’আ শিখেছি শুনবেন?
সোহান খানিকটা অবাক হয়, কারণ পরিস্থিতি এমন যে টুসি কোন দো’আ এর কথা বলবে তা কেমন যেন? তবুও বললো কি দো’আ বলো?
“একটি সুন্দর দো’আ”
[আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা হুব্বাকা ওয়া হুব্বা মান ইউহিব্বুক।]
হে আল্লাহ!
আমি তোমার ভালোবাসা চাই। এবং তোমাকে যে ভালোবাসে তার ভালোবাসা চাই।
[তিরমিযী – ৩৪৯০]
— সুন্দর না?
— আলহামদুলিল্লাহ খুব সুন্দর।
— ভালোবাসা দিবেন আমায়?
অনিমেষ চাহনিতে চেয়ে রইলো সোহান।সে বিশ্বাস করতে পারছে না টুসি এই কথা বলছে? কি হয়েছে তার? বৃষ্টিতে ভিজে মাথা খারাপ হয়ে গেল নাকি?
সোহান আর কথা না বাড়িয়ে টেনে নিচে নিয়ে গেল টুসি’কে। তারপর বাথরুমে পাঠিয়ে নিজে রুমে কাপড় চেঞ্জ করে নিল।
.
.
কিচেনে খাবার গরম করছে সোহান তখন পিছন থেকে টুসি বললো আমাকে দিন আমি করছি। সোহান পিছনে ফিরে তাকাতে লক্ষ্য করলো তার প্রিয়তমা স্ত্রীকে আজকে বেশিই সুন্দর লাগছে।বেগুনি রঙের কামিজের সাথে সাদা ওড়না এবং সেলোয়ার পরেছে টুসি। সাথে ভেজা চুল গুলো ছেড়ে দেওয়া।তার উপর কামিজের কলসি হাতা ডিজাইনে ফর্সা হাত দুটো দৃশ্যমান তার। ওরনা টা চিকন করে গলায় দিয়ে রেখেছে। এতেই
বেশি আবেদনময়ী লাগছে তাকে। নিরবতা ভেঙ্গে টুসি বললো,
— দিন আমি করছি?
এতে সোহানের টনক নড়লো তাই শুকনো কাশি দিয়ে বললো,
— না থাক তুমি গিয়ে বসো আমি খাবার নিয়ে আসছি।
টুসি দ্বিরুক্তি না করে চেয়ার টেনে বসলো। তারপর সোহানের গরম করা হয়ে এলে খাবার নিয়ে আসে।
.
.
এরপরের দিন,
সোহান টুসি’কে নিয়ে বাহিরে বের হবে বলে তৈরি হতে বললো।
কিছুদিন পর হয়তো সোহানের ব্যবসায়ের কাজে বিদেশে যাওয়া লাগবে।সোহানের কথা অনুযায়ী সাবা’র সাথে দেখা করার আরো দুদিন বাকি কিন্তু সেই সময় তো নেই তাই সোহান আজকেই বলেছে দেখা করার কথা।
সাবা কে কোর্টে আসতে বলে টুসি কে নিয়ে কোর্টের উদ্দেশ্য রওনা হয় সোহান!টুসি অনেক জিজ্ঞাসা করেও উত্তর পায়নি। তবে তার মনটা ভিশন খারাপ গতকাল রাতে খুব খারাপ স্বপ্ন দেখেছে,বার বার মনে হচ্ছে স্বপ্নটা সত্যি হয়ে যাবে না তো…এই ভয়ে টটস্থ হয়ে আছে।
পথিমধ্যে টুসি আবার বলে,
— আমি আজকে খুব খারাপ স্বপ্ন দেখেছি!আচ্ছা সবাই বলে ভোরের স্বপ্ন সত্যি হয় এটা কি ঠিক?
প্রতিউত্তরে সোহান বললো,
— স্বপ্ন নিয়ে দুশ্চিন্তা না করাই উত্তম।
স্বপ্নের কোনো বাস্তবতা আছে কি না এ ব্যাপারে ধর্মীয় গবেষক এবং দার্শনিকদের মাঝে কিছু মতপার্থক্য রয়েছে। দার্শনিকদের মতে, মানুষের চিন্তা-ভাবনার একটি প্রতিচ্ছবি তার ঘুমের মাঝে ফুটে ওঠে, যা শুধু ধারণা ও চিন্তাপ্রসূত। বাস্তবতার সঙ্গে এর কোনো মিল নেই। তবে ইসলামী জ্ঞানসম্পন্ন বিদগ্ধ আলেমরা এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেন। তাদের বক্তব্য হলো, সব স্বপ্নই মানুষের ধারণাপ্রসূত নয়। বরং অনেক স্বপ্ন রয়েছে, যা অর্থবোধক। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন স্বপ্ন তিন প্রকার। ১. রুইয়ায়ে সালেহাহ তথা ভালো স্বপ্ন। আল্লাহ মহানের পক্ষ থেকে কোনো সুসংবাদ হিসেবে যা বিবেচ্য। ২. রুইয়ায়ে শায়তানি তথা শয়তান কর্তৃক প্ররোচনামূলক প্রদর্শিত স্বপ্ন। ৩. রুইয়ায়ে নাফসানি তথা মানুষের চিন্তা-চেতনার কল্পচিত্র। এরপর রাসুল (সা.) বলেছেন, যদি কেউ অপছন্দনীয় তথা ভয় বা খারাপ কোনো স্বপ্ন দেখে তাহলে সে যেন তাড়াতাড়ি অজু করে নামাজে দাঁড়িয়ে যায় এবং দর্শিত স্বপ্নের ব্যাপারে অনভিজ্ঞ কাউকে কিছু না বলে। [আবু দাউদ] হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে এও বর্ণিত আছে যে, রাসুল (সা.) ফজরের নামাজের পর সাহাবিদের জিজ্ঞেস করতেন তোমাদের মধ্যে কেউ কোনো স্বপ্ন দেখেছ কি? অতঃপর রাসুল (সা.) নিজে এগুলোর ব্যাখ্যা করতেন। চিরসত্যের ধারক মহানবি (সা.) এর বাণীর আলোকে আমরা এ বিশ্বাস স্থাপন করি যে, কিছু ভালো স্বপ্ন আল্লাহ মহান তার প্রিয় ও নেক বান্দাদের দেখান। কিছু স্বপ্ন শয়তানের প্ররোচনায় হয়ে থাকে। কিছু স্বপ্ন মানুষের চিন্তা ও ধারণার ফল। একটি কথা উল্লেখ্য যে, সব নবি-রাসুলের স্বপ্ন অহি। এ জন্যই স্বপ্নযোগে আদিষ্ট হয়ে হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর পুত্র কোরবানিতে প্রস্তুতি জরুরিও ছিল আবার সঠিকও ছিল। অন্য কোনো ব্যক্তি এ জাতীয় কোনো স্বপ্ন দেখলে তার জন্য এভাবে কোরবানি করতে উদ্যত হওয়া সম্পূর্ণ হারাম। তবে স্বপ্নের ব্যাপারে সবচেয়ে গুরুত্বপূণ কথা হলো স্বপ্ন কাউকে না বলা। স্বপ্ন ব্যাখ্যা খুবই কঠিন এবং জ্ঞানতাত্ত্বিক একটি বিষয়।
তুমি শুধু এটুকু মনে রেখো ভালো স্বপ্ন মহান রাব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে আসে।আর খারাপ স্বপ্ন শয়তান কর্তৃক প্ররোচনামূলক প্রদর্শিত স্বপ্ন।
.
.
অতঃপর সেই কাঙ্খিত স্থানে পৌঁছায় তারা।টুসি এরকম জায়গায় কখনো যায়নি তাই আশেপাশে তাকিয়ে দেখছে। একটা রুমে যেতেই সাবা কে দেখলো টুসি,ভিশন অবাক হয়।মাথার মধ্যে বিভিন্ন প্রশ্নরা কিলবিল করতে শুরু করে।
সাবা আজকে বেশ খুশি, সোহান কে দেখে এগিয়ে এসে বললো,
— তোমাদের জন্যই সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছিলাম।এসো বসো।
সোহানের সাবার সাথে প্রথমবার চোখাচোখি হতে দৃষ্টি নত করে নিল।সাবা শাড়ি পরে সাথে সুন্দর করে হিজাব পরেছে।তার অধরে তৃপ্তির হাসি ফুটে আছে।
সোহান ওকিল সাহেব কে সালাম দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো,
— পেপার্স গুলো রেডি হয়েছে?
— বসুন মি.সোহান রাজবি।
আপনি যেরকম বলেছেন সেরকম ভাবেই আমি পেপার্স রেডি করেছি।এই দেখুন?
সোহান মাঝে বসে আর দুই পাশে টুসি এবং সাবা বসে। পেপার্স হাতে নিয়ে টুসি’র দিকে এগিয়ে দিয়ে সোহান বললো,
— নাও সই করো।
— কিসের পেপার্স এগুলো?
— আমাদের ডিবোর্স পেপার! আজকে থেকে তোমাকে মুক্তি দিলাম!
টুসি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সোহানের দিকে। নেকাবের আড়ালে ঠোঁট কামড়ে ধরে। হয়তো ধারালো ছু’রির মতো দন্তের আঘাতে ঠোঁট কেটে যাচ্ছে কিন্তু টুসি’র সেই দিকে কোন ভাবাবেশ নেই।
এর মধ্যে সাবা বলে উঠলো,
— তাসনুভা তুমি তো আমাকে বলেছিলে তুমি এখান থেকে মুক্তি পেতে চাও। তাহলে সইটা করে দাও, তবেই তুমি আগের জীবন ফিরে পাবে।
সাথে সোহান চোখে ইশারা করে সই করার জন্য।টুসি বেশ কিছুক্ষণ থম মেরে বসে থেকে পেপার্স গুলো হাতে নিয়ে লম্বা করে ধরে টান দিয়ে ছিরে দুই ভাগ করে দিল! আবার মাঝখানে একই অবস্থা করলো। তারপর রুম থেকে দৌড়ে বেরিয়ে চলে গেল…..
#চলবে…. ইনশা আল্লাহ।