“ভালোবাসার প্রান্ত” (পর্ব-২)
ডাকুরাজ দরজা বন্ধ করে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে চোখ দিয়ে অগ্নি নিক্ষেপ করা শুরু করলো। মনে হচ্ছে চোখের আগুনেই আমি ভষ্ম হবো আজ। এমন চোখ থাকলে দেশে বন্দুকে বা আগ্নেয়াস্ত্রের দরকার নেই। ইয়া আল্লাহ্ বউয়ের দিকে কেউ এমন করে তাকায়? আরেহ বিরোধী দলও তো এমন করে তাকায় না। আমি কোনো রকমে নিজেকে সামলে নিলাম। তারপর মাথা নিচু করে লাজুক মুখ করে বললাম-
__দিনে দুপুরে এমন করে দরজা বন্ধ করলে বাড়ি ভরা লোকজন কী ভাববে বলো তো দুষ্টু? দরজা খুলে দাও।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
সে আমাকে ইয়া বড় ধমক দিয়ে বলল-
__চুপ একদম! নাটক শুরু করে দিয়েছে। আমি দরজা খুলে রাখি আর তুমি মনের আনন্দে নাচতে নাচতে পালিয়ে যাও। বাদর পাজি মেয়ে একটা!
আমি লাজুক ভাব অটুট রেখে বললাম-
__পালাবো কেন গো? আমি চোর না ডাকাত হুম?
__ডাকুরানী তুমি। কালরাতে তো লুট করেছো আমাকে। আমার সর্বনাশ করে দিয়েছো।
সে এমন ভাবে কথাটা বলল যেন সে একটা মেয়ে আর আমি ছেলে, আমি তার সব কেড়ে নিয়ে সর্বনাশ করে দিয়েছি। তার কথা শুনে মনে মনে আমি সত্যিই খুব লজ্জা পেলাম। পৃথিবীর কোনো স্বামী তার বউকে কখনও এমন অপবাদ দেয়নি। হে আল্লাহ এমন লজ্জা জনক অপবাদও তুমি আমার কপালে লিখে রেখে ছিলে? কী শরমিন্দা! কী শরমিন্দা!
আমি লাজুক ভাব ছেড়ে নির্দোষ ভাব করে বললাম-
__এমা তুমিই তো সব করলে আর এখন আমাকে দোষ দিচ্ছো? কী কী করেছো সব বলবো?
__চুপ একদম ফাজিল মেয়ে! আমি করেছি ঠিক আছে। কিন্তু তুমি কী করেছো? সব শেষ করে দিয়েছো তুমি। দস্যি পাজি বদ বখাটে মেয়ে একটা।
আমি ফাজিল, পাজি, বদ, বখাটে, গুন্ডী, চন্ডী, দস্যি, ডাকুরানী, এসব উপাধি আমি প্রেম হবার পর থেকেই শুনে আসছি। এসব কথা আমার গায়ে লাগে না। ইনফ্যাক্ট আমি নিজেও নিজেকে এসবই মনে করি। বরং সে যখন আমাকে ভালোবেসে লক্ষী বউ বলে ডাকে তখন আমার মনে হয় অন্য কাউকে ডাকছে। নিজেকেই আমার আজব লাগে। আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললাম-
__এ আর নতুন কী? নতুন কোনো উপাধি দেবার থাকলে দাও। যেমন, ছিনতাইকারীনি, কিডন্যাপারনী, গড মাদার, ডনী ইত্যাদি।
__ফালতু কথা বাদ দিয়ে এখন এই ট্যাবলেট দুটো খেয়ে আমাকে উদ্ধার করো আমার ডাকুরানী।
সে ট্যাবলেট বের করে পানির গ্লাস আমার সামনে ধরলো। এই রে, এত কথার মধ্যে তো ট্যাবলেটের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। এখন এই ডাকাত ডাক্তার আমাকে চেপে ধরে ট্যাবলেট খাওয়াবে নাকি? খাওয়ালে তো খুব খারাপ হবে। আমি দিশাহারা হয়ে চেঁচিয়ে উঠে বললাম-
__আমি কিছুতেই ট্যাবলেট খাবো না। ওমাগো আমার বমি পাচ্ছে ওয়াক্ক ওয়াক্ক।
আমি দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকলাম তারপর ওয়াক্ক ওয়াক্ক করে বমি করার ভান করলাম। মরার বমিও বের হচ্ছে না, কী জ্বালা মাবুদ! বের হ না বমি বাপ! বের হয়ে আমাকে বাঁচা এই ডাকাতের হাত থেকে। হে আল্লাহ তুমি কী কিছুই দেখতে পাচ্ছো না? হয় এই অসহায় নারীকে বমি দাও নইলে এই ডায়নোসরের হাত থেকে আমাকে বাঁচাও। প্লিজ তোমার দোহাই লাগে!
সে ওয়াশরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল-
__বাহ চব্বিশ ঘন্টা পার না হতেই তুমি প্রেগনেন্ট হয়ে গিয়েছো? আমাকে ভূগোল বুঝাচ্ছো?
আমি করুণ চোখে তার দিকে তাকালাম। নিষ্ঠুর একটা! বউ বমি বমি কষ্ট পাচ্ছে, কোথায় সে সহানুভূতি দেখাবে, তা না তিনি তলোয়ার হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। তার চোখ যেন বলছে, ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে এসো এক কোপে তোমার মাথা কাটবো।
আমি করুণ সুরে বললাম-
__বমি পেলে আমি কী করবো?
__এখন মেডিসিন খাবে। আমি জানি তোমার বমি পাচ্ছে না। তুমি বমির অভিনয় করছো। কবে থেকে এসব অভিনয় শিখেছো?
আমি ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে বললাম-
__আমার সত্যিই বমি পাচ্ছে। এখন খেলে বমি হয়ে সব উঠে যাবে। রেখে দাও পরে খাবো।
সে আমার কাছে এগিয়ে এসে বলল-
__আমার চোখের সামনেই খাবে। হা করো।
__কিছুতেই খাবো না। আমি আজ রোজা আছি।
কথাটা বলেই আমি দুই হাত দিয়ে আমার মুখ চেপে ধরলাম।
সে ধমক দিয়ে বলল-
__একদম মিথ্যা বলার চেষ্টা করবে না। হা করো বলছি!
আমি ওর হাত থেকে ট্যাবলেট দুটো নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিলাম।
সে ডায়নোসরের মতো করে আমার দিকে তাকালো। কখন যেন ফুঁ দিয়ে আগুন ছুড়ে দেবে আমার দিকে। তারপর ধমকের স্বরে বলল-
__মেয়ে মানুষ বলে বেঁচে গেলে। যদি ছেলে হতে তবে থাপ্পড় দিয়ে গালের সবগুলো দাঁত ভেঙে দিতাম।
তার কথা শুনে আমি অজান্তেই ফিক করে হেসে ফেললাম। আমায় হাসতে দেখে তার দৃষ্টি যেন আগ্নেয়গিরি হয়ে গেল। আমি হাত দিয়ে আমার মুখ চেপে ধরে হাসি আটকালাম। আমি কী করব, সে এসব বললে আমার খুব হাসি পায়। যে পুরুষ বউয়ের শরীরে একটা সুচ ফুঁড়তে পারে না, সে নাকি থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ভাঙবে! মানুষটা পাগল টাগল হয়ে কথার ব্যালেন্স হারিয়ে ফেলেছে। ওর মাথায় একটু নিদ্রাকুসুম তেল দিয়ে দেবো নাকি? না থাক, ওর এসব পাগলামি ভালোই লাগছে। আমি হাসি চেপে রেখে বললাম-
__কোনো ছেলেকে বিয়ে করলেই তো পারতে। রোজ তাহলে পিটাতে পারতে। সে তোমাকে সুয়ামী ডাকতো আর তুমিও তাকে সুয়ামী ডাকতে। আহ্ কী দারুণ হতো!
সে একটা বিকট ধমক দিয়ে বলল-
__চুপপপ! একদম ফালতু কথা বলবে না বলে দিলাম। ট্যাবলেট তোমাকে আমি খাইয়েই ছাড়বো।
__আগে এক হাজারটা চুমু খাবে গুনে গুনে। একটাও কম হলে হবে না। তবেই আমি ট্যাবলেট খাবো।
সে নরম স্বরে বলল-
__আগে ট্যাবলেট খাও তারপর দুই হাজার চুমু খাবো প্রমিস।
মনে মনে বললাম, কচু খাবে। আমি তোমাকে চিনি না নাকি? এসব বলে পটিয়ে ট্যাবলেট খাইয়ে আমার সর্বনাশ করবে।
আমি এক পা দু পা করে পিছাতে পিছাতে দরজার কাছে গিয়ে থামলাম। তারপর দরজা খুলে ভোঁ দৌড় দিলাম। একদম নিচের সিঁড়িতে এসে গেলাম পড়ে। পায়ে প্রচন্ড ব্যাথা পেলাম। ওরে আল্লাহ্ আমার পা ভেঙে গেল নাকি? এখন আমার কী হবে? সব হলো ঐ ডাকাতটার জন্য। মামনি ছুটে এসে আমাকে টেনে তুলে বললেন-
__তোর আজ কী হয়েছে বল তো? তখন দৌড়ে উপরে গেলি আবার এখন দৌড়ে পড়ে গেলি, হয়েছেটা কী?
উঠে দাঁড়িয়ে দেখলাম পা ভাঙেনি। দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি কিন্তু ভীষণ ব্যাথা করছে। আমি ব্যাথা চেপে রেখে হাসির ভান করে বললাম-
__আমার আজ দৌড়াতে খুব ভালোলাগছে মামনি। মনে হচ্ছে শুধু দৌড়াই আর দৌড়াই।
মনে মনে বললাম, সাধে দৌড়াচ্ছি নাকি? তোমার সিংহ মার্কা ডাকাত ছেলে আমাকে দিয়ে দৌড়িয়ে নিচ্ছে। সময় আসুক আমিও তাকে এমন করে দৌড় করাবো।
মামনি হতবাক হয়ে বললেন-
__”তোর মনে হচ্ছে শুধু দৌড়াই আর দৌড়াই? এই তোর মাথা খারাপ হয়েছে নাকি? বাচ্চাদের মতো দৌড়াতে ইচ্ছে করবে কেন?
__মাথা ঠিকই আছে আমার। এখন আমি কিচেনে যাচ্ছি, কাজ আছে আমার।
মামনির প্রশ্নের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে কিচেনে গেলাম। লাঞ্চের আগে সীমান্ত নিচে আর এলো না। দুইটায় সে ডায়নিংএ আসবে তার আগেই আমি মামনির রুমে গিয়ে বসে রইলাম। সে চুপচাপ লাঞ্চ করে রুমে চলে গেল। আমি খেলাম কী না তার খবরটাও নিলো না। নিষ্ঠুর একটা! এজীবন রেখে কী হবে আল্লাহ?
আমি সারাদিনে নিজের শোবার ঘরে যাবার সাহস পেলাম না। মামনি সারাদিন ধরেই যে আমাকে খেয়াল করছেন তা আমি জানি। সন্ধ্যার পরে মামনিকে বললাম-
__শোনো আমি কিন্তু আজ তোমার কাছে ঘুমাবো বলে রাখলাম।
মামনি রহস্যজনক ভাবে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন-
__দুজনার ঝগড়া হয়েছে বুঝি?
আমি মাথা নিচু করে কাঁদো কাঁদো স্বরে বললাম-
__সে আমাকে খুব বকেছে। খুব পঁচা তোমার ছেলে।
মামনি অবাক হয়ে বললেন-
__কেন বকেছে?
এই রে, কেন বকেছে সেটা বলবো কী করে? কিছুতেই বলা যাবে না। মুখে তালা মেরে রাখতে হবে। নইলে মুখ ফসকে সব বেরিয়ে যাবে। আমি অভিমানী মুখ করে বললাম-
__নিজের ছেলের থেকেই শুনে নাও না! আমি বলতে পারব না। আমার শরীরটা কেমন যেন লাগছে। আমি এখনি শুয়ে পড়ছি, ডিনার আজ করবো না।
হঠাৎ শরীর খারাপ শুনে মামনি হতবাক হয়ে তাকালেন। বললেন-
__ দুপুরেও তো ক্ষুধা নেই বলে কিছুই খেলি না। এখন বলছিস ডিনারও করবি না। জ্বর টর এলো নাকি দেখি।
মামনি আমার কপালে হাত রেখে বললেন-
__শরীরের তাপমাত্রা তো ঠিকই আছে। তাহলে কোথায় কষ্ট হচ্ছে তোর?
ওরে আল্লাহ কোথায় কষ্ট হচ্ছে বলবো কী করে? কষ্ট তো কোথাও হচ্ছে না। তাহলে এখন কী বলি? এত বানিয়ে বানিয়ে কী বলা যায় মাবুদ! সেই সকাল থেকেই বিভিন্ন পদের ঢং করে চলছি। এত ঢং নিজেরই ভালোলাগছে না। ধুর! সব দোষ ঐ ডাকাতটার। কেন যে সে আমার সাথে এমন করে? মামনি উৎসুক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমি হুট করেই বলে ফেললাম-
__বুকে কষ্ট হচ্ছে। কেমন যেন ধড়ফড় করছে।
কথাটা বলেই হাত দিয়ে বুক চেপে ধরলাম, যেন আমার ছোটখাট হার্ট এ্যাটাক হতে চলেছে। মামনি ঘাবড়ে গিয়ে বললেন-
__ওরে আল্লাহ কী সর্বনাশ! এখনি বাবুসোনাকে ডাকছি দাঁড়া।
এই রে সেরেছে! ঐ ডাকাত এলে তো আমার সত্যি সত্যিই হার্ট এ্যাটাক হবে। ঘরে ডাক্তার থাকলে একটু অসুখের ভান করাও বিপদ। মনে মনে বললাম, তোমার বাবুসোনা ট্রিটমেন্ট করতে আসবেন বন্দুক নিয়ে। সে আমার বুকে স্টেথোস্কোপ না ধরে বন্দুক ধরবে।
আমি বললাম-
__না না ডাকতে হবে না। খুব বেশি ধড়ফড় করছে না, ঘুমালেই ঠিক হবে।
মামনি যেন বুঝেই ফেললেন আমি এসব ভান করছি। তার ঘাবড়ে যাওয়া মুখটা হঠাৎ দুষ্টুমিতে রূপান্তরিত হলো। মুচকি হেসে বললেন-
__তা আমার রুমে ঘুমালে কী বুক ধড়ফড় সারবে?
মামনির দুষ্টু হাসিতে আমি মহা লজ্জা পেলাম। আমি যে বর পাগলি এটা বাড়ির লোকজন শুধু নয়, প্রতিবেশীরাও জেনে গিয়েছে। ওদিকে হাসপাতালে তার স্টাফরাও জেনে গিয়েছে। হুটহাট বরকে দেখার জন্য হাজির হয়ে যাই হাসপাতালে। না জেনে ওদেরই বা উপায় কী?
আমি লজ্জা প্রকাশ না করে বললাম-
__সারবে সারবে। আমি যাই।
কথাটা বলেই আমি দ্রুত মামনির রুমে ঢুকে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে ঘুমের ভান করে রইলাম। মরার ঘুম তো চোখে নাই। এহকালে আসবে বলেও তো মনে হচ্ছে না। কখন যেন ঐ ডাকাতটা রুমে ঢুকে আমার বুকে বন্দুক ধরে বলবে, “বখাটে সুন্দরী এখন যদি না উঠো তাহলে সব গুলি তোমার বুকে ঢুকবে।”
এই বুকের ভেতরে যে তার জন্য গড়া একটা সীমান্ত মহল আছে তার প্রতিও ঐ ডাকাতটার মায়াদয়া হবে না। এসব ভাবতে ভাবতে রাত এগারোটা বেজে গেল। টংটং করে ফোনে মেসেজ এলো। এই রে মরেছি! এটা ঐ ডাকাত ছাড়া আর কারও মেসেজ হতেই পারে না। খুব ভয় লাগছে মেসেজ ওপেন করতে। দোয়া কালিমা পড়তে শুরু করলাম। কিন্তু দেখলাম আমি সব ভুলে গেছি। এখন আমার কী হবে আল্লাহ গো!
মেসেজ ওপেন করলাম।
“এক মিনিটের মধ্যে উঠে ডায়নিংএ বসবে। তারপর ডিনার করে সোজা নিজের রুমে যাবে। অন্যথা তোমার কপালে কী আছে তা তুমি ভাবতেও পারবে না।”
এমন থ্রেড কেউ তার বউকে করে? কী আজব মানুষকে আমি বিয়ে করেছি আল্লাহ! আমি ধুচমুচ করে বিছানা থেকে নামতে গিয়ে পায়ে কাঁথা পেঁচিয়ে পড়ে গেলাম। এমনিতেই সিড়িতে পড়ে পায়ে ব্যাথা, এবার মনে হয় কোমরে ব্যাথা পেলাম। পড়ে যাবার শব্দ শুনে মামনি ছুটে এসে দেখেন আমি মেঝেতে কাঁথা জড়িয়ে পড়ে আছি। মামনি হতভম্ব হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে তারপর বললেন-
__তুই তো ঘুমিয়ে ছিলি। মেঝেতে এলি কী করে? একটা শব্দ হলো, সেটা শুনেই রুমে এলাম। এই তুই বিছানা থেকে পড়ে গেছিস নাকি?
__আমি মনে হয় ঘুমের ঘোরে পড়ে গেছি মামনি। আসলে স্বপ্নে আমি দৌড়াচ্ছিলাম।
মামনি অবাক হয়ে বললেন-
__দৌড়াচ্ছিলি কেন?
আমি মাথা নিচু করে করুণ সুরে বললাম-
__একটা ডাকাত আমার পিছু নিয়েছিল। ডাকাতটা খুব ভয়ানক। এখন আমার ক্ষুধা লেগেছে। আমাকে এক মিনিটের মধ্যে ডায়নিং এ যেতে হবে।
আমি উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি কিন্তু কাঁথার জট খুলছেই না। অনেক কষ্টে কাঁথার জট খুলে ছুটে ডায়নিং এ গিয়ে বসলাম। হুজুকের মাথায় বসে পড়ে সামনে তাকিয়ে দেখি আমার ডাকুরাজ বর আমার সামনের চেয়ারে বসে আমার দিকে খাইয়ালামু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি চোখ নামিয়ে খাবার বেড়ে নিলাম। সব গোলমাল হয়ে গিয়ে ভাত না নিয়ে আগে প্লেটে তরকারি নিলাম। তারপর নিজেই হতভম্ব হয়ে গেলাম।
ডিনার শেষ করে রুমে যাচ্ছি আর ভাবছি, রুমে ঢুকে রেডি হয়ে থাকবো। সে রুমে ঢুকতেই তাকে জড়িয়ে ধরে উরাধুরা কিচি শুরু করে দেবো। এতে সে আমাকে ওষুধ খাওয়ানোর কথা ভুলেই যাবে। উফ্ কী সুন্দর বুদ্ধি আমার! নিজের বুদ্ধি দেখে নিজেই মুগ্ধ হয়ে গেলাম। রুমে ঢুকে আমি রেডি হয়ে আছি। চোখ বন্ধ করে রিহার্সেল করছি। আগে কোথায় কিচি করে শুরু করবো। কিন্তু আমার খুব লজ্জাও করছে। পৃথিবীর কোনো বউ এমন অভিনব গুণের অধিকারী নয়। দরজায় তার পায়ের আওয়াজ শুনে আমি বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ালাম। ভাব নিলাম, এখনি ছুটে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরবো।
এমা আমার বুক ধড়ফড় করছে কেন? হৃদপিন্ড বাইরে বেরিয়ে আসবে নাকি? পা দুটোও তো কাঁপছে মনে হচ্ছে। ঘেমেও তো যাচ্ছি দেখছি। হেটে দরজা পর্যন্ত যেতে পারব তো? মনে শক্তি এনে দরজার দিকে এগুলাম। সে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই আমি পায়ের কাঁপুনিতে ব্যালেন্স হারিয়ে ধপাস করে পড়ে গেলাম।
বিঃদ্রঃ গল্পের কাহিনী এবং চরিত্র সম্পূর্ণ কাল্পনিক। বাস্তবতার সাথে গল্প কখনোই মিলবে না। জীবন কখনও গল্পের মতো সাজানো গোছানো হয় না। গল্পটা শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য লেখা হয়েছে তাই বিতর্কিত মন্তব্য প্রত্যাশিত নয়।
পরের পর্ব আসছে…..
Written by- Sazia Afrin Sapna
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/