#বেনিফিট_অফ_লাভ -১০
Tahrim Muntahana
থানা থেকে সামান্য দূরে বাইকের উপর বসে ছিল শিতাব। সাথে দুই বন্ধু। যদিও তারা আসতে চায়নি, জোর করেই নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশের রাগ কে ভয় পায় না আবার কে? একবার থানায় নিয়ে গেলে ডান্ডার বারি দিলেই শেষ! একপ্রকার ব্ল্যাকমেইল করেই নিয়ে এসেছে। দুজন আলাপ করছিল, শিতাব একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল থানার দিকে। মেয়েটা একটুর জন্যও বের হচ্ছে না। কখন থেকে সে দাঁড়িয়ে আছে। বেশ কিছু সময় পার হয়ে গেল, ব্যস্ত পায়ে কয়েকজন পুলিশ সহ বেরিয়ে এলো সিলভিয়া। শিতাব কে এখনো দেখে নি, বেশ চিন্তিত মনে হচ্ছে। শিতাব নিজের স্বভাব বশত গলা বেশ উঁচিয়ে সুর করে বলে উঠলো,
“ঐ দেখা যায় পুলিশ স্টেশন
ঐ আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী
ওই খানে তে দাঁড়িয়ে আছে
আমার সিলসিলা রানী!”
শুনতে পায় সিলসিলা। তাকায়, শিতাব কে দেখেও কোনো রিয়েকশন করে না। মনক্ষুণ্ণ হয় শিতাবের। বাইক থেকে নেমে এগিয়ে যাবে আটকে দেয় দুই বন্ধু।সিলভিয়া গাড়িতে উঠে বসতেই গাড়ি স্টার্ট দেয়। গাড়ি শিতাবের সম্মুখে এসেই থেমে যায়। সিলভিয়া ভাবালেশ বলে,
-“এই এদিকে আয়!”
শিতাব চট জলদি বাইক থেকে নেমে এগিয়ে আসে। জানালার কাছে দাঁড়িয়ে কিছু বলার পূর্বেই ঠাস করে চড় বসিয়ে দেয় সিলভিয়া। আহম্মক হয়ে যায় শিতাবের দুই বন্ধু। শিতাব তবুও মিটিমিটি হাসে। সিলভিয়া চোখ রাঙিয়ে গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার কথা বলতেই শিতাব চিৎকার করে বলে উঠলো,
-“দুইশত চুরাশি খান চুমু পাওনা রইলাম সিলভিয়া রেড!”
গাড়ির শব্দে সিলভিয়া শুনতে পায় কিনা জানে না। শিতাবের মনের মধ্যে এক জেদ কাজ করে। মেয়েটা সেই কবে থেকে তাকে ইগনোর করে চলছে। সে কি এতটাই ফেলনা? দৌড়ে গিয়ে বাইকে বসেই ছুট লাগায় গাড়ির পেছন। সাথে যে দুই বন্ধু ছিল এবং তারা তাকে ডেকে চলছে নিয়ে যাওয়ার জন্য, বেমালুম ভুলে গেছে। শিতাব হুট করেই গাড়ির সামনে গিয়ে বাইক থামায়। অল্পের জন্য দুর্ঘটনা ঘটে যেত। মাথায় বহু চিন্তা, তারমধ্যে মাঝপথে বাঁধা পড়ায় ভীষণ রেগে যায় সিলভিয়া। গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে এসে শিতাবের কলারে ধরতে যাবে পূর্বেই শিতাব মুখ বাড়িয়ে সিলভিয়ায় কপালে অধর স্পর্শ করে। একটুখানি! এতেই যেন থমকে যায় সিলভিয়া। কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলে, কন্ঠনালি রোধ হয়! শিতাব সিলভিয়ার রিয়েকশন দেখে হাসতে হাসতে প্রস্থান করে। মনের ভেতর রঙ বেরঙের প্রজাপতি উড়ে বেড়ায়। শিতল এক প্রশান্তিতে শরীর মন নেচে নেচে উঠে। এত সুখ সুখ লাগছে কেন?
…..
শিতাব বাড়িতে ঢুকেই বেশ চমকে গেছে। বেনিফিট খাজা আর ডেজি একসাথে বসে সিরিয়াল দেখছে। কখনো হাসছে, বা কখনো মুখ বাঁকাচ্ছে। আবার দুজনের পছন্দের চরিত্র আলাদা হওয়ায় ঝগড়াও করছে। চায়না বেগম কিছুটা দূরে বসেই নাক মুখ কুঁচকাছেন। সম্ভবত শাশুড়ি-বউমার এমন মিল তার পছন্দ হয়নি। এমন ঘটনাও যে ঘটতে পারে তা হয়তো শিতাব ভাবেনি। মুখ তার হা হয়ে আছে। বেনিফিট খাজার চোখ ছেলের উপর পড়তেই তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
-“হোয়াট মাই সন? ইউ এমন করে হা করে আছো হোয়াই? ইউ কি এয়ার খাচ্ছো?”
ফট করে মুখ বন্ধ করে নেয় শিতাব। হাসার চেষ্টা করে। ডেজি হয়তো বুঝতে পেরেছে, মেয়েটা মিটিমিটি হাসছে। পরক্ষণেই কিছু একটা মনে হতেই বললো,
-“এত তাড়াতাড়ি ভার্সিটি থেকে এলে? ক্লাস শেষ?”
-“ভার্সিটি কে গিয়েছে?”
-“যাও নি?”
-“না!”
-“কোথায় গিয়েছিলে?”
-“একটা কাজে?”
-“কি কাজ?”
-“তুমি আমার কাছে কৈফিয়ত চাইছো ভাবী?”
শিতাবের রাগী কন্ঠ। ডেজি কিছুটা ভড়কালেও আড়ালে খোঁচা দিল শাশুড়ি কে। বেনিফিট খাজা বুঝলেন। শিতাবের দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে বললেন,
-“শিউরলি কৈফিয়ত চাইছে! এন্ড ইউ কৈফিয়ত দিবে! ইউ হোয়াই নাউ হোমে?”
মায়ের এই পরিবর্তন যেন এখন গলায় কাঁটা হলো শিতাবে। উঠে হনহন করে চলে গেল। ডেজি ঠোঁট বেঁকিয়ে কিছুক্ষণ ভেবে বললো,
-“মিসেস গাঁজা ইউর সন ওয়ান নম্বরের বদ!”
বেনিফিট খাজা চোখ ছোট ছোট করে তাকাতেই ডেজি কথা ঘুরালো। আমতা আমতা করে বললে,
-“সরি, আমি বলতে চাইছি আপনার ছেলের ভবিষ্যত তো অন্ধকার। সারাদিন এভাবে ছন্নছাড়া ঘুরে বেড়ালে হবে? ভার্সিটি যায় না, পড়তে বসে না সারাদিন এখানে সেখানে আড্ডা। পাড়ার অনেকে তো বখাটে শিতাব নামেও চিনে। হক বাড়ির দুর্নাম করে ছাড়বে আপনার ছোট ছেলে!”
কথা মিথ্যে নয়। অতি আদরের জন্যই বেনিফিট খাজা কিছু বলতেন না। তবে এখন তার আফসোস হচ্ছে । তিনি বললেন,
-“ইউ রাইট বলছো বেজি সরি ডেজি। মাই সন আদরে এমন হয়ে গেছে। নাউ আই হোয়াট করবো? ইউ বলো!”
-“আপনার কিছু করতে হবে না মিসেস গাঁজা! আমিই টাইট দিবো! আসছি!”
কথা বলেই ডেজি উপরে চলে এলো। বেনিফিট খাজা কিছুক্ষণ ভেবেও সুরাহা পেলেন না ডেজি কি করবে। তাই আর ভাবলেনও না। টিভিতে মনে দিলেন।
ডেজি এসে দেখলো শুয়ে শুয়ে ফোন টিপছে শিতাব। গিয়ে বসলো পাশে। বললো,
-“এমন ভাবে চললে তো আমার বোন কে তোমার পাওয়া হবে না!”
টাইপিং করা হাত থেমে গেল শিতাবের। চমকালো, ভড়কালো, থমকালো। চোখ বড় বড় হয়ে এলো তার। শিতাবের এমন রিয়েকশনে ফিক করে হেসে ফেললো ডেজি। নিজ থেকেই বললো,
-“সেদিন সকালে আবার ফিরে গিয়েছিলাম ঘরে। শামউল চলে যাবার পর তোমাদের কথা শুনেছি। তখন শিউর না বুঝতে পারলেও মেয়েটার কথা যখন বললে, বুঝলাম কাহিনী!”
শিতাব হতাশার শ্বাস ফেলে বললো,
-“তোমার বোন আজকেও একটা চড় মেরেছে। একশত বিয়াল্লিশ খান চড়!”
হাসির ফোয়ারা বয়ে গেল। ডেজির হাসিতে বিরক্ত হলো শিতাব। বিরক্তি নিয়েই বললো,
-“হেসো না তো! তোমরা দুই বোনই পাষাণ, একজন আমার ভালোবাসা বুঝে না। আরেকজন আমার ভাইকে বুঝে না। এখন পর্যন্ত আমার ভাই টা বাসর করতে পারলো না!”
হাসি থেমে গেল আপনাআপনি। লজ্জা পেল ডেজি। কাঁধে চাপড় বসালো শিতাবের। গলায় কিছুটা রাগ এনে বললো,
-“বেশরম! ভাবী হই তোমার, কি সব বলছো?”
-“তো কি হইছে? আচ্ছা বাদ দাও, এবার বলো তোমার বোন কে কি করে পাবো?”
-“তোমার মতো বখাটে ছেলে কে কোন মেয়ে ভালোবাসবে? আমার বোন আবার পুলিশের এসপি!”
-“মানে?”
-“মানে বুঝো না? তুমি যেভাবে বখাটের মতো ঘুরে বেড়াও তা শুধু টিনেজার দের কাছেই ভালো লাগবে। স্কুলে যাওয়ার পথে তোমাকে সিগারেট ফুঁকতে দেখে তারা হাসবে, লজ্জা লজ্জা দৃষ্টিতে তাকাবে। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক , বুঝদার মেয়ে কখনোই বখাটে দেখে গদগদ হবে না। তারা চাইবে ভালোবাসা সহ সুন্দর একটি ভবিষ্যত। আর প্রত্যেক মেয়েই চাই সে যেন তার স্বামী নিয়ে গর্ব করতে পারে। ছোট না হতে হয়! ধরো আমার বোন তোমার বউ হলো, সে একজন পুলিশ অফিসার; তাকে যখন কেউ জিজ্ঞেস করবে, ‘আপনি তো এসপি আপনার স্বামী কি করে? নিশ্চয়ই অনেক বড় অফিসার?” তখন কিন্তু আমার বোন জবাব দিতে পারবে না, হিমশিম খাবে, তার মাথা নত হবে। কিন্তু কেউ যদি আমাকে এ প্রশ্ন করে? আমি গর্বের সহিত বলতে পারবো আমার স্বামী এ কোম্পানি তে চাকরি করে। কর্ম কোনো টাই ছোট নয় শিতাব, তুমি যদি রিকশা চালাও তাতেও সমস্যা নেই। পদার্থ অপদার্থের মধ্যে অনেক পার্থক্য। তাই তোমার করণীয় হলো পড়াশোনায় মন দাও ছন্নছাড়া ভাব ছেড়ে। ফাইনাল ইয়ার তো, ভালো রেজাল্ট করো। চাকরির ট্রাই করো, বা বিসিএস ও দিতে পারবে। যাই করো তোমাকে একটি কর্ম বেছে নিতে হবে। তাহলে আমি মা কে রাজী করিয়ে আমার বাড়িতে কথাটা তুলবো। নচেৎ না! আর তুমি যদি এভাবেই জীবন চালাতে থাকো, তাহলে আমি যেভাবেই হোক আপুকে রাজী করিয়ে অন্যত্র বিয়ের ব্যবস্থা করবো। চয়েজ এখন তোমার!”
শিতাব কে বাস্তবতার সম্মুখীন করিয়ে প্রস্থান নিল ডেজি। শিতাব থম মেরে ভাবতে রইলো। ভাবনা তার শেষ হয় না, মুখের ভাবের পরিবর্তন হয় না। ভাবতেই থাকে!
….
সিলভিয়া এসেছে বড় এক কোম্পানি তে। কোম্পানি কাছে কাল রাতে এক চিঠি এসেছে। আজ সকালেই মালিক এসে খবর টি পেয়েছে। তার পূর্বেই লোক জানাজানি হওয়ায়, পুলিশ কে জানাবে কি জানাবে না দোটানা নিয়ে বাধ্য হয়েই বেশ পরে জানিয়েছে। সিলভিয়া আর দেরী করেনি। কেসের সমাধান সে কোনো ভাবেই পাচ্ছে না। আজ একটা সুযোগ পেয়েছে। তবে সমস্যা হলো, মালিক কিছুতেই চিঠি টা পুলিশ কে দেখাতে চাইছে না। বরং তাদের এড়িয়ে চলতে তদন্তের ভার দিয়ে মিটিং করছে। সিলভিয়া বুঝিয়েছে কাজ হয়নি, তাই বাধ্য হয়েই বড় অফিসার কে জানালো। সে হুকুম দিল নিজের মতো কাজ করবার। সিলভিয়া যেন এটাই চাইছিল। বাঁকা হেসে সরাসরি মিটিং রুমে ঢুকে পড়লো। বিভ্রান্ত হলো সবাই। এমডি ছুটে এসে বাজখাঁই গলায় বললো,
-“মিটিং রুমে পারমিশন ছাড়া ঢুকেছেন কোন সাহসে? বেরিয়ে যান, আপনাদের কাজ আপনারা করুন। আমি সাহায্য করবো না!”
-“তাহলে আমরা আপনাকে সাহায্য করবো ভাবছেন কি করে?”
সিলভিয়ার গম্ভীর কন্ঠস্বরে লোকটা একটু ভড়কালো। মজা পেল সিলভিয়া। হেসে বললো,
-“অনলি ওয়ান মিনিট’স সময় দিচ্ছি। চিঠি টা আমাদের হাতে সোপর্দ করুন। নতুবা আপনার এই অফিস আমরা সার্চ করবো এন্ড আই গেইস তা আপনার জন্য মোটেও সুখকর হবে না!”
ভয় পেয়ে গেল মালিক। তাড়াহুড়ো করে চিঠি টা বের করে দিল পকেট থেকে। হাসলো সিলভিয়া। হাতটা নিশপিশ করছে, মনের খায়েশ মিটিয়ে একটা চড় মারতে পারলে ভালো লাগতো। তবে অনেক মানুষ দেখে ইচ্ছে টা নিজের মাঝেই লুকিয়ে রাখলো। মিটিং রুম থেকে বেরিয়ে গাড়িতে বসলো সিলভিয়া। তবে গাড়ি স্টার্ট করতে নিষেধ করলো। কাগজের ভাঁজ খুলে চোখ রাখলো লাল কালির অক্ষরে,
“আমি জানি আপনে আমারে চিনছেন। খুব ভালা করেই চিনছেন। তা মিয়া আপনে বড় বেইমান। ঠকাইলেন আমারে, আমার পাওনা না দিয়াই আমারে বাদ দিলেন। কি করব বলেন , এখন তো আমারে বাঁইচা থাকা লাগবো। তাই শুরু করলাম ডা’কাতি। যাই হোক, আগামী তিন দিনের মধ্যে আপনের অফিসে আসব, একাই আসব, বাকিদের কাছে দশ লাখ নিতাম, আপনের কাছ থেকে চল্লিশ লাখ নিব। কিন্তু মিয়া আমারে ঠকাইছেন সেইটা ভুলবো না! অপেক্ষা করবেন কেমন! পুলিশ টুলিশ কইয়েন না, এতে আপনের প্রাণ হারাইতে পারেন। সাবধান!”
এই পর্যন্তই শেষ! সিলভিয়ার ঠোঁটে জয়ের হাসি ফুটলো। এবার খুব তাড়াতাড়িই এই গ্যাং কে ধরে সে এই অফিসের ব্যবস্থা করবে। সময়ের অপেক্ষা! পাশেই ছিল লবিন। চিঠি টা পড়ে বললো,
-“এই কেস সমাধান হলে বাড়িতে আপনার কথা বলবো!”
-“কেন?”
-“কেন? মানে আপনি বুঝতে পারছেন না? না মানে বলছিলাম..?”
-“চুপ করুন! নিজের কাজ করুন!”
যতটা সাহস করে বলেছিল সবটা ঘেঁটে গেল। আর সাহস হলো লবিনের। চুপচাপ উদাস ভঙ্গিমায়। বাহিরে তাকিয়ে রইলো!
….
রাত বেড়েছে। হক বাড়ির ডিনার শেষ। আজ একটু তাড়াতাড়িই উপরে চলে এসেছে ডেজি। শামউল এলো বেশ পরে। অন্ধকার ঘর, বুক তার ধক করে উঠলো। ডেজি জানে তো সে অন্ধকার ভয় পায়। কাঁপা গলায় ডেকে উঠলো,
-“তারাফুল, তারাফুল, কোথায় তুমি? আছো? ঘর অন্ধকার করে রেখেছো কেন?”
রিনিঝিনি চুড়ির শব্দে শামউলের ভয় ক্রমশ কমে গেল। ডেজি যে ঘরেই আছে বুঝলো সে। কিছু বলার পূর্বেই কয়েকটা প্রদীপ শিখা জ্বলে উঠলো। সেই হলদেটে আলোয় শামউল দেখলো কোন এক লাল ফুল বসে আছে বিছানায়। বাহারি সাজের সঙ্গে ঠোঁটের কোণে চেপে রাখা লজ্জামিশ্রিত হাসি টায় রমনীর সৌন্দর্য বহুগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। শামউল মুগ্ধ অনিমেষ দেখে যাচ্ছে অর্ধাঙ্গিনী কে। মৃদু কাঁপছে তার শরীর। অন্তরে অচিন কোনো সুখ বাসা বেঁধেছে। ছোট ছোট পা ফেলে বিছানায় বসে শামউল। ডেজির নত করে রাখা মুখটা আঁজলে তুলে কপালে চুমু খায়। আবেশে চোখ বুজে নিজের ভালোলাগার জানান দেয় ডেজি। ফিসফিস করে বলে,
-“আপনার বাসরের শখ পূরণ হতে যাচ্ছে?”
শামউল যেন আজ হারিয়ে গেছে।বড়ই শান্ত, উন্মুখ দৃষ্টি। ডেজি এবার ভীষণ লজ্জা পেল। স্বামীর বুকে মুখ লুকিয়ে মৃদু হাসলো। শামউল হেসে বললো,
-“আমার তারাফুল দেখছি বর কে কাছে টানার জাদু জানে। আদর নেওয়ার খুব ইচ্ছে বুঝি?”
ডেজি বুক থেকে মাথা তুললো। চোখ রাঙিয়ে কিছু বলবে শামউল চেপে ধরলো মুখ। এ মেয়ে কে এখন রাগানো মানে তার এত স্বাদের বাসর, এত শখের ফিলিংসের মৃত্যু ঘটানো। তা সে চাইছে না। হেসে বললো,
-“রাগ করছো? রাগলে তোমাকে মোটেও সুন্দর লাগে না!”
কিছুটা সময় থেমে আবার বললো,
-“এবার একটু কাছে আসি? একটু একটু করেই ভালোবাসবো!”
কি সুন্দর চাওয়া! তারাফুল তো প্রস্তুত ছিলই বরের ভালোবাসায় নিজেকে রাঙাতে! এমন আবেদনময় পুরুষ কন্ঠস্বর যেন তার মন কে আরো উতলা করে তুললো। ফিসফিস করে বললো,
-“একটু কাছে আসুন, একটু একটু করেই ভালোবাসুন! আমি একটু একটু করেই সুখ কুড়াবো!”
চলবে..?