বেইমানীvsলাভ পার্ট_৬
জামিয়া_পারভীন
একে তো বৃষ্টি, তার উপর গাড়ি নষ্ট, দুজনেই ভিজে গেছে।
সৌরভ আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো যে একটা বাসা আছে।
গাড়ি টা কোনরকম ঠেলে নিয়ে গেলো আর সেখানে আশ্রয় চাইলো।
সৌরভ নিজ পরিচয় দেয়, বলে আমরা হাজবেন্ড ওয়াইফ।
ঘুরতে এসে আটকিয়ে গেছি, তার উপর গাড়ি টা নষ্ট হয়ে গেছে।
সৌরভ দের নাম আছে শহরে তাই তারাও রাজি হয়ে যায়।
সৌরভ বাসায় কল দিয়ে আম্মাকে জানায়, তারা রুমেসার বাবার বাসায় আছে বৃষ্টি আর বজ্রপাত এ বের হতে পারছেনা।
এদিকে রুমেসা একটু রাগ করেছে, স্বামীস্ত্রী বলায়।
ওই বাসা থেকে দুইজনে কাপড় নেয় আর চেঞ্জ করে নেয়।
দুইজনের ই ঠাণ্ডা লেগে গেছে অনেক ক্ষণ ভিজাতে।
রাত হয়ে এসেছে সৌরভ রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে রুমেসার কাছে যেতে ই বলে…
…. মিথ্যা কেনো বললে, ?
…. তো কি বলতাম মহারাণী, সত্য বললে থাকতে পেতাম একসাথে।?
…. কিহহ! আমার সাথে থাকার জন্য এতো কিছু তাইনা।
…. হুম,
এরই মাঝে বাজ পড়ে, আর রুমেসা ভয়ে সৌরভ কে জড়ায় ধরে।
সৌরভ ও রুমেসাকে জড়িয়ে রাখে, কিছুক্ষণ পরে কানের কাছে আস্তে করে বলে
…. তোমাকে এই ভাবে এতো কাছে পাবো ভাবিনি।
…. রুমেসা সরে গিয়ে বলে সরি।
…. সরি বললে হবেনা, আদর করতে হবে।
…. হুহ, মরে গেলেও করবো না।
…. তুমি কি জানো সেই প্রথম দেখাতেই তোমাকে ভালোবেসেছি।
…. আমিও ভালোবাসি তোমাকে, প্রথম দেখা থেকেই।
কিন্তু তুমি কোথায় আর আমি, ভুলে যেও না সমাজ জানে আমি তোমার ভাইয়ের বউ।
…. সমাজ দিয়ে কি হবে আমি তো জানি তোমরা বিয়ে করোনি। অথচ একসাথে থেকেছো এতো দিন।
…. এক সাথে মানে, একই রুমে কিন্তু আলাদা থাকতাম।
…. আমি জানি দেখেছি তোমাকে, প্রায়ই তোমার কান্না শুনতাম।
কষ্ট পেতাম খুব, তাই তোমাকে দিনের বেলায় হাসানোর চেষ্টা করতাম।
…. তাই বলে আমি কিন্তু তোমার সাথে থাকতে পারবোনা আজ।
…. থাকবেনা মানে কি? থাকতে হবে বলেই কোলে তুলে নিয়ে বিছানে শুইয়ে দেয়।
…. কি করছো এইগুলা পাপ, ছেড়ে দাও।
…. কে বলেছে পাপ করছি, তুমি বিয়ে ছাড়া পরপুরুষ এর সাথে একই ঘরে থেকেছো আর আমি থাকলেই দোষ।
…. অন্যায় করিও না প্লিজ।
…. আমি শুধু তোমায় জড়িয়ে ধরে ঘুমাবো, আর কিছুই চাইনা।
রুমেসা কিছু বলছেনা, অন্যদিকে ঘুরে শুয়ে আছে।
…. কি ব্যাপার কিছুই বলছোনা যে, একটা বার তোমার সাথে কথা বলার জন্য কতো ছটফট করেছি আর আজ এতো কাছে থেকেও চুপ করে থাকবে।
…. কি বলবো, আমার খারাপ লাগছে খুব।
কেউ আমার বেডে আমাকে জড়িয়ে আছে এই প্রথম।
কিছু বুঝছিনা কি করবো আমি।
…. কিছুই করতে হবেনা, শুধু ভালোবেসো।
তোমার জন্য আমি সব কিছু করতে পারবো।
বাসায় সব কিছু বলে দিয়ে তোমাকে মুক্ত করে আমি বিয়ে করবো।
প্রয়োজন এ আলাদা থাকবো।
বিয়ের আগে তোমাকে কখনো ইউজ করবোনা নিশ্চিন্ত থাকো।
শুধু পাশে থেকো আমার।
…. রুমেসা সৌরভ কে ধরে খুব কাঁদছে, কি আর করবে, সুখের জীবনে আজ এতো কষ্ট এর পর একটু সুখ পেয়েছে সে।
পরদিন সকালে ওই বাসাতে বলে গাড়ি ঠিক হয়ে গেছে।
নাস্তা করে দুজনেই বের হয়, বাসায় ফিরে আসে।
রুমেসা যেমন খুশি, সৌরভ ও।
বাসায় গিয়ে যে যার মতো ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
সন্ধ্যায় আফিস ফিরে আসে।
আর এসেই রুমেসা কে ডাক দেয়, রুমেসা যেতে ই
…. লজ্জা করে না দেওরের সাথে রাত কাটিয়ে ঘরে ফিরতে।
…. মুখ সামলে কথা বলেন আমি এতো খারাপ না।
…. চুপ কর তুই, তোর মতো বেহায়া মেয়ে সব পারে, তুই তোর বাপের বাড়িতে গিয়েছিলিস নাকি অন্য কোথাও গিয়েছিস সব জানি।
…. রুমেসা ভয় পেয়ে যায়।
বলে কি যা তা বলছেন এই গুলি।
…. যা তা, তাই না, বলেই চুল ধরে অনেক মারে।
ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়, রুমেসা চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠে।
সবাই বুঝতে পারায় সবাই এগিয়ে আসে।
কি হয়েছে বললে আসিফ ঘর থেকে বের হয়ে যায়।
রুমেসার মাথায় খুব জোরে লেগেছে, রক্ত বের হয়ে গেছে।
সৌরভ ড্রেসিং করিয়ে দিয়ে ব্যান্ডেজ করে বলে কি হইছে।
সবাই জানতে চাচ্ছে,
রুমেসা বলে কিছুনা আম্মা
আমি সৌরভের সাথে গিয়েছিলাম তাই রাগ করেছে।
সৌরভ বুঝতে পারে না কি বলবে।
আম্মা বলে গেছে তো কি হইছে।
তাই বলে এভাবে মারবে সে।
আসিফ রাগ করে বাসা থেকে বের হয়ে বারে গিয়ে মদ খায় আর
রাত্রে বাসায় ফিরার সময় এক্সিডেন্ট করে তখনি মারা যায়।
চলবে….