বেইমানীvsলাভ
পার্ট_৫
#জামিয়া_পারভীন
আসিফ সৌরভের ঘরে গেলো, সৌরভ আসিফ কে বুঝায় কক্সবাজার শাখায় বিজনেস নিয়ে প্রব্লেম চলছিলো সেখান এ যেতে ই হবে যত দ্রুত সম্ভব। আসিফ সেদিন রাতের ফ্লাইট এই চলে যায়।
পরে সৌরভ আর রুমেসার সাথে কথা বলেনি, এক টা পাপবোধ হচ্ছে ওর জন্য মেয়েটা আজ আরোও কষ্ট পেলো।
রুমেসার মন খারাপ, কিন্তু এই সংসার, বাচ্চা সব ছেড়ে সে যেতে পারছেনা, যাবে ই বা কোথায়। ?
বাচ্চার বাবা নাই তার উপর সব দায়িত্ব, আর সৌরভ ও আবির কে নিচ্ছে না। ?
পরদিন দুপুরে আম্মা বলে রুমেসা রান্না করে রাখিও, নিরা তো ওর মেয়েকে নিয়েই ব্যস্ত, আমি একটু বাইরে যাব। সৌরভ থাকলো বাসায় ভয় পেয়ো না কেমন, আবির কাঁদলে ওকে দিও।
রুমেসা বলে জ্বী করে রাখবো।
আবির কে ঘরে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে রান্না ঘরে আসে। মন খুব খারাপ তাও রান্না করছিলো।
কিছুক্ষণ পর রুমেসার শাড়ির আঁচলে আগুন লেগে যায় এটা সে খেয়াল ই করেনি। যখন বুঝতে পারে তখন পাগলের মতো চিৎকার দেয় ভয়ে আর আঁচল নাড়াতে থাকে পানি না দিয়ে।
???
চিৎকার শুনে সৌরভ দৌড়ে নিচে আসে আর অবস্থা দেখে এক টান দিয়ে শাড়ি খুলে ফেলে দেয়। শাড়িটা পুরাই পুড়ে যায় মুহুর্তেই।
রুমেসা লজ্জায় উলটা দিক ঘুরে কাঁদতে থাকে। ?
সৌরভ রুমেসাকে বলে পাগল মেয়ে দেখেশুনে কাজ করতে পারোনা।
দিয়ে নিজের শার্ট খুলে রুমেসার গায়ে দিয়ে দেয় আর উলটা দিক হয়ে রুমেসাকে বসে ঘরে যাও আমি দেখছি না তোমাকে।?
রুমেসা দৌড়ে ঘরে চলে যায়।
সৌরভ নিচে সব ঠিক করে দেয়, রান্নার বাকি কাজ শেষ করে।
কেউ যেন পেরেশান না হয় তাই সব কিছু ম্যানেজ করে। ?
পরে নিচের কাজ শেষ করে ঘরে গিয়ে রুমেসা কে ডাকে। দরজা না খুলেই রুমেসা বলে
…. কি বলবে? ?
…. তোমাকে বাঁচালাম একটা ধন্যবাদ ও দিলা না।?
…. মরে গেলেই ভালো হত, কেনো বাঁচালে??
…. কি যে বলো এসব ভেবে টেনশন করিও না, আর কাউকে বলিও না কারোর টেনশন বাড়িও না, খেতে এসো নিচে।
…. আপনি খেয়ে নিন, আমি খাবো না।?
…. রুমেসা এমন করিও না।?
…. আমি তোমার ভাবি হই, নাম ধরে ডাকো কোন সাহসে।?
…. সরি ভাবি, নিচে এসো।
…. যাও তো।
সৌরভ আর কিছু বলেনা, দুপুরের পর মা আসলেই তাকে বলে আম্মা
…. আপনার বৌমা রান্না করেই ঘরে ঢুকে কাঁদছে, কিচ্ছু খায়নি।?
…. কেনো কি বলেছিস??
…. কি আবার বলবো বলো, বাচ্চা মেয়ে তার উপর বর কাছে নাই, বাবা মার জন্য কাঁদছে হয়ত।
…. রুমেসা নিচে নেমে এসে কথা গুলি শুনছে আর অবাক হয়ে বলে না আম্মা আমি ঠিক আছি।
…. আম্মা বলে, বুঝি মা মাস পার হয়ে গেলো বাবার বাসায় যাও নি। দিয়ে সৌরভ কে বলে : ওর বাবার বাসা কাছেই ঘুমিয়ে নিয়ে আই তো।
রুমেসা বলে আম্মা, আমার ছেলের কথা তারা জানেনা।
জানলে রাগ করবে তাই যাব না।?
আবির প্রব্লেম না কয়েক ঘন্টাই তো যাও আমি আর নিরা সামলে নিবো কয়েক ঘন্টা, যাও রেডি হয়ে এসো।☺
সৌরভ মনে মনে খুব খুশি কিছু সময় তো ওকে একা পাবে। ?
বিকালে দুইজন বের হলো, রুমেসা পিছনে বসতে যাচ্ছে গাড়ির।
…. আমি কি তোমার গাড়ির ড্রাইভার নাকি??
…. নাহ তা কেনো হবেন।
…. সামনে এসে বসো।
…. আচ্ছা,
বলে সামনে এসে বসে দুইজন এ।
সৌরভ গাড়ি চালাচ্ছে কিন্তু ঠিকানা জানেনা।
রুমেসা কে জিজ্ঞেস করছে ডান বাম এগুলা বলেই চলেছে রুমেসা। এবার সৌরভ ক্ষেপে গিয়ে গাড়ি ব্রেক কষে থামায় দেয়।বলে….
…. আর কতো দূর যেতে হবে, তোমার বাপের বাসা আর কত দূর।
…. রুমেসা কথা বলেনা।
…. কি ব্যাপার চুপ কেনো কিছু বলো ( ধমক দিয়ে)
…. এবার রুমেসা গাড়ি থেকে বের হয়ে কান্না করে দেয়, বলে
কি বলবো আমি আমার কোন বাসা নেই।
…. বাসা নেই মানে, তুমি কি রাস্তায় জন্মেছো।
…. মুখ সামলে কথা বলো, তুমি কি জানো আমি কে?
…. হ্যা জানি তুমি আমার ভাইয়ের বউ না।তাই তোমাকে এতো ভালোবাসি??
…. তুমি জানো কিভাবে??
…. তুমি তো বোকা।
তোমার থেকে বয়সে, বুদ্ধিতে সব দিক দিয়েই বড় আমি ভুলে যেও না।
তাছাড়া তোমাকে প্রথম দিন দেখেই প্রেমে পড়েছি, যখন জেনেছি তুমি আমার ভাইয়ের বউ না তখন ভালোবেসেছি।
…. আমি তোমায় ভালোবাসি না।
…. মিথ্যা বলিও না, তোমার মাঝে আমার জন্য দুর্বলতা আমি খুঁজে পেয়েছি।
…. ভুল ভেবেছেন, আমি আপনাদের মতো না। আপনার ভাই বেইমান, আপনিও। বেইমান।
…. রাগ করে আপনি বলছো কেনো?
সে কি করেছে অনেক টাই জানি, বাকি টা তোমার কাছে শুনবো।
রুমেসা বলতে শুরু করে সব কিছু খুলে বলে ভাইয়ের বেইমানি এর কথা।
এরই মাঝে বৃষ্টি এসে দুজন কেই ভিজিয়ে দেয়।
দুইজন ই ভিজে যায় একজন নিজ কষ্ট তে কাঁদছে অন্য জন প্রেমিকার ভালোবাসায় কষ্ট পাচ্ছে।
সন্ধ্যা নেমে আসে, সৌরভ বলে বাসায় ফিরতে হবে।
হুম চলো
সৌরভ গাড়ি স্টার্ট দিয়ে গিয়ে দেখে আর হয়না।
জোরে ব্রেক কষা তে গাড়িতে প্রব্লেম হয়ে গেছে।
চলবে….