#বৃষ্টির পড়ে
#নুসাইবা_ইসলাম_লেখিকা
#পর্ব_৮
এক মধ্যবয়স্ক লোকের এমন ঘৃ-ন্য চরিত্র থাকতে পারে তা হয়তো সবার ধারনার বাহিরে ছিলো। সুশীল সমাজের এক মান্যগণ্য ব্যাক্তির চরিত্র যে এতোটা নোংরা তা কি জানে কেউ। মিস্টার সিকদার জেনিফার এর থামতে বলা কথাটি পাত্তা দেয় নি। প্রায় অনেকক্ষন পড়ে জেনিকে ছেড়ে উঠে পড়ে সে।
এতো সুন্দর হয়ে কি লাভ হলো তোমার জেনি বলোতো সামান্য একটা কাজ দিয়েছিলাম তোমাকে আর তা করতে পারলে না। আয়াত কে নিজের আয়ত্তে করতে পারলেনা। (মিস্টার সিকদার)
মিস্টার সিকদার এর কন্ঠ একদম শান্ত শীতল, জেনিফার এর ঘাম ছুটিয়ে দিচ্ছে বাপ-ছেলে দুটাই ডেঞ্জারাস মাঝখানে লোভে পড়লো সে। টাকার লোভে এই মধ্যবয়স্ক লোকের সাথে সম্পর্কে জরা-লো। জেনিফারের এখন নিজের উপর রাগ লাগছে।
আম সরি মিস্টার সিকদার আমি অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু কিছুতেই কিছু করতে পারি নাই। আয়াত মেহুলকে ভালোবাসে সে অনেক ভালো একটি ছেলে। (জেনি)
উহ জেনি আমি জানি আমার ছেলেরা কেমন,আমাকে বাবা বলে মানে না তারা আমি জানি সব জানে তারা এইজন্য এই খেলার সমাপ্তি খুব তাড়াতাড়ি টানতে হবে। (মিস্টার সিকদার)
মিস্টার সিকদার আয়াত মেহুল কে বিয়ে করে নিছে। (জেনিফার)
হোয়্যাট আর ইউ সেয়িং জেনি আগে বলো নাই কেন? (মিস্টার সিকদার)
আসলে আমি ভুলে গেছি,আর শুনেন না এসব বাদ দিন চলেন আমরা বিয়ে করে ফেলি। (জেনিফার)
এতো তারা কিসের বেবি তোমার জন্য আমার গিফট আছে দেখবা.? (মিস্টার সিকদার)
ইয়েস..! (জেনি)
জেনি ইয়েস বলার সাথে সাথে মিস্টার সিকদার জেনিফারকে গু!লি করে ফেলে যতগুলো বুলেট ছিলো সব গুলো জেনিফারের বুকে। গার্ডদের ডেকে আনে মিস্টার সিকাদার..!
আমি ওয়াস-রুম থেকে ফ্রেস হয়ে আসতে আসতে যেনো পুরা রুম ক্লিন পাই এই জঞ্জাল টার ঠিকানা ঠিক করে দেও। (মিস্টার সিকদার)
মিস্টার সিকদার ওয়াস-রুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে তার মধ্যে এক-ফোটাও অনুশোচনা নাই। একটা মানুষ কতোটা জঘন্য হতে পারে। গার্ডস রা চুপচাপ লাস নিয়ে চলে গেলো আর রুম ক্লিন করার জন্য হোটেল স্টাফদের পাঠালো। মিস্টার সিকদার যে কাল বিডিতে যাবে তার ওসব ঠিক করতে হবে কি হবে এবার সে গেলে।
সিকদার বাড়িতে আজ খুশির-মেলা এতোগুলো বছর পর দুই ছেলে বাড়িতে এসেছে, তারপর আবার আয়াতের বিয়ের সব নিয়ে পরিবেশ জমজমাট আয়াত এর দাদিমা আর মিরাও চলে আসছে। ফিরার পড় থেকে মিরা একবার ও রুম থেকে বের হয় নি বিষয়টি মেহুলের চোখে পড়লো। মেহুল মিরার রুমে গিয়ে নক করলো?
কে ওখানে.? (মিরা)
আমি তোর আপু..!(মেহুল)
তোমার কি আমার রুমে আসতে পারমিশন লাগে আপু নাকি আমাকে লজ্জা দিচ্ছো তুমি? (মিরা)
দূর পাগল এতোদিন পর এসে রুমে বন্ধি হয়ে আছস কেন আপুর কাছে একবার ও গে-লিনা? ( মেহুল)
আর তুমি যে আমাকে না জানিয়ে ভাইয়াকে বিয়ে করে ফেলছো তার বেলায় হুহ। (মিরা)
বাচ্চাদের মতো লুক নিয়ে মিরা কথাটা বললো মেহুল কে, মিরার বলার ভঙ্গি দেখে হেসে দেয় মেহুল।
আমি কি জানতাম না কি অই খাঢুস টাকে আমি বিয়ে করবো কাল রাতে অনেক কিছু হয়ে যায় বুঝছিস পরিস্থিতি খারাপ ছিলো আর আমরা কেউ জানতাম না আয়াত কিসের কাগযে সাইন নিচ্ছে সাইন করার পরে বলে ওটা বিয়ের রেজিস্ট্রি। (মেহুল)
কি হয়েছিলো আপু আমাকে বলো তো। (মিরা)
মেহুল ওর সাথে ঘটে যাওয়া সব ঘটনার বিবরন দিচ্ছে মিরাকে, মিরা শুনে আর ভাবে বাবা তো মিরাকে কতো ভালোবাসে শুধু আপুর সাথে বাজে বিহেভ করে বাবা এতোটা খারাপ কেনো।
আর বইলো না আব্বুর প্রতি আমার দিনকে দিন ঘৃনা সৃষ্টি হচ্ছে আমার বেলায় আব্বু কতো ভালোবাসে আর তোমার বেলায়। (মিরা)
আর থাম তো চল নিচে যাই দাদুরা সবাই কথা বলছে। (মেহুল)
আচ্ছা চলো আমার সাথে তুমি। (মিরা)
….লন্ডনে…
না এভাবে বসে থাকলে হবে আমার ও বিডিতে যেতে হবে সবাইকে রক্ষা করতে হবে আর আমার মেয়েটাকেও। ও বিডিতে যাওয়া মানে আমার মেয়ের ক্ষতি হওয়া এটা কিছুতেই হতে পারে না আমিও আসছি। অজ্ঞাত ব্যাক্তিও বিডির জন্য বের হয়ে গেলো। আরেকদিকে মিস্টার সিকদার ও দুইজন এর গন্তব্য এক কিন্তু উদ্দেশ্য আলাদা, কেউ ধ্বংশ করতে যাচ্ছে তো কেউ রক্ষা করতে।
।।।।।।সিকদার বাড়ি।।।।।।
সবাই ড্রয়িংরুমে বসে আছে দাদির পাশে, আর দাদি মুখ গোমরা করে বসে আছে। দাদুর দুই হাত আয়াত আর আইজান নিজের মুঠোয় নিয়ে বসে আছে মূলত তারা দু-জোন কিছু বলছে দাদিকে আর তা মানানোর জন্য চেষ্টা করছে।
সারা জিবন আমাকে বড় বউ ডেকে আজ আমার নাতিন কে বিয়ে করছো জামাই, আর ছোট জামাই তুমি আরেকজনকে বিয়ে করতে চাও।তাহলে এখন এই বুড়ো বউ এর কি হবে আমাকে তো ভুলেই যাবা তোমরা তা কি আমি জানিনা.? (দাদি)
সরি দাদিমা আমার ভুল হয়ে গেছে তুমি হলে আমার একমাত্র কিউট বড় বউ তোমাকে কিভাবে ভুলবো। (আয়াত)
আয়াত এইটুকু বলে আইজান কে চোখ মারলো, আর আইজান তা দেখে হাসলো। দুই ভাইয়ের মনে কি চলছে আল্লাহ জানে এরা কি যে করবে।
শুনো বড় ডারলিং আমরা দুইভাই আছি না একমাত্র সুন্দরী তুমি কিভাবে ভুলি বলো মনে যাও না প্লিইইইইইজ। (আইজান)
আইজান এতো কিউট করে বলছে যা দেখে দাদু হেসে ফেললো এর মানে সে রাজি, এটা দেখে দুই ভাইয়ের মুখেও বিশ্বজয় করা হাসি।
শুনো আমার দুই নাতির কাল বিয়ে হবে তাও সব নিয়ম কানন মেনে, আয়াত এর সাথে তো মেহুলের রেজিস্ট্রি হয়েছে তাই আগামিকাল শুধু তাদের ইসলামিক ভাবে বিয়ে পড়ানো হবে। আইজান দাদুভাই আমাকে জানিয়েছে কাল সে বিয়ে করতে চায় আর পাত্রীও তার পছন্দের সেই অনুযায়ী সব আয়োজন করা হোক, সাজানো হোক সিকদার বাড়িকে। (দাদি)
দাদির কথায় আরেকদফা বজ্রপাত হলো ড্রয়িংরুমে কেউ ভাবে নাই যে আইজান ভাইয়া ফিরেই বিয়ে করবে আর পাত্রীও ঠিক। ড্রয়িংরুমে তিনজন মানুষ বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে একজন ফুপি আরেকজন আব্বু।
আমার ছেলেরা বিয়ে করে ফেলছে অথচ আমি মা আমার থেকে জিজ্ঞেস ও করছে না আর না আমাকেই জানানোর প্রয়োজন মনে করে। (ফুপি)
আপনি আমাদের মা পড়ে আগে মিস্টার সিকদার এর স্ত্রী, আর মিস্টার সিকদার এর স্ত্রী হয়েই থেকে গেলেন আমার আর আমার ভাইয়ের মা হয়ে উঠতে পারলেন না। মুখে বললেই কেউ মা হয়না তার মধ্যে মমতা স্নেহ থাকা লাগে সন্তানের প্রতি দায়িত্ব পালন করা লাগে, আপনারা হয়তো টাকা দিয়েছেন ন্যানি ঠিক করেছেন আর যাইহোক এটা দিয়ে ভালোবাসা প্রমান হয় না মা। ( আয়াত)
ভাই ঠিক ই বলেছে আপনাকে এখো-নো আম্মু ডাকি কারণ আপনার পায়ের নিচে আমাদের জান্নাত। অথচ আপনি মা হয়ে নিজেকে এমন যায়গায় নামিয়েছেন আর এক জঘন্য লোকের সাথে সংসার করছেন। (আইজান)
চুপ আইজান এতো কথা বলিস কেন সময়ের অপেক্ষা সব চুপ থাক। ( আয়াত)
আয়াতের কথার মানে কেউ না বুঝলেও তাদের মনের মধ্যে থাকা কষ্ট ক্ষোভ সবাই ধরতে পারলো। ফুপি মাথা নিচু করে স্থান ত্যাগ করলো, মিরার চোখে পানি কেন মিরা নিজেকে সামলানোর জন্য ওখান থেকে চলে গেলো। বাবা রাগ নিয়ে বেরিয়ে গেলো সাথে আম্মু, ড্রয়িংরুমে আমি আইজান আর আয়াত ভাই দাঁড়িয়ে আছে দাদুর কাছে।
বুঝলা দাদা-ভাইরা তোমাদের বিয়ের আয়োজন তোমাদের করতে হবে। ( দাদি)
চলবে.?