#বিরহবিধুর_চাঁদাসক্তি
লেখনীতে—ইলোরা জাহান ঊর্মি
৪.
মিশকাত বাইরে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। ইদের ছুটি উপলক্ষে বন্ধুরা যারা দূরে থাকে, তারাও গ্রামে এসেছে। মিশকাতকে ফোন করে ডেকেছে ক্যারম খেলার জন্য। সুবর্ণা আরিন্তাকে খোঁচাচ্ছে,
“আপু, ভাইয়াকে বলো আসার সময় চটপটি নিয়ে আসতে।”
আরিন্তা দুপাশে মাথা দুলিয়ে বলল,
“আমি পারব না, তুই বল।”
“আমি বললে জীবনেও কানে নিবে না, জানোই তো কেমন শয়তান।”
“তোর শ’য়তান ভাই যেন আমার কথা শুনতে বসে আছে?”
“শুনবে, শুনবে। তুমি তো আর প্রতিদিন এটা-ওটা আনতে বলো না। আমি বলি বলেই পাত্তা দেয় না। তুমি আজ আমাদের মেহমান। মেহমানের কথা ফেলবে না।”
“হু, তোর ভাই মেহমানের চুল ছিঁড়তে পারে, আর কথা ফেলতে পারবে না। এত ভালো মানুষি জানে কবে থেকে?”
সুবর্ণা ঠোঁট উলটে নাকি সুরে বলল,
“যাও না আপু, প্লিজ।”
“তারপর আমাকে দূর-দূর করে তাড়িয়ে দিলে?”
“তোমাকে তাড়িয়ে দিলে মা আছে না? যাও।”
“তাহলে তুইও আয় আমার সাথে।”
“আমি গেলে বুঝে যাবে আমিই তোমাকে পাঠিয়েছি। জানো না, ওর পেটে-পেটে শ’য়তানি?”
“হুঁ, শ’য়তানের কাছে আমার মতো ভালো মানুষই পাঠাবি,” বিড়বিড় করে কথাটা বলে মিশকাতের ঘরে চলল আরিন্তা।
ঘরের দরজা হা করে খোলা-ই ছিল। আরিন্তা দরজায় দাঁড়িয়ে দেখল মিশকাত আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে গায়ে পারফিউম মাখছে। তাকে ডাকতে গিয়েও আরিন্তা চুপ মে’রে গেল। মিশকাতের পারফিউম মাখার দৃশ্যটা দেখতে তার ভালো লাগছে। মিশকাতের সম্পূর্ণ মনোযোগ এখন আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বের ওপর। এই সুযোগটা আরিন্তা ছাড়ল না। ঠাঁয় দাঁড়িয়ে মনোযোগ দিয়ে দেখতে লাগল। মিশকাত আজ কালচে সবুজ শার্ট পরেছে। পরনে দারুণ মানিয়েছে। ফরসা হওয়ার সুবাদে ছেলেটাকে যেকোনো রংয়ের শার্টেই মানায়। শার্ট, প্যান্ট, কেডস পরে লম্বা, চওড়া একটা সুদর্শন পুরুষ আয়নায় দাঁড়িয়েছে নিজেকে আরও গুছিয়ে নিতে। অথচ আরিন্তার চোখে এটুকুতেই তাকে রাজপুত্র লাগছে। যদিও রাজপুত্রদের পোশাক আলাদা থাকে। তবু মিশকাতের সৌন্দর্যের উপমায় আরিন্তা রাজপুত্র-ই মানানসই মনে করে। আধুনিক রাজপুত্র। মিশকাত যখন এমনভাবে নিজেকে খুব গুছিয়ে আরিন্তার সামনে পড়ে, আরিন্তা তখন বিভোর হয়ে মিশকাতকে দেখে। মিশকাত তার এহেন কাণ্ডে হাসলেও, সে দৃষ্টি ফেরায় না। দেখতে-দেখতে ভাবে,
“এই অতীব সুন্দর পুরুষটা তার ব্যক্তিগত মানুষ। এই সুদর্শনকে এমন মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখার অধিকার সে ব্যতীত পৃথিবীর দ্বিতীয় কোনো রমণীর নেই।”
মিশকাত আয়নার মাঝেই আরিন্তাকে খেয়াল করেছে। কিন্তু আরিন্তার মনোযোগ না ভেঙে সে নিজের মতো চুলে চিরুনি চালাচ্ছে। অনেকটা সময় কে’টে গেলেও যখন আরিন্তা কোনোরকম রা না করে চুপচাপ দাঁড়িয়েই রইল, তখন মিশকাত আয়নার দিকে ঘুরেই বলে উঠল,
“কাকে চাই?”
আরিন্তা বুঝল মিশকাত তাকে দেখে ফেলেছে। সে স্বাভাবিকভাবেই কয়েক পা এগিয়ে ভেতরে ঢুকে বলল,
“এ ঘরের অস্থায়ী মালিককে।”
মিশকাত ভ্রু জোড়া কুঞ্চিত করে শুধাল,
“কে বলল আমি অস্থায়ী মালিক?”
“স্থায়ী মালকিন।”
“আমি তো এ ঘরে নিজেকে ছাড়া আর কোনো মালকিন দেখি না।”
“সে আসার আগ পর্যন্তই তোমার মালিকানা থাকবে জনাব অস্থায়ী মালিক। সে আসার পর থেকে শেষ পর্যন্ত সে-ই স্থায়ী মালকিন।”
“তা স্থায়ী মালকিন নিজের মালিকানা কবে ফলাতে আসবে?”
“আমি কী জানি!”
হাতের ঘড়িটা ঠিক করে মিশকাত চট করে ঘুরে দাঁড়াল। এগিয়ে এসে আরিন্তার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নিচু স্বরে বলল,
“জানতে হবে না। চল বিয়ে করে নিই।”
আরিন্তা চোখ পাকিয়ে বলল,
“সাহস কত!”
“এ ঘরের মালিকানা হস্তান্তর করতে এটুকু সাহসের দরকার আছে।”
“আমার মালিকানা আমি সময়মতো বুঝে নেব। তোমাকে দিতে হবে না। আগে বলো, এমন সেজেগুজে কোথায় যাওয়া হচ্ছে?”
মিশকাত শার্টের হাতা ভালোভাবে ফোল্ড করতে-করতে বলল,
“বন্ধুদের সাথে দেখা করতে। বললামই তো।”
“ক্যারম খেলার জন্য যাচ্ছ না?”
“হ্যাঁ।”
আরিন্তা হুট করে মিশকাতের আস্তিন চেপে ধরল। বলল,
“এমন সাহেব সেজে তুমি যাচ্ছ ক্যারম খেলতে? আমাকে বোকা বানানো অত সোজা না মিস্টার পোল্ট্রি। তাড়াতাড়ি সত্যি কথা বলো।”
মিশকাত কপাল কুঁচকে তাকাল। কথায়-কথায় আরিন্তার এই আস্তিন চেপে ধরার স্বভাবটা মিশকাতের ভালো লাগে। রাগ বা বিরক্ত হলেই সে এভাবে আস্তিন চেপে ধরে। মিশকাতের কাছে এটা আরিন্তার ব্যক্তিগত অধিকার।
আরিন্তা আস্তিন চেপে ধরে জেরা করলে মিশকাত মুচকি হেসে বলল,
“রিমা সুন্দরীর সাথে আজ ফার্স্ট ডেট। আমাকে হ্যান্ডসাম লাগছে না?”
আরিন্তার মুখোভাব নিমেষেই পালটে গেল। আস্তিন ছেড়ে দুহাত তুলে মিশকাতের সদ্য আঁচড়ানো চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে বলল,
“সুন্দরী? হ্যান্ডসাম? ও বাঁদর আর তুমি ভোঁদড়।”
“হিংসুটে মেয়ে, কী করলি এটা? আমি কষ্ট করে কত সুন্দর করে চুল আঁচড়েছিলাম।”
আরিন্তা আবারো শুধাল,
“কোথায় যাচ্ছ তুমি?”
“শুনে কী করবি?”
আরিন্তা বিরক্তির সুরে বলল,
“তুমি সোজাসাপ্টা উত্তর দিতে পারো না?”
“না।”
“মিশু ভাই-”
“ভয় লাগছে, রিমার সাথে সত্যি-সত্যি ডেটে যাচ্ছি কি না ভেবে?”
আরিন্তা মুখ ফুলিয়ে শক্ত মুখোভাব করে বলল,
“না।”
“না কেন?”
“আমি কি জানি না তুমি মিথ্যা কথা বলছো?”
“জানলে আবার গাল দুটো এমন ফোলে কেন?”
“তুমি বারবার ওর নাম নাও কেন?”
“নাম নেওয়া-ও বারণ?”
“অবশ্যই বারণ। তোমার মুখে থাকবে শুধু আমার নাম, আরিন্তা। বুঝেছ?”
মিশকাত এলোমেলো চুলগুলো হাত দিয়ে ঠিক করতে-করতে বলল,
“না বুঝে উপায় আছে?”
আরিন্তা আবারো হাত তুলে মিশকাতের হাতের ফাঁক দিয়ে চুলগুলো আরও এলোমেলো করে দিলো। কড়া গলায় বলল,
“খবরদার, যদি এমন সেজেগুজে কোনো মেয়ের সামনে গিয়েছ-”
আরিন্তার কথার মাঝে বাঁধা দিয়ে মিশকাত তার হাত দুটো টেনে নিয়ে নিজের দুই কানে চেপে ধরে বলল,
“আমার ঘাড়ে একটার বেশি মাথা নেই মহারানি, তা-ও আপনার দখলে। গর্দান নিলে আপনার ভাগেরটাই আপনি নেবেন। এবার ভালোয়-ভালোয় আমার চুল ঠিক করে দিন। দুইবার এলোমেলো করেছেন। এবার নিজ দায়িত্বে গুছিয়ে দিন।”
কথাটা বলতে-বলতেই মিশকাত কান থেকে আরিন্তার হাত দুটো নিজের মাথায় তুলে নিয়েছে। সেই সুযোগে আরিন্তা খপ করে মিশকাতের চুলগুলো মুঠোয় চেপে ধরে বলল,
“আগে বলো ফেরার সময় যা আনতে বলব, আনবে।”
“কী চাই?”
আরিন্তা চুলের মুঠি ছেড়ে দিয়ে মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল,
“চটপটি নিয়ে আসবে।”
মিশকাত সরু দৃষ্টি নিক্ষেপ করে জিজ্ঞেস করল,
“সুবর্ণা পাঠিয়েছে?”
“না, আমার খেতে ইচ্ছা করছে।”
“আমার জানা আছে তোদের কু’টনামি।”
“বলছি তো আমার জন্য আনবে।”
“ঠিক আছে, তাহলে আমি এক প্লেট নিয়ে আসব তোর জন্য।”
আরিন্তা বলে উঠল,
“এই না, এক প্লেট আনবে কেন? খালা আর সুবর্ণাকে রেখে আমি একা খেতে পারি?”
“মা এসব খায় না।”
“সুবর্ণা তো খায়।”
“খেলে নিজের টাকায় এনে খাক।”
“এমন করো কেন? ও তোমার ছোটো বোন না?”
“তোকে ওর হয়ে কথা বলতে কে ডেকেছে? সর সামনে থেকে।”
আরিন্তা মিশকাতের কপালে পড়া চুলগুলো ডান হাতে ঠেলে পেছনের দিকে সরিয়ে দিতে-দিতে নরম গলায় বলল,
“শোনো না, ফেরার সময় আমার আর সুবর্ণার জন্য চটপটি নিয়ে এসো প্লিজ।”
মিশকাত বলল,
“ঢং কমিয়ে কর। আগে বল বিনিময়ে আমি কী পাব।”
“আমার সাধ্যের মধ্যে তুমি যা চাইবে।”
মিশকাত ভ্রু উঁচিয়ে বলল,
“সত্যি তো? যা চাইব দিবি?”
আরিন্তা আঙুল উঁচিয়ে বলল,
“এই, তুমি মনে-মনে কী মতলব আঁটছো? আমি কিন্তু আগেই বলে দিয়েছি, যা চাইবে তা আমার সাধ্যের মধ্যে থাকতে হবে। উলটা-পালটা কিছু চাওয়া নিষেধ।”
মিশকাত কন্ঠস্বর খাদে নামিয়ে বলল,
“উলটা-পালটা চাওয়া কী পোনি?”
আরিন্তা চোখ পাকিয়ে তাকালে মিশকাত হেসে ফেলল। এগিয়ে গিয়ে চিরুনিটা নিয়ে আসতে-আসতে বলল,
“ওকে, ডান। আমি ফেরার সময় তোদের দুজনের জন্যই চটপটি নিয়ে আসব। আমার চাওয়া পূরণের জন্য প্রস্তুত থাকিস।”
কথাটা বলেই মিশকাত চিরুনিটা আরিন্তার হাতে ধরিয়ে দিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়াল। আরিন্তা মুচকি হেসে মিশকাতের চুলে চিরুনি চালাতে-চালাতে বলল,
“খালা দেখলে একদম চুল কামিয়ে ন্যাড়া করে দিবে মিস্টার পোল্ট্রি।”
“উঁহু, বিয়ে করিয়ে বউ এনে দিবে।”
আরিন্তা হাত থামিয়ে বলল,
“কী এনে দিবে?”
মিশকাত হেসে বলল,
“পোনি বউ।”
“শয়তান কোথাকার।”
ঠোঁট টিপে হেসে আরিন্তা মিশকাতের চুলগুলো যত্ন সহকারে গুছিয়ে দিলো। ওয়ালেট পকেটে ঢুকিয়ে মিশকাত দরজার দিকে পা বাড়িয়ে বলল,
“আসছি।”
আরিন্তা ঠোঁট উলটে বলল,
“বললে না কোথায় যাচ্ছ?”
মিশকাত থেমে গেল। পুনরায় পিছিয়ে গিয়ে নিচু স্বরে বলল,
“বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাচ্ছি। মা এখন শুনলে চেঁচামেচি করবে, তাই বলিনি। কাউকে বোলো না, ঠিক আছে?”
আরিন্তা মাথা হেলিয়ে বলল,
“আচ্ছা। তাড়াতাড়ি ফিরবে।”
মিশকাত হাসিমুখে আরিন্তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,
“আমার লক্ষ্মী পোনি। চিন্তা কোরো না, জীবনে কোনো মেয়ের সাথে ডেটে গেলে সে তুমিই হবে। আমার ঘাড়ে তো মাথা একটাই।”
•
মিশকাত চটপটি নিয়ে এসেছে। চটপটি পেয়ে সুবর্ণা সঙ্গে-সঙ্গে চেয়ারে পা তুলে খেতে বসে পড়েছে। মিশকাত সুবর্ণার মাথায় টোকা দিয়ে বলল,
“রাক্ষসী, এসব গেলার জন্যই আরিকে ঠেলে পাঠিয়েছিলি, তাই না?”
সুবর্ণা বলল,
“আমি বললে আনতে?”
“আনলে তোর শুকরিয়া আছে? ফাজিল।”
“সরো, এখন শান্তিতে খেতে দাও।”
“সরবো কোথায়? আমি কষ্ট করে চটপটি এনে ঘেমে গেছি, এখন কৃতজ্ঞ মানুষের মতো আমাকে ঠান্ডা শরবত বানিয়ে খাওয়া।”
সুবর্ণা বলল,
“তুমি চটপটি এনেছ, না পাথরের বস্তা বয়ে এনেছ যে ঘেমে গেছ? আর অজুহাত খুঁজে পাও না?”
মিশকাত শ্লেষের সুরে বলল,
“এজন্যই তোর মতো অকৃতজ্ঞকে কিছু এনে দিতে হয় না। এই আরি, চটপটি আনার জন্য তুই তখন হাতে-পায়ে ধরেছিলি না? এখন যা, আমাকে শরবত বানিয়ে খাওয়া।”
আরিন্তা কপাল কুঁচকে তাকাল। হাতে-পায়ে কবে ধরল সে? সুবর্ণা বলেও ফেলল,
“হাতে-পায়ে ধরেছে মানে?”
মিশকাত ধমকের সুরে বলল,
“তোর দরকার। তোর গেলার কাজ গিল, রা’ক্ষসী। এই আরি, তুই উঠছিস না কেন?”
আরিন্তা বলল,
“আমার চটপটি ঠান্ডা হয়ে যাবে।”
“ঠান্ডা হলে গরম করে খাবি। এই সুবর্ণা রা’ক্ষসীর সাথে তুইও অকৃতজ্ঞ হয়েছিস? তখন তো খুব অনুরোধ করেছিলি। এখন যখন এনে দিয়েছি, হাতে পেতেই চেহারা পালটে ফেলেছিস?”
আরিন্তা কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে যাচ্ছিল। কিন্তু মিশকাত চোখের ইশারায় তাকে দ্রুত উঠতে বলল। আরিন্তা ভ্রুকুটি করল। মিশকাত পুনরায় ইশারা করলে আরিন্তা উঠতে-উঠতে বলল,
“দিচ্ছি।”
আরিন্তা রান্নাঘরে গেল শরবত বানাতে। মিশকাত হাত বাড়িয়ে সুবর্ণাকে বলল,
“আমি একটু খেয়ে দেখি, দে।”
সুবর্ণা চটজলদি হাত দিয়ে বাটি ঢাকা দিয়ে বলল,
“দেখে এনেছ না? আর কী দেখবে?”
“আমি আনলাম আর আমাকেই দিবি না?”
“আমাদের জন্য এনেছ, আমরা খেয়ে অবশিষ্ট থাকলে তুমি খাবে।”
“শয়তানের হাড্ডি, তোর চটপটি গেলানো বের করছি। দে আমার টাকা ফেরত দে তাড়াতাড়ি।”
“কিসের টাকা?”
“আমার টাকায় চটপটি এনেছি সেই টাকা।”
“আমি তোমাকে আনতে বলেছি? আরি আপু বলেছে, তার কাছে চাও।”
“বেয়াদব, গিলছিস তো তুই। হাত সরা।”
মিশকাত সুবর্ণার হাত টেনে সরিয়ে চটপটি খেতে গেলেই সুবর্ণা গলা ফাটিয়ে চেঁচিয়ে উঠল,
“মা…ভাইয়াকে কিছু বলো। দেখো, আমার সাথে কেমন শ’য়তানি করছে।”
আয়েশা সোফায় হেলান দিয়ে বসে গভীর মনোযোগ দিয়ে টিভিতে সিরিয়াল দেখছিলেন। মেয়ের চিৎকারে মুখ ঘুরিয়ে তাকালেন। চোখ গরম করে রাগত স্বরে বললেন,
“মিশকাত, ওর কাছ থেকে সর তুই। আমাকে যেন উঠতে না হয়। কানের কাছে আর চিৎকার, চেঁচামেচি করলে খবর আছে।”
মিশকাত সুবর্ণার হাত ছুড়ে ফেলে দিলো। তারপর আরিন্তার বাটি থেকে এক চামচ চটপটি তুলে মুখে দিতেই সুবর্ণা আবার চেঁচিয়ে উঠল,
“আপু, তোমার চটপটি খেয়ে ফেলল।”
আরিন্তা রান্নাঘর থেকে উত্তর দিলো,
“আমারটা যে খাবে তার আজ রাতেই পেটব্যথা হবে।”
ততক্ষণে মিশকাত তিন-চার চামচ খেয়ে ফেলেছে। আরিন্তার কথা শুনে সে বলল,
“যার অভিশাপ তার ওপর-ই ফলবে।”
মিশকাত নিজের রুমে চলে যাওয়া ধরতেই সুবর্ণা বলল,
“শরবত খেয়ে যাও না কেন এখন?”
মিশকাত যেতে-যেতে বলল,
“এক গ্লাস শরবতের জন্য অপেক্ষা করতে-করতে আমার সমস্ত চুলে পাক ধরে যাবে। বানানো হলে দিয়ে যেতে বলিস।”
চলবে, ইন শা আল্লাহ্।