বিধবা পর্ব-১৩

0
1988

♥ বিধবা ♠
{ The insane love }
Writer : Nabila Ishq
Part : 13
রেস্টুরেন্টে ঘটে যাওয়া ছিন মনে করতেই ইছমির গাল দুটো লাল হয়ে যাচ্ছে। এমন ভাবে কিস মানে অনেকটা জড় করেই করেছে ইম্রেত। বাট তারপর ও অনেক ভালো আর শরম অনুভব হচ্ছে ইছমির।
ভালোবাসার মানুষের সব খুটিনাটি ব্যাপার গুলি ভালো লাগে আমাদের। তাই হয়তো ইছমির
সাথেও হচ্ছে। না চাওয়া, না পাওয়া ভালোবাসা পেয়েছে সে ইম্রেতকে হারাতে চায় না ইছমি। ইছমি ভেবেই খুশি হয়ে যায় যে তার জন্য ভালো হতে চাচ্ছে ইম্রেত। কতটুকু ভালোবাসলে কেউ কারো জন্য বদলাতে পারে। বিছানায় গা এলিয়ে চোখ দুটি আবেশে বন্ধ করলো ইছমি। চোখের কোনা দিয়ে এক ফোটা পানি বেড়িয়ে এলো। ইছমির ভাবতেই বুকে ব্যাথা অনুভব হচ্ছে যে ইম্রেতকে সে অন্যকারো ভেবেছে। বড্ড ভালোবেসে ফেলেছে ইম্রেতকে। মায়ায় জড়িয়ে গেছে ইম্রেতের।
ইম্রেতের প্রত্যেকটি ব্যাপার ইছমির ভালোলাগে।
সে জানে না এই ভালোবাসার কি পরিণতি হবে কিন্তু ইছমিও ইম্রেতকে ছাড়া নিজেকে ভালো রাখতে পারবে না। তার জীবনের সাথে মিশে গেছে ইম্রেত।
ইছমির ভালোলাগছে না তাই আজ আর কলেজ যাবে না। কেমন এক অজানা ভয় হচ্ছে সব ঠিক আছে তো। ইছমির মনে ভয়ের আতংকা। ইম্রেতকে যে হাড়াতে চায় না। চিন্তাভাবনা করতে করতেই ঘুমিয়ে পড়েছে।
ঘুম ভাংলো ফোনের ভাইব্রেশনে। ঘুমানো অবস্থায় সাইড লেম্প টেবিল থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে তাকিয়ে দেখলো ৭ টা বাজতে চলল। তারমানে সকাল ১১ থেকে এই পর্যন্ত সে ঘুমিয়েছে। এই ঘুম গুলি এতোদিন কোথায় ছিলো। সারাদিন ঘুম তো আসতোই না রাত্রে তো কখনি ঘুমাতে পারতো না।আর ইম্রেত জীবনে আসার পর থেকে সব কিছু ভাল লাগে। আর ঘুমটাও অনেক বেশি আমার তা ও জানা হলো।
হুড়মুড়িয়ে উঠে বসলো। ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলো ৫৬ টা কল সাথে ৩৪ টা মেসেজ ইম্রেতের নাম্বার থেকে। ইছমি কল ব্যাক করবে তার আগেই ইম্রেতের কল তাড়াতাড়ি রিছিভ করলো ইছমি। ফোনটা কানে নিতেই ইম্রেতের আওয়াজ….
” সকাল ১১ টায় বাসায় পৌছিয়ে দিয়ে বললাম বাসায় এসে কল করবো তোমায়। আর তুমি পুরো ৬_৭ ঘন্টা ঘুমিয়েছো।
ইছমি আসোলেই বুঝতে পারে নি যে সে এতো ঘুমোবে। তার উপড় কেউ ডাক ও দেয় নি তাকে।
ফোন কানে গুজে চুপ হয়ে রয়েছে ইছমি। ইম্রেত শান্ত গলায় বলল…
” সকাল থেকে এখনো খাও নি?
ইছমি আমতা আমতা করতে লাগলো। ইম্রেত ইছমির আমতা আমতা দেখে বুঝে গেলো সে খায় নি। তাই বলল…
” ১০ মিনিট পর কল ব্যাক করছি। তুমি খেয়ে নাও৷
ইছমি বলল…
” আপনি খেয়েছেন?
” কখন খেলাম? ১২ টা থেকে কল করছি তোমায় আর তুমি ঘুমাচ্ছিলে। বাই দা ওয়ে অনেক মিস করছিলাম তাই।
আচ্ছা যাও খেয়ে নাও আমিও খেয়ে আসি।
ইছমি মুখ ধুয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে দেখলো সবাই বসে বসে টিভি দেখছে ডাইনিং রুমে। ইছমিও মহিনির পাশে গিয়ে বসলো। মহিনি বলল..
” কেমন ঘুম হলো?
” তোমরা আমায় এতো ঘুমুতে দিলে। উঠিয়ে দিলে কি এমন হতো।
” আরেহ মা বলল যে তোমার শরীরটা ক্লান্ত দেখাচ্ছিলো তাই আর জাগায়নি।
ইছমির মা কিচেন থেকে চিল্লিয়ে বলে উঠলো..
” টেবিলে বস আমি খাবার দিচ্ছি খেয়ে নে।
ইছমিও চুপচাপ বসে পরে খাওয়ার জন্য। খাবার খেয়ে রুমে গিয়ে ফোন হাতে নিলো না এখনো কল করে নি ইম্রেত। ফোনটা রেখে দেবে তখনি ইম্রেত কল করে…
ইছমি ফোন রিছিভ করতেই ওপাশ থেকে ইম্রেত বলল….
” একটু বের হও তো।
” [ চমকিয়ে ] কোথায়?
” তোমাদের মেইন্ড ডোরে দাঁড়িয়ে আছি।
” এখন কিভাবে বের হবো? মহিনি, মা তো ডাইনিং এ বসে আছে।
” তো?
” আচ্ছা আসছি।
ইছমির এক আলাদা ভালোলাগা কাজ করছে। লুকিয়ে লুকিয়ে কারো সাথে দেখা করা। অনুভবটা সম্পুর্ণ নতুন ইছমির জন্য।
ডাইনিং রুমে এসে চারপাশে চোখ বুলাচ্ছে। মা কিচেনে আর মহিনি নিজের রুমে কিমরান এর সাথে কথা বলছে। চুপচাপ ধিরু পায়ে গেট ওপেন করে বের হলো ইছমি। দরজাটা চাপিয়ে সামনে তাকিয়েই ইম্রেতকে দেখতে পেলো। হোয়াইট হাফ কুয়াটার পেন্ট, ফুল হাতার ব্লাক গেঞ্জি। হাতে ফোনটা ঘুরাতে ঘুরাতে ইছমির দিক এগোচ্ছে।
ইম্রেত ইছমিকে দেখে মুচকি হেসে ফেলল। একদম সাদাসিধা ভাবে তার সামনে পিচ্চি ইছমি। সাদা ছোটো কামিজ পরা। দেখতে একদম বাচ্চাদের মতো দেখাচ্ছে। তার উপর ইছমির মায়াভরা ভিতু রূপ। ইছমি মুচকি হেসে দিলো। আর ইম্রেতের ঠোঁটে সবসময় এক মুচকি হাসি থাকে যেটা ইছমি অনেক পছন্দ করে।
ইম্রেত আরো দু পা এগিয়ে এলো ইছমির। ইছমি শরম পেয়ে নিচেই তাকিয়ে আছে আর ইম্রেত তার সুইটি কে দেখছে। ইম্রেত ভাবছে শুধুশুধু কি সে ইছমিকে সুইটি বলে। আসোলেই মিষ্টির মতো সুইট দেখতে ইছমি। তাই নামটাও পারফেক্ট মানিয়েছে।
ইছমি ইম্রেতের দিক তাকিয়ে বলল…
” উহুম উহুম
ইম্রেত ইছমিকে দেখতে বিভর ছিলো। ইছমির ডাকে ইম্রেত ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলল…
” উহুম উহুম মানে কি?
” আজিব [ নিচে তাকিয়ে ] আসোলে কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছি। তো কেনো ডেকেছেন তাও বলছেন না।
” তাই এতো তাড়া কিসের সুইটি।
ইম্রেত ইছমির হাত ধরে টেনে লিফট এ উঠে ৬ বাটন এ ক্লিক করলো। ইছমি হতবাক এর মতো দাঁড়িয়ে দেখছে। ইছমি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে উঠলো….
” আমি তো কাউকে বলে আসি নি। টেনশান করবে তো।
ইম্রেত নিজের পকেট থেকে ফোন বের করে মহিনিকে কল করলো। লিফট থেকে নেমে কথা বলতে বলতে ছাদে যাচ্ছে আরেক হাতে ইছমির হাত ধরে আছে। ইম্রেত বলল…
” মহিনিকে বলে দিয়েছি ও হেন্ডেল করবে।
ইছমি আর কিছুই বলল না। সে জানে ইম্রেত সেই পরিমান এর ঘাড় তেরা। এতোটুকু সে ইম্রেতকে চিনেছে। “”নরম ভাবে গরম কপ মারে”। মানে নরম ভাবে কথা বললেও তার তেজ প্রচুর থাকে।
ছাদে হালকা আলো আসছে হলুদ বাতির, মিটিমিটি জলছে। ইম্রেত ইছমিকে ছাদের কর্নারে এনে হাত ছেড়ে দিলো। ইম্রেত বলল….
” সুইটি আমাকে কখনো খারাপ ভেববে না তো?
ইছমি অবাক দৃষ্টিতে ইম্রেতের দিক তাকায়। ইম্রেত ইছমির দিক তাকিয়ে বলল….
” ভালোবেসেছি তোমায়। থাকতে পারবোনা তোমার ছাড়া। প্লিজ আমাকে খারাপ ভেবে দূরে যেওনা কখনো।
ইছমি ইম্রেতের দিক তাকিয়ে মুচকি হেসে দিলো। ইম্রেত ইছমির হাত টেনে নিজের দিক আনে। আস্তে করে বলল..
” একটা কিস করবা।
ইছমি তো হতবাক। ইছমি অবাক হয়ে ইম্রেতের দিক তাকালো। ইম্রেত বাচ্চাদের মতো হাত দিয়ে গালটা দেখিয়ে দিলো। ইম্রেত বলে উঠলো…
” ডোন্ট ওয়ারি লিপ্স এ করতে হবে না। গালে করলেই চলবে।
ইছমি প্রচুর শরম পেয়ে যায়। নিচে তাকিয়ে মুচকি হেসে দেয়। ইম্রেত বলল…
” কামন সুইটি ওকে আমি চোখ বুঝে ফেলছি তোমার সুবিধার জন্য। ডু ইট।
ইম্রেত আবেশে তার চোখ দুটি বন্ধ করে ফেলল। ইছমি কিস করবে কি? ভয়ে তার রীতিমত কাপাকাপি শুরু। ইম্রেতে মায়াভরা মুখটা দেখে সাহস যুগালো। নিজে নিজেই ভাবছে। গালেই তো করতে হবে হুম পারবো। ইছমি উচু হয়ে চোখ বন্ধ করে তার ঠোট ইম্রেতের গালের দিক নিচ্ছিলো। আর এক ইঞ্চি দূরে থাকতেই ইম্রেত ঘুরে ইছমির ঠোঁটে কিস করে বসলো 😨।
ইম্রেত চমকে উঠলো। ইছমি শরে যাওয়ার আগেই ইছমির কমড় ইম্রেত টাইট করে ধরে নিজের মিশালো। 😝
চলবে…….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে