বাসনা বিসর্জন পর্ব-৩+৪

0
772

#বাসনা_বিসর্জন
লেখিকা সুরিয়া মিম
পর্ব- ৩

জাহানারা বেগম তখন এই সুযোগ টাই কাজে লাগিয়ে ছেলেকে বললেন,
– “এর জন্য’ই বাবা, আমি তোমাকে দ্বিতীয় বিয়ের পরামর্শ দিয়েছি।”
কমিশনার সাহেব চট করে’ই রেগে গিয়ে বললেন।
– “তুমি একটু থামবে মা? আমি আমার ছেলের সাথে কথা বলছি।”
– “তুমিও আমার ছেলে,বাবা।”
– “এটা আমার দুর্ভাগ্য যে আমি এই এরকম একটা বাড়িতে জন্মেছি।”
– “বাবা?”
– “হ্যা, আমি একদম সত্যি বলছি। বুঝিনা, তোমাদের আসল সমস্যা টা কি?
মা,তোমার পছন্দসই মেয়েকে ভালোবেসে বিয়ে করে
এ বাড়িতে বউ করে এনেছিলাম। দেখ না, আমি সুখী হতে পেরেছি কি? হইনি!
তাহলে কেন তোমরা আমার এবং আমার ছেলের জীবন হুমকির মুখে ফেলতে চাইছ শুনি?”
– “মানলাম, আমরা অপরাধী। কিন্তু…।”
– “কোনো কিন্তু না মা।
– আমি মাশীদকে নিয়ে খুব শীঘ্রই নিজস্ব কোয়ার্টারে শিফট করছি। ডিসিশন ফাইনাল, এবার শান্তিতে পুরো বাড়ি জুড়ে থেকো তুমি।”জাহানারা বেগম গিয়ে স্বামীর কাছে জিজ্ঞেস করলেন।
– “হ্যাঁ গো আমি ভুল কি বলেছি?”
– “তুমি ভুল বলেছ, জাহানারা। আর তোমার কথায় প্ররোচিত হয়ে আমি আমার সন্তানের ক্ষতি করেছি। একটা কথা সত্যি,
সৎ মা কখনো নিজের মা হতে পারে না কি? আমার জীবনে তোমাকে জড়িয়ে আমি নিজের জীবনের সব চেয়ে বড় ভুল টা করেছি।”
– “তুমি এই কথা বলতে পারলে?”
– “হ্যাঁ, পারলাম। এখন তুমি আসতে পারো। আমি সত্যি বলতে খুব বিরক্ত হচ্ছি।” কমিশনার কান ধরে ছেলেকে বললেন,
– “আমি সত্যি’ই খুব দুঃখিত, বাবা।” মাশীদ হঠাৎ বাবাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– “জানো? আমি আজ সারা দিন এই হাতি টয় টা দিয়ে খেলেছি।”
– “এটা এতো পছন্দ তোমার?”
– “খুব পছন্দ, আচ্ছা ওই আন্টি আবার রাগ করবে না কি?” তিনি মুচকি হেসে বললেন,
– “মোটেও না, ওনাকে আমি নতুন একটা টয় কিনে দিয়ে এসেছি।”
– “একদিন আমাকে ওই আন্টির কাছে নিয়ে যাবে তুমি?”
– “কেন?”
– “না ওই আরকি, এমনি বলছি। আমাকে নিশ্চয়ই খুব আদর করবেন?”
– “কেন করবে না? তুমি তার সন্তানের মতোই বেবি।
…..”
– “সন্তান? ওটা আবার কি?”
– “ওই লিটল বেবি আরকি?”
– “আচ্ছা,
ওই আমি আন্টি কে কি এর আগে দেখেছি?” সে ছেলের গাল টেনে বললো,
– “নাহ…!” মাশীদ বাবার গাল টেনে বললো,
– “এমন করলে কেন? আমি তো ব্যাথা পাচ্ছি নাকি?
….”
– “সরি, বেবি।”
– “হোয়াই সরি? হুমম? আমি মজা করছি।” আরমান সাহেব গিয়ে বাপ ছেলে’র খুনসুটি দেখে হাসতে হাসতে বললেন,
– “দু’জনের কারো খিদে নেই না কি?” কমিশনার সাহেব হাসতে হাসতে বললেন,
– “তুমি ওকে নিয়ে যাও বাবা। আমি ফ্রেশ হ’য়ে আসছি।” তখন পরন্ত বিকেল,
মিমকে চুপচাপ দেখেই তারা সকলো গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
– “কি রে তোর আজ হয়েছে টা কি?” মিম হাসি মুখে বললো,
– “তেমন কিছুই না, গো। শুধু, পুরোনো কিছু হিসেব মেলাচ্ছি।”
– “এতো লাভক্ষতির হিসেব-নিকেশ করে লাভ কি?” মিম হাসতে হাসতে বলে উঠলো,
– “লাভ তো আছে,
মাধবী বুবু৷ ধরে নাও, না। আমি আমার অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য ধীরে ধীরে নিজেকে তৈরি করে তুলেছি।
ওদের জন্য আজ আমার সন্তান আমার কাছে নেই।
ওদের আমি এমনি এমনি ছেড়ে দেবো। তা হ’য় না কি?”
– “তোর আসল পরিকল্পনা টা কি?”
– “সেটা বাস্তবায়ন করার সময় এখনো যে আসেনি, বুবু। আমি এখনো সঠিক সময় আসার অপেক্ষা করছি…..”
– “এতো কিছু করে নিজের সন্তান কে নিজের কোলে ফিরে পাবি কি?”
– “তাকে পাই আর না পাই,এসব কিছু আমি আমার বাচ্চা’র নিরাপত্তার জন্য করছি।” মাধবী হাসি মুখে বললো,
– “এর জন্য’ই আমরা তোকে এতো শ্রদ্ধা করি ভালো বাসি।” তখন বসুমতী গিয়ে মিমকে বললো,
– “শুনলাম, নতুন ঘোষণা এসেছে। কাল থেকে তুই নাকি আমাদের ‘কোরআন তেলাওয়াত’ করাবি?”
মিম বললো,
– “কোরআন তেলাওয়াত করাবো, তা ঠিক। তবে তোমার চাইলে সেপারা ও পড়াবো।”
– “মানে কি?
শেষমেশ বুড়ো বয়সে এসে তোর পায়ের কাছে পরে থাকতে হবে না কি?” মিম বললো,
– “পায়ের কাছে পরে থাকবে কেন খালা? দ্বীনি শিক্ষা কি পায়ের কাছে ফেলে রাখার মতো জিনিস আমাকে বোঝাও দেখি…..আমি কি গিয়ে কমিশনার সাহেবকে বলে ছিলাম, আমি তোমাদের কোরআন শিক্ষা দেবো?
তাহলে আমাকে এতো কথা শুনিয়ে লাভ কি?” তখন বিন্তি মাসি এসে বললো,
– “চল চল,রাতের খাবার খাবি চল। সারারাত এখানে বসে কাটানোর শখ হয়েছে না কি?
দেখ বসুমতী, নতুন বড় সাহেব (ইমান) যদি এই মেয়ে টা কে ভরসা করে কোনো দায়িত্ব দিয়ে থাকে। সেখানে আমাদের নাক গলানো উচিৎ হবে না। আশা করি, তোকে বোঝাতে পেরেছি?
আর তাছাড়া এখানে ধর্মীয় শিক্ষার ব্যাপারে কথা হচ্ছে। তুই আমি নিশ্চয়ই কোরআন তেলাওয়াত কর
-তে পারবো না?”
– “দুঃখিত দি-ভাই, আমি আমার ভুল টা বুঝতে পেরেছি।”
– “বুঝতে পারলে ভালো, এখন খেতে চল। রাত তো কম হলো না। শুধুশুধু কথা খরচ করে লাভ কি?”
ওদিকে,
মাশীদ তার নোটবুক দেখাতে দেখাতে বাবাকে বলল
– “দেখ,আমি ক্লাসে একটা কত সুন্দর ফ্লাওয়ার ড্রইং করেছি।”
– “কোই দেখি?”
– “এই দেখ….”
– “ওয়াও, এতো সুন্দর ফুল এঁকেছ তুমি?”
– “হুমম আমি’ই এটা এঁকেছি।” ইমান হাসতে হাসতে বললো,
– ‘বাব বাহ….!….. তুমি তোমার বাবার থেকেও বেশি জিনিয়াস।
– “জিনিয়াস মানে কি?”
– “প্রতিভাবান।”
– “ও আচ্ছা।”
– “চলো,এখুনি সুপার জিনিয়াস বেবিকে ঘুম পারিয়ে দিচ্ছি।” মাশীদ বাবাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– “আমি এখন আর বেবি নই পাপা, বড় হয়ে গেছি।”
– “ওমা তাই?”
– “জ্বি।”
বেলা দশটা, তখন মিমকে পা ঝুলিয়ে বসে থাকতে দেখে রাকা জিজ্ঞেস করলো,
– “কি ব্যাপার তোর আজ কোনো কাজ নেই না কি?”
মিম হাসতে হাসতে বললো,
– “কেন তুমি ভেতরের খবর রাখো না? আমি এখানে নতুন চাকরি পেয়েছি।”
– “হেয়ালি না করে সরাসরি বল।”
– “সাতসকালে উঠে,
সকলকে দিয়ে সেপারা পড়ালাম কোরআন তেলাও- য়াত করালাম, কানে তুলো গুঁজে বসে ছিলে না কি?”
– “দেখ, আমার সাথে একটু মশকরা কম করবি।”
– “সরি পারলাম না গো। অযথা তুমি আমার পেছনে লাগছ। জানি না, আমি তোমার কি ক্ষতি করেছি?”
তখন বিন্তি মাসি এসে মিমকে বললেন,
– “বাদদে তুই ওর কথা, এমন নির্বোধের পেছনে কথা খরচ করে লাভ কি?” মিম বললো,
– “আমি তবে যাই? বাগানের ময়লা গুলো ফেলে আসি….”
– “বেশি দেরি করিবনা, তোকে নিয়ে আজকাল বড্ড বেশি চিন্তায় থাকি।” মিম তখন মুখ টা মলিন করে বললো,
– “আজ যদি আমার জামাই মানুষ টা ভালো হতো। তাহলে আমায় এতো টা দূর্ভোগ কখনো পোহাতে হত না মাসি।
কপাল খারাপ আমার এতোদিন যাবত নিজের লড়াই আমি একাই লড়ে চলেছি। জানি না কতদিন টিকতে পারবো? তবে মৃত্যুর আগে নিজের নারী ছেঁড়া ধনকে একবার বুকে জড়িয়ে ধরতে চাই আমি।” ওর কথা শুনে টুম্পা বললো,
– “মেয়েদের এই এক টাই সমস্যা, বোন। ইমোশনাল কথাবার্তা একটু কম বলবি।”
– “বলেছি তার মানে এই নয় আমি দূর্বল হয়ে পরেছি কিংবা নিজের অতীত ভুলে গিয়েছি। আমি এতো সহজে ভুলে যাওয়ার পাএী না। আমি শুধু সঠিক সময়ের অপেক্ষা করছি…….
যাগগে যাই, গিয়ে ময়লা গুলো ফেলে আসি৷” মিম ময়লা ফেলে আসার সময় আকাশের ঘনকালো মেঘ দেখে মাধবীর কাছে জিজ্ঞেস করলো।
– “বুবু, বৃষ্টি নামার সম্ভাবনা আছে না কি?” সে মিটি মিটি হেসে বললো,
– “নামবে হয়তো…? তা তোর কি বৃষ্টিতে ভেজার শখ হয়েছে না কি?” সে প্রকৃতির রুঢ় রূপ দেখে হাসিমুখে বলে উঠলো,
– “খুব, বুঝতেই যখন পারছ তখন আবার জিজ্ঞেস করার মানে কি?”
– “না মানে, বৃষ্টি পরলে ডেকে দিতাম। তুই যখন চাস না তখন আসি?”
– “ধুরর,রাগ করছ কেন? আমি তো মজাই করেছি।”
হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি পরতে লাগলো। মাধবী হাসতে হাসতে বললো,
– “তুই কত ভিজতে পারো, আজ দেখি।” মিম সাথে সাথে বালতি গামলা রেখে বাগানে ছুটে গেলো। তার সকল পাগলামি দেখে মাধবীর সে কি হাসি? ও বিন্তি মাসির ডাক পেয়ে ছুটে গেলো।
মিম কিছুক্ষণ বৃষ্টিতে ভেজার পর,ভালো করে এদিক সেদিক খেয়াল করে বলে উঠলো,
– “কেউ আবার দেখে টেখে ফেলেছে না কি?” তখন তার নজর ওপরে গেলো। কমিশনার সাহেব নিজের গাম্ভীর্য বজায় রেখে জিজ্ঞেস করলেন,
– “এই ঝড়বৃষ্টির মধ্যে বাহিরে কি?” মিম যেন কিছু সময়ের জন্য বোবা বনে গেলো। কমিশনার তাকে ধমক দিয়ে বললেন,
– “এই ভাবে, কাক ভেজা ভিজে দাঁড়িয়ে থাকলে আপনার ঠাণ্ডাটাণ্ডা লেগে যেতে পারে না কি?” মিম একটু সাহস সঞ্চয় করে বললো,
– “আসলে, আমি এখানে ময়লা ফেলতে এসেছি।” তিনি বললেন,
– “কাজ হ’য়ে গেলে ভেতরে জান, সাদা শাড়ি পরে আপনার বৃষ্টিতে ভেজা উচিত হ’য়নি।”
বিন্তি মাসি এসে তাকে টানতে টানতে ভেতরে নিয়ে গেলেন, মাধবী কে বললেন,
– “তোকে আমি ওর ওপরে নজর রাখতে বলেছি।” মাধবী বললো,
– “বুঝতে পারিনি মাসি।”
– “কবে বুঝবি? হুমম? তুই কি জানিস? এখানকার ওই বাজে লোকগুলোর হাত থেকে আমি মেয়ে টা কে কি কভাবে আড়াল করে রেখেছি?
বয়স তো কম হলো না আমার। নতুন বড় সাহেব যতোই ভালো মানুষ হননা কেন……….পুরুষ মানুষের কোনো ভরসা নাই।
জানিস? বাচ্চা এই মেয়ে টার দিকে কিভাবে তাকিয়ে ছিলেন তিনি।” মিম বললো,
– “তুমি বুবুকে কেন বকছ মাসি? ভুল টা তো আমি করেছি।” তিনি আচমকা ঠাসস করে মিমের গালে একটা চড় মে’রে বসলেন। মাধবীকে আবারও বলতে লাগলেন,
– “তোরা বড়, তোরা তো অন্তত মেয়ে টা কে দেখে দেখে রাখবি।” সবাই নিরব। মিম বললো,
– “তুমি যে শাস্তি দেবে, তা আমি মাথা পেতে নেবো মাসি।”বিন্তি মাসি তাকে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
– ” এখানকার মানুষ গুলো সত্যি’ই খুব খারাপ মা। এ টা তুই কবে বুঝবি?”
– “আমি বুঝি মাসি।”
– “আর কখনো নিজের সীমালঙ্ঘন করিস না, আমি হাতজোড় করছি।”
– “আচ্ছা, করবো না। তবে কমিশনার সাহেব নিতান্ত ভদ্রলোক।
অন্যান্য লোকদের মতো উনি কোনো লোক দেখানো ‘র জন্য কোনো কিছু করেননা।”
– “মানুষের মন কখন বদলে যায় বলাতো যায় না।”
– “আচ্ছা, আমি মনে রাখবো। আর কখনো তোমার কথার অবাধ্য হবো না।” তখন বসুমতী এসে বললো
– “তুমি কেন ওকে অন্ধকার রুমে বদ্ধ ঘরে আটকে রাখছ না?”
– “সেসব আমার সিদ্ধান্ত, এতো কৈফিয়ত তো আমি তোমাকে দেবোনা। তুমি বার কয়েক জেল পালানোর চেষ্টা করেছ………
নিজের সাথে দয়া করে ওকে গুলিয়ে ফেলার চেষ্টা করো না। আর তাছাড়া, লঘু পাপে গুরুদণ্ড আমি কখনো’ই ওকে দেবো না।” রাকা এসে তখন তাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,
– “একদিন তুমি আফসোস করবে বিন্তি মাসি।”তিনি মৃদু হেসে বললেন,
– ” বিন্তি কখনো মানুষ চিনতে ভুল করে না।” সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর,
কমিশনার সাহেব এলেন। তিনি মিমকে জিজ্ঞেস করলেন,
– “কোরআন তেলাওয়াত করাবেননা?” মিম বললো,
– “হ্যাঁ, স্যার। কিন্তু, কনস্টেবল এখনো কোরআন শরিফ নিয়ে আসছেন না।”
তিনি সকলকে তাড়া দিলেন। তয়না এসে বললো,
– “ক্ষমা করবেন স্যার, বুকসেলফে’র চাবি টা আমার কাছে ছিলো না।” তিনি তবুও তাকে ধমকালেন। তার আকুতি কমিশনারের চোখে বিঁধল না।
মিম কোরআন তেলাওয়াত করলো। তার পাশাপাশি অন্য যারা করছিল তাদের ভুল গুলো ধরিয়ে দিলো। অতঃপর,
সে কোরআন তেলাওয়াত শেষ করে কমিশনারকে বললো,
– “স্যার এখানে অনেকেই আরবি উনত্রিশ টি হরফ সম্পর্কে কিছুই জানেন না।”
– “আপনি তাদের সেপারা পড়াতে পারবেন? আমি জেলার কে বলে সকল ব্যবস্থা করে দেবো আপনার কোনো অসুবিধে হবে না।” তখন ফারজানা এগিয়ে এসে বললো,
– “স্যার, সকালে মিম আমাদের সেপারা পড়িয়ে ছিল খুব ভালো পরায় মেয়ে টা।”
– “তাহলে প্রবলেম সল্ভ।
আমি ব্যবস্থা করছি আপনারা একদম ভাববেন না।” মিম তখন ফারজানা কে খোঁচা মে’রে বললো,
– “তোমার এখন ভাব করছ যেন আমি সবজান্তা?”
– “দেখ মিম, তুমি সবজান্তা না হও। কিন্তু, আমাদের থেকে বেশি শিক্ষিত ‘তুমি’ তাই না? তুমি যা জানো কিংবা বোঝো আমরা তো তা জানি না এবং বুঝিও না।”
– “শোনো ফারজানা,
আমার সবচেয়ে বড় পরিচয় আমিও একজন মানুষ। আমি কিন্তু তোমাদের থেকে ভিন্ন না। কাজেই, এই সকল ভেদাভেদ বাদদেও। কখনো মন ছোটো করো না।”

চলবে,,,

#বাসনা_বিসর্জন
লেখিকা সুরিয়া মিম
পর্ব- ৪

ফারজানা তখন, মিমকে বেশ শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো,
– “তুমি সত্যি’ই আমাদের থেকে অনেক আলাদা। কেন যেন? তোমাকে ভীষণ ভালো লাগে আমার।” পাশ থেকে টুম্পা বলে উঠলো,
– “সত্যি বলেছিস, এই মেয়ে (মিম) টা ভীষণ মিশুকে স্বভাবের। শুনলাম, সামনে না কি তোমার পরীক্ষা?
তা পরীক্ষা কি করে দেবে? তুমি তো জেলে তাই না?”
মিম টুম্পা কথা শুনে হাসতে হাসতে বলে উঠলো,
– “ইচ্ছে থাকলেই উপায় হ’য় বোন,তোমরা কি জানো না? হ্যাঁ, আমি জেলে আছি তা ঠিক। তবে, সৎ ইচ্ছে থাকলে কোনো বাঁধা’ই তোমার কাছে বাঁধা বলে মনে হবে না। আর তাছাড়া,জেলে বন্দী থেকেও লেখাপড়া করা যায়…..তোমরা কি সেটা জানো না?
সব ব্যবস্থা কতৃপক্ষ’ই করে দেবে। এই সব আহামরি কোনো বিষয় না৷ আর তাছাড়া, যতোই এখানে কাজ কর্ম করিনা কেন?
নিজের স্বপ্ন টাকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করা কোনো অপরাধ না। যাগগে সে সব কথা, তোমরা কি কেউ এখন খাবে না?”
ওরা দু’জনে’ই কৌতুহল বশত জিজ্ঞেস করে বসলো।
– “জেলে বন্দী থেকেও লেখাপড়া করা যায়? বিশ্বাস করো, আমরা এই বিষয়ে আগে জানতাম না।” মিম মুচকি হেসে বললো,
– “সবাই যে সব বিষয় সম্পর্কে জানবে, বিষয় টি মোটেও তেমন না।
আমি এই ব্যাপারে আমার ল’ইয়ারের কাছ থেকে জেনে ছিলাম। তিনি বলেছেন,
– “জেলে বসে পড়ালেখা করা কোনো অসম্ভব বিষয় না।”
যাগগে, আমি একটু ঘরে যাচ্ছি, শরীর টা মোটেও ভালো লাগছে না। তখন’ই বিন্তি মাসি এসে মিমের হাতে একটা প্যারাসিটামলের পাতা দিয়ে বললেন।
– “অসময়ে বৃষ্টিতে ভিজে তোর জ্বর না বাঁধালে হচ্ছি
-লোনা?” মিম হাসতে হাসতে বললো,
– “বকুনি দিতে দিতে তো আমার কান টা ঝালাপালা করে ফেললে। এবার, দয়া করে একটু চুপ যাও না।” বিন্তি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
– “কি বললি?” মিম শুকনো ঢোক গিলে বললো।
– “আমার জ্বর হ’য়নি। শুধু শুধু, জ্বরের ঔষধ খাওয়া উচিত না।
কিডনি ড্যামেজ হয়ে যায় জানো?
ডক্টর প্রেসক্রব না হলে অযথা কোনো ঔষধ সেবন উচিত না।”
– “হুমম, বুঝলাম। কিন্তু, তুই তো আবার সব জান্তা তাই না?”
– “দেখ মাসি,
আমি যুক্তি দিয়ে বিষয়টির গুরুত্ব তোমায় বোঝানো
‘র চেষ্টা করছি, তুমি প্লিজ রাগ করো না।” ওর কথায় বিন্তির মুখে হাসি ফুটে উঠলো সে মিমের মাথায় হাত রেখে বললো,
– “তুই জীবনে অনেক বড় হবি মা, আমি বলে দিচ্ছি। আর বেশিদিন তোকে সন্তান বিচ্ছেদের যন্ত্রণা সহ্য করে হবে না।” মিম তখন তার চেপে ধরে হাসি মুখে বললো,
– “তুমি যখন বলছই মাসি,তখন আনি আর আশাহত হবো না।”
– “তখন চড়টা খেয়ে গালে খুব ব্যাথা পেয়েছিলি তাই না?”
– “তুমি তো আমার মায়ের মতোই মাসি,ভুল করেছি। ভুলের শাস্তি দেবে না?” বিন্তি তাকে বুকে জড়িয়ে কপালে চুমু খেয়ে বললেন,
– “বেশি দিন, তোকে আর এই সকল জ্বালা যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে না।”
– “আচ্ছা,
তুমি তবে মন থেকে আমার জন্য দোয়া করে দিও। ছোটো বেলায় শুনেছি, সন্তানের জন্য মায়ের দোয়া না কি কখনো বিফলে যায় না। বিন্তির চোখ, নাক, মুখ লাল হ’য়ে গেলো। কিছু সময়ে’র জন্য মন খারাপ করে ফেললেন মানুষ টা………।
সকাল দশটা,
তখন একজন কনস্টেবল এসে কমিশনারকে জানাল
– “স্যার,
দুইশো বারোতম কয়েদির সাথে বাড়ি থেকে দেখা করতে এসেছে তার, বাবা।”জেলার বললেন,
– “আগে সকল পেপার ওয়ার্ক সম্পূর্ণ হোক। যখন তখন এলেই তো আর দেখা করতে দেওয়া যায় না।”
– “সমস্ত পেপারওয়ার্ক হয়ে গেছে স্যার।
শুধু আপনি, এই আবেদন পএে সাক্ষর করে দিলেই তিনি পেয়ে যাবে দেখা করার অনুমতি টা।” কমিশনার বললেন,
– “সাক্ষর টা করে দিন আজুয়াদ সাহেব। এখানে অযথা সময় নষ্ট করার মনে’ই হ’য় না।”
– “জ্বি, স্যার। আমি দুঃখিত। ”
– “কোনো ব্যাপার না।” কিছুক্ষণ পর,মিমকে ওয়েটিং রুমে নিয়ে আসা হলো…
মিম রাম্মান সাহেবকে দেখে হাসিমুখে জিজ্ঞেস করল
– “আপনি কেমন আছেন বাবা?”
তিনি পুএ বধূর মাথায় হাত বুলোতে বুলোতে বললেন
– “তেমনই আছি, তুমি আমায় যেমন রেখে গেছ মা।”
– “তা হঠাৎ এখানে কি মনে করে?”
– “সামনেই, তোমার পরীক্ষা। তাই প্রয়োজনীয় সকল বই গুলো কিনে নিয়ে এলাম মা।”
– “কিন্তু, বাবা। এইসব কিছু রকোনো প্রয়োজন ছিল না।”
– “প্রয়োজন ছিল মা,
নিজের বখো যাওয়া ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে গিয়ে আমি তোমায় নরকে ঠেলে দিয়েছি। যা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না।
আমি, এখনো জানি না। আমার নাতি কিংবা নাতনি কোথায়?
নিজের ওই কুলাঙ্গার ছেলের জন্য লোক সমাজে মুখ দেখাতে পারছিনা। যদিও বা, ওই ছেলের জন্ম দাতা আমি নই।
কিন্তু আমি ওকে নিজের সন্তানের মতো ভালোবেসে ছিলাম। যাগগে, তুমি কেমন আছো মা?”
– “আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো। আপনি দয়া করে আমা -কে নিয়ে ভাববেন না।”
– “তোমার এই জীবন কখনো প্রাপ্য ছিলো না।”
– “আল্লাহ তাআ’লা হলেন উওম পরিকল্পনাকারী বাবা। আপনি খামোখা কষ্ট পাবেননা।”
উনি যেতেই মাধবী জিজ্ঞেস করলো,
– “তোর শশুর ছিলো লোকটা?” মিম ধূর্ত হেসে বলল
– “হুমম, তবে মোটেও ভরসা যোগ্য না।”
– “মানে?”
– “নাটক করছে,
খুব নাটক বাজ ওই পরিবারের লোক গুলো। যা তুমি কল্পনা করতে পারবেনা।”
– “এতো খারাপ?”
– “বলতে পারো, শয়তানের থেকে ও কয়েক ধাপ এগিয়ে আছে তারা। এই সব ছিল জাস্ট একটা আই ওয়াশ, বুবু।
আমার কাছ থেকে আমার সন্তানের হদীস বের করতে হবে না?”
– “কিন্তু কেন?”
– “লোভ, লোভ খুবই মারাত্মক একটা জিনিস বুবু ও তুমি বুঝবে না।
বর্তমানে আমার দাদা শশুরে’র রেখে যাওয়া সকল ধনসম্পদের মালিক শুধু আমি এবং আমার নিষ্পাপ সন্তান। ওনারা সে সব ভোগ করতে পারছেনা। যার জন্য এতো জ্বালা ওনাদের,
আমাকে জেলে পাঠিয়ে ও তাদের কোনো লাভ হলো না। আমাকে খু*নি প্রমাণ করে ওনার ছেলেকে দিয়ে ডিভোর্স দেয়ালো। এখন, ওই সকল যক্ষের ধন দখল করার একমাত্র হাতিয়ার হলো আমার বাচ্চা টা কিন্তু
সে কোথায়, তা কেউ জানে না।”
– “কিন্তু, তোর দাদাশ্বশুর এমন একটা সিদ্ধান্ত কেন নিয়ে ছিলেন?”
– “বুবু, তা আমি নিজেও জানি না৷ তবে এতটুকুনি ঠিক বুঝেছি যে ও বাড়ির কেউ ভালো মানুষ না। আর হয়তো আমার এবং আমার অনাগত সন্তানের নিরাপত্তার কথা ভেবে’ই দাদু ভাই নিয়েছিলেন এই সিদ্ধান্ত টা।
কি জানি?
তবে মাটির মানুষ ছিলেন তিনি আমি ওনাকে কখনো ভুলবো না। উনি যতদিন বেঁচে ছিলেন আমাকে এক গ্লাস পানি ঢেলে খেতে হতো না।
তার মৃত্যুর সাথে সাথে বেড়িয়ে পরলো ও বাড়ির মানুষ গুলোর আসল রূপ রাতারাতি যেন জানোয়ারে
পরিনত হয়ে গেলো আমার স্বামী মানুষ টা।
যাগগে, আমি এখন আর সেই পুরোনো ইতিহাস ঘাটতে চাই না। আর হ্যাঁ, এই বই গুলোতে কোনো গণ্ডগোল মনে মনে হচ্ছে। এ গুলো আমার কোনো কাজের না। তুমি এক কাজ করো…..এগুলো সরিয়ে রাখো। তবে হ্যাঁ, খালি হাতে ধরতে যেও না। একটা কথা বলো,
কমিশনার সাহেব কি এখানে আছেন? আপাতত, আমি ওনাকে ছাড়া কাওকে ভরসা করতে পারছিনা।
….”
– “কেন?”
– “সে অনেক কাহিনী বুবু, বললে তুমি এখুনি সব বুঝ
তে পারবেনা।”
তখন আজুয়াদ সাহেব জেল পরিদর্শনে এলেন। মিম তাকে জানালো কমিশনার সাহেবের সাথে দেখা কর
তে চাওয়ার বিষয় টা।
তিনি কিছুটা মনঃক্ষুণ্ন হলেন, তবুও স্বাভাবিক থেকে মিমকে জিজ্ঞেস করলেন।
– “কি এমন জরুরী ব্যাপার..! সেটা কি আমাকে বলা যায় না?”
– “আমি অপারগ স্যার।”
– “তুমি আমায় বিশ্বাস করলে ঠকতে না।” মিম তার কথায় হেসে উঠে বললো,
– “এখানে বিশ্বাস অবিশ্বাসের কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
উনি যেহেতু আপনার সিনিয়র,
ওনাকে জানানো নিশ্চয়ই প্রটোকলের মধ্যে পরে তাই না? আর তাছাড়া, এই জেলের বাহিরে আমার শত্রু সংখ্যা অনেক।
আমি নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য আপনাদের বিপদে ফেলতে পারিনা।”
আজুয়াদ এগিয়ে এসে বললো,
– “মিম, আমি তোমার ঘরের লোক বাহিরের কেউ না।”
– “কোনো এক সময় সম্পর্কে আপনি আমার বড় ভাসুর ছিলেন। দয়া করে, সম্পর্কের সীমানা লঙ্ঘন করার চেষ্টা করবেন না”
– “তুমি কি আমাকে কখনো’ই বোঝার চেষ্টা করবে না?”
– “আপনাকে বোঝার দায়িত্ব, আপনার স্ত্রী, সন্তান এবং পরিবারের। বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আমি আপনার জন্য বেগানা নারী ব্যতীত আর কিছুই না।” দু’জনের কথা-কাটাকাটি কমিশনারে’র কান পর্যন্ত পৌঁছে গেলো। তিনি আর অপেক্ষা করলেননা। উনি আসতেই মিম তার সাথে আলাদা ভাবে কথা বললো
রাম্মান সাহেবের বই গুলো দেখিয়ে বললো,
– “স্যার,
এই বই গুলোর ল্যাবটেস্ট করা অত্যন্ত জরুরী। এত টুকু সাহায্য আপনি আমায় করতে পারবেন না?”
– “শিওর, কিন্তু…….” মিম তাকে বাঁধা দিয়ে বললো।
– “আমি খুব ভীত হয়ে আছি,স্যার। দয়া করে আপনি এগুলো খালি হাতে স্পর্শ করবেন না।” কমিশনার তার কথা শুনে হাসতে হাসতে বললেন,
– “আপনি শুধু শুধু ভয় পাবেন না। কারণ, আমার মনে হ’য়না শপিং ব্যাগের গায়ে কোনো ধরনের ক্ষতি কর পদার্থ লাগানো আছে।”
– “তবুও,
আমি কোনো রিস্ক নিতে চাইছিনা।” কমিশনার তখন তার এক বিশ্বস্ত কর্মচারীকে ডেকে বললেন,
– “এই শপিং ব্যাগের মধ্যে থাকা জিনিস গুলো ল্যাব টেস্টের জন্য পাঠাও…….!
আর হ্যাঁ, আর্জেন্ট ডিক্লেয়ার করতে ভুলবেন না।” শোয়াইব বললো,
– “আপনি একদম নিশ্চিন্তে থাকুন, স্যার। সন্ধ্যায় আপনার হাতে পৌঁছে যাবে ল্যাবটেস্টের রিপোর্ট টা।”
ও যেতে না যেতেই, কমিশনার তাকে কৌতুহল বসত জিজ্ঞেস করেই বসলো…..!
– “হঠাৎ করেই আপনার অতি আপন জনের ওপর বিরক্ত হওয়ার কারণ টা আমি খুঁজে পাচ্ছিনা।” মিম তার কথা শুনে, সরল হাসি দিয়ে বললো,
– “আপনার খুঁজে পাওয়ার কথা ও না।”
– “আপনি ওনাদের প্রচুর ঘেন্না করেন তাই না?” সে সাবলীলভাবেই জবাব দিলো,
– “আপনি নিশ্চয়ই,
আপনার সন্তানের হ*ত্যা করার চেষ্টা কারীকে মন প্রাণ দিয়ে ভালো বাসবেন না?” কমিশনার সাহেব মৃদু হেসে বললেন,
– “সোজা কথা একটু সোজা ভাবে বললে ভালো হতো। আমি এতো প্যাঁচ বুঝি না।”
– “দুঃখিত, কিন্তু আপনাকে দেখে মাম্মা’স বয় বলে মনে হয় না।”
কমিশনার তার দিকে কটমট করে তাকিয়ে পরলো। মিম যেতে যেতে বললো,
– “নিঃস্বার্থ ভাবে আমার উপকার করার জন্য আমি চিরঋণী হয়ে রইলাম। তবে আপনাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোটো করতে চাই না।”
– “এটাও আমার কাজের মধ্যেই পরে, সুতরাং অযথা আমায় তেল মালিশ করতে আসবেন না। আগে দেখি ল্যাবটেস্টে কি রেজাল্ট আসে?
তারপর না হ’য় চিরঋণী হয়ে রইলেন। আমি মাইন্ড করবো না।” মিম মনেমনে বলে উঠলো,
– “অদ্ভুত লোক তো? ভাবের ভরে মাটিতে পা পরছে না।
কি জানি নিজেকে কি ভাবে? তবে সবার কথা চিন্তা করলে তিনি সুদর্শন আবার দেখতেও মন্দনা। যাগগে পাঁচ বছর বয়সী একটা বাচ্চার মা আমি।
শেষকালে বুড়োধুরোর প্রেমে পরে নিজের মানসম্মান খেয়াতে চাই না।” ওর কথা শুনে, মাধবী হাসি মুখে জিজ্ঞেস করলো,
– “একা একাই বুঝি আপন মনে বিড়বিড় করবি? তা আজ বৃষ্টিতে ভেজবি না?”
– “মাফ চাই আপা, কাল আমার হ’য়ে গেছে উচিৎ শিক্ষা।”
– “যাক, তবে এই খুশিতে মিষ্টিমুখ করাবি না?” মিম একটু ভেবে বললো,
– “কি করে করাই? বলো? এটা গারদ, আমার বাড়ি না। যাগগে, বাদদেও সে সব। সামনে পরীক্ষা পড়তে বসবো…… সঙ্গে একটু তোমার হাতের চা পাবো না?”
মাধবী তখন হাসতে হাসতে তার গাল টেনে বললো,
– “দেখ মেয়ের কাণ্ড,
খুব পাকা তাই না? চা তুমি পাবে তবে তার আগে এক টা কথা বলো, কমিশনার সাহেবকে তোমারও বেশ ভালো লেগেছে তাই না?”
– “দেখ বুবু, উনি একজন ‘ব্যক্তিত্ব’ সম্পন্ন মানুষ। ভালো মানুষ।
কাজেই, ওনাকে অপছন্দ করার কোনো কারণ আমি খুঁজে পাচ্ছি না। এখনো অব্ধি, ওনার কোনো খারাপ গুণ আমার চোখে পরেনি। নিজের চোখে না দেখে আমি ওনাকে দোষারোপ করতে পারিনা।”

চলবে,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে