#বসন্তের_আগমনে💛🌸
#পর্ব_১৬ (অন্তিম পর্ব)
#লেখক_ঈশান_আহমেদ
ঈশা মুখ ভেঙচি দিয়ে আরহানের দিক থেকে চোখ সরিয়ে ফেললো।আরহান ঈশার কান্ডে ভ্রু কুচকে তাকালো।ঈশা আয়েশা বেগমের হাত ধরে বললো,
“অনেক প্রশংসা করেছো বউমার!এখন চলো সকালের নাস্তা বানাতে হবে তো।”
আয়েশা বেগম মৃদু হেসে বললেন,
“তোর কিছু করতে হবে নাহ্।তুই বরং আরহানের সাথে বসে গল্প কর।”
“না শ্বাশুমা তোমার ছেলের সাথে বসে গল্প করার ওতো দরকার নেই।তার সাথে গল্প করার চেয়ে তোমার কাজে হেল্প করার দরকার বেশি।”
ঈশা আয়েশা বেগমকে আর কিছু বলতে না দিয়ে রান্নাঘরে নিয়ে গেলো।সকালে নাস্তা বানানো শেষ হলে সবাই একসাথে নাস্তা করে নিলো।
এভাবে এক সপ্তাহ কেটে গেলো।আরহান আর ঈশা দুজনে এক সুন্দর ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে।
আয়েশা বেগম আর ঈশা বসে বসে গল্প করছে।হঠাৎ করে বাড়ির কলিংবেল বেজে উঠলো।কলিংবেল বাজতেই ঈশা গিয়ে দরজা খুলে দিলো।দরজা খুলতেই হিয়া এসে ঈশার গলায় ছুঁড়ি চেপে ধরলো।হিয়া এমন কান্ডে তো আয়েশা বেগম ভয়ে কাঁপছে।আয়েশা বেগম আরহান নাম ধরে ডাকা শুরু করলো।
হিয়া দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
“আরহান শুধু আমার।আরহান আমার না হলে আর কারো হতে পারবে নাহ্।”
আয়েশা বেগমের ডাকে আরহান দৌড়ে তার রুম থেকে এসে দেখলো হিয়া ঈশার গলায় ছুঁড়ি চেপে ধরে রেখেছে।আরহান দ্রুত এসে হিয়ার হাত থেকে ছুঁড়িটা ছাড়িয়ে ঠাস করে ওর গালে একটা থা*প্প*ড় মারলো।হিয়া চোখ রাঙিয়ে বললো,
“তোর এতো সাহস তুই আমাকে আবার চ*ড় মারলি!”
“তোর মতো মেয়ের জন্য এটাই ঠিক আছে।আর আমি এখন পুলিশকে কল করে বলবো তোকে জেনো ধরে নিয়ে চলে যায়।তোর মতো মেয়ের জেলেই থাকা উচিত।”
আরহান যেই মোবাইল বের করে কল করলো।হিয়া পালাতে গেলে ঈশা এসে হিয়ার হাত চেপে ধরলো।হিয়া দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
“ছাড় আমাকে!”
ঈশা মৃদু হেসে বললো,
“না আপু আপনাকে আর ছাড়া যাবে না।আপনাকে জেলের ভাত না খাওয়ালে আপনি ঠিক হবেন নাহ্।”
হিয়া বাঁকা হাসি দিয়ে বললো,
“তোরা আমাকে কিসের ভিত্তিতে অ্যারেস্ট করাবি!আমি একটু আগে যা করেছি তার কি কোনো প্রমাণ আছে?”
আয়েশা বেগম হিয়ার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললো,
“হিয়া তুমি ভুলে যেও নাহ্।আমাদের বাড়ির ড্রয়িংরুমে কিন্তু সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে।”
আয়েশা বেগমের কথায় হিয়ার মুখ ভয়ে চুপসে গেলো।কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ এসে হাজির হলো।আরহান সব প্রমাণ পুলিশকে দেখিয়ে বললো,
“ও আমার স্ত্রী কে মেরে ফেলার চেষ্টা করতে ছিলো।আর হ্যাঁ আগের বার তো ওর বাবার কারণে ওর কোনো শাস্তি হয়নি।দয়া করে একটা অনুরোধ এই মেয়েটাকে প্লিজ আর ছেড়ে দিবেন নাহ্।ওর মতো মেয়ে এই সমাজের জন্য অনেক ক্ষতিকর।প্লিজ ও-কে নিয়ে যান।”
হিয়াকে দুজন মহিলা পুলিশ ধরে নিয়ে গেলো।আরিশা গেট দিয়ে ঢুকতে গিয়ে এই ঘটনা দেখতে পেলো।দৌড়ে বাড়ির ভিতরে আসলো।তারপরে বললো,
“হিয়া আপুকে পুলিশ অ্যারেস্ট করে নিয়ে গেলো কেনো?”
ঈশা আরিশাকে সবটা বললো।সবটা শুনে আরিশা বললো,
“যাক ভালো হয়েছে।আমাদের আর কোনো ঝামেলা রইলো নাহ্।আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্য করেন।”
রাতের বেলা,
ঈশা চুল আছড়াচ্ছিলো আরহান গিয়ে তাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।ঈশা মুচকি হেসে বললো,
“কি হয়েছে মি.অভদ্র?”
“আমার বউ তাহ্ এতো সুন্দরী যে তাকে ছেড়ে আমার এক মুহূর্ত থাকতে ভালো লাগে নাহ্!”
“থাক হয়েছে।রাতের বেলা ঢং শুরু করেছে।আমি না থাকতে পারিনা।সেই মি.অভদ্র আর এই মি.অভদ্রের মধ্যে কত পার্থক্য!”
“আসলেই অনেক পার্থক্য তাই নাহ্ ঈশু!”
“আসলেই।তবে ভালো হয়েছে।তুমি যে এখন লক্ষী বর হয়ে গেছো।নাহলে যে আমার কি হতো কে জানে!”
আরহান হাসি দিয়ে বললো
“আচ্ছা তুমি কি আমাকে আগে ভয় পেতে?”
“মোটেও নাহ্।তোমার মতো কিউট বয়কে কিভাবে কেউ ভয় পায়!”
আরহান কোমড় চেপে ধরে বললো,
“সত্যিই কিউট নাকি?”
“প্রচুর।পুরাই কিউটের ডিব্বা।”
আরহান ঈশার গালে চুমু দিয়ে বললো,
“আই লাভ ইউ মিসেস.বকবকানি।”
“আই লাভ ইউ টু মি.অভদ্র উপ্স মি.কাস্টার্ড।”
ঈশার কথায় আরহান হেসে দিলো।ঈশাও হাসি দিয়ে আরহানকে জড়িয়ে ধরলো।
এক বছর পর,
আরহান আলভিকে কোলে নিয়ে ঈশার কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।একটু পরে ঈশা এসে তাদের সামনে দাঁড়ালো।আরহান ঈশাকে দেখে বললো,
“যাক তাহলে তোমার এক্সাম শেষ।এখন চলো আমরা আজকে রেস্টুরেন্টে খাবো।আরিশা ওয়েট করতেছে আমাদের জন্য।”
“শ্বাশুমা আসেনি?”
“মাকে অনেকবার বললাম।তবে মা আসবে নাহ্।তাই ভাবলাম খাবার পার্সেল করে নিয়ে যাবো।”
“ধূর শ্বাশুমা না আসলে ভালো লাগে নাকি!”
“হয়েছে শ্বাশুমার চামচা।এখন চলো।”
“তুমি বেশি কথা না বলে আলভিকে আমার কোলে দেও।আর গাড়ি নিয়ে এদিকে আসো।”
“যথাআজ্ঞা বিবিজান।”
আরহানের কথায় ঈশা মুচকি হেসে আলভিকে কোলে নিলো।আরহান গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ঈশাদের সামনে আসবে এমন সময় একটা ট্রাক এসে আরহানের গাড়ির সাথে ধাক্কা খেলো।যার কারণে আরহানের গাড়ি ছিটকে গিয়ে খানিকটা দূরে পড়লো।ঈশা সবটা দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।ঈশা আলভিকে কোল থেকে নামিয়ে চিৎকার করে বলে উঠলো,
“আরহান………….”
কিছুক্ষণের মধ্যে আরহানের গাড়ির চারিপাশে মানুষের ভিড় জমে গেলো।কয়েকজন মিলে আরহানকে গাড়ি থেকে বের করলো।আরহানকে সারাশরীরের বিভিন্ন জায়গা কেটে গেছে।মাথা ফেটে রক্ত বের হয়ে সাদা শার্ট রক্তে লাল হয়ে গেছে।ঈশা আলভিকে তার এক বান্ধবীর কোলে দিয়ে ছুটে গেলো আরহানের কাছে।আরহানের অবস্থা দেখে ঈশা জোরে চিৎকার দিয়ে সেন্সলেস হয়ে গেলো।
লোকজন মিলে অ্যাম্বুলেন্স এনে ঈশা আর আরহানকে হসপিটালে নিয়ে গেলো।ঈশার বান্ধবী আলভিকে নিয়ে তাদের পিছনে গেলো।আরহানকে হসপিটালের নেওয়ার সাথে সাথেই অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হলো!আর ঈশাকে ডক্টর চেক করতেছে।আয়েশা বেগম আর আরিশা হসপিটালে এসে দেখলো একটা মেয়ে আলভিকে কোলে নিয়ে বসে আছে।আয়েশা বেগম আর আরিশা তার দিকে এগিয়ে গেলো।আয়েশা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বললো,
“আমার ছেলে আর বউমা কেমন আছে?তুমি কিছু জানো মা?”
নিহা আয়েশা বেগমের কাঁধে হাত দিয়ে বললো,
“আন্টি প্লিজ কান্না করবেন নাহ্।নিজেকে সামলান।আরহানকে ওটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।কারণ ওর মাথা দিয়ে অনেক রক্ত বের হচ্ছিলো।আর ঈশা সেন্সলেস হয়ে যাওয়ার কারণে ও-কে ডক্টর চেক-আপ করতেছে।”
আয়েশা বেগম ধপ করে চেয়ারে বসে পড়লো।আরিশা গিয়ে আয়েশা বেগমের পাশে বসে বললো,
“আম্মু প্লিজ নিজেকে একটু সামলাও।ওদের কিচ্ছু হবে নাহ্।”
“আমার বাবাই আর ঈশা আম্মুকে এনে দেও।”
আলভির কথায় আয়েশা বেগমের কান্না বেগ আরো বেড়ে গেলো।নিহা আলভিকে কোলে নিয়ে ও-কে বোঝাচ্ছে।হঠাৎ ডক্টর এসে তাদের সামনে দাঁড়ালো।ডক্টরকে দেখে আরিশা এগিয়ে গিয়ে বললো,
“ডক্টর আমার ভাইয়া আর ভাবি কেমন আছে?মানে মি.মির্জা আর মিসেস.মির্জা।”
ডক্টর কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,
“মিসেস.মির্জা মা হতে চলেছেন কংগ্রাচুলেশনস।”
আরিশা হাসি দিয়ে বললো,
“আলহামদুলিল্লাহ।আর ভাইয়া কেমন আছে?”
“সরি তাও এটা আমাদের বলতে হবে।He is no more.আরহান সাহেব আর বেঁচে নেই।আমরা অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু কিছু করা সম্ভব হয়নি।”
আয়েশা বেগম চিৎকার দিয়ে কান্না শুরু করলো।আর আরিশা তার জায়গায় থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
ডক্টর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
“মিসেস.মির্জার জ্ঞান এসেছে।উনি অনেক উত্তেজিত হয়ে আছেন।আপনারা গিয়ে একটু দেখা করেন।আমরা উনাকে কিছু জানায়নি।”
ডক্টর কথাটা বলে চলে গেলেন।নিহা একদিকে আয়েশাকে সামলাচ্ছে।আরেক দিকে আলভিকে।তবে আরিশা নিজেকে শক্ত করে নিয়েছে।সে চোখের পানি মুছে বললো,
“নিহা আপু তুমি আম্মু আর আলভিকে একটু দেখো।আমি ভাবিকে দেখে আসতেছি।”
আরিশা ঈশার ক্যাবিনে গিয়ে দেখলো ঈশা থ হয়ে বসে আছে।আরিশা গিয়ে ঈশার সামনে দাঁড়াতেই ঈশা আরিশার হাত ধরে বললো,
“ননদিনী মি.অভদ্র কেমন আছে?ও কি করতেছে?”
আরিশা কষ্ট চেপে রেখে হাসি দিয়ে বললো,
“আরে ভাবি তুমি মা হতে চলেছো।এটা নিয়ে ভাবো নাহ্!ওইসব পরে ভেবো!”
“আরিশা আমাকে বলো আগে আরহান কেমন আছে?”
আরিশা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,
“ভাবি ভাইয়া আর নেই।”
কথাটা শুনে ঈশা চমকে উঠলো।ঈশা হা হয়ে আরিশার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।কিছুক্ষণ চুপ থেকে চোখের কোণে জমে থাকা পানি মুছে নিজের পেটে হাত দিয়ে বললো,
“তোর বাবা আমাদের একা করে চলে গেলো।সমস্যা নেই।আমি আমার বড় ছেলে আর তোকে নিয়েই থাকবো!”
ঈশা কথাটা বলে অনেক কষ্টে কান্না চেপে বললো,
“আরিশা চলো শেষবারের মতো তোমার ভাইয়াকে দেখে আসি।
আরিশা কিছু না ঈশাকে নিয়ে আরহানের কাছে গেলো।সেখানে আয়েশা বেগম আর নিহা দাঁড়িয়ে আছে।তৈয়ব সাহেব আর মাসুমা বেগম আলভিকে নিয়ে এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে।
ঈশা চারিপাশে এক পলক তাকিয়ে আরহানের বেডের দিকে এগিয়ে গেলো।আরহানের গালে কাঁপাকাঁপা হাত রেখে বললো,
” খুব ভালো লাগতেছে আমাদের কষ্ট পেতে দেখে।এতো সহজে কিভাবে চলে গেলে তুমি!আমাকে এভাবে একা করে তুমি চলে যেতে পারলে মি.অভদ্র?যাক চলে যখন গেছো তখন তো আর কিছু করার নেই।তবে হ্যাঁ তুমি দেখে নিয়ো আমি আমার আলভি আর নতুন অতিথিকে নিয়ে অনেক সুখে থাকবো।তুমিও ভালো থেকো।আমার জীবনে তুমি ছাড়া আর কারো জায়গা হবে নাহ্!আই লাভ ইউ মাই মি.অভদ্র।”
আরহানের নিথর দেহটা পড়ে রইলো।ঈশা তার চোখের পানি মুছে আলভিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
—🌻—
বিশ বছর পরে,
গায়ে সাদা-কালো রঙের শাড়ি,চুলে খোঁপা করা,চোখে কালো ফ্রেমের চশমা পড়ে দাঁড়িয়ে আছে ঈশা।হঠাৎ করে একটা ছেলে এসে তাকে জড়িয়ে ধরলো।
“ইয়াহু!ঈশা আম্মু আমি এখন একজন সিভিল ইন্জিনিয়ার।সবটা তোমার জন্য হয়েছে ঈশা আম্মু।”
“আরহান সাহেবের ছেলে বলে কথা।যেটা জেদ করবে সেটা তো উসুল করেই ছাড়বে!”
“খালি আরহান সাহেবের না আমি ঈশা সাহেবারও ছেলে।তবে পুচকি কই?”
ঈশার পিছন থেকে একটা মেয়ে সামনে এসে বললো,
“এই যে ভাইয়া আমি এখানে!”
আলভি আর্শাকে দেখে মুচকি হেসে তাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
“পুচকি বনু তাহ্ আমার!”
ঈশা তার দুই ছেলে-মেয়েকে জড়িয়ে ধরে বললো,
“তোরা আছিস বলেই আমি এখনো বেঁচে আছি।তবে আমার শ্বাশুড়ি মা আর আরহান বেঁচে থাকলে আজকে সবচেয়ে খুশি হতো।”
আলভি ঈশাকে বললো,
“ঈশা আম্মু পিমনি আসবে না?”
“হ্যাঁ তোর পিমনি আর ফুপ্পা একটু পরেই আমাদের বাড়িতে আসবে।তুই আর আর্শা বাড়িতে চলে যা আমি একটু পরে আসতেছি।”
“ওকে আম্মু।”
আলভি আর্শাকে নিয়ে চলে গেলো।ঈশা সোজা আরহানের কবরের কাছে গেলো।আরহান কবরের সামনে যেতেই ঈশার চোখ দিয়ে দুই ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো।চোখ থেকে চশমা খুলে আরহানের কবরের সামনে বসে বললো,
“কি গো মি.অভদ্র!কেমন আছো তুমি?দেখলে আমি তোমার আলভিকে ঠিকই মানুষের মতো মানুষ করতে পেড়েছি।তবে জানো তোমার শূন্যতা কখনোই পূরণ হবে নাহ্।আজ যদি তুমি আমার পাশে থাকতে তাহলে কতই নাহ্ ভালো হতো!আমি ভাবিনি তোমাকে ছেড়ে আমার কখনো থাকতে হবে।কিন্তু দেখো তোমাকে ছেড়ে আমি বছরের পর বছর পাড় করে ফেলতেছি।তবে তোমাকে এক মূহুর্তের জন্যও ভুলিনি।”
ঈশা কথাগুলো বলে দীর্ঘশ্বাস ফেললো।তারপরে চোখের পানি মুছে উঠে চলে আসলো।
——————-#সমাপ্ত——————-
[ভূল-ভ্রান্তি ক্ষমার চোখে দেখবেন।]