#বর্ষণ_সঙ্গিনী
#হুমাশা_এহতেশাম
#পর্ব_৩৮
ভগ্নহৃদয়ের আর্তনাদ গুলো হয়তো বালিশে মুখ গুঁজে তার কাভার আর তুলোগুলোর মধ্যে ই সীমাবদ্ধ রাখতে হয়।আমিও এমুহূর্তে তাই ই করছি।তবে আমার আর্তনাদে মিশে আছে প্রিয় মানুষ টার থেকে প্রতারিত হওয়ার আর ধোঁকা খাওয়ার চাপা কষ্ট।
ওখানে তখন অন্তু নামের বাচ্চা টা বারবার বাবাই বাবাই করে আলআবি ভাইয়া কে ডাকছিল।অনুরাধা নামের মেয়েটাকে মামুনি বলে ডাকছিল।মেয়েটার আগমন শুধু আমাকেই অস্বস্তিতে ফেলছিল।অন্য সবার মুখ দেখে মনে হচ্ছিল অন্তু আর অনুরাধা সবার সাথে ই পূর্ব পরিচিত।তাসফি ভাবিকে তো দেখে মনে হচ্ছিল আমার থেকেও বুঝি আগন্তুক মেয়েটা তার কাছে অধিক পরিচিত। সবার ব্যবহারে প্রচুর রাগ উঠছিল।আলআবি ভাইয়ার ব্যবহারে তো রাগ দ্বিগুণ হচ্ছিল।অনুরাধার সাথে কেমন দাঁত কেলিয়ে কেলিয়ে হাসছিলেন। যদি আল্লাহ তাকে ৩২ পাটি দাঁত না দিয়ে ৩৫ পাটি দাঁত দিত তাহলে মনে হয় ৩৫ পাটি দাঁতের সবগুলোই বের করে ভেটকি মাছের মতো মেয়েটার সাথে বসে বসে ভেটকাতে থাকতেন। তাকে ওই মুহূর্তে জঘন্য থেকে জঘন্যতম গালি গুলো দিতে ইচ্ছে করছিল।
আর থাকা সম্ভব হয়নি ওখানে। একপ্রকার রাগের বশেই এসে পরি কটেজে। ওরা জিজ্ঞেস করেছিল আমার কি হয়েছে,কিসের জন্য কটেজে আসতে চাচ্ছি। আমি সোজাসাপটা জবাব দিয়েছিলাম আমার শরীরটা খারাপ লাগছে। আমার জবাবে ওরা আর আটকায়নি।সবচেয়ে খারাপ লেগেছিল তখন যখন চলে আসছিলাম আর আলআবি ভাইয়া কিছুই বলেন নি। বলবেন কিভাবে? উনিতো তার অন্তুকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।আমি চলে এসেছি হয়তো সেটাও তার চোখে পরেনি।
কটেজে এসেছি তো রাগের বশেই কিন্তু এখন আর রাগটা নেই।এখন বারবার মনে হচ্ছে এই ছিল তার ভালোবাসা? এতো সুন্দর অভিনয় মানুষ করে কীভাবে?এতোদিন তাহলে আমাকে কেন তার সারাজীবন এর বর্ষণ সঙ্গিনী বানানোর স্বপ্ন দেখিয়েছেন?বারবার কান্নায় ভেঙ্গে পরছি।কোনোমতেই নিজেকে ঠিক রাখতে পারছি না।আমার সাথে ই কেনো এমনটা হয়?আমার সাথে এমন করে তার লাভ টা কি হলো?
চোখের অশ্রু কে এখন আর থামিয়ে দেয়ার ইচ্ছে হচ্ছে না। মন ভরে কান্না করতে ইচ্ছে করছে।মনের ইচ্ছে টাকেই প্রাধান্য দিয়ে মুখে ভালো করে বালিশ গুঁজে দেই।জানি সকালে উঠেই দেখব সর্দি লেগে গিয়েছে।গলার স্বরও স্বাভাবিক থেকে কিছু টা মোটা হয়ে যাবে। এভাবে অনেক সময় চোখের অশ্রু বিসর্জন দিতে দিতে একসময় কান্নার বেগ কিছুটা কমে আসে।একপর্যায়ে ফোপাঁতে ফোপাঁতে ই চোখজোড়া বন্ধ হয়ে আসে। গভীর ঘুমে তলিয়ে যাই আমি।
দরজায় খুব জোরে শব্দ হওয়া তে ঘুম ভাঙলো। রেনুমার শব্দ পেতে ই উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিলাম। লক্ষ্য করলাম ওর হাতে খাবারের প্লেট। মাথা টা ব্যাথা করছে অনেক।তাই রেনুমার সঙ্গে কোনো কথা না বলেই আমার বেডে এসে পুনরায় শুয়ে পরলাম।রেনুমা বলল,,,
–জুইঁ আপু তোমার খাবার।আমরা সবাই বাইরেই খাচ্ছি। তুমি নেই বলে নিয়াজ ভাইয়া বললেন তোমাকে যেন ভিতরে এসে দিয়ে যাই।
ওর সাথে কথা বলতে মোটেও ইচ্ছে হচ্ছে না।একই ভাবে শুয়ে থাকলাম।তবে রেনুমার অস্তিত্ব এখনো টের পাচ্ছি।রেনুমা আবার বলে উঠলো,,,
–আপু তোমার কি বেশি খারাপ লাগছে? ভাইয়াদের বলবো গিয়ে?
রেনুমার কথায় আমি তাড়াতাড়ি করে শোয়া থেকে বেডে বসে ওর দিকে তাকিয়ে ঠোঁটের কোণে জোরপূর্বক কৃত্রিম হাসি টেনে বলে উঠলাম,,,
–না! না! আমি ঠিক আছি।আসলে চোখের ঘুম ঘুম ভাব টা কাটেনি তো তাই আবার একটু শুয়েছিলাম।তুমি যাও আমি খেয়ে নিব।
–ওহহ!আমি ভাবলাম তোমার বোধ হয় খারাপ লাগছে বেশি।আচ্ছা খেয়ে নিও কিন্তু।
কথাগুলো বলেই রেনুমা চলে গেলো। রেনুমা যেতেই টেবিলের উপরে থাকা আমার মোবাইলটা বেজে উঠলো। মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখি সাদু কল করছে। কল টা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে সাদু বলতে লাগলো,,,
— আলআবি ভাইর লগে ঘুরতে যাইয়া তো আমারে ভুইল্লাই গেছো।ভুলবাইতো, উডবির সাথে থাকলে আমারে কি আর মনে থাকবো নাকি? তা রোমান্স শোমান্স কেমন চলে?
সাদুর কথা গুলো কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেয়ার চেয়ে কম কিছু ছিল না।মোবাইল কানে দিয়েই ফোপাঁতে লাগলাম।ওপাশ থেকে সাদুর কোনো কথার আওয়াজ আসছে না।কল এখনো ডিসকানেক্ট হয়নি।ধীরে সুস্থে নিজেকে শান্ত করলাম। মোবাইলের স্ক্রীন টা একবার চেক করে দেখলাম। দেখি ১১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড চলছে। এখনো কল যেহেতু কেটে যায়নি তাই আবার কানে দিলাম ফোনটা।ওপাশ থেকে সাদু নরম কন্ঠে বলে উঠলো,,,
–এবার বল কি হয়েছে?
–সাদু সে অনেক খারাপ একটা লোক।একটা প্রতারক,ধোঁকাবাজ।জঘন্য লোক!(আমি)
–আচ্ছা! আচ্ছা!রিলাক্স!বল কি হয়েছে। খুলে বল।(সাদু)
তারপর সাদু কে সব বলতে লাগলাম। আমার সব কথা শুনে সাদু বলল,,,
–একটা কথা কই বোইন?তোর মাথায় তো মনে হয় গরুর গোবরেরও অভাব আছে। গোবরেও সার হয়।তোর তো তাও নাই।মনে তো হইতাছে তোর মাথায় গন্ডারের চামড়া ভরা।বাপ ডাকলেই কি কেউ বাপ হইয়া যায়? রাস্তা ঘাটে তো কত জনরেই মামা,চাচা,খালা ডাকি আমরা তাই বইলা কি তারাও মামা,চাচা হইয়া যায় নাকি?
কোন সিচুয়েশনে ও কি বলছে?সাদুর কথায় আমি ওকে ঝাঁঝাল কন্ঠে বলে উঠলাম,,,
–আমি মরি আমার কষ্টে আর তুই ফালাছ আমার মাথায় গন্ডারের চামড়া তার লেইগা?আর ওই পিচ্চি রে কোলে কইরা নিয়া আসছে।রাস্তা ঘাট থেইকা তুইলা আনে নাই। ফোন রাখ তুই।এই জন্মে আমারে আর কল দিবিনা।
কলটা কেটে চুপচাপ বসে আছি। সব কিছু অসহ্য লাগছে।এখন সাদুর মাথার কয়েকটা চুল ছিঁড়তে পারলে ভালো হতো।সাদুর জায়গায় যদি ওই অনুরাধা না ফনুরাধার চুল ছেঁড়াছিঁড়ি অভিযানে নামতে পারতাম তাহলে আরও বেশি ভালো হতো।আমার মোবাইলটা একনাগাড়ে বেজে ই চলেছে। মোবাইলটা উল্টো করে রাখা বলে কে কল করছে দেখতে পারছি না।তবে মনে হচ্ছে সাদুই কল করছে।অনেক কয়েকবার রিং হওয়ার পরে কল টা রিসিভ করে বলতে লাগলাম,,,
–তোরে কইছি না কল দিবি না।ওই কানা ব্যাডার যা ইচ্ছা করুক।একটা ক্যান আরও দশটা বিয়ে করুক।দুনিয়ার সব মাইয়া বিয়ে কইরা ফেলুক।আমার কিচ্ছু যায় আসে না। আই ডোন্ট কেয়ার।
–সত্যি কিছু যায় আসে না?
অপর পাশ থেকে পরিচিত পুরুষালি কন্ঠ কর্ণপাত হতেই আমার কথা বন্ধ হয়ে গেল। মোবাইলের স্ক্রিনটা চোখের সামনে এনে টাস্কি খেয়ে গেলাম। এটাতো আলআবি ভাইয়ার নাম্বার।তাড়াতাড়ি করে আবার ফোনটা কানে ধরলাম।ওপাশ থেকে উনি গম্ভীর গলায় আবার বলে উঠলেন,,,
–আমি কানা ব্যাডা?বের হও এক্ষুনি। বোঝাপরা আছে তোমার সাথে। আমি কানা কিনা তা তোমায় বুঝিয়ে দেব আজ।২ মিনিটের মধ্যে তোমার কটেজের পেছনে আসো।যাস্ট টু মিনিটস।
এহ আমাকে হুকুম দেয়া?আমি ও তেজি কন্ঠে বলে উঠলাম,,,
–আসছি আমি। দুই মিনিট কেন, এক মিনিটের মধ্যে ই আসছি আমি। বোঝাপড়া তো আমি আপনার সাথে করবো।
তাড়াহুড়ো করে মাথায় ওড়না পেঁচিয়ে মোবাইলটা হাতে নিয়ে কটেজের পেছনে এসে পড়লাম।আবছা আলোতেই আলআবি ভাইয়া কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে দ্রুতপায়ে তার কাছে গিয়ে মাথাটা হালকা একটু উঁচু করে তার পাঞ্জাবির কলার চেপে ধরে বলতে লাগলাম,,,
–কেন করলেন আপনি এমন?আপনি বিবাহিত হয়ে ঘরে বউ রেখে আবার আমাকে আপনার সারাজীবনের বর্ষণ সঙ্গিনী বানাতে চেয়েছিলেন কেন?
কথাগুলো বলার সময় মনে হচ্ছিল আমার কন্ঠনালিতে কেউ অনেক ওজনের পাথর চাপা দিয়ে রেখেছে। ধরা গলায় আবার বলতে লাগলাম,,,
–আপনি তো জানতেন আমি আপনাকে প্রচুর পরিমানে ভালোবাসি।অনেক ভালোবাসি। অনেক!অনেক!অনেক!
চোখের জল আর ধরে রাখতে পারলাম না। আমার গাল বেয়ে জলকণা পরতে লাগলো।সেই সাথে আকাশ গর্জে উঠলো।ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি কণা এসে পরতে লাগলো আমার গায়ে।এই বৃষ্টি কণা কাউকে ভিজিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে না।ক্ষনে ক্ষনে আকাশ গর্জে উঠছে।আলআবি ভাইয়ার কলার ছেড়ে একটু পিছিয়ে আসতেই উনি বলে উঠলেন,,,
–এই কথাটাই তো শুনতে চাইছিলাম। শেষমেশ তাহলে ভালোবাসি বলেই দিলে।
তার কথা শেষ হতে ই বিকট একটা আওয়াজ হলো।হুট করে আলআবি ভাইয়া আমার মাথাটা হালকা বা পাশে আকাশের দিকে ঘুরিয়ে দিলেন।ওদিকে তাকাতেই দেখি একটা লেখা চোখে স্পষ্ট ফুটে উঠলো—-
“Will you be mine forever & ever?”
লেখাটা মুছে যেতেই এরপর আরেকটা বিকট শব্দ হওয়ায় আবার আকাশে আরেকটা লেখা ভেসে ওঠে —-
“Will you marry me”?
হঠাৎ করেই কটেজের পেছনের আলো জ্বলে উঠলো। আমাদের থেকে কিছুটা দূরে ই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাসফি ভাবি,মিথিলা আপু আর রেনুমা মুখ চেপে হাসছে।
চলবে…………
#বর্ষণ_সঙ্গিনী
#হুমাশা_এহতেশাম
“সারপ্রাইজ পর্ব”
–শশুর বাবাই!ফাটিয়ে দিয়েছ।
বাচ্চা কন্ঠ শুনে পিছনে তাকাতেই দেখি অন্তু অনুরাধার হাত ধরে সাথে দাঁড়িয়ে আছে।অনুরাধা মুচকি হেসে আমাদের কিছুটা কাছে আসলো।সবার ভাব ভঙ্গি তে এতক্ষনে বুঝে গিয়েছি আমার সঙ্গে অনেক বড় একটা গেম খেলা হয়েছে। সামনে তাকিয়ে দেখি আলআবি ভাইয়া মিটমিটিয়ে হাসছেন।অন্তু দৌড়ে এসে আমার হাত ধরে ঝাঁকিয়ে বলল,,,
–শাশুড়ী আম্মু, আমার শ্বশুর বাবাই তো অপেক্ষা করছে।তাড়াতাড়ি উত্তর টা দাও।
এইটুকু বাচ্চার মুখ থেকে শশুর শাশুড়ী ডাক শুনে ঠিক হজম করতে পারছি না।অন্তু আবারও আমাকে বলল,,,
–কি হলো তুমি নাকি আমার শাশুড়ী আম্মু। তাহলে আমার শশুর বাবাইয়ের উত্তর দিচ্ছ না কেন।
–জুইঁ আপু এক্সেপ্ট করে ফেলো তারাতাড়ি। (রেনুমা)
রেনুমার কথায় ওদের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই দেখি সজল ভাইয়া আর শাফিন ভাইয়া ও এসে উপস্থিত।এখন শুধু নিয়াজ ভাইয়া আর ফারাবী ভাইয়া বাদে সকলেই উপস্থিত এখানে। এতো জনগণের মধ্যে আমি কিভাবে বলব “আমিও আপনাকে বিয়ে করতে চাই”।এরাও কেমন বেআক্কল!ওদের তো বোঝা উচিৎ আমার ও লজ্জা বলে কিছু আছে।
ওয়েট!ওয়েট! জুইঁ তোর সাথে এতো বড়ো গেম খেলল আর তুই কি না নির্লজ্জের মতো তার প্রপোজাল এক্সেপ্টের চিন্তা মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছিস।এই পুচকো ছেলে আর অনুরাধা কে সেটাও তো জানা হলো না। নিজের মনের সঙ্গে কথাগুলো বলে মনে মনেই কঠোর এক সিদ্ধান্ত নিলাম।সবাইকে একবার পরখ করে আলআবি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম,,,
–আপনার না একটা বাচ্চা আছে। আবার বউ ও তো আছে।বউ বাচ্চার সামনে আমাকে বেহায়ার মতো বলছেন “আমাকে বিয়ে করবে”?আপনাকে তো জিন্দেগীতেও বিয়ে করবো না।আপনাকে তো আমি জেলের রুটি খাওয়াবো।
আর কিছু বলার আগেই চারপাশ হাসির শব্দে মুখরিত হয়ে উঠলো। আলআবি ভাইয়া কোনো মতে হাসি থামিয়ে বললেন,,,
–আরে ওইটা শাফিনের বউ আর বাচ্চা।আমার নাকি ছোট একটা প্রিন্সেস হবে আর ও প্রিন্সেসটাকে বড় হলে বিয়ে করবে। সেই জন্য এখন থেকেই বাবা ডাকার প্রেক্টিসে আছে।
কথা টা বলে একটু থেমে আবার বলে উঠলেন,,,
— আমাকে নাকি মানতে পারবে না। তাই তোমাকে একটু মজা দেখালাম।
কথার শেষে আমাকে একটা চোখ টিপ মারলেন।
তার কথা আর কাজে প্রচুর রাগ হলো।এমন মজা কেউ করে?আমার চোখের কতগুলো পানি খরচ হলো!কতো কষ্ট হচ্ছিল সে কি তা জানে?জোড়ালো গলায় বললাম,,,
–সবাই খারাপ!সবাই!নিয়াজ ভাইয়ার কাছে এক্ষুনি আমি বিচার দিব।
এরপর আলআবি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম,,,
–আর আপনি!আপনার সাথে আগামী এক বছর এর জন্য কথা বলা বন্ধ।আমাকে বিয়ের স্বপ্ন এ জীবনে আর দেখা লাগবে না।করবো না আমি আপনাকে বিয়ে।আমার দিকটা কেউ ভাবলেন না।
আলআবি ভাইয়া একটু নিচু স্বরে বলতে নিলেন,,,
–জুইঁ আসলে….
তার কথায় কর্ণপাত না করে আমি আমার কথা শেষ করে গটগট করে আমি কটেজে এসে পরলাম। পিছন থেকে ওরা ডাকাডাকি করছিল।কিন্তু আমি না শুনেই এসে পরেছি।কি ভেবেছে?আমাকে কান্না করিয়ে উনি বলবে এটা মজা ছিল আর আমিও মজা ভেবে ধেই ধেই করে তার প্রপোজাল এক্সোপ্ট করে ফেলবো?আমাকে তো চেনো নাই।কি মনে হয়?আমি গেম খেলতে পারি না।দাড়াও বাছা ধন!এবার দেখবা এই জুইঁয়ের কেরামতি।খুব সুন্দর করে মুখে একটা হাসি টেনে ধীর পায়ে নিয়াজ ভাইয়ার কটেজে এসে উপস্থিত হলাম।কথার শব্দে মনে হচ্ছে মোটামুটি সবাই ই এখানে জটলা পাকিয়ে বসে আছে।দরজায় পরপর দুবার নক করতেই আলআবি ভাইয়া দরজা খুলে দিলেন।তার দিকে না তাকিয়ে দরজায় দাড়িয়ে ই সোজা নিয়াজ ভাইয়া কে উদ্দেশ্য করে বললাম,,,
–নিয়াজ ভাইয়া তোমার ফোনটা একটু দিবে?বাবাকে কল করবো।আমার ফোনের বেল্যান্স শেষ।
–আচ্ছা আয়!ভিতরে আয়।আর তোর কি এখন একটু ভালো লাগছে?(নিয়াজ ভাইয়া)
ভিতরে থাকা সকলের দিকে তাকিয়ে শক্ত গলায় বললাম,,,
–হ্যাঁ ভালো লাগছে। খুব ভালো লাগছে। সবাই মিলে আমাকে অনেক বড় একটা সারপ্রাইজ দিয়েছে।এখন কি ভালো না থেকে পারি?(আমি)
নিয়াজ ভাইয়া সবার দিকে তাকিয়ে কৌতুহল নিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করল,,,
–কি সারপ্রাইজ রে।যা আমি জানি না।
ভাইয়া কে তারা দেখিয়ে বললাম,,,
–পরে বলব।আগে মোবাইলটা দেও তো।বাবার সাথে কথা বলিনি আজকে সারাদিন।
ভাইয়া আর কথা না বাড়িয়ে আমার হাতে মোবাইল দিয়ে দিল।আমি মোবাইলটা নিয়ে ভাইয়ার কটেজ থেকে একটু দূরে আসলাম। ভাইয়ার ফোনের সেভ নাম্বারে গিয়ে একটা নাম্বার আমার ফোনে টুকে নিলাম। নাম্বার টা খুব সুন্দর করে “রাইয়ান বাবু” লিখে আমার ফোনে সেভ করে নিলাম। ঠোঁটের কোণে হাসি ঝুলিয়ে বাবাকে কল করলাম। বাবার সাথে কিছু সময় কথা বলে পুনরায় ভাইয়ার কটেজে গিয়ে ভাইয়াকে মোবাইলটা দিয়ে কারো দিকে দৃষ্টি না দিয়ে সোজা আমার কটেজে চলে আসলাম।
চলবে…………
[বিঃদ্রঃ গল্পটি সম্পূর্ণরূপে কাল্পনিক। অনুগ্রহ করে বাস্তবিক অর্থ খুজতে গিয়ে বিভ্রান্ত হবেন না আর লেখিকা কে ও বিভ্রান্ত করবেন না]