বক্ষপিঞ্জিরায় তুই বন্দীনি পর্ব-১০+১১

0
192

#বক্ষপিঞ্জিরায়_তুই_বন্দীনি
#সাদিয়া_আক্তার
#পর্ব১০

শ্রীহট্ট সিলেটের ঐতিহাসিক নাম ১৪ শতকে ইয়েমেনের সাধক পুরুষ হযরত শাহজালাল সিলেট জয় করেন এবং ইসলাম প্রচার করেন সেই থেকে সিলেটের নাম রাখা হয় জালালাবাদ কিন্তু ইসলাম প্রচারের শুরুতে বাধা হয় হযরত শাহজালাল এবং তার সাহাবীদের আটকে রাখার জন‍্য শিলা বা পাথর দিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল তাদের পথ তখন আল্লাহ্ তায়ালার অশেষ মেহেরবানিতে তিনি বলেন শিলা – হাট ( যার অর্থ পাথর সরে যা )
তৎক্ষণাৎ পাথর সরে রাস্তা তৈরী হয়েছিল সেই শিলা হাট থেকেই সিলেট নামের উৎপত্তি। আবার বলা যায় সিলেটে প্রচুর পরিমানে শিলা বা পাথর আছে যা এই জেলার অন‍্যতম একটি সৌন্দর্য।
এবং সিলেটে প্রচুর দর্শনার্থী স্থান আছে যা আমাদের দেশের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে।
সকাল আটটা বাস থেকে নামে আবসাররা। সারারাতের দীর্ঘ জার্নিতে সবাই ক্লান্ত কিন্তু তাদের বেশী কষ্ট করতে হয়নি কারণ আবসারের নানা ভাই তাদের জন‍্য গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে সে নিজেই আসতে চেয়েছিল কিন্তু আবসার না করে দেয় কেননা তারা দুজন বয়স্ক মানুষ পুরো বাড়িতে দুজন কাজের লোক ছাড়া আর কেউ থাকেনা তাই তাদের কষ্ট দিতে চায়নি। এমনিতেও আবসার এখানে আসতে চায়নি কিন্তু তার নানি ইসমাত আরা অনেক জোরাজুরি করেছে ইভেন সেও ভাবল ওয়াসিমাকে কিছু দিন পরেই মেডিক্যালের কোচিং করানোর জন‍্য ঢাকায় যেতে হবে তারপর আবার ব‍্যস্ততা শুরু তাই একটু রিফ্রেশমেন্টের জন‍্য এখানে আসা এখান থেকে ঘুরে ফিরে গেলেও মনটা ভালো থাকবে। আরেকটি মেইন কারন হলো সে তার বউয়ের সাথে খুব একটা সময় কাটাতে পারছে না তাই এই পথ অবলম্বন করা।

আবসারের নানা বাড়ি থেকে দুইটা গাড়ি পাঠানো হয়েছে একটা আবসার নিজে চালিয়ে যাবে আরেকটা ড্রাইভার সহ আরু লাবনী আর অরিক যাবে।
আরু ড্রাইভারের পাশে বসেছে আর পিছনে অরিক লাবনী বাস থেকে নেমে প্রায় একঘণ্টা পরে সবাই বিশাল বড় অট্টালিকার সামনে।
অরিক আরু অবাক না হলেও ওয়াসিমা অবাক হয়েছে সে একবার বাড়ির দিকে তাকায় আরেকবার আবসারের দিকে তাকায় নিজের মনের কথা চেপে না রাখতে পেরেই বলল — এটা কার বাড়ি আমরা এখানে এসেছি কেনো

— ধৈর্য্য ধরো উত্তর পেয়ে যাবে। আবসারের কথা শেষ হতেই ভিতর থেকে আসে ইসমাত আরা সাথে কায়সার সাহেব
তাদের দেখেই ওয়াসিমা সালাম দেয় — ভাল আছেন নানু মনি হাসি মুখে জিজ্ঞেস করে ওয়াসিমা ইসমাত আরা জড়িয়ে ধরে ওয়াসিমাকে আর কায়সার সাহেব জড়িয়ে ধরে আবসারকে। সবার সাথে আলাপচারিতার পরে সবাইকে রুম দেখিয়ে দেওয়া হয় যে যার রুমে চলে যায় বিশ্রাম নেওয়ার জন‍্য সারারাত জার্নি করে এখন বিশ্রাম না নিলেই নয়।

________________________

ঘরের প্রতিটা কোনা খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে ওয়াসিমা তার মনে সন্দেহের বীজ রোপণ হয়েছে এতো বড় দেখে মনে হচ্ছে বেশ পুরোনোকালের এবং তাদের দেখেও মনে হচ্ছে তারা বেশ প্রভাবশালী অর্থবীত্তের কোনো অভাব নেই তাহলে আবসাররা গ্রামে ঐ রকম দোতলা একটা বাড়িতে থাকে কেনো। ওয়াসিমার ভাবনার মাঝেই আবসার ওয়াশরুম থেকে বের হয় চুল ঝাড়তে ঝাড়তে ভাবুক ওয়াসিমাকে দেখে আবসার বুঝল ওয়াসিমা কনফিউসড তাই তার ভাবনা তারাতে বলল — এভাবে দাড়িয়ে না থেকে ফ্রেশ হয়ে বিশ্রাম নে সারাদিন ভাবার সময় পাবি বলেই নিজে গেঞ্জি পরে ঘর থেকে বের হয়।

— আমি আগে
— না আমি আগে অরিক আর লাবনী নিজেদের ঘরে ওয়াশরুমে কে আগে যাবে সেই বিষয় নিয়ে মারামারি করছে
— দেখো লাবনী আমি অনেক ক্লান্ত আমি আগে যাব
— তো আমিও তো ক্লান্ত এমনিতে আপনার জন‍্য সারারাত আমি বাসের মধ‍্যেও শান্তি পাইনি
— কেনো আমি কি করেছি তোমার সাথে ভ্রু কুচকে জিজ্ঞাসা করল অরিক
— কি করবেন সারারাত খরত খরত করে নাক ডেকেছেন
নাক তাও আবার আমি কবে থেকে হোস্টেলে থেকে যখন পরেছে তাখন তার বিচ্ছিরি ঘুমের প্রশংসা সবাই করলেও কেউ এই নাক ডাকার আরোপ দিতে পারেনি এর মধ‍্যেই দরজা লাগানোর শব্দে বুঝল মেয়েটা তাকে বোকা বানিয়েছে তাই সে দরজা জোড়ে বারি দিয়ে বলল — এক মাঘে শীত যায় না মনে রেখো

— পরের চিন্তা পরে বর্তমানে যা পেয়েছি সেটাই উপভোগ করি ভিতর থেকে বলে লাবনী অরিক বিড়বিড় করতে করতে বারান্দায় যায়।
সেখানে গিয়ে দেখে আরু ভেজা চুলে বারান্দায় উদাসীন ভাবে দাড়িয়ে আছে চোখটাও হালকা ভেজা। ভেজা চোখের পাপরিতে অদ্ভুত সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে সেদিক থেকে চোখ সরিয়ে নেয় অরিক এই মেয়েটা এখন তার জন‍্য নিষিদ্ধ।

— জীবন কতটা অদ্ভুত তাইনা অরিক ভাই একটা সময় সাহসের অভাবে কিছু করতে পারিনি এখন যখন সাহস করলাম যার জন‍্য করলাম সেই আমার না আমি তাকে এখন চাইলেও পাব না

— এই জন‍্যই বলা হয় সময় থাকতে মূল্য দিতে হয় বলেই হালকা হাসল অরিক হাসিটা তাচ্ছিল্য নাকি বেদনা বুঝা গেলো না কিন্তু অরিকের এই হাসিটা আরুর কাছে তাচ্ছিল্যই মনে হলো তার কান্না আসছে সে দৌড়ে ঘরে চলে গেলো বালিশে মুখ গুজে কান্না করতে লাগল
— কেনো আল্লাহ্ কেনো আমার কপালে কি একটু ভালোবাসা নেই যে আমাকে মন প্রান দিয়ে ভালোবাসত তাকে কেড়ে নিলে আমার থেকে আমার কি দোষ বলতে পারো আল্লাহ্ আমি সেটার প্রায়শ্চিত্ত করতে রাজী তারপরও তাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দাও কান্না করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে যায় আরু টের পায় না

বারান্দায় দাড়িয়ে অরিক ডুবে যায় পাচঁ বছর আগের স্মৃতিতে আবসার মারফত অরিক আরুকে দেখতে পায় পাচঁ বছর আগে তারা শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত তারা সিলেটে হোস্টেলে থেকে পড়ত আবসারের নানা বাড়ি এখানে হলেও আবসার সেখানে খুব একটা যেতো না সেটা কেনো অরিক জানে কিন্তু একবার আরু আবসারের সাথে দেখা করতে সিলেট আসে সেই প্রথম দেখাতেই চঞ্চলতায় ভরপুর আরুকে তার পছন্দ হয়েছিল পরে সময়ের সাথে ধীরে ধীরে পরিবর্তন হয় ভালোবাসায় সেটা আবসারও জানত আবসার সাখাওয়াত পরিবারের কারো ব‍্যাপারে কিছু বলত না তাই সেও সেই বিষয়ে জেনেও কিছু বলেনি। এরপর অরিক ভালোবাসার প্রকাশ করে আরু সেদিন কিছু না বললেও মুচকি হেসেছিল যেই হাসিতে ছিলো ভালোবাসার আহ্বান অরিকও বুঝেছিল আরুর না বলা ভালোবাসা সেই সাথে আরো একজন বুঝেছিল সে হলো দিলরুবা সাখাওয়াত সে কখনও আরুকে দেখতে পারত না কারণ সে সব সময় আবসারের সাপোর্টে কথা বলে তাই সেও আরুর ভালোবাসার পথে বাধা হয়ে দাড়ায় তাকে অরিককে ছেড়ে দিতে বাধ‍্য করে যা আজো পযর্ন্ত কেউ না জানলেও আবসার আর আরু জানে কিন্তু আবসার কিছুই বলেনি কেনো বলেনি। কিন্তু তারপর থেকেই আরুর দিলরুবা সাখাওয়াতের প্রতি আরো ঘৃণা জন্মায় এবং সেই সাথে হয়ে ওঠে সাহসী আগে মুখের উপর কিছু বলার সাহস না থাকলেও তা বর্তমানে আছে এবং তার বিপরীতে কাজ করে সব সময়।
সেই আরু অরিককে ভালোবাসলেও তার কাছে ফিরে যাওয়ার মতো মুখ তার ছিলো না কারণ সেই অরিককে বলেছিল সে তাকে ভালোবাসে না অন‍্য কাউকে ভালোবাসে তাই ভালোবাসার সুখের জন‍্য অরিক ও দূরে চলে আসে।

— শুনেন
লাবনীর কথা শুনে ভাবনা কাটে অরিকের সে তার দিকে ফিরে তাকায়
— যান ফ্রেশ হয়ে আসুন
অরিক বীনা বাক‍্যে চলে যায় ওয়াশরুমে অরিকের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে লাবনী অবাক এই লোকটা রাগ করল নাকি।

#চলবে

#বক্ষপিঞ্জিরায়_তুই_বন্দীনি
#সাদিয়া_আক্তার
#পর্ব_১১

শ্রীমঙ্গলের গ্র‍্যান্ড সুলতান রিসোর্ট চারিপাশে সবুজে ঘেরা চা পাতার বাগান গুলো যেনো আরো সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে শ্রীমঙ্গলকে চায়ের রাজধানী ও বলা হয় সেখানেই আবসাররা এসেছে আজ একদিন গতকাল রাতেই চলে এসেছে আবসার সবাই না করলেও সে থাকেনি তখন কায়সার সাহেব ও ইসমাত আরা বেগম ছলছল চোখে বিদায় দিয়েছে তাদের।
আবসারের কর্মকাণ্ড ওয়াসিমা কিছু বুঝতে পারে না নিজেদের লোকদের সাথে এতো কি অভিমান যে তাদের সাথে দুদন্ড বসে কথা বলা যায় না কি হয়েছে কিছু তো একটা হয়েছে ভেবেই অরিকের দিকে তাকায় ওয়াসিমা অরিককে খুব একটা অবাক হতে দেখেনি আবসারের কাজে সে এমন ভাব করত যেনো আবসার এটা করবে এরকম প্রত‍্যাশাই সে করেছে।
আরুকে দেখেছে ফ‍্যামিলির লোকদের খুব একটা পছন্দ করে না বিশেষ করে দিলরুবা সাখাওয়াতকে সে দুই চোখে সহ‍্য করতে পারে না আর কিছু ভাবতে পারে না ওয়াসিমা যতই ভাবে মনে হচ্ছে ততই গোলক ধাধার মধ‍্যে আটকে যাচ্ছে।

কারো গভীর হাতের ছোঁয়ায় ঘোর কাটে ওয়াসিমার সে তাকায় তার কাঙ্খিত ব‍্যাক্তির দিকে আবসার হাসি মুখে তাকিয়ে আছে আবসারকে হাসতে দেখে ওয়াসিমাও মুচকি হেসে জিজ্ঞাসা করল — ঐভাবে তাকিয়ে হাসছেন কেনো

— দেখছি ফিসফিসিয়ে বলে হাত গলিয়ে দেয় ওয়াসিমা কোমরে শিরশির করে ওঠে ওয়াসিমার সর্বাঙ্গ সে কোনো রকম কাপা স্বরে বলে — কি দেখছেন

— আমার সুখ আমার শুভ্রবউকে বলেই ওয়াসিমাকে ঝাপটে ধরে আবসার যেনো বুকের ভিতর লুকিয়ে রাখতে পারলে ভালো হতো কিন্তু আবসার তা পারে না হাতের বাধন আরেকটু শক্র হতেই ওয়াসিমা ব‍্যথায় শব্দ করে উঠল। ওয়াসিমা ব‍্যাথাদায়ক শব্দ শুনে আবসার হাতের শক্ত বাধন ঢিলে করলেও ছেড়ে দেয়না ওয়াসিমাও মিশে থাকে আবসারের বক্ষে।

____________________

ইরিনা সোফায় বসে অপেক্ষা করছে ভিক্টরে আজ দুদিন ভিক্টোর বাসায় আসে না এই বিশাল অট্টালিকায় সে একাই আছে বতর্মানে সারাদিন সার্ভেন্টরা কাজ করলেও তারা রাত আটটার মধ‍্যেই চলে যায়। প্রথম দিকে ইরিনা আর ভিক্টোরই না করত সেই প্রচলন এখনো আছে সোফার হ‍্যান্ডেলে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে ইরিনা পুরো বাড়ি অন্ধকার এর মধ‍্যেই ফাহাদ বাসায় ঢুকে পুরো বাসা অন্ধকার দেখে সোজা নিজের ঘরে যেতে নিয়েও অন্ধকারে কারো অয়ভব দেখে ভরকে যায় কে হতে পারে ভেবেই ফোনের ফ্লাশ জ্বালিয়ে দেখে ইরিনা হাতের মধ‍্যে মাথা গুজে ঘুমিয়ে আছে সে নিজের হাত ঘড়ির দিকে তাকায় রাত দেড়টা বাজে এখন তো তাদের নিজের ঘরে থাকার কথা এখন তিনি এখানে কি করছেন ভেবেই ইরিনাকে হালকা স্বরে ডাক দেয় — মিস ইরিনা

— হু ঘুম কন্ঠেই জবাব দেয় সে
— নিজের ঘরে যেয়ে ঘুমান এখানে বসে আছেন কেনো
— তোমার বাবা এখনো বাসায় ফিরেনি ফাহাদ ইভেন সে গত দুই দিন যাবত বাসায় আসছে না ইরিনার কথা শুনে ফাহাদ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে সে জানে ভিক্টোর বর্তমানে কোথায় আছে কিন্তু বলতে ইচ্ছা করল না কিভাবে বলবে কি বলবে যে আমার বাবার আপনার উপর থেকে মোহ অনেক আগেই সরে গেছে এখন সে তাদের হাসপাতালের নতুন ডাক্তার সোনিয়াকে নিয়ে ব‍্যস্ত সে বর্তমানে নতুন শরীরে নিজের চাহিদা খুজতে ব‍্যস্ত কিভাবে বলবে সে পারবে না বলতে তাই কিছু না বলেই চলে যাচ্ছিল কিন্তু পিছন থেকে ইরিনা আবার ডাক দিলো — খেয়ে এসেছো ফাহাদ
ইরিনার কথা শুনে পিছনে ফিরে তার দিকে তাকায় তার চোখে মুখে ক্লান্তি বিরাজ করছে উহু কর্মের ব‍্যস্ততার ক্লান্তি না জীবনের ক্লান্তি যা তিনি বর্তমানে বয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন।

— আমি খেয়েই এসেছি আপনি শুয়ে পরুন বলেই ফাহাদ চলে গেলো পিছনে রেখে গেলো একজন হেরে যাওয়া নারী যে আজ জীবন চলার পথে হেরে বসে আছে তা বহু আগে হলেও উপলব্দি বতর্মানে করছে।

_____________________

কৃতিম আলো নিভানো হয়েছে ঘরে অনেক আগেই বর্তমানে কিছু মোম বাতিও শেষের পথে নিভু নিভু আলোয় জ্বলছে আর বেসামাল আবসার ডুবে আছে ওয়াসিমাতে। ক্লান্ত ওয়াসিমার গলায় মুখ ডুবিয়ে আছে আবসার হঠাৎই আবসার গলায় কামড় দিতে — আহ শব্দ করে উঠল ওয়াসিমা
— কমড়াবেন না প্লিজ ব‍্যাথা পাচ্ছি
— পরবর্তীকালে ঠিক হয়ে যাবে বউ আর আস্তে আস্তে সহ‍্য হয়ে যাবে

— ছাই হবে এই আপনি উঠুন তো আমি ব‍্যাথা পাচ্ছি আপনি অনেক ভার

— তাহলে এতক্ষণে কিভাবে সহ‍্য করেছ বউ নাকি আদরের তাড়নায় টের পাওনি বাকা হাসি দিয়ে বলে আবসার।
আবসারের কথা শুনে ওয়াসিমা লজ্জায় তার বুকে মুখ লুকায় আবসারও হালকা হেসে ওয়াসিমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়

— আমার একটা আবদার রাখবি বউ
আবসারের কথা শুনে তার দিকে তাকায় ওয়াসিমা কেমন যেনো করুন স্বরে কথাটা বলল আবসার

— কি আবদার আপনার আমার সাধ‍্যে থাকলে অবশ্যই রাখব

— আমাকে একটা বাচ্চা উপহার দিবি বউ ছোট ছোট হাত পা যে এলোমেলো ভাবে আমাদের দুইজনের মাঝে ঘুমাবে যাকে আমরা আদর করব।
আবসারের কথা শুনে তার দিকে তাকায় ওয়াসিমা আবসারও অনেক আশা নিয়ে ওয়াসিমার দিকে তাকায়। ওয়াসিমাকে চুপ থাকতে দেখে আবসার আবার বলল — আমি জানি সামনেই তোর ম‍েডিক‍্যাল লাইফ শুরু হবে এর মধ‍্যেই বাচ্চা হওয়াটা বেমানান কিন্তু আমি চাই আমার একটা সন্তান হোক যার ছোট বেলাটা আমি উপভোগ করব তাকে নিজের হাতে লালন পালন করব তোর কিছু করতে হবে না তুই শুধু মন দিয়ে পড়াশোনা করবি আর আমার খেয়াল রাখবি তাতেই হবে জানিস একটা সুস্থ পরিবেশ সুস্থ জীবন আমার অনেক দিনের আশা। নিজের অপূর্ণ ইচ্ছা গুলো পূর্ণ করব আমাদের সন্তানের মাধ‍্যমে।

— সন্তান হলো আল্লাহর প্রদত্ত অশেষ রহমত আল্লাহ্ চাইলে অবশ্যই আমরা বাবা মা হব আবসারের বক্ষে মিশে থেকে ফিসফিসিয়ে বলে।
ওয়াসিমার কথা শুনে আবসারের মুখে হাসি ফুটে ওঠে।
সে ত্বরিত গতিতে ওয়াসিমাকে নিচে ফেলে তার উপর নিজের ভর দিয়ে তার গলায় মুখ ডুবায় ওয়াসিমা খামচে ধরে আবসারের মাথার চুল এই খামচে ধরাটা আবসারকে যেনো আরো বেসামাল করে তোলে সে এলোপাথাড়ি চুমু খেতে থাকে ওয়াসিমার গলায় চোখে মুখে একসময় ঠোটে ঠোট ডুবিয়ে দেয় ডুবে যায় ওয়াসিমার মধ‍্যে আবসার যেখানে না বললেও ভালোবাসা অবস্থান যা ওয়াসিমা টের পায়।

রাতের আকাশটা একটু বেশী সুন্দর বারান্দায় দাড়িয়ে লাবনী একাই দাড়িয়ে আছে রাত কটা বাজে তার কাছে হিসেব নেই ফোনটাও ঘরে রেখে এসেছে। চিন্তায় এদিক ওদিক পায়চারি করছে অরিক এখনো ঘরে আসেনি গতকাল রাতেও ঐ লোকটা ঘরে আসেনি কেনো বলতে পারেনা লাবনী। লাবনী দেখেছে অরিক তার সাথে টুকটাক কথা বললেও দূরে দূরেই থাকে কিন্তু কেনো নাকি সে তাকে এখনো মানতে পারেনি চিন্তিত ভাবে ঘরে পৌছায় লাবনী ওড়নাটা নিয়েই ঘর থেকে বের হয় আবসার আর ওয়াসিমার ঘরে যেতে নিলেও সে যায় না চলে যায় আরুর কাছে সেখানে গিয়ে আরুর ঘরের দরজা নক করে

— কি হয়েছে আপু কিছু বলবেন সদ‍্য ঘুমে ভাঙ্গা আরু জিজ্ঞাসা করে লাবনীকে

— আসলে ওনার নাম্বার আছে তোমার কাছে
— কার আপু
— অরিকের লাবনী ইস্তত করে বলল তার স্বামীর নাম্বার তার কাছে নেই এটা কেমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতি। লাবনীকে ইস্তত করতে দেখে আরু আর কিছু বলে না তার মোবাইল থেকে নাম্বার বের করে দিয়ে দেয় লাবনীকে।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে