বক্ষপিঞ্জিরায় তুই বন্দীনি পর্ব-২+৩

0
231

#বক্ষপিঞ্জিরায়_তুই_বন্দীনি
#সাদিয়া_আক্তার
#পর্ব_২

( ১৮+ এলার্ট )

রাগ আর কান্না মিশ্রিত নয়নে তাকিয়ে আছে ওয়াসিমা। সর্ব শরীর যেমন ব‍্যাথা করতেছে তেমন আবসারের প্রতি রাগও হচ্ছে।

— ওমন করে তাকিয়ে আছিস কেনো শুভ্র বউ মনে হচ্ছে এখনি কাচা খেয়ে ফেলবি

— তো কি করব প্রেম করব আপনার সাথে অসভ‍্য লোক একে তো জোর করে বিয়ে করছেন তার উপর আপনি আমার পুরো শরীরে ব‍্যাথা করে দিছেন।

আবসার একটু এদিক ওদিক তাকিয়ে বোকা হেসে ওয়াসিমাকে বলে — ছি শুভ্র বউ আমার ভালোবাসাকে তুমি এভাবে বলতে পারলা আর আমি কি তোমাকে জোর করে বিয়ে করেছি নাকি

— মানে এই আপনি কি বলতে চাইছেন কালকে এতো এতো কাহিনি করে আমাকে বিয়ে করে এখন নাটক করা হচ্ছে ( আবসারের গলা চেপে ধরে বলল ওয়াসিমা )

ওয়াসিমার কথা শুনে আবসার ওয়াসিমাকে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে বলে — আমি কি তোকে কোনো ভাবে জোর করেছি বা কিছু বলেছি

আবসারের বক্ষে মিশে থেকেই না বোধক মাথা নাড়ে ওয়াসিমা — কিন্তু চোখ রাঙানো দিয়ে হ‍্যা তো বলিয়ে ছিলেন।

— আমার জানা মতে তুই তো ম‍্যাচিউরড সাহসী তোর তো আমার চোখ রাঙানোতে ভয় পাওয়ার কথা না ( দুষ্টু স্বরে বলে আবসার )

আবসারের দুষ্টু স্বর বুঝতে পেরে তার বুকে অনবরত কিল মারা শুরু করে ওয়াসিমা

— আরে আরে ব‍্যাথা পাই তো শুভ্র বউ
কথার মাঝেই ব‍্যাথায় কুকড়ে উঠল ওয়াসিমা বলিষ্ট দেহী আবসারের ভালোবাসার ঝড় ওয়াসিমাকে নিস্তেজ করে ফেলে। তাই তো এতক্ষণ কান্নাভেজা স্বরে এতো অভিযোগ করল ওয়াসিমা।

আবসার আর কিছু না বলে ওয়াসিমাকে নিজের টিশার্ট পরিয়ে নিজের কমোরে বেডে থাকা চাদরটা জড়িয়ে ওয়াসিমাকে নিয়ে যায় ওয়াশরুমে। ব‍্যাথায় কুকড়ে থাকা ওয়াসিমাকে দাড় করিয়ে শাওয়ার ছেড়ে দিতেই শব্দ করে কেদেঁ দেয় ওয়াসিমা।

— আম সরি বউ আম রেলি ভেরি সরি ( বিড়বিড় করে করুণ স্বরে সরি বলছে আর পুরো মুখে ছোট ছোট চুমু দিচ্ছে )
আবসারের বিড়বিড় করে বলা কথা ওয়াসিমার কান পযর্ন্ত পৌছালেও সে বর্তমানে কিছু বলার মতো অবস্থায় নেই।

দীর্ঘ সময় নিয়ে ফ্রেশ হয়ে দুইজন বের হয় ওয়াশরুম থেকে সে ওয়াসিমকে কোনো রকম নিজের একটা টিশার্ট পরিয়ে দেয়। হঠাৎই বিয়ে হওয়ার দারুন কিছু কেনা হয়নি আবসারের ওয়াসিমার জন‍্য। ওয়াসিমাকে বেডে শুয়িয়ে আবসার দ্রুত নিচে নেমে হট ওয়াটার ব‍্যাগে করে গরম পানি সহ কিছু খাবার নিয়ে যায়।

— ওয়াসু সোজা হ পেটে এই ব‍্যাগটা ধর বলেই ওয়াসিমাকে সোজা করে হেড বোর্ডের সাথে হ‍্যালান দিয়ে বসিয়ে ওয়াসিমার পেটে হট ওয়াটার ব‍্যাগটা ধরে। ওয়াসিমাও আরাম পেয়ে ব‍্যাগটা আরেকটু ভালো করে ধরে। এই সুযোগে আবসার ওয়াসিমাকে খাওয়ানো শুরু করে ওয়াসিমা প্রথমে না করলেও পরে খেয়ে নেয় খাওয়া শেষে একটা পেইন কিলার খাইয়ে দেয় আবসার ওয়াসিমাকে। ওয়াশরুম থেকে হাত ধুয়ে এসে ওয়াসিমাকে বুকে জড়িয়ে পাড়ি জমান গভীর নিদ্রায়।

______________________

চেয়ারে বসে ঝিমিয়ে যাচ্ছে অরিক অতিরিক্ত মাত্রায় পায়খানা হওয়ার কারণে মেয়েটা দূর্বল হয়ে পড়ে। পরে তাকে ইমিডিয়েট ডাক্তার দেখালে সে কিছু ঔষধ আর একটা ভিটামিন স‍্যালাইন ইনজেক্ট করে যায়। এই স‍্যালাইন শেষ হতে রাত পার হবে তাই পাছে যদি মেয়েটা ব‍্যাথা না তাই অরিক চেয়ারে বসে ঝিমাচ্ছে কারণ সে তার ঘুমকে একটু বিশ্বাস করে না পরে শশুর বাড়িতে তার মান সম্মান কিছুই থাকবে না।

__________________

সকাল সকাল তীব্র রোদের ঝলকানিতে ঘুমি ভাঙ্গে ওয়াসিমার মুখে হাত দিয়ে কোনো রকম ঘুম ভাব কাটিয়ে ঘড়ির দিকে তাকাতেই তার চোখ চরকগাছ সকাল আটটা বেজে গেছে।

— হায় আল্লাহ্ আমার ফজরের নামাজ বলেই লাফ দিয়ে ওঠে অনুভব করে রাতের মতো ব‍্যাথা এখন নেই। সে আর কিছু না ভেবে বিড়বিড় করে আবসারের মুন্ডুপাত করতে করতে চলে যায় ওয়াশরুমে।
ওয়াশরুমে দাড়িয়ে নিজের পরনে কাপড়ের দিকে তাকায় তার তো এখানে কোনো কাপড় নেই সে গোসল করে কি পরবে। ভাবতে ভাবতেই ওয়াসিমার নজর যায় আবসারের আলমারির দিকে সেখান থেকে ঘাটাঘাটি করে আবসারের অনেক আগের একটা গোল গলার গেঞ্জি আর নরমাল ট্রাউজার বের করে আবার চলে যায় ওয়াশরুম।
একেবারে গোসল করেই বের হয় দ্রুত কালকের সেই হিজাব জড়িয়ে কাজা নামাজটা পরেই নেয়। নামাজ শেষে সালাম ফিরাতে দরজায় নক হয় ওয়াসিমা জায়নামাজ ভাজ করতে করতে দরজা খুলতেই একটা মেয়েকে দেখতে পায় যে হাসি মুখে তার দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা সম্ভবত বয়সে ওয়াসিমার থেকে বড়ই হবে

— শুভ সকাল ভাবী আম্মু আব্বু অনেকক্ষণ ওয়েট করছে ভাইয়াকে ঘুম থেকে উঠিয়ে নিয়ে আসো

— আপু আমার কোনো কাপড় নেই এই অবস্থায় কিভাবে যাব ইস্তত স্বরে বলল ওয়াসিমা

— ওও এই সমস‍্যা দাড়াও আমি আম্মুকে পাঠিয়ে দিচ্ছি
ওয়াসিমাকে ইস্তত করতে দেখে আর কিছু বলল না।
মেয়েটি চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ওয়াসিমার শাশুড়ি আলিয়া সাখাওয়াত আসে সে দরজা নক করতেই ওয়াসিমা খুলে দেয়

— কোনো সমস‍্যা আম্মু

— না আসলে আমার তো এখানে কোনো কাপড় নেই ( এদিক ওদিক তাকিয়ে নিচু স্বরে বলল )

— আচ্ছা এসো আমার সাথে বলেই ওয়াসিমাকে সঙ্গে করে আলিয়া সাখাওয়াত নিজের ঘরে নিয়ে যায়।
আলমারি ঘেটে হালকা গোলাপি রঙ্গা মণিপুরী তাতের শাড়ি বের করে দেয় সাথে তার অনেক আগের একটা ব্লাউজ।

— শাড়ি পরতে পারো তো
ওয়াসিমা হ‍্যা বোধক সম্মতি দিতেই সে ওয়াসিমাকে রেখে ঘরের দরজা বন্ধ করতে বলে চলে যায়।

রেডি হয়ে বের হতেই নিচে হল রুমের থেকে জোরে চিল্লানোর আওয়াজ পায় ওয়াসিমা সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে নামতে দেখে একজন বৃদ্ধা চিল্লাচিল্লি করছে আলিয়া সাখাওয়াতের সামনে আর আলিয়া সাখাওয়াত মাথা নিচু করে চুপচাপ তার কথা শুনছে কোনো জবাব দিচ্ছে না।

দাড়িয়ে দাড়িয়ে বৃদ্ধা মহিলার কথা শুনেছে ওয়াসিমা যতই শুনছে ততই তার রাগ উঠছে কিন্তু সে আজকে প্রথম এই বাড়িতে তার উপর নতুন বউ তাই চুপচাপ শুনে যাচ্ছে।

— এই মেয়ে সময়ের জ্ঞান নেই নাকি কয়টা বাজে হ‍্যা এই ভাবে তুমি সংসার সামলাবে ওয়াসিমাকে ঝাড়ি দিয়ে বলতেই পিছন থেকে আবসার বলল — সময়ের জ্ঞান থাকা লাগবেনা না শুধু স্বামীর ভালোবাসা বোঝার মতো জ্ঞান থাকলেই চলবে দাদি আর সংসার চালানোর জন‍্য তুমি তো আছোই তাই তো এতো বছরেও বছরের ছয় মাস আমাদের বাসায় এসে নিজের হুকুম চালাও

আবসারের কথা শুনে রাগে ফুসে উঠল আবসারের দাদি দিলরুবা সাখাওয়াত কিন্তু আবসারের সাথে কথায় পারবেনা বলেই কিছু না বলে গট গট পায়ে নিজের ঘরে চলে যায়।

দিলরুবা সাখাওয়াত চলে যেতেই ফিক করে হেসে দিলো আরু। আরুর হাসি দেখে আলিয়া সাখাওয়াত তার কান মুচরে দিতেই থেমে যায় সে

— ভাইকে তুমিই উঠিয়েছো তাইনা

— তো উঠাবোনা বছরের ছয়টা মাস আমার আম্মুর উপর খবরদারি করেও বুড়ি ক্লান্ত হয় না এখানে এসেও তোমার উপর শুরু করে আমার কি মনে হয় জানো বড় আম্মু ঐ বুড়ির জন‍্য ঐ কুচুটি মহিলাই ঠিক বলেই জিহ্বায় কামর দিয়ে আলিয়া সাখাওয়াতকে ইশারায় সরি বলে।

আলিয়া সাখাওয়াত মাথা নাড়িয় ওয়াসিমার কাছে যায় — দাদী শাশুড়ির কথায় কিছু মনে করো না আম্মু বায়োজষ্ঠ‍্য মানুষ তো চিন্তা ধারা আগের তাই এতো রিয়েক্ট করে ফেলে

— আমি বুঝতে পারিনি আন্টি কখন সকাল হয়ে গেছে

— তোমাদের বাড়িতে বুঝি শাশুড়িকে আন্টি বলে

— সরি আসলে আমতা আমতা করে বলল

— ইটস ওকে আম্মু আস্তে আস্তে অভ‍্যাস হয়ে যাবে।

#চলবে

#বক্ষপিঞ্জিরায়_তুই_বন্দীনি
#সাদিয়া_আক্তার
#পর্ব_৩

দিলরুবা সাখাওয়াত ও ইসলাম সাখাওয়াতের দুইজন ছেলে এজাজ সাখাওয়াত এবং এহসান সাখাওয়াত। এজাজ সাখাওয়াতের স্ত্রী আলিয়া সাখাওয়াত তাদের দুইজন ছেলে বড় ছেলে আবসার সাখাওয়াত ও ছোট ছেলে আয়মান সাখাওয়াত। এবং এহসান সাখাওয়াতের স্ত্রী তানিয়া সাখাওয়াত তাদের একজন মেয়ে আরিশা সাখাওয়াত তাহা। বিয়ের ষোলো বছরের মাথায় বিধবা হন দিলরুবা সাখাওয়াত স্বামী হারা দিলরুবা সাখাওয়াত তখন দুই সন্তান সহ স্বামীর রেখে যাওয়া বিপুল সম্পত্তি ও ঢাকার ব‍্যবসা একা হাতে সামলায়।
তাই দুই ছেলের কেউই মায়ের উপর কথা বলে না আর দুই ছেলের বউরাও শাশুড়িকে বেশ সম্মান করে তাইতো তারা তাদের শাশুড়ির কটু কথা শুনেও চুপ থাকে কেননা একা হাতে সংসার সামলানো মহিলাটি এখনো বউদের হাতে নিজের গড়া সংসার ছেড়ে দিতে নারাজ। ভাগ‍্য সুপথে থাকায় বউরাও এই বয়সে এসেও শাশুড়ির সব কথাই মেনে চলেন।

কিন্তু এর বিপরীতে আছে তার তিন নাতী আবসার আয়মান আরিশা তারা কেউই দাদীর সেচ্ছাচারীতা মানতে চায় না। আবসার তো আরো না সে তার দাদীকে সহ‍্যই করতে পারে না।

__________________

সাখাওয়াত বাড়ির বিশাল ডাইনিং টেবিলে সবাই খেতে বসেছে আবসার ওয়াসিমা এখনো নিচে নামেনি তখন দিলরুবা সাখাওয়াত যাওয়ার পরপরেই আবসার ওয়াসিমাকে নিয়ে নিজের ঘরে চলে যায় এখনো বের হয়নি

— এই আরু মা যানা তোর ভাই ভাবিকে ডেকে নিয়ে আয় এখন যদি আম্মা এসে দেখে বউটা নিচে এখনো নামেনি তাহলে আরো তুল কালাম করে ফেলল

— ডাকতে হবে না আমরা এসে পড়েছি আলিয়া সাখাওয়াত কথার প্রেক্ষীতে নিচে নামতে নামতে বলল আবসার।
একটু পরেই দিলরুবা সাখাওয়াত নামতেই সবাই নাস্তা করতে বসল খাওয়ার সময় কেউ একটা বাক‍্য উচ্চারণ করল না।

খাওয়া শেষ করার সাথে সাথেই আবসার নিজের ঘরে চলে যায় যাওয়ার সময় ওয়াসিমাকে নিয়ে যেতে চাইলে ওয়াসিমা যায় না এই লোকের সাথে থাকলেই এই লোকের অসভ্যতামি শুরু হয়ে যায়

— ওয়াসিমা এটা তোমার চাচা শশুর এটা তোমার চাচী শাশুড়ি আর এটা আলিয়া সাখাওয়াতকে বলতে না দিয়ে আরুই বলা শুরু করে — আমি হলাম তোমার ওয়ান এন্ড অনলি ননদীনি আরিশা সাখাওয়াত তাহা
— বড় মা আবু ভাই এটা ঠিক করল না জানিয়ে বিয়ে করে ফেলল আমি একটু মজাও করতে পারলাম না ( আলিয়া সাখাওয়াতের দিকে তাকিয়ে গাল ফুলিয়ে বলল আরু )
আরুর কথা শুনে সবাই হাসে। ওয়াসিমা নত মস্তকে মৃদু স্বরে সবাইকে সালাম দেয়। তানিয়া সাখাওয়াত ও এহসান সাখাওয়াত ওয়াসিমাকে স্বর্ণের চেইন এবং চুড়ি উপহার দেয়। সাথে তাদের বাড়ির সবার কথাও জিজ্ঞেস করে ওয়াসিমার তখন বাড়ির কথা মনে পরলেও কিছু বলে না মুখে হাসি টেনে সবার সাথে গল্প করে। ওয়াসিমার কাছে এই বাড়ির সবাইকেই বেশ ভালো লেগেছে শুধু দাদী শাশুড়ি বাদে।

দুই জা মিলে রান্নাঘরে কাজ করছিলো তখন ওয়াসিমা ধীর পায়ে সেখানে উপস্থিত হয় কিন্তু দুই শাশুড়ির একজনেও তাকে কাজ করতে দেয় না তাই উপায় না পেয়ে চুপচাপ দাড়িয়ে দুই শাশুড়ির গল্প করা শুনতে লাগে
— ভাবী ভাইয়া চট্টগ্রাম থেকে আসবে কবে ছোট জা তানিয়ার কথা কথা উত্তরে আলিয়া সাখাওয়াত বলল — পরশু আসবে

— ভাইয়া কি জানে আবসারের বিয়ের কথা
তানিয়ার কথা শুনে আলিয়া সাখাওয়াত ওয়াসিমার দিকে একবার তাকিয়ে মাথা নাড়ায়। শাশুড়ির মাথা নাড়ানো দেখে পায় আশঙ্কা করে আরেকটি ঝড়ের।

তাদের কথপোকথনের মধ‍্যেই উপর থেকে শুনা যায় আবসার রাশভারী স্বরে ওয়াসিমাকে ডাকছে
— ওয়াসিমা

আবসারের ডাক শুনে শাশুড়ি আর চাচী শাশুড়ির দিকে তাকিয়ে লজ্জায় মাথা নত করে

— যাও মা দেখ হয়তো আবসারের কিছু প্রয়োজন
বলতেই ওয়াসিমা দ্রুত সেখান থেকে উঠে গেলো।

ওয়াসিমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হাসে দুই জা

ঘরের সামনে এসে আটকে রাখা দমটা ফুস করে ছেড়ে দেয় ওয়াসিমা

— উফফ আমাকে লজ্জা না দিয়ে এই লোকটা কোনো কাজ করতে পারে না নাকি বিড়বিড় করে বলতেই আবসার তাকে টান দিয়ে ঘরের মধ‍্যে ঢুকিয়ে দরজা আটকে দেয়

— কাল থেকে স্বামীর সান্নিধ্য পাবে এখন একটু কাছে কাছে থাকবা তা না করে খালি পালাই পালাই করো কেনো বউ ওয়াসিমার সর্ব মুখে স্লাইড করতে করতে বলে
চোখ বন্ধ করে কোনো রকম কাপাস্বরে বলে — আপনি কি কোথাও যাবেন

— হু সাথে তুমিও বলেই ওয়াসিমার বন্ধ করে রাখা চোখ জোড়ার গভীর চুমু খায়। ওয়াসিমা খামচে ধরে আবসারের টিশার্ট

— কোথায় যাব কোনো রকম জিজ্ঞেস করে

— তুমি তোমাদের বাসায় যাবা তোমাকে সেখানে রেখে রাতের গাড়িতে আমি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিব

আবসারের কথা শুনে তড়াক করে চোখ খুলে ফেলে ওয়াসিমা অবাক স্বরেই বলে — মানে

— হু তোমার স্বপ্ন ভুলে গেলে নাকি বিয়ে হয়ে গেছে বলে পড়ার ইচ্ছা নেই নাকি
— আপনি আমাকে পড়তে দিবেন

— স্ত্রীর স্বপ্ন পূরণ করতে সাহায্য করা স্বামী হিসেবে আমার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের মধ‍্যে পড়ে আমিও যাতে গর্ব করে বলতে পারি ড. ওয়াসিমা আমার স্ত্রী
আবসারের কথা শুনে তার বুকে ঝাপিয়ে পরে ওয়াসিমা।
লোকটার প্রতি আজ একরাশ শ্রদ্ধা জন্ম নিলো সকাল পযর্ন্ত সে আবসারকে ভুল বুঝে ছিল কিন্তু এখন তার ধারণা বদলে গেলো।

____________________

ঘুম ভাঙ্গতেই চারিদিকে তাকায় লাবনী চেয়ারে গুটিসুটি মেরে মুখ কুচকে ঘুমিয়ে আছে অরিক
অচেনা একটা লোককে নিজের ঘরে দেখে ভয় পায় লাবনী বেশ জোড়ে শোরেই একটা চিৎকার দেয়।
লাবনী ঘুম ভেঙ্গে যায় একটু নরতেই ঠাসস করে ফ্লোরে পরে যায়।
ফ্লোরে বসে মুখ বিরক্ত ভঙ্গিতে লাবনীর দিকে তাকায় অরিক

— এই এই কে আপনি আমার রুমে কি হ‍্যা এই চোর তাইনা চুরি করতে এসেছেন তাইনা দাড়ান এখনি যদি প‍্যাদানি না খাওয়াইছি না তো আমার নাম লাবনী না আম্মু আব্বু তোমরা কোথায় কে কোথায় আছো তাড়াতাড়ি আসো ঘরে চোর ডুকেছে
লাবনীর চিৎকারে সবাই হুরমুর করে ডোকে লাবনী ঘরে
— কি হয়েছে মা এমন চিৎকার করছিস কেনো লাবনীর মাথায় হাত বুলিয়ে বলে তার বাবা লতিফ আহমেদ

— দেখো বাবা এই লোকটা আমার ঘরে চুরি করতে এসেছে
সবাই লাবনী দিক অনুসরণ করে তাকিয়ে দেখে অরিক আসন পেতে মাজায় হাত দিয়ে চোখ মুখ কুচকে বিরক্ত ভঙ্গিতে বসে আছে

— এইলো ছেরি নিজের স্বামীরে চিনোস না কালেই না তগো বিয়া হইল শাষনের ভঙ্গিতে বলে লাবনীর দাদী
লাবনীর বাবা মা যেয়ে দ্রুত অরিককে ধরে উঠায়

— ব‍্যাথা পেয়েছেন বাপজান আসোলে আমার মেয়েটা একটু অবুঝ তার উপর আবার কালকে অসুস্থ থাকাকালীন বিয়ে হয়েছে তাই বেশ ইস্তত করেই বলল লাবনীর মা লিপি বেগম।

— আহ লাবুর মা এতো কথা কয় না জামাই বাবাজি ব‍্যাথা পাইছে তারে আগে বিছানায় শোয়াও বললেন লাবনীর বাবা লতিফ আহমেদ।

লাবনীর মনে পড়ে কাল তার বিয়ে ছিলো শুরুতে সব ঠিক থাকলেও যখন লাবনী একটা শরবত খায় তখন থেকে লাবনীর ওয়াশরুম থেকে ঘর ঘর থেকে ওয়াশরুম করেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে পরে একপ্রকার ঘোরের মধ‍্যেই সে বিয়ের সময় কবুল বলে।

— এই ছেরি খাম্বার মতো দাড়াইয়া আসোছ ক‍্যান তাড়াতাড়ি গরম পানি আন আর বাম নিয়া আয় মালিশ করতে হইব
দাদীর কথা শুনে লাবনী দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে রান্নাঘর থেকে গরম পানি করে আনে।

লাবনী গরম পানি করে ঘরে ঢুকতেই সবাই ঘর থেকে বের হয়ে যায়
অরিক উবু হয়ে শুয়ে আছে লাবনী কাপা কাপা হাতে গামছা গরম পানিতে ভিজিয়ে অরিকের শার্ট হালকা উচু করে শেক দেয়।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে