#বক্ষপিঞ্জিরায়_তুই_বন্দীনি
#সাদিয়া_আক্তার
#পর্ব_৩৩
সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না। তাইতো কেটে গেছে একমাস আজকে ওয়াসিমার মেডিক্যালের ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট দিবে। তাই গতকাল রাত থেকেই তার হাসফাস লাগছে ঠিক মতো খাওয়াও হয়নি। প্রতিদিনের মতো আবসার খাইয়ে দিলেও কিছু খেতে পারেনি। সকাল সকাল সারা ঘরে পায়চারি করছে। সারা সকাল আবসার সামলাতে পারলেও একটু আগেই আর কি জরুরি কাজ পরে যাওয়ায় না চাইতেও যেতে হয়।
অন্যদিকে,,,,
আরুর ও বিসি এস সামনে সেও নাওয়া খাওয়া বাদ পড়ছে। আকলিমা কোন দিকে সামলাবে তা বুঝতে পারছেনা। তাই তাকে আস্যস্ত করে ইরফান আসে মেয়ের কাছে
— আসব মা
— আসোনা আব্বু। মেয়ের ঘরে আসতে অনুমতি নিতে হয় নাকি আসো ( বলেই বাবার হাত ধরে তাকে ঘরে ঢুকায় ওয়াসিমা )
— কি হয়েছে আম্মু?? মুখটা একদম চুপসে গেছে কেনো ।
— রেজাল্টের টেনশন আব্বু ( ঠোট উল্টে বলল )
তোমাদের জামাই অনেক আশা নিয়ে আছে এই পরীক্ষা নিয়ে এখন যদি পাশ না করতে পারি তাহলে সে অনেক কষ্ট পাবে।
ইরফান মেয়ের কথায় হাসে। যেই মেয়েটার প্যাশন ছিলো ডাক্তার হওয়া সেই মেয়ে এখন নিজের চিন্তা না করে তার স্বামীর চিন্তা করছে।
— কয়টা বাজে রেজাল্ট আউট হবে আম্মু
— তা বলতে পারি না কিন্তু উনি বলেছে যে উনি দেখে আমাকে জানাবে। কিন্তু এখনো আসল না কেনো বুঝতে পারছিনা বারোটা বেজে গেছে।
— আচ্ছা আল্লাহ ভরসা যা হবার হবে। তুমি এতো চিন্তা করোনা এখন গোসল করে নামাজ পরে নাও। তারপর খাবে কাল রাত থেকে ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করোনি। ( ওয়াসিমার মাথার চুল গুলো গুছিয়ে দিয়ে বলল )
বাবার কথা কোনোকালে ফেলতে পারত না ওয়াসিমা আজকেও পারল না তাই ওয়ারড্রোব থেকে কাপড় নিয়ে চলে গেলো ওয়াশরুমে।
কিছুক্ষণ পড়ে বের হয়ে ইরফানকে দেখতে পায়না ওয়াসিমা। ঘরে থেকে বের হতে নিলেই আবসার ঘরে প্রবেশ করে,,,, কিন্তু আবসারের লটকানো চেহারা দেখে ওয়াসিমা চিন্তিত হয়। তাই চিন্তিত স্বরেই জিজ্ঞেস করে — কি হয়েছে আপনার এরকম লাগছে কোনো
— ডাক্তার হওয়া তোর ছোট থেকে স্বপ্ন তাইনা
— হ্যা আব্বু যখন আমাকে খেলনা কিনে দিতো আমি বেশীর ভাগ সময় ডাক্তারের খেলনা কিনতে চাইতাম। আবসার অসুস্থ হলে হাসপাতাল গেলে দেখতাম ডাক্তাররা এপ্রোন পরে গলায় স্থেটোস্কোপ ঝুলিয়ে রাখতো। তার দেখে আমার ভীষন ভালো লাগত। তখন মুগ্ধ চোখে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকতাম।
— কোনো ছেলে ডাক্তারের তাকিয়ে থাকতি তোর চোখ আমি উপরে ফেলব বলে দিলাম
— খচ্চর কোথাকার তাকলেই বা কি বতর্মানে তারা আমার বাবার সমান। বদমেজাজি লোক ( সম্পূর্ণ বিরক্তি ঢেলে দিয়ে বলল )
ওয়াসিমার কথা শেষ হতেই তাকে নিজের কোলে বসায় আবসার
— আমি যদি বলি তোর ঐ বাবার বয়সী লোকদের দিকে তাকানো ও আমার সহ্য হয়না তাহলে কি করবি?? তোর নজর শুধু তিন পুরুষের উপর থাকবে _ বাবা,, ভাই,, স্বামী এই তিনজন ছাড়া আর কাউকে আশে পাশে অ্যালাউ করব না। এতে তুই আমাকে “” পসেসিভ ভাবিস ইয়া রেড ফ্ল্যাগ ভাবিস আই ডোন্ট কেয়ার।।।
আবসারের কথা শুনে অবাক হয়ে তাকায় ওয়াসিমা। বিয়ের এতো মাস পরে আবসারের এই রকম কথা শুনল। শান্ত কন্ঠেও যে কাউকে এরকম থ্রেড দেওয়া যায় তা সে জানত না।
— কি ভাবছিস
— আমার মনে হচ্ছে আমি আজ অন্য আবসারকে দেখছি। যার চোখে ইনসিকিরিটি ভরপুর কি হয়েছে আপনার??
— কিছুদিন পরে তো তুই মস্ত বড় ডাক্তার হবি। বাংলাদেশের সুনাম ধন্য হাসপাতালে ডাক্তারী পড়বি। তখন এই লোকের কথা মনে থাকবে। তোর বয়সী মেয়েদের এখনো বিয়ে হয়নি অথচ তুই আরো এক বছর আগেই বিবাহিত ট্যাগটা হাতে নিয়ে ঘুরছিস। তাও আবার নিজের থেকে এগারো বছর বড় একটা লোকের সাথে তখন থাকতে কষ্ট হবে তাইনা। তুই মস্ত বড় ডাক্তার হবি তোর সাথে সামান্য কাপড়ের ব্যবসায়িকের সাথে মানাবে।
— আমি যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চান্স পেয়েছি। সেটা সরাসরি বললেই পারতেন ( বলেই হালকা হাসল )
হাসিটা অনুরাগ না তাচ্ছিল্য বুঝা গেলো না। তবে আবসারের কোল থেকে চুপচাপ উঠে গেলো সে কোনো কথা বলল না বা নিজের পক্ষের কোনো সাফাই গাইল না।
ওয়াসিমা চলে যেতেই দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে আবসার বসে পড়ল আজকের কথা গুলো সে বলতে চায়নি।
_____________________
ওয়াসিমা ঘর থেকে বেড়িয়ে আসতেই দেখে ড্রয়িং রুমে সবাই হইহুল্লোর করছে। নিজেকে কোনো রকম শান্ত করল। তার ভিতর থেকে কান্না আসছে। এতো দিনের সংসারে তাকে এই বুঝলো লোকটা ঠোট কামড়ে কান্নাটা গিলে ফেলল।
ভালোবাসার মূল ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বাস। যেখানে বিশ্বাস নেই সেখানে ভালোবাটাও নেই ঐ লোকটা তার কিশোরী বয়সে আবেগ। যা সে ভেবেছিল সময়ের সাথে ভুলে যাবে তা ইরফান রহমানই তাকে বলেছিল।
হ্যা ওয়াসিমাও তাকে অনেক আগে থেকেই ভালোবাসত। অরিক আবসার যখন ছুটিতে বাসায় আসত ইন্ট্রোভার্ট ওয়াসিমা লুকিয়ে লুকিয়ে তাকে দেখত তার সামনেও যেতো না। সেবার যখন আবসার ছুটিতে বেড়াতে আসলে ওয়াসিমা সামনে না যেয়ে পর্দার আড়ালে দাড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করছিলো শক্ত সামর্থ্য দেহের শ্যাম পুরুষকে। সেই সময় ইরফানের নজরে পরেছিল ওয়াসিমা ইরফান তাকে জিজ্ঞাসা করলে। বাবার কাছ থেকে কিছুই লুকোয়নি ওয়াসিমা চৌদ্দ বছরের ওয়াসিমা বন্ধুত্ব সুলভ আচরণের কারণে বাবাকে সবটাই বলেছিল। যে সে আবসারকে পছন্দ করে তাকে ভালোবাসে। তখন ইরফান তাকে বলেছিলো — এটা তার সাময়িক মোহ তার আবেগ কিছুদিন পরে সেটা কেটে যাবে।
সেদিন ওয়াসিমা বলেছিলো — আর যদি না কাটে তাহলে
— তাহলে আমি নিজে তোমার আর আবসারের বিয়ের কথা বলব। ( মেয়ের মাথায় হাত রেখে বলেছিল )
কিন্তু শর্ত ছিলো তার বয়স আঠারো হওয়ার পযর্ন্ত যদি এই অনুভূতি এরকম থাকে তাহলেই সম্ভব। সেই থেকে ওয়াসিমা ক্লাসের সব ছেলেদের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিলো। ঐটুকু বয়সে বোরকা ধরল। খুব একটা সাজত না এলোমেলো ভাবে স্কুলে যেতো। তাকে সবাই গেয়ো আনস্মার্ট ভেবে কাছে আসত না।
নাহলে ওয়াসিমার মতো মেয়ে কোনো দিনও আবসারের সাথে বিয়ের পরপর এতো তাড়াতাড়ি মিশে যেতে পারত না। কোই তখন তো জিজ্ঞাসা করেনি -” ওয়াসু তোকে আমার পছন্দ কিনা??
— কি হয়েছে মা এভাবে দাড়িয়ে আছো কেনো। অরিককে ফোন করেছি মিষ্টি নিয়ে আসছে। সাথে তানিয়া আপা ও এহসান ভাইকেও। ( ওয়াসিমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল ইরফান )
এর মধ্যে আকলিমা এসে মেয়ের কপালে চুমু খায়
— শুভ কামনা আম্মু ( মায়ের কথায় হালকা হাসে ওয়াসিমা
— আমার আব্বুজান কই ( চিল্লিয়ে ডাকল আকলিমা )
ভিতর থেকে আবসার আসে ওয়াসিমার দিকে একনজর তাকিয়ে। আকলিমার দিকে তাকায়
— অনেক অনেক ধন্যবাদ আব্বু। আমার মেয়েটার ইচ্ছার এতো গুরুত্ব দেওয়ার জন্য ( আবসারের হাত ধরে বলল )
আবসার আকলিমার হাত জোড়া নিজের হাতে নিয়ে বলল — আম্মু তোমার মেয়েটা আমার কলিজা আর আমার একটা মাত্র বউ তার ইচ্ছা পূরণ করব না তো কার ইচ্ছা পূরণ করব। পাশের বাসার ভাবীর।
— বজ্জাত ছেলে ঠ্যাং ভেঙ্গে দিব আমাদের মেয়ে ছাড়া অন্য কারো দিকে তাকালে ( ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বলল এহসান সাখাওয়াত )
আরু এসে তাকে জড়িয়ে ধরে বলল — কংগ্রাচুলেশন ভাবী
ওয়াসিমা হালকা হাসল। সবাই তার অ্যাচিভমেন্ট নিয়ে আনন্দিত তবে যে অ্যাচিভমেন্টটা পেয়েছে তার মুখে বিষাদের হাসি। অনেক্ষণ ধরেই ইরফান খেয়াল করেছে ওয়াসিমা রেজাল্টে তার যেই খুশীটা হওয়ার কথা সে সেরকম খুশী নেই তার চেহারায়। আবসারও একটু মন মরা কি হয়েছে এই দুইজনের মধ্যে।
আবসার আবার তার মেয়েকে কিছু বলেনি তো এইবার যদি এরকম কিছু হয় তাহলে ঐ আবসারের কাছে আর তার মেয়েকে রাখবে না। এই মেয়েটা তার কলিজা। সারা দুনিয়া একদিকে মেয়ে আরেকদিকে। একটু পরেই উল্লাস দ্বিগুন করতে অরিক মিষ্টি নিয়ে হাজির। এসেই ঘন্টা খানেক ওয়াসিমাকে জড়িয়ে ধরে ছিলো।
— কি গো ভাবী সাহেবা কিছুদিন পরেই তো তুমি ডাক্তার হয়ে যাবা তখন কি আমাদের কথা মনে থাকবে। ভাবা যায় কি র্দুদান্ত রেজাল্ট প্রথম দশ জনের মধ্যে আছো ( ঠাট্টার স্বরে বলল আরু )
— কিছুদিন পরে তুমিও তো বিসি এস ক্যাডার হয়ে যাবা তখন তুমিও আমাদের ভুলে যাবা ভাবী
— উহু নিজের সত্তাকে কি কেউ ভুলে যেতে পারে
— তেমনি নিজের অর্ধাঙ্গকে ও কেউ ভুলতে পারে না বলেই মিষ্টি প্লেটে সাজিয়ে চলে যায় রান্নাঘর থেকে।
তার যাওয়ার দিকে হতবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল আরু। আজকে ওয়াসিমার গলার স্বরে অন্যকিছু ছিলো।
#চলবে
#বক্ষপিঞ্জিরায়_তুই_বন্দীনি
#সাদিয়া_আক্তার
#পর্ব_৩৪
মাগরীবের নামাযের পরে সবাই যখন হইহুল্লোর করতে করতে নাস্তা করতে ব্যস্ত তখন হঠাৎই বাড়ির বেল বেজে ওঠে।
— এই সময় আবার কে আসল। আরু মা দেখতো কে এসেছে। ( রান্নাঘর থেকে বলল আকলিমা )
বর্তমানে সবার অবস্থান চার তলায় অরিকদের ফ্ল্যাটে। আরু গেট খুলে অবাক হয়ে সামনে দাড়িয়ে থাকা ব্যক্তিদের দিকে তাকিয়ে আছে
— ভিতরে আসতে দিবে না মামনি
স্তরে পায়ে আরু গেট ছেড়ে সরে দাড়ায়।
— আসতে পারি
কারো কন্ঠস্বর শুনে এহসান ও ইরফান সামনে তাকায়।
— ভাইয়া আসো আসো ( এহসান সামনে গিয়ে এজাজ সাখাওয়াতের হাত টেনে আনে। পিছে পিছে আসে আলিয়া সাখাওয়াত
— আসো বসো ভাই ভাবী,( আলিয়া ও এজাজকে বসতে বলল )
আকলিমা সন্ধ্যার নাস্তা নিয়ে এসে এজাজ ও আলিয়াকে দেখে ইরফানের দিকে তাকায়। ইরফান ও তার দিকে তাকাতেই দুইজনের চোখাচোখি হয়। একে অপরকে জিজ্ঞেস করে ইশারায় কি হয়েছে। যারা আজ পযর্ন্ত ছেলের শশুর শাশুড়ির খোঁজ খবর আজ পযর্ন্ত নেয় নাই আজ হঠাৎই তারা কি উপলক্ষ্যে।
— আমরা জানি আপনারা বেশ অবাক হয়েছেন। অবাক হওয়ারই কথা ছেলের বিয়ের প্রায় দেড় থেকে দুই বছর চলল আজ পযর্ন্ত সেই ভাবে কোনো দেখা সাক্ষাত আমাদের হয়নি। একটু শক তো হবেন তাইনা,,,
( আকলিমা ও ইরফানের উদ্দেশ্যে বলল এজাজ )
— তা তো অবশ্যই একটু শক তো লেগেছে ( কোনো রকম মুখে হাসির রেখা টেনে বলল ইরফান )
— তা ভাই বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠান চলছিল নাকি খাবার দাবারের এলাহি ব্যবস্থা ( টেবিলে রাখা খাবারের দিকে তাকিয়ে বলল )
— হ্যা ভাই আসলে আমাদের মেয়েটা মেডিকেলে চান্স পেয়েছে তাই ছোট খাটো আনন্দ উল্লাস আর কি।
— আলহামদুলিল্লাহ্ তাহলে একটা ডক্টর বউমা পাচ্ছি তাই না
এজাজ সাখাওয়াতের কথায় সবাই অবাক কিছু দিন আগে পযর্ন্ত যে লোক ওয়াসিমাকে দেখতে পারত না। আবসারের থেকে ওয়াসিমাকে সরানো জন্য জুলিয়ানার সাথে মিলে জঘন্যতম চাল চেলেছে। তার হঠাৎই সুর চেঞ্জ হয়ে যাওয়ায় সবাই অবাক বইকি অনেক বেশী অবাক।
এতক্ষণ ইরফান ও এজাজের কথোপকথনের মাঝে সবাই চুপ থাকলেও এবার এহসান বলে উঠল -” কিছু বলবে ভাইজান??
— হ্যা বলতেই তো এসেছি।
— কি??
— আগামী শুক্রবার আয়মানের বিয়ের দিন ধার্য করেছিলাম। তোমাদের এঙ্গগেজমেন্টের সময় দাওয়াত দিয়েছিলাম তোমরা যাওনি। এবার অন্তত তোমাদের উপস্থিতি চাই। তাই দাওয়াত দিতে এসেছি
এহসানকে বলে আবারও বলা শুরু করল — ইরফান ভাই বিয়াই হিসেবে আমরা খুব একটা পরিচিত না। আমার ছোট ভাইয়ের সাথে যেই সম্পর্কটা আপনার আছে সেটা আমার সাথেও হওয়া উচিত ছিলো। কিন্তু হয়নি তাতে দোষটা অবশ্য আমারই ( ইরফানের উদ্দেশ্যে বলে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ল )
— আম্মু আমাকে কড়া করে এককাপ কফি দেন তো আর এখনো নাস্তাই পে,,,, ( ঘরের থেকে বের হতে হতে বলল আবসার কিন্তু সামনে তাকিয়ে অবাক হলো )
— উনারা এখানে কি করছে ( চিৎকার করে বলে উঠল আবসার )
আবসারের চিৎকার শুনে ঘরের সবাই বেশ ভয় পায় না জানি এখন দুই বাপ ছেলের মধ্যে কি হয়???
— আমি এখানে একটা জরুরী কাজে এসেছি কাজটা শেষ হলেই চলে যাব ( গম্ভীর কন্ঠে বলল এজাজ সাখাওয়াত )
— আপনাদের এখানে কোনো কাজ নেই। আপনার এখন আসতে পারেন ( বলেই হাত উচু করে সামনের গেটের দিকে দেখায় )
ইরফান আকলিমাকে ইশারা করে আবসারকে সামলানোর জন্য
— আব্বু থামো। এনারা এখন আমাদের মেহমান তাই আপাদত চুপ থাকো ( আবসারের হাত ধরে বলল )
আকলিমার কথা শুনে আবসার তার দিকে তাকায়। সে তার দিকে অনুরোধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সে আর কিছু বলে না কারণ মায়ের আদর কি সেটা আবসার তানিয়া ও আকলিমার কাছ থেকেই পেয়েছে তাই সে আর কিছু না বলে চুপচাপ আবার ঘরে চলে যায়।
আবসার চলে যেতেই ইরফান আবার বলা শুরু করল — ভাই আমার ছোট ছেলে আয়মানের বিয়ে তারই দাওয়াত দিতে এসেছি আমি আন্তরিক ভাবে আপনাদের বলছি আপনারা আইসেন। ( এজাজ হাতের কার্ডটা এগিয়ে দিয়ে বলল। ইরফান কার্ডটা নেয় )
— আমরা চেষ্টা করব ভাই সাহেব
— উহু চেষ্টা না আপনাদের আসতেই হবে ( জোড় দিয়ে বলল )
ইরফান একবার আকলিমার দিকে তাকায় সে হ্যা বলতেই ইরফান ও হ্যা বলে দেয়। এইসব কিছুতে তানিয়া,,, আরু,,, একদম চুপ ছিলো কিন্তু এবার আরু মুখ খুলল — আম্মু তোমাদের ছেলেকে ফোন দাও সে বললেই পরে হ্যা বলো
— দরকার নেই আরু মা আমরা যা বলব তাই হবে।
— কিন্তু বাবা সেদিনের ঘটনা,,,,
— আরু চুপ করো ( ধমক দিলো এহসান ) রাগে আরু চলে গেলো কিচেনে।
এজাজ আজ বুঝতে পারে আবসার আরু কেউই তাদের পছন্দ করে না। করার কথাও না তারা দুইজন সব সময় তাদের থেকে অবহেলাই পেয়েছে।
— আজকে তাহলে আসি বিয়াই। তবে একটা আবদার আমার বউমাটাকে একটু দেখি
— ভাই সাহেব আসলে দুই ভাই – বোন একটু বাইরে গেছে।
— আচ্ছা তাহলে আর দেখা হলো না আমরা উঠি আজ চলো আলিয়া ( বলতে বলতে উঠে দাড়ায় এজাজ সাখাওয়াত )
— এটা কিভাবে হয় ভাই আজ প্রথম আমাদের বাড়িতে এসেছেন ডিনার না করে যেতে দিব না
— আরে না আপা আমাদের একটু কাজ আছে
— সেটা অন্য সময় করিয়েন আজকে আমাদের সাথে ডিনার করেই যেতে হবে।
এজাজ অনেক বললেও আকলিমা রাজী হয়না। সাথে এহসান ও তানিয়ও অনেক জোড় করে তাই তারা সিদ্ধান্ত নেয় তারা ডিনার করেই যাবে।
তারা ডিনার করবে শুনে দুই বিয়ান রান্নার কাজে লেগে পড়ল। তানিয়া আরুকে ঘর থেকে টেনে বের করল — এতো কিসের জেদ হ্যা। তোর শাশুড়ি সন্ধ্যা থেকে একা একা কাজ করছে তুই হাত গুটিয়ে বসে আছিস। কি একটা পরীক্ষা পরীক্ষা করে সংসারের সব কাজ থেকে বিরতি নিয়ে নিয়েছিস।
আরু আর কি করবে মা আর শাশুড়ির সাথে রান্নার কাজে হাত লাগায়।
এর মধ্যে ওয়াসিমা ও অরিক পৌঁছে যায়। অরিক ওয়াসিমা তাদের সালাম দিয়ে আলাপ করে
— ঘুরা হয়েছে আম্মু ( এহসান বলল )
— জ্বী বাবাই
— ভাইজান তোমার বউমা ( এজাজ সাখাওয়াতকে উদ্দেশ্য করে বলল )
— আসসালামু আলাইকুম
এজাজ সালামের উত্তর নিয়ে ওয়াসিমার কাছে উঠে আসে।
— মাশাল্লাহ্ আমার ছেলের পছন্দ আছে বলতে হবে।
ওয়াসিমা কিছু বলল না শুধু হাসল।
— তা মামনি কোথায় গিয়েছিলে
— এই একটু সামনেই বা,,,, ( কথাটা শেষ করার আগেই আবসার ডাক দেয় )
— ওয়াসু
— জ্বী
— দুই মিনিটের মধ্যে ঘরে ঢুকবি নাহলে খবর আছে ( ঘরের দরজার সামনে দাড়িয়ে চিৎকার করে বলল )
তার চিৎকার শুনে কেপে উঠল ওয়াসিমা। এজাজ সাখাওয়াতের দিকে তাকালে সে যাওয়ার ইশারা করল। ওয়াসিমাও ধীর পায়ে চলে যায় ঘরে।
— কিছু বলবেন ( ঘরে ঢুকে বলল ওয়াসিমা )
— সারা বিকেল কই ছিলি তুই
— কেনো বাসায়ই তো ছিলাম
— আমি যে ঘরে বসে ছিলাম তোর ওয়েট করছিলাম তা কি তুই জানিস না। ( চিল্লিয়ে বলল )
— জানি না আপনের আজকে কি হয়েছে। সকাল থেকে এমন কেনো করছেন। জানিনা আমি কোনো ভুল করেছি নাকি যদি করেও থাকি মাফ করে দেন তাও আমার আম্মু আব্বুর সামনে এভাবে চিল্লাইয়েন না। তারা খারাপ ভাববে। ঠোট কামড়ে কান্না আটকাতে আটকাতে বলল। এক ফোটাও কান্না করবেনা সে কেনো করবে যে তাকে বুঝে না তাকে বিশ্বাস করেনা তাকে কোনো কিছু বলার নেই ওয়াসিমার। আবসারের দিকে একপলক তাকিয়ে চলে যায় বারান্দায়। ঘর থেকে বাহির হয়না কেননা সে জানে এখন ঘর থেকে বের হলে আবসার আরো ক্ষেপে যাবে।
#চলবে
#বক্ষপিঞ্জিরায়_তুই_বন্দীনি
#সাদিয়া_আক্তার
#পর্ব_৩৫
সম্পর্কে যখন শীতলতা আসে তখন দুইজনের মধ্যে একজনকে সেই চেষ্টা করেই দেখতে হয়। যদি চেষ্টার ফলে কোনো সম্পর্ক বেচে যায় তাহলে আল্লাহ্ ও খুশী হয়।
আজ সেই প্রচেষ্টা করতেই ওয়াসিমা বারান্দায় বসে আছে আবসারের আশায়। আজ দুই দিন আবসার অনবরত ওয়াসিমাকে এভোয়েড করে চলেছে কিন্তু কেনো সেটা ওয়াসিমার জানা নেই। তার ভুল কি সেটাও জানা নেই।
ঐ দিন ওয়াসিমা কথা গুলো বলার পর আবসার রাগ করে বাসা থেকে বেড়িয়ে যায়। সেই আসা আসে রাত তিনটা সবাই ভাবে হয়তো এজাজ সাখাওয়াতকে দেখে রেগে গিয়েছে তাই তখন কেউ আমলে না নিলেও। তার পরের দিনেই সে টের পায় আসলে রাগটা তো তার উপর কিন্তু কেনো ভেবে পায় না ওয়াসিমা।
রাত একটা নিচ থেকে আবসারকে ঢুকতে দেখেই বারান্দা থেকে সরে যায় ওয়াসিমা। ঘরে এসে লাইটটা বন্ধ করে দেয়।
গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে আবসার নিজেদের ফ্ল্যাটে তাকাতেই অন্ধকার বারান্দা দেখতে পায়। বুঝতে পারে ওয়াসিমা ঘুমিয়ে গেছে তাই লাইট বন্ধ। সে জানে তার বউটা যে বড্ড ঘুম কাতুরে। একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে এগিয়ে যায় লিফ্টের দিকে।
বাসায় পৌছে নিজের কাছে থাকা চাবিটা দিয়ে লক আনলক করে ভিতরে ঢুকে। হাতে ব্যাগটা সোফায় রেখে শার্টের হাতের বোতাম গুলো খুলতে খুলতে ফ্রিজের দিকে এগিয়ে যায়। ঘরে আলো গুলো জ্বালায় না। ফোনের ফ্লাশের সাহায্যে এগিয়ে যায়। এক বোতল ঠাণ্ডা পানি নিয়ে চেয়ারে বসে ঢকঢক করে গিলে ফেলে। পানিটা পেটে যেতেই খিদেটা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। সে দেখতে পায় টেবিলে খাবার ঢাকা দেওয়া।
আবসার রান্নাঘর থেকে একটা প্লেট এনে ভাত নিয়ে খাওয়া শুরু করে।
ঘরের দরজার সামনে দাড়িয়ে আবসারের কর্ম কান্ড দেখে ওয়াসিমার কান্না চলে আসে। এখন নিজেকে থামাতে পারে না ঠোট কামরে রাখে যাতে শব্দ না হয়। এইতো দুইদিন আগে পযর্ন্ত আবসার রাতে তাকে রেখে কোনো মতেই খেতো না। আবসারের এককথা ছিলো — সারাদিন তো থাকিনা একাই থাকিস রাতটুকু আমার বউয়ের জন্য থাক।
বিয়ের শুরু থেকে আদর পেতে পেতে অভ্যস্ত ওয়াসিমা। আবসারের এই দুইদিনের দূরত্ব সহ্য করতে পারছে না। সে দৌড়ে ঘরে চলে যায় গিয়ে ঢোকে ওয়াশরুমে।
ওয়াসিমা যেতেই আবসার খাওয়া থামিয়ে দেয়। এতক্ষণ মেয়েটাকে দেখানোর জন্য জোর করে মুখে ঢুসলেও এখন কোনো ভাবেই। এই ভাতের লোকমা সে মুখের সামনে নিতে পারছেনা। রান্নাঘরে যেয়ে হাত ধুয়ে। থালাটা নিয়ে থালায় থাকা ভাত গুলো একটা পরিত্যক্ত বাটিতে ঢালে। সেগুলো নিয়ে চলে যায় নিচে। সেখানে বাড়ির কেয়ার টেকারের একটা কুকুর আছে। তাকে খাবার গুলো দিয়ে সোজা উপরে চলে যায়।
আবসার ঘরে ঢুকতেই লাইট জ্বলে ওঠে। সামনে দাড়ানো ওয়াসিমা। আবসার তার দিকে তাকাতেই বলে ওঠে
— আমার দোষ কি??
— কিসের কথা বলছিস??
— আপনি আমার সাথে এমন করছেন কেনো?? আমি কোনো ভুল করে থাকলে আমাকে বলেন আমি তা সুধরে নেওয়ার চেষ্টা করব। তাও আমার সাথে এরকম কইরেন না। আপনি যা করতে বলবেন করব।
— আমার কথা মতো সব করবে!!
— হ্যা বলেন আমার দোষ ভুল যা আছে সুধরে নিব।
— সত্যি বলছিস তো!!
— হ্যা
— মেডিকেলে পড়ার আশা ছেড়ে দিতে হবে। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন বাতিল করতে হবে।
আবসারের কথা শুনে ওয়াসিমা স্তব্দ চোখে তাকিয়ে আছে। তার বিশ্বাস হচ্ছে না এই লোকটাই তো তাকে পড়াশোনা করার জন্য একদিন ও ওয়েট না করে গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকা এনেছে। তার বিশ্বাস হচ্ছে না এই লোকটাই তো পরীক্ষার আগে যখন রাত জেগে পড়তো তখন তার সাথে বসে থাকত। না বুঝলেও যেগুলো মুখস্ত পড়া থাকত সেগুলো ধরতো।
ওয়াসিমার দিকে তাকায় আবসার বুঝতে পারে তার বিষয়টা এখনো হজম হয়নি। কিন্তু তার মাথায় চলছে অন্য পরিকল্পনা।
দুই দিকেই নিস্তব্ধ রাতের শুনশান রাস্তার কুকুরের আওয়াজ ও ঘড়ির টিকটিক আওয়াজ আসছে। ওয়াসিমার বুকটা দুরু দুরু করছে।
প্রায় দশ মিনিট ধরে ওয়াসিমা একই স্থানে চুপচাপ দাড়িয়ে আছে। কিছু বলছে না। আবসারও একই স্থানে দাড়িয়ে আছে।
___________________
— ঠিক আছে ছেড়ে দিব মেডিকেলের পড়া। আমি পড়াশোনা করব না আমার এতোদিনের প্যাশন স্বপ্ন সব ছেড়ে দিলাম আপনার জন্য।
সেই একই স্থানে দাড়িয়ে দৃঢ় কন্ঠে বলল ওয়াসিমা। কথা গুলো বলতে যেন তার কন্ঠনালিটা চেপে গেছিলো। তার মনে হচ্ছিলো কেউ তার কন্ঠস্বর কেড়ে নিচ্ছে।
ওয়াসিমার কথা শুনে আবসারের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। সে ফুস করে একটা নিশ্বাস ছাড়ে। তারপর তার হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যায় গেটের বাহিরে। তাদের ফ্লাটের মেইন গেটের সামনে দাড়িয়ে দরজার নবটা লক করে। আবার সিড়ি বেয়ে নিচে নামে।
তার মনে ঝড় বইছে। আবসার তাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। এই লোকটার জন্য নিজের শখ আহ্লাদ নিঃশেষ করে দিলো। এখন আবার তাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে?????
ওয়াসিমা ভাবছে আবসার তাকে নিয়ে বুঝি চার তলায় তার বাবা মায়ের কাছে দিয়ে আসবে। কিন্তু চার তলা বেয়ে তিন তলায় নামতেই ওয়াসিমার টনক নড়ল। সে আবসারের দিকে তাকায়। আবসার সামনের দিকে দৃষ্টি দিয়ে তার হাত ধরা অবস্থায় তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আবসারের সাথে পায়ে পা মিলিয়ে চলতে ও কষ্ট হচ্ছে কিন্তু তারপরও হাটছে।
সিড়ি বেয়ে তিন তলায় নেমে কেয়ার টেকারের বাসায় কলিং বেল দেয় আবসার।
এই বাড়ির বাড়িয়ালা বাংলাদেশে থাকে না। সে মালোয়েশিয়ার একজন প্রবাসী। ফুল ফ্যামিলি সহ সেখানেই থাকে তাই নিজের ফুফাতো বোনকে এখানে থাকতে দিয়েছে। ভাড়া উঠানো সহ যাবতীয় কাজ সেই করে।
সেই কেয়ার টেকার মহিলা নিজেকে এই বাড়ির বাড়িওয়ালা বলে সবাইকে পরিচয় দেয়। শুধু পুরাতন ভাড়াটিয়ারা জানে সে এই বাড়ির কেয়ার টেকার।
কেউ যদি তাকে ভুলেও তিন তলার আন্টি বা অন্য কিছু বলে ডাকে তাহলেই তার মাইন্ডে লাগে। এই জন্য সবাই তাকে বাড়িওয়ালি আন্টি ডাকে।
পাচঁ মিনিট ধরে আবসার অনেক্ষণ যাবৎ অনবরত বেল বাজিয়ে যাচ্ছে কিন্তু সাড়া শব্দ পাচ্ছে না। তারপরও থেমে নেই আবসার সে যেনো পন করে নিয়েছে যে আজকে যেকোনো মূল্যে এদের ঘুম ভাঙ্গিয়ে ছাড়বে।
— আরে আসছি!!! ” ঘুম ঘুম স্বরে বিরক্তি ঢেলে গেটটা খুল তথাকথিত বাড়িওয়ালির মেয়ে রুমা। তবে যতটা বিরক্তি নিয়ে গেটটা খুলেছিল তাকে বর্তমানে ততোটা বিরক্ত দেখা গেলো না।
— হেই আবসার বেবী,,, বলেই আবসারের গলায় ঝুলতে নিলেই আবসার তার সামনে ওয়াসিমাকে রাখে। ৪ ফুট ১১” ইঞ্চির রুমার কপাল পাচঁ ফিট দুই ইঞ্চির থুতনিতে বাড়ি খায়।
ওয়াসিমার থুতনিতে লাগার দারুন সেই ভালোই ব্যাথা পায় কিন্তু ঐ যে ন্যাকা রানীর সামনে ওয়াসিমার ব্যাথা কিছুই না।
কপাল ডলতে ডলতে ন্যাকা রানী “‘ ন্যাকা কান্না করতে করতে নিজের বাবা মায়ের ঘরে যায়। তার উদ্দেশ্য তার মায়ের কাছে ওয়াসিমার নামে বিচার দেওয়া।
ঐ দিকে ওয়াসিমা ভ্যাবলার মতো দাড়িয়ে আছে। কি হলো কিছুই বুঝতে পারছে না। মেয়েটা কে?? তার সামনে আসতেই তাকে তাদের সামনে দাড় করিয়ে দিলো। আবসার এখনো তার দুই বাহু ধরে দাড়িয়ে আছে,, ওয়াসিমা একবার আবসারের দিকে তাকিয়ে আবার সামনে তাকায়। কারণ আবসার সামনে তাকিয়ে আছে।
সামনের দিকে তাকাতেই দেখে একজন মোটা কোকিলা মোদি টাইপ মহিলা তাদের দিকে তেড়ে আসছে।
-” এই আবসার তোমার বউয়ের সাহস কি করে হয়ে আমার মেয়েকে মারার। দেখোতো আমার সুইট বাচ্চার মাথাটা কিভাবে ফুলে গিয়েছে।
এই কোকিলা মদির কথা শুনে ওয়াসিমার চোখ কোটর থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার উপক্রম। সে গোল গোল করে তাকিয়ে দেখল সেই ন্যাকা রানী তার বাবার বুকে ফুপিয়ে যাচ্ছে।
— এই মেয়ে তোমার সাহস কি করে হয় আমার মেয়েকে মারার??
ওয়াসিমার সামনে আঙ্গুল নাচিয়ে বলল। আঙ্গুল নাচাতেই আবসার তার আঙ্গুল নামিয়ে বলল
— ও মারেনি তো আন্টি!!
— তো আমার বাচ্চাটা কি মিথ্যে বলেছে। এটা কখনই হতে পারে না আমার রুমা কখনই মিথ্যে বলতে পারে না।
তার কথা বলার কনফিডেন্ট দেখে ওয়াসিমার মনে হচ্ছে সে ইন্ডিয়ান সিরিয়াল সাথ বিভানা সাথিয়ার শুটিং দেখছে।
#চলবে