বক্ষপিঞ্জিরায় তুই বন্দীনি পর্ব-০১

0
172

#বক্ষপিঞ্জিরায়_তুই_বন্দীনি
#সূচনা_পর্ব
#সাদিয়া_আক্তার

ছোটবেলা থেকেই আমরা সব কাজ একসাথে করেছি তাহলে বিয়েটা কিভাবে তুই একা একা করবি সব কাজ যেহেতু একসঙ্গে করেছি বিয়েটাও একসঙ্গে করা উচিৎ তাইনা ( বলেই ঘাড় বাকিয়ে তিন হাত দূরত্বে থাকা রমনীর দিকে তাকায় )

আবসারের তাকানোতে ভরকে যায় রমনী। ভয়ে খামচে ধরে পরনের কামিজের অংশ লুকিয়ে পরে সামনে থাকা ব‍্যক্তিটির পিছনে।

— অবশ্যই করবি বিয়ে কিন্তু এই মূহুর্তে মেয়ে কোথায় পাব ( হালকা হেসে বন্ধুর দিকে তাকিয়ে বলল অরিক )

— মেয়ে আমার পছন্দ আছে তোরা সবাই তাকে চিনিস ইভেন অনেক কাছের

— আমরা চিনি দেখ আবসার ঘুরিয়ে পেচিয়ে না বলে ডিরেক্ট বল কে সেই মেয়েটি

— কেনো তোর বোন ওয়াসিমা

— অসম্ভব আমি তোমার সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দিব না ( আবসারের কথা শেষ হতেই গম্ভীর কন্ঠে বলে ওঠে ইরফান রহমান )

— কেনো ভাই সাহেব আমার ছেলে কি ওয়াসু মায়ের যোগ্য না নাকি তার কোনো কমতি আছে

— কথাটা সেরকম না আপা আমি এখন আমার মেয়ের বিয়েটা দিতে চাচ্ছি না আর আমার মেয়েটা ছোট ( আলিয়া সাখাওয়াতের কথায় বিনয়ের স্বরে বলল ইরফান রহমান )

— তাহলে ছেলের বিয়ের আশাটাও ছেরে দেন

— মানে এই অরিক কি বলে এই ছেলেটা এখন কি এর কারণে তুমি তোমার বিয়েও আটকে দিবে আমি আগেই বলছি এরকম চিন্তা ভাবনা থাকলে বাদ দাও ( উত্তেজিত কন্ঠে বলল ইরফান রহমান )

— তুমি শান্ত হও বাবা। আজকে শুধুমাত্র আকদ পরিবারের লোকজন ছাড়া কেউ নেই তাই

অরিককে কথা শেষ না করতে দিয়েই ইরফান রহমান গম্ভীর স্বরে বলল — এখানে শুধুমাত্র পরিবারের লোকজন উপস্থিত থাকলেও একটা মেয়ের সম্মানের সাথে জড়িত বিষয়টা।

— হবু বউ সহি সালামত থাকলে তো বিয়ে করবে।

— মানে
বলেতেই একজন মহিলা এসে বলল — ইরফান ভাই লাবনীর ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ ভিতর থেকে ওর বান্ধবী ফোন দিয়ে বলল আমার মেয়েটা বার বার বাথরুম যাচ্ছে মনে হয় পেট খারাপ হয়ে গেছে আর তালাটাও আমাদের না সারাবাড়ী খুজেও ঐ তালার চাবি পাইনি।

লাবনীর মায়ের কথা শেষ হতে না হতেই ইরফান রহমান ও অরিক আবসারের দিকে তাকিয়ে দেখে তার ঠোঁটে মুচকি হাসি ঝুলছে।

— এই ছেলে তুমি মেয়েটার সাথে কি করেছ বলো হ‍্যা কি করেছ

— আস্তে শশুর মশাই আস্তে আপনি এতো হাইপার হোন কেনো কথায় কথায়।

— অরিক ওকে বলতে বল কি করেছে মেয়েটার সাথে

বাবার কথার উত্তর না দিয়ে অরিক চারপাশে তাকায় ড্রয়িং রুমে তার বাবা মা সহ লাবনীর বাবা মা আর লাবনীর কিছু আত্মীয় উপস্থিত তাদের মধ‍্যে একটা ছেলেকে ডাক দিয়ে কিছু বলতে নিলেই বাধ সাধে আবসার

— তালা ভাঙ্গার চিন্তা করে লাভ নেই ডিজিটাল লকও আছে সাথে আমার ফিঙ্গারপ্রিন্ট ছাড়া খুলবে না

— কি খাইয়েছিস মেয়েটাকে

— জামাল গোটা

আবসারের কথা শুনে সবাই অবাক। অরিক দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলল — দেখ ভাই আমার বোনটা এখনো নাবালিকা আঠারো বছর হয়নি এখন বিয়ে দিলে আইন মোতাবেক হয় না।

— শরীয়ত মোতাবেক তো হবে আমার তাতেই চলবে

— দেখ ভাই তোর আর ওয়াসু মনির এজ ডিফারেন্ট টা অনেক প্রায় এগারো বছর।

— এই ডিফারেন্ট ডাজেন্ট ম‍্যাটার ( ত‍্যারা কন্ঠ বলল আবসার )
আবসারের ত‍্যাড়া কন্ঠে অরিক দীর্ঘ শ্বাস ফেললেও চেতে গেলো ইরফান রহমান। তার একটাই কথা এই ছেলে চরম লেভেলের বেয়াদব এর সাথে কিছুতেই তিনি তার রাজকন্যা বিয়ে দিবেন না।
তিনি গর্জন করে উঠতে নিলেই অরিক ও তার স্ত্রী আকলিমা তাকে থামায়।

— বাবা মেয়েটার এই গরমে আবার ডিহাইড্রেশন না হয়ে যায় একটু চিন্তা করো বাবা

অরিকের কথা শুনে ইরফান রহমান একটু শান্ত হোন এই আকলিমা রহমান ও মুখ খুলল — আর আবসার ছেলেটা তো ভালোই সব দিক দিয়েই ঠিক আমাদের মেয়ে সুখে থাকবে না করার তো কোনো প্রশ্নই আসে না

— আকলিমা ঐ ছেলেটা আমার মেয়ের থেকে এগারো বছর বড়

— তুমিও তো তোমার থেকে আট বছরের বড় আমি যদি তোমার মতো বুড়োর সাথে সংসার করতে পারি তো আমার মেয়েও পারবে।
স্ত্রীর কথা শুনে নাক মুখ কুচকে বসে আছে ইরফান সাহেব।
অরিক কোনো ভাবে হাসি আটকায় এখন হাসলেই তার বাবা খেপে যাবেন তা সে জানে তাইতো কোনো রকম হাসি আটকে সেখান থেকে চলে যায়। এতক্ষণ তারা একটা ঘরে নিজেদের মতো আলোচনা করছিল।

— বিয়ের প্রস্তুতি নে ভাই আর আমার হবু বউটাকে বের কর না জানি বেচারির কি অবস্থা।
আবসার অরিকের করুন স্বরের কথা শুনে হালকা হেসে চলে যায় লাবনীর ঘরের উদ্দেশ্যে কিন্তু যাওয়ার আগে একপলক ওয়াসিমার দিকে তাকায়।
আবসারের ভয়ানক দৃষ্টিতে ওয়াসিমার আত্মা কেপে ওঠে সে গালে হাত দিয়ে কাদোকাদো মুখ নিয়ে দাড়িয়ে আছে তার এখন ইচ্ছে করছে হাত পা ছড়িয়ে কান্নাকাটি করতে আর না হলে অজ্ঞান হতে কিন্তু কোনোটাই হতে পারছে না কেনো

— আল্লাহ্ আমাকে এই মানব রুপি দানবের থেকে বাচাও ( বিড়বিড় করে বলল ওয়াসিমা )

___________________

বাসর ঘরে বসে আছে ওয়াসিমা আবসার এখনো আসেনি। সে এখানে বসে বসে নাকে চোখে কান্না করছে আর ভাবছে কি থেকে কি হয়ে গেলো যেখানে সে গিয়েছিল ভাইয়ের বিয়ে খেতে সেখানেই নিজের বিয়েও হয়ে গেলো আর সে কিছুই করতে পারল না আর করবেই বা কিভাবে যখনই বিয়ের জন‍্য না করতে যাবে তখনই তো ঐ আসবাব পত্র তার ভয়ংকর চোখ দ্বারা ভয় দেখিয়ে তাকে বিয়েতে কবুল বলিয়ে নিলো কিন্তু তাও যা ভেবেছিল তার বাবা ভাই কেউই পরীক্ষার আগে তাকে শশুর বাড়িতে পাঠাবেনা কিন্তু কি এমন পানি পড়া খাওয়াইলো ঐ আসবাব পত্র সেটাও হলো না। আবসার যখন তাকে গরুর মতো টানতে টানতে নিয়ে আসল তখন কেউই কিছু বলল না কেনো

দরজা আটকানোর শব্দে নিজের কল্পনা জগত থেকে বেরিয়ে আসে ওয়াসিমা সে লক্ষ্য করে আবসার তার দিকেই এগিয়ে আসছে পরনে ট্রাউজার আর গোল গলার গেঞ্জি
এই লোক জামা কাপড় বদলালো কখন মনে মনে ভাবে ওয়াসিমা।

ভাবনা রানী ভাবনা শেষ হলে একটু বাস্তব জগতে ফিরেন। আবসারের কথা ভাবনা শেষ হয় ওয়াসিমার সে কিছু না বলে মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে আছে। আবসার হালকা হেসে এগিয়ে যায় ওয়াসিমার সামনে বসে তার নিচু মাথা শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে উচু করে একধ‍্যানে তাকিয়ে আছে মেকাপ বিহীন আদল কান্নার কারণে নাকটা লাল টকটকে হয়ে আছে চোখের কাজলটাও লেপটে গেছে পরনে লাল শাড়ী যা তার মা এই বাড়িতে আসার পরে পরিয়ে দিয়েছে। এই এলোমেলো রুপেও যেনো মেয়েটাকে স্নিগ্ধ লাগছে তার কন্ট্রোল ছুটে যাচ্ছে। আবসার তার মুখটা নামিয়ে আনতেই মুখ ঘুরিয়ে নেয় ওয়াসিমা কাপা স্বরে বলে — আমার এশার নামাজ এখনো পড়া হয়নি আমি নামাজ পরব

— যা ওযু করে আয় গম্ভীর স্বরে বলল আবসার

ওয়াসিমা আবসারের কথা শুনে দ্রুত বেড থেকে নেমে ওয়াশরুমে দৌড় দেয় এমন ভাব যেনো এখানে আর কিছুক্ষণ থাকলে আবসার নামক রাক্ষসটা তাকে গিলে খেতো।

— তুই যতই পালাস শুভ্রময়ী আজকে তোর আমার থেকে নিস্তার নেই ওয়াসিমার যাওয়ার দিকে মুচকি হেসে বলল আবসার।
কিছুক্ষন পরেই ওয়াসিমা ওয়াশরুম থেকে বের হলে আবসার ঢোকে যাওয়ার আগে বলে যায় আলমারির দ্বিতীয় সাড়িতে জায়নামাজ আছে সেটা বের করে তার জন‍্য আপেক্ষা করতে।

ওয়াসিমা ও চুপচাপ পাশাপাশি দুইটা জায়নামাজ বিছিয়ে আবসারের অপেক্ষা করে। আবসার বের হতে দুইজন নামাজ পড়া শুরু করে।

________________

নামাজ শেষ হতে না হতেই আবসার কোলে তুলে নেয় ওয়াসিমাকে। আচমকা এমন করায় ভরকে যায় ওয়াসিমা খামচে ধরে আবসারের ঘাড়ের অংশ।

— তোর মোহরানা আমি পরিশোধ করে দিয়েছি
আবসারের কথায় ওয়াসিমা লজ্জায় হাসফাস করে তারপরেও নির্লজ্জ আবসার ছাড়ে না

— তোর লাজরাঙ্গা আদল দেখে তো বেসামাল হচ্ছি শুভ্রময়ী এবার আমাকে সামলা বলেই বেডে ধপ করেই ফেলে দেয় ওয়াসিমাকে।
ওয়াসিমা মুখ কুচকে আবার উঠতে নিলেই আবসার ওয়াসিমার উপর নিজের সম্পূর্ণ ভার ছেড়ে দেয়। হাত গলিয়ে শাড়ি ভেদ করে উন্মুক্ত উদরে নিজের ওষ্ট জোড়া দিয়ে বন্ধ করে দেয় ওয়াসিমার নরম পেলব অধর জোড়া।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে