#ফিরবে চিনা ঠিকানায়
#লেখনীতে_অনামিকা_ইসলাম_জেরিন
#পর্ব_১২
পড়ন্ত বিকেল।সূর্যের রক্তিম আভা চারিদিকে।হলুদের স্টেজ ছাদে সাজানো হয়েছে।পুরো বাড়িতে হুলস্থুল অবস্থা।একটু পরেই মেঘলার গাঁয়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হবে।কিছু দিন আগে একটা বিয়ে গেলো।সেই বিয়ের রেষ না কা’টতেই আরেকটা বিয়ের আয়োজন করতে হচ্ছে।সবদিক সামলাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে সবার।ব্যস্ততা নেই শুধু আকাশ,আতিফ আর সায়িদের।তার কোনো কাজের ধারে কাছেও যাচ্ছে না।কেউ কিছু বললে সেটা করছেও না।সায়িদ উঠতে চাইলে তাকে ঠেসে ধরে রাখা হচ্ছে।
আকাশে ছাদের পূর্ব দিকে একটা চেয়ার নিয়ে টান টান হয়ে বসে আছে।চোখে মুখে গম্ভীর্য ভাব ফুটে রয়েছে।তার একপাশে রবিন আর ফয়সাল বসা।ফয়সালও আকাশের বন্ধু।আরেকপাশে আতিফ আর সায়িদ বসা।আতিফ গরমে ঘামছে নাকি নার্ভাসনেসে কারণে তা বুঝা দায়।মাথা ঘুরিয়ে একপলক বড় ভাইকে দেখলো।তার মুখের কোনো পরবর্তী না দেখতে পেয়ে একটু ঝুঁকে রবিনের দিকে তাকাল।সে কপালে ভাঁজ ফেলে সবাইকে দেখছে।মাথায় ভিতর কি চলছে জানার ইচ্ছে জাগলেও কিছু বললো না।আরও খানিকটা ঝুঁকে ফয়সালকে দেখলো।সে একদম নরমাল।কোনো ভাবনা-চিন্তা নেই।এদের কাছে সব বুঝি পানি-ভাত মনে হচ্ছে।মাথা তুলে সোজা হয়ে বসলো।এবার সায়িদের দিকে তাকাল।তার অবস্থা ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’।আতিফ যে এত সময় ঝুকে বসেছিল তা হয়তো সে খেয়ালও করে নি।খেয়াল করলে অবশ্যই পাঞ্জাবির কলার ধরে টান দিয়ে বলতো,’সোজা হয়ে বসতে পারিস না?উঁকিঝুঁকি করে মেয়ে দেখা বন্ধ কর।’কিন্তু এখন অস্থির চিত্তে বসে হাসঁফাঁস করছে।সে এসবে থাকতে মোটেও রাজি ছিল না।আকাশ ধমকি-ধামকি দিয়ে বসিয়ে রেখেছে।মুখ খুললে তার কপালে দুঃখ আছে এ-ও বুঝিয়েছে।নিজের বোনের সাথে কেউ জেনে শুনে এমন করে!সায়িদের নাম বোধহয় কাল জাদুঘরে লেখা থাকবে।আর সবাই যখন জানবে এসব তারা কয়জনে মিলে করেছে তখন মেঘলা বাদে শিওর বাকিগুলোকে বাসা থেকে বের করে দেবে।বড়রা কি করবে ভেবে আতিফ উঠে দাঁড়াল।
অস্থির হয়ে বলল,
—“ভাই এসব করার দরকার নেই।আমরা অন্য কিছু প্লান করি।বড়রা জানলে বাসা থেকে বিনা নোটিশে বের করে দেবে।”
আকাশ বিরক্ত হয়ে কিছু বলবে তার আগে সায়িদ উত্তেজিত হয়ে বলল,
—“হ্যাঁ।হ্যাঁ,আতিফ ঠিক বলছিস।আমরা অন্য কিছু করতেই পারি।এসব ফালতু প্লানের কোনো দরকার নাই।”
—“আপনাদের অন্য প্লান কি?একটু বলেন শুনি।”
আকাশের ক্রোধ মিশ্রিত কথা শুনে আতিফ আর সায়িদ একে অপরের দিকে তাকালো।সায়িদ মিনমিন করে বলল,
—“ভাইয়া আমরা বড়দের সাথে কথা বলি।”
আকাশ দাঁতের দাঁত চেপে বলল,
—“তো আপনার কি মনে হয় আমি তাদের সাথে কথা বলি নি?”
সায়িদ শুকনো ঢোক গিললো।তার কাছে বলার মতো কিছু নেই।বোন আর পরবিবারের সদস্যদের ওপর রাগ হলো তার।কেন তারা এমন করছে?এই কথা তো ছিল না।তাহলে?নেহাৎ বড় ভাইদের শ্রদ্ধা করে আর হেনরির সাথে মেঘলার বিয়ে চায় না এজন্য চুপ করে এখানে বসে আছে।নাহলে এখান থেকে সে এই মূহুর্তে পালাত আর বিয়ের পর আসতো।
কিছু সময় পর ছাদে নিয়ে আসা হলো মেঘলাকে।পড়নে বসন্তী রংয়ের শাড়ি পার সবুজ রংয়ের।মুখে হালকা মেকআপ,ঠোঁটে গোলাপি লিপস্টিক।চুল খোঁপা করা।হাত-পা,গলায়,মাথায় সব জায়গায় ফুলের মালা।চোখে মুখে স্নিগ্ধতা ভরপুর।ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা।আকাশ মুগ্ধ হয়ে মেঘলাকে দেখছে।চোখের পলক পড়ছে না।তার পিচ্চি মেঘু বড় হয়ে গেছে ভেবে সহসা হাসি ফুঁটে উঠলো ঠোঁটে।আবার রাগও হলো অন্য কারোর বউ হওয়ার এই মেয়ে আজ পাগল হয়ে গেছে।আর তো নিজেকে সব সময় আকাশের বউ বলে দাবি করত।
—“জোনিতা মেঘলার মতো সাজছে কেন?”
আতিফের প্রশ্নে আকাশ মেঘলার থেকে চোখ সরিয়ে জোনিতার দিকে তাকাল।দুইজন সেম টু সেম এক সাজে সেজেছে।আকাশ ওদের ভালো করে পর্যবেক্ষণ করল।কোথাও অমিল নেই।মনে প্রশ্ন সাজগলো ‘দুইজনের একই সাজ কেন?’
মেঘলা স্টেজে বসে আশেপাশে চোখ বোলাচ্ছে।তার একপাশে জোনিতা বসা আরেকপাশে ঝিনুক।পূব দিকে আকাশের দেখা পেলো।পড়নে সবুজ রঙের পাঞ্জাবি।বা হাতে ঘড়ি।চুল গুলো ব্রাশ করে একদিকে হেলে রাখা।ভ্রুঁ কুঁচকে তার দিকে তাকিয়ে আছে।মেঘলা তা দেখে জোরপূর্বক একটা হাসি দিল।সেখান থেকে চোখ সরিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে ঝিনুকে ফিসফিস করে বলল,
—“ভাবি এ আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছে কেন?কি ঘটাবে?”
—“কে তাকিয়ে আছে?”
—“আকাশ।”
—“সে কই?”
—“পূর্ব দিকে।”
ঝিনুক মাথা তুলে সেদিকে তাকাল।আকাশের সাথে চোখাচোখি হতেই সেও জোরপূর্বক হাসে চোখ সরিয়ে নিলো সেখান থেকে।
ঝিনুক নার্ভাস হয়ে বলল,
—“সব জেনে গেলো কি?”
ভাবির প্রশ্ন উপেক্ষা করল মেঘলা।আকাশ কি করতে পারে ভাবতে লাগলো।আদৌ কি কিছু করবে!নাকি তাকে ভয় দেখিয়েছে মাত্র।মেঘলা উত্তেজিত হয়ে পড়ল।না চাইতেও বারবার চোখ আকাশের দিকে যাচ্ছে।তার চোখ মেঘলার দিকে স্থির হয়ে আছে।যেন চোখ সরলেই মেঘলা গায়েব হয়ে যাবে।বিরক্ত লাগছে কিন্তু কিছু বলতে পারছে না।
মেঘলা আর জোনিতার পাশে হেনরিকে এনে বসিয়ে দিয়েছে সিয়াম।পাশে সেও বসেছে।হেনরির পাঞ্জাবি আকাশের চোখ কপালে।সাথে বাকি কয়জনেরও।
—“আশ্চর্য!তোমাদের চারজনের পোশাক সেম কেন?”
সায়িদের কথায় রবিন বলল,
—“তা তো তুই ভালো জানবি।তোর বাসায় কি চলছে সত্যি করে বলতো।”
—“কি চলছে মানে?”
—“মেঘলা আর ঝিনুক ভাবিকে দেখ।মনে হচ্ছে চোর ধরা পড়ার ভয়ে মাথা নিচু করে ঘাপটি মে’রে বসে আছে।মাথা উঁচু করলে ধরা পড়ে যাবে।”
আকাশ হাত মুষ্টিবদ্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে।নিশ্চিত তাকে জ্বা’লা’তে মেঘলা হয়তো সেম পাঞ্জাবি কিনিয়েছে।এই পাঞ্জাবি সকালে তার মা তাকে দিয়ে বলেছে আজ এটা পড়তে।আকাশ কোনো প্রতিক্রিয়া করে নি।পাঞ্জাবি ভালো লেগেছে এজন্য পড়েও নিয়েছে।কিন্তু সে কি জানতো এখানে এমন কিছু দেখতে হবে?মেজাজ বিগড়ে গেছে।এখানে আর থাকবে না।এসব নাটক আর তার সহ্য হবে না।তারপর দেখা যাবে আজই অঘটন ঘটিয়ে ফেলেছে।
আকাশ নিচে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালে পিছন থেকে ডাকল পড়ল।
—“আরে আকাশ মেঘুকে হলুদ লাগিয়ে দিলি না!সবাই দিয়ে দিলো।তাড়াতাড়ি আয়।”
সিয়াম উত্তরের অপেক্ষা না করে আকাশকে এক প্রকার টেনে নিয়ে গেলো স্টেজে।আকাশ মেঘলার সামনে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা টেডি স্মাইল দিয়ে বলল,
—“আমাকে হলুদ লাগিয়ে দিবেন না ভাইয়াআআআআ।”
আকাশ চোয়ালে শক্ত করে বলল,
—“অবশ্যই দিব বোনননননন।”
হলুদের বাটি থেকে হাত ভরে হলুদ নিয়ে মেঘলার পুরো মুখে মাখিয়ে দেয়।মেঘলা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।বিস্মিত হয়ে বলল,
—“এটা কোনো কাজ করলেন আপনি?আমার এখনো ছবি তোলা বাকি।এই ভূত সেজে এখন আমি ছবি তুলব?”
—“বেশ করেছি।”
—“তাই না?”
—“হুহ।”
আকাশ ‘হুহ’ বলতেই তার সারা মুখ হলুদে ভরে গেছে।চোখ পিটপিট করে খুলে দেখে মেঘলা হাসছে।কপাট রাগ দেখিয়ে বলল,
—“কি করলি?”
—“ওই যে বেশ করেছি।এখন আপনার এইভাবে আমি ছবি তুলব।আমাকে একা কেন ভূত দেখাবে!এখন দুইজনকে ভূত মনে হবে।”
বলেই মেঘলা আকাশকে তার পাশে বসিয়ে ক্যামেরা ম্যানকে বলল তাদের ছবি তুলতে।আকাশ চেয়ে উঠে যেতে পারছে না।মেঘলা তার হাত আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরেছে।আকাশ মাথা ঘুরিয়ে বামে তাকাল হেনরির দিকে।তার হবু বউ যে একটা ছেলের হাত ধরে বসে ছবি তুলছে সেদিকে কি তার খেয়াল আছে?সে তো জোনিতার সাথে গল্প করতে ব্যস্ত।
—“এদিকে তাকান।ওইদিকে কি দেখেন?”
মেঘলা বিরক্ত হয়ে বলল।আকাশ মেঘলার দিকে তাকাল।তার ফর্সা চেহারা হলুদ হয়ে গেছে।টিস্যু দিয়ে মুছে নিয়েছে তারপর হলুদের রঙ স্পষ্ট ভেসে আছে।
—“তোর বরকে রেখে আমার সাথে ছবি তুলছিস কেন?সে অন্য মেয়ের সাথে গল্প করছে আর তুই বর ছেড়ে অন্য পুরুষকে সাথে ছবি তুলছিস তাও জড়িয়ে ধরে।তোদের সংসার কয়দিন টিকবে?”
আকাশের প্রশ্নে মেঘলা স্থির হয়ে বসল।চাঞ্চল্যকর হাসি মিলিয়ে গেলো।মাথা কাঁধ করে হেনরিকে দেখে নিলো।ধীরে সুস্থে বড় এক নিশ্বাস ত্যাগ করল।আকাশের দিকে পূর্ণ দৃষ্টি মেলে বলল,
—“আমার বরের সাথে তো সংসার সারাজীবন টিকবে দেখে নিয়েন।আর ছবি তো কোনো পর পুরুষের সাথে তুলছি না।ভাই হোন আপনি আমার।”
মেঘলা দাঁত কেলিয়ে হাসছে।আকাশ ডান ভ্রুঁ উঁচু করলে আবার জিজ্ঞেস করল,
—“আমাদের চারজনের ড্রেস সেম কেন?”
মেঘলা বুঝেও না বুঝার ভান করে কাঁধ নাচিয়ে জানতে চাইল,
—“কোন চারজন?”
—“এখানে যে চারজন বসে আছি।”
আকাশ দাঁত চেপে হালকা করে ঠোঁট নাড়িয়ে বলল।মেঘলা আমতা আমত্ করে বলল,
—“স..স..সবা..ইকে দে..খেন।সবার ড্রেসের কালার ম্যাচিং আমাদেরও তাই।”
আকাশ চোখ ছোট ছোট করে মেঘলার দিকে তাকিয়ে আছে।মেঘলার এই ভিত্তিহীন কথা যে তার বিশ্বাস হয় নি তা বেশ বুঝতে পারছে।সে বা কি করবে?মুখে যা আসছে ফট করে তাই বলে দেছে।
—“সামনের এই চার ব্রিটিশ কারা?”
আকাশ সামনে দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল।আকাশের দৃষ্টি অনুসরণ করে মেঘলা সামনে তাকাল।স্টেজের সামনের সারিতে হেনরির আর জোনিতার বাবা-মা বসে আছে।তাদের সাথে মেঘলা আর আকাশের পরিবারের সবাইও বসে গল্প করছে।
—“বাংলাদেশি দেখতে যে দু’জন তারা জোনিতার বাবা-মা।আর তাদের পাশের দু’জন হেনরির বাবা-মা।”
আকাশ সামনে থেকে দৃষ্টি সরিয়ে মেঘলার দিকে রাখলো।সন্দেহজনক গলায় বলল,
—“আমার কেন জানি এখানে কোনো ঘাপলা আছে বলে মনে হচ্ছে।কোনো ঘাপলা আছে কি মেঘু?”
আকাশের শান্ত স্বর।মেঘলা কেঁপে উঠলো।দৃষ্টি এলোমেলো হলো।হাত দু’টো কোলের ওপর চেপে রাখলো।স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে কৃত্রিম হাসি দিয়ে বলল,
—“আমরা ছবি তুলছিলাম।ক্যামেরার দিকে তাকান।”
আকাশ চোখ সরালো না মেঘলার থেকে।এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।মেঘলা অস্তিত্ব পড়ে গেলো আকাশের এমন চাহনিতে।হলুদের অনুষ্ঠান প্রায় শেষের দিকে। কোনো কুল-কিনারা পেয়ে ঝিনুককে বলল তাকে রুমে দিয়ে আসতে।
ঝিনুক তাকে নিয়ে রুমে রেখে আবার ছাদে গেলো।মেঘলা হাফ ছেড়ে বাঁচলো।আকাশের দৃষ্টি তাকে নার্ভাস করে দিচ্ছে।চোরের মতো পালার জন্য মন ছটফট করে উঠছে।স্বাভাবিক থাকতে চেয়েও পারছে না স্বাভাবিক হতে।মেঘলা ফুলের গহনা গুলো খুলে হাতে তোয়ালে নিলো।লম্বা একটা শাওয়ার দিয়ে ঘুমাবে।ওয়াশরুমের দরজার কাছে যেতে পিছনে দরজা খোলার শব্দ এলো।মাথা খানিকটা ঘুরিয়ে দেখে আকাশ দরজা আটকাচ্ছে।সাথে সাথে মেঘলা পুরো ঘুরে দাঁড়ালো।
কপালে ভাঁজ পড়ল।জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে প্রশ্ন করল,
—“দরজা আটকালেন কেন?আপনি এখানে কি করছেন?”
আকাশ কিছু না বলে আস্তে আস্তে মেঘলার দিকে এগোতে লাগলো।মেঘলা পিছাবে না-পিছাবে না করেও পিছিয়ে গেলো।পিঠ ওয়াশরুমের দরজা সাথে ঠেকলো।আকাশ আর মেঘলার মাঝে দূরত্ব সামান্য।আকাশের উত্তপ্ত নিশ্বাস তার মুখে পড়ছে।মেঘলা চোখ বুজে নিলো।শুকনো ঢোক গিলে কাঁপা-কাঁপা গলায় বলল,
—“কি….কি কর..ছেন?দূরে সরুন প্লিজ।”
—“ছাদে ভালো করে আমার বউকে হলুদ লাগিয়ে দিতে পারি নি।এজন্য চলে হলুদ লাগাতে।”
‘আমার বউ’ শুনে মেঘলা চট করে চোখ খুলে সামনে তাকাল।আকাশ মোহনীয় দৃষ্টিতে তাকে দেখছে।কৌতূহলী হয়ে মেঘলা বলল,
—“কে আপনার বউ?”
আকাশ মৃদু হাসল।ডান হাত উঁচু করে মেঘলার কোমরের সাইড দিয়ে হাত নিয়ে তার ফর্সা উদয় রাখল।ঠান্ডা কিছু অনুভব করতে পেরে মেঘলা বরফের মতো জমে গেলো।কথা গুলো গলায় আটকে গেছে।চোখ খিঁচে বন্ধ করে রাখল।শ্বাস ভারী হয়ে গেলো।আকাশ তার পুরো উদয়ে স্লাইড করে হাত সরিয়ে নিলো।বাম হাত দেয়ালে রেখে ডান হাতে মেঘলার কোমর পেচিয়ে ধরল।
মুখ মেঘলার কানের কাছে নিয়ে ফিসফিস করে বলল,
—“যাকে হলুদ লাগালাম সে আমার বউ।তো বউ কাল তোমার জন্য অনেক বড় সারপ্রাইজ আছে বুঝলে?”
মেঘলা চোখ খুলে ভীতু গলায় বলল,
—“কি সারপ্রাইজ?”
আকাশ বাঁকা হাসল।কিছু না বলে মেঘলা টুপ করে একটা চুমু খেয়ে রুমের বাইরে চলে গেলো।মেঘলা বিস্ময় নিয়ে হতবাক হয়ে খোলা দরজার দিকে তাকিয়ে আছে।নিজের অজান্তে এক হাত মুখে আরেক হাত পেটে চলে গেলো।পেট থেকে হাত চোখের সামনে এনে দেখলো পুরো হলুদে ভরে গেছে।মনে মনে বিরবির করল,
—“হে আল্লাহ কি করবে কাল আমার সাথে?সামনে বিপদ সংকেত দেখতে পাচ্ছি।তুমি আমাকে বাঁচিও।”
চলবে…