#ফিরবে চিনা ঠিকানায়
#লেখনীতে-অনামিকা_ইসলাম_জেরিন
#পর্ব_১ম
আজ এত বছর লন্ডন থেকে নিজের দেশে ফিরেছে। কত রাগ,অভিমান,জেদ,কষ্ট বুকে চেপে ধরে নিয়ে চলে গেয়ে ছিলাম প্রিয় মানুষ গুলোকে ছেড়ে।আজ আবার ফিরেছে আম্মু, ফুপি কথায় আর বড় ভাইয়ার বিয়ের জন্য।খুব প্রশান্তিবোধ হচ্ছে মনের মাঝে।কিন্তু কেন?হয়তো বা প্রিয়মানুষ গুলোকে এত বছর পর দেখবে খুব কাছ থেকে সেই জন্য।একটু ছুঁয়ে দেবে।
—“ম্যাম হোয়াট হ্যাপেন্ড?”
হেনরির কথায় মেঘলার ভাবনায় ছেদ ঘটে।এতো সময় এয়ারপোর্টের বাইরে দাঁড়িয়ে নিজের ভাবনায় মগ্ন ছিল মেঘলা।মেঘলা ঠোঁট দুটো প্রসারিত করে বলল,
—“নাথিং।”
—“আমাকে কি টোমাদের(তোমাদের) বাসায় নিবে না?নাকি এখানেই তাকতে(থাকতে) হবে?”
মেঘলা মুচকি হেসে।বলল,
—“টোমাদের নয় তোমাদের হবে আর তাকতে নয় থাকতে হবে বুঝলে।”
হেনরি চিন্তিতো হয়ে বলল,
—“সরি।বাট আমি এখান থেকে পুরো ভাষা ঠিক করে ফিরব মেঘু।”
—“বেস্ট অফ লাক,মাই ডেয়ার ফ্রেন্ড।চিন্তা কর না অল্প একটু একটু জিনিস ভুল আছে ঠিক হয়ে যাবে।তবে বাংলা ভাষায় কথা বলে যে মজা পাওয়া যায় তা আর কোনো ভাষায় কথা বলে পাওয়া যায় না।”
হেনরি মৃদু হেসে বলল,
—“ইয়েস।তততোমার বাসা থেকে আমাদের কেউ নিতে আসবে না?”
—“না।আমি মানা করছি কাউকে যেন না পাঠায়।আমার দুই মা ছাড়া আর কেউ জানে না আমি আসব।সবার জন্য সারপ্রাইজ।”
হেনরি অবাক হয়ে বলল,
—“টু মাদার’স মিন?”
মেঘলা হেনরির দিকে তাকিয়ে হেসে বলল,
—“আমার আম্মু আর ফুপি।ফুপি আমাকে মা মতোই ভালোবাসে।”
মেঘলা এইটুকু বলে একটা গাড়ি ঠিক করল বাসায় যাওয়ার জন্য।দুজনে রওনা দিল মেঘলাদের বাসার উদ্দেশ্যে।মেঘলা গাড়ির জানালা দিয়ে ব্যস্ত শহরটাকে উপভোগ করছে আর ভাবছে আম্মু আর ফুপি তার জন্য কি সেই ছোটবেলার মতো ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে?হ্যাঁ করছে সবাই বদলে গেলেও এই দুইজন কখন ও বদলে যাবে না।উফফফ!কি খুশি লাগছে।হেনরি খুব আগ্রহের সাথে সব কিছু দেখছে।সে কখনও বাংলাদেশে আসেনি কিন্তু অনেক গল্প শুনেছে মেঘলা আর জোনিতার আম্মুর কাছ থেকে।মেঘলা দেশে আসছে শুনে হেনরি ও আসছে দেশটাকে নিজ চোখে দেখতে।মেঘলা চুপ থাকলে হেনরি ভিতর বেশ কৌতূহল কাজ করছে। বলল,
—“মেঘু তোমার বাসায় আমাদের জন্য কে কে অপেক্ষা করছে?”
মেঘলা কিছু সময় হেনরির দিকে তাকিয়ে থেকে।বলল,
—“বাহ্ তোমার কথা তো খুব স্পষ্ট শুনা যাচ্ছে। বাবা-মা,বড় দুই ভাই,ফুপি-ফুপা আর দুইজন ফুপাতো ভাই।”
—“তোমার ভাইদের নাম কি কি?”
বাঙালিদের নাম মনে রাখা হেনরির কাছে বিশাল ব্যাপার।তারপরও বারবার জিজ্ঞেস করে কি মজা পায় তা মেঘলা বোঝে না।ক্ষীণ স্বরে বলল,
—“আমার বড় ভাইয়ার নাম সিয়াম আর ছোট ভাইয়ার নাম সায়িদ।”
—“ফুপাতো ভাইদের নাম কি?”
মেঘলা ছোট একটা নিঃশ্বাস বলল,
—“আকাশ আর আতিফ।”
আবারও দুইজন চুপ হয়ে যায়।বেশ কিছু সময় পর গাড়ি মেঘলাদের বাসার সামনে এসে দাঁড়ায়।ভাড়া দিয়ে বাসার গেট খুলে ভিতরে ঢুকে মেঘলা পুরো অবাক হয়ে যায়…..
চলবে…