প্রেয়সীর ছোঁয়া পর্ব ২২
জামিয়া পারভীন তানি
আদনান হসপিটালের সামনে গাড়ি থামায়। আফরা কিছু বুঝতে না পেরে আদনানকে জিজ্ঞেস করে,
“ এখানে কেনো নিয়ে এসেছো? ”
আদনান কিছু না বলে গাড়ির দরজা খুলে দেয়। আফরা জেদ করে গাড়ি থেকে না নেমে বসে থাকে। আদনান আফরাকে কোলে করে হসপিটালে প্রবেশ করে।
শহরের বেষ্ট হসপিটালে আফরা কে এডমিট করিয়ে দেয়। আর আফরার কানে কানে বলে,
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
“ তোমার পেটে কোনো এরিকের নাম থাকবেনা। সব মুছে ফেলে নতুন জীবন শুরু করবে তুমি। আর এই প্লাস্টিক সার্জারির কথা তুমি আর আমি ছাড়া যেনো কাক পক্ষীও টের না পায়। ”
“ হটাৎ কি হয়ে গেলো আপনার?মি. আদনান! ”
“ আমি সবার সামনে তোমাকে ছোট করেছি, যদি কেউ এই দাগ দেখতে চাই তারা যেনো আমাকে মিথ্যাবাদী ভাবে।”
“ হুহ্! আর ন্যাকামি করে লাভ কি আপনার? ”
“ তুমি আমার স্ত্রী, এটাই আসল কথা আফরা।”
“ ভুলেই গিয়েছিলাম বটে। ” বলে আফরা তাচ্ছিল্যের হাসি হাসে।
আসলেই আদনান অন্যায় করেছে আফরার সাথে। নিচের দিকে তাকিয়ে আদনান বললো,
“ জানি ক্ষমা করবেনা, তবুও আমি সম্পর্ক টা ছাড়বো না। ”
“ জোর করবে নাকি?”
“ প্রয়োজন হলে সেটাই করবো, আমি তোমার মাঝে মাহিরাকে খুঁজে পাই। ”
” ছিহহহহ”
“ সরি,……”
“ লজ্জা করেনা, স্ত্রীর সামনে তার মৃত বোন কে নিয়ে কথা বলতে? ”
“ সত্যি টা বলতে লজ্জা করে না। তুমি আমার থেকে মুক্তি পাবেনা কখনো। ”
এটা বলে আদনান কেবিন থেকে বেরিয়ে যায়, আর প্লাস্টিক সার্জারি এর জন্য প্রচুর গোপনীয়তা রাখার জন্য আদনান হাসপাতালে অনেক টাকা ও দেয়। আফরা শুধু প্লাস্টিক সার্জারি করতে রাজি হয় কারণ, এরিক শয়তান টার বাম তো পেট থেকে মুছে যাবে। তখন সুস্থ হলে না হয় অন্য কিছু ভাবা যাবে।
২৮.
মেহরাব চৌধুরী তার প্রাক্তন প্রেমিকা সম্পর্কে ডিটেইলস খুলে বলে পুলিশের কাছে। মেহরাব চৌধুরীর দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী মিমি আর ওর পালিত সন্তান কে এরেস্ট করে পুলিশ। ওদেরকে অত্যাচার করে পুলিশ জানতে পারে নাদিরা যা স্বীকারোক্তি দিয়েছে তার শেষ অংশ মিথ্যা , মানে নাদিরা নিজে বাঁচার জন্য নিজে রেপ হবার কাহিনী সাজায়। এভাবে ধরা পড়ে যাবে ওরা তা ভাবতে পারেনি। ওদের ইচ্ছে ছিলো কেস ধামাচাপা দিয়ে ওরা পালিয়ে যাবে দেশ ছেড়ে।
আর নাদিরার উপর টর্চার করে জানা যায়, সে আদনান কে পছন্দ করলেও বেশি লোভ ছিলো ওর বাবার সম্পত্তি আর ক্ষমতার উপর। কিন্তু যখন শিহাব মানে মিমির পালিত সন্তান ওকে প্রস্তাব দেয় তখন ও রাজি হয়ে যায়। কারণ প্রলোভন টা ছিলো শিহাব কে বিয়েও করবে, বিদেশ যাবে। শিহাবের ফুপাতো বোন সে এটা অবশ্য জানতোনা। সে রাজি হয়ে যায় মাহিরার জীবন নষ্ট করার চক্রান্তে। কিন্তু নাইলা মানে ওদের কাজের মেয়ে সব প্লান নষ্ট করে দেয়। আদনান আর মাহিরার বাবা কে ঘুম পাড়িয়ে রেখে মাহিরা কে রেপ করে শিহাব, এরপর ওকে হত্যা করে। আর নাদিরা নিজে বাঁচতে আদনান আর মাহিরার পাশে ঘুমিয়ে পড়ে। যাতে পুরো দোষ আদনানের হয়। কিন্তু মডার্ন কাজের মেয়ে নাইলা তিনজনের একসাথে ছবি তুলে ফেসবুকে দেওয়াতে নাদিরা নিজেও ফেঁসে যায়।
মিমি মেহরাব চৌধুরী কে পেয়ে অতীতের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এভাবে ধরা খাবে তা বুঝতেই পারেনি। মেহরাব চৌধুরী সব কথা রেকর্ড করে নিয়েছিলো। যদিও মিমি প্রতিশোধ এর জন্য এমন করেছিলো কিন্তু খুন তো খুন ই, তার সাজা ও ভয়ানক হবেই।
কিন্তু ওদের বিদেশ যাবার প্রলোভন দেখিয়েছিলো কে? এটাই আসল অপরাধী , যাকে খুঁজে বের করলে সব কিছুর সমাধান হয়ে যাবে।
২৯.
৭ দিন পর,
আফরাকে আজ রিলিজ করে দিবে, কিন্তু আফরা ভেবে নিয়েছে সব ছেড়ে সে চলে যাবে। আদনান তাকে ভালোবাসেনা এটাই বড় কথা, যেখানে ভালোবাসা নেই সেখানে তো সুখ আশা করা যায় না। মাত্র তিন মাসের প্রেমের জন্য বিয়ে করা বউ কে মন থেকে মেনে নিতে পারছেনা সে।
হটাৎ আফরা কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে আদনান। আফরার কাঁধে মুখ গুঁজে দেয়, পিঠে আলতো ছুঁয়ে দেয় ঠোঁট দিয়ে। আফরা এমন স্পর্শ পেয়ে কেঁপে ওঠে। আদনান তখন আফরা কে বলে,
“ এতো ঝড়ের মাঝে পেয়েছি তোমাকে,
ছেড়ে যেওনা তুমি ভুলেও আমাকে। ”
আফরা আদনানের দিকে তাকিয়ে বলে,
“ আমি নিজের অপমান নাই বা ভাবলাম, কিন্তু দুই পরিবারের যে দ্বন্দ তার কি হবে শুনি? ”
“ সব ঠিক হয়ে যাবে। ”
“ আর মাহিরা কে ভুলতে পারবে?”
আদনান আফরাকে ছেড়ে দেয়, চেয়ারে বসে পড়ে, এরপর বলে,
“ সে তো পৃথিবীতে নেই, তাকে হিংসে করে তোমার কি লাভ বলো? ”
“ তুমি আমাকে ভালোবাসো না আদনান। ”
“ ভালোবাসি, এ কদিন অনেক ভেবেছি তোমার কথা। তোমার ছোঁয়া গুলো আমাকে পাগল করে দেয়। তোমাকে অনেক অনুভব করতাম, তোমার অনুপস্থিতিতে আমি তোমাকে খুঁজে বেড়াতাম। যদিও তুমি হসপিটালে ছিলে। তবুও অনেক মিস করেছি তোমায়, এরপরেও কি বলবে তোমাকে ভালোবাসি না!”
“ হুহ্! ”
“ হাজবেন্ড ওয়াইফের মাঝে ভুল বুঝাবুঝি হয়, সে জন্য কি একে অপরকে ছেড়ে যাওয়া ঠিক? ”
আফরা কথা বলছিলো না, তখন আদনান আফরা কে কাছে টেনে নেয়। পেটের উপর থেকে কাপড় সরিয়ে ভালোবাসার ছোঁয়া এঁকে দেয় পেটে। আফরা আদনানের চুল ধরে টান দেয় । আদনান তখন বলে,
“ তুমিও আমায় ভালোবাসো, তাই আমার ছোঁয়া তে তুমি নিজেও পাগল হয়ে যাও। ”
আদনান আফরার পেটে অনেক গুলো চুমু দেয়, আফরা সব গুলো ছোঁয়া উপভোগ করে। এরপর আস্তে করে বলে,
“ পুরনো অতীত মুছে দিয়ে ভালো করেছো তুমি। ওই নাম টা আমাকে খুব কষ্ট দিতো। ”
“ ভুল তো মানুষ মাত্রই হয়, ভুল গুলো ক্ষমা করে দুজনেই নতুন করে সব কিছু শুরু করতে চাই। ”
আফরা হাসলো, আদনান আফরাকে বুকের সাথে অনেকক্ষণ জড়িয়ে ধরে রাখে। এরপর হসপিটাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দেয়।
দুজনের পরিবার কি মেনে নিবে তাদের? নাদিরা কি তার পাপের উপযুক্ত বিচার পাবে? এসব ভাবনা আফরার মাথায় ভর করেছে।
চলবে….
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/