প্রেয়সীর ছোঁয়া পর্ব ২১
জামিয়া পারভীন তানি
আফরা নিজের বাবার এমন কুকর্ম শুনে সোফায় বসে পড়। ততক্ষণে ওর বাবা আবার বলে,
“মেয়েটা তখন নিজে আর সন্তান কে বাঁচানোর জন্য একটা বাসা বাড়িতে কাজ নেয়। কিন্তু সেখানে তার জন্য বিপদ ছিলো সে সেটা জানতোনা। প্রতিনিয়ত ধর্ষণের স্বীকার হয় মেয়েটা। এতো অত্যাচার সহ্য করে মেয়েটা নিজের পেটের সন্তান কে আর বাঁচাতে পারেনি। বাচ্চা টাও মরে যায়।
অনেক অত্যাচার সহ্য করে সে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে উঠে। কৌশলে মালিক কে সে হত্যা করে। আর মালিকের বউকে ইলেক্ট্রিক শক দিয়ে পাগল বানিয়ে দেয়।”
“ এসব তুমি কিভাবে জানলে বাবা?” আফরা খুব চিন্তিত হয়ে বললো।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
“ যখন নাদিরা বলেছিলো সে অনাথ। তার সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে সব টা জেনে যাই। আসলে নাদিরা অনাথ না। নাদিরার পরিবার ছিলো, কিন্তু তবুও সে অনাথ। নাদিরার মা ছিলো শরীফ হাসানের বোন। বোনের অকাল মৃত্যু তে ভাগ্নীকে নিজের কাছে এনে রাখে শরীফ। শরীফের স্ত্রী, ছেলে আর ভাগ্নীকে নিয়ে সুখের সংসার ছিলো। তখনই মিমি মানে আমার প্রাক্তন প্রেমিকা তার স্ত্রী কে বলে কাজে নেয়। শরীফ সুন্দরী মেয়েকে চোখের সামনে দেখে চরিত্র ঠিক রাখতে পারেনি। প্রতিদিন রাতে নোংরা কাজে বাধ্য করে মিমি কে। মিমির সন্তান নষ্ট হবার পর সে বেশী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবুও রেপ না করে ছেড়ে দেয়নি শরীফ। একটা সময় মিমি সুস্থ হলে প্রতিশোধ নেশা জেগে ওঠে। মিমি শরীফ কে বিয়ারের সাথে বিষ দেয় । আর ওর স্ত্রী সব জেনেও না জানার ভান করে থাকতো বলে ওকে ইলেক্ট্রিক শক দেয় মাথায়। যখন মেয়েটা ঘুমিয়ে ছিলো তখন মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মাথার দুই দিকে কানের ভিতরে, চুলের ভিতরে শক দেয়। পরের দিন যখন দারোয়ান এসে দেখে শরীফের লাশ তখন মিমি শরীফের ছেলে আর ভাগ্নীকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। এক প্রকার ব্রেইন ওয়াশ করে সবার। প্রমাণ করতে পারেনা কেউ কারণ, বিয়ারের বোতল মিমি লুকিয়ে ফেলে দিয়ে এসেছিলো আগেই। আর ওর স্ত্রীর কানে শক দেওয়া তে সে শুনতে পারেনি। মাথায় শক দেওয়ায় ব্রেইন ড্যামেজ হয়ে গিয়েছিলো। মিমি মিডিয়া কে বোঝায় স্বামী কে হারিয়ে নির্বাক হয়ে গেছে। আর ওদের দুই সন্তান মিমিকে এমন ভাবে আঁকড়ে ধরে রেখেছিলো মিডিয়া সেটা বিশ্বাস করে নেয়। খবর হয়, ‘ অতিরিক্ত মদ্যপানে ব্যবসায়ীর মৃত্যু & ব্যবসায়ীর স্ত্রী মানষিক ভারসাম্যহীন। ‘ দুই বাচ্চার আয়া মা হিসেবে মিমির অবস্থান পাকা হয়ে যায়। শরীফের সম্পত্তি ওর ছেলের নামে হয়ে যায়। বেশ কিছুমাস পর শরীফের ভাগ্নীকে অনাথ আশ্রমে দিয়ে দেয় মিমি, সেখানে জানায় ‘ শরীফের ভাগ্নী সম্পত্তির ভাগ চাইবে তাই তাকে আশ্রমে দিয়ে দেয়। ‘ শরীফের অসুস্থ স্ত্রী আর সন্তান কে আঁকড়ে ধরে এখনো বেঁচে আছে মিমি। ”
“ আর ওই অনাথ মেয়েই কি নাদিরা? আর ওকে বিয়ে করতে চাওয়া লোকটা কি মিমির সেই পালিত সন্তান? ” আফরা ওর বাবার দিকে কৌতূহল বশত বলে।
আফরার বাবা চমকে উঠে। এভাবে তো কখনো ই চিন্তা করেনি সে। তাহলে কি ওর মেয়েকে মিমির পালিত সন্তান ই মেরেছে! বাবা কে চুপচাপ থাকতে দেখে আফরা আবার জিজ্ঞেস করে,
“ কথা বলছোনা কেনো? আমি যা ভাবছি তুমিও কি সেটাই ভাবছো! তুমিও কি ভাবছো মাহিরা কে তোমার ভুলে চলে যেতে হয়েছে ? যদি ওরাই হবে তাহলে ওরা নাদিরা কে রেপ কেনো করলো? ”
মেহরাব চৌধুরী মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েন। কিছুই তার মাথায় আসছেনা। আফরা আবার জিজ্ঞেস করে,
“ নাদিরার খোঁজ পেলে কিভাবে? আর মিমির এতো ঘটনা তুমি জানলে কিভাবে? ”
“ নাদিরার পরিচয় নিতে গিয়ে মিমির খোঁজ পাই। সেখানে গিয়ে মিমির মুখোমুখি হয়ে অপরাধ বোধ জেগে ওঠে। পুরনো প্রেমিকা কে দেখে নিজেকে সামলাতে পারিনি। ওকে আমিও খুব ভালোবাসতাম! কিন্তু লোভে পড়ে ওকে ছেড়ে দিতে দ্বিধা করিনি। সে আমাকে দেখে অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। এরপর নিজের অতীতের সব স্মৃতি বলতে শুরু করে। পরে অবশ্য দোষারোপ ও করে, আমার জন্য ওর জীবন টা ধ্বংস হয়ে গেছে এটা বলে। ”
২৭.
আদনান আফরা কে না দেখে আফরার বাড়ি এসেছিলো ওকে একবার দেখতে। আফরা যখন ওর বাবার সাথে কথা বলছিলো সব দরজার আড়াল থেকে শুনে ফেলে। সব কথা শেষ হবার পর আদনান আফিরার সামনে এসে দাঁড়ায়। আফরা ভুত দেখার মতো চমকে উঠে। আর মেহরাব চৌধুরী ও একটু থতমত খেয়ে যান।
আদনান আফরার সামনে গিয়ে বলে,
“ এতক্ষণ যা যা বললেন উনি, এর আগে যদি থানায় স্বীকার করতেন তাহলে মাহিরার খুনী কে ধরা সহজ হতো। ”
“ আমার বোনের খুনী কে আমি নিজে শাস্তি দিবো। সেখানে আপনার মাথা না ঘামালেও চলবে। ”
বলেই আফরা রুম থেকে বের হয়ে অন্য রুমে চলে আসে। আদনান ওর পিছনে গিয়ে আফরার হাত ধরে। আফরা হাত ছুটিয়ে নেয়, আদনানের গালে থাপ্পড় দিয়ে বসে। আদনান খুব রেগে যায় এমন ব্যবহারে। ঘরের দরজা লক করে দিয়ে আফরার দুই হাত চেপে ধরে। আফরার ঠোঁটে ঠোঁট দিয়ে কিছুক্ষণ আফরাকে চুমু দেয়। আফরা নিজের সর্বস্ব শক্তি দিয়ে আদনান কে সরিয়ে দেয়। এরপর বলে,
“ যখন শরীরের চাহিদা আসে, তখন মনে পড়ে আমাকে! কাপুরুষ না হয়ে থাকলে এখুনি বের হয়ে যাও। ”
রাগে আদনান আফরার ঘরের ফুলদানি তে আঘাত করে। এতো জোরে আঘাত দেয় যে আদনান এর হাত কেটে যায়। আফরার কষ্ট হচ্ছে আদনানের হাতে রক্ত দেখে। কিন্তু কি আর করার, সে তো আফরাকে ভালোই বাসে না! ভালোবাসে তো মাহিরা কে। আফরা তবুও আদনানের হাতে ড্রেসিং করিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেয়।
হটাৎ করে আদনান আফরা কে কোলে তুলে নেয়। দরজা খুলে আফরাকে নিচে নিয়ে আসে। আফরার বাবার চিৎকার স্বত্তেও আফরাকে জোর করে নিজের গাড়িতে তুলে।
“ কোথায় নিয়ে যাচ্ছো আমাকে? ”
“ গেলেই দেখতে পাবে। ” বলে আদনান বিশ্রী ভাবে হাসে। যা দেখে আফরার গা জ্বলে যায়।
চলবে…….
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/