প্রেয়সীর ছোঁয়া পর্ব ২০

0
1079

প্রেয়সীর ছোঁয়া পর্ব ২০
জামিয়া পারভীন তানি

আদনান আফরার দিকে তাকাচ্ছে বারবার, মেয়েটা তখনও কাঁদছে। আফরাকে এমন ভাবে একদম নিস্পাপ লাগছে আদনানের কাছে। কিন্তু আফরা আদনানের দিকে একবার ও ফিরে তাকায় নি। এতো অপমানের পর কোনো মেয়ে কি আদৌও সব কিছু স্বাভাবিক করে নিতে পারে!

এদিকে নাদিরা আবার বলতে শুরু করে,
“ সে রাতে আদনান কে বিয়ার এর সাথে কোকেইন আর ঘুমের ওষুধ দিই। আর মাহিরা এবং ওর বাবা কেও ডিনারের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলাম। তিনজনে সেদিন প্রচুর বিয়ার পান করি। ধীরে ধীরে আদনান আর মাহিরা দুজনেই ঘুমিয়ে পড়ে। আমি ওই ছেলেটা কে ফোন দিই, সে বাসার পিছনের একটা রেস্টুরেন্ট এ বসে ছিলো। আমি ভেবেছিলাম একা আসবে, কিন্তু নাহ! কয়েকজন ছিলো ওর সাথে। ও এসেই মাহিরার উপর ঝাপিয়ে পড়ে হায়েনার মতো। কুরে কুরে খায় মাহিরার দেহ টাকে।

কথা ছিলো হত্যা করার কিন্তু রেপ করবে তা বুঝতে পারিনি। আর আদনান তো বেহুশ হয়ে পড়ে ছিলো। আমি সব কিছু সহ্য করতে পারছিলাম না। তাই আমাকে অন্যেরা ধরে রাখে। মাহিরাকে সারাটা রাত রেপ করে সে, বেচারি হয়তো সহ্য করতে পারেনি। ভোর হবার আগেই পরপারে পাড়ি জমায়৷ আর সে আমাকে ছেড়ে দেয় না! ওর সাথে যারা ছিলো সবাই মিলে আমাকে গণ ধর্ষণ করে। আমি নিজেও সহ্য করতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে যায়। লোকটার নাম কি ছিলো তা জানিনা! কিন্তু ও আমাকে ঠকিয়েছে । জ্ঞান ফিরে দেখি ওদের কাজের মেয়ে নাইলা আমাদের একসাথে ছবি তুলছে। আমি আদনানের বুকের উপর পড়ে আছি আর মাহিরার দেহে ঠিক ভাবে কাপড় নেই। আদনানকে ও ওরা যাবার সময় নগ্ন করে রেখে গিয়েছিলো। যেনো সবাই ধরেই নেয় আদনান এইসব করেছে। কিন্তু নাইলা খবর টা অন্যভাবে রটায়, আমি আদনান কে পাবার জন্য আমি আর আদনান মিলে মাহিরা কে হত্যা করেছি। কিন্তু ওরা আমার কাপড় ঠিক করে রেখে গিয়েছিলো। লজ্জায় ভয়ে কাউকে বলতে পারিনি রেপ হবার কথা। মাহিরাকে পরীক্ষা করে আদনানের বীর্যের সাথে না মিলাতে আদনান ছাড়া পেয়ে যায়। আর আদনান মাহিরা কে হারিয়ে আর কোকেইন না পাবার নেশায় ঘোরের মধ্যে চলে যায়। তাইই হয়তো আফরা কে মাহিরা ভেবে তার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিলো। ”
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/



আদনান প্রচন্ড রেগে যায়, আফরার দিকে তাকাচ্ছে বারবার। আদনান ধরেই নিয়েছে সব কিছু আফরার জন্য হয়েছে।
আফরা নাদিরার দিকে তাকিয়ে বলে,

“ কার সাথে হাত মিলিয়ে আমার বোন কে তুই মেরেছিস? নাম বল তার। ”

“ আমি সত্যিই তার নাম জানিনা। ”

“ সে কি বিদেশী ছিলো? ”

“ হয়তোবা। দেখলে চিনতে পারবো তাকে। ”

আফরা নিজের ফোন থেকে এরিকের ছবি দেখায়। এরপর বলে,
“ এটা কি সেইই জানোয়ার টা?”

“ নাহহহহ! মিলছেনা তো!”

“ ভালো করে দেখে বল তুই। ”

“ না এটা সেইই ছেলে না।”
আদনান অবাক হয়ে আফরার দিকে তাকালো। তাহলে কে তার মাহিরাকে সরিয়ে দিলো! আফরা যদি নির্দোষ ই হয় তাহলে সে আফরার সাথে অন্যায় করেছে এটা ভেবে মাথা নীচু করে নেয়। হাজার হোক তার স্ত্রী কে সে সবার সামনে ছোট করেছে। আফরা কি তাকে ক্ষমা করবে কখনো!

নাদিরাকে আবার হাজতে পাঠানো হয়। বিচার তো ওর অবশ্যই হবে। যদিওবা লোভের শাস্তি জঘন্য আবে পেয়েছে তবুও আফরার বাবা ওকে ছেড়ে দিবে না।
আফরা থানা থেকে বের হয়ে নিজের বাসায় চলে আসে। আদনান অন্যমনস্ক ছিলো বলে আফরার চলে আসা টা খেয়াল করেনি। কিছুক্ষণ পর আফরা কে না দেখে সবার উদ্দেশ্য জিজ্ঞেস করে,
“ আফরা কোথায়? ”

মেহরাব চৌধুরী বললেন,
“ যেখানেই যাক না কেনো! ওকে তোমার সংসার করতে দিবোনা! দুজনের ডিভোর্স করিয়ে ছাড়বো।”

“ আঙ্কেল! ”

“ যে নিজের স্ত্রী কে হেনেস্তা করে সে কখনো ভালো স্বামী হতে পারেনা!”

“ আর তুই নিজের চরিত্র কখনো দেখেছিস? ” আদনানের বাবা বলেন।

“ হ্যাঁ দেখেছি! পাপের সাজা পেয়েছি নিজ মেয়েকে হারিয়ে। আরেক মেয়েকে কখনো হারাবোনা।”

“ কি এমন করেছো তুমি আংকেল? ”

মেহরাব চৌধুরী আদনানের দিকে একবার তাকিয়ে থানা থেকে বের হয়ে চলে আসে।

২৬.
আফরাকে গুমরে কাঁদতে দেখে ওর বাবা ওর মাথায় হাত রাখে। আফরা ওর বাবার বুকে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললো,
“ আব্বু আমি ভুল করেছি না বুঝে, তার জন্য আর কতো শাস্তি আমি পাবো!”

“ সবিই শুনেছি, তুই ভুল করেছিস ঠিকই। কিন্তু আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নে। তাহলে সব ঠিক হয়ে যাবে। আর খুব তাড়াতাড়ি ডিভোর্স দিয়ে দিস।”

“ বাবা!”

“ আদনান কখনো তোকে সুখী রাখবেনা রে মা। ভুলে যা ওকে। তোর অনেক ভালো জায়গায় বিয়ে দিবো। ”

“ বিয়ে করার ইচ্ছে নেই আমার। চলোনা অন্য কোথাও চলে যাই। ”

“ আমি যে পাপ করেছিলাম তার শাস্তি পেয়েছি, তুই ভুল করেছিস, তার শাস্তি ও পেয়েছিস। আদনান নিজের পাপের সাজা পাবে দেখে নিস। তোর পেটের দাগ যেভাবেই হোক দূর করবোই দেখে নিস। ”

“ এরিক যদি না হয়, তাহলে মাহিরা কে কে মারলো বাবা? ”

“ জানিনা কিছু, শুধু এটা জানি, তোকে কিভাবে সুখী করা যায়।”

“ বাদ দাও না তুমি। ”
“ একটা সময় আমিও কাউকে ভালোবেসেছিলাম! তার সাথে খুব অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিলো আমার। কিন্তু আমি কাপুরষ এর মতো তার প্রেগ্ন্যাসির সময় ফেলে চলে যাই। আমি স্কলারশিপ পেয়েছিলাম বলে সেই অসহায় মেয়েকে তাড়িয়ে দিই। মেয়েটা ভাইয়ের কাছে এসে নালিশ দেয় । ভাই খুব রেগে যায়, মেনেও নিতে পারেনি। কারণ আমি ফিরতাম না! সমাজের দোহাই দিয়ে ওকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। আর ওর পরিবার ও ওকে তাড়িয়ে দেয়। এরপর ওর পরিণতি খুব করুণ ছিলো রে মা!”

চলবে….

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে