প্রেয়সীর ছোঁয়া পর্ব ১৯

0
1045

প্রেয়সীর ছোঁয়া পর্ব ১৯
জামিয়া পারভীন তানি

“ভালোবাসা কি দোষের! নাকি বয়সের ভুল!
তাহলে কেনো হারাতে হচ্ছে সকল সুখ?
নাকি কালো ধোঁয়া বইছে দুজনের জীবনে?
আঁধার কেটে হয়তো দুজনে দেখবে আলোর মুখ!

অতীতের করা ভুল গুলো কেড়ে নিয়েছে শান্তি।
দুটি হৃদয়ে রক্তক্ষরণ বেড়েই যাচ্ছে বারবার ।
ভালোবাসা হীন অশান্ত হৃদয় পুড়ছে দহনে।
কবে যে সুখ পাখিরা ফিরে আসবে আবার।

বুকের জমানো কষ্ট গুলো চোখ দিয়ে ঝরে পড়ে।
জোড়া পাখি দুটি কবে যে ফিরবে সুখের নীড়ে! ”
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/



২৫.
আফরা আর ওর বাবা, এদিকে আদনান আর ওর বাবা মা মুখোমুখি হয়েছে থানায়। নাদিরা কে ও হাজির করা হবে একটু পর। সবাই নাদিরার জন্যই অপেক্ষা করছিলো।

ততক্ষণে আফরার বাবা বলতে শুরু করে।
“ মাহিরা আর নাদিরা প্রায়ই সময় একসাথে আড্ডা দিতো। আমিও মেয়েকে হাসিখুশি দেখে খুব আনন্দিত থাকতাম। ”

“আপনার কাকে বেশী সন্দেহ হয়? আদনান নাকি নাদিরা! ” একজন পুলিশ অফিসার বললেন।
“ নাদিরা…. ”
“ কারণ? ”
“ নাদিরা আসার পর থেকেই ওরা তিনজন বেশী ক্লোজ হয়। একসাথে ড্রিংকস শুরু করে। অবশ্য রোজ না! তবে প্রায়ই করতো তিনজন একসাথে ই। ”
“ ঘটনার দিন আপনার কাছে কোনো কিছু অন্যরকম লেগেছে কি? ”

আফরার বাবা মেহরাব চৌধুরী একটু চিন্তায় পড়ে গেলেন। কিছুক্ষণ পর বললেন,
“ আমরা সেদিন একসাথে ডিনার করেছিলাম। ”
“ রান্না করেছিলো কে?”
“ নাদিরা… ”
“ ও মাই গড… তার মানে নাদিরাই এসব করেছে? কিন্তু কেনো? ”

আদনান বলে উঠে,
“ নাদিরাই যে এসব করিয়েছে কিভাবে সিউর হচ্ছেন? ”

অফিসার বললেন,
“ নাদিরা রান্নার সময় খাবারে ঘুমের ওষুধ দিয়েছিলো আর আপনারা যখন ড্রিংকস করতেন তখন ড্রিংকস এ কোকেইন মেশাতো। এতে আপনি নেশা গ্রস্থ ও হতেন আর আপনার হার্ট ও দুর্বল হয়ে যেতো। ঘুমের ওষুধ খেয়ে আপনারা সবাই ঘুমে ছিলেন, তখন ই নাদিরা এসব করিয়েছে তাহলে। ”

“ নাদিরা এতো নিচ হতে পারে! ”

আফরা তখন বলে,
“ নাদিরা অল্প স্বীকার করলেও হত্যার কথা স্বীকার করেনি। ”
আদনান অন্যদিকে তাকিয়ে বলে,
“ তাহলে কি তুমি খুন করে গিয়েছিলে নাকি? ”
“ একদম মিথ্যা অপবাদ দিবা না তুমি। ক্যারেকটার লেশ… ”
“ আমি ক্যারেক্টার লেশ নাকি তুমি? ”

আদনানের মা আফরোজা চৌধুরী দুজন কেই চুপ করিয়ে দিয়ে বললেন,
“ তোমরা নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করে প্রব্লেম সলভ হবে কিভাবে? ”
“ আম্মি আপনার ছেলে নিজেই দোষী। ” আফরা রাগের বশে বলে ফেলে।

আদনান আরোও বেশী রাগ দেখিয়ে আফরা কে বলে,
“ আমি দোষ করেছি তাইনা! তাহলে তুমি কোন সতী যে পেটে পরপুরুষ এর নাম লিখা থাকে! ”

আফরা এমন কথা শুনে মুখ নীচু করে নেয়। আদনান এর বাবা মা দুজনেই আফরার দিকে ভয়ংকর দৃষ্টিতে তাকায়। আদনানের বাবা সোহরাব চৌধুরী বলেই দিলেন,

“ কি বেহায়া মেয়ে রে তোর মেহরাব! অমানুষ বানিয়েছিস তাহলে! তোর যা চরিত্র, তোর মেয়ে তো এমন হওয়া ই স্বাভাবিক। ”

আফরা মাথা নীচু করে কাঁদতে শুরু করে। নিজের উপর ঘৃণা হচ্ছে তার। একটা ছেলেকে ভালোবেসে ছিলো ঠিকই কিন্তু তখন তো বয়স কম ছিলো। যখন নিজের ভুল বুঝতে পারে তখন তো সরেই এসেছিলো। তার ভুলের শাস্তি তাকে এভাবে পেতে হচ্ছে।

মেহরাব চৌধুরী মেয়ের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলো, এরপর ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললো,
“ এক মেয়ে কে তোমার ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করে হারিয়েছি। তবুও আরেক মেয়েকে তোমার ছেলের হাতে তুলে দিয়েছি। এটাই বড় ভুল হয়ে গেছে আমার। ”

“ ভুল তো আমার হয়েছিলো, তুই চরিত্রহীন জেনে ও তোর মেয়েকে বউ করা। ”

এমন সময় নাদিরা কে নিয়ে আসে।
নাদিরা কে সবার মাঝে বসানো হয়। এরপর একজন কানাডার পুলিশ বলেন,
“ যা যা অন্যায় করেছো সব খুলে বলো। যদি কোনো কথা মিথ্যে হয় তাহলে গরম স্টিক দিয়ে চোখ তুলে দিবো। ”
এরপর নাদিরা কে কিছুদূরে রাখা আগুনে পুড়ানো স্টিক টা দেখায়।

নাদিরা একটু ভয় পায় প্রথমে। এতো দিন অনেক শারীরিক অত্যাচার করা হয়েছে ওর উপর। চোখের নিচে কালসিটে পড়ে গেছে। সুন্দর চেহেরা তে ফোসকা পড়ে গেছে। এখন যদি চোখ তুলে নেয় তাহলে বেঁচে থেকেও বা লাভ কি। তাই বলতে শুরু করে,

“ আমি প্রথম দেখায় আদনান কে ভালোবেসে ফেলি। কিন্তু আদনান কে পাওয়া আমার জন্য দুঃস্বপ্ন ছিলো। ”
এটা বলেই কাঁদতে শুরু করে নাদিরা।

আদনান এমন কিছু শুনবে আশা করেনি। আদনান এসে নাদিরার গলা টিপে ধরে,
“ আহাম্মক, তুই যদি আমাকে ভালোবাসতিস তাহলে আমাকে ফাঁসাতিস না! যা বলার সত্যি করে বল। নইলে তোকে মেরে নিজে জেলে যাবো। ”

একজন অফিসার এসে আদনান কে টেনে সরিয়ে নেয়। এরপর বলে,
“ আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না। ওকে ওর মতো বলতে দিন। ”

এরপর অফিসার নাদিরার দিকে স্টিক নিয়ে এগিয়ে আসে। নাদিরা ভয়ে বলতে শুরু করে,
“ আমি সত্যিই আদনান এর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। আর মাহিরার বাবার টাকা কিভাবে নিজের করবো সেইই প্লান করছিলাম। কিন্তু ১০ দিন চিন্তা করার পর একজন আমার জীবনে আসে। সব প্লান বদলিয়ে ফেলি। ”

আদনান বললো,
“ সব খুলে বল তাড়াতাড়ি। ”
তারপর নাদিরা বলে,
“ সে আমাকে কোকেইন সাপ্লাই দিতো আর আমি ওগুলো আদনানের ড্রিংকস এ মেশাতাম। ভুলেও মাহিরা বা নিজে নিতাম না। ” এরপর আদনানের দিকে তাকিয়ে বলে, “ তোমার মনে আছে! মাহিরার মৃত্যুর পর, তখন তুমি মানসিক ডিপ্রেশন এ ভুগতে, তোমার হার্টবিট বেশি ছিলো, তোমার মাংসপেশি শক্ত হয়ে গেছিলো। মাথা ঝিম ধরে থাকতো। আসলে সব কিছু হতো কোকেইন না পাবার জন্য। ”

আদনান রাগান্বিত ভাবে তাকিয়ে থাকে। এরপর বলে,
“ ভনিতা না করে কিভাবে মাহিরা কে তুই মারলি সেটা বল? কার সাহায্য নিয়েছিস সেটা বল? ”

নাদিরা আদনানের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলতে শুরু করে,
“ একজন আমার সাথে দেখা করে, সে কথা দেয় মাহিরা কে সরিয়ে দিবে। বিনিময়ে আমাকে অনেক টাকা দিবে সাথে সে আমাকে বিয়েও করবে। আমি তার চেহেরা দেখে আদনান কে ভুলে যাই, ওই ছেলেকে ভালোবেসে ফেলি, আর যা বলে সেটাই শুনি। ”

চলবে…

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে