Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"প্রেয়সীর শব্দপ্রেমপ্রেয়সীর শব্দপ্রেম পর্ব-৯+১০

প্রেয়সীর শব্দপ্রেম পর্ব-৯+১০

#প্রেয়সীর_শব্দপ্রেম (দ্বিতীয় খন্ড)
#ফারজানা_মুমু
[৯]

সারারাত বৃষ্টির কারণে সকালে নতুন সূর্য উঁকি দিয়েছে ঝলমল করে। রাতের আকাশের কান্না থেমে যেন এখন নিজস্ব তেজ দেখাতে ব্যস্ত।চারদিকে পাখির কিচিরমিচির । কাকের কর্কশ কণ্ঠস্বর‌ও কানে বাজছে। গতকাল রাতে জানালা বন্ধ না করায় রোদ এসে পড়তে লাগলো চোখে-মুখে। সূর্যের তেজস্ক্রিয় আলো নীরা’র চোখে পড়তেই ক্লান্ত দুটো চোখ ধীরে-ধীরে জেগে উঠল। বিরক্তিতে ‘চ’ কারান্ত শব্দ বের করে চারদিকে চোখ বুলালো। অজানা অচেনা রুমটি দেখে প্রথম ভ’য়ে পা দুটি গুটিয়ে নিলো, আকস্মিক মনে পড়লো আজ থেকে এই রুমটি তার। রাতের কথা মনে হতেই লজ্জায় মিইয়ে পড়ল। চোখ বুলিয়ে হিরণ কোথায় আছে দেখতে চাইলো। ওয়াশরুমের দরজার শব্দে ওদিকে তাকাতেই দেখল অর্ধলগ্ন হিরণ দাঁতপাতি বের নির্লজ্জের
মত হাসছে। ওই হাসিতে লজ্জা আরো বাড়িয়ে তুলল দ্বিগুণ। গায়ে জড়ানো পাতলা কম্বলখানা আরেকটু উপরে তুলে শব্দ করেই বলল, এভাবে হাসবেন না আমার অনেক লজ্জা করে।
-” এখনও লজ্জা আছে?
-” আপনি বের হোন আমি ফ্রেশ হবো।
-” তো যাও আমি থাকলে সমস্যা কী?

লজ্জায় ঠোঁট কামড়ে ধরল নীরা। শরীরের প্রতিটি ভাঁজে লজ্জার অস্তিত্বও টের পাচ্ছে। নীরাকে লজ্জায় লাল হতে দেখে হিরণ নিজেই খাটের উপরে উঠে বসল। মুখটা সামনে এগিয়ে দিয়ে বলল, হবে নাকি মিষ্টি মুখ?
-” আপনি এমন কেনো? দেখছেন আমি লজ্জা পাচ্ছি কই না একটু দূরে থাকবেন কিন্তু না ঠিকই আমার সামনে ঘুরঘুর করছেন। মনস্ত্ব আছে আপনার?
-” নেই তো। গতকাল রাতে সব হাঁটে বেছে দিয়েছি। বিক্রীত পণ্য ফেরত নহে জানো না?
-” আবার।

কাঁদো-কাঁদো কণ্ঠে বলল নীরা। হিরণ নীরার কপালে চুমু দিয়ে বলল, আরেহ বোকা মেয়ে, আমরা স্বামী-স্ত্রী লজ্জা পাচ্ছ কেন। আচ্ছা যাও আমি রুম থেকে যাচ্ছি তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো। আব্বা কি করছে দেখে আসি।

নীরা মাথা ঝাঁকাল। হিরণ যেতে গিয়েও নীরার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে অমৃতের স্বাদ নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে পড়ল। নীরা ছাড়া পেয়ে তখন এক দৌড়ে ওয়াশরুমে ছুটল। অজানা সুখ,আনন্দ টিকরে পড়ছে ওর দুনিয়া জুড়ে। বিড়বিড় করে গাইলো, ভালোবেসে, সখী, নিভৃতে যতনে
আমার নামটি লিখো
তোমার মনের মন্দিরে।
____________

মঙ্গলবার আজ। গৌতম বাজারে প্রতি মঙ্গলবার ও শনিবার হাট বসে। বড় হাট বলা এই বাজারকে। অন্যান্য দিনের থেকে এই দুটো দিন সবজি,মাছ কমে পাওয়া যায় বাজারে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে পা রাখার জায়গা থাকে না তখন। ঝুমঝুমি আগেও এখানে এসেছে রাস্তাটা ওর খুব পরিচিত। বাবার হাত ধরে কত বাজার করেছে তখন। ওদের বাড়ি থেকে এই বাজারে আসতে দশ টাকা ভাড়া লাগে। গোপনে বিষাদের নিঃশ্বাস ছেড়ে সামনে এগিয়ে গেল ঝুমঝুমি।
দু-দুটো সপ্তাহ ফেরিয়ে আজ আবারও চলে আসছে এখানে। ঝুমঝুমি আরো দুবার এসেছিল গৌতম বড় বাজারে। দুবারই ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয়েছে। আজও প্রস্তুতিতে নিয়ে গৌতম বড় রাস্তার মোড়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে ঝুমঝুমি। গায়ে জড়ানো মেরুন বোরখা। নিকাব দিয়ে মুখ ঢাকা, চোখে ইয়া বড় চশমা। বাম সাইডে কাপড়ের ব্যাগ। ঈগল চোখে তাকিয়ে আছে দূরে থাকা বয়স্ক এক লোকের পানে। লোকটি ওর বড় চাচা। বাবার মৃ’ত্যু’র পর ওদের যাবতীয় সম্পত্তি হস্তান্তর করেছে এই লোক। এমনকি নিজ মেয়ের জামাইয়ের কীর্তিকলাপ ঢাকা দিয়ে নোংরা অপবাদ দিয়েছে ঝুমঝুমি ও ওর মা-বোনের উপর। ঝুমঝুমির মাথা গরম হলো। তবুও নিজেকে রাখলো শান্ত। লোকটার হাতে বড় বাজারের ব্যাগ। আনমনে হেঁটে গলি পার হবার সময় ঝুমঝুমি এগিয়ে যায় লোকটির সামনে। তখন সন্ধ্যা প্রায়। দূরের মসজিদে আযানের ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। আযানের ধ্বনি শেষ হতেই যথাসম্ভব কণ্ঠ নামিয়ে বলল ঝুমঝুমি, আমায় দিন ব্যাগটা। আমি এগিয়ে দিচ্ছি।

বয়স হয়েছে অনেক সেজন্য ঝুমঝুমির কণ্ঠ চিনতে পারেনি ওর চাচা। তবে সন্দিহান নজরে একবার পলক করে জিজ্ঞাসা করে, কে তুমি?

ঝুমঝুমি নড়ে চড়ে উঠে। কি বলবে খোঁজে না পেয়ে খানিক নিরবতা পালন করে। আচমকা মাথায় এক কঠিন বুদ্ধি খাটিয়ে নিজেকে ধাতস্থ করে বলে, চাচা ওই মোড়ের শেষ দিকগটায় একটা মহিলা মাদ্রাসা হয়েছে না ঐখানে আমি জব করি। দেখলাম আপনি ভারী ব্যাগটা নিয়ে হাঁটতে কষ্ট পাচ্ছেন তাই সাহায্য করতে আসলাম।

ঝুমঝুমির পোশাকের দিকে তাকিয়ে থেকে সন্দেহ দূর করল লোকটি। বিশ্বস্ত কণ্ঠে বলল, নেও মা। সত্যিই খুব কষ্ট হচ্ছিল। এইজন্যই দীনদার মানুষ আমার খুবই পছন্দ। আমি নিজেও একজন ধার্মিক মানুষ।

মনেমনে তিরস্কার হাসি দিল ঝুমঝুমি। ধার্মিক-দীনদার মানুষেরা কখনোই অন্যর হোক মে’রে দেয় না। ওরা আল্লাহর রাস্তায় চলে। পরকালের ভয় আছে। তাছাড়া দীনদার মানুষেরা কখনোই বলে না সে দীনদার বরং মানুষ ওদের আচরণে বুঝতে পারে। ঠোঁটের কোণায় কুটিল হাসি ফুটলো ঝুমঝুমির। ব্যাগটা হাতে নিয়ে এগুতে লাগলো সামনের দিকে। ওর বড় চাচাও ওর সাথে-সাথে এগুচ্ছে। ঝুমঝুমি আরেকবার সতর্ক দৃষ্টি বুলিয়ে দেখল চতুর্দিক। না কেউ নেই এখানে। বাজারের ব্যাগটা ওর বড় চাচার হাতে ধরিয়ে বলল, চাচা একটু ধরুন তো আমার ফোন বাজছে।

ব্যাগ হাতে নিয়ে ধীরে-ধীরে এগুতে লাগলো লোকটি। ঝুমঝুমি ব্যাগ থেকে একটি ইনজেকশন বের করে দ্রুত হেঁটে পুশ করল লোকটির ঘাড়ে। সাথে সাথে লোকটি হাতের ব্যাগটা নিচে ফেলে ঝুমঝুমির দিকে তাকিয়ে বলল, কে তুমি?

নিকাব সরালো মুখ থেকে। দীর্ঘদিন পর পরিচিত মুখটি দেখে ভয়ার্ত কণ্ঠে বলল, ঝুমঝুমি।

লোকটি রাস্তায় ঢলে পড়ল। এই ইনজেকশনের কাজ হলো পুরো শরীরকে নিস্তেজ করে ফেলা। প্যারালাইজড যাকে বলে। সবকিছু শুনতে পারবে, অনুভব করতে পারবে কিন্তু বলতে পারবে না,ইশারা করতে পারবে না,শরীর নাড়াতে পারবে না। যতদিন বেঁচে থাকবে এইভাবেই বাঁচতে হবে। ক্ষণে-ক্ষণে নিজের মৃ’ত্যু কামনা করবে কিন্তু হবে না। দুনিয়ায় থেকেও মৃ’ত হয়ে থাকার শাস্তি পাবে বেঈমানরা। র’ক্ত’কে আ’ঘা’ত করা হলে বুকে এক ধরনের ব্যাথা তৈরি হয়,চিনচিনে সেই ব্যাথা। ঝুমঝুমি খেয়াল করছে সে হঠাৎই করেই ইমোশনাল হয়ে যাচ্ছে। যতই হোক লোকটি তার বড় চাচা। ছোট থেকে বাবার মতোই ভালোবেসে শেষে কিনা প্রতারণা করার জন্য মৃ’ত্যু’র থেকেও ভ’য়া’ব’হ শাস্তিটা দিয়েছে বলে নিজের মনে অপরাধবোধ কাজ করছে। দু-চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। চাচার একটি হাত বুকে জড়িয়ে ক্রন্দন মিশ্রিত কণ্ঠে বলল, ক্ষমা করে দাও বড় বাবা। আমি চাইনি তোমায় এভাবে কষ্ট দিতে কিন্তু আমি নিরূপায়। তুমি বা তোমরা যা আমাদের সাথে করেছ তারজন্য তোমাদের আমি ক্ষমা করতে পারি না। তবে তোমার শাস্তিটা আমি কমিয়ে দিচ্ছি। তিলে-তিলে ম’রা’র চেয়ে একেবারেই তোমায় মে’রে দিচ্ছি। তোমার কষ্ট আমার সহ্য হচ্ছে না বড় বাবা।

ঝুমঝুমি ব্যাগ থেকে বড় ছু’রি’টা বের করল। পরপর তিনবার বসালো বু’কে। ইহকালের মায়া ত্যাগ করে পরকালে ভ্রমণ করল ঝুমঝুমির বড় চাচা। সস্তির এক নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে উঠল, ভালো থেকো বড় বাবা। তোমার কষ্ট আমার সহ্য হবে না যতই হোক তোমার হাত ধরে ঘুরে বেড়িয়েছি। কাঁধে ছড়িয়ে ঘুরিয়েছ। তুমি ভুলে গেলেও আমি ভুলব না তাই তোমাকে মৃ’ত্যু দিলাম,সহজ মৃ’ত্যু। কিন্তু তুমি যা করেছ আমাদের সাথে ভয়াবহ মৃ’ত্যু দেওয়ার ইচ্ছে থাকলেও র’ক্তে’র টানের কারণে পারিনি।

ঝুমঝুমি দ্রুত উঠে দাঁড়িয়ে উল্টো পথে হাঁটা দিল। একটু পরেই নামাজ শেষ করে লোকজন এদিকে আসবে। তখনই শুরু হবে হট্টগোল।

গলির ডানদিকে খালি জায়গা রয়েছে ওদিকটায় বাচ্চাদের পার্ক। ঝুমঝুমি বেঞ্চে বসে চিন্তায় মগ্ন তখন। দুহাতের উপর মুখের ভর রেখে ভাবছে ঠিক তখনি স্পষ্ট ভরাট কণ্ঠ কানে বাজলো,বোরখার আড়ালে থেকেও আমার চোখের আড়ালে যেতে পারলি না ঝুমঝুমি। তোর শরীরের ঘ্রাণেই আমি তোকে ঠিক চিনে নিবো।

কথাগুলো খুব দ্রুত পৌঁছালো ঝুমঝুমির কানে। মস্তিষ্ক গেঁথে নিলো খুব তাড়াতাড়ি। চোখ তুলে তাকিয়ে সামনের মানুষটিকে দেখে ভয়ে চুপসে গেল। কাঁপা গলায় বলল, মেঘ ভাই!

একগাল হাসলো মেঘ। ঝুমঝুমির পাশে বসে ফিচেল হেসে বলে উঠল, আমি জানতাম তুই সাহসী। কিন্তু তোর যে এত সাহস আমার জানা ছিল না। তিন-তিনটা খু’ন করে ফেললি? মানলাম তোর চাচাতো বোনের জামাই তোর কেউ হয় না,ও’কে খু’ন করলে তোর হাত পা কাঁপবে না। তাছাড়া ও ডিজার্ভ করে মৃ’ত্যু। কিন্তু আমি ভাবছি নিজের আপন ফুপু,চাচাকে খু’ন করার সময় তোর হাত কাঁপেনি? খুব নিষ্ঠুর তুই ঝুমঝুমি।

অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল ঝুমঝুমি। মেঘ কীভাবে জানলো এসব? তখনই ঝুমঝুমিকে অবাক করে দিয়ে কুঠিল হেসে বলল মেঘ, ঝিনুক তাহলে আমার মেয়ে তাই না?

##চলবে,,

#প্রেয়সীর_শব্দপ্রেম (দ্বিতীয় খন্ড)
#ফারজানা_মুমু
[১০]

পুরো দুনিয়া থেমে গেল। অসাড় হয়ে উঠল শরীর। নিষিদ্ধ পুরুষ জীবনের কলঙ্ক। ফুলের চরিত্রে দাগ বসানো নিষিদ্ধ পুরষের কর্ম। হাত-পা কাঁপতে শুরু করল ঝুমঝুমির। মাথায় ভোঁ-ভোঁ শব্দ হতে শুরু করল। প্রতিবাদী হয়ে বলে উঠল,
-” ঝিনুক আমার মেয়ে।

মেঘের ঠোঁটে হাসি ফুটলো। বিশ্রী এক হাসি। ঝুমঝুমির শরীরে কাঁ’টা’র মত বিঁ’ধ’লো সেই জগণ্য হাসি। বাতাস বইছে সাঁই-সাঁই করে। বাতাসের ছন্দের সাথে তাল মিলিয়েছে আধো-আলো ছায়া বৃহত্তম ধরণী জুড়ে। মেঘ ঝুমঝুমির ঘনিষ্ট হয়ে বলল, ঝিনুক কার মেয়ে আমি জানি তোকে মাইকিং করে বলতে হবে না। শোন আগেও বলেছি এখনও বলছি আমাদের দুজনের মধ্যে আমি তৃতীয় ব্যাক্তি মেনে নিবো না। হয় মেয়েটাকে মে’রে ফেল নয়তো অনাথ আশ্রমে দিয়ে দে। আমার শুধু তোকে চাই। আমি মানুষটা খুব খারাপ আমার ভালোবাসাও খারাপ কিন্তু তোর প্রতি আমার ভালোবাসা কিঞ্চিৎ পরিমাণ খারাপ নয়। তোকে আমি ভালোবাসি। ভালোবাসা শুধু দুটো মনের নয় দুটো শরীরের হওয়াও ইম্পর্টেন্ট। আগে শরীর ভালোবাসবে পরে না হয় হৃদয়ের মিলন ঘটবে।
-” ঝিনুক আমার মেয়ে মেঘ ভাই। আপনার সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি। পাঁচ বছর আগেও আমি আমার মেয়েকে মা’র’তে চাইনি এখন তো নই ই। ঝিনুক আমার অস্তিত্ব, আমার যত্নে করা মোমের পুতুল। ওর গায়ে কিঞ্চিৎ পরিমাণ আঁচ আমি লাগতে দিবো না। যে বা যারা আমার মেয়ের ক্ষতি চাইবে আমি তাদের খু’ন করব। আমার ফুপু,বড় বাবাকে খু’ন করতে যেখানে আমার হাত কাঁপেনি সেখানে আপনার মত শয়তানকে মা’র’তে আমার হাত কাঁপবে না বরং আপনার মৃ’ত্যু আমার মনে তৈরি করা আ’ঘা’তে’র ওষুধ হবে। আমি আপনায় খুব কঠিন মৃ’ত্যু দিবো।

কথাগুলো বলে ঝুমঝুমি মেঘকে ধাক্কা দিলো। আচমকা আ’ক্র’ম’ণে মেঘ তাল সামলাতে না পেরে রাস্তায় পরে গেল। ঝুমঝুমি তাড়াতাড়ি করে ব্যাগ থেকে চা’কু’টা বের করল। মেঘ তখন উঠে দাঁড়িয়েছে। ঝুমঝুমি যখনই আ’ঘা’ত করতে যাবে মেঘ ধরে ফেলল। হেচকা টানে উল্টো ঘুরে ঝুমঝুমির কাঁধে নাক ডুবলো। ঝুমঝুমি ঘৃণায় সরে আসতে গিয়েও পারলো না। শক্ত করে জাপ্টে ধরেছে মেঘ। কানের লতিতে ঠোঁট ডুবিয়ে বলল, আমায় দূর্বল ভাবিস না ঝুমঝুমি। আমি বিড়াল নই,আমি বাঘ। আমার থাবা মিস যায় না। যখন তোর উপর সত্যি সত্যিই থাবা বসাবো না তুই বাঁ’চ’তে পারবি না। তোকে আমি প্রা’ণে মা’র’বো না। তোকে মা’র’বো আমার ভালোবাসার অত্যাচার দিয়ে। আমি মানুষটা সহজ ভালোবাসায় বিশ্বাসী নই আমার ভালোবাসা আগুনের মত উত্তপ্ত, ছু’রির’ মত ধারালো,পাথরের মত শক্ত। ভালো হতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুই সুযোগ দিসনি। তাই আমি খারাপের থেকে খারাপ হলাম। আমি তোর খারাপ ভাগ্য মেনে নে।

ছু’রি’টা কেরে নিয়ে ঝুমঝুমিকে ছেড়ে দিল মেঘ। ঝুমঝুমি তখন নিজের কান নিকাব দিয়ে মুছতে ব্যাস্ত। মেঘ তখন ঝুমঝুমির কাঁধে মাথা রেখে দুহাত চেপে ধরে কঠিন কণ্ঠে আবারও বলল,আমার হিং’স্র’তা দেখে তুই ভয় পাবি খুব ভয়। খু’ন করেছিস তিনটা দূর্বল প্রাণী। ওরা মেঘ নয়,মেঘকে খু’ন করা তোর মত সামান্য মেয়ের কাজ না। বরং অত্যাচারিত না হয়ে আমায় উজাড় করে ভালোবাসা দে। যত্নে রাখব, এমন যত্নে রাখব তুই কল্পনা করতে পারবি না।

রাস্তায় এক দলা থু থু ফেলল ঝুমঝুমি। নিজের সর্বশক্তি দিয়ে ছাড়তে পারছে না নিজেকে। কী করবে না করবে ভাবতে-ভাবতে ঘৃণিত এক কাজ করে বসল। মুখে থু থু জমিয়ে ওটা ছুঁড়ে দিল মেঘের মুখে। ক্ষিপ্ত হয়ে মেঘ ঝুমঝুমিকে জোরে ধাক্কা দিলো। বড় বিদ্যুৎ পিলারের সাথে ধা’ক্কা খেয়ে মাথার একপাশে প্রচণ্ড রকমের আ’ঘা’ত পেল ঝুমঝুমি। র’ক্ত ঝরছে কপাল বেয়ে। মেঘ যতক্ষণে বুঝতে পারলো ততক্ষণে দেরি হয়ে পড়ল। অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছে সে। ছুটে আসলো ঝুমঝুমির কাছে। মাথায় হাত রাখতে যাবে চিৎকার করে উঠল ঝুমঝুমি। ওর চিৎকার শুনে আশেপাশের অনেক লোক দৌড়াদৌড়ি শুরু করে এদিকে আসতে দেখে মেঘ দৌড়ে পালিয়ে যায়। লোকগুলো এতক্ষণ ঝুমঝুমির চাচার লা’শে’র পাশে ছিল। পুলিশকে খবর পাঠানো হয়েছে। অনেকক্ষণ ওখানে দাঁড়িয়ে থেকে যার যার নিজের গন্তব্য হাঁটার সময় মেয়েদের চিৎকার শুনে আরো লোকজন নিয়ে এদিকে আসে। দেখে মাথায় হাত চেপে এক মেয়ে বসে আছে। প্রশ্ন করে এলাকাবাসী, মা কি হয়েছে তোমার? মাথা ফা’ট’ল কীভাবে?

ঝুমঝুমি মেঘের কথা বলে চাইলো না। যদি নিজে ধরা পড়ে সেজন্য। কথা এড়ানোর জন্য বলে, অন্ধকারে পিছলা খেয়ে পিলারের সাথে বারি খেয়েছি আমায় একটা রিক্সা ডেকে দিবেন প্লিজ।

লোকজন হন্তদন্ত হয়ে রিক্সা ডাকে। ঝুমঝুমি তখন রুমাল চেপে রাখে মাথায়। বাসার কাছাকাছি একটা ক্লিনিক আছে ওইটায় গিয়ে ব্যান্ডেজ করে বাসায় ফিরে।

______________

আষাঢ়ের চোখমুখ ফুলে আছে। বেচারা কান্না করেছে মুখ দেখে বলে ফেলবে যে কেউ। ঝুমঝুমির মাথার পাশে এক ধ্যানে বসে আছে সে। একটুও সরানো যাচ্ছে না। ঝিনুক তো মায়ের মাথায় ব্যান্ডেজ দেখে কেঁদে-কেঁদে মুখ লাল করে এখন ঘুমাচ্ছে।

রাত দশটা, আষাঢ় বাড়ি যেতে চাচ্ছে না। ঝুমঝুমি বার কয়েক ধমক দিলো তবুও কাজ হলো না। হালিমা খালা কিছুক্ষণ পর পর লাল চা দিয়ে যাচ্ছে। আষাঢ় এখন ঐটাই খাচ্ছে আর চেয়ে আছে আহত প্রেয়সীর পানে। গম্ভীর চোখজোড়া শান্ত হয়ে দেখছে প্রেয়সীকে। বুকের ভিতরে তীব্র এক ব্যাথার দা’বা’ন’ল জ্বলছে। অসহনীয় সেই ব্যাথা। দীঘির জলের মত চোখ জোড়া ডুবুডুবু থৈ থৈ জলে। চোখ মুছে বলে উঠল,
-” তোমার কথা বাসায় বলেছি। কারোর আপত্তি নেই।

ঝুমঝুমি হাসলো। ঠাট্টাময় সেই হাসি। কণ্ঠে তীব্র ঠাট্টা নিয়েই বলল, সত্যিই নেই?

আষাঢ় চুপ করে রইল। ওর পরিবারের কেউ ঝুমঝুমিকে মানতে নারাজ। এক মেয়ের মাকে কোনো পরিবার নিজের ছেলের বউ করে আনবে না স্বাভাবিক। অনড় হয়ে বসে থেকে থমথম কণ্ঠে বলল,
-” জীবন আমার,বিয়ে আমার, সিদ্ধান্তও আমার। যার সাথে আমি ভালো থাকবো তাকেই বিয়ে করব। অন্যরা মানলে মানুক না মানলে নাই। আষাঢ় কারো পড়ুয়া করে না। আষাঢ়ের জীবনে একমাত্র বউ হওয়ার অধিকার ঝুমঝুমির, অন্য কারো নয়।

ঝুমঝুমি কিছু বলল না। বললে লাভ নেই। এই পাগল প্রেমিক আষাঢ় মানবে না। ঝুমঝুমিকে চুপ থাকতে দেখে আষাঢ় এবার একটু রেগেই বলল,
-” আমি আগামীকাল তোমায় বিয়ে করব। সকালে রেডি থাকবে। তোমাদের দেখাশোনার জন্য আমি একাই যথেষ্ট। তুমি আমাকে এবং আমার মেয়েকে সময় দিবে শুধু। সারাদিন কাজটাজ করে,চিন্তার বস্তা মাথায় নিয়ে ঘুরে দেখছো কি অবস্থা তোমার? শরীরের যত্ন নিতে ভুলে গেছ। আজকের পর সব বন্ধ। আমি হিরণকে জানিয়েছি সবাই যেন সকাল-সকাল কাজী অফিসে চলে আসে। আমরা বিয়ে করে সোজা আমার বাংলো বাড়িতে চলে যাব। আমাদের চড়ুই পাখির সংসারে আমি কর্তা,তুমি গিন্নি,ঝিনুক রাজকুমারী,হালিমা খালা বৃক্ষ রাণী।

ঝুমঝুমি হাসতে লাগলো আষাঢ়ের বোকা-বোকা কথা শুনে। হাসি থামিয়ে বলল, অনেক এগিয়ে গেছেন দেখছি।
-” আরো আগে উচিৎ ছিল এগিয়ে যাওয়া। থাক সেসব কথা। আমি যাচ্ছি সকালে আমি চলে আসবো তৈরি থেকো। ভাজুং-ভুজুং কথা শুনছি না।

আষাঢ় উঠে দাঁড়াল। ঝুমঝুমির কপালে হালকা করে হাত রাখলো। চুলে বিলি কেটে আবারও বলল, প্লিজ আমায় ফিরিয়ে দিও না। তোমার ভালোবাসার কাঙাল আমি। ভিক্ষা চাচ্ছি। জানো, আমার এই হৃদয়ে তোমার জন্য পৃথিবীর সকল ভালোবাসাময় একটি উপন্যাস গেঁথে রেখেছি। খুব যত্নে করে লিখা প্রতিটি শব্দ,বাক্য। আমি চাই না আমার উপন্যাসের শেষ পাতাটি অসমাপ্ত কিংবা বিরহে ভরা থাকুক। আমি চাই সুন্দর একটি সম্পর্কে ইতি টানুক। তোমার সূচনাতে থাকতে চাই না আমি, তোমার উপসংহারে থাকতে চাই। মৃ’ত্যু’র আগ মুহূর্তে তোমায় ভালোবেসে,তোমার ভালোবাসা পেয়ে আমি ম’র’তে চাই। ইশ মানুষ যদি ম’র’ণ’শী’ল না হতো তাহলে আমার জীবনময় তুমি নামক নিষ্ঠুর প্রেয়সীর সাথে থাকা হতো।

-” মানুষের জন্মের সাথে যদি মৃ’ত্যু শব্দটি না থাকতো তাহলে পৃথিবী হয়ে উঠত কষ্টময়। মৃ’ত্যু’র স্বাদ গ্রহণ করতে হবে বলেই বেঁচে থাকার প্রবল ইচ্ছা মানুষের। যদি মৃ’ত্যু না থাকতো তাহলে মানুষেরা হাত জোড় করে নিজেদের মৃ’ত্যু চাইতো। দেখেন না আজকাল আ’ত্ম’হ’ত্যা’র প্রবণতা কতখানি বেড়েছে?

আষাঢ় গাল ফোলালো। কত সুন্দর করে সে বেঁচে থাকার ইচ্ছে কামনা করছে আর এই মেয়ে তার সকল ইচ্ছেয় পানি ঢেলে দিলো। ঠোঁট উল্টিয়ে বলল, বাদ দাও সেসব কথা। সকালে আসছি আমি। ভালো থেকো আমার হৃদয়ের তেজপাতা রাণী।

আষাঢ় চলে যাওয়ার পর হালিমা খালা দরজা বন্ধ করে রুমে এসে শুয়ে পড়ল। ঝুমঝুমির চোখে ঘুম নেই। মন হাঁসফাঁস করছে ওর। কিছুতেই শান্তি মিলছে না।অজানা ভয়, অস্বস্তি কাজ করছে মনে। বাতাসে আসা অক্সিজেন বি’ষে’র মত লাগছে। দম বন্ধ হবার উপক্রম। ওর ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জানান দিচ্ছে খারাপ কিছু হতে চলেছে। খুবই খারাপ ঘটতে চলেছে। আচ্ছা আষাঢ়ের বাবা তো ওদের সম্পর্ক মানতে নারাজ এখন যদি জেনে যায় ঝুমঝুমি খু’নি তখন কি আষাঢ় মেনে নিবে ওকে? যদি মানে তখনই বা ও’কে বাঁচাতে পারবে? ওর বাবা যদি পাশে না দাঁড়ায় আষাঢ় একা কি পারবে ওকে বাঁচাতে নাকি তিন-তিনটা খু’নে’র জন্য ওর ফাঁ*সি হবে। যদিও এখনো বাংলাদেশে মেয়েদের ফাঁ’সি’র আইন কার্যকর হয়নি তাহলে কি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে? যন্ত্রণার মধ্যে যন্ত্রণা বাসা বাঁধলো মাথায়। পাশে তাকিয়ে দেখলো হালিমা খালা ঝিনুককে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়েছে। ধীরে-ধীরে উঠে দাঁড়াল। ড্রইং রুমের কাছে গিয়ে সোফায় বসে পড়ল। দুহাত মাথার নিচে রেখে সিলিং এ তাকিয়ে রইল কিয়ৎক্ষণ। পাশ ফিরে রিমোট হাতে নিয়ে টিভি অন করতে দেখল কার্টুনের চ্যানেল সামনে। ভালো লাগছে না বলে জিরো তে চাপ দিয়ে একেরপর এক চ্যানেল পরিবর্তন করে একটি চ্যানেলে এসেই কেঁপে উঠল। ওর পুরো শরীর কাঁপছে ভয়ে। আচ্ছা ও তো জানতোই একদিন না একদিন ধরা পড়বে তাহলে আজ এত ভয় হচ্ছে কেন? আষাঢ় কে হারানোর ভয়? উত্তর আসলো হ্যাঁ। আগামীকাল সুন্দর একটি সম্পর্ক শুরু হওয়ার আগেই শেষ হতে চলল। বিপদস্ত চেহারায় টিভিতে মনযোগ দিল ঠিক তখনই দরজায় করাঘাত পড়ল। ঝুমঝুমি ভয় পেলো। কে এসেছে? পুলিশ? না মেঘ?

##চলবে,,

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ