#প্রেম_প্রার্থনা
#লেখনীতে_নূরজাহান_আক্তার_আলো
[২২]
___’যার যেখানে শান্তি মেলে তার সেখানেই মিলুক ঠাঁই।’___
ব্যস্ততায় ডুবে উক্ত মেসেজেটি দেখে রুদ্র নিজের কাজে মন দিলো। প্রিয়সীর মেসেজ দেখে পাল্টা মেসেজ করার সময়ও তার নেই। তবে মনের মধ্যে দোল খেলে গেল টুকরো টুকরো প্রশান্তির ভেলা। আর প্রশান্তির কারণ অতি প্রিয় মানুষটার মুখশ্রী, আইসক্রিম লেগে থাকা গোলাপি ঠোঁটের মিষ্টি হাসি।
মনে মনে খুশি হলেও সে থমথমে মুখে ভ্রুঁজোড়া কুঁচকে বসে রইল। তার মেজাজ বিগড়ে আছে সকাল থেকেই। নির্ধারিত সংখ্যায় ব্যলোট পেপার ছাপানোর কথা অথচ সেই অনুযায়ী কাজ হয় নি। বরং তার কাজ স্থগিত রেখে বিপক্ষদলের এক ছেলে সেখানে হাঙ্গামা বাঁধিয়ে একজনের হাত-পা ভেঙেছে।
আর প্রচার করেছে সব দোষ রুদ্রর ছেলেদের ;তারাই নাকি এসব করেছে। অথচ রুদ্রর ছেলেরা কয়েকদিন ধরে তাদের
যে যার কাজে ব্যস্ত আর বেশিরভাগ প্রচারের কাজে বাইরে বাইরে ঘুরছে, দম ফেলানোর জো নেই তাদের। রুদ্র নিজের মিটিং শেষ করে বের হতেই এ খবর তার কানেও পৌঁছেছে। এমনকি এটাও শুনেছে দুটো ছেলে তার বাসার গলির কাছে
অনেকক্ষণ ধরে নজর রাখছে।রুদ্র ছেলে দুটোর উপর তীক্ষ্ণ
দৃষ্টি রাখতে বলে ফোনটা পকেটে পুরে রাস্তা পার হয়ে চায়ের দোকানে এসে বসলো, গলা ছেড়ে বলল কড়া করে চা দিতে, মুন্সি কাকা গালভর্তি হেসে মাথা নাড়ালেন অর্থাৎ এইটুকুন
দাঁড়াও বাপজান এই এক্ষুণি দিচ্ছি। মুন্সি কাকা বোবা অথচ হাসিটা ভুবন ভোলানো, শ্যামবর্ণ গাত্রের মানুষটা খুবই সরল গোছের। জন্ম থেকেই বোবা বিধায় বিয়ে-থা করে নি। উনার বিধবা মাকে আর ছোট ভাইকে নিয়ে উনার সংসার।বর্তমানে
কোনো কর্মই ভাগ্যে জুটি নি বিধায় সামান্য পুঁজি দিয়ে এই
চায়ের দোকান খুলে বসেছেন, বেচা বিক্রি ভালোই হয়, এতে
খাওয়া পরার খরচা দোকান থেকেই মিটাতে পারেন। সমস্যা হলে রুদ্র আছে, আজ অবধি অনেকবার রুদ্র তাকে সাহায্য করেছে কখনো সরাসরি কখনো বা আড়ালে থেকে। এজন্য ছেলের বয়সী রুদ্রকে উনি খুবই ভালোওবাসেন। পরিবারের
হাল চাল জানতে চেয়ে রুদ্র সামনে পেতে থাকা বেঞ্চে বসতে না বসতেই কাফি গাড়ি নিয়ে হাজির হলো। রুদ্রকে সালাম দিয়ে ডাক্তার কী বলেছে না বলেছে সব একে একে জানাল। স্পর্শীদের বাসায় রেখে সে এখানে এসেছে চিন্তা কারণ নেই বাসার সবাই নিরাপদে আছে। রুদ্র চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে
কাফির কথায় শুনছিল। হঠাৎ খেয়াল করে কাফি মিটিমিটি হাসছে তা দেখে রুদ্র ভ্রুঁ কুঁচকে তাকালে কাফি পকেট থেকে চারটা হজমি বের করে রুদ্রর হাতে দিলো। এটা তার ভীষণ অপছন্দের জিনিস। তবে রুদ্রর বুঝতে বাকি রইল কে তার জন্য পাঠিয়েছে। বাসার বাইরে তাও না খোঁচালে শান্তি পায় না মেয়েটা, বিচ্ছু একটা। সব সময় দুষ্টু বুদ্ধি তার মাথায় ঘুর পাক খেতেই থাকে। চা শেষ করে উঠে দাঁড়াতেই রুদ্রর ছেলে পেলে এসে হাজির হাঙ্গামা করা ছেলেটাকেও ধরে এনেছে।
রুদ্র ছেলেটার আগাগোড়া দেখে নিয়ে শান্ত স্বরেই বলল,
-‘ লাস্ট আরেকটা সুযোগ দিচ্ছি আমাকে খোঁচাতে আসিস না, আই রিপিট, আমাকে খোঁচাতে আসিস না। নয়তো আমার ছেলেরা তোকে গরম ডিম থিরাপিতে দিতে একটুও কার্পণ্যবোধ করবে না।’
-‘আমার ভাইও তোকে …! ”
উক্ত কথাটা বলার আগেই কাফি ছেলেটার বুক বরাবর এক লাথি বসিয়েছে। লাথির ভর সইতে না পেরে ছেলেটা মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। রুদ্র আঙুল দিয়ে কান ঘুচিয়ে কাফির দিকে তাকাতেই কাফি রুদ্রর মাকে ভিডিও কল দিলো। ছেলেটাকে ভিডিও কলে দেখিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিলো এই ছেলেই কী না।
যখন নিশ্চিত হয়ে নিলো তখন রুদ্রকে বলল,
-‘ মাস তিনেক আগে বড় মায়ের হ্যান্ড ব্যাগ চুরি করে ছুরি দিয়ে আঘাত করে পালিয়েছিল এই ছেলেটাই। এজন্যই বলি শালাকে এত চেনা চেনা লাগে কেন!সেদিন ভিড়ের মধ্যে এত খুঁজেও পাই নি। আজ হাতে পেয়েছি একে তো জন্মের শিক্ষা দিতেই হয়।’
-‘তুমি সিওর?’
-‘জি স্যার।’
-‘এক কাজ করো এর খাতির দারি পরে কোরো এখন চলো কাজ আছে।’
-‘ওকে স্যার।’
তারপর ছেলেটাকে শাল্টুর কাছে রেখে ওরা বেরিয়ে গেল।
জরুরি কাজগুলো সেরে নাহয় ছেলেটার আদর যত্ন করবে।
স্পেশাল আদরে তাড়াহুড়ো করতে নেই এতে আদর যত্নের ত্রুটি থেকে যায়। ওদিকে আরেকটা গরম খবরে তোলপাড় মিডিয়া জগৎ। রুদাশার বাবার নামেও কেস ফাইল হয়েছে,
পালক পিতা মাতাকে খুনের অপরাধে। রুদ্রনী শেখ নিজেই উপযুক্ত প্রমাণ নিয়ে নিজের বাবা- মায়ের খুনের অপরাধীর শাস্তি পেতে পুলিশের দ্বারে হাজির হয়েছে। উপযুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে এ্যারেন্ট ওয়েন্ট নিয়ে পুলিশ গ্রেফতার করতে গিয়ে দেখে উনি পলাতক। রুদ্রাণীর বাবা মায়ের বিয়ের বিশ বছর পরেও কোনো সন্তান হয় নি। পরে তিন বছর পর পর তিনটে সন্তান দত্তক নিয়েছিলেন। সবার বড় রুদাশার বাবা, তারপর রুদ্রর ছোটো মামা, এবং সর্বশেষ রুদ্রের মা। কিন্তু রুদাশার বাবা বাকি ভাই বোনদের কখনোই দেখতে পারতেন না। কেন জানি সর্বদা খারাপ ব্যবহার করে এসেছে। ধীরে ধীরে সবাই যখন বড় হলেন বুঝতে শিখলেন তখন নিজের বাবাকেদেখে
তিন ভাইবোন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।
বুঝিয়েও কাজ হলো না। রুদ্রাণীও জেদ ধরে ওর পড়াশোনা শেষ করে তুখড় রাজনীতিবিদ হয়ে গেল।সময়ের পালাক্রমে
তিনভাই ভিন্ন ভিন্ন দলের হওয়াতে তিক্ততা বাড়তেই থাকল,
কথা কাটাকাটি, ফ্যাসাদ, পরিবারের সবার সঙ্গে সবার দুরত্ব বৃদ্ধি হলো। এভাবেই দিনের অতিবাহিত হতে হতে একদিন
বাসায় এসে দেখা গেল, তাদের বাবা মাকে কে বা কারা যেন
মেরে ফেলেছে। গলা, হাত ও পায়ের শিরা কাটার পরেও খুব কষ্ট দিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরেছে। এই কাজটা কে বা কারা করেছে এতদিন ধরা সম্ভব হয় নি। কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বিগত পরশু এক পার্সেল এসেছিল রুদ্রাণীর কাছে, সেখানে ছিল খুনের বিরবণ এবং উপযুক্ত প্রমাণ।
________________________________________________
বন্ধ রুমের এককোণে গুঁটিশুঁটি হয়ে বসে আছে রুদাশা। ওর চোখের কোণা অশ্রুতে ভেজা। দুই হাঁটুতে মুখ গুঁজে এখনো কেঁদে যাচ্ছে সে। ছাব্বিশ বছর বয়সে কখনো খাওয়ার জন্য কাঁদে নি চাওয়ার আগে খাবার সামনে চলে এসেছে। এতেও ভীষণ বিরক্ত হতো, বিরক্তের চোটে কতবার খাবার ছুঁড়েছে তার ইয়াত্তা নেই।অথচ এখন প্রতি বেলায় পেটপুরে খাওয়ার জন্য কাঁদতে হয়। কাবার্ড ভর্তি অসংখ্য জামা কাপড় থাকা সত্ত্বেও এতদিন ধরে এক কাপড়ে আছে।নিজের ঘামের গন্ধে নিজের কাছে অস্বত্তি লাগছে। শখের চুলে চিরুনি লাগায় নি কয়েকদিন যাবত। নরম তুলতুলে বিছানা ছাড়া ঘুম আসে না অথচ এখন ঘুমাচ্ছে মেঝেতে শক্ত মাদুর পেতে। এভাবে কি বাঁচা যায়? রোজ একবার হলেও শিহাব খাবার দিতে আসে কিন্তু আজ আসে নি।আর না এ রুমে আছে শুকনো খাবার!
আজ সারাদিন ধরে শিহাবের অপেক্ষা করছে, কারণ শিহাব এলেই সে পেটপুরে খেতে পারবে। এমন দিনও দেখার বাকি ছিল অথচ ওই মানুষটাকে প্রচন্ড রকমের ঘৃণা করে, প্রচন্ড ঘৃণা! ভাগ্যের পরিহাস আর পরিস্থিতি মোতাবের এখন ওই ঘৃণিত মানুষটার জন্যই অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এর জন্য ওই রুদ্র দায়ী! কতদিন এভাবে আঁটকে রাখবে তাকে? কতদিন?
একদিন তাকে মুক্তি দিতে হবে, তখন কি করবে রুদ্র? তখন পারবে তো তার বাচ্চা বউকে সামলাতে, সর্বদা চোখে চোখে
রাখতে ? মোদ্দাকথা, তার হাত থেকে বাঁচাতে? এসব নানান কথা ভেবে রুদাশা যখন কাঁদতে মগ্ন তখন কেউ দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করল। মাথা তুলে দেখে শিহাব দাঁড়িয়ে আছে
তবে নিত্যদিনের মতো মুখে হাসি নেই। রুগ্ন মুখ, পরনে সাদা কালো মিশেলের টিশার্ট আর জিন্স। শিহাব ঘাড় ঘুরিয়ে এক বার রুদাশার দিকে তাকিয়ে প্যাকেটগুলো মেঝেতে রাখল।
তারপর আশেপাশে দৃষ্টি বুলিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিজে বলল,
-‘মাছ ভাত এনেছি খেয়ে নিন। আর আগামীকাল আসতে না পারলে শুকনো খাবার এনেছি ওগুলো খেয়ে নিয়েন।এখানে দু’টো ড্রেস আছে চাইলে পরতে পারেন।’
-‘পৃথিবীর নিকৃষ্টতম পাপীকেও বোধহয় সারাদিনে একবেলা খেতে দেওয়া হয়, পরনের পোশাক দেওয়া হয়, আপনারা কী করছেন হ্যাঁ? এ কেমন ধারার সাজা?’
-‘বাড়তি কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। শুধু এইটুকুই জেনে রাখুন যতদিন বেঁচে থাকবেন এভাবেই রুমবন্দী হয়ে থাকতে হবে আপনাকে।’
-‘সামান্য একটা অপরাধে এত কঠিন সাজা? আমি মানি না এই শাস্তি। আমার বাবাকে খবর দিন আমি আবার আপিল করাবো। আপনারা যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন না, পাওয়ার আমাদের হাতেও আছে।’
-‘গতরাত থেকে আপনার বাবাও পলাতক। উনার বিরুদ্ধে কেস ফাইল করা হয়েছে, পুলিশ উনাকে হন্ন হয়ে খুঁজছে।’
-‘ কেস ফাইল? কে করেছে? কার এত বুকের পাঁটা?’
-‘রুদ্রাণী শেখ উরুপে রুদ্রের মা, আপনার আপন ফুপি।’
-‘কেন? কি করেছে আমার বাবা?’
-‘উনি উনার বাবা-মাকে পরিকল্পনা মাফিক মেরেছে। রুদ্রাণী শেখের জাহির করা প্রমাণের ভিত্তিতে এ্যারেন্ট ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছে। পুলিশ হন্ন হয়ে খুঁজছে উনাকে। সোশ্যাল মিডিয়াসহ তোড়পাড় এই একটা নিউজেই। রাজনীতির পদ থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে আপনার শ্রদ্বীয় পিতৃদেবকে।’
এ কথা শুনে রুদাশা হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল। কি হচ্ছে কী এসব! রুদ্র আর তার মা হঠাৎ ওদের পেছনে লাগল কেন? কোন স্বার্থে? সম্পত্তির নয়তো? ওদের এত সম্পত্তিতে হচ্ছে না? রুদাশাকে ভাবনায় বিভোর দেখে শিহাব পূর্বের মতোই রুমে তালাবন্ধ করে স্থান ত্যাগ করলো। চৈতন্য ফিরে রুদাশা গলা ফাটিয়ে ডাকলেও ডাক শুনল না। শুনবে কেন?যতটুকু
বলার বলে দিয়েছে এ নিয়ে আর একটা বাড়তি কথা বলতে পারবে না সে। বাপ বেপি শয়তানের শয়তান এদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া দরকার।
________________________________________________
রাত্রি দশটা! বাসার প্রতিটা সদস্য টিভির সামনে বসে আছে।
টিভিতে চলছে দশটার সংবাদ। রুদাশার বাবার সন্ধান মিলে নি তবে হন্ন হয়ে খোঁজ চলছে।বড়রা গম্ভীর মুখে বসে টিভির দিকে তাকিয়ে আছে।স্পর্শী এখানে ভালো লাগছে না বিধায় হাঁটতে হাঁটতে রান্নাঘরে এসেছে।এদিক ওদিক তাকিয়ে কিছু পেলো না দেখে একমুঠো কিসমিশ নিয়ে মুখে পুরে চিবাচ্ছে।
হঠাৎ কিছু ভেবে দুই গ্লাস লেবুর শরবত বানিয়ে ফ্রিজে রেখে হালকা নাস্তা সাজিয়ে নিলো। মিনিট পাঁচেক আগে বড় বাবা রুদ্রকে ফোন করেছিল তখন জানা গেছে তার ফিরতে আর দশ মিনিট সময় লাগবে। ক্লান্ত পরিশ্রান্ত শরীরে বাসায় ফিরে ঠান্ডা ঠান্ডা শরবত পেলে নিশ্চয়ই খুশি হবে। তাছাড়া রুদ্রকে খুশি করার টোটকাও দাদীমা কানে কানে বলে দিয়েছে। ইশ! এই বুড়ির মুখে কিচ্ছু আঁটকায় না। স্পর্শী যখন এসব ভেবে মিটিমিটি হাসছিল তখন গাড়ির হর্ণের শব্দ পাওয়া গেল।ওই
তো এতক্ষণে মহারাজের আসার সময় হয়েছে। সেই সকালে বেরিয়ে কেবল ফিরছে। সারাদিনের কাজের ভিড়ে হয়তোবা ভুলে বসেছে সে বর্তমানে বিবাহিত, তার একটা বউ আছে।
রুদ্রকে বকতে বকতে স্পর্শী রান্নাঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে মোটা থামের পেছনে লুকালো। একবার মাথা বের করে উঁকি দিয়ে দেখে নিলো কাফি পেছনে আর রুদ্র সামনে দু’জনেই কথা বলতে বলতে এগিয়ে আসছে। তাদের পদধ্বনি নিকটে আসতেই সে উচ্চশব্দে চেঁচিয়ে ভাউউউ! করে উঠল। ওদের দু’জনের কেউ চমকানো তো বহুদূর একটু ভড়কালোও না।
এত সুন্দর একটা পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে দেখে ঠোঁট উল্টো কিছু বলার আগে কাফি বলল,
-‘আরে রে রে আপু কাঁদছো নাকি তুমি হ্যাঁ? আমি তো মনে মনে ভয় পেয়েছি? রাতের বেলা এভাবে কেউ ভয় দেখায়? আর একটু হলেই আমি পটল তুলতাম।’
-‘মনে মনে ভয় পেয়েছেন? মনে মনে কেমনে ভয় পায়?’
-‘মনের ভয়ই বড় ভয় তাই মনে মনে ভয় পেয়েছি এই আর কি।’
-‘ওহ আচ্ছা।’
একথা বলে কাফি ঠোঁট টিপে হাসতে হাসতে চলে গেল। রুদ্র স্পর্শীর মাথা থেকে পা অবধি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে পরখ করে নাক মুখ কুঁচকালো। তারপর একগ্লাস ঠান্ডা পানি রুমে দিতে বলে সে স্থান ত্যাগ করলো।রুদ্রর কথামতো স্পর্শী হেলেদুলে তার বানানো একগ্লাস শরবত কাফিকে দিয়ে আরেক গ্লাস নিয়ে গেল রুদ্রর রুমে। রুদ্র রুমে আসে নি ড্রয়িংরুমে সবার সঙ্গে কথা বলছে। স্পর্শী গ্লাস রেখে ঘুরতেই কারো পুরুষালি শক্ত বুকের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে কারো বাহুডোরে আঁটকা পড়ল। সে দৃষ্টি তুলে কিছু বলার আগেই রুদ্র বলল,
-‘আপনি নাকি ছোট্ট একটা রুদ্র চান? ঘটনা কি সত্য? ‘
-‘ক কে কে বলেছে? ‘
-‘আমার মন।’
-‘আপনার মনের খেয়ে কাজ নেই ভুলভাল কথা বলে।’
-‘মন নাহয় ভুলভাল কথা বলে কিন্তু নিজের চোখে যা দেখেছি সেটা কীভাবে ভুল হতে পারে?’
-‘কি দেখেছেন?’
রুদ্র আর জবাব দিলো না স্পর্শীর দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসতে লাগল। ওর হাসি দেখে স্পর্শীর গাল দুটো লাল হয়ে উঠল। নিঃশ্বাস ভারি হয়ে উঠল। নিজের বেয়ারা অনুভূতিকে লুকিয়ে রাখতে নিজেকে মুক্ত করার আপ্রাণ চেষ্টাও করতে থাকল। তার লজ্জামাখা রাঙা মুখ দেখে রুদ্র উচ্চশব্দে হেসে উঠল। অনেকদিন পর রুদ্রকে এভাবে হাসতে দেখে স্পর্শীর ঠোঁটে হাসি ফুটলো। তখন রুদ্র তার হাতের বাঁধন শক্ত করে স্পর্শীর কানে কানে বলল,
-‘আমার রুমের দরজা খোলা থাকবে। রাতের খাবার খেয়ে
ভদ্রমেয়ের মতো সোজা এই রুমে চলে আসবেন। লজ্জায় পড়ি মরি করে যেন অন্য রুমে যাওয়া নাহয়।’
To be continue………..!!