#প্রেম_প্রার্থনা
#লেখনীতে_নূরজাহান_আক্তার_আলো
[১০]
ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে দশটা। স্পর্শী কানে ফোন ধরে চুপ বসে আছে। রুদ্র ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে খেলা দেখছে। সঙ্গে আছে তার বাধ্য সহকারী কাফি। দু’জনের হাতে কফির মগ। টিভি দেখার ফাঁকে ফাঁকে চলছে তাদের আলোচনা। স্পর্শী ফোনে কথা বলছে দেখে রুদ্র ইচ্ছে করেই দরজা বন্ধ করে এসেছে। যাতে তার কথা ড্রয়িংরুম অবধি না পৌঁছায়।
স্পর্শী মাথা নিচু করে থাকায় তার অশ্রু গড়িয়ে যাচ্ছে মেদুর গাল বেয়ে। এই প্রথম ওর ভীষণ আফসোস হচ্ছে মেয়ে হয়ে জন্মেছে বলে। মেয়ে না হলে আজ এমন বি/শ্রী পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না। আর না অসহায় হয়ে মনের বিরুদ্ধে কবুল বলতে হতো।ওদিকে ফোন কলে মরিয়ম বেগম যা বলছে সে নিশ্চুপ থেকে শুনেই যাচ্ছে। জবাবে হ্যাঁ না কিছুই বলছে না।যেন শুনে যাওয়া তার কাম্য। মেয়ের মনের গতিবিধি বুঝেও
মরিয়ম বেগম কান্না আঁটকে মেয়েকে যথাসাধ্য বোঝানোর চেষ্টা করছেন। ইঙ্গিতে করে বলছেন রুদ্র এখন তার স্বামী,
সে যেন রুদ্রর কথা মতো চলে, পেছনের স্মৃতি ভুলে রুদ্রকে স্বামী হিসেবে গ্রহন করে, হাসিমুখে মেনে নেয়। মেনে নেওয়া মানে কী ইঙ্গিত করছে সে তাও বুঝছে। তারপর দাদীমা, বড় মা’সহ বাসার সকলে তার সঙ্গে কথা বলল। তবে সবার মুখে একটাই কথা, ‘মেনে নাও।’ অথচ সে কান্না সামলে মুখ ফুটে
কাউকে বলতে পারল না,’ প্লিজ! আমাকে একটু সময় দাও। নিজেকে একটু সামলে নিতে দাও। যাকে এতদিন ভাই বলে জেনেছি তাকে স্বামী রুপে গ্রহন করা সহজ হচ্ছে না আমার পক্ষে, পারছিও না। তার পাশে শুলে অস্বস্ত্বির কাঁ/টা শরীরে ফুটছে। দম বন্ধ হয়ে আসছে। স্বামী নাকি অর্ধাঙ্গ(শরীরের অর্ধেক অংশ)। সে তার স্ত্রীর দেহ ও মনের দাবীদার। অথচ এসব জেনে বুঝেও স্বাভাবিক হতে পারছি না। মোদ্দাকথা,
বিয়ের মাত্র কয়েকটা দিন হয়েছে কিসের তাড়াহুড়ো? আমি তো তো পালিয়ে যাচ্ছি না।’
উনাদের শুনে কিছু বলার ইচ্ছেটা ম/রে গেছে। ভীষণ কান্না পাচ্ছে। মাত্র কয়েকদিনে কাছের মানুষরাও বদলে গেছে।
সবাইকে কেমন অচেনা মনে হচ্ছে। মনের কথা মনে চেপে,
স্পর্শী সবার সঙ্গে কথা বলে কল কেটে জানালা পাশে গিয়ে দাঁড়াল। অভিমান নিয়ে তাকিয়ে রইল দুর আকাশের পূর্ণিমা চাঁদের দিকে। কি সুন্দর তার রুপ! সৃষ্টিকর্তা নিজে বানিয়েছে চাঁদকে আর দু’হাত ভরে ঢেলে দিয়েছেন এমন দৃষ্টিজুড়ানো সৌন্দর্য। আকাশের চিরসঙ্গী হিসেবে আছে তারা এবং চাঁদ। কিন্তু আকাশের কাছে কে বেশি আপন, চাঁদ নাকি তারা? সে কাকে ভাবে আপন ভাবে? চাঁদের দিকে তাকিয়ে যখন সে নিজের ভাবনায় মগ্ন তখন রুদ্র রুমে প্রবেশ করল। কাফি কাজ সেরে চলে গেছে। রুমে ঢুকে রুম অন্ধকার দেখেও সে লাইট জ্বালালো না বরং হেঁটে স্পর্শীর কাছে গিয়ে দাঁড়াল। কিন্তু স্পর্শী তাকিয়ে দেখল না বাক্য বিনিময়ও করলো না।
তখন রুদ্র আকষ্মিক পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে তার কাঁধে থুতনি ঠেকালো। আচানক ঠোঁট ছোঁয়ালো গ্রীবাদেশে তাও
স্পর্শী অনড়, র্নিবাক। তার দৃষ্টি চাঁদের দিকেই নিবদ্ধ। চোখ অশ্রুবিদ্ধ। ওর এমন স্থিরতা সহ্য হলো না রুদ্রর। সে স্পর্শীর কোমর জড়িয়ে ধরে আরো কাছে টেনে নরম স্বরে বলল,
-‘মন খারাপ? বকেছে মেজো মা?’
-‘না।’
-‘তাহলে চুপ কেন?’
-‘এমনি।’
-‘ক্ষুধা লাগে নি, খাবি চল।’
-‘ইচ্ছে করছে না।’
স্পর্শীর কম্পিত কন্ঠস্বর শুনে রুদ্রর হাতের বাঁধন আলগা হলো। স্পর্শীর ছেড়ে দিয়ে অনিমেষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল স্পর্শীর মুখপানে। বোঝার চেষ্টা করলো তার মনের কথা
এবং আন্দাজও করলো কিছুটা। সেই সঙ্গে প্রয়োজন বোধ করলো আজ খোলাখুলি ভাবেই কিছু কথা বলার। নিত্যদিন এই কাহিনী ভালো লাগবে না। মনে মনে কিছু কথা গুছিয়ে বলল,
-‘ স্পষ্টভাবে আজ কিছু কথা বলি মন দিয়ে শুন। যা বলবো আগে শুনবি, বুঝবি, ভাববি তারপর জবাব দিবি।’
-‘হুম।’
-‘পূর্বের সম্পর্কের রেশ ধরে আমাকে বিচার করিস না। যদি করিসও তাহলে ফলাফল ভালো হবে না। তুই এখন আমার বউ। একজন স্বামী তার বউকে যেভাবে কাছে চায় বা পায় আমিও তোকে সেভাবেই চাই। রাইট, সেভাবেই চায় তোকে।
একচুল ছাড় নেই, পাবিও না, পাওয়ার আশাও করিস না। এর কারণ দিনের পর দিন পাশে বউ থাকা সত্ত্বেও ব্যাচেলর জীবন কাটানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমিও পূর্ণতা চাই, সাধারণভাবে বাঁচতে চাই। বিয়ে নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই তোকে না। কারণ আমি পূর্বের সম্পর্কের কাঁ/টা/কু/টি কবুল বলার সঙ্গে সঙ্গে করে ফেলেছি। এখন অবধি স্মরণও হয় নি তুই বোন ছিলি। বর্তমানে তোকে বোন ভাবাও হারাম। কারণ আমরা এখন বৈধভাবে হাজবেন্ড-ওয়াইফ। হাজবেন্ড
হিসেবে তোর কাছে গেলে এটা ভাবিসও না ভাইয়া এসেছে।
তাহলে পাপের ভাগিদার তুইও হবি সঙ্গে আমিও। সম্পর্কটা সহজভাবে ভাব দেখবি মেনে নেওয়া সহজ হবে। তোর কাছে মনে হচ্ছে এই সম্পর্কটা বোঝা কারণ তুই এখনো ভাইয়ার আসনেই রেখেছিস আমাকে। যেটা উচিত হচ্ছে না তোর।
বিয়ে যখন হয়েছেই, আমি তোর কাছে আসবোই, সেটা তুই চাইলেও আর না চাইলেও। আর যখনই কাছে আসব তখন পূর্বের কথা মাথায় আনিস না। তাহলে কোনোদিন সম্পর্কটা
সহজভাবে নিতে পারবি না। এখনকার মতোই বোঝা মনে হবে আজীবন। যেটা মঙ্গলজনক হবে না আমাদের কারোর জন্যই। তুই আমাকে নিয়ে ভাব, একবার নয় হাজারবার ভাব, তবে হাজবেন্ড হিসেবে অন্য সম্পর্কের রেশ ধরে নয়।’
রুদ্রর কথা শেষ হতেই স্পর্শী ডুকরে কেঁদে উঠলো। কান্নার দমকে কিছুক্ষণ কথা বলতে পারল না। আগ বাড়িয়ে রুদ্রও
কিছু বলল না বরং তাকে স্বাভাবিক হওয়ার সময় দিলো। কিয়ৎক্ষণ পর, সত্যি সত্যিই নিজেকে সামলে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতেই সে বলল,
-‘ যদি তোমার সঙ্গে আগে থেকেই প্রেমের সম্পর্ক থাকতো তাহলে মেনে নেওয়া অনেকটা সহজ হতো। যদি তুমি বিয়ের আগে থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরতে, কিস করতে, তাহলেও তোমার কাছে আসা নিয়ে সমস্যা থাকতো না। কাজিন লাভ নিয়ে কত গল্প হয়, নাটক হয়। নায়ককরা যেমন যেমন করে তুমি তো কখনো তেমন করো নি। সর্বদা নিজের ভাইয়ার মত
আগলে রেখেছো। আর আমিও তোমাকে নিয়ে সেসব কিছু ভাবি নি। যখন মাশুমের সঙ্গে কথা বলতাম তখন আমার ফ্রেন্ডরা বলতো, ‘রুদ্র ভাইয়ার মতো প্রিন্স থাকতে নর্দমায় কেন ডুবছিস? যেখানে রুদ্র ভাইয়ার রাজ্যেই তোর বসবাস সেখানে মাশুমের মতো ছেলেকে নিয়ে ভাবিস কেন রুচিতে?’
ওদের কথা শুনে মনে মনে তাওবা করতাম। ভুলেও ভাবতাম না এসব নিয়ে। কারণ তোমাকে আপন ভাইয়ার মতো ভাবি।
তাহলে এখন তুমিই বলো মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে সেই আমি বস্ত্রহীনভাবে কীভাবে তোমাকে কাছে আসার আহ্বাণ করি?
আমিও তো মানুষ! আমারও মন আছে, ভালো লাগা, মন্দ
লাগার ব্যাপার আছে। আমার কথাটাও তো ভাবা উচিত।’
একথা শুনে রুদ্র তাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে কপালের মাঝ বরাবর ঠোঁট ছোঁয়াল। তারপর স্পর্শীর দুই গালে হাত রেখে মিটিমিটি হেসে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ। স্পর্শী তার চোখে চোখ মিলাতে পারল না দ্রুত দৃষ্টি সরিয়ে নিলে। তখনো তার চোখ দিয়ে অঝরে অশ্রু ঝরছে।রুদ্র স্পর্শীর জল থৈথৈ করা চোখের অশ্রু মুছে বলল,
-‘আগে জড়িয়ে ধরি নি, কিস করি নি, কাজিন লাভে যা যা হয় সেসব কিছুই করিনি। কারণ তখন তুই আমার ছিলি না। একটা কথা মনে রাখবি, যে সম্পর্কে নোংরামির স্থান রয়েছে
সেই সম্পর্কের স্থায়ীত্বকাল ক্ষণকালের জন্য। পবিত্র জিনিস সবসময়ই মঙ্গলজনক। তাছাড়া আমরা জয়েন ফ্যামিলিতে বড় হয়েছি। পরিবারে সদস্য সংখ্যাও কম নয়। যদি ভুলভাল কিছু করতামও তাহলে কী তাদের নজরে পড়তো না? আর পড়লে কী সবার সঙ্গে সবার সম্পর্ক ঠিক থাকতো? নিজেকে সামলেছি বলেই তোর বাবা আমার সঙ্গে তোর বিয়ের কথা ভেবেছে। খারাপ চরিত্রের হলে এমনটা ভাবতেন তিনি?’
-‘তবুও আমার…! ‘
-‘কোনো তবুও টবুও শোনা হবে না তোমার। পূর্বের কথা ভুলে সংসারে মন দাও। নিয়ম করে আমাকে জড়িয়ে ধরবা, কিস করবা, আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাবা। এইটুকু করলেই হবে বাকিটা নাহয় আমিই বুঝে নিবো। এখন চল, দুপুরে আমি খাইয়ে দিয়েছিলাম তোকে এখন তুই আমাকে খাইয়ে শোধ করবি।’
একথা বলে রুদ্র ওর হাত ধরে টানতে টানতে রান্নাঘরে নিয়ে গেল। বড় একটা প্লেটে দু’জনের খাবার বেড়ে বেডরুমে এসে বসল। রাতের খাবার রেস্টুরেন্ট থেকে এনেছে। কারণ স্পর্শী বিরিয়ানি পছন্দ করে তিনবেলায় বিরিয়ানি দিলে খুব খুশি। মন খারাপের মুহূর্তে পছন্দের খাবারে যদি মনটা ভালো হয় এই আশায় আনিয়েছে। আগামীকাল শেফ আসবে। আগে যিনি ছিলেন তিনি রুদ্রর খবরাখবর এমিলির কাছে পৌঁছে দিতো। বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা দিতো এমিলি। এজন্য উনাকে আসতে নিষেধ করা হয়েছে সঙ্গে বেইমানি করার শাস্তিও দিয়েছে। আগামীকাল থেকে যে আসবে সে কাফির বউ। চেনা জানা কাছের মানুষ। বিয়ের আগে একটা ছোটো খাটো রেস্টুরেন্টে কাজ করতো। এখন নিজের ইচ্ছায় করে না, কাফি বললেও না। এখানে আসলে স্পর্শীকে সময় দিতে পারবে, সারাদিন এখানে থাকবে, সন্ধ্যার পরপর চলে যাবে।
তাতে স্পর্শীকে সঙ্গ দেওয়াও হবে নিজের অবসর সময়টুকু কাটবে। এমন নানান দিকে ভেবে সে আর কাফি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামীকাল থেকে কাজ বাড়বে, ব্যস্ততাও বাড়বে,
বাসায় সময় দিতে পারবে না কেউই। এরচেয়ে দু’জন মেয়ে
সঙ্গে থাকলে সেইভ থাকবে আর এফ্ল্যাটে যথেষ্ট সিকিউরিটি আছে।
রুদ্র স্পর্শীর হাতে খাবারের প্লেট ধরিয়ে বিছানার হেডবোর্ডে হেলান দিয়ে, দিলো এক ধমক। বলছে খাইয়ে দিতে তবুও থম মেরে বসে আছে। ধমক শুনে স্পর্শী গোমড়া মুখে হাতটা ধুয়ে এসে বিনাবাক্যে তাকে খাইয়ে দিতে থাকল। রুদ্র খাচ্ছে আর ফোনের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। মনোযোগ কী
দেখছে কে জানে। তবে সেটা দেখে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসছে।
স্পর্শী রুদ্রর মুখে খাবার তুলে দিতে দিতে দেখল সে ভিডিও দেখছে। ভিডিওতে একটা মেয়ে খুব কাঁদছে। উনার সামনে সাদা কাফনে আবৃত করা কারো লাশ রাখা। ওকে তাকাতে দেখে রুদ্র নিজেই ফোন এগিয়ে দিলো ভালো করে দেখতে।
মেয়েটাকে সে চিনে, নাম এমিলি। বর্তমান মন্ত্রীর পুত্রবধূ সে।
এছাড়াও আরেকটা পরিচয় রুদ্রর গফ। ভালো করে ভিডিও
দেখে বুঝলো এমিলির হাজবেন্ড মারা গেছে। সামনে রাখা লাশটাই তার বরের। এইটুকু বোধগম্য হতেই সে বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে রইল রুদ্রর দিকে। রুদ্রর মুখের হাসি তার বিষ্ময়ের আরেকটা কারণ। একটা মানুষ মারা গেছে আর সে হাসছে। গফের বর মারা গেছে বলেই এত খুশি হয়ে নাকি কে জানে।
কেন জানি রুদ্রর হাসিটা সহ্য হলো না তার, তাই বিরিয়ানির
এলাচ লোকমার মধ্যে ঢুকিয়ে রুদ্রর মুখে দিতে গেল। কিন্তু রুদ্র ওর হাত আঁটকে দিয়ে সেই লোকমা স্পর্শীর মুখে পুরে দিয়ে বলল,
-‘আমার সঙ্গে এক প্লেটেই খা। মুখের খাবার ফেলার চেষ্টাও
করবি না। খাবার নষ্ট করা পছন্দ করি না আমি।’
স্পর্শী মুখে এলাচসমেত বিরিয়ানি নিয়ে বসে রইল। চিবুতে গেলেই ক্যাচ করে দাঁতে এলাচ পড়ে মেজাজ বিগড়ে যাবে।কার জন্য গর্ত খুঁড়লো আর কে পড়লো। একেই বলে লোহা বাঁধানো কপাল। তাকে খেতে না দেখে রুদ্র ফোনের দিকেই চোখ রেখে বলল,
-‘অতি চালাকের গলায় দড়ি। তুই চালাকি করতে গিয়ে ধরা খেয়েছিস তাই তুই একটা গরু। মুখের খাবারটুকু শেষ কর জলদি।’
-‘না প্লিজ।’
-‘ছাড় দিতে পারি তবে শর্ত আছে, শর্ত মানবি? ‘
-‘হুম।’
-‘তুই নিজে থেকে আমাকে লিপ কিস করবি, জলদি আয়।’
একথা শুনে স্পর্শী এলাচসমেত বিরিয়ানিরটুকু ক্যাচ ক্যাচ করে চিবিয়ে গিলে খেয়ে রুদ্রর মুখে খাবার তুলে দিলো। ওর কান্ড দেখে রুদ্র বলল,
-‘এভাবে ইগনোর করলি তো, একদিন এমন দিন আসবে তুই নিজে থেকে আমার কাছে আসবি আর কিস করবি স্বেচ্ছায়।’
-‘এখনই করবো যদি আমার প্রশ্নের সঠিক উত্তর দাও।’
-‘বল শুনি।’
-‘আমি নাকি রাজনীতি?’
-‘রাজনীতি আ..। ‘
একথা বলতে দেরি কিন্তু রুদ্রর গালে থাপ্পড় দিতে দেরি হয় নি। যেন প্রস্তুতই ছিল সে। থাপ্পড় মেরে হাতে প্লেটটাও ছুঁড়ে মারল মেঝেতে। অবশিষ্ট বিরিয়ানিটুকু ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেল চারদিকে। তারপরেই হিংস্র বাঘিনী ন্যায় রুদ্রর কলার চেপে ধরে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে বলল,
-‘কিছুক্ষণ আগের ভাষণ ভুলে গেছিস? আমাকে সব মেনে নিতে হবে, জোর করে হলেও সংসার করতে হবে। আর তুই রাজনীতি রাজনীতি করে ছুঁটে বেড়াবি। দিন শেষে রাস্তাঘাটে লা/শ হয়ে পড়ে থাকবি,তখন আমার কী হবে? বিধবা তকমা নিয়ে ঘুরবো আমি? রাজনীতিই যদি নিবি আমার বিয়ে কেন করেছিস? প্রতিবাদ কেন করিস নি?মেনে নে, মেনে নে, করে সব পাগল হয়ে গেছে। কেউ জিজ্ঞাসা করেছিস কেন তোকে মানছি পারছি না। তোকে মানতে না পারার আরেকটা কারণ তোর রাজনীতি। আই রিপিট, তোকে সহ্য করতে না পারার আরেকটা কারণ রাজনীতি। এই মুহূর্তেই তুই আমাকে বেছে নিবি নয়তো তোর রাজনীতি। যদি আমাকে নিস আমি তোর মনমতো হয়ে উঠবো। আর যদি রাজনীতি নিস তবে বিচ্ছেদ কেউ ঠেকাতে পারবে না। বিচ্ছেদ মানে বুঝেছিস, ডিভোর্স!
সত্যি বলছি তোকে আর ডিভোর্স দিবোই দিবো।’
To be continue…….!!