#প্রেম_প্রার্থনা
#লেখনীতে_নূরজাহান_আক্তার_আলো
[০৬]
কিন্তু বিপত্তি বাঁধল পরেরদিন সকাল আটটায়। যখন ঘুমে ঢুলুঢুলু হয়ে ড্রয়িংরুমে গিয়ে জানতে পারল বড় বাবা তাকে রেখে ফিরে গেছেন। এখন থেকে তাকে রুদ্রর সঙ্গেই থাকতে হবে। রুদ্র যেদিন বাসায় ফিরবে তাকে সেদিনই ফিরতে হবে।
এর আগে কেউ আসবে না তাকে নিতে। এদিকে রুদ্রও নাকি জানে না কবে নাগাদ ফিরবে। তার জুরুরি কাজ আছে। এত সময় হাতে নেই। তাই এখন থেকে তাকে এখানে থাকতে হবে
, থাকতে নাকি বাধ্য। একথা শুনে স্পর্শী রাগে দুঃখে কাঁদতে শুরু করলো। তার কান্না দেখে মনে হচ্ছে কেউ খুব মেরেছে। নিজের ফোন থাকলে আম্মুকে কল করে জানাতে পারতো।
এছাড়া সেও জানতে চায় বড় বাবা কেন এমন করলো?ঠিক কোন অপরাধের শাস্তি দিলেন? সেদিনের ঘটনার রেশ ধরে নাকি অন্য কোনো কারণে? এটা করার আদৌ দরকার ছিল কী? এসব ভাবলে তার কান্নার গতি বেড়েই যাচ্ছে। ফুঁপিয়ে কেঁদে যাচ্ছে একনাগাড়ে। তার ফোলা ফোলা নেত্র গড়িয়ে পড়ছে অশ্রুফোঁটা। নাক ধারণ করেছে রক্তিম আভা। তারই
সামনের সোফায় বসে রুদ্র ভ্রুঁজোড়া কুঁচকে তাকিয়ে আছে।
বিরক্তমুখে তাকিয়ে আছে ছিঁচকাদুনী স্পর্শীর দিকে।সামান্য
কারণে এত কান্নাকাটির হেতু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এতক্ষণে নিশ্চুপ হয়ে থাকলেও এবার, ইয়াক ছিঃ! বলে দাঁড়িয়ে গেল।
এতক্ষণ কান্নার চোটে স্পর্শীর সর্দি ঠোঁট ছুয়ে যাচ্ছিল। আর সে ওড়না দিয়ে মুছছিল। জর্জেট ওড়নায় নাক মোছার ফলে
নাকটা লাল হয়ে গেছে। কিন্তু এবার সে সর্দি না মুছে বা হাত দিয়ে নাক টিপে সর্দি এমনভাবে ছুঁড়েছে সেটা এসে ওর ডান পায়ের পাতায় এসে পড়েছে। স্পর্শীর এমন কাজে রুদ্র মনে মনে ‘বেযাদব’ উপাধি দিয়ে মুখে বলে উঠল,
-‘সমস্যা কি তোর? আজাইরা কান্নাকাটি করছিস কেন?’
-‘আমি থাকব না এখানে। আমাকে বাসায় দিয়ে এসো।’
-‘ কেন থাকবি না? এটা কি বাসা না?’
-‘আমি আমার বাসায় যেতে চাই। তুমি এক্ষুণি বড় বাবাকে ফোন করে আমাকে নিয়ে যেতে বলো।’
-‘আমি কি তোর বেতনভুক্ত কর্মচারী যে, যখন যা বলবি আমাকে তাই শুনতে হবে?’
-‘তুমি বড় বাবাকে কল করবে কী না?’
-‘করবো না। এই নিয়ে আর একটাও বাড়তি কথা বলবি না। রান্নাঘরে খাবার ঢাকা আছে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নে, যা।’
-‘তোমার মতো বনমানুষের জিনিস খাবোও না আর তোমার সঙ্গে থাকবোও না।’
একথা বলে সে উঠে গেস্ট রুমে গিয়ে দরজা আঁটকে বসে রইল। দুই হাঁটুর উপর থুতনী রেখে অঝরে কাঁদতে লাগল।
এত বড় বাসায় একা থাকবে কীভাবে? রুদ্র তো সব সময় বাসায় থাকবে না। তখন সময় কাটবে কীভাবে?এসব নানান
কথা ভাবতে ভাবতে সে বিছানায় শুয়ে বালিশে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে থাকল। আর ওকে যেতে দেখে রুদ্র দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিরক্ত মুখে দাঁড়িয়ে রইল। এদিকে তার ফোনে একের পর কল আসতেই আছে। ওর বের হতে হবে। একে বাসায় একা
রেখে বাইরে গিয়ে শান্তি পাবে বলেও মনে হয় না। কিন্তু কী আর করার এছাড়া উপায়ও নেই। এসব ভেবে রুদ্র স্পর্শীকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলল,
-‘ ফ্রিজে কারো পছন্দের খাবার রাখা আছে। সময় পেলে সে যেন খেয়ে নেয়। আমি জরুরি কাজে যাচ্ছি। ঘন্টা দু’য়েক পরেই ফিরবো। আর ভয়ের কিছু নেই বাসাতে ভূত- পেতনী কিচ্ছু নেই। আর থাকলেও তারা রাতে বের হয়, দিনে না।’
একথা বলে সে বাইরে থেকে দরজা আটঁকে বেরিয়ে গেল।
সিঁড়ি বেয়ে নামতেই দেখা গেল কাফি দাঁড়িয়ে আছে। তাকে দেখে রুদ্র দীর্ঘশ্বাস ফেললো। বেচারাকে ছুটি দিয়েছিল সে। অথচ জুরুরি কাজের জন্য ছেলেটার ছুটি ক্যান্সেল করতে হয়েছে। তবুও এই ছেলের মুখে মন খারাপের ছাপ নেই৷ সে
বরাবরের হাসি মুখে এঁটে তার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। যেন পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ সে। রুদ্রকে দেখে কাফি দ্রুত
এগিয়ে এসে ফোনে কিছু একটা দেখালো। তা দেখতেই রুদ্র
দাঁতে দাঁত চেপে গাড়িতে উঠে বসল। আজ একটা হেস্তনেস্ত করেই ছাড়বে সে। আজ লিমিট ক্রস করে ফেলেছে এমিলি।
মানুষ যে এতটাও বেহায়া হতে পারে এই মেয়েকে না দেখলে জানতো না সে। মন চাই তার মুখ বরাবর থুথু ছুঁড়তে। রুদ্রুর রাগান্বিত ফেস দেখে কাফি কথা না বাড়িয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে নিজে ড্রাইভ করতে লাগল। তখন রুদ্র কাউকে ফোন করতে বি/শ্রী গালি দিলে বলল,
-‘বা**কে উল্টো ঝুলিয়ে রাখ আমি আসছি। উহুম, না! না! কেউ ভুলেও ওর গায়ে একটা টোকাও দিবি না। আমি নিজে ওর শরীরের হাড্ডিগুলো যত্ন করে গুঁড়ো গুঁড়ো করবো। কী যেন বলেছিল আমার স্পর্শীকে এক রাতের জন্য ওর কাছে পাঠাতে?খুব দম তাই ন? আজ ওর দম কতখানি তাই পরখ করব আমি।’
একথা বলে কল কেটে চোখ বন্ধ করে সিটে শরীর এলিয়ে দিলো। রাগে তার মস্তিষ্ক দপদপ করছে। যেসব কথা জানার কথা না সেসব কথায় পাঁচকান হয়ে গেছে।কিন্তু কার মাধ্যমে হলো আন্দাজ করা যাচ্ছে না। মুখ্য কথা, আয়োজন ছাড়াই ওর আর স্পর্শীর বিয়ে সম্পূর্ণ করা হয়েছিল। যেখানে নিকট আত্মীয়দের আনাগোনা ছিল না। শুধুমাত্র বাসার সদস্যদের উপস্থিত ছিল। বাসার কেউই এসব কথা ছড়াবে না, তাহলে?
হঠাৎ করে তার স্মরণ হলো বাইরের একজন সেখানে ছিল; কাজি সাহেব। যিনি তাদের বিয়ে পড়িয়েছেন। উনার থেকেই হয়তো কেউ কথা বের করে নিয়েছে। মোদ্দাকথা, ওর শুত্রুর নজর থেকে পরিবারকে নিরাপদ রাখতে সে বাসায় বেশিদিন থাকে না। বাড়ির প্রতিটা সদস্যকে সেভ করার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এমনকি স্পর্শীর স্কুলের পাশে প্রতিবন্ধী যে লোকটা বসে ভিক্ষা করে সে একজন গুপ্তচর। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলেই লোকটা তাকে জানিয়ে দেয়। এছাড়া স্পর্শী কখন কী করে সব খবরই তার কানে এসে পৌঁছায়। এজন্যই মাত্র দু’দিনের মাথায় মাশুমের ব্যাপারটা জানতে পেরেছিল। আর
সুযোগ বুঝে সাতদিনের দিন সেটা কোল্জ করতে পেরেছে।
এছাড়াও আরেকটা ঘটনা ঘটেছিল সে বাসায় থাকাকালীন।
তাদের পাশের বাসায় একটা ব্যাচেলর ছেলে ভাড়া থাকত। ছেলেটা দেখতে, শুনতে, ভদ্র দেখতে হলেও অমানুষ জাত।
সে মাঝেমধ্যেই ওই ছাদ টপকে এই ছাদেও আসতো নাকি।
আর এসে এমন এক কাজ করতো তা বলতে রুচিতে বাঁধে তার। সেদিন দুপুরে কবুতরকে খাবার দিতে ছাদে উঠেছিল সে। কড়া রোদ থাকায় আশেপাশের ছাদেও কেউ ছিল না।
কিন্তু সেই মুহূর্তে ওই ছেলেকে এই ছাদে দেখে সন্দেহও হয় তার। ছেলেটা কী করে সেটা দেখতে কৌতুহলবশত আড়ালে দাঁড়ায় সে। তারপর যা দেখে শরীরের রক্ত টগবগ করে করে ফুটতে থাকে। ছেলেটা রোদে শুকাতে দেওয়া স্পর্শীর ভেজা অন্তবার্স পকেটে ঢুকিয়ে নেয়। তারপর স্পর্শীর ওড়না গোল করে মুড়িয়ে নাকের কাছে নিয়ে জোরে শ্বাস নেয়, মুখ মুছে।
এরপর আশেপাশে তাকিয়ে ছাদ টপকে ওই ছাদে চলে যায়।
ছেলেটার কান্ড দেখে সেই মুহূর্তে কাউকে কিছু বলে নি পরে ছেলেটাকে কোথাও দেখাও যায় নি। সেদিন থেকে সে ছাদে জামা কাপড় শুকাতে দিতে নিষেধ করে দেয় তাও দাদীমার মাধ্যমে। দাদীমাকেও সে তেমন কিছু বলে নি শুধু বলেছিল,
‘আশেপাশে ব্যাচেলর ছেলেরা আছে। বাসায় জানিয়ে দাও ছাদে যেন কেউ কাপড় শুকাতে না দেয়।’
দাদীমা বুদ্ধিমতী বিচক্ষণ মানুষ কিছু আন্দাজ করেছিলেন।
তারপর বাসার কোনো মেয়ে বউ ছাদে কাপড় শুকাতে দেয় না। এসব ঘটনা সমাপ্তি হলেও আরেকটা ঝামেলার আগমন ঘটেছে। কাফি জানিয়েছে স্পর্শীর বাবা বাজার করতে গিয়ে এক্সিডেন্টের হাত থেকে বেঁচে ফিরেছে। এইতো গতদিনের ঘটনা। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এটা পরিকল্পিত। এসব ঘটনা দ্বারা স্পষ্ট কেউ তার পরিবারের উপর নজর রাখছে। ক্ষতি করার জন্য মুখিয়ে আছে।এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ তার স্মরণ হলো ইলিয়াসের কথা। ওদের বিয়ের পরেরদিনই ইলিয়াস মেসেজ করেছিল,
-‘ রুদ্র রাজ এতটা কাপুরুষ জানা ছিল না। নতুন বউ রেখে পালিয়ে না গেলে জানতে আরো দেরি হয়ে যেতো? কীহ্ বা করা!অক্ষম পুরুষ হইলে যা হয়। এক কাজ কর একরাতের জন্য তোর বউকে আমার কাছে পাঠিয়ে দে। আমিই নাহয় তোর বউয়ের যৌবনের সুধা পান করি।’
মেসেজের কথা স্মরণ হতেই সে ধমকে উঠল কাফিকে। দ্রুত পৌঁছাতে গাড়ির স্পিড বাড়ানোর আদেশ ছুঁড়লো। ঝাঁঝালো
ধমক খেয়ে কাফি সত্যি সত্যি গাড়ির স্পিড বাড়িয়ে দিলো।
তারপর তারা পৌঁছে ভেতরে ঢুকে দেখে এক লোককে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা। তার নামই ইলিয়াস। বয়স একচল্লিশের
কাছাকাছি। মাথায় আধপাঁকা চুল। ভুরি দেখে মনে হয় পাঁচ কী ছয় মাসের গর্ভবতী। কারো উপস্থিত টের পেয়ে ইলিয়াস দু’চোখ খুলে তাকায়। উল্টো করে ঝুলার ফলে মাথা ঘুরছিল তার, এখনো ঘুরছে। কিন্তু চোখ খুলে তাদের দেখে ইলিয়াস
গালির বর্ষণ ছুঁড়লো। কিন্তু যখনই মা তুলে গালি দিতে গেল
তখনই রুদ্র তার গলা বরাবর ছুঁরি গেঁথে দিলো।ইলিয়াস গোঁ গোঁ শব্দ করে অসহ্য ব্যথায় কাঁতরাতে লাগল। তার গলার রক্ত গড়িয়ে চুল দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা করে পড়তে পড়তে মাটি স্পর্শ করল। অদূরে দাঁড়িয়ে রুদ্র চোখ বুলিয়ে দেখছে আর হাসছে। ইলিয়াসের চ্যালারা অবচেতন অবস্থায় পড়ে আছে।
কিছুক্ষণ আগে এক নাচতে ওয়ালী এসেছিল এখানে। সেই
নাচনেওয়ালির নাচ দেখে তারা শরীর ছুঁতে গিয়েছিল। পরে জ্ঞান হারিয়েছে।। সম্ভবত সেই নাচনেওয়ালির কাছে এমন কিছু ছিল যার দ্বারা অবচেতন করে দিয়েছে। করারই কথা, সেই মিতালিকে আদেশ করেছিল এমন কিছু করতে। কারণ
ইলিয়াসকে শায়েস্তা করা। এদের তো দোষ নেই এরা টাকায় পাগল। এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছে এটা ইলিয়াসের ডেরা।প্রথমবার আসলো সে। এখন এখানে ইলিয়াসকে মেরে লাশ ফেলে যাবে। আর এটা হবে এমিলিকে দেওয়া সর্বশ্রেষ্ঠ এক উপহার। মেয়েটা বড্ড বাড় বেড়েছে। মেয়ে বলেএতদিন ছাড় পেয়েছিল তবে ধৈর্য্যসীমা অতিক্রম করেছে এবার। এজন্য
বাড়াবাড়ির ফল বুঝিয়ে দেওয়ারও সময় এসে গেছে। অন্তত তাকে বুঝতে হবে কার পেছনে পড়েছে সে। এসব ভেবে রুদ্র কাফির দিকে তাকাতেই কাফি হকিস্টিক এগিয়ে দিলো তার দিকে। রুদ্র মেরুন রঙা শার্টের হাতা ফোল্ড করে হকিস্টিক তুলে হাসল। তার হাসি দেখে ইলিয়াসের চোখজোড়া ভীত দেখালো। অনবরত মাথা নাড়িয়ে না বোঝাল। দুইহাত জোড় করে কিছু বলার আগে রুদ্র বলল,
-‘যে মাকে তুলে তুই গালি দিতে যাচ্ছিলি। আমার সেই মা’ ই বছরের পর বছর রাজনীতিতে রাজ করেছে। রাজনীতি তার রক্তে। আর সেই মায়ের ছেলের কলিজায় হাত বাড়িয়েছিস।
তোকে তো এই সাহসের মূল্য চুকাতে হবে, বুঝতে হবে, কার জিনিসের দিকে লালসার দৃষ্টি ছুঁড়েছিস।’
একথা বলে ইলিয়াসের হাত পায়ের গিরায় গিরায় হকিস্টিক দিয়ে মারতে লাগল রুদ্র। একটুদূরেই কাফি দাঁড়িয়ে আছে।
প্রথম প্রথম ভয় পেলেও এখন আর ভয় পায় না সে। বুঝে গেছে রাজনীতিতে টিকতে গেলে লড়তে হবে। আর লড়তে গেলে মরতেও হতে পারে। তবে রুদ্রর জন্য তার খুব খারাপ লাগে। রুদ্র রাজনীতিতে যুক্ত হতে ইচ্ছুক ছিল না। কিন্তু তার মায়ের আদেশে রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছে। নিজের জীবনের পরোয়া না করে মাতৃআঙ্গাকেই গুরুত্ব দিয়েছে। রুদ্র এখনো ইলিয়াসকে মারতে ব্যস্ত। ইলিয়াসের হাত পা অকেজো হয়ে গেলে তখন মাথায় আঘাদ করল। মারের চোটে ইলিয়াসের কানমুখ দিয়ে গলগল করে রক্ত গড়াতে লাগল। একপর্যায়ে
ইলিয়াস শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো। তাকে মারতে মারতে রুদ্রও হাঁপিয়ে গেছে। যখন দেখল ইলিয়াস শেষ তখন সে হকিস্টিক ছুঁড়ে মেনে এমিলকে মেসেজ করলো,
-‘তোমার জন্য উপহার রেখে গেলাম। ধন্যবাদ দিতে হবে না। এই রুদ্র সস্তা কারো ধন্যবাদ গ্রহন করে না।’
__________/\______________/\__________
অতিরিক্ত কান্নার ফলে স্পর্শীর চোখ মুখের বেহাল দশা। সে
কিছুক্ষণ আগে গোসল সেরে বেরিয়েছে। এখনো কিছু খায় নি। মুখটা শুকিয়ে এইটুকুন হয়ে গেছে। ঘন্টা দু’য়েকের কথা বলে রুদ্র তখন বেরিয়েছে এখনো ফিরে নি। অথচ যাওয়ার চার ঘন্টা পেরিয়ে গেছে। হয়তো ভুলে গিলে খেয়েছে তাকে বাসায় আঁটকে রেখে গেছে। তখন খট করে শব্দ করে কেউ রুমে প্রবেশ করলো। দৃষ্টি তুলে রুদ্রকে দেখে মুখ ফিরিয়ে নিলো সে। রুদ্র প্লেটভর্তি খাবার এনে সামনে বসে লোকমা তুলে মুখের সামনে ধরল। স্পর্শী খাচ্ছে না দেখে সে বলল,
-‘বিপরীত পক্ষকে ঘায়েল করতে হলে নিজেকে সুস্থ রাখা প্রয়োজন। অন্যের উপর রাগ করে নিজেকে কষ্ট দেওয়া বোকামি ছাড়া কিছু নয়। হা কর, খেয়ে নে, শরীরে শক্তি করে, যত পারিস রাগ করিস।’
-‘তুমি খুব খারাপ একটা মানুষ।’
-‘জানি। আর এই খারাপ মানুষটার সঙ্গেই তোকে থাকতে হবে, ভালোবাসতে হবে। বাকিটা পথ এই খারাপ মানুষটার সঙ্গে পাড়ি দিতে হবে।’
To be continue……….!!