#প্রেম
#পর্বঃ১৩
#Tanisha Sultana
বিকেলে মিষ্টি বাসায় ফেরে। মিষ্টির মা রান্না করছিলো মিষ্টি মন মরা হয়ে আছে বলে মিষ্টির কাছে এগিয়ে আসে
“কি হয়েছে মিষ্টি তোমার চোখদুটো ফোলা কেনো? কান্না করেছো না কি?
মায়ের কথায় মিষ্টি ভয় পেয়ে যায়। আমতাআমতা করে বলে
” চোখে কিছু পরেছিলো তাই এমন দেখাচ্ছে।
মিষ্টির মা অস্থির হয়ে পরে
“কি পরেছিলো? চোখে পানি দিয়েছো? চোখ ব্যাথা করছে?
“মা রিলাক্স আমি ঠিক আছি
মাকে কোনোরকম মানিয়ে নিজের রুমে আসে মিষ্টি। ব্যাগটা রেখে ড্রেস চেঞ্জ করে বই নিয়ে বসে। তখন জীম ফোন দেয়
” হুম বলো
“কি করছে আমার জানটা
” বই পরি। তুমি
“তোমায় ভাবি
” শোনোনা দুই তারিখ আমার টেস্ট এক্সাম তো আমি ভাবছি এই দিন একটু কথা বলা দেখা করা কমিয়ে দেবো
“ভেবে ফেলেছো
” হুম
“সব সময় একটা কথা মাথায় রাখবা তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড না বউ। আর তোমার কাছে সব কিছুর আগে আমি তারপর অন্য কিছু। বুঝলা
মিষ্টি চুপ করে আছে। কারণ ও জানে জীমকে কিছু বললে বুঝবে না
” কথা বলছো না কেনো?
“শুনছি
” আমাকে কি তোমার বিরক্ত মনে হয় না কি? এমন করে কথা বলো
“সে রকম না
” তাহলে কি রকম? কথা বলছো আমার সাথে আর মনটা অন্য কোথাও। এরকমটা আমি পছন্দ করি না
“আপনি কি কি পছন্দ করেন আর কি কি পছন্দ করেন না দয়া করে একটা লিস্ট করে দিয়েন মনে রাখতে সুবিধা হবে
” তোমার কোনো কথা বা কাজই আমার পছন্দ না
মিষ্টি ফোনটা কেটে বন্ধ করে দেয়। কারন এখন বরসর একটা ঝগড়া হবে। ফোন ফেলে পড়ায় মন দেয়। কিন্তু বইয়ের কিছুই মিষ্টির মাথায় ঢুকছে না।আজ সারাদিন যাযা ঘটেছে তাই শুরু মাথায় ঘুর পাক খাচ্ছে।
মিষ্টি বিরক্ত হয়ে বইটা বন্ধ করে বাইরে যেতে নেয় তখন মিষ্টির বাবা নুডলস নিয়ে মিষ্টির রুমে আসে
“কোথায় যাচ্ছ
” তোমার কাছেই যাচ্ছিলাম
“ওহহহ। বসো খেয়ে নাই
মিষ্টি বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছে আর মিষ্টির বাবা মিষ্টিকে খাইয়ে দিচ্ছে। জীম সেই কখন থেকে বেলকানির দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে আছে মিষ্টির বাবা রুমে বলে মিষ্টির কাছে যেতে পারছে না।
মিষ্টির খাওয়া শেষে মিষ্টির বাবা চলে যায়। জীম হনহন করে রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়
” আপনি
জীম স্বাভাবিক ভাবে মিষ্টির পাশে বসে
“খুব সাহস হয়েছে তোর তাই না। ফোন বন্ধ করে রাখিস
” আসলে
“আসলে নকলে পরে শুনবো। আগে আমার কথা শুন। আর একবার এমন করলে তুলে নিয়ে যাবো তোকে
” আপনার মনে হয় না জীম আপনি অতিরিক্ত বেশি করছেন? কেনো করছেন? আমার লাইফটা শেষ করে দিলেন
জীমের এবার রাগ হয় মিষ্টি গাল চেপে ধরে শক্ত করে
“আমি তোর লাইফ শেষ করে দিয়েছি তাই না। ঠিক আছে এবার দেখ আরও কি করি
ব্যাথায় মিষ্টির চোখ দিয়ে পানি পরছে। জীম ছে্রে দেয়। মিষ্টির গাল দুটো লাল হয়ে গেছে
” সরি জান।রাগাও কেনো আমাকে
মিষ্টির গালে হাত বুলাতে বুলাতে বলে জীম। মিষ্টি নিচের দিকে তাকিয়ে কান্না করছে।
“ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি তুমি কান্না থামাও
মিষ্টি মাথা তুলে তাকায় না। জীম চলে যায়।
সকালে মিষ্টি কলেজের জন্য রেডি হয়ে বাবার রুমে যায়
” বাবা
“হুম বলো
” আমার এক ফ্রেন্ডের বার্থডে তাই আমি ওকে একটা গিটার গিফট করতে চাই
“তুমি কি একা কিনতে পারবে
” হুম পারবো
মিষ্টির বাবা মিষ্টিকে টাকা দেয়। মিষ্টি খুশি হয়ে চলে যায়।
জীম আজ ওর বাবার সাথে খেতে বসেছে।জীমের মা ওর ছোট ভাইকে খাইয়ে দিচ্ছে
“বাবা
” বলো
“কিছু টাকা লাগবে
” লজ্জা করে না টাকা চাইতে। পড়ালেখাটাও তো ঠিক মতো করো না। কাজ তো দুরের কথা
“বাবা ঝগড়া করার মুড নাই। টাকা দাও
” তোমার বয়সে আমি বাবার হাতে টাকা দিতাম আর তুমি হাত পেতে টাকা নাও
“আমার বয়সে তুমি এক ছেলের বাপ হয়েছিলে আর আমি এখনো বিয়েই করতে পারলাম না
জীমের কথায় জীমের বাবা চুপ হয়ে যায়। চুপচাপ টাকা বের করে দেয়। জীম খাওয়া শেষ করে চলেযায়।
একটা গিটার হাতে নদীর পারে দাঁড়িয়ে আছে মিষ্টি। জীম আসার অপেক্ষা করছে। বাইকের আওয়াজে পেছনে তাকিয়ে দেখে জীম বাইক থেকে নামছে।
” হাই
মিষ্টি হাসি মুখে বলে
“লেট
” সরি
জীম এক হাতে কান ধরে বলে। মিষ্টি জীমের দিকে গিটারটা এগিয়ে দেয়
“গিফট
জীম গিটার টা নেড়েচেড়ে দেখছে
” ওয়াও অনেক সুন্দর। এই গিটারটাই সেদিন কিনতে গেছিলাম কিন্তু টাকা ছিলো না। পরে বাবার কাছে টাকা চাইলাম কিন্তু বাবা দিলো না।
“পছন্দ হয়েছে
” খুব
জীম মিষ্টির দিকে গিফটের কাগজে মোরানো একটা বাক্স এগিয়ে দেয়
“কি আছে এতে
” খুলে দেখো
মিষ্টি বক্সটা খুলে দেখে একটা স্বর্নের চেইন আর লকেট
“এটা তো অনেক দামী এতো টাকা পেলেন কই?
” আমাী জমানো ছিলো আর বাবা মার কাছ থেকে নিয়েছি
“ভালো। তবে এটা যদি নিজের রোজগারের টাকায় দিতেন তবে আরও খুশি হতাম
জীম মিষ্টিকে চেইনটা পরিয়ে দিতে দিতে বলে
” আমি রোজগার করে এর চেয়েও দামী কিছু দেবো
লকেটে সুন্দর করে ইংলিশে J+M লেখা। মিষ্টি আর জীম নদীর পারে বসে
“মিষ্টি আমাকে ছেড়ে কখনো যেয়ো না প্লিজ। আমি বদলে যাবো দেখো। ভালো ছেলে হয়ে যাবো
মিষ্টি জীমের হাত ধরে বলে
” জাবো না
“প্রমিজ করো
জীম হাত এগিয়ে দেয়।মিষ্টি হাত ধরে বলে
” পাক্কা প্রমিজ
চলবে