প্রেমের আটফোড়ন পর্ব-০৭

0
1519

#প্রেমের আটফোড়ন 🍁🍁
#writer :Arshiya shiratul falak
#পর্ব : 7
রিহান অধরার কাছ থেকে এসে যখন ভার্সিটির মাঠে এসে দাড়ালো তখন মেয়েরা এক এক করে হাই হ্যালো জানাচ্ছে,,

রিহান কাউকেি পাত্তা দিল না,, চোখে ব্ল্যাক চশমা, হাতে একটা ব্ল্যাক রুঙের ঘরি, গায়ে ব্ল্যাক রঙের টিশার্ট উপরে ব্ল্যাক জ্যাকেট,, সব মিলিয়ে তাকে ব্ল্যাক ম্যান দেখা যাচ্ছে ভার্সিটির মেয়েরা সবাই এক অভাক চোখে তাকিয়ে আছে,, একটা ছেলে এতটা সুন্দর হয় কি করে হাউ সে্ট্রঞ্জ,,,

ঐদিকে অধরা ভার্সিটির ২তলা থেকে সব দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছে আর বলছে,,

হুম কি ডং 😏

রিহান যখনি ক্লাসের দিকে আসবে তখন ইশিতা এসে সামনে দাড়ালো, ইশিতাকে দেখা মাত্রই অধরার চোখ বড় বড় হয়ে এল কারন ওর জন্য আজ বিয়ে নামক প্যারায় পড়তে।হয়েছে। মন চাচ্ছে গিলে ফেলতে,,,
।কিন্তু পারছেনা কোথাও যেন একটা দুর্বল জায়গা রয়েই গেল,,,

হাই বেইবি কেমন আছো,,( ইষিতা)

রিহান এবার রেগে গেলো,, কিন্তু তার রাগ দেখিয়েও কোনো লাভ নাই,, মাছির মতো পেছন পেছন ঘুরতেই থাকে এই মেয়ে । তাই রিহান একটা ছোট্ট হাসি দিয়ে বলতে লাগলো।,,

ইশিতা তোমার এই নেকা কন্ঠে আজাইরা ডাক দেওয়া বন্ধ করবা করবা , আমি জাস্ট আর পারছি না তোমার এই নেকা নেকা স্বর শুনতে,,,

এমন কেন কর বেইবি,,,

ওফ সরো আমার ক্লাস আছে,,,

সেখানে আর কোনো কথা বাড়ালো না যে যার মত রইলো,,,

_____________
রেহানা বলেছিলো বাড়িতে তার সাথে যেতে কিন্তু অধরা রাজি হয়নি,, কারন বড়লোকে তার এলার্জি,, কাল রাতটা কাটিয়েছেই ভীষন কষ্টে কাউকে বুঝতে দেয়নি ।
তাই সে তার বাড়ি ফিরে যায়। রেহানার জোরাজুরিও রাজি হয়নি,,,

এদিকে আরীফ চৌধুরি অধরাকে রেহানার সাথে দেখতে না পেয়ে রিহান কে কল করে রিহান জানায়, সে তার বাপের বাড়িতে আছে তাও এক বছরের জন্য এমনি মাঝে মাঝে এসে নাকি দেখে যাবে অনার্স কমপ্লেট হলে বাড়ি আসে এসব হাবিজাবি বলে বাবাকে বুঝিয়েছেন,, কিন্তু আরিফ চৌধুরি সন্দেহ করছে ছেলেকে,,

ফোন কেটে রিহানও ভাবেতে লাগলো হঠাৎ মেয়েটা আমার বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গেল, তাকে কি করে ফেরাব আমি,,,,,

বিকেল গনিয়ে রাত এল, রাত শেষে ভোর হলো,, অধরা নামায পড়ে বের হল টিউশনির উদ্দ্যেশ রাস্তায় বের হতেই ভাবি তাকে ৩তলা থেকে ডাক দিলেন সাথে আব্রাহামও। আব্রাহাম অধরাকে বলতে লাগলেন,,

পুফি পুফি আমাদের বাতায় আতো না আমি তোমাকে মিত তরি প্রতুর,, তুমি থুব পতা পতা আমাকে দেততে আতো না,,

অধরা খিল খিল করে হাসলে অাব্রহামের। তারপর বলল,

আচ্ছা সোনা আমি আসবো কিন্তু আমার জন্য চলকেট রাখতে হবে তোমাকে,,

আত্তা রাখবো,,,, আতর দিলাম(হাত দিয়ে চুমু দিল ,) তুমি দিবে না,,

না সোনা আমি তোমাকে কাছে থেকে দেব,,, এখন যাই ফুপি পরে কথা বলব,,

বলেই অধরা চলে গেল, তাদের এই কথা বার্তা আড়াল থেকে একজন শুনেছে মন কাড়া একটা হাসি দিয়ে অধরাকে ফলো করতে লাগলো,, কিন্তু অধরা সেটা টের পেল না , সে তার নিজের কাজে ব্যস্ত টিউশনি করিয়ে বাসায় এল, এসে রান্না বান্না, সব কিছু করে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিল,,,

ভার্সিটিতে গিয়ে দেখতে পেল, রেহানা কান্না করছে,, তার সামনে দিয়ে রৌদ্দুর হেটে যাচ্ছে,,, রেহানা সেদিকে না তাকিয়ে দৌড়ে রৌদ্দুরের কাছে গেল সেখানে তুর্য, হিমেল, বসে আছে আকাশ এখনো আসেনি ,,, অধরা রৌদ্দুর এর কাছে এসে বলতে লাগলো,,,,

ভাইয়া বোনকে বুঝি ভুলে গেলে তুমি,,, ( হাপাতে হাপাতে)

না রে বোন আমি তো আজ তকে দেখতে গিয়েছিলাম রিহানদের বাসায়। গিয়ে আংকেল থেকে জানতে পারি তুই নাকি চলে গেছস তাওএক বছরের জন্য,,

অধরা আর একটু চিন্তিত হলো এক বছরের জন্য মানেটা বুঝলো না। তাই সেদিকে কোনো কথা না বাড়িয়ে ভাইযের সামনে একটা ছোট্ট হাসি দিল।

তা তদের এক বছরের দুরত্বটা কি জন্য শুনতে পারি কি আমি???

তখনি রিহান এসে বলতে লাগলো, আরে শালাবাবু একটু ওয়েট করো, বলেই একটা চোখ টিপ দিলো,,
অধরা বোকার মতো তাকিয়েই রইলো মুখে দিয়ে কোনো ভাষাই প্রকাশ করলো না,,,

রিহান একটা হলুদ রঙের টিশার্ট পড়ে আছে, সেটা দেখে অধরাছোট খাটো ক্রাশ খেলো,, রিহান দেখতে পেল অধরা তার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে,, তাই নরম কন্ঠে মুখখানা হাসি মিশ্রিত করে বলতে লাগলো অধরা,, অধরা তাও শুনলো না পাশ থেকে রৌদ্দুর সেপা টের পেল তাই সে চলে গেল, রিহান অধরাকে ডাকছে তাও অধরার কোনো সারা শব্দ নেই,

রিহান ভাবতে থাকে মেয়েটাকে ভূতে পেল নাকি,, সে আবার ডাকলো কিন্তু কোনো রেসপন্স পেল না তাই বাধ্য হয়ে ধাক্কা দিল,, অধরাকে ধাক্কা দেওয়ায় সে ধরফরিয়ে উঠলো,, তারপর লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে দিলো দৌড় ক্লাস রুমে,, রিহান একটা মুচকি হাসি দেয় আর বলতে থাকে হেসেছো তো ফেসেছো,,,,

ভার্সিটি শেষ করে বাড়ি গেল অধরা বাড়ি গিয়ে খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিল,, কিছুক্ষন পর টিউশনি গেল,, টিউমনি শেষ করে বাড়ি ফিরল, তাকে কেউ ফলো করছে পেছন পেছন সেটা এখনো বুঝতে পারলোনা , রাত হয়ে গেলো টিউশনি মেষ করতে। তাই প্রতিদিনের মতো বাড়ি ফিরে খাবার খেয়ে ভার্সিটির কিছু নোট লেখার বাকি সেগুলো লেখলো, তারপর বসে বসে গান গাইতে লাগলো,,

আমারও পরানো যাহা চায়,,, তুমি তাই তাই গো…. আর গাইতে পারলোনা কিছু একটা পরার শব্দ পেল,,,

জানালা দিয়ে ওকি দিল কিছু দেখতে পেল না,,, তবে একটা ছায়া দেখতে পেল সেটা একটা পুরুষ।, অধরা ছায়াটা দেখা মাত্রই ভয় পেয়ে চিৎকার দিতে যাবে,, তখনই মনে পড়লো দোয়া ইউনুসের কথা তাই সে চিৎকার না করে দোয়াটা পড়তে লাগলো । এত রাতে যদি চিৎকার করে তাহলে লোকে তাকে পাগল ছাড়া কিছুই ভাববে না,,

_______________________

এদিকে রেহানা বসে আছে ভাইয়ের অপেক্ষায় কখন ভাই আসবে আর কখন খাবার খাবে,,, হঠাৎ দেখতে পেল রিহান দরজায় ডুকছে ডুকা মাত্রই গিয়ে জরিয়ে ধরলো ভাইকে। তারপর একসাথে ডিনার করতে বসলো,, আরিফ চৌধুরি খেয়ে ঘুমিয়ে পরেছে,,, অধরার জন্য তার মন খারাপ, তাই সে কারো সাথে তেমন কথা বলে না প্রয়োজন ছাড়া।,
রিহান খাবার খাওয়ার জন্য হাত বাড়াতেই রেহারা প্রশ্ন করল, ভাই তোমার হাতে কি হইছে কেমন যেন দেখা যাচ্ছে,??
আরে না কিছুনা হালকা একটু কেটে গেছে,,,
ও,সেভলন লাগাইছো,,??
না লাগিয়ে নেব,,,
দাও প্লেট দেও আমি খাইয়ে দিচ্ছি,,
রিহান আর কথা বাড়ালোনা রেহানা রিহানকে লোকমা দিয়ে দিচ্ছে আর রিহান পেট ভরে খাচ্ছে এ যেন মায়ের হাতের অমৃত খাচ্ছে,
———-++——————

সকালবেলা অধরার আযানের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে ঘুম থেকে উঠে যেই না দরজা খুলল তখন একটা ঝুড়ি দেখতে পেল। ঝুড়িটার ভেতর কতগুলো চকলেট এর মতো হালকা অন্ধকারে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে না,,
অধরা সেগুলোকে ঘরের ভেতর এনে নামাযের জন্য ওযু করতে গেল, ওযু করে এসে নামায পড়ে চেখ গেল ঝুড়িটার ভেতর। তরপর ঝুড়িটা হাতে করে টেবিলের সামনে রাখলো রাখার পর দেখতে পেল অনেকগুলো চকলেট সাথে একটা চিরকুট,, সেখানে লেখা,,

প্রিয়তমা, চকলেটগুলো তোমার জন্য, তোমার পাগল প্রেমিক এর দেওয়া গিফ্ট,,

এতটুকুই লেখা ছিল,, অধরা ভাবতে থাকে কে দিল এই চকলেট। দাও আবার পাগল প্রেমিক।

অধরা একটু হাসলো কারন তার মত অসহায় মেয়ের আবার পাগল প্রেমিক,,

আজ ফ্রাইডে তাই ভার্সিটি বন্ধ + টিউশনিও নেই তাই সকালের ঠান্ডা পরিবেশটাকে উপভোগ করতে একটু বাহির হয়,,
হালকা কুয়াশা, চারদিকে পাখির কিচিরমিচির,, রাস্তাঘাট ফাকা,, ঠান্ডা বাতাস কানের কাছে এসে শুশু করেছে,, নিস্তব্ধতা পরিবেশ দারুন লাগছে, অধরার কাছে,, এই নিজর্ন জায়গায় একা একা হাটছে,,, আর ভাবছে রিহানের কথা কেন সে তাকে বিয়ে করলো, আচ্ছা রিহান কি তাকে মেনে নিবে, মেনে নিবে কি করে, সে কোথায় আর অধরা কোথায়, এসব ভাবতে ভাবতে বসার সামনে এসে দাড়ায়, দরজা খুলে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে আবার ঝুড়িটার দিকে নজর দেয়। কে দিতে পারে এই ঝুড়ি একরাশ চিন্তিত নিয়ে,, খাবার খাওয়ার জন্য হাত উঠে,,

পাতিলের কাছে গিয়ে দেখতে পেলো, ভাতগুলো নষ্ট হয়ে আছে। কাল রাতে খাবার খেয়ে পানি দিতে মনে ছিলনা। বাসায় তো আর ফ্রিজ নেই, যে ফ্রিজে রেখে দেবে। ভাতে পানি না দেওয়ার কারেন বাতগুলো নষ্ট হয়ে একাকার হয়ে আছে,,,

ইশ কেন যে ভাতগুল,তে পানি দিলাম না এখন খাব কি,, ভাত গুলো ঠিক থাকলে তো কাচা মরিচ দিয়ে খেতে পারতাম,,৷ উপুস কি থাকতে পারবো এতক্ষন। ঐদিকে তো চাল ও শেষ হয়ে যাচ্ছে,, রান্না কমাতে হবে আগে রান্না করতাম দুইবার এখন করতে হবে একবার। উফ কি যে করব ভেবে পাচ্ছি না।

বলেই তার লাগেজ এর কাছে গেল,, লাগেজ থেকে একটা বোয়াম বের করল সেখানে দশ থেকে বারোটা বিস্কুট দেখতে পেল, সেখান থেকে দুইটা বিস্কুট খেয়ে নিল , তারপর পানি খেয়ে বিশ্রাম নিল,, হঠাৎ আব্রবাহামের কথা মাথায় এল তাই তাড়াড়াড়ি করে উঠে পরলো, উঠে চুলগুলো আচড়ে ছেড়ে দিল। বেড়িয়ে পড়লো আব্রাহামের বাসার উদ্দশ্যে….
কিছু দূর যাওয়ার পরে দেখতে পেল,, দূর থেকে একজন বাইক নিয়ে আসছে তার দিক অনুসরন করে,,

কোথায় যাচ্ছেন( রিহান)

কেন আপনাকে বলতে যাব কোন দুঃখে।

এই আপনি কি আমার সাথে সুন্দর করে একটু কথা বলতে পারেন না।

যে যেমন তার সাথে ঠিক তেমন ব্যবহার করতে হয়,,

এই মেয়ে দেখেন আপনার সাঝে রাস্তায় ঝড়গা করার মোড নাই,। সো তাড়াতাড়ি উঠুন বাইকে।

আজিব আমি৷ বাইকে উঠতে যাব কেন?? আর আপনি আমার ঠিকানা জানলেন কিভাবে??

প্রথমত বাবা বলছে বাসায় যেতে, আর দ্বীতৃয়ত বাসার ঠিকানা,টেলেন্ট থাকতে হয় মিস,, 😉যেগুলো আপনার নাই,,,। তাই এত কথা না বাড়িয়ে উঠে পরুন,।

দেখেন আমি এখন আব্রাহামের বাসায় যাব,

জানি তো,,,
আপনি জানেন কি করে,,
রিহান এবার ডুক গিলল তারপর কথা ঘুরালো,,
আব্রাহাম কে আব্রাহাম,,
এতক্ষন যেভাবে বলছিলেন জানি,, আমি তো মনে করছি আপনি মনে হয় চিনেনও,, যাক বাদ দেন। আপনি আপনার বাসায় যান। আমি এখন আব্রবাহামের কাছে যাব।
তাহলে আমিও যাব। আপনাকে না নিয়ে বাসায় যাচ্ছিনা মেডাম তাই এসেছি যেহেতু একসাথেই যাব….. ❤️❤️

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে