প্রেমময় আসক্তি পর্ব-০২

0
1770

#প্রেমময়_আসক্তি
#পর্ব_২
#নন্দিনী_চৌধুরী

[২.]

রুমে বসে জামা কাপড় গুছাচ্ছে রোদেলা।আজকেই সে ঢাকা যাবে।রাফসান তাকে দিয়ে আসবে।প্রথমে ওর একটু আপত্তি করছিলো রোদেলা একা কিভাবে থাকবে কিন্তু পরে রোদেলা তাদের রাজী করায় যে ও ওর বান্ধুবিদের সাথে থাকবে।রোদেলা জামা কাপড় গুছিয়ে রেডি হয়ে নিচ্ছে।রেডি হয়ে নিচে চলে আসলো রোদেলা।মা বাবার থেকে বিদায় নিয়ে বাহিরে এসে গাড়িতে বসলো সে।রাফসান গাড়ির সিট বেল্ট লাগিয়ে দিয়ে গাড়ি চালাতে শুরু করলো।

প্রায় ৫ঘন্টার পর তারা ঢাকা এসে পৌছালো।রাফসান রোদেলাকে নিয়ে মেডিকেল কলেজের ভিতরে আসলো।এসে সোজা চলে গেলো প্রিন্সিপালের রুমে।সেখানে গিয়ে রোদেলাকে ভর্তি করে দিলো।এরপর রোদেলাকে নিয়ে ওর হোসটেলের রুমে নিয়ে গেলো।সেখানে আগে থেকে রোদেলার ৩বান্ধুবি মুন,রুবা,আর কাশফিয়া আছে।এরা ৩জন রোদেলার খুব কাছের বান্ধুবি।রাফসান রোদেলা সব বুজিয়ে দিয়ে চলে আসলো।যাওয়ার আগে সবাইকে বলে দিয়েগেছে ওর বোনের খেয়াল রাখতে।রাফসান চলে যাওয়ার পর রোদেলা ওর বান্ধুবিদের সাথে কোলাকোলি শুরু করলো।অনেক কস্টের পর আজকে রোদেলা আসতে পারলো এখানে।রোদেলাকে কাছে পেয়ে তিন বান্ধুবিও অনেক খুশি হয়েছে।মুন রোদেলাকে জরিয়ে ধরে বলে,

মুন:ইয়েস ফাইনালি তুই চলে আসলি।আমি অনেক খুশি হইছিরে বইন।
রোদেলা:হুম হইছে হইছে জানিতো কেন এতো খুশি আপনে।আমার ভাইকে দেখছেন না তাইতো এখন আরো বেশি খুশি।
মুন:🙈দূর যাহ।
রুবা:হেহেহে দেখ লজ্জা পাইছে।
কাশফিয়া:যা বলছিস হিহি।রাফসানকে দেখেই এতো লজ্জা তাহলে সামনে গিয়ে কিভাবে কথা বলবি।
মুন:জানিনা রে।
রোদেলা:হয়েছে চল একটু কলেজটা ঘুরে আসি।
সবাই:হ্যা চল চল।

তারপর ৪জন মিলে চলে গেলো কলেজ ঘুরতে।কলেজে এখন শুধু ডাক্তাররা আছে আর স্যারেরা।ক্লাস শেষ হয়েগেছে তাই সব স্টুডেন্টরা চলে গেছে।ওরা ৪জন মিলে কলেজ ঘুরে ঘুরে দেখছে।৪জন কলেজ ঘুরে ঘুরে চলে আসে রুমে।দুপুরে ফ্রেশ হয়ে ৪জন খাবার খেয়ে নেয়।

পরেরদিন সকালে,,,,

৪জন রেডি হয়ে যাচ্ছে কলেজের জন্য।৪জন রেডি হয়ে চলে আসে কলেজের ক্লাসে।রোদেলার খুব ভালোলাগছে সে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছে।

সিডনি,,,,

অফিসে নিজের রুমে বসে আছে আদ্রিয়ান।চোখ মুখ তার রাগে ফুলে উঠেছে।তার সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে সায়মন।ভয়ে থরথর করে কাঁপছে।আদ্রিয়ান কপালে আজ্ঞুল ঘষছে আর বলছে,

আদ্রিয়ান:আমার বাংলাদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করো।আমি আজকেই বাংলাদেশে যাবো।
সায়মন:আজকেই!কিন্তু স্যার আপনিতো বলেছিলেন যে আপনি সামনের মাসে যাবেন।
আদ্রিয়ান:হ্যা বলেছিলাম।কিন্তু তখন আমার রোদেলামই সিলেট ছিলো।কিন্তু এখন রোদেলামই ঢাকায় চলে এসেছে।তুমি জানো আমার রোদেলামইয়ের জীবনে ঝুকি আছে।আর সেটা জেনে আমি এখানে বসে থাকতে পারবোনা।আমাকে বাংলাদেশে যেতে হবে এখন।এখন যা কাজ আছে সব বাংলাদেশে গিয়েই করবো।
সায়মন:জ্বী আচ্ছা স্যার।আমি সব ব্যবস্থা করছি।

সায়মন চলে গেলো আর আদ্রিয়ান চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলো।

আদ্রিয়ান খান আমান।খুব নামকরা এক মাফিয়া সে।সবাই তাকে অনেক ভয় পায়।আদ্রিয়ানের পরিবারের ব্যাপারে কেউ কিছু জানেনা।আদ্রিয়ান ৫বছর বয়স থেকেই ওর্ফানে থাকতো সিডনির।সেখানেই বড় হয়েছে তারপর নিজের এই মাফিয়া জগৎ তৈরি করেছে।

এদিকে,,,

ক্লাস করে ক্যাম্পাসে হাটছে কাশফিয়া।মুন,রোদেলা আর রুবা গেছে লাইব্রেরীতে।কাশফিয়া হাটছে আর চিপস খাচ্ছে তখন কোথাথেকে একটা বল এসে পরলো ওর চিপসের প্যাকেটের উপর।আর সব চিপস গেলো পরে।এটা দেখে কাশফিয়ার রাগ উঠে গেলো।কাশফিয়া পিছনে ঘুরে দেখে একটা ছেলে দৌড়ে ওর কাছে আসছে।ছেলেটা দৌড়ে ওর কাছে এসে বলে,

ছেলেটা:সরি মিস আপনার গায়ে বল লাগেনিতো।
কাশফিয়া:আমার গায়ে বল লাগেনি কিন্তু আপনার এই বলের জন্য আমার চিপস তো পরে গেলো।এখন এর ক্ষতি পুরন কে দেবে।
ছেলেটা:সরি মিস।
কাশফিয়া:সরিরের খেতা মারি।আমার এই চিপসের ক্ষতি পূরন দেন।আমার এই চিপসগুলার আমার পেটে যাওয়ার কথা তানা দেখুন সেগুলো মাটিতে গোড়াগোরি খাচ্ছে শুধু আপনার এই বলের জন্য।এখন আমার পেটে যাবে কিভাবে।
ছেলেটা কাশফিয়ার কথা শুনে অবাক হয়ে যায়।কি বলছে মেয়েটা।ছেলেটা কাশফিয়াকে কিছু বলবে তার আগে পিছন থেকে আরেকটা ছেলে ওকে ডাক দিলো,

“কাউসার!”

ছেলেটা ওর নাম শুনে পিছনে তাকিয়ে দেখে ওর বন্ধু ওকে ডাকছে। ছেলেটা আর কাশফিয়াকে কিছু না বলে ওর বন্ধুর কাছে গেলো।কাশফিয়া ছেলেটার চলে যাওয়া দেখে বলে,

কাশফিয়া:আরে এই এই বলওয়ালা আমার চিপসের ক্ষতিপূরন দিয়ে যান।এই এই।

ছেলেটা কাশফিয়ার ডাকে পাত্তা না দিয়ে চলে যায়।আর কাশফিয়া রাগ মুখ ফুলিয়ে রোদেলাদের কাছে যায়।

রোদেলারা লাইব্রেরীতে বসে আছে।কাশফিয়া এসে ধপাস করে বসে পরে।কাশফিয়াকে এতো রেগে থাকতে দেখে রোদেলা বলে,

রোদেলা:কিরে তোর আবার কি হইলো?
কাশফিয়া:আর বলিস না একটা কাউয়ার সাথে সকাল সকাল দেখা হলো।
মুন:কাইয়া!!!
কাশফিয়া:হ্যা কাউয়া।কি সুন্দর আমি চিপস খাচ্ছিলাম কোথাথেকে এসে অই কাউয়াটা আমার চিপস গুলো ফেলে দিলো।আমি আর খেতে পারলাম না।
রোদেলা:তাই বলে তুই তাকে কাউয়া বলছিস।
কাশফিয়া:হ্যা তার নাম কাউসার আমি কাউয়াই বলবো।
রুবা:এই মেয়েটাও না পুরো।আচ্ছা চল।হোস্টেলে যাই।
রোদেলা:হ্যা চল।

ওরা সবাই হোস্টেলে চলে আসে।দুপুরের খাবার রোদেলা মুন মিলে বানায়।তারপর ওরা সবাই খাবার খেয়ে নেয়।

নিজের রুমে বসে আদ্রিয়ান রেডি হচ্ছে এয়ারপোর্টে যাওয়ার জন্য।আজকেই সে বাংলাদেশে যাবে।তার রোদেলামইয়ের জীবনে সে ঝুঁকি নেবেনা।আদ্রিয়ান গাড়িতে করে এয়ারপোর্টে আসলো।সব কাগজ পত্র জমা দিতে ভিসা পাসপোর্ট নিয়ে প্লেনে বসলো।

আদ্রিয়ান:”রোদেলামই আমি আসছি।খুব তাড়াতাড়ি আসছি।তোমার আদ্রিয়ান আসছে তোমার কাছে।খুব তাড়াতাড়ি আমাদের দেখা হবে রোদেলামই।”

চেয়ারে বসে আছে একটা লোক।হাতে তার আদ্রিয়ানের ছবি।লোকটা নিজের মুখের কোনে বাকা হাসি রেখে বলে,

তুই আমার ছেলে হয়ে আমার সাথে শত্রুতা করছিস।আমার রক্ত তুই।কিন্তু সেই আমার সাথেই তুই শত্রুতা করলি।যাই হোক আমার পথের বাধা তুই।তোকে আমি দেখে নেবো আদ্রিয়ান।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে