#প্রেমপরশ
#সাদিয়া_শওকত_বাবলি
#পর্ব_২
( অনুমতি ব্যতীত কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ )
কেঁপে উঠলো বেচারী। দ্রুত কানে হাত দিল। তুতলিয়ে জবাব দিল,
-“এএএই তো ধরেছি কান।”
তূর্ণ হাতের মোটা লাঠিটা নিয়ে দুইবার চক্কর কাটলো আরোহীর চারপাশে। অতঃপর বলল,
“এখন মুখে বল ‘আমার স্বামী ব্যতীত কাউকে আর কোনোদিন আমি লাভ ইয়্যু বলবো না।”
আরোহী মিনমিনে কণ্ঠে উচ্চারণ করলো,
“আমার স্বামী ব্যতীত কাউকে….”
সাথে সাথে আবারও ধমকে উঠলো তূর্ণ। রুক্ষ কণ্ঠে বলল,
“মিনমিন করে কি বলছিস? জোরে বল বেয়াদব।”
তূর্ণের ধমকের কিঞ্চিৎ কেঁপে উঠলো আরোহীর ছোট্ট কায়া। তৎক্ষণাৎ গলা বাড়িয়ে বইয়ের পড়া মুখস্থের ন্যায় আওড়ালো,
“আমার স্বামী ব্যতীত কাউকে আর কোনোদিন আমি লাভ ইয়্যু বলবো না। আমার স্বামী ব্যতীত কাউকে আর কোনোদিন আমি লাভ ইয়্যু বলবো না।”
ওষ্ঠে সূক্ষ্ম হাসির রেখা ধরা দিল তূর্ণের। তবে আরোহী তার পানে তাকাতেই সে হাসি গিলে ফেললো দ্রুততার সাথে। পূর্বের ন্যায় মুখশ্রীতে থমথমে ভাব ধারণ করে বলল,
“কি সমস্যা? তোকে থামতে বলেছি আমি? তাহলে থামলি কেন?”
“আর কতক্ষণ এভাবে থাকতে হবে তূর্ণ ভাই? আমার যে ভীষণ পায়ে ব্যথা করছে।”
তূর্ণ কপালে ভাঁজ ফেললো। তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
“একদম বাপের মতো হয়েছিস। আমার বাবা যে তোর বাপকে কথায় কথায় মীর জাফরের বংশধর বলে আজ তার সত্যতা পেলাম। কান ধরে দাঁড়াতে বলেছি পাঁচ মিনিটও হলো না এর মধ্যে পা ব্যথা নামক মিথ্যা অজুহাত দিয়ে বাঁচতে চাইছিস? মীর জাফরের ন্যায় আমার বিশ্বাস নিয়ে ছিনিমিনি খেলার পায়তারা করেছিস? তবে বলে রাখি, আমি তোর মতো কুচক্রী নারীর কথা বিশ্বাসই করি না আর তো করবি বিশ্বাসঘাতকতা। চুপচাপ কান ধরে দাঁড়িয়ে থাক বেয়াদব মহিলা।”
আরোহী শুনলো তূর্ণর কণ্ঠ নিঃসৃত প্রতিটি বাক্য। দুই হাত দ্বারা কান ধরে রেখেই প্রতিবাদী কণ্ঠে বলল,
“আমি মোটেই মহিলা নই তূর্ণ ভাই। আমার বয়স মাত্র ১৭ বছর। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী আমি এখনও শিশু।”
তূর্ণ ওষ্ঠ বাঁকালো। ভেংচি কেটে বলল,
“হ্যা তুই তো শিশুই, একদম বাচ্চা। এখনও বিছানায় মু’তি’স। তা একা একা বুঝি বিছানা নষ্ট করে হচ্ছিলো না তাই নাগর খুঁজতে বের হয়েছিলি?”
আরোহী নাক মুখ কুঁচকালো। কি বিশ্রী কথা বার্তা! বিছানায় মু’তি’স মানে কি? বড় ভাই হয়েছে বলে কি যা খুশি বলবে? তার কি কোনো মান সম্মান নেই নাকি! আরোহী আড়চোখে তাকালো তূর্ণের পানে। কিছুটা ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলল,
“একদম বাজে কথা বলবেন না তূর্ণ ভাই। আমি মোটেও বিছানায় ওসব করি না।”
মেয়েটার পা থেকে মাথা অব্দি চোখ বুলালো একবার। ঠোঁট কামড়ে বলল,
“বিছানায় মো’তা ছেড়ে দিয়েছিস? তাহলে তো তোকে এখন বিয়ে দেওয়া দরকার। পাড়ার মোড়ের কুদ্দুস বয়াতির সাথে তোকে মানাবে বেশ। এমনিও লোকটা বহু বছর নিঃসঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তোর সাথে বিয়ে হলে তার জীবনের নিঃসঙ্গতা ঘুচবে একটু হলেও। আবার মাঝে মাঝে সে তার কোকিলের ন্যায় মিষ্টি সুরে তোকে গান শুনাবেন।”
থামলো তূর্ণ। একটু ভেবে কণ্ঠ বাড়িয়ে গান ধরলো,
“গিরি গিরি গিরি গিরি কে জানি কইলো উত্তর বাড়ির খালা আর দক্ষিণ বাড়ির খালা আরে তাড়াতাড়ি ওইঠা পালা।”
তূর্ণের পুরুষালী কণ্ঠে ধারণ করা “গিরি গিরি গিরি গিরি” এই চারটা শব্দের দাপটেই লাফিয়ে উঠলো আরোহী। বুক ধরফর করে উঠলো তৎক্ষণাৎ। এ আবার কেমন ভয়াবহ আতঙ্কের গান! এই রাতের আঁধারে চারদিকে শুনশান নীরবতায় আর একটু হলেই তো হার্ট অ্যাটাক করিয়ে দিতো আরোহীর। মেয়েটা জোরে জোরে কয়েকটা নিঃশ্বাস নিল। সাথে সাথে তার চোখের সম্মুখে ভেসে উঠলো পাড়ার মোড়ের কুদ্দুস বয়াতির চেহারাটা। লোকটা একটু পাগলা পাগলা ফকির ধাঁচের। শরীরে তার সর্বদা জোড়া তালি দেওয়া একখানা জুব্বার ন্যায় পোশাক থাকে, মাথার চুলগুলো বেশ অনেকদিন ধরে অযত্নে অবহেলায় লম্বা হয়ে ঝট বেঁধে গেছে, দাঁড়ি গোঁফেরও তেমনই অবস্থা। তবে লোকটার গানের গলা বেশ সুন্দর। রাস্তার ধারে একদিন গান গাইছিলো তা শুনেই আরোহী বলেছিল,
“বাহ লোকটা পাগলাটে ধাঁচের হলেও বেশ সুন্দর গান গায় তো।”
ব্যস ঐ বাক্যটাই যেন তার গলার ফাঁ’স হয়ে ধরনীর বক্ষে পদার্পণ করলো। কথাটা কিভাবে যেন তূর্ণের কর্ণে পৌঁছালো। আর তারপর থেকে এখন পর্যন্ত এই পুরুষ ঐ কুদ্দুস বয়াতির নাম নিয়ে জ্বালিয়ে মা’র’লো তাকে। বিরক্তিতে কপাল কুঁচকালো আরোহী। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে বলল,
“এখন ছেড়ে দিন তূর্ণ ভাই। অনেক রাত হয়েছে। আমি ঘরে যাই ঘুম পাচ্ছে ভীষণ।”
“আমার ঘুমে আগুন লাগিয়ে তুই ঘুমাবি? তা তো আমি বেঁচে থাকতে হতে দেব না।”
আরোহী অবাক হলো। কি মিথ্যাবাদী লোক! সে কখন তূর্ণের ঘুমে আগুন লাগালো? আশ্চর্য! মেয়েটা পলক ঝাপটালো। হতবাক কণ্ঠে বলল,
“আমি আবার কখন আপনার ঘুমে আগুন লাগালাম? উল্টো আপনি আমার ঘুমে আগুন লাগিয়ে ধরে বেঁধে এখানে এনে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন।”
“চুপ বেয়াদব। বড়দের মুখে মুখে আবার কথা বলছিস। চুপচাপ কান ধরে দাঁড়িয়ে থাক। নয়তো এখনই তোর বাপ মাকে ডাকবো আর সাথে তো এই মোটা লাঠি আছেই।”
তূর্ণের ফের ধমকে চুপসে গেল আরোহী। আর কোনো বাক্য ব্যয়ের সাহস করলো না মেয়েটা। চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো কান ধরে।
একটু একটু করে সময় গড়ালো। চারদিকের জনমানবহীন নীরব রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে শুধুমাত্র দুই নর নারী। একজন নিজেকে নিশ্চুপতার জড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে মাথা নুইয়ে আর অন্যজন তার পানেই তাকিয়ে রয়েছে চোখে মুখে একরাশ মুগ্ধতা ফুটিয়ে। তূর্ণ আরও কিছুটা সময় নিয়ে তাকিয়ে রইলো আরোহীর পানে। অতঃপর পাক্কা ত্রিশ মিনিটের সমাপ্তি ঘটিয়ে বলল,
“এখন ঘরে যা।”
আরোহী উৎফুল্ল হলো, এতক্ষণে যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো সে। যাক অবশেষে তার শাস্তির পাঠ চুকেছে। দ্রুততার সাথে কান ছাড়লো মেয়েটা। লাফিয়ে লাফিয়ে পা বাড়ালো গৃহের পানে। তবে দরজার নিকটে গিয়েই থমকে দাঁড়ালো সে। আবারও ফিরে তাকালো পিছনে। তূর্ণ কপাল কুঁচকালো। গম্ভীর সুরে প্রশ্ন করলো,
“আবার কি?”
“আপনি সত্যিই বাবা মাকে কিছু বলবেন না তো?”
আরোহীর চোখ মুখে উৎকণ্ঠা। আড়ালে হাসলো তূর্ণ। তবে মুখশ্রীতে গম্ভীরতা এটে রেখেই ছোট করে জবাব দিল,
“না।”
“সত্যি করে বলুন। একদম তিন সত্যি।”
তূর্ণ বিরক্ত হলো। ধমকে বলল,
“তুই গেলি নাকি এখনই ডাকবো তোর মা বাপকে।”
আরোহী আর দাঁড়ালো না এক মুহূর্তও। ঝড়ের গতিতে সে ঢুকলো গৃহের ভিতরে। বলা তো যায় না সত্যি সত্যি যদি এই লোক আবার তার বাবা মাকে ডেকে বসে তবে আর আজ বাঁচতে হবে না। আরোহীকে ছুটতে দেখে এবার প্রকাশ্যেই ওষ্ঠ প্রসারিত করলো তূর্ণ। মেয়েটা যতক্ষণ না দরজা আটকালো ততক্ষণ চেয়ে রইলো ওভাবেই। দরজা আটকাতেই হাতের লাঠিটা ছুঁড়ে ফেললো অদূরে। অতঃপর নিজেও পা বাড়ালো বাড়ির পানে।
২.
সকালের সূর্যটা উজ্জ্বল হতে শুরু করেছে ধীরে ধীরে। চারদিকটাকের ব্যস্ততাও বাড়তে শুরু করেছে একটু একটু করে। আরোহী এখনও এলোমেলো হয়ে পড়ে রয়েছে বিছানায়, গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন সে। এমন সুন্দর সুখকর ঘুমের মধ্যে হঠাৎ দরজা ধাক্কানোর আওয়াজ কর্ণে পৌঁছালো মেয়েটার। এ যেই সেই আওয়াজ নয়, মনে হচ্ছে যেন দরজাটা ভেঙে যাবে এক্ষুনি। সম্ভবত কোনো ভারী বস্তু দ্বারা কেউ দরজায় আঘাত হানছে লাগাতার। আরোহী ধরফরিয়ে উঠে বসলো বিছানায়। আকস্মিক ঘুম ভাঙায় গা হাত পা কাঁপছে থরথর। মস্তিষ্কটাও নিষ্ক্রিয় এই মুহূর্তে। একটু সময় নিয়ে পুরোপুরি ঠিক হলো আরোহী। একটু আগে কি ঘটেছে তা তার সচল মস্তিষ্ক ধারণ করতেই মেয়েটা ক্ষেপে উঠলো। এ কর্ম কার ধরতে সময় লাগলো না একটুও। ভেবেছিল আজ শুক্রবার একটু বেশি ঘুমাবে, গতকাল রাতে এমনিই তূর্ণ এসে জ্বালিয়ে গেছে। তবে সে স্বাদ আর পূর্ণ হলো কই? একটা ঘরের শত্রু বিভীষণ আছে না সেই তো জ্বালিয়ে খেল। আরোহী রেগেমেগে বিছানা ছাড়লো। তেড়ে গিয়ে দরজা খুলতেই চোখের সম্মুখে দৃশ্যমান হলো তার একমাত্র আদরের ছোট ভাই আয়ুশ, এবার অষ্টম শ্রেণীতে লেখাপড়া করছে সে। ছেলেটার হাতে একটা কাঠের চেয়ার। এই চেয়ার দ্বারাই নিশ্চয়ই এতক্ষণ দরজায় আঘাত করছিলো। আরোহীর মেজাজের পারদ বাড়লো ধপধপ করে। চেঁচিয়ে উঠে বলল,
“হতচ্ছাড়া বদমাইশ, ঘরের শত্রু বিভীষণ একটা। এভাবে দরজা ধাক্কাচ্ছিলি কেন? আমি কি ম’রে’ছি’লাম?”
বোনের এত হাঁক ডাক কিছুই গায়ে মাখলো না আয়ুশ। বরং সাবলীল কণ্ঠে বলল,
“যে কুম্ভকর্ণের মতো ঘুম তোর! প্রথমে তো আস্তে ধীরেই ডাকছিলাম উঠছিলি না তাই তূর্ণ ভাইয়ের বুদ্ধিতে এই পন্থা অবলম্বন করতে হলো।”
তূর্ণ! তূর্ণ! আর তূর্ণ। জীবনটা জ্বলিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দিল ঐ লোকটা। রাতে জ্বালিয়ে হয়নি এখন সকালেও জ্বালানো শুরু করেছে। আরোহী দাঁতে দাঁত চাপলো। ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলল,
“এসেছে তূর্ণের চ্যালা। আমার চোখের সম্মুখ থেকে দূর হ বদমাইশ।”
কথাটা বলতে বলতেই রেগেমেগে দরজাটা আটকে দিল মেয়েটা। ব্যস্ত হলো আয়ুশ। দরজায় আবার কড়া ঘাত করে বলল,
“আরে দরজা আটকাচ্ছিস কেন? পুরো কথা তো শুনবি। তূর্ণ ভাইয়ের মা মানে বড় মামী আমাদের দাওয়াত করেছে যেতে বলেছে ও বাড়ি।”
তূর্ণদের বাড়িতে যাবে! কেন? কপালে যতটুকু শনি চড়ানো বাকি আছে সেটুকু চড়াতে! ও বাড়িতে গেলেই তো তূর্ণ আবার তার পিছনে লাগবে তারপর পুরো দিনটাই মাটি। ভিতর থেকে চেঁচিয়ে উঠলো আরোহী। ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলল,
“কোথাও যাব না আমি। ঐ বদমাইশ তূর্ণের বাড়িতে তো নাই।”
আরোহী ফোঁস ফোঁস করতে করতে আবার বিছানায় গা এলিয়ে দিল। তূর্ণের বাবা তূর্য চৌধুরী সম্পর্কে আরোহীর মা ইরার চাচাতো ভাই অর্থাৎ তার চাচাতো মামা। তবে তাদের দুই পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক বেশ উন্নত। একদিকে চাচাতো ভাই বোনের সম্পর্ক তার উপরে আরোহীর মা ইরা আর তূর্ণের মা পৃথা বান্ধবী, আবার ওদিকে আরুশ এবং তূর্য ভাই ভাই। তূর্ণদের বাড়ির পাশেই ইরার আপন ভাই অর্থাৎ আরোহীর আপন মামা ইমন চৌধুরীর বাড়ি। সে বাড়িতেও তাদের অহরহ যাতায়াত তবুও যেন সখ্যতা তূর্যদের বাড়ির সাথেই বেশি। আরোহী নিজের ক্রোধ নিয়েই ঘুমিয়ে পড়েছিল। ঘুমের গভীরতা একটু বাড়তেই বালিশের পাশে থাকা তার ছোট মুঠোফোনটা বেজে উঠলো কর্কশ ধ্বনিতে। মেয়েটা বিরক্ত হলো। এখন আবার কে? তার শান্তি কি এই পৃথিবীর কারো সহ্য হয় না? আরোহী কলটা ধরলো না। কানের উপরে একটা বালিশ চাপা দিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলো আবারও। কিন্তু এ কল যে থামার কোনো নাম গন্ধ নিচ্ছে না। একের পর এক দিয়েই যাচ্ছে। বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকালো মেয়েটা। হাত বাড়িয়ে বালিশের পাশ থেকে মুঠোফোনটা হাতে নিল। নাম্বার ততটা ভালোভাবে খেয়াল না করেই রিসিভ করে কানের কাছে ধরলো মুঠোফোনটা। ঘুম জড়ানো কণ্ঠে বলল,
“হ্যালো আসসালামুয়ালাইকুম কে বলছেন?”
ও পাশ থেকে জবাব এলো না কোনো। শুধু ভারী নিঃশ্বাসের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। আরোহী ভ্রু কুঁচকালো। তিরিক্ষি মেজাজে বলল,
“সমস্যা কি? কল দিয়ে চুপ করে আছেন কেন? মোবাইলে টাকা কি বেশি হয়ে গেছে নাকি?”
থামলো আরোহী। সাথে সাথে ওপাশ থেকে গুরুগম্ভীর কণ্ঠে জবাব এলো,
“তুই নাকি আমাকে বদমাইশ বলেছিস?”
চলবে….