প্রিয় প্রাণ পর্ব-৪৮ এবং শেষ পর্ব

0
390

#প্রিয়_প্রাণ
#সাইয়্যারা_খান
#পর্বঃ৪৮

ঝিরিঝিরি শব্দ তুলে গগন চিড়ে পানির ফোঁটা ঝরছে। সেই দিকে উদাস তাকিয়ে তোঁষা। প্রাণ একবার উঁকি দিলো। তার মা বারান্দায় বসে আছে। আজ ভীষণ ক্ষেপেছে বাবা’র উপর। এখনও আসে নি বাবা। হাতটা মুঠ করে পা টিপে টিপে মায়ের কাছে এলো প্রাণ। জামার কোণায় টান লাগতেই তোঁষা তাকালো। ওর ছোট্ট সোনাটা দাঁড়িয়ে। মুখটা কেমন আদুরে আদুরে। প্রাণ হাতের মুঠোটা মায়ের সামনে এনে বললো,

— এতা নাও আম্মমু। প্লান বাব্বাকে বতে দিবে।

তোঁষা ছেলের মুঠোয় থাকা চকলেটটা নিলো। প্যাকেট খুলে মুখেও দিলো। প্রাণ মায়ের কোমড় ধরে দাঁড়িয়ে আছে। তোঁষা ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। রাগী গলায় বললো,

— তোর বাবা আসলে আজ কথা বলবি না। মনে থাকবে?

প্রাণ চুপ করে রইলো। বাবা তার অনেক ভালোবাসার। তার সাথে কথা না বলে কিভাবে থাকবে প্রাণ? মায়ের মন রাখতেও মিথ্যা টা বলতে পারলো না। তোঁষা বুঝে সেটা। একটু হেসে বললো,

— প্রিয়ম আসবে আজ।

কিছুটা লাফিয়ে উঠলো প্রাণ। প্রিয়’কে তার অনেক ভালোলাগে। আজ দুই দিন পর আবার আসবে প্রিয়। বলতে না বলতেই কলিং বেল বাজলো। দরজা খুলতেই তুষার, তথ্য প্রিয়মকে নিয়ে ঢুকলো। মামা’র কোলে উঠেই আগে প্রিয়ম’কে ছুঁয়ে দিলো প্রাণ। তথ্য ওর গাল টেনে দিয়ে বললো,

— এই তো আমার মেয়ের জামাই।

তুষার চোখ রাঙালো। তথ্য’র এই বায়না বড়ই অদ্ভুত। বাচ্চারা বড় হলে কত কিছুই তো হতে পারে। তখন যদি তাদের মত বদলায়? এখন থেকে ই কি এসব ভেবে রাখা উচিত? তোঁষা আর আরহামে’র কাহিনি না আবার পুনরাবৃত্তি ঘটে? ভয় হয় তুষারের।
দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বোনের দিকে তাকালো তুষার। আটমাস চলছে তোঁষার। এখন এমন একা রাখাটা অনেক রিস্কি হয়ে যায় কিন্তু পরিস্থিতির কবলে পরে এই রিস্কি কাজটাই করতে হচ্ছে।

ওদের সময়টা কাটলো বেশ। আরহাম ফিরলো রাত নয়টার দিকে। বেচারা ভিজে চপচপা অবস্থা। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। সাথে প্রচুর বাতাস। তোঁষা মুখ, গাল ফুলিয়ে টম বানিয়ে রাখলো। কোন মতেই কথা বললো না। আজ কি কথা ছিলো না আরহাম ওকে সময় দিবে? ছিলো তো কিন্তু আরহাম তা রাখে নি৷ সে এসেছে মাত্র। বাবা’কে দেখেই প্রাণ উৎফুল্ল হয়ে এগিয়ে এলো। ভেজা শরীরে ছেলেকে কোলে তুললো না আরহাম। একেবারে চেঞ্জ করে তবেই নিলো। তুষার চোখে চোখে জানালো তার বোন রেগে আছে। আরহাম চোখে হাসলো। সে জানে কিভাবে মানাতে হয়।
.
গগের তখন বিরাজমান মেঘমালা। বৃষ্টি থেমেছে মাত্র ই। তোঁষা’কে নিয়ে হসপিটালে মাত্র ঢুকলো তুষার,আরহাম৷ তথ্য’কে রেখে এসেছে বাচ্চাদের সাথে। তোঁষার মৃদু ব্যাথা হচ্ছিলো তাই ওরা এসেছে কিন্তু এখন ডক্টর জানাচ্ছে ভিন্ন কথা। এখনই নাকি সি সেকশন করাতে হবে। দ্বিতীয় বার বাবা হচ্ছে আরহাম অথচ ঠান্ডার মধ্যে দরদর করে ঘামছে ও। তোঁষা এবার সাহসের পরিচয় দিলো। নিজেই জানালো,

— চা খাব প্রাণ। গরম কিছু খাওয়া দরকার।

আরহাম পারলো না। কিছুতেই উঠতে পারলো না। তুষার চা নিয়ে এলো। আধ ঘন্টা পর ওটিতে নেয়া হবে। শেখ বাড়ীতে জানানো হয়েছে। আদনানের বউ ও অন্তঃসত্ত্বা। তাই ওদের বাসায় রেখে বাকি তিনজন ছুটে এলো৷ তাদের আসতে আসতে তোঁষা’কে ঢুকানো হলো ওটিতে।
হাসতে হাসতে আরহামে’র হাতে চুমু খেয়ে তোঁষা জানালো,

— একটা তুঁষ এনে দিব তোমায়। নিবে?

— নিব।

উত্তর টা দিয়ে মিষ্টি চুম্বন করলো আরহাম। ঝাপসা চোখে দেখলো লাল বাতিটা।

সকলের চিন্তায় ভাটা ফেলে আরহাম কন্যা হাজির হলো ধরণীর বুকে। তার বাবা-মায়ের চোখের পানির ফোঁটার মতো তারও ঝরছে অনবরত পানি। সবার আগে আরহাম ই তাকে কোলে তুললো। কপালে চুমু খেয়ে বললো,

— আমার ছোট্ট তুঁষ।

বাবুটা পলক ঝাপটে দেখলো তার বাবা’কে। আরহাম তোঁষা’র কাছে গিয়ে ওর ঘুমন্ত মুখে হাত বুলালো। তোঁষা চোখ মেলতেই আরহাম বললো,

— এত সুখ কোথায় রাখি প্রাণ?

— বুকে রেখে দাও।

_________________

— প্রাণেশা?

মাথা তুলে এক পলক দেখলো প্রাণেশা। প্রিয়মকে দেখেই মুখ ঘুরিয়ে নিলো৷ এখন মোটেও কথা শুনতে চায় না ও। প্রিয়ম এগিয়ে এসে কিছুক্ষণ ওর গায়ের চাদরটা টানলো। লাভ হলো না। প্রাণেশা উঠবে না। মাঝে শুধু বললো,

— জ্বালিও না ভাবিপু। যাও। ভাইয়ার কাছে যাও। তাকে ভালোবাসো একটু।

— দুষ্ট। উঠ। তোর ভাইকে ডাকব?

— ভাইকে কে বলো প্রাণ উঠবে না।

প্রাণেশা এখন উঠবে না তা বুঝলো প্রিয়ম৷ কথা না বাড়িয়ে তাই রুমে চলে গেলো। রুমে ওদের সদ্য তিনদিনের ছেলেটা বাবা’র কোলে রাখা। প্রিয়ম এগিয়ে আসতেই প্রাণ বললো,

— উঠে নি প্রাণো?

— নাহ।

— ডেকেছিলি ঠিক মতো?

— হু।

কথা বলে প্রিয়ম বিছানায় পা তুলে বসলো। প্রাণ ছেলেকে ওর পাশে শুয়িয়ে দিয়ে বললো,

— খাবে ও।

প্রিয়ম ঢোক গিললো। প্রাণের দিকে তাকাতেই ও বললো,

— এভাবে কি দেখিস? খাবে ও। খাওয়া। আমি বাবা’কে দেখে আসি।

প্রিয়ম মাথা নাড়লো। প্রাণ যেতেই দীর্ঘ শ্বাস ফেললো।
.
বিছানায় শোয়া আরহাম। প্রাণ যেতেই আরহাম চোখ মেললো তবে খুবই অল্প। ভ্রু কুচকে গেলো প্রাণে’র। এভাবে কেন বাবা চোখ মেললো? কিছু মনে করে তারাতাড়ি বাবা’র বুকে হাত রাখতেই চমকালো। চিৎকার করে ডাকলো,

— প্রিয়! প্রিয়!

অতঃপর আবার বাবা’কে বুকে তুলে নিয়ে বলতে লাগলো,

— বাবা? বাবা? তোমার কি খারাপ লাগছে?

প্রিয়ম দৌড়ে এলো। অবস্থা বুঝে কাঁদো কাঁদো চোহারা হয়ে এলো ওর। প্রাণেশা ও ছুটে এসেছে ভাইয়ের চিৎকারে। আরহাম গুঙিয়ে গুঙিয়ে কিছু বলছে তা বুঝতে পারলো না কেউ অথচ প্রাণ স্পষ্ট বুঝছে তার বাবা বলছে সে এখন তার প্রাণের কাছে যেতে যায়। আর একা থাকতে চায় না৷ চোখ দুটো বুজে দুই হাতে বাবা’কে বুকে চেপে রাখলো প্রাণ৷ পরপর চোখ বুজে ফেললো আরহাম৷ প্রাণের মনে হলো ওর বুকে কিছুর চাপা পরলো৷ শ্বাস নিতে বড্ড কষ্ট হচ্ছে।
.
আন্ধকার বলে, ভাই তুমি বড় কালো,
আলো বলে, ভাই তাই তো তুমি আলো।
অন্ধকার আছে বলেই আলোর এত মূল্য। নিশুতি রাত আছে বলেই মানুষ স্বপ্ন বুনে ভোরের আলোর। বেঁচে থাকার তাগিদ আছে বলেই তো স্বপ্ন দেখে দিন রাতে। একসময় সবটা ফুড়ায়। প্রাণে’র আয়ু ফুরায়,আগমন ঘটে নতুন প্রাণে’র।

বছর গুটি আগে তোঁষা চলে গিয়েছিলো। সেই শোকেই মূর্ছা যায় আরহাম। দিন দিন যখন তার অবস্থার অবনতি হচ্ছিলো তখন থেকেই প্রাণ যেন শোকে শোকে থাকা শুরু করলো। “বাবা” তার জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। যাকে সে সবটা উজার করে ভালোবাসতো। ভালো বাসে।

তোঁষা, আরহামে’র সংসার ছিলো প্রাণোচ্ছল। ভালোবাসাময়। গুটি বছর আরহাম বহু কষ্টে রইলো তার প্রাণ ছাড়া। অবশেষে সময় ঘনালো। আরহাম বিদায় নিলো। ধরণীর বুকে রয়ে গেলো তার দুটো প্রাণ। প্রাণ আর প্রাণেশা। তোঁষা আর আরহামে’র প্রেমময় দুটি অংশ।

পরিশিষ্ঠঃ

আরহাম নেই আজ চল্লিশতম দিন। মসজিদে দোয়া পড়ানো হয়েছে। প্রাণ রোজকার ন্যায় আজও বাবা’র কবরে গিয়েছিলো সকালে। অভিমানি চোখে মা’কে দেখেছে। বাবা সবসময় মা’কে বেশি ভালোবাসত। প্রাণ দেখাতে এতে সে অনেক রাগ করে অথচ মা’কে সেও ততটাই ভালোবাসত। তার মা ছিলো নরম,তুলতুলে এক পুতুল। ছোট্ট খাট্ট এক প্রেমময় নারী।

বাসায় ফিরতেই প্রাণ খেয়াল করলো আজ অনেক মানুষ এসেছে বাসায়। তুষার’কে দেখেও না দেখার ভান ধরলো প্রাণ। পা বাড়ালো রুমের দিকে তখনই হঠাৎ কিছুতে তার নজর আটকালো। প্রিয়মের পরণে আজ শাড়ী। সাদার মধ্যে একটা সুতির শাড়ী পরেছে। প্রেগ্ন্যাসির কারণে কিছুটা গোলগাল দেখা যাচ্ছে ওকে। ওর মধ্য শাড়ীতে আজ বড়ই ভিন্ন লাগলো। প্রাণ মুগ্ধ হলো। চেয়ে রইলো নেশাক্ত নয়নে। হুট করে ই তার অন্তরে জাগ্রত প্রেম ছিটকে গেলো। প্রিয়মের কোমড় থেকে শাড়ী কিছুটা সরেছে। সেদিকে তাকিয়ে আছে আসিম। আদনানের ছেলে সে। এখনও বিয়ে করে নি। মনে মনে ভয়ংকর এক গালি উচ্চারণ করলো প্রাণ। অতঃপর ধুপধাপ পা বাড়ালো রুমে। চিৎকার করে ডাকলো,

— প্রিয়! প্রিয়!

ডাক পরতে দেড়ী দৌড়ে আসতে প্রিয়মের দেড়ী হলো না। প্রাণের চোখ মুখ দেখে ভয় ও পেলো কিছুটা। প্রাণ কাউচে বসা মাথা নিচু করে। ওভাবে থেকেই বললো,

— দরজা লক কর।

কাঁপা কাঁপা হাতে তাই করলো প্রিয়ম। তবে নড়লো না। ঠাই দাঁড়িয়ে রইলো। প্রাণ এবার মাথা তুললো। ওর নজর দেখেই কেঁদে উঠলো প্রিয়মের মনটা। আঙুলের ইশারায় কাছে ডাকতেই গুটি গুটি পা ফেলে প্রিয়ম এগিয়ে এলো। বসা অবস্থায় ই নিজের হাতটা বাড়ালো প্রাণ। ছুঁয়ে দিলো প্রিয়মের নরম কোমড়টা। টেনে আনলো নিজের কাছে। অতি আদুরে ভঙিতে হাত নাড়ালো। প্রিয়ম শিউরে উঠলো। গা মুচড়ালো। নড়তে পারলো না। আকস্মিক ব্যাথাতে আর্তনাদ শুনা গেলো। প্রাণ থামলো না। বড়ই বেসামাল ভঙিতে সে তার হাতের ব্যাবহার করলো সে। হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো প্রিয়ম। র*ক্ত বের না হলেও ব্যাথায় ম’রে যাওয়া বাকি তার। টলমলে পা তার আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না। ভেঙে বসে পরলো ফ্লোরে।
প্রাণ ও বসলো। কাছে টেনে নিলো তার প্রিয়কে। পেটে আরেকটু আঙুল ডাবিয়ে প্রশ্ন করলো,

— আর কাউকে দেখাবি পেট?

নাক টানতে লাগলো প্রিয়। কাঁদলেই তার নাক দিয়ে পানি পরে। প্রাণ উল্টো হাতে ওর নাকের পানি মুছে দিলো। পুণরায় প্রশ্ন করলো। প্রিয়ম অল্প স্বরে বললো,

— না।

— মনে থাকবে?

— হু।

— সত্যি?

— হু।

পেট থেকে হাত সরালো প্রাণ। ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠছে প্রিয়ম। সিজারিয়ান পেট তার। ব্যাথাটা আর সহ্য হলো না। প্রিয়’র পাঞ্জাবীটা খামচে ধরে পা দাপড়ে কাঁদতে লাগলো। প্রাণের বুকটা ছটফট শুরু করলো। দেখতে পারলো না তার প্রেয়সীর ব্যাথা। দুই হাতে প্রিয়মের মুখটা ধরে বলতে লাগলো,

— প্রিয়? প্রিয়? আমি সরি। সরি তো। কাঁদিস না। শুন, আমার কথা শুন, প্রিয় আমার কাঁদে না।

ব্যাথায় কাতরাতে কাতরাতে একসময় চুপ করে গেলো প্রিয়। প্রাণের বুকে লেপ্টে রইলো। চুলের ভাজে আদুরে হাত বুলিয়ে যাচ্ছে প্রাণ। শান্ত ভাবে বলছে,

— আসিফ তোর পেটের দিকে তাকিয়ে ছিলো প্রিয়। আমরা আমাদের ফ্ল্যাটে চলে যাব। এখানে থাকার দরকার নেই।

প্রিয় কথা বললো না। তার কথা বলতে ইচ্ছে করছে না আপাতত। বেশ খানিক পর মাথা তুললো ও প্রাণের বুক থেকে। নিজেকে ঠিক করে রুম থেকে বেরুলো। হাতে ইনসুলিন নিয়ে আসতেই প্রাণ পাঞ্জাবি গুটিয়ে দিলো। পেটে পুশ করে দিলো প্রিয়। জন্মগত ভাবেই ডায়াবেটিস পেসেন্ট প্রাণ। মায়ের থেকে জেনেটিক ভাবেই এটা পেয়েছে সে। বংশ পরম্পরায় পেয়েছে আরো কিছু ডিসঅর্ডার।
প্রিয় এক পলক ঘুমন্ত ছেলেকে দেখে উঠে যেতে নিলেই প্রাণ ওর হাত ধরলো। চোখে চোখে তাদের কথা হলো। প্রিয় হাত ছাড়াতে নিয়ে বললো,

— অনেক দেড়ী হলো। তোমার খেতে লেট হচ্ছে। মাথা ঘুরাবে একটু পর।

— শোন না।

— বলো শুনছি।

— আমাকে ছেড়ে চলে যাবি তুই?

প্রিয় প্রাণের কোলে বসলো। দুই হাতে গলা জড়িয়ে ধরে বললো,

— প্রিয় তার প্রাণ ছাড়া কিভাবে বাঁচবে?

প্রাণ হসলো। দুই হাতে তার প্রিয়’র গাল ধরে চুমু খেলো কপালে। প্রিয় জানে প্রাণ ডিসঅর্ডারের কারণেই এতটা সেনসেটিভ আচরণ করে কিন্তু পরক্ষণেই ঠিক হয়ে যায়। ট্রিটমেন্ট নিজ থেকেই নিচ্ছে প্রাণ। প্রিয় অপেক্ষায়। একদিন তার প্রাণ ঠিক হবে। এই অসুস্থ ভালোবাসা থাকবে না। থাকবে শুধু প্রেমময় প্রিয় আর তার প্রাণ।

#সমাপ্ত…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে