#প্রিয়_অর্ধাঙ্গীনি
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
#পর্ব_৪৮
,
সাদা কাফনের কাপড়ে সুন্দর করে মুড়িয়ে খাটিয়ায় শুইয়ে রাখা হয়েছে রৌদ্রকে। একে একে সবাই আসছে দেখে আহাজারি করছে। শাহানারা কান্না করতে করতে যেনো চোখের পানি ফুরিয়ে গেছে। জয় এখনো হসপিটালের বেডে। শশী মোটামুটি সুস্থ। তবে এখনো শরীর দুর্বল। শাহানারা কে সমুদ্রের কথা এখনো জানানো হয়নি। এক ছেলের শোকেই কেমন পাথর হয়ে গেছে। আরেক ছেলের মৃত্যুর কথা সয্য করতে পারবে নাহ। সকাল দশটা নাগাদ জানাযা। পুলিশ ড্রাইভার দুজনকে এ্যারেষ্ট করেছে। এখনো তদন্ত চলছে। এটা শুধুই এক্সিডেন্ট নাকি অন্যকোনো চক্রান্ত। শশী শাশুড়ী কে শান্তনা দিচ্ছে। এখনো ও বা ইমরান কেউই মুখ খুলেনি। আগে রৌদ্রের কাজটা শেষ হোক তারপর না হয় ব্যাবস্হা নেওয়া যাবে। দুটোদিন শরীরের উপর এতো ধকল গিয়েছে যে এখন সামান্য কোনো কিছুতেও ভয় লাগছে। বাড়িতে মানুষের সমাগম। শশী কখন থেকে ইমরান কে খুঁজতেছে কিন্তু কোথাও ইমরানকে পায়নি৷ তখন অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলো। ভেবেছিলো হয়ত ইমরান কেউ ওরা রৌদ্রের মতো চিরতরে শেষ করে দিয়েছে। বেলা বাড়ছে জামশেদ সবাইকে তাড়া দিলো। এভাবে এতো সময় মুর্দা রাখা ঠিক নয় তার আত্মার কষ্ট হয়। চারজন খাটের চার পায়া যখনি ধরতে যাবে তখনি সাদা রঙের বড় গাড়িটা গেট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো। সকলে সেদিকে তাকাতেই গাড়ির দরজা খুলে একে একে আর্মি ইউনিফর্ম পড়া কয়েকজন বেড়িয়ে আসলো। ইমরান ও গাড়ি থেকে নেমে পুনরায় ভিতরে হাত বাড়িয়ে দিলো। একটা টাওজার আর গেঞ্জি পড়া সমুদ্র গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসলো। দুজন দুদিক থেকে ধরে আছে। মাথা থেকে পা অবধি ক্ষত বিক্ষত শরীর। মুখের এক অংশ আধ পোড়া। সমুদ্র কে দেখে সকলে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। কাল থেকে আজ এখন অবধি যে মানুষ টা সকলের কাছে মৃত ছিলো। হঠাৎ তাকে জীবিত অবস্থায় দেখলে যে কারোরই অবাক হওয়ার কথা। ইমরান আর অন্য একজনের কাঁধে ভর দিয়ে সমুদ্র রৌদ্রের খাটিয়ার কাছে আসলো। সাবধানে হাঁটু মুড়ে বসে রৌদ্রের স্নিগ্ধ মুখটার দিকে তাকালো। নিষ্পাপ পবিত্র টলটলে চেহারাটা। যেনো এখনি চোখ মেলে তাকাবে। সমুদ্র এক ধ্যানে কিছুক্ষণ রৌদ্রের বন্ধ চোখের দিকে চেয়ে থাকলো। কিন্তু কই রৌদ্রতো একটাবারের জন্যও চোখ মেলে তাকালো নাহ। সমুদ্র ইমরান এর কাঁধে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ালো। ইশারায় রৌদ্রকে নিয়ে যেতে বলল। সকলে রৌদ্রের খাটিয়ে কাঁধে নিয়ে সামনের দিকে এগোলে হঠাৎ শাহানারা চোখ মেলে তাকালো। কান্না করতে করতে জ্ঞান হারিয়েছিলো। কেউ আর জ্ঞান ফিরাই নাই। জ্ঞান ফিরে রৌদ্রকে নিয়ে যেতে দেখেই চিৎকার করে কেঁদে উঠল। সমুদ্র কে দেখে দৌড়ে গিয়ে সমুদ্রের বুকে পড়ে কাঁদতে কাঁদতে বিলাপ করতে লাগলো। সমুদ্রের কষ্ট হলেও সেটা প্রকাশ করলো নাহ। মায়ের মাথায় হাত রেখে বলল।
“কেঁদো না মা।
শাহানারা কান্না করতে করতে আবারও জ্ঞান হারিয়েছে। এবার সকলে মিলে ওনাকে ধরে রুমে নিয়ে গেলো। সমুদ্র কে রুমে নিয়ে যেতে চাইলে হাত উঁচিয়ে বাঁধা দিলো। ওখানেই বসে রৌদ্রের নিয়ে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো। রৌদ্রকে ওদের বাড়ির পিছনের দিকটাই কবর দেওয়া হবে। ইমরান আশে পাশে তাকিয়ে শশীকে খোঁজার চেষ্টা করলো। শশীই এখন সমুদ্র কে সামলাতে পারবে কিন্তু পেলো নাহ। হয়ত আছে কোথাও। সমুদ্র ইমরান কে বলতেই ইমরান সমুদ্র কে ধরে ওর রুমে দিয়ে আসলো।
,,,,,,,,,,,,,
শরীরটা ভালো লাগছে না বিধায় রুমে এসে বসে ছিলো শশী। বিছানার উপর হাঁটু মুড়ে বসে দুহাত ভাজ করে হাঁটুর উপর রেখে সেখানে মাথা দিয়ে বসে ছিলো। রৌদ্রের সাথে দেখা হওয়া কথা বলা সবটা মনের মধ্যে কেমন উতলে উঠছে। থেকে থেকে হেঁচকি তুলছে। কান্না করার ফলে মাথাটাও ভীষণ বেথ্যা করছে। কখনো এভাবে কাছের কাউকে হারানো বেথ্যা পায়নি এই জন্য কষ্টটা বেশিই হচ্ছে। হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে শশী মাথা তুলে সেদিকে তাকালো। দেখলো ইমরানসহ আরো একজন সমুদ্র কে ধরে রুমে আনছে। শশী সমুদ্রকে দেখে তড়িঘড়ি করে বিছানা থেকে নামলো। নেমে এক পাশে দাঁড়িয়ে টলমল চোখে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে। ইমরান সমুদ্রকে সাবধানে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে এক পলক শশীর দিকে চেয়ে বেরিয়ে গেলো। যাওয়ার আগে সাবধানে দরজাটা ভিড়িয়ে দিয়ে গেলো। সমুদ্র খাটের সাথে হেলান দিয়ে বসে আসে। চোখ দুট লাল হয়ে আছে হয়ত কান্না না করার দুরুন এমনটা হয়েছে। বাঁ হাতে মাথাটা চেপে ধরে পাশে শশীর দিকে তাকালো। দেখলো শশী চোখ ভর্তি পানি নিয়ে সমুদ্রের দিকে করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সমুদ্র হাতের ইশারায় শশীকে নিজের কাছে ডাকলো। শশীও নিঃশব্দে সমুদ্রের দিকে এগিয়ে আসলো। আস্তে করে পাশে বসতেই সমুদ্র শশীর মাথাটা নিজের বুকে রাখলো। ব্যাস এতোটাই বুঝি দরকার ছিলো। সমুদ্রের বুকের কাছের গেঞ্জি দুহাতে চেপে ধরে জোরে জোরে কান্না করতে করতে শশী বলে উঠল।
“আমি পারিনি সমুদ্র । আপনার দেওয়া দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। আমি রৌদ্র ভাইয়া কে বাঁচাতে পারিনি৷ জয়কেও দেখে রাখতে পারলাম নাহ। হসপিটালের বেডে শুয়ে না জানি ছেলেটা কত কষ্ট পাচ্ছে। আমাকে মাফ করে দিন সমুদ্র আমি কিচ্ছু দেখে রাখতে পারিনি।
ক্রমশ শশীর কান্না বেড়েই চলেছে। সমুদ্র শশীর মাথাটা বুকে চেপে ধরে শক্ত চোখে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে৷ শশীকে থামালো নাহ আর না নিজে কোনো শব্দ মুখ দিয়ে বের করলো। শুধু চুপ করে এক ধ্যানে বাইরে দিকে তাকিয়ে আছে।
,,,,,,,,,,,,,,,,
” আজকের বিশেষ খবর। গতরাতে হাইওয়ে তে মাদক সেবন করে গাড়ি চালানোই এক্সিডেন্ট এ মন্ত্রী আশফাক মির্জার একমাত্র ছেলে জোসেফ মির্জা নিহত। তার ডেটবডি সকালে পুলিশ ব্রিজের নিচে নদী থেকে উদ্ধার করেছে। জানা গেছে অতিরিক্ত মাদক সেবন করে গাড়ি চালানোর ফলে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীতে পড়ে যায়। এবং তিনি ওখানেই মারা যায়। তদন্ত চলছে বাকি খবর পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ফিরে আসছি ছোট্ট একটা বিরতির পর।
মুঠোফোনে খবরটা শুনতেই বাঁকা হেসে সামনের দিকে তাকালো সমুদ্র। মাঝে পেরিয়ে গেছে অনেকগুলো দিন৷ দিন চলে গেছে বাড়িতে আসা আত্মীয় বন্ধু বান্ধবরাও চলে গেছে। কিন্তু শোকের রেশটা এখনো যেনো গিয়েও যাচ্ছে নাহ। সমুদ্র মুটামুটি সুস্থ পায়ের আঘাতটা এখনো তেমন সাড়েনি হাঁটতে গেলে খুঁড়িয়ে হাটতে হয়। মুখের এক অংশের ঘা অর্ধেক শুকিয়ে গেলেও দাগটা বেশ ভালোই বোঝা যায়। রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে তাতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সমুদ্র। এই সেই রাস্তা যেখানে রৌদ্র মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলো। জয় কাঁটা মুরগির মতো ছটফট করছিলো। শশী একটু সাহায্যের আশায় অসহায় হয়ে দিক বেদিক ছুটছিলো। এই কথাগুলো মনে হতেই নিজের উপর রাগ হয় কেনো সে তার পরিবারের বিপদের সময় পাশে থাকতে পারলো নাহ৷ তার দায়িত্বের কাছে সে হেরে গেলো। কীভাবে থাকতো তখন সে তার পরিবারের কাছে। তখন যে তার মুখের দিকে চেয়ে ছিলো শত শত লাখ পরিবার। সে যদি তার পরিবারের কথা ভেবে তার দায়িত্ব থেকে পিছিয়ে আসতো তাহলে শত শত মানুষের প্রাণ যেতো। তার কাজই তো এটা নিজের জীবনকে বিপদে ফেলে দেশকে রক্ষা করা। দেশের মানুষ কে রক্ষা করা। সমুদ্রের এসব ভাবনার মাঝেই পাশ থেকে ইমরান বলে উঠল।
“এরপর?
” এরপর কি হবে সেটা সময়ের উপরই ছেড়ে দাও ইমরান। সময়ই সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।
সমুদ্রের কথাশুনে ইমরান সমুদ্রের দিকে তাকালো। যদিও খবরে বলছে জোসেফ এর মৃত্যু কীভাবে হয়েছে৷ তবে সোতো জানে আসল ঘটনাটা কি। ইমরান সমুদ্রের সামনে গিয়ে বলল।
“আই লাভ ইউ স্যার। আমি কি আপনাকে একবার জড়িয়ে ধরতে পারি?
ইমরান এর কথাশুনে সমুদ্র ইমরান এর দিকে তাকালো। ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি ফুঁটিয়ে ইশারায় ইমরান কে নিজের কাছে ডাকলো। ইমরানও হেসে সমুদ্র কে জড়িয়ে ধরে সড়ে এসে চোখের পানি মুছতে মুছতে বলল।
” রৌদ্র নেই তাতে কি হয়েছে আমিতো আছি। কথা দিচ্ছি কখনো আপনাকে ছেড়ে যাবো নাহ। ছোট ভাই হয়ে সর্বদা আপনার পাশে থাকবো। এই ইমরান এর জান আপনার জন্য সব সময় হাজির।
“কথাটা একটু সিনেমাটিক হয়ে গেলো নাহ ইমরান?
সমুদ্রের কথাটা শুনতেই ইমরান হেসে ফেলল।
,,,,,,,,,,,,,,
কলিং বেল এর আওয়াজ পেয়ে শশী ভারী পেট নিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো। বাড়িতে দরজা খোলার মতো সে ছাড়া আপাতত কেউ নেই। জয় রুমে ঘুমাচ্ছে। শাহানারাকেও ঘুমের ঔষধ দিয়ে ঘুম পারিয়ে রাখা হয়েছে। কাজের খালাও ছাঁদে গিয়েছে কাপড় শুকাতে দিতে। শশী উঠে দরজা খুলে দিতেই অবাক হয়ে সামনে তাকালো। সাদা ফর্সা বাদামী চোখ লাল চুলের একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নিসন্দেহে যে কেউ প্রথম দেখায় বুঝে ফেলবে মেয়েটা বিদেশী৷ কিন্তু এই বাড়িতে বেদেশী কেউ কেনো আসবে? লিজা বড় বড় চোখ করে শশীর দিকে তাকিয়ে আছে। ওর সামনে দাঁড়ানো ছোটখাটো গড়নের চিকন ফুলে উঠা পেট নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটাই শশী। রৌদ্রের সেই ছোট্ট শশী। লিজা শশীকে দেখে মিষ্টি হেসে হাত বাড়িয়ে ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলায় বলল।
” হাই আমি লিজা৷ তুমি নিশ্চয়ই শশী? আমি তোমাকে প্রথম দেখাতেই চিনে ফেলেছি।
কোনো বিদেশী মেয়ের মুখে নিজের নাম শুনে শশী যেনো পুরো অবাক। ওর জানামতে ও এতো জনপ্রিয় কেউ নয় যে সদূর বিদেশ থেকে কেউ ওর সাথে হাত মেলাতে আসবে।অবাক হয়ে ও হাত বাড়িয়ে দিলো। হাত মিলিয়ে অবাক কন্ঠে বলল।
“আপনি আমাকে চিনেন? কিন্তু কীভাবে?
শশীর প্রশ্ন শুনে লিজা হাসলো। লিজা মেয়েটাই যে এমন সব সময় হাসিটা যেনো মুখে লেগে থাকে। পুনরায় মিস্টি হেসে বলল।
” আমি লিজা রৌদ্রের বন্ধু। আসলে বেশ কয়েকদিন হলো রৌদ্রের কোনো খবর নেই। কত টেক্সট মেল করলাম তবুও কোনো খবর নেই। ও বোধহয় এটাও জানে নাহ যে ও কত বড় একটা পুরুষ্কার পেয়েছে। ওর আঁকা ছবি সবার মন কেঁড়েছে। আমাদের সবাইকে পিছনে ফেলে ও সামনে এগিয়ে গিয়েছে। কোথায় সে? ওকে একটু ডেকে দাও তো এমন মার দেবো নাহ। বাড়িতে এসে আমাদের সবাইকে ভুলে গিয়েছে।
এবার শশীর কাছে সবটা পরিষ্কার হলো। তবে রৌদ্রের কথা শুনতেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো। লিজাকে নিয়ে ভিতরে আসলো। লিজাও নিজের সাথে আনা বড় একটা কিছু র্যাপিং পেপারে মোড়ানো। জিনিসটাকে টেনে ভিতরে আসলো। শশী সোফায় বসতে বললে লিজা বসে আশে পাশে তাকালো। কিছুই মাথার মধ্যে ঢুকছে নাহ। শশী লিজাকে সবটা বলতেই লিজা যেনো পাথর হয়ে গেলো। এতোটা দূর থেকে যেই বন্ধুর জন্য ছুটে আসলো তার এমন করুন পরিনতি শুনলে কেই বা ঠিক থাকতে পারে। কোনোমতে কান্না আটকে কাঁপা কন্ঠে শশীকে জিগাস করলো লিজা।
“কোথায় ও?
শশী লিজাকে রৌদ্রের কবরটা দেখিয়ে দিতেই লিজা শশীকে থামিয়ে দিয়ে বলল।
” তুমি থাকো পাগলটার সাথে আমার অনেক কথা জমে আছে আমি একাই যেতে পারবো। তোমাকে আর কষ্ট করে যেতে হবে নাহ। এখানে বসে থাকো আমি কথা শেষ করেই আসছি।
কথাটা বলেই লিজা রৌদ্রের কবরের দিকে চলে গেলো। শশী অবাক চাহনিতে সেদিকে চেয়ে থাকলো। কই রৌদ্র ভাইয়া তো কখনো বলেনি লিজা নামের তার কোনো বন্ধু আছে।
,,,,,,,,,,,,,,
“তুমি অনেক সার্থপর রৌদ্র। সবাইকে শুধু দিয়েই গেলে। কখনো কিছু নিয়ে গেলে নাহ। জানো আমি আজকে তোমার শশীকে দেখেছি। তুমি ঠিকি বলেছিলে তোমার শশী ছবির থেকেও সুন্দর। ওই রঙ তুলি তার সৌন্দর্য কে ক্যানভাসে মেলে ধরতে অক্ষম। তুমি শুধু আড়ালে ভালোবেসে গেলে। বিনিময়ে ভালোবাসা পেলে না বরং দু হাত ভরে কষ্ট টাকে আপন করে নিলে। তুমি চেয়েছিলে তোমার সত্যিটা কেউ কখনো না জানুক। কথা দিচ্ছি কেউ কখনো জানতে পারবে নাহ। এক পাগল প্রেমিক ছিলো যে কিনা কাউকে উজার করে ভালোবেসে গিয়েছিলো। কখনো অপরপক্ষ থেকে ভালোবাসা আশা করেনি। তুমি ঠিকি বলেছিলে কিছু কিছু সত্যি ভীষণ অপ্রিয় হয়। সেই সত্যিটা কখনো সামনে না আসায় সবাই জন্য মঙ্গল। তাই হবে! আসবে না সামনে। আমার সাথে সাথে এই অপ্রিয় সত্যিটা অনেক দূরে চলে যাবে। কখনো তোমার শশীর সামনে আসবে নাহ। তোমার শশী জানতেও পারবে নাহ কেউ তাকে পাগলের মতো ভালোবেসেছিলো। ওপাড়ে ভালো থেকো। আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবো পরের জনমে যেনো শশী শুধুমাত্র তোমার হয়েই পৃথিবীতে আসে। এতো সবের মাঝে আমি একটা কথা ভুল বলেছি। তোমার শশী তোমার সাথেই চলে গিয়েছে। এখন যাকে দেখেছি সে রৌদ্রের শশী নয় বরং সে সমুদ্রের শশী। ওপাড়ে ভালো থেকো বন্ধু।
কথাগুলো বলে চোখ বন্ধ করে নিলো লিজা। ফর্সা গাল বেঁয়ে পানির ফোঁটা থুঁতনি থেকে টপ করে মাটিতে পড়লো। বেশ খানিকক্ষণ রৌদ্রের কবরের দিকে তাকিয়ে থেকে চলে গেলো।
#চলবে?