#প্রিয়_অর্ধাঙ্গীনি
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
#পর্ব_২৯
,
মানে?
মানে আবার কি আসলে ভাইয়া তুই না সবসময় জ*ঙ্গি, গুন্ডা এদের পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে এখন সবাইকেই সন্দেহের চোখে দেখা শুরু করেছিস। আরে ভাই কালবাদে পরশো তোর বিয়ে এখন অন্তত এসব ভাবা বাদ দিয়ে নিজের বিয়ের কথা ভাব নয়ত দেখা যাবে বিয়ের দুইদিন পরেই তোর বউ পালিয়েছে। আর আমার কিছুই হয়নি তোকে তো বললামই আমি আমার একটা জিনিস হারিয়ে ফেলেছি তাই সেদিন ওমন ব্যাবহার করে ফেলেছিলাম। আর জিনিসটা তো প্রথমবার হিজলতলী তেই দেখেছিলাম এই জন্যই ওখানে গিয়ে ছিলাম খুঁজতে, কিন্তু পায়নি আমিই অনেক দেরি করে ফেলেছি। আমার যাওয়ার আগেই ওটা হারিয়ে গেছে তবে ওটা হারিয়ে যাওয়াই আমার আর এখন কোনো আফসোস নাই। কারণ জিনিসটা একজন সঠিক মানুষই পেয়েছে।
শেষের কথাগুলো রোদ্র শুকনো হেসে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে বলল। শাহানারা রোদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে। সে যা ভেবেছিলো রোদ্র তা করেনি ভাই ভাইয়ের সাথে বিরোধীতা করেনি। আজকে তার ভিতরটা শান্ত হয়ে গেছে, নাহ সে তার সন্তানদের সঠিক শিক্ষা দিতে পেরেছে। রোদ্র কথা বলতে বলতে সমুদ্রের কাছে চলে আসলো। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মুচকি হেসে বলল, দেখবি ভাইয়া তোর বিয়েতে আমিই সবচেয়ে বেশি আনন্দ করবো আমি অনেক খুশি হয়েছি। আরে এখনো কত কাজ বাকি জয় কোথায়? ওকেও কাজে লাগিয়ে দেবো আর মা দেখি কি কি লিস্ট বানিয়েছো।
কথাগুলো বলে রোদ্র শাহানারার দিকে যেতে গেলে পিছন থেকে সমুদ্র গম্ভীর কন্ঠে বলল। কথা ঘুরাছিস কেনো? আমার সাথে একদম মিথ্যা বলতে আসবি নাহ। সত্যি করে বল তুই হিজলতলী কেনো গিয়েছিলি? কথাটা বলে সমুদ্র একটা ঢোক গিলে আস্তে করে বলল, তুই কি শশী কে।
হ্যাঁ শশীর কাছেই তো প্রথমে জিগাস করতে চেয়েছিলাম কিন্তু পরে ভাবলাম ও চিনবে কিনা এই জন্যই তো কিছু না বলে চলে আসলাম৷ আসলে হয়েছে কি ভাইয়া আমি যেদিন প্রথম হিজলতলী তে যায় সেদিন একটা মেয়েকে দেখে ছিলাম। অঞ্চলা হরিণীর মতো ছুটে চলছিলো৷ যেনো রঙীন রঙ তুলি দিয়ে সদ্য আঁকা জীবন্ত ছবি। কথাটা বলতেই রোদ্র আনমনে সেদিনের প্রথম দেখা শশীর মুখটা ভাবতে লাগলো। অতঃপর নিজের ভাবনা থেকে ফিরে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে দেখে সমুদ্র ভ্রু কুঁচকে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। তাই দেখে রোদ্র হেসে বলল, তারপর মেয়ে টাকে আমার পছন্দ হয়ে গেলো ভাবলাম তোর বিয়ের পরেই বিয়েটা সেরে ফেলবো। কিন্তু তুই তো বিয়ে করলি নাহ আর আমাকেও চলে যেতে হলো আমিও আর ওটা নিয়ে বেশি মাথা ঘামালাম না। ভাবলাম দেশে ফিরেই একবারে বিয়েটা করে ফেলবো। কিন্তু ততদিনে দেরি হয়ে গেলো যা হওয়ার সেটাই হলো মেয়েটার অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। এই হলো মোট কথা আর তুই কি না কি ভাবছিস।
তুই সত্যি বলছিস তো? আর মেয়েটার বিয়ে ঠিক হয়েছে বিয়ে হয়ে তো যায়নি। তুই চল আমার সাথে আমি ওই মেয়ের বাবার সাথে কথা বলবো আমার ভাই কোন দিক থেকে কম শুনি। এখনি চল আমিও দেখতে চাই মেয়ের বাবার কেমন ছেলে পছন্দ।
সমুদ্রের কথায় রোদ্র হেসে মনে মনে বলল, মেয়েটা কে জানলে তুই এই কথাগুলো কখনোই বলতে পারতি না ভাইয়া। তুই সয্য করতেও পারতি নাহ তার চেয়ে বরং তোর না জানায় থাক। কথাগুলো বলে সমুদ্র কে বলল, কি দরকার ভাইয়া আর তার চেয়েও বড় কথা মেয়েটা জানেই না যে আমি তাকে ভালোবাসি। তাহলে এখানে মেয়েটার কি দোষ, আর দেশে কি মেয়ের অভাব আছে নাকি। আচ্ছা এসব বাদ এখন সবকিছুর আয়োজন করতে হবে তো আমার ভাইয়ের বিয়ে বলে কথা।
রোদ্র কথাগুলো বলে শাহানারার দিকে চলে গেলো অতঃপর মায়ের সাথে আলোচনা করতে লাগলো কি কি করতে হবে। সমুদ্র দু হাত বুকের সাথে গুঁজে রোদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে। এতো সব কিছুর পরেও একটা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। রোদ্র যদি মেয়েটাকেই খুঁজতে যাবে তাহলে শশীদের বাড়িতে গিয়ে ওরকম টা করার মানে কি। মেয়েটা আসলে কে?
,,,,,,,,,,,,
সন্ধ্যা হয়ে এসেছে আযান ও বোধহয় হয়ে গেছে এই সময়টাতে পারভিন যদি দেখে শশী এভাবে বিছানায় শুয়ে আছে তাহলে বাড়ি মাথায় তুলবে। তবুও আজকে শশী শুয়ে আছে মা দেখলে যা খুশি বলুক গিয়ে। সকাল থেকে এটা ওটা করতে করতে শরীল আর চলছে নাহ। বিকেলের দিকেই অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে। বাড়ি ভর্তি মেহমান উঠানে ছোট ছোট বাচ্চারা চেঁচামেচি করছে দৌড়াদৌড়ি করছে। কারেন্ট চলে গেছে এই জন্য বাকিরা কেউ কেউ চেয়ার পেতে গল্প করছে আবার কেউ পিয়াজ রসুন কাটছে। কাজের বাড়িতে এই সময় কারেন্ট যাওয়াই সবাই বিরক্ত। তবে সবাই মিলে আলো আধাঁরিতে হারিকেন জ্বালিয়ে গল্প করতে করতে কাজ করছে এটাও উপভোগ করছে। কারেন্ট নেই এই জন্য গরমের মধ্যে কেউ রুমেও নেই সবাই বাইরে। নিজের রুম খালি পেয়ে শশী বিছানায় নিজের শরীলটা এলিয়ে দিয়েছে। হলুদ শাড়ির আঁচল টা বুক থেকে নামিয়ে পাশেই রেখে দিয়েছে। কারেন্ট না থাকায় ফ্যান ও চলছে নাহ আর শাড়ি পড়ায় গরম যেনো বেশি লাগছে এই জন্যই মূলত এটা করা। জ্বানালা দিয়ে হালকা ঠান্ডা বাতাস আসছে এতেই চোখে ঘুম নেমে এসেছে। কেবলি চোখটা বন্ধ করেছে ওমনি ফোনটা ভূঁ ভূঁ শব্দ করে বেজে উঠল। শশী বিরক্ত হয়ে যে কল দিয়েছে তাকে বেশ কয়েকটা গা*লি দিয়ে বসল। অতঃপর হাতড়ে ফোনটা সামনে এনে দেখলো স্কিনে সমুদ্রের নামটা জ্বল জ্বল করছে৷ যলদি উঠে বসে জিব্বাহতে কাঁমড় দিয়ে একটু আগের বকাটা ফিরিয়ে নিলো৷ ফোন রিসিভ করে কানে ধরতেই ওপাশ থেকে গম্ভীর কন্ঠে সমুদ্র বলল।
সারাদিন কি করছিলে ফোন ধরোনি কেনো?
সমুদ্রের কথায় শশীর মনে পড়ে গেলো সকাল থেকে তার ফোনটা তার কাছে ছিলোই নাহ। ওর চাচাতো মামাতো ফুপাতো মিলে অনেক গুলা ভাইবোন এসেছে৷ প্রায় সবাই ওর থেকে বড় কেবল চাচাতো ভাইবোনদের মধ্যে থেকেই শশী বড়। সকালে যখন সমুদ্র কল দিয়েছিলো ও ফোনটা ধরতেই যাবে তখনি ওর ফুপাতো বোন লিমা এসে ফোনটা কেঁড়ে নিয়ে বলল।
বাবাহ এতো প্রেম কালকেই তো বউ নিয়ে চলে যাবে তাহলে আজকে এতো কিসের কথা শুনি। শুনেছিলাম আর্মিরা নাকি রোমান্টিক কম গম্ভীর হয় বেশি কিন্তু সমুদ্র তো দেখছি হেব্বি রোমান্টিক।
আপু ফোন দাও ওনি ভীষণ রেগে যাবে।
যাক রেগে কালকে তো বাসর রাত কালকেই না হয় আদর সোহাগ দিয়ে রাগ ভাঙ্গিয়ে দিবি।
লিমার কথা শুনে শশী লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে বলল, তুমি আমার থেকে বড় আবার সম্মানের দিক থেকেও ওনার চেয়ে বড় তাহলে এসব বলো কেনো।
এই শোন যার আগে বিয়ে হবে সেই বড় তাই আপাতত তুই বয়সে আমাদের ছোট হলেও যেহেতু আমাদের আগে তোর বিয়ে হচ্ছে এই জন্য তুই আমাদের সবার বড়। আর ফোন টা আমার কাছে থাকলো আগে সব অনুষ্ঠান শেষ হোক তারপর রাতে ফোন পাবি।
এরপর সারাদিনই ফোন আমার কাছে ছিলোই নাহ তাহলে ওনার সাথে কথা বলবো কি করে? কিন্তু এই কথাগুলো ওনাকে কে বোঝাবে। শশীর চুপ থাকা দেখে সমুদ্র ধমকে বলল, এখন চুপ করে আছো কেনো আমি কি ফোন দিয়েছি তোমার শ্বাস শোনার জন্য? শোনো যেহেতু ভুল করেছো তাই তোমার এখন শাস্তি পেতে হবে।
কিহ? সামান্য ফোন না ধরার জন্য এখন আমায় শাস্তি পেতে হবে?
হ্যাঁ হবে এখন কথা না বলে আমি যা বলছি শোনো, এখন থেকে ঠিক দুই ঘন্টা পর তোমাদের ক্লাবঘরের আগে যে বাগানটা আছে ওখানে আসবে।
এখন? এই রাতের বেলা?কিন্তু কেনো? আর মা বলেছে বিয়ের আগে বাইরে যেতে হয় না। হলুদের গন্ধে নাকি বউয়ের ঘাড়ে জ্বিন আসে। আর আপনি আমায় সোজা বাগানে যেতে বলছেন তাও এই বৃহস্পতিবার এর রাতে যদি আমার ঘাড়ে জ্বিন আসে তখন?
শশীর কথায় সমুদ্র দাঁতে দাঁত চেপে বলল আর যদি তুমি না আসো তাহলে আমি নিজ দায়িত্বে তোমাকে জ্বিনের বাড়িতে পাঠাবো। শোনো দুই ঘন্টার মধ্যে যদি তোমাকে ওখানে না পাই তাহলে সোজা তোমার বাড়িতে চলে যাবো আর তোমার আব্বাকে বলবো তুমি আমায় ফোন করে আসতে বলেছো। আমি নিষেধ করলে তুমি কান্নাকাটি করেছিলে এই জন্য আসছি৷
কথাটা বলেই সমুদ্র ফোন কেটে দিলো কান থেকে ফোন নামিয়ে শশী চিন্তায় হাতের নখ কাঁমড়াতে লাগলো। কি মুসিবত এখন এতো মানুষের মধ্যে বাগানে যাবো কীভাবে? আর লিমা আপুরা যদি একবার জানতে পারে তাহলে তো আমাকে লজ্জা দিবে। আবার না গেলেও ওনি বলেছে বাড়ি চলে আসবে, ওনি তো এক কথার মানুষ চলেও আসতে পারে। তখন তো বাড়ি ভর্তি লোকের সামনে আরো লজ্জায় পড়তে হবে। এতো দেখি জলে কুমির ডাঙায় বাঘ কোনদিকে যাবো আমি?
এসব ভাবছে আর হাতের নখ কামড়াচ্ছে শশী তখনি জোনাকি ফোনের আলো নিয়ে ঘরে এসে বলল। এই আপা তুই এখানে শুয়ে শুয়ে কি করছিস নিচে চল লিমা আপারা তোকে ডাকছে।
শশী জোনাকির কথাশুনে নখ কামড়ানো বাদ দিয়ে ওর দিকে তাকালো। মাথায় একটা বুদ্ধি আসতেই জলদি করে কাপড়ের আঁচল টা বুকের উপর নিয়ে বিছানা থেকে নেমে জোনাকি কে বলল। শোননা তুই যদি আমাকে একটা কাজ করে দিস তাহলে তোকে আমার ফোনটা দেবো গেইম খেলার জন্য। আবার একশো টাকাও দেবো তুই কি নাকি কিনবি তখন আমার কাছে টাকা চাইলি। ওটা কিনিস সাথে চকলেট ও দেবো তুইতো আমার আপন বোন বল এখন তুই আমার দুঃখ না বুঝলে আর কে বুঝবে বল।
শশীর এমন পাম দেওয়া কথাশুনে জোনাকি সন্দেহের চোখে শশীর দিকে তাকালো। বিকেল বেলা ও শশীর কাছে একশো টাকা চেয়েছিলো খেলনা সাপ কেনার জন্য কালকে জয় আসলে ওকে ভয় দেখাবে তাই৷ কিন্তু শশী টাকা দেয়নি উল্টো মাকে বলে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাড়ায় দিছে আর এখন নিজেই সেধে টাকা দিতে চাইছে তাই জন্য জোনাকি অনেকটা সমুদ্রের মতো গলার স্বর গম্ভীর করে বলল।
কিন্তু কাজটা কি?
,,,,,,,,,,,,
জোনাকি ওর আব্বার বাটন ফোনটাতে আলো জ্বালিয়ে হাঁটছে আর শশীও পাশে ভয় ভয় নিয়ে হাঁটছে। এই আপা মা তো কইছিলো বিয়ের কথা হইলে আর হলুদ গায়ে লাগলে রাতে বার হতে হয় না জ্বিনে ধরে। তুইতো তাও হইলি ওহন যদি তোরে জ্বিনে ধরে তখন কি হবে?
এই তুই আমাকে সাবধান করছিস নাকি ভয় দেখাচ্ছিস কোনটা? আর সাবধানে আলোটা সামনে ফেল নয়ত হুঁচট খাবো তো। তাছাড়া আমার কি মনে করিস এই দেখ মাথায় হলুদ নিয়ে আসছি এখন আর কোনো চিন্তা নাই। তুই নিসনাই তাই জ্বিন আমারে রেখে তোরে ধরবে।
শশীর মুখে কথাটা শুনতেই জোনাকি থেমে গেলো তারপর ফোনের আলোটা সামনের দিকে ফেলতেই দেখলো লম্বা মতো সাদা সাদা কি একটা দূরে ওটা দেখতেই আলোটা শশীর মুখের দিকে ফেলে চোখ বড় বড় করে শশীর দিকে তাকালো। শশী জোনাকির তাকানো দেখে জোনাকিকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভঙ্গিতে বলল।
আরে ওটাতো শহীদ কাকাদের আমগাছ অন্ধকারে ওমন দেখাচ্ছে তুই চল।
কিন্তু মলিতো কইছিলো শহীদ কাকার যে ছেলে পানিতে ডুবে মারা গিছিলো ওরে নাকি ওখানে কবর দিছিলো। আর রাতের বেলার নাকি ও ওদের বাড়িতে আইসা টিনের উপরে থাপ্পড় দেয়। মলি নাকি ওদের বাড়ি থেকেও শুনেছে।
জোনাকির কথাশুনে শশী ঢোক গিয়ে ভয়ে ভয়ে বলল, আরে ধুর ওরা তোকে ভয় দেখানোর জন্য বলছে ওসব কিছু নাহ চল আমরা যাই এখান থেকে ওই টুকু এক দৌড়ে চলে যাবো।
শশীর বিয়ের জন্য ছোট ছেলে মেয়েরা বাজি এনেছে ফাঁটানোর জন্য। হয়ত তারা ওটা ফাটাচ্ছে আগুন ধরিয়ে ছাড়তেই ফটাস করে শব্দ হয়ে উপরে উঠে গেলো৷ জোনাকি এমনিতেই ভয় পেয়ে ছিলো ওই শব্দ শুনতেই চমকে, ওরে বাবা ভূত। কথাটা বলেই দৌড়ে বাড়ির দিকে চলে গেলো। শশী যেহেতু কাপড় পড়া ছিলো আবার জোনাকি আচমকা দৌড় দিবে ও ভাবিইনি তাই ভয় পেয়ে ওখানেই দাঁড়িয়ে কাঁপতে লাগল।
#চলবে?
#প্রিয়_অর্ধাঙ্গীনি
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
#পর্ব_৩০
,
কারেন্ট চলে এসেছে প্রায় বেশ কিছুক্ষণ আগে। তবে বাগানের দিকটাই তেমন কোনো আলো আসে নাই। বাগান থেকে দূরে শশীদের বাড়িতে জ্বলতে থাকা আলোর রশ্মি দেখা যাচ্ছে। জোনাকি চলে যাওয়ার পর শশী আর ওই জায়গা থেকে এক চুলও নড়ে নাই। ভয়ে ওখানেই দাঁড়িয়ে আছে। না পাড়ছে পিছনে যেতে না পাড়ছে সামনে যেতে। অন্ধকারে পরনে থাকা হলুদ শাড়িটা হালকা জোছনার আলোতে বেশ চোখে লাগছে, ফোনটাও ঘরেই ফেলে এসেছে । শরীল টাও কেমন ভারি ভারি লাগছে যেনো শরীলে কোনো কিছু ভর করেছে। দূরের গাছগুলোও কেমন ভূতুড়ে লাগছে। যেনো মনে হচ্ছে এই এসে পিছন থেকে ঘাড় মটকে দেবে। চোখ বন্ধ করে মনে মনে দোয়া দরুদপাঠ করছে। সমুদ্র তো বলেছিলো ২ ঘন্টার মধ্যে চলে আসবে তাহলে এখনো আসছে না কেনো? নাকি ওনি আসবে নাহ৷ শশীর ভাবনার মাঝেই পিছন থেকে একটা ঠান্ডা ভারী হাত ওর কাঁধে পড়ল। সারা শরীলে কেমন একটা শিহরন বয়ে গেলো। চোখ দুটো বড় বড় করে পিছনে তাকাতেই ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে নিচে পড়ে গেলো।
জোনাকি এক দৌড়ে বাড়ি এসে উঠানে বসে পড়ল। জোড়ে জোড়ে হাঁপাচ্ছে, বাড়িতে মানুষের সমাগম সবাই কাজে ব্যাস্ত। হঠাৎ জোনাকি কে এভাবে দৌড়ে উঠানে পড়ে যেতে দেখে সবাই ওর কাছে আসলো। জামশেদ মেয়ের কাছে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে আতংকিত গলায় জিগাস করল।
কি হয়ছে আম্মা আপনি এভাবে বসে পড়লেন কেনো ভয় পাইছেন?
বাবার গলা পেয়ে জোনাকি বাবার গলা জড়ায়ে ধরে ভয় ভয় গলায় বলল, আব্বা পানি খাবো।
পারভিন যলদি গ্লাসে পানি এনে জোনাকিকে দিতেই ঢকঢক করে পুরোটা পানি শেষ করলো। লিমা পাশে বসে জোনাকির দিকে তাকিয়ে বলল, তোকে তো শশীকে ডাকতে পাঠালাম তুই বাইরে থেকে আসলি কীভাবে? কোথায় গিয়েছিলি আর শশী কোথায়?
লিমার কথায় এবার জোনাকির হুশ ফিরলো ভয়ের জন্য শশীকে তো ওখানেই ছেড়ে এসেছে। জোনাকি শশীর কথা ভেবে কান্না করে দিলো অতঃপর কান্না করতে করতে বলল, আব্বা আপারে মনে হয় জ্বীনে নিয়া গেছে এতোক্ষণে।
মেয়ের মুখে এমন কথা শুনে জামশেদ কিছুই বুঝতে পারলো নাহ। ভালো করে জিগাস করতেই জোনাকি বলা শুরু করল। আপা আমারে কইলো বাগানের দিকে যাবে ওখানে নাকি কি একটা কাজ আছে। তয় কাউরে বলা যাবে নাহ। শুধু গিয়েই চলে আসবে, তাই আমিও আপার সাথে গিছিলাম কিন্তু তখনি শহীদ চাচাদের আম গাছে জ্বীন দেখে আমি দৌড়ে চলে আসছি। আর আপা ওখানেই আছে এতোক্ষণে মনে হয় আপারে জ্বীনে নিয়া গেছে।
মেয়ের মুখে এমন কথাশুনে জামশেদ মাস্টার হাসবে নাকি মেয়েকে শাসন করবে এটাই ওনি ভেবে পাচ্ছে নাহ। পারভিন রেগে জোনাকির মাথায় একটা থাপ্পড় দিয়ে বলল, ওইটারে কতবার বললাম রাতে কোথাও না যেতে কিন্তু আমার কথা শুনলে তো সেই বেরিয়ে গেলো। যাক আমি আর কিছুই বলবো নাহ। আপনার মেয়েরা আমার একটা কথাও শোনে না যা ইচ্ছে করুক গিয়ে পরে ভালো খারাপ কিছু একটা হয়ে গেলে আমাকে বলতে আসবেন নাহ।
কথাগুলো বলে পারভিন রেগে চলে গেলো। জামশেদ মেয়ের থেকে মোবাইল টা নিয়ে বাকি আরো কয়েকজন কে নিয়ে শশীকে খুঁজতে গেলো৷ কেননা দিনকাল ভালো নাহ তারপর গ্রামে তো খারাপ মানুষের অভাব নেই। কিছু একটা হয়ে গেলে তখন আর কিছু করার থাকবে নাহ।
,,,,,,,,,,,,,
শশী জ্ঞান হারিয়ে সমুদ্রের বাহুতে পড়ে আছে। সমুদ্র হতভম্ব চোখে শশীর মুখের দিকে তাকিয়ে আবার আশেপাশে তাকালো না কেউ আসছে নাহ। গাড়িটা মেইন রাস্তার একপাশে দাঁড় করিয়ে ইমরান কে বসিয়ে রেখে এসেছে। সমুদ্রের বলা জায়গায় শশীকে না পেয়ে সমুদ্রর প্রথমে বেশ রাগ হয়েছিলো। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও যখন শশী আসলো নাহ তখন ফোন দিলো কিন্তু ফোনটাও কেউ ধরলো নাহ৷ এবার সমুদ্র ঠিক করলো সত্যি সত্যিই শশীদের ওখানে যাবে। মেয়েটাকে একটা শিক্ষা না দিলেই নয় এই মনোভাব নিয়ে সামনের দিকে যাচ্ছিলো। ক্লাবঘর পাড় হয়ে একটু যেতেই দেখলো হলুদ শাড়ি পড়া কেউ দাঁড়িয়ে আছে। সমুদ্র ভালো করে দেখল এটা শশী। আমি ওকে থাকতে বলেছি কোথায় আর মেয়েটা আছে কোথায়৷ কথাটা বলেই সমুদ্র পিছন থেকে এসে শশীর কাঁধে হাত রাখতেই শশী জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যেতে নিলে সমুদ্র দুইহাতে শশীকে আগলে নিলো।
এই মেয়ে চোখ খোলো শশী।
শশীর গালে হাত রেখে কয়েকবার থাবা দিলো সমুদ্র। শশী আস্তে করে এক চোখ খুলে দেখলো কোনো শক্তপোক্ত হাত ওর কমর জড়িয়ে আছে। জোছনার হালকা আলোয় শশী সমুদ্র কে দেখতেই দুহাতে শক্ত করে সমুদ্র কে জড়িয়ে ধরল।
আপনি? আমি আরো ভাবলাম সত্যিই জ্বীন। আরো আগে আসতে পারলেন নাহ আর একটু হলে তো ভয়েই মরেই যেতাম আমি।
আচ্ছা এখন ছাড়ো এখন তো আমি চলে এসেছি ভয় নেই। এমন ভাবে ধরেছো যেনো পারলে আমার বুকের মধ্যে চলে যাবে।
সমুদ্রের কথাশুনে শশী ওকে ছেড়ে দিয়ে দূরে গিয়ে দাঁড়ালো ব্যাপারটা সমুদ্রের মোটেও পছন্দ হলো নাহ। শশীর পিছনের দিকে তাকিয়ে চোখ মুখ কুঁচকে বলল, আরে লম্বা মতন ওটা কী?
কথাটা শুনতেই শশী দ্রুত দুজনের মাঝের দূরত্ব ঘুচিয়ে সমুদ্রের গায়ের সাথে লেগে দাঁড়ালো। কই কি? আমি তো কিছু দেখতে পাচ্ছি নাহ।
হয়ত চলে গেছে। কথাটা বলে সমুদ্র শশীর দিকে তাকালো এই প্রথমবার শশীকে শাড়ি পড়া দেখছে। ছোটোখাটো নরম শরীলে কাঁচা হলুদ শাড়িটা বেশ মানিয়েছে। একদম পুতুল পুতুল লাগছে। সমুদ্র এভাবে শশীর দিকে তাকিয়ে থাকা দেখে শশী লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে সরে যেতে গেলে সমুদ্র বাঁ হাতে শশীর কমর চেপে নিজের বুকের সাথে লাগিয়ে দাঁড় করিয়ে বলল।
দূরে যেও নাহ এভাবেই থাকো নয়ত বলা যায় না সত্যি সতিই জ্বীন এসে তোমাকে নিয়ে যাবে তখন কিন্তু আর চাইলেও ফিরে আসতে পারবে নাহ।
শশী সমুদ্রের বুক থেকে বিড়ালের মতো মুখ বের করে সমুদ্রের দিকে তাকালো। ও বেশ ভালোই বুঝতে পারছে সমুদ্র ওর সাথে মজা করছে। শশী কিছু বলতে যেতেই দেখলো দূরে বেশ কিছু আলো ওদের দিকেই আসছে। সমুদ্র আস্তে করে শশীকে ছেড়ে দিয়ে ওর হাত ধরে পাশাপাশি দাঁড়ালো। সমুদ্র ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ ওদিকে তাকালো বেগতিক দেখলেই ব্যাবস্হা নিতে হবে। কেবলি পকেট থেকে ফোনটা বের করবে তখনি দেখলো শশীর বাবা কাকা আর কয়েকজন ওদের দিকেই আসছে সাথে জোনাকিও আছে। সমুদ্র রেগে দাঁতে দাঁত চেপে শশীর দিকে তাকিয়ে বলল।
তোমাদের বাড়িতে আর কেউ ছিলো নাহ? শুধু এই কয়জন আসলো কেনো পুরো হিজলতলীর সবাই কে নিয়ে আসলেই তো ভালো হতো। আসতে বলেছি একা আর গাধী গুষ্টিশুদ্ধ সবাইকে নিয়ে আসছে।
শশী সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে একটু হাসার চেষ্টা করে মুখ নামিয়ে জোনাকির দিকে রাগী চোখে তাকালো।এতোক্ষণে সবাই ওদের কাছে চলে এসেছে। জোনাকি সমুদ্র কে দেখে হা করে তাকিয়ে আছে। জামশেদ সমুদ্র কে এভাবে দেখে বেশ বিব্রত হলো তবুও সৌজন্যে রক্ষাতে বলল, একি তুমি এখানে? না মানে এই সময়।
সমুদ্রের এবার রাগের থেকে বেশি বিরক্ত লাগছে। বিয়ের আগের দিন রাতে এভাবে হুবু বউয়ের সাথে দেখা করতে এসে শশুরের কাছে ধরা পড়া বেশ লজ্জা জনক। তবুও নিজেকে ঠিক রেখে বলল, এইদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম শশী বলল দেখা করে যেতে এই জন্যই আর কী।
সমুদ্রের কথা শুনে শশী চোখ বড় বড় করে সমুদ্রের দিকে তাকালো। কি মিথ্যাবাদী রে রাত দুপুরে ডাহা মিথ্যা কথা বলছে। নিজেই আমাকে আসতে বলে এখন বলে কিনা আমি বলেছি। কথাগুলো মনে মনে বলে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকল শশী। মেয়ের দিকে বেশ কড়া চোখে তাকালেন ওনি তবে কিছু বলল নাহ৷ পিছন থেকে শশীর কাকা হাসি মুখে এগিয়ে এসে সমুদ্রের সাথে কথা বলল।
আরে বোকা মেয়ে এটা বাড়িতে বলে আসলেই তো হতো আমরা শুধু শুধু চিন্তা করছিলাম। আর সমুদ্র এতোটা যখন এসেই গেছো তখন আর একটু কষ্ট করে বাড়ি উপর চলো বাবা।
না না আংকেল এখন আর যাবো নাহ ঢাকায় ফিরতে বেশি রাত হয়ে যাবে।
আরে বেশি সমস্যা হলে না হয় আজকে থেকেই গেলে আর কোনো কথা নয় এসোতো।
কথাগুলো বলে সমুদ্রের হাত টেনে নিয়ে সামনের দিকে চলে গেলো।সমুদ্র যাওয়ার আগে শশীর দিকে গরম চোখে তাকিয়ে চলে গেলো।
এসো।
গম্ভীর কন্ঠে কথাটা বলে হাঁটতে লাগল জামশেদ। শশী জোনাকির মাথায় থাপ্পড় দিতে দিতে বলল, তোরে করতে বলেছি কি আর তুই করলি কি।
আরে আমায় মারছিস কেনো আমি কি জানতাম নাকি যে সমুদ্র ভাইয়া আসবে। আমিতো আরো ভয়ে ছিলাম যে জ্বীন বোধহয় তোকে নিয়েই গেছে।
জোনাকির কথা শুনে শশী আবারো ওর মাথায় থাপ্পড় দিতে দিতে হাঁটতে লাগল এখন বাড়ি গেলে সবাই ওকে লজ্জা দিবে৷ যেটার ভয় ছিলো ঠিক সেটাই হলো।
,,,,,,,,,,,
এই তাহলে জোনাকির বলা জ্বীন, বাহ বেশ দেখতে তো হায়, জ্বীন যদি এতো সুন্দর হয় তাহলে আমি রাতের বেলা চুল ছেড়ে বাগানে যেতে রাজি।
সমুদ্র কে দেখে লিমাসহ শশীর আরো কয়েকটা বোন কথাগুলো বলল। শশী লজ্জায় কিছু বলতে পারলো নাহ দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলো। এদিকে সমুদ্র পড়েছে বিপাকে সবাই মিলে বসিয়ে বিয়ের আগেই জামাই আদর শুরু করে দিয়েছে। খাওয়া দাওয়া শেষে একটু বিশ্রাম এর জন্য সমুদ্র কে একটা রুমে বসতে দেওয়া হলো। রুমে ঢুকেই লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে বিছানায় বসে পড়ল সমুদ্র। চোখ বন্ধ করে খাটে হেলান দিয়ে বসে আছে তখনি শশীর বোনরা সবাই মিলে শশীকে ধরে রুমের মধ্যে ধাক্কা দিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিলো। ওপাশ থেকে তো কেউ একজন বলেই বসল,
বিয়ের আগেই হাফ বাসর করে নেন দুলাভাই এমন সুযোগ কিন্তু সবাই পাই নাহ। বেশি নাহ বিশ মিনিট সময় পাবেন এর মধ্যে যা করার করেন তারপর কিন্তু আমরা দরজা খুলে ভিতরে চলে আসবো।
শশী লজ্জায় কয়েকবার দরজায় ধাক্কা দিলো তবে কেউ খুললো নাহ। সমুদ্র ততক্ষণে চোখ খুলে শশীর দিকে তাকিয়েছে। বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পরনের শার্টটা টেনে সোজা করে শশীর দিকে এগিয়ে এসে দাঁড়ালো দু হাত বুকে গুঁজে বলল।
তাহলে এই ছিলো তোমার মনে।
সমুদ্রের কথা শশী বুঝতে না পেরে কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, মানে?
মানে এই যে হাফ বাসর। আমি তোমাকে দেখা করার জন্য ডাকলাম আর তুমি কি না সরাসরি হাফ বাসর করার প্লান করে ফেললে? কি সাংঘাতিক মেয়ে তুমি৷ বাসর করার জন্য দেখি তর সইছে নাহ। চলো তাহলে শুরু করি?
কথাটা বলে সমুদ্র বাঁকা হেসে শশীর দিকে এগিয়ে আসলো শশী পিছিয়ে গিয়ে দরজার সাথে লেগে দাঁড়িয়ে বলল, দেখুন আমি কিছু করিনি সত্যি বলছি।
শশীর কথা কে শোনে সমুদ্র একদম শশীর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বাঁ হাতে ওর কমর জড়িয়ে ধরে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো। অতঃপর ডান হাতে শশীর কপাল থেকে চুল সরিয়ে কানের পিঠে গুঁজে দিয়ে মুখে বাড়িয়ে শশীর কপালে গাড়ো করে চুমু খেলো। শশী চোখ বন্ধ করে সমুদ্রের বুকের কাছের শার্ট মুটো করে ধরে আছে। নরম গোলাপি ঠোঁট দুটো কাঁপছে। সমুদ্র করুণ চোখে সেদিকে তাকালো যেনো ওগুলো ওকেই ডাকছে। সমুদ্র নিজের মুখটা শশীর মুখের আরো নিকটে নিয়ে গেলো নাকের সাথে নাক লেগে আছে। শশী সমানে কাঁপছে সমুদ্র আরো শক্ত করে শশীর কমড়টা চেপে ধরলো। যেনো সত্যি নিজের বুকের সাথে শশীকে পিশে ফেলবে,তারপর নিজের শুষ্ক ঠোঁট টা শশীর নরম ঠোঁটের সাথে আলতো করে মিলিয়ে দিয়ে চুমু খেয়ে শশীর কানে ফিসফিস করে বলল।
বাকিটা না হয় কালকে রাতেই হবে আমি কিন্তু কোনো বাঁধা মানবো নাহ।
কথাটা বলে শশীকে ছেড়ে দিয়ে দূরে সরে এলো শশী এখনো দরজার সাথে লেগে চোখ বন্ধ করে বড়বড় শ্বাস নিচ্ছে। এই মুহুর্তে চোখ খুলে সমুদ্রের চোখে চোখ মিলানোর মতো সাহস নেই ওর। সমুদ্র দূরে দাঁড়িয়ে শশীর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। তখনি দরজা খুলে গেলো শশী যেহেতু দরজার সাথে লেগে দাঁড়িয়ে ছিলো এই জন্য দরজা খুলতেই পড়ে যেতে নিলো। ওমনি বাইরে যারা ছিলো তারা শশীকে ধরে ফেলল। শশী তখনো চোখ বন্ধ করে আছে শরীলের সব ভর ওদের হাতের উপর ছেড়ে দেওয়া। লিমা অবাক হয়ে শশীর দিকে তাকিয়ে জিগাস করলো একিরে তোর এই অবস্থা কেনো? কি হয়েছে?
শশী চোখ বন্ধ করেই মুচকি হেসে বলল, আমি শেষ আপু।
#চলবে?