#প্রিয়_অনুভব
#সাবরিন_জাহান_রোদেলা
#পর্ব_২৪
“তোর মামাতো বোনকে সামলে রাখ প্রীতি।”
প্রীতি সবে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় বসেছিলো। নীতির কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে তাকালো। সে রাগে ফুসছে।
“কি হয়েছে? কি করেছে ও?”
“তোর বোনের এত দরদ কেনো নাহিয়ানের প্রতি? নাহিয়ান চা না চাইতেই চা নিয়ে হাজির হয়ে গিয়েছে সে!”
প্রীতি বিরক্ত হলো।
“সবাইকেই ও চা দিয়েছে। কি এমন হয়েছে শুনি?”
“দেয়ার ভঙ্গিমা স্বাভাবিক থাকলে আমি কিছুই বলতাম না। এসে নব বধূর মতো বলে, ‘আপনার চা!’, হুহহ, ঢং!”
“বেশি ভাবিস তুই। মাথা খাইস না তো!”
বলেই বারান্দায় চলে গেলো। নীতি রেগে আবার বেরিয়ে এলো। সিঁড়ির কাছে আসতেই দেখলো নাহিয়ান এক হাত দিয়ে কপাল স্লাইড করতে করতে উপরে উঠছে। নজর তার নিচের দিকে। নীতি একটু আড়ালে চলে গেলো। নাহিয়ান নিজের রুমে যেতেই নিচে তাকালো সে। টেবিলের উপর চায়ের কাপটা রাখা। খায়নি সে। মুচকি হাসলো সে। জলদি করে নিচে নামলো সে। দুধ ছাড়া কড়া করে রং চা বানালো। অতঃপর সিনথীকে ডেকে বললো,
“তোর নাহিয়ান ভাইয়াকে দিবি এটা। আর বলবি ঢং কম করতে বলেছে প্রিয়। খেয়ে নিতে বলেছে, ব্যাথা কমে যাবে।”
সিনথী বুঝলো না। অবুঝ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। নীতি তাড়া দিয়ে বললো, “এটা সিনেমার ডায়লগ। যা এখন! এত বুঝা লাগবে না তোর।”
সিনথী কথামতো নাহিয়ানের কাছে গেলো। চায়ের কাপ এগিয়ে দিয়ে বললো, “ঢং কম করতে বলেছে প্রিয়। খেয়ে নিতে বলেছে, ব্যাথা তাহলে কমে যাবে।”
নাহিয়ান মুচকি হেসে চা নিলো। সিনথীর গাল টেনে বললো, “ধন্যবাদ প্রিয়!”
পর্দার আড়ালে থাকা নীতি মুচকি হাসলো।
__________________________________
মিষ্টি রঙের শাড়িকে লেহেঙ্গার মত করে পড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে নীতি। ঘোরার তেমন কোনো কারণ নেই। নাহিয়ানকে খুঁজে পাচ্ছে না সে। কোথায় যে গেলো মানুষটা! সারা বাড়ি ঘুরে বিরক্ত হয়ে নিজের রুমে এলো সে। হলুদের আয়োজন বাগানে হয়েছে। সবাই সেখানেই। নীতি আয়নার সামনে এসে দাঁড়ালো। মিষ্টি রঙের শাড়ির সাথে গাঢ় নীল রঙের ব্লাউজ। গলায় অ্যান্টিকের হার, কানে ঝুমকো। সেই সাথে মাথায় টিকলি লাগিয়েছে সে। বুঝে উঠতে পারছে না এভাবে তাকে কি ভালো লাগছে, নাকি না! সবাইকে সাজিয়ে নিজেরই সাজতে দেরি হয়ে গিয়েছে। এখন আপাতত সব সেখানে। হয়তো নাহিয়ানও ওখানে। ভাবনার মাঝেই কেউ ওর হাত ধরলো। ফলস্বরূপ চমকে উঠলো নীতি। হাত ছাড়িয়ে নিতে গিয়েও নাহিয়ানকে দেখে স্বাভাবিক রইলো। ড্রেসিং টেবিলের উপর ব্লাউজের সাথে ম্যাচিং করা খাঁজ কাটা কাচের চুড়ি রেখেছিলো পড়ার জন্য। নাহিয়ান সাবধানতার সাথে সেগুলো পরিয়ে দিতে লাগলো। নীতি একদৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে রইলো। নীল রঙের পাঞ্জাবী পরিহিত যুবকটিকে দেখে মুগ্ধ হলো সে। পাঞ্জাবীর উপরের তিনটা বোতাম খোলা থাকায় তার বুক দৃশ্যমান। হুট করেই নীতির ইচ্ছে হলো তাকে একটু ছুঁয়ে দিতে। পরক্ষণেই চোখ গেলো ঠোঁটের দিকে। সেদিনের স্পর্শের কথা মনে হতেই বাম হাত দিয়ে নিজের ঠোঁট ঢাকলো নীতি। নাহিয়ান ভ্রু কুঁচকে তাকালো।
“কি হলো?”
নীতি ডানে বামে মাথা নেড়ে বোঝালো কিছু না।
“ওই হাত দেও।”
নীতি বিনা বাক্যে হাত বাড়িয়ে দিলো। চুড়ি পড়ানো শেষে নাহিয়ান বলে উঠলো, “সারা বাড়ি আমাকে খুঁজছিলে কেনো?”
নীতি চোখ ছোট ছোট করে বললো, “আপনি জানলেন কি করে আপনায় খুঁজছি?”
“যেভাবে আমাদের রুমে উকি দিচ্ছিলে, তারপর এদিক ওদিক খুঁজছিলে। আমি ছাড়া আর কাউকে তো এভাবে খোঁজার কথা না!”
“বয়েই গিয়েছে আপনাকে খুঁজতে।”
“তাই?”
“হুমম, নিচে চলুন!”
বলেই এগিয়ে গেলো সে। নাহিয়ান হাসলো।
__________________________________
“এখানে দাঁড়িয়ে আছেন যে একা?”
রাদিয়ার কণ্ঠ শুনে ওর দিকে তাকালো নাহিয়ান। অফিসের কিছু ইমেইল চেক করার জন্য একটু নিরিবিলি জায়গায় দাঁড়িয়েছে সে।
“অফিসের ইমেইল চেক করছিলাম।”
”ওহ!”
বলে ওখানেই দাঁড়িয়ে রইলো। নাহিয়ান কি বলবে বুঝে উঠতে পারলো না। ওকে এড়িয়ে চলে আসতে নিবে সেই মুহূর্তে রাদিয়া বলে উঠলো, “আমায় কেমন লাগছে?”
নাহিয়ান ভ্রু কুঁচকে তাকালো। আশ্চর্য! মেয়েটা এমন কেনো? তবুও মুখে বললো, “সবাইকেই সুন্দর লাগছে!”
বলেই স্টেজের দিকে গেলো। না জানি কখন নীতি দেখে ফেলে। এমনিতে নাহিয়ানেরও মনে হলো রাদিয়ার কথা বার্তার মাঝে কিছু আছে। একে এড়িয়ে চলাই ভালো।
“কই ছিলি তুই?”
রীতির প্রশ্ন শুনে নাহিয়ান ওর পাশে বসে বললো, “অফিসের কাজ ছিল একটা। ওটাই করে আসলাম!”
বর্ষা নাহিয়ানের পাশে এসে দাঁড়ালো।
“কাজ নাকি অন্য কিছু?”
নাহিয়ান হেসে বললো, “অন্য কিছু কি হবে আবার?”
“নাহ, কালকে যা যা শুনলাম আপনাদের দিয়ে আর বিশ্বাস নাই। নীতিও এখানে নেই। তাই বললাম!”
নাহিয়ান হাসলো কেবল। প্রীতি মাঝে বলে উঠলো, “আসলেই, আপনি আর নীতি এমন দুইজন মানুষ, যাদেরকে ঝগড়া ছাড়া তেমন আলাপ করতে দেখিনি। তাদের মাঝে কি করে কি হয়?”
“ঝগড়া তো আমি করি না! তোমার বোন করে।”
“আমি ঝগড়া করি?”
হঠাৎ নীতির আগমনে নাহিয়ান ভরকে গেলো। তবুও নিজেকে স্বাভাবিক রেখে বললো, “কোনো সন্দেহ আছে?”
”শুরুটা আপনি করেন, আমি না!”
“এখন কে চিল্লিয়ে ঝগড়া করছে?”
নীতি রাগে ফুসছে। সবাই মুখ চেপে হাসছে। রীতি ওর কাছে আসলো। হেসে বললো, “আমার বোন মোটেও ঝগড়া করছে না। তুই ই করছিস। সর!”
“বোনের পক্ষই তো নিবি তুই!”
শাফিন ওর মাথায় চড় দিয়ে বললো, “কতবার বলবো? ভাবী হয় তোর, সম্মান দিয়ে ভাবী ডাক!”
“চার বছর বান্ধবী ডেকে তোমার জন্য ভাবী ডাকবো। পা’গলে ধরছে নাকি আমায়?”
রীতি হাসলো।
“ভাবীকে ভাবী ই ডাকবি। তার উপর আমার কিউট শালীকারে পাচ্ছিস, তোর কি ভাগ্য?”
“ও কিউট? হাস্যকর!”
নীতি কোমরে দু হাত রেখে বলল, “আমি কিউট না?”
“একদমই না!”
“তাহলে কিউট কে শুনি?”
সেই মুহুর্তে রাদিয়া ওদের কাছেই আসছিলো। তাই দিক কূল না ভেবেই ভুলবশত মুখ থেকে বেরিয়ে আসলো, ”রাদিয়া।”
সঙ্গে সঙ্গে মুখে হাত দিলো ও। মোটেও ওর নাম বলতে চায়নি নাহিয়ান। নীতির দিকে তাকাতেই দেখলো সে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে । এক মুহুর্ত দেরি না করে স্টেজ থেকে নেমে গেলো নীতি। শাফিন বলে উঠলো, ”ভাই তুই শেষ!”
রীতি তেঁতে উঠে বললো, “তোদের দুই ভাইয়ের দেখি এক সমস্যা। খালি অন্য মেয়ের দিকে নজর যায়!”
“আমি কি করলাম?”(শাফিন)
“কচু!”
“বিশ্বাস কর আমি এই নাম বলতে চাই নাই!”
“আমাকে না বলে ওকে গিয়ে বল!”
নাহিয়ানও উঠে গেলো। নীতির পিছু নিলো সে। উফ, কি ঝামেলা!
__________________________________
“নীতি, দাঁড়াও না!”
ধপাধপ পা ফেলে নিজের রুমে আসলো নীতি। দরজা আটকাতে যাবে তার নাহিয়ান দরজা ঠেলে ভিতরে আসলো। নীতি মুখ ঘুরিয়ে চলে যেতে নিলেই নাহিয়ান ওর হাত ধরে আটকালো। অতঃপর এক টানে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো ওকে। নীতি মুচড়া মুচড়ি করলেই নাহিয়ান ওর দু হাত ওর পিছনে নিয়ে গিয়ে আটকে দিলো।
“এত নড়াচড়া করো কেনো?”
“হ্যাঁ, আমি তো নড়াচড়া করি। ওই রাদিয়াকে গিয়ে ধরুন না। একদম নড়াচড়া করবে না।”
“আরে, ওটা ভুলে বলে ফেলেছি। সরি!”
“বুঝি তো। খাই না সুজি, সবই বুঝি! আমাকে তো এখন আর ভাল্লাগে না। আমি কিউটও না। যান ওই রাদিয়ার কাছে।”
শেষের কথাগুলো বলতে গিয়ে নীতির গলা কাঁপছিলো। নাহিয়ান হাসলো।
“আমার প্রিয় ভীষণ কিউট!”
নীতি মুখ ঘুরিয়ে রেখে নিশ্চুপ রইলো। নাহিয়ান হেসে বললো,
“এখনও রাগ করে থাকবে?”
নীতি নিশ্চুপ। নাহিয়ান আবার বললো, “তবে যাই বলো, রাগলে কিন্তু তোমায় হেব্বি লাগে জান!”
“ছি, এসব জান টান কে বলে এখন?”
“আমি বলি! কোনো সমস্যা?”
“না, ছাড়ুন।”
নাহিয়ান আরও শক্ত করে চেপে ধরলো ওকে। নীতি ওর চোখে চোখ রাখলো।
“জানো প্রিয়? তোমার কাজল রাঙা এই চোখ আমার ভীষণ প্রিয়। যতবার তোমায় দেখি আমি আর নিজের মাঝে থাকি না। খুব ইচ্ছে করে বড়সড় ভুল করে বসতে। কিন্তু…”
নীতি ঢোক গিললো। কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বললো, ”কেউ দেখলে সমস্যা হবে, ছাড়ুন!”
নীতির মিইয়ে যাওয়া কণ্ঠ শুনে ওকে ছেড়ে দিলো নাহিয়ান। ছাড়া পেতেই দূরে সরে দাঁড়ালো নীতি। লম্বা নিঃশ্বাস নিলো সে।
“চলো!”
নীতি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো, “কোথায়?”
“চলোই না।”
বলেই ওর হাত ধরে বেরিয়ে এলো নাহিয়ান। বাড়ির বাইরে গিয়ে একটা রিকশা ডেকে বললো, “উঠো!”
“কোথায় যাচ্ছি আমরা?”
“বিয়ে করতে!”
নীতি চমকে উঠে বললো, “কি?”
“এত প্রশ্ন কেনো করো? চলো না!”
নীতি মুখ বাঁকিয়ে উঠতে নিলেই নাহিয়ান ওর হাত ধরলো। নীতি তাকাতেই বললো, “শাড়ি সাবধানে ধরে উঠো!”
নীতি হাসলো। সে বসতেই নাহিয়ান ওর আঁচল গুছিয়ে দিলো যাতে চাকার কাছে না যায়। অতঃপর নিজে ওর পাশে বসলো।
“মামা চলেন!”
নীতি ওর দিকে তাকিয়ে আছে। নাহিয়ান ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “কি হয়েছে?”
“দেখছি!”
“কি?”
“আমার মানুষটা আমার কতটা যত্ন নেয়!”
নাহিয়ান হাসলো। নীতির কানের কাছে ফিস ফিস করে বললো, “এভাবে দেখতে নেই প্রিয়। প্রেমে পড়ে যাবেন!”
“ওহ, তো এখন কিসে পড়ে আছি জনাব?”
নাহিয়ান গলা ঝেড়ে বললো, “যেহেতু নর্দমা আশেপাশে নেই, তাই বলতে পারলাম না কিসে পড়ে আছেন।”
নীতি নাহিয়ানের হাতে চিমটি কেটে বললো, “মারাত্মক ফাজিল আপনি!”
নাহিয়ান হাসলো কেবল। আশেপাশে দেখে বলে উঠলো, “মামা এখানে রাখেন।”
রিকশা থামতেই নাহিয়ান নামলো। নীতিকেও সাবধানে নামালো। ভাড়া মিটিয়ে হাঁটা শুরু করলো দুইজন। নির্জন রাস্তা। বেশ দূরে দূরে কয়েকটা ল্যাম্পপোস্ট আছে। জনমানবশূন্য এই রাস্তায় ভয় পাওয়ার কথা থাকলেও নীতির ভয় লাগছে না। কারণ পাশে থাকা মানুষটা সাথে থাকলেই সে নিরাপদে থাকবে সব সময়!
“দিনের শহর তো অনেক ঘুরলাম প্রিয়। এবার না হয় রাতের শহরটাও দেখা যাক?”
নীতি হাসলো।
“বাড়ির সবাই কি ভাববে?”
“ওখানে এখন নাচ গান হবে, আমাদের কথা কারোর মাথায় থাকবে না। ওদের মাথায় আমাদের কথা আসতে আসতে আমরা বাড়ি পৌঁছে যাবো।”
নীতি আর কিছু বললো না।
হুট করেই নাহিয়ান নীতিকে ফুটপাতের উপরে বসিয়ে দিয়ে নিজে রাস্তায় ওর সামনে বসে পড়লো। নীতি ভ্রু কুঁচকে বললো, “এটা কি হলো?”
“বসা হলো!”
“সেটা আমিও জানি। হাঁটবো বলে বসলেন কেনো?”
“একটু বসি, পরে হাঁটা যাবে।”
নীতি দীর্ঘশ্বাস ফেললো। মানুষটা এমন হুটহাট কাজ করে কেনো? আকাশের দিকে তাকালো নীতি।
“আজকের আকাশে চাঁদ নেই।”
“কে বললো নেই?”
নীতি নাহিয়ানের দিকে না তাকিয়েই বললো, “আকাশের তাকিয়ে দেখুন নেই!”
“তোমার আকাশে চাঁদ নেই, কিন্তু আমার আকাশে তো আছে!”
এবার তাকালো নীতি!
“আপনার আকাশ?”
“হুমম আমার মনের আকাশ!”
“তো সেই আকাশের চাঁদ আমি কি করে দেখবো জনাব? আমিও চাঁদ দেখতে চাই!”
“দেখবে? ওয়েট!”
বলেই ফোন বের করলো। নীতির একটা ছবি তুলে বললো, “এই দেখো!”
নীতি অবাক চোখে নাহিয়ানকে দেখলো। নাহিয়ান আবার নিজের দিকে ফোন ঘুরিয়ে ছবিটা দেখে বললো, “আমার ব্যাক্তিগত চাঁদ!”
নীতি হাসলো। নাহিয়ান গালে হাত দিয়ে বললো, “এই হাসিটাও আমার ব্যাক্তিগত!”
নীতি এবার শব্দ করে হাসলো। একটু ঝুঁকে বললো, “আর আপনি নামক মানুষটা আমার ব্যাক্তিগত!”
নাহিয়ান হাসলো নিষ্পলক তাকিয়ে রইলো নীতির দিকে। ল্যাম্পপোস্টের মৃদু আলোয় নীতির হাস্যজ্বল মুখ দেখে নাহিয়ানের মন কেমন শান্তি অনুভব করলো। ইশ ভাবতেই অবাক লাগে তার, এই মানুষটা তার!
“ভালোবাসেন প্রিয়?”
“উহু, বাসি না!”
“আমিও বাসি না!”
“সত্যি বাসেন না?”
“উহু, মিথ্যে বাসি না!
নীতি আবারও হাসলো। নাহিয়ান একটু এগিয়ে বসলো। নীতির হাত দুটো নিজের দু হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো,
“তুমি আমার, তাই না প্রিয়?”
“হুমম!”
“তোমাকে হারানোর ভয় হচ্ছে প্রিয়!”
“কেনো?”
“জানা নেই, তবে হচ্ছে। তুমি আমার না হলে আমার কি হবে?”
নীতি চুপ করে নাহিয়ানের চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো। নাহিয়ান আবার বলে উঠলো, “ভালোবাসি প্রিয়!”
“ভালোবাসি আমার ব্যাক্তিগত মানুষ! আমার প্রিয় অনুভব!”
#চলবে
#প্রিয়_অনুভব
#সাবরিন_জাহান_রোদেলা
#পর্ব_২৫
“কোথায় ছিলি নীতি?”
মায়ের প্রশ্ন শুনে দাঁড়িয়ে গেলো নীতি। চুপি চুপি বাড়ি ঢুকছিলো সে। নাহিয়ান এখনও বাইরেই আছে। কিছুক্ষণ পর সেও ঢুকবে। একসাথে আসলে কারোর নজরে পড়লে সমস্যা!
“কোথায় আবার? এইতো বাগানে!”
“আমাকে মিথ্যে বলছো? ওখানে তোমাকে আমি পাইনি।”
নীতি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো। বলবে কি এখন?
“এই রাতে কোথায় গিয়েছিলে নীতি?”
মায়ের শান্ত কণ্ঠ শুনে হাত পা ঠাণ্ডা হতে লাগলো নীতি। মায়ের এই কণ্ঠের সাথে পরিচিত সে। এখনই ঝড় উঠবে।
“আমার সাথে গিয়েছিল আন্টি!”
নাহিয়ানের কথা শুনে চমকে উঠলো নীতি। নাহিয়ান এসে জোহরার সামনে দাঁড়ালো। জোহরা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, ”তোমার সাথে?”
“হ্যাঁ, আসলে প্রীতি আর আনাফের জন্য গিফট কেনার ছিল। ওদেরকে তো নীতি ভালো চেনে, তাই আরকি!”
জোহরা কিছু একটা ভাবলেন। অতঃপর বুকে হাত গুজে জিজ্ঞেস করলেন, “ওহ, তাহলে কি গিফট কিনলে?”
নীতি আড়চোখে নাহিয়ানের দিকে তাকালো। সে আমতা আমতা করতে করতে বলল, “টাকা ভুলে রেখে গিয়েছিলাম। দামাদামি করে আসছি। কাল গিয়ে নিয়ে আসবো!”
জোহরা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন নাহিয়ানের দিকে। নাহিয়ান অসহায়ভাবে দাঁড়িয়ে রইলো। এদিকে নীতিও হাসফাস করছে। কিছুক্ষণ পর নীতির দিকে তাকিয়ে বললেন, “কোথাও গেলে জানিয়ে যেও। মা আমি, টেনশন হয়!”
নীতি মাথা নাড়লো। জোহরা আরেকবার নাহিয়ানের দিকে তাকিয়ে বললেন, “তোমাদের বয়স আমার পার হয়ে গিয়েছে বাবা। তাই বাহানাগুলোতে একটু নতুনত্ব এনো!”
বলেই আবার বাগানের দিকে গেলেন উনি! নাহিয়ান বুঝতে না পেরে নীতিকে জিজ্ঞেস করলো, “মানে?”
নীতি ঠোঁট চেপে হেসে বললো, “মানে মা সব বুঝেছেন!”
নাহিয়ান ভ্রু নাচিয়ে বললো, “বাহ, আমার শাশুড়ি তো সেই!”
“সেই দেখেই বেচেঁ গেলেন, নয়তো ঠাস করে খেতেন!”
“ভয় দেখাও কেনো?”
“আমার ইচ্ছে!”
নাহিয়ান চোখ ছোট ছোট করে ওর দিকে তাকাতেই নীতি হেসে দিলো। অতঃপর ওর একটু কাছে গিয়ে বললো,
“ধন্যবাদ একটা সুন্দর মুহূর্ত দেয়ার জন্য!”
নাহিয়ানও হাসলো। অতঃপর চোখে চোখ রেখে বললো,
“আর তোমায় ধন্যবাদ নিজের সঙ্গ দিয়ে এই সুন্দর মুহূর্ত বানানোর জন্য!”
বার্তাহীন কয়েকপলক দৃষ্টি বিনিময় হলো দু’জনার। ভালোবাসায় পূর্ণ সেই দৃষ্টি ওখানেই থমকে রইলো।
__________________________________
“এত মেসেজ করছো কেনো তুমি?”
“এমনই, বোর হচ্ছিলাম!”
“আমার পছন্দ না মেসেজে কথা বলা।”
“তাহলে কলে আসেন!”
“কারণ?”
তূর্ণা ভাবলো। কারণ কি বলবে এখন? কিছু একটা ভেবে বললো,
“ওইযে আপনি যেই ভিডিও দিয়েছিলেন ওখানে একটা টপিকে সমস্যা হচ্ছিলো। বুঝছি না আমি!”
“তুমি পড়ছো ওখানে?”
তূর্ণা বুঝলো আরহাম অবাক হয়েছে।
“কিছু করার নেই এখন, তাই আরকি!”
বেশ কিছুক্ষণ পর রিপ্লাই এলো, “আমাকে স্ক্রিনশট দিয়ে দেও, আমি ভয়েসে পাঠিয়ে দিবো!”
তূর্ণা আর কিছু বললো না। ভীষণ শুনতে ইচ্ছে করছে তার মানুষটাকে! আচ্ছা হঠাৎ এমন হবার কারণ কি?
__________________________________
“নাহিয়ান!”
রাদিয়ার আওয়াজ শুনে ওর দিকে তাকালো নাহিয়ান। রাত আটটা। একটু পরই শুরু হবে প্রীতি আর আনাফের বিয়ে। নিচে নামছিলো সে। এমন সময় রাদিয়া ডাকলো। ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো, “কিছু বলবে?”
“আপনার পছন্দ করা লাল শাড়ি পড়েছি, কেমন লাগছে?”
নাহিয়ান ভরকে গেলো। এই মেয়ে এমন কেনো?
“ভালো!”
“শুধু ভালো?”
বলেই ওর দিকে এগিয়ে আসতে নিলেই শাড়িতে পা বেঁধে পড়ে যেতে নিলো সে। নাহিয়ান তৎক্ষণাৎ ওর একটা হাত শক্ত করে ধরে পড়া থেকে বাঁচালো। হুট করে এভাবে পড়ায় নাহিয়ান তাল সামলাতে পারলো না। ফলস্বরূপ রাদিয়া ওর বেশ কাছাকাছি এসে পড়েছে । করিডোরের দিকে ছিলো তারা। উপরে এখন তেমন কেউ নেই। সবাই নিচে। তাই ভেবে লম্বা নিঃশ্বাস ফেললো নাহিয়ান। নয়তো নীতি দেখলে কি যে হতো! কিন্তু কথায় বলে, ‘যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধ্যা হয়!’ এমনটাই হয়েছে নাহিয়ানের ক্ষেত্রে। নীতি সেই মুহূর্তেই উপরে আসছিলো। ওদেরকে এভাবে দেখেই দাঁড়িয়ে গেলো ও। ওকে দেখা মাত্রই নাহিয়ান রাদিয়ার হাত ছেড়ে দূরত্ব নিয়ে দাঁড়ালো। নাহিয়ানের এমন ছিটকে সরে যাওয়ায় রাদিয়া আবার পড়ে যেতে নিলেও নিজেকে সামলে নিলো। একবার নাহিয়ানের দিকে তাকিয়ে ওর দৃষ্টি অনুসরণ করে নীতির দিকে তাকালো। তড়িঘড়ি বলে উঠলো, “নীতি আপু, তুমি যেমন ভাবছো তেমন কিছু নয়। আসলে আমি শাড়িতে পা বেজে পড়ে যাচ্ছিলাম আর তখন নাহিয়ান ধরলো আমায়।”
নীতি কিছু না বলে ওদের কাছে আসলো। রাদিয়ার সামনে দাঁড়াতেই রাদিয়া আবার বলতে লাগলো, “সত্যি বলছি আপু!”
“আমি তোমার এক কি দুই বছরের বড় হবো। আর নাহিয়ান তোমার চার কি পাঁচ বা তার বেশি বড় হবে। তাহলে আমায় আপু, তাকে ভাইয়া বলো না কেনো?”
রাদিয়া ভরকে গেল। কিসের মধ্যে কি প্রশ্ন?
“না মানে, উনি অপরিচিত তাই…”
নীতি ওকে বলতে না দিয়ে নিজে বলে উঠলো, “অপরিচিত আমিও ছিলাম। তাই আপু সম্বোধন করেছিলে!”
রাদিয়া চুপ করে রইলো। নীতি আবার বলতে শুরু করলো,
“জানো কিছু কিছু মেয়ে আছে, যারা একটা ছেলে সম্পর্কে আছে জানা সত্বেও তার গায়ে ঢলে পড়বে, কথার ধরন এমন করবে যেনো ছেলেটা তার প্রতি আকর্ষিত হয়। মেয়েটার মূল উদ্দেশ্য ছেলেটাকে তার দিকে টেনে নিবে!”
“আপু তুমি ভুল বুঝছো!”
“ভুল বোঝার কিছু নেই। বাড়ীতে আরো অনেকেই আছে যাদের কাছে জিজ্ঞেস করতে পারতে তোমাকে কেমন লাগছে। কিন্তু না, তুমি কাল আর আজ দুবারই ওকে জিজ্ঞেস করেছো। ভেবো না এসব আমার অজানা থাকবে। আমি নিজের জিনিস নিয়েই অনেক যত্নশীল, সেখানে এটা তো আমার নিজের মানুষ। প্রথম প্রথম তোমায় কিছু বলতাম না, কারণ তুমি জানতে না। কিন্তু জানার পরেও এভাবে ছ্যাছরামী করার মানে কি?”
“আপু!”
রাদিয়ার ধমক শুনে নীতি দ্বিগুণ ধমকে বললো, ”চুপ! তুমি কি ভেবেছো, তুমি এমন ঢং করে নাহিয়ানকে নিজের দিকে নিতে পারবে? তাহলে বলে দেই ভুল! নাহিয়ান আমি থাকি বা না থাকি, আমার অনুপস্থিতিতেও কোনো মেয়েকে ভিন্ন নজরে দেখবে না। তাই আমাকে এটা বলার প্রয়োজন নেই যে এখানে কি হয়েছিলো। কেননা আমি জানি, নাহিয়ান এমন কিছু কখনো করবে না যাতে তার নীতি কষ্ট পাক। আর রইলো তোমার কথা, মেয়েদের চরিত্র এমন হওয়া উচিত নয় যেখানে তোমাকে আমার ছ্যাছরা বলে সম্বোধন করা লাগে। আশা করি তোমার ছোট্ট মাথায় এসব ঢুকেছে। আর এই শাড়িটা নাহিয়ান নয়। আমি পছন্দ করে তোমায় দিয়েছিলাম, খুব তো ওর পছন্দের জিনিস কিনতে চেয়েছিলে। এখন আমার পছন্দই ওর পছন্দ। আজকের কথাগুলো মাথায় থাকলে, নেক্সট টাইম অন্যের জিনিসে আশা করি নজর দিবে না!”
রাগে, অপমানে ধপাধপ পা ফেলে নিচে গেলো রাদিয়া। নাহিয়ান অবাক হয়ে বললো, “একটু আগেই তো উ’ষ্টা খেয়ে পড়ছিলো। এখন এত জলদি নামছে কি করে?”
নীতি দাঁত কিড়মিড় করে জিজ্ঞেস করলো, “কেনো? আবার ও পড়তে নিলে আপনি ধরবেন?”
“আরে না। তা কেনো হবে?”
“দেখেছি কেনো হবে।”
“আশ্চর্য, একটু আগে না ওকে বললে আমায় বিশ্বাস করো!”
“তো এই জন্য কি অন্ধ বিশ্বাস করবো না? কেনো, ওকে ঝাড়ি দিয়ে বলতে পারতেন না আপনার থেকে দূরে থাকতে? নাকি পিছে ঘুরাতে খুব ভাল্লাগে?”
নাহিয়ান হাসি আটকে বললো, “হুমম, খুব ভাল্লাগে!”
নীতির রাগ যেনো আরো বাড়লো।
“বেশ, তাহলে যান। গিয়ে ওকে বলুন আপনার পিছে আরো ঘুরতে। আমি গেলাম!”
নীতি ওকে পাশ কাটিয়ে যেতে নিলেই নাহিয়ান ওর হাত ধরে ফেললো। হেচকা টানে ওকে নিজের কাছে এনে দাঁড় করালো।
“হাত ছাড়ুন!”
“উহু!”
“উহু কেনো? যান ওর হাত ধরুন গিয়ে। ওকে বলুন ওকে ভীষণ সুন্দর লাগছে। আমার কাছে কি? ছাড়ুন!”
নাহিয়ান হাসলো। নীতির কপালে পড়ে থাকা ছোট ছোট চুলগুলো পিছে সরিয়ে দিয়ে বললো, “আমার মায়ের পরে তুমিই সবচেয়ে সুন্দর নারী প্রিয়!”
নীতি শান্ত হলো। ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়লো। নাহিয়ান নিষ্পলক নীতিকে পর্যবেক্ষণ করলো। তার পরনে নাহিয়ানের পছন্দের সেই শাড়িটা। নীতির ডান হাত নিজের বুকের বাম পাশে রেখে বললো, “এই বুকের বা পাশে তুমি আছো প্রিয়। আমার সত্যি পৃথিবীর আর অন্য কোনো নারীর প্রতি আগ্রহ নেই। আমার সকল আগ্রহ তোমার প্রতি! আমার প্রিয়র প্রতি। যাকে আমি ভালোবাসি আর যে আমাকে ভালোবাসে।”
নীতি ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটলো। হেসে বললো, “এইজন্য সুন্দর ভাষী মানুষদের প্রেমে পড়তে নেই। এটা এদের সুন্দর কথা দিয়ে ঠিকই কাবু করে নেয় আমার মতো অসহায় মেয়েকে।”
“কি করবো ম্যাম? আপনাকে দেখলেই আমার কথার মাঝে শব্দগুলো আপনাআপনি সেজে উঠে। আর মুখ সেগুলো আটকে না রেখে বলে ফেলে।”
নীতি হাসলো। ওর চোখে চোখ রেখে বললো, “শব্দগুলো আর কারোর জন্য সাজাবেন না। এগুলো কেবল যেনো আমার জন্যই আমার হয়ে থাকে!”
নাহিয়ান হাসলো।
“তোমাদের রোম্যান্স শেষ হলে নিচে যাওয়া যাক?”
বর্ষার কথা শুনে চট জলদি সরে দাঁড়ালো দুজন! বর্ষা এসেছিলো নীতিকে ডাকতে। প্রীতি ওকে খুঁজছে। ওর সাজ এখনও কিছুটা বাকি। কিন্তু এখানে এসে ওদের দেখে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু অনেকক্ষণ যাওয়ার পরেও এদের কথা শেষ হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে ওদের মাঝে আসতে হলো। বর্ষা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, “প্রীতি ডাকছে তোকে। ওর সাজ নাকি আরো বাকি। আয়!”
নীতি কিছু না বলে এগিয়ে গেলো। লজ্জা লাগছে তার, বর্ষা কি ভাবলো? নাহিয়ানও নিচে নেমে গেলো। বর্ষা দুইজনের দিকে তাকালো। অতঃপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, “আজ কেউ নাই বলে!”
__________________________________
অবশেষে প্রীতি আর আনাফের বিয়ে সম্পূর্ণ হলো। সবাই এখন ওদের নিয়ে ব্যস্ত। নীতি একাকী দাঁড়িয়ে ছিল বর্ষার সাথে। সেই মুহূর্তেই একজন মধ্যবয়স্ক মহিলা ওর নিকট এলো। নীতির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার নাম কি মা?”
“নীতি!”
মহিলা হেসে আবার জিজ্ঞেস করলেন, “বিয়ে হয়েছে?”
নীতি ভরকে গেল। এসব কি প্রশ্ন? তবুও হাসার চেষ্টা করে বললো, “না, কিন্তু…”
মহিলা ওকে কিছু বলতে না দিয়ে বললেন, “আলহামদুলিল্লাহ, তোমার মা বাবা কোথায়? এসেছেন? নাকি একা তুমি? আচ্ছা তোমার নাম্বার দেও!”
“নাম্বার কেনো?”
মহিলা হেসে বললেন, “আমার ছেলের জন্য আসলে মেয়ে খুঁজছি। তুমি তো ভারী মিষ্টি, তাই আরকি তোমার মা বাবার সাথে কথা বলতাম!”
নীতি অবাক হয় তাকিয়ে রইলো। এ কি আবার? কিছু বলবে তার আগেই নাহিয়ান পাশে এসে দাঁড়ালো। তাকে হেসে বললো, “ওর তো বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে আন্টি!”
মহিলা অবাক কণ্ঠে শুধালো, “কি বলো?”
“হ্যাঁ, আমার সাথেই হয়েছে।”
অতঃপর নীতির দিকে কড়া দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো, “এটা বলতে খুব কষ্ট হচ্ছিলো তাই না?”
সিরিয়াস মুহূর্তেও নাহিয়ানের কথা শুনে হাসি পেলো নীতির। ঠোঁট চেপে মাথা নিচু করে হাসি আটকালো সে। ভদ্র মহিলা কিছুক্ষণ আফসোস করে বর্ষার দিকে তাকালেন। বর্ষা ঢোক গিললো। তিনি হেসে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার নাম কি মা?”
“জী, বর্ষা!”
“তুমিও ভারী মিষ্টি, তোমার মা বাবা এসেছেন?”
বর্ষা মাথা নাড়লো।
“ওহ, তোমার তো আর বিয়ে ঠিক নেই তাই না?”
এবারও বর্ষা ডানে বামে মাথা নাড়লো। ভদ্র মহিলার হাসি আরো চওড়া হলো।
“তোমার বা তোমার বাবা মায়ের নাম্বারটা দেও তো তাহলে!”
বর্ষা কিছু বলবে তার আগেই হুট করে রাদিফ এসে বললো, “ওর বিয়ে ঠিক নেই, বিয়ে হয়ে গিয়েছে।”
বর্ষা, নীতি আর নাহিয়ান চমকে তাকালো। বর্ষা রাদিফের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “কিহ?”
ভদ্র মহিলা সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন, “ওর হাজব্যান্ড কোথায়?”
রাদিফ ওর হাত ধরে বললো, “এই যে আমি! এভাবে বিয়ে বাড়িতে মেয়ে না খুঁজে বিজ্ঞাপন দিলেই পারেন। যান খাবার খেয়ে নিন! আমিও আমার বউকে নিয়ে যাই!”
বলেই বর্ষাকে নিয়ে এগিয়ে গেলো। বর্ষা এখনও শকের মাঝে আছে। এটা স্বপ্ন নাকি সত্যি?
#চলবে